মেডিসিনের মানুষমুখী, মানুষের রোগ-মুখী নয়, হয়ে ওঠার জন্য আমরা পুনরায় পাঠ করছি “আরোগ্য-নিকেতন” ২০১৯ সালে! আরোগ্য-নিকেতন উপন্যাসে জনস্বাস্থ্যের কথা নেই, বরঞ্চ রয়েছে ব্যক্তি রোগীর চিকিৎসার কথাই। কিন্তু কেন্দ্রীয় চরিত্র জীবন মশায় এবং তাঁকে ঘিরে থাকা মানুষেরা এমনভাবেই সমাজে নোঙ্গর ফেলে আছে যে সমাজ-স্থিত ব্যক্তির চিকিৎসার মধ্য দিয়ে জনস্বাস্থ্যেরও একটি রেখাচিত্র, ionchoate চেহারা ধরা পড়ে। ... ...
আমি বললাম, “এই বাচ্চা গ্রামীণ হাসপাতালে রেখে কী করবে। কান্দিতে রেফার করে দাও।” “বাড়ির লোককে কান্দি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু ওরা নিয়ে যাবে না। বাচ্চাটির বাবার বক্তব্য এই সন্তান জোর করে বাঁচিয়ে কোনও লাভ নেই। ও কোনও দিনই সুস্থ জীবন পাবে না। তার থেকে এ বাচ্চা মরে যাওয়াই ভাল। ওরা তো বাচ্চা হাসপাতালে রেখেই মাকে নিয়ে চলে যাবে বলছিল। কোনও রকমে আটকেছি।” আমি বললাম, “তাহলে আর কি। এখানেই থাকুক বাচ্চা। বাড়ির লোককে ভালো করে বুঝিয়ে সই করিয়ে রাখো। তারপর যা হওয়ার হবে।” কিন্তু যা হ’ল তাকে খুব ভাল বলা যায় না । পরের দিন আমার ২৪ ঘণ্টা অনকল ডিউটি। সকাল সাড়ে সাতটার সময় হাসপাতালে ঢুকতে গিয়ে দেখি প্রায় সমস্ত গ্রামের লোক জড় হয়েছে হাসপাতালের সামনে। আশেপাশের গ্রাম থেকেও ভ্যানে করে, হেঁটে অনেক লোক এসেছে। সবাই বাচ্চাটাকে একবার চোখের দেখা দেখতে চায়। যারা ইতিমধ্যে দেখার সুযোগ পেয়েছে তারা অন্যদের কাছে গল্প করছে। এবং তাদের গল্পের গরু মাঝে মাঝেই গাছে উঠে যাচ্ছে। একজন বলছে, ‘দেখে এলুম রাক্ষস বাচ্চাটা জন্মানোর পর পরেই হামা দিতে শুরু করেছে।’ আরেকজন বলছে, ‘রাক্ষসটা ঘন্টায় ঘণ্টায় লম্বায় বাড়ছে। জন্মের পরে যা দৈর্ঘ্য ছিল ইতিমধ্যে তার দ্বিগুণ হয়ে গেছে।’ যারা এতক্ষণেও বাচ্চাটার দর্শন পায়নি তারা অধৈর্য হয়ে উঠেছে। সবাই দল বেঁধে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢোকার চেষ্টা করছে। আমি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলাম। ওয়ার্ড ফাঁকা করতে চাইলাম। লোকজনকে বোঝাতে চাইলাম এটা মোটেই রাক্ষস নয়। ... ...
ফরসা করার ড্রাগগুলি কি রকমের আর সেগুলি কি ভাবে শরীরের ত্বকের উপর ক্রিয়াকরে থাকে ? এগুলির বেশীর ভাগই একপ্রকার পেট্রল জেলী বা ওই জাতীয় জেলপলিমারের বেসে মিশিয়ে কিছু সুগন্ধ রসায়নের নির্ষাস দিয়ে তৈরী করা হয়।আর কিছু গাছপালা যা ৬০ বছর আগেও আগাছা মনে করে গরু ছাগলকে আটকানোর জন্য মাঠে বেড়ার কাজে ব্যবহিৃত হত যেমন আ্যলুভেরা এখন সর্বঘটে কদলী। কাজেই একটু আ্যলুভেরার জেলী তাতে মিশিয়ে দিয়ে জিনিষটিকে প্রায় প্রাকৃতিক নির্যাস ঘোষনা করা হয়।এবারে একটু কালো শরীরের বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যাবে যে সূর্যের অতি বেগুনী আলো ও গরম আবহাওয়ার মাত্রারিক্ত প্রভাব যা মানুষের ক্ষতিকারক সেগুলো থেকে বাঁচার জন্য প্রকৃতি এক ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। এক অতি প্রয়োজনীয় আ্যমিনো আসিড,টাইরোসিন, এ কাজের প্রধান রসায়ন।এবারে টাইরোসিনেজ এনজাইমের দক্ষতায় এই টাইরোসিন প্রথমে অতি প্রয়োজনীয় ডোপা নামক রসায়নে পরিবর্তীত হয়ে বেশ কয়েক এনজাইমের ধাপে ধাপে প্রভাবে কালো রঙের পিগমেন্ট , মেলালিন, তৈরী করে থাকে। এই মেলানিন তৈরীর সংযুক্ত এনজাইম প্রক্রিয়াকে মেলানোজেনেসিস বলা হয়ে থাকে।এই মেলালিনই হলো কালো রঙের উৎস যা ত্বকের নিচে অবস্থান করে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতির হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এখানে বলে রাখা ভালো যে অতি বেগুনী রশ্মিও তিন প্রকারের আর এর মধ্যে শুধু একটি একটু ক্ষনের জন্য গায়ে পড়লেই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি তৈরী করে থাকে। যার শরীরে মেলানিন কম বা নেই সে ফরসা আর যার শরীরে খুব বেশী সে খুব কালো। ... ...
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, গুরুতর দুর্নীতিতে লিপ্ত হলেও সহজে কোন তালিকাভুক্ত হাসপাতালকে তালিকা থেকে বার করা যাবে না। জালিয়াতিকে পাঁচটি শ্রেণীতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। কোন এক শ্রেণীতে তিনবার অভিযুক্ত না হলে তাকে তালিকা থেকে বার করা হবে না। মানেটা এরকম বিভিন্ন শ্রেণীতে জালিয়াতি করার মোট অন্তত ১০টা সুযোগ পাবে একেকটা হাসপাতাল। ... ...
নর্মাল ডেলিভারির সুফল অনেক বেশি । কিন্তু মেডিক্যালি প্রয়োজনীয় হলে সিজার করতে হবে। এর বাইরে ডাক্তারের "ইচ্ছে" বা মায়ের/বাড়ির লোকের "ইচ্ছে"কে আমরা যত বেশী মর্যাদা দেব, তত বেশী মা ও শিশুর স্বাস্থ্যহানি ঘটবে। ... দিনের শেষে সিজার নামক এপ্রোপিয়েট টেকনোলজি বা যথোপযুক্ত প্রযুক্তিকে কাঠগড়ায় তুলে লাভ নেই। প্রযুক্তির ব্যবহার বা অপব্যবহার, সবটাই আমাদের হাতে। সচেতন হওয়ার সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। ... ...
এক্সডি আর মেডিসিনের কোর্স হলো দু'থেকে তিন বছরের। বর্ষার ক্ষেত্রে আমায় তিন বছরই দিতে হয়েছিলো। রোগ বাসা বেঁধেছিলো বড্ডো বেশি গভীরে। এই তিনবছর বর্ষার দাদা নিয়ম করে প্রত্যেক ভাই-দুজে বর্ষাকে নিয়ে গেছে। আবার কথা মোতাবেক ফেরতও দিয়ে গেছে। বর্ষার এখানে থাকা প্রায় সাত বছর হতে চললো। বর্ষা যখন এসেছিলো, তখন খড়ি ওঠা শনের নুড়ি জড়োসড়ো একটা রোগে ভোগা বাচ্চা। সেই বর্ষাই এখন আমার ওয়ার্ডের সবথেকে স্টাইলিশ মেয়ে। রাউন্ডের সময় সবথেকে টিপটপ হয়ে বসে থাকে। ঝকঝকে হাসি, পনিটেইল চুল, নেলপালিশ পা। আমি খুনসুটি করি--" হেব্বি লাগছে তো রে ভাই.." , বর্ষা সরস্বতী পুজোর দিনের মেয়েদের মতো হাসে। ... ...
ডাঃ খান বললেন, “বাজে বকিস নে ঐন্দ্রিল। বাষট্টি পেরিয়ে তেষট্টি হল। আমার এখন এক এবং একমাত্র লক্ষ পঁয়ষট্টি ক্রস করে এই হেলথ সার্ভিস থেকে পালানো। মাঝরাতে এসব ঝামেলার রোগী দেখলে কাউন্সিলিং তো দূরের কথা, গালি দিতে ইচ্ছে করে।” ... ...
কোনভাবেই শিডিউল H তালিকায় থাকা ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি করা যায় না, এবং বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করাও যায় না। বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার (এই হিসেবেটি বছর তিনেকের পুরোনো) ওপরে ব্যবসা ষ্টেরয়েড ক্রিমের, তার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ কোন প্রেসক্রিপশন ছাড়াই, যার প্রায় পুরোটাই অপব্যবহার, পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে যেটা সম্ভব নয়। ... ...
বিরাট উদ্যমের পরেও বাংলায় সাম্প্রদায়িকতা জয়ী হয়নি। বর্ণহিন্দু আসনগুলিতে কংগ্রেস বিপুলভাবে জিতলেও, মুসলমান আসনে মুসলিম লিগ একেবারেই ভালো করেনি। বেশিরভাগ আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্টি হয় মূলত মুসলমান চালিত কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ দল, ফজলুল হকের কৃষক-প্রজা পার্টি ( মুফাফফর আহমেদ এবং নজরুল ইসলাম উভয়েই এই পার্টির ঘনিষ্ঠ ছিলেন)। ফজলুল হক কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকারের প্রস্তাব দেন। ১৯০৫ সালের ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ণ রেখে বাংলায় হিন্দু-মুসলিম উভয়ের প্রতিনিধিত্বে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের সম্ভাবনা তৈরি হয়। এবং শুনতে আশ্চর্য লাগলেও গান্ধির নেতৃত্বে ধর্মনিরপেক্ষ দল কংগ্রেস দ্বিতীয়বার ধর্মনিরপেক্ষতার পিঠে ছুরি মারে (প্রথমটি ছিল কেবলমাত্র হিন্দু আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত)। কংগ্রেস জানায়, তারা জোট সরকারে অংশগ্রহণ করবেনা, সমর্থনও দেবেনা। ফজলুল হক বাধ্য হন মুসলিম লিগের সঙ্গে জোটে যেতে। ... ...
লারপেন্ট সাহেবের দপ্তরের ভার নিলাম আমি। প্রথম দিন অফিসে ঢুকে মনে হল ভুল করে কোন ছাপাখানায় চলে এসেছি না তো? পর পর দাঁড়িয়ে আছে ফোটোকপি মেশিন। হু হু করে কপি হচ্ছে দিস্তে দিস্তে কাগজ। বান্ডিল বান্ডিল অডিট রিপোর্ট। ৩৩৫৪ টা গ্রাম পঞ্চায়েত, ৩৪১ টা পঞ্চায়েত সমিতি আর ১৮ খানা জিলা পরিষদ। পৌরসভা আর কর্পোরেশনও পিছিয়ে নেই। চারদিকে শুধু কাগজ কাগজ আর কাগজ। বসার জায়গা নেই, চলা ফেরার জায়গা নেই ।ফাইলের পেছনে চাপা পড়ে যাচ্ছে মানুষের মাথা। উন্নয়নের খতিয়ান কাগজবন্দি করে চলেছে লোকাল অডিট অফিস। এমন অদ্ভুত অফিসে এর আগে কাজ করিনি। ... ...
"সকল শোকের কাছে পড়ে থাকে পাথরের হাত একটি বিষণ্ণ গাছ ছায়া নামে সূর্য ডুবে যায় কোথা যায়, কার কাছে নামিয়ে রেখেছে তার সারা দিন ভার" শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের চারটি কবিতা ... ...
সমিধ বরণ জানার কবিতা ... ...
হাজার বছর আগের কবিরা এমনকি আজকের ফেসবুকে স্টেটাস আপডেট দেওয়া কবিদের সঙ্গেই যেন কিভাবে এক অলীক আত্মীয়তায় রয়েছেন। তাই , কাহ্নু, কৃত্তিবাস, জয়, বিনয় , সুনীল, মৃদুল, জয়দেব(বসু), সোমনাথ যেন নিরবচ্ছিন্ন কালপ্রবাহে একই সূত্রে বাঁধা, কিন্তু তাদের দেশ একই।সে আমাদের বাংলাদেশ, আমাদেরই বাংলা রে।মনে পড়ে গেল সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের এই কবিতায় সত্যজিৎ রায়ের কথা। মনে পড়ে গেল বিভূতি ভূষণ। অপুর হাতে ধরা গ্লোব, সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের এই কবিতা আবৃত্তি করে অপু এই পুরস্কার জিতেছিল। সুদুরের পিয়াসী, কৌতূহলী, অপু এই গ্লোব সবসময় হাতে রাখত, সত্যজিতের ‘অপরাজিত’ সাক্ষ্য দেয়। কিন্তু এও মনে পড়ে গেল সত্যেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের অভিযোগ: ' সত্যেন করতেন কিছু/যদি না ছুটতেন ছন্দের পিছু পিছু'। ... ...
একটি উপকারী অহিংস পশুর ওপর প্রথমে মাতৃত্ব ও পরে দেবত্ব আরোপিত হলে তা হয়ে ওঠে রাজনীতির কান্ডারী দের হাতের অস্ত্র, ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গার কারণ ও আক্ষরিক অর্থেই ভোট বৈতরণী পার হবার মাধ্যম। গোরুর বিবর্তন- ইতিহাসের এই অনুসন্ধান ভক্তিভাব না জাগিয়ে প্রশ্নমুখর ব্যঙ্গের ঝিলিকে চোখ ধাঁধাবে এটাই প্রত্যাশিত। সে দিক থেকে শুভাশিস মৈত্রের "এক ডজন গরু ও অন্যান্য"কে ব্যঙ্গ রচনা বলা যেতেই পারে, কিন্তু সংকলনটি শুধু তাই নয়। তোষামুদে পুঁজি , সমাজ, রাজনীতি ও সুবিধাবাদী ভাঁড়- সকলের বিপরীতে দাঁড়িয়ে শানিত যুক্তি ও মানবিক বিশ্লেষণের চিরকেলে লড়াইয়ের একটা যুদ্ধ -দলিলও বটে। ... ...
কয়েকটি কবিতা - বেবী সাউ ... ...
মণিশঙ্কর বিশ্বাসের কবিতা ... ...
বড় লম্বা উঁচু পাঁচিলটাকে দেখলে মনে হয় প্রেসিডেন্সি জেল। টুকনু প্রেসিডেন্সি জেলের কথা কী করে জেনেছে সেটা তাকেই জিজ্ঞেস করো বরং। সেই পাঁচিলের গা বেয়ে যেটুকু রোদ এসে পড়েছে সেই রোদে একটু একটু করে বসার জায়গা করে নেবে ওপার থেকে আসা মানুষ গুলো।দিদা নেই কাজেই বড়দিনটা এই বালির বাড়িতেই কাটাতে হয়।টুকনুর এখন ক্লাস এইট। পাড়ার ছেলেদের সাথে ফিস্ট করতে যাওয়ার পারমিশান পাওয়া যায়নি বাড়ি থেকে।পাটিসাপটা নেই।একমাত্র ডাক্তার কাকিমা কিস্কু পাঠিয়েছেন বাড়িতে বানানো কেক।কয়েকটা চকলেট।সেই দিয়ে কিছুতেই মন ভরছে না।গোরা কাকুর চিলেকোঠায় গিয়ে বিস্তর নালিশ জানিয়েছে সে।এই নাকি তোমাদের সাম্যবাদী সমাজ? প্রত্যেকের সমান অধিকার?বাড়িতে আসলে টুকনুর কোন ভয়েজ নেই। কেউ শোনেনা তার কথা। “ওরা আমাদের গান গাইতে দেয় না...ভিয়েতসংগ্রামী পল রবসন...”।গোরাকাকু কিছু বলে না। ... ...
বাজার অর্থনীতির নিয়মে স্বাস্থ্যপরিষেবাকে চলতে দেওয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি অমোঘ যুক্তি রয়েছে। প্রথমত, বাজারের অত্যাবশ্যক শর্ত, তথ্যের সাম্য। অর্থাৎ, ক্রেতা এবং বিক্রেতা দুজনেই কেনার জিনিসটা নিয়ে সমান অবগত থাকবেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে, হাজার গুগলের সহায়তা সত্ত্বেও, চিকিৎসক এবং রোগীর মধ্যে এই তথ্যের সাম্য আসা একেবারে অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, ফ্লোরিডার বিচারকের যুক্তিটি। কেনার বাধ্যবাধকতা কাজ করলে বাজারের নিয়ম খাটে না। আপনার যদি দামে না পোষায়, এবং তদসত্ত্বেও যদি আপনি কিনতে বাধ্য হন, তাহলে বাজারের নিয়ম চললো কি? আপনি যদি সত্যিই অসুস্থ হন, তাহলে তো আপনি যেকোনো মূল্যেই, ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও, চিকিৎসা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতি বছর, এই দেশে কয়েকলক্ষ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নীচে চলে যাচ্ছেন, স্রেফ চিকিৎসার খরচ জোগাতে না পেরে। অন্তত খাতায়কলমে, তত্ত্বগতভাবে, বাজার অর্থনীতি কিন্তু এমন পরিস্থিতির কথা বলেন না। তৃতীয়ত, বাজারের নিয়ম অনুসারে, ক্রেতা এবং বিক্রেতার সম্পর্কটি সরাসরি এবং সেইখানে তৃতীয় ব্যক্তির সরাসরি লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রশ্ন নেই (মধ্যবর্তী মুনাফাভোগী বা দালালের প্রশ্ন আনছি না)। ... ...
গত ১৭ই ডিসেম্বর ২০১৮ লোক সভায় "ট্রান্সজেন্ডার পার্সনস (প্রোটেকশন অফ রাইটস) বিল" নামক একটি প্রস্তাবিত আইন পাশ করা হয়। ট্রান্সজেন্ডার অর্থাৎ রূপান্তরকামী ও প্রান্তিক লিঙ্গের মানুষদের অধিকার সংক্রান্ত এই বিল বা খসড়া আইনটি ২০১৬ সালে ভারত সরকারের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক (Ministry of Social Justice and Empowerment) প্রথম সংসদে পেশ করেছিল । তখন রূপান্তরকামী এবং প্রান্তিক লিঙ্গ পরিচয়ের ব্যক্তিবর্গ এই বিলের নানারকম সমস্যাজনক দিকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয় এবং বিলটি সংশোধনের জন্য তাঁদের মতামত এবং সুপারিশ জানায় । অথচ যাদের অধিকার সুরক্ষার নামে এই বিল, তাদেরই মতামত অগ্রাহ্য করে সরকার ডিসেম্বর ২০১৮তে পুনরায় বিলটি পেশ করে, বেশিরভাগ অংশ অপরিবর্তিত রেখেই। ... ...
আজ আমাদের অগ্রজ মনোজ মিত্রর জন্মদিন। তিনি ৮০ সম্পূর্ণ করে ৮১-তে পা দিলেন। ভারতীয় নাটক, নাট্য সাহিত্যে তাঁর অবদান পাঠক এবং নাটকের দর্শক মূল্যায়ণ করবেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দূরের পাঠক হয়ে তাঁর নাটক পড়ি। এবং উচ্চ মানের সাহিত্য পাঠের স্বাদ পেয়ে থাকি। অসামান্য বহুমাত্রিক সংলাপ পড়ে মুগ্ধ হই। সেই ১৯৫৯ সালের মৃত্যুর চোখে জল একাঙ্ক থেকে চাকভাঙা মধু, পরবাস, সাজানো বাগান, গল্প হেকিম সায়েব, রাজদর্শন, যা নেই ভারতে, অশ্বত্থামা, আশ্চর্য ফান্টুসি, ভেলায় ভাসে সীতা, অলকানন্দার পুত্র কন্যা......তালিকা বাড়াব না। ১৯৭৫-৭৬ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে নরক গুলজার নাটকের সেই গান, ' কেউ কথা বলো না, কেউ শব্দ করো না, ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন, গোলযোগ সইতে পারেন না' তিনিই লিখেছিলেন। সেই গান এখন ভেসে বেড়ায় সব রকম সেনসরশিপের বিরুদ্ধে। ... ...