আজকের হিন্দুধর্মের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যদি বৈদিক ধর্মকে বিচার করতে যাই তাহলে দুটোর মধ্যে মৌলিক মিলের বদলে পার্থক্যই খুঁজে পাব। বৈদিক ধর্মে বিগ্রহ পুজোর ব্যবস্থা নেই; অথচ আজকের হিন্দুধর্ম মূলগতভাবে পৌত্তলিক। সেই পৌত্তলিক আচরণের মন্ত্রাদি অবশ্য বেদ থেকেও সংগৃহীত। এই রূপান্তরের মিসিং লিঙ্ক হলো বিবিধ পুরাণ, যার মাধ্যমেই প্রধান দেবতা হিসাবে বিষ্ণুর উদ্ভব। রাম এবং কৃষ্ণ তাই হয়ে গেলেন তাঁরই অবতার। এই রূপান্তরের প্রক্রিয়া এবং তার পিছনের চাহিদাকে না বুঝতে পারলে, পুরাণ সংক্রান্ত যে কোনও আলোচনাই তাই খণ্ড। আর যা খণ্ড সত্য, তা হয় অসত্য অথবা অর্ধস্ত্য। আজকের পুরাণ চর্চার ক্ষেত্রে প্রায়শই এই বিষয়টীকে মাথায় রাখা হচ্ছে না। ... ...
জামুকে দেখলে টুনুর মনে হয় ইতিহাস বইয়ের খানিক টুকরো যেন হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে। কতরকম অজানা সব গল্প যে বলে। সরলা নেমে দেখেন ছেলে বেশ পরিস্কার শার্ট প্যান্ট পরে ভব্যিযুক্ত হয়ে এসেছে। খাবার বেড়ে সামনে বসে কথা বলতে বলতে খেয়াল করলেন এও আজ একটু অন্যমনস্ক। হুঁ, হাঞ্জি আর ঘাড় নেড়েই কাজ চালাচ্ছে। ওর হিন্দিবাংলা মেশানো তড়বড়ে কথা আজ নেই। খেয়ে হাত মুখ ধুয়ে, থালা গেলাস মেজে ধুয়ে রেখে কিছু কাজ আছে কিনা জিগ্যেস করে তারপর ইতস্তত ভাবে জানায় ওর একটা আর্জি আছে মা’জির কাছে। ঢোলা শার্টের পকেটে হাত গলিয়ে তুলে আনে একটা কাগজে মোড়া পাতলা কি যেন। ঐ জিনিষটা সে সরলার কাছে রেখে যেতে চায়, ওর থাকার কোন ঠিক নেই, এটা আরেকজনের জিম্মা করা জিনিষ, চুরি হয়ে গেলে উপরওলার কাছে অপরাধী হয়ে যাবে জামু। সরলা বলেন যার জিনিষ তাকেই দিয়ে দিলে তো হয়। জামু নাকি জানেই না সে মানুষ কোথায়। আবার ওর মুখ থমথমে হয়ে যায়, চোখদুটো কেমন অচেনা। ... ...
৩৭৭ ধারা আংশিক ভাবে বাতিল করে শীর্ষ আদালতের বিচারকেরা নিঃসন্দেহে একটি সুদূরপ্রসারী এবং ভালো পদক্ষেপ নিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়টির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল যে রায়টি শুধুমাত্র চার দেওয়ালের মধ্যে ব্যাক্তিগত যৌনক্রিয়ার অধিকারেই আবদ্ধ নয়। বরং রায়টি “right to privacy” অর্থাৎ ব্যাক্তিগত পরিসরের অধিকারের মধ্যে প্রকাশ্য স্থানে নিজের যৌনতা এবং লিঙ্গপরিচয় প্রকাশ করার স্বাধীনতাকেও ধরেছে। যে কারণে রায়টি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত যৌনসম্পর্কের অধিকারের ক্ষেত্রে নয়, শিক্ষাক্ষেত্র এবং কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য প্রতিরোধ করতেও কাজে আসবে। সেই হিসেবে ৩৭৭ ধারা ঘিরে যে প্রতীকি রাজনীতি গড়ে উঠেছিল তা অবশ্যই কিছু সাফল্য এনে দিয়েছে। কিন্তু ৩৭৭ ধারার অবসানকে যদি আমরা অপরাধমুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখি বা অধিকারপ্রাপ্তির ইতিহাসের সূচনা হিসেবে দেখি, তাহলে হয়ত ভুল করব। ... ...
নীলাঞ্জন হাজরার ইরান ভ্রমণ। বইয়ের নাম ‘ইরানে’। ৯৫ পাতার বই। ছেপেছে দীপ প্রকাশন। ছবি, অলঙ্করণ, প্রচ্ছদ করেছেন হিরণ মিত্র। ... ...
মালদহের গণি খান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির ছাত্রদের ভবিষ্যত নিয়ে কর্তৃপক্ষের অপরিসীম উদাসীনতা তাদের ঠেলে দিয়েছে দীর্ঘ আন্দোলনের পথে। বৃহত্তর নাগরিক সমাজ এবং মূল স্রোতের সংবাদমাধ্যমের বিস্ময়কর নীরবতার কারনে সাধারন মানুষের কাছে তাদের সমস্যা এবং এবং কার্যকলাপ অনেকটাই অজ্ঞাত। ক্যাম্পাসের সাম্প্রতিক খবর জানিয়েছেন সুজন ভট্টাচার্য। ... ...
গানটা লাইনে লাইনে ঘাঁটায়। এই রকম পরিচয়পত্র দেখাইয়া তো কোনো বাঙালিরে আগে বাঙালত্ব দাবি করতে শুনি নাই। মাইর খাইয়া; ঘরবাড়ি বৌ খুয়াইয়া; দেশান্তরি হইয়াও তো প্রাচীন চর্যাপদের কবি ভুসুকু এক্কেবারে বুক থাবড়াইয়াই নিজের বাঙাল পরিচয় ঘোষণা দিছিলেন। তিনিও তো নিজের বাঙালত্বের পক্ষে কোনো পরিচয়পত্র দেখান নাই… আমি সরাসরি প্রসাদরে জিগাই- এইটার মানে কী মিয়া? নির্বাসিতা নদীর মানে কী? বাঙালিরে তো দেশান্তর নিয়া হাউকাউ করতে শুনছি সারা জীবন। কে কত বড়ো জামিদারি ফালায়া গেছে বা আসছে সেই বর্ণনা শুনছি। রায়ট আর লুটপাটের বিকটত্ব শুনছি; হেমাঙ্গ বিশ্বাসের মতো ‘তোমরা আমায় চিননি’ কইয়া হাওরের ছোট মাছ খাইয়া বানানো তাকতের বড়াই করতে শুনছি। কিন্তু এই রকম নির্বাসনের গাঁথা তো রচনা করে নাই কেউ… প্রসাদ কয়; আসামে যে বাঙালি আছে সেইটাই বেশিরভাগ কলিকাত্তি জানে না। তাগো হিসাবে বাঙালি আছে খালি পশ্চিম বাংলায় আর বাংলাদেশে আর দুই এক চিমটি আগরতলায়… ... ...
৭ই ফেব্রুয়ারী আন্দোলনরত ছাত্ররা এসে পৌঁছয় দুর্গাপুরে। এনাইটির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে ৪০ জন ছাত্র। এরপর ৯ তারিখ এনআইটি-র ডিরেক্টর মৌখিকভাবে একটি আলোচনাসভার প্রস্তাব রেখেছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। দুর্গাপুরে অবস্থানরত ছাত্ররা সেই মর্মে তাদের সহপাঠী এবং অভিভাবকদের ওইদিন দুর্গাপুরে আসার অনুরোধ জানায়। কিন্তু এই আলোচনাসভা শেষ অবধি অনুষ্ঠিত হয়েছিল কিনা বা হয়ে থাকলেও সেখানে কি আলোচনা হয়েছিল, কোনো সিদ্ধান্তে আসা গিয়েছিলো কিনা সেসব জানা যাচ্ছে না। তবে জানা যাচ্ছে যে দুর্গাপুরের আন্দোলন নিয়ে ৩টি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছিলো ৯ থেকে ১১ তারিখের মধ্যে। তার মধ্যে একটি 'এই সময়' এবং একটি 'আনন্দবাজার পত্রিকা'-য়। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনটিতে একটি আলোচনাসভার উল্লেখ রয়েছে, এবং বলা হয়েছে যে ওই আলোচনাসভায় সমাধানসূত্র মেলেনি। ... ...
আন্তর্জাতিক আইনও স্পষ্টভাবে বলেছে যে অভিবাসীদের জেলে আটকানো যাবেনা, এবং তাঁরা অপরাধী নন। জাতিসংঘের শরণার্থীদের নির্দেশনার হাইকমিশনারের নির্দেশ অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত আটক শিবির গুলিতেই কেবল কাউকে আটকে রাখা যাবে। নির্দেশনাগুলি বলে যে, সরকার “শরণার্থী বা অভিবাসীদের, অপরাধ আইনের অধীনে বন্দী ব্যক্তিদের থেকে আলাদা করে কোন জায়গায় রাখতে” বাধ্য। ২0১২ সালে প্রকাশিত জাতি সংঘের নির্বিচারে আটকদশার বিষয়ে কার্যনির্বাহীপরিষদের (UN Working Group on Arbitrary Detention) রিপোর্টে, নয় নং নীতিতে বলা হয়েছে "শরণার্থী বা অভিবাসীদের রক্ষণাবেক্ষণ, এই উদ্দেশ্যটির জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি পাবলিক জায়গায় করা দরকার; তবে বিবিধ বাস্তব কারণে যদি সেটা করা সম্ভব নাও হয় সেক্ষেত্রেও তাঁদের অবশ্যই আইনতঃ অপরাধীদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা কোন জায়গায় রাখা উচিত।" UNHRC এও বলে যে আটক-আদেশ কোনভাবেই শাস্তি্মূলক নয়। জেলখানা, কারাগার এবং কারাগার বা জেলের মত ু’রে যেসব জায়গা ব্যবহার করা হয় সে সব জায়গাগুলিকে এ বাবদে ব্যবহার করা উচিত না। ... ...
কবিতা - জগন্নাথদেব মণ্ডল ... ...
ঘাসে ঢাকা ফুল - কৌশিক বাজারীর কবিতা ... ...
আমি মাঝেমাঝে ভাবতে চেষ্টা করি, ১৯৯১ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে যখন শেষ লড়াই চলছে হীরকদের, তখন কী ভাবছিল সে? কিংবা সেই শান্ত নির্জন পাহাড়ে যখন ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করানো হচ্ছিল তাকে ? কয়েক মুহূর্ত বাদেই তো সব আবারও শান্ত হয়ে যাবে। কিসের স্বপ্ন দেখছেল আই অহমের ডেকা লরা? স্বাধীন আসামের স্বপ্ন না আলফা পতাকার উদীয়মান সূর্য? ভেবেছিল আবার আগের মত হিংস্র প্রবল নিষ্ঠুরতা ফিরে আসবে রমরম করে? ভেবেছিল এই দিল্লী নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রযন্ত্র আবারও শাসন করবে আসামের মাটি? আজ ঐ যারা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র তুলছে তাকে মুছে দিতে, তাদেরই মালা চন্দনে বরণ করে নেবে আই অহমের ভূমিপুত্রেরা? আজ যাদের সে অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়েছে আসামের ক্ষমতা অলিন্দে, কাল তারাই তার/তাদের অস্তিত্বকে অপ্রাসঙ্গিক করে দেবে, মুছে দেবার চেষ্টা করবে ইতিহাসের পাতা থেকে। ... ...
রোহতক, এপ্রিল ২০১৮। জনৈক স্মিতা চক্রবর্তি ভারতের সংশোধনাগার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলছিলেন মানসরোবর পার্কে। উনি সংশোধনাগার ব্যবস্থা নিয়ে স্বাধীন ভাবে গবেষণা করেন। সংশোধনাগারগুলির দূরাবস্থার কথা, সেখানকার বাসিন্দাদের দুর্দশার কথা বলতে বলতে হাঠাৎই এক রূপকাথা শোনান তিনি। রাজস্থানের আইজি সংশোধনাগার, এক আশ্চর্য বিপদে পড়ে ওনাকে সাহায্যের জন্য মারিয়া হয়ে ডেকে পাঠান। সমস্যা – সাজাপ্রাপ্ত মানুষেরা সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেতে নারাজ। এমনটা হয় কি? ... ...
আর তার সাথে মনের ভেতর খচখচ করছে আরেকটা প্রশ্ন। গত তিন দশকের লাগাতার লড়াইয়ের শেষে ৩৭৭-এর প্রশ্নে দেশ এগোলো ঠিকই কিন্তু একই সময়কালে কি পিছিয়ে পড়ল না আরও অন্যান্য মানবাধিকারের ক্ষেত্রে? আমরা কি তিন দশক আগে ভাবতে পেরেছিলাম একের পর এক রাজ্য খাদ্যাভ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসাবে? আন্তঃধর্মীয় প্রেমকে আদালতে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করতে হবে যে সেটা জিহাদ নয়? খাস কলকাতার বুকে আলিঙ্গনের অপরাধে গনপিটুনির শিকার হবেন যুবক-যুবতী? ট্রেনের কামরায় প্রধানমন্ত্রীর নাম বলতে না পারায় প্রহৃত হবেন দরিদ্র যুবক? গোরক্ষার নামে দেশ জুড়ে মানুষ খুন হবে? আর সেই খুনিদের মালা পরিয়ে অভিনন্দন জানাবেন দেশের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী? সরকার বিরোধী ইন্টেলেকচুয়ালস ও অ্যাক্টিভিস্টদের নামের লিস্ট তৈরী হবে যেমন হয়েছিল নাজি জার্মানিতে বা পাকিস্তান অধিকৃত বাংলাদেশে? একটা গোটা রাজ্যের নাগরিকদের প্রমাণ দাখিল করতে হবে যে তাঁরা "ঘুসপেটিয়া" নন? ... ...
মালদহের গণি খান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির ছাত্রদের ভবিষ্যত নিয়ে কর্তৃপক্ষের অপরিসীম উদাসীনতা তাদের ঠেলে দিয়েছে দীর্ঘ আন্দোলনের পথে। বৃহত্তর নাগরিক সমাজ এবং মূল স্রোতের সংবাদমাধ্যমের বিস্ময়কর নীরবতার কারনে সাধারন মানুষের কাছে তাদের সমস্যা এবং এবং কার্যকলাপ অনেকটাই অজ্ঞাত। আন্দোলনকারী ছাত্র আলমগীর খান তাদের সাম্প্রতিক অবস্থা এবং পরিকল্পনা জানিয়েছেন এই লেখায়। ... ...
লাক্সের নিয়ন বিজ্ঞাপনের পরই একটা বিশাল বোর্ড জুড়ে একটি হাস্যোজ্জ্বল তরুণী লাইফবয় সাবানের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। তার হাসি ও তারুণ্য মজিবুল হকের চোখকে ধরে রাখে। মজিবুল হকের ডান পাশে তার স্ত্রী, রেজওয়ানা চৌধুরী। রেজওয়ানা অনেকক্ষণ ধরে মজিবুলকে দেখে, গত এক বছর হল তার স্বামী এই রকম, কিছুটা আনমনা, ব্যবসার কাজে মন নেই। পঞ্চাশ পার হয়ে গেছে, মধ্যবয়সের সঙ্কট। লাইফবয় মেয়েটির দিক থেকে মজিবুল চোখ ফেরাতে পারছে না, রেজওয়ানা খুব অস্বস্তিতে পরে। মেয়েটিকে যত খুশী দেখুক না মজিবুল, রেজওয়ানার সমস্যা হল তাদের গাড়ির ড্রাইভারকে নিয়ে। ড্রাইভার সেলিম আয়নায় আড়-চোখে তার মালিকের দিকে তাকায়, রেজওয়ানা সেলিমের মুখ দেখতে পায় না, কিন্তু তার মনে হয় সেলিম এই পরিস্থিতিকে খুব উপভোগ করছে। রেজওয়ানা ভাবে মজিবুলকে খুব দ্রুত একটা কিছু বলতে হবে। ... ...
কেরালাতে এবার অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে এবং গত একশ বছরে এরকম বন্যা হয় নি। কিন্তু এই বন্যার পেছনে মানুষের লোভী হাতের ছায়াও বড় গভীর। পশ্চিমঘাট পর্বতমালা সংরক্ষণ কমিটির চেয়ারম্যান মাধব গ্যাডগিল ২০১১ সালেই সতর্ক করেছিলেন যে উন্নয়নের নামে যত্রতত্র ভারী শিল্প স্থাপন, খনিমুখ খনন চলবে না। বলেছিলেন তথাকথিত উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করতে হবে স্থানীয় জনসম্প্রদায় এবং গ্রামপঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়ে এবং তাদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে। প্রবল বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও বন্যার এই ভয়াবহতা অনেক কম হত যদি আগেই গ্যাডগিলের কথা শোনা হত। এই কমিটি চেয়েছিল বাস্তুতন্ত্র বৈচিত্রে ধনী পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, যার বিস্তার কেরালা সহ ছয়টি রাজ্যজুড়ে, তাকে পরিবেশ-সংবেদী (Ecologically Sensitive) বলে ঘোষণা করা হোক। ... ...
ধুবরীর নেপাল দাসের দোকানের জলবোমা সাঁটিয়ে বাসে উঠেছিলাম। ফকিরাগ্রাম যাবো, সেখান থেকে ট্রেন ধরে গৌহাটি। জল ধোওয়া সবুজ দেখতে দেখতে ঝিমুনি এসে গেছিল। চলন্ত বাস দাঁড়িয়ে পড়লে শরীরেও সেই অনুভূতি সঞ্চারিত হয়। কনডাক্টর গৌরীপুর হাঁকতেই কোষগুলো সুতীক্ষ্ন হয়ে ওঠে। কতবার ভেবেছি গৌরীপুর আসবো। প্রমথেশ বরুয়া, লালজীর ভিটে দেখার চাইতেও প্রতিমা পাণ্ডের মাহুত বন্ধুর টান। তাছাড়া এখানেই আমার বাবার শৈশব। মামার বাড়ি। কপাল ঠুকে নেমে পড়বো নাকি ভাবতে ভাবতে জানালা দিয়ে মুখ বাড়াতেই চোখে পড়লো দেয়াল জোড়া শ্লোগান। "তেজ দিম, তেল নিদিওঁ"। তেজ, মানে রক্ত দেবো, তেল দেবো না। কিন্তু গৌরীপুরে তেল কোথা, ভাবতে ভাবতেই বাস ছেড়ে দিল। আর সারাটা পথ জুড়ে দেয়ালে, দেয়ালে রক্ত দেবার অঙ্গীকার..."তেজ দিম, তেল নিদিওঁ"। ... ...
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ মনিটর হিসাবে, আক্টিভিস্ট হর্ষ মন্দার জানুয়ারিতে আসামের দুটি আটক শিবিরে যান। এই লেখাটি তাঁর অভিজ্ঞতার হাড়-হিম করা বিবরণ। প্রথম প্রকাশঃ ২৬ শে জুন, ২০১৮, দ্য স্ক্রোল। লেখক ও স্ক্রোলের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত। ... ...
৯৯৬ এর ১৭ই মে। আলফা আন্দোলনে তখন ভাঁটার টান শুরু হয়েছে। হিতেশ্বরের কুশলী প্রয়োগে আলফা ভাগ হচ্ছে। আত্মসমর্পন পন্থী আলফারা তৈরী করেছে সালফা। সারেন্ডারড আলফা। স্কুটারে চড়ে ছোট ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন পরাগ। অসমীয়া ভাষায় সবচেয়ে জনপ্রিয় দৈনিক অসমীয়া প্রতিদিনের সম্পাদক। গৌহাটির চাঁদমারীতে প্রকাশ্য দিবালোকে তাকে গুলি করে মারে চারজন সালফা সদস্য। সিবিআই চার্জশিট দেয়। ছয় জন অভিযুক্তের মধ্যে তিন জন মৃত। দু জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটই জমা পড়েনা। আর একমাত্র মৃদুল ফুকন ওরফে সমর কাকতি তেরো বছর কেস চলার পর প্রমাণাভাবে বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। ... ...
জনপ্রিয় সিনেমা আসলে সমাজের মূলধারার চিন্তার প্রতিফলন।আমাদের সমাজে বেশীরভাগ তথাকথিত উদার মানুষ, যারা সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং যারা সাম্প্রদায়িক বিভেদের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন, দূর্ভাগ্যজনকভাবে তারা অনেকসময়ই নিজেদের বিশ্লেষণকে এই সিনেমাটির মত করেই সীমিত করে রাখেন।আমরা অনেক সময়ই নিজেদের সুবিধাভোগী অবস্থান থেকে, ‘উচ্চ’ অবস্থান থেকে, ভুক্তভোগীদের, এক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে মুসলমান সমাজের অবস্থা বিশ্লেষণ করতে চাই।এটি খুবই বিপজ্জনক ঝোঁক।যেমন, অনেক সভা-সমিতিতে দেখি, হিন্দু মৌলবাদের কথা বললেই, লোকজন বলেন যে, সব মৌলবাদই খারাপ। সমান গুরুত্ব দিয়েই নাকি মুসলমান মৌলবাদের কথা বলতে হবে।নিশ্চই মৌলবাদ মাত্রই খারাপ।কিন্তু আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে হিন্দু মৌলবাদ বেশী বিপজ্জনক কারণ মুসলমানরা এদেশে সংখ্যালঘু।সংখ্যাগুরুর মৌলবাদ এবং সংখ্যালঘুর মৌলবাদ কখনই এক নয়। ... ...