ফর্মা সেলাই বাঁধাই ফ্লেক্স ফ্রেম ইঞ্চি মিলিমিটার ব্লার্ব দাম লিস্টি এইসব নিয়ে জেরবার হতে হতে আর্ধেক বইমেলা অপসৃত। তারপর পুরাতন টই হাঁটকাতে হাঁটকাতে মনে হলো বইমেলার পদ্য তো কম লিখিনি দেখছি। কিন্তু একে আমার কথা হেথা কেহ তো বলে না, করে শুধু মিছে কোলাহ, তার ওপর দৃষ্টিতে আর হয়না সৃষ্টি আগের মত আর সে ফুল। তাই ভাবলাম একটু আত্মপ্রচার ও বীক্ষণ করে রাখি, মহাকালের মর্জি, কাল হয়তো নিক্লিআর বোম পড়ে সব ফৌত হতে গেল। ... ...
নিকেশ হওয়া আহমদনগরের সঙ্গে যুক্ত মারাঠা সর্দারদের কিনে নিচ্ছিল বিজাপুর অথবা মোঘলরা। শুধু মারকাট নয়, দক্ষতার সঙ্গে আঞ্চলিক শক্তি - বিশেষ করে মারাঠা নানা সর্দারদের সঙ্গে আঁতাত করে নিজের প্রভাব ক্ষেত্র বাড়িয়ে চলেছিলেন শাহাজাদা ঔরঙ্গজেব। যুদ্ধ পেশায় যুক্ত চাষীরা দুদলে ভাগ হচ্ছিল আর রাজা-বাদশাহের চাপানো ছকের বাইরে মারাঠি ভাষী রায়তদের মধ্যে নিম্নবর্ণের জাগরণ হচ্ছিল, মারাঠা জাতীয়তাবাদের ভিত্তি তৈরি হচ্ছিল তলেতলে। নামদেবের ঐতিহ্যে আরেক শুদ্র ভক্তিবাদী মহান কবি তুকারাম (১৬০৮-১৬৪৯) উঠে এলেন অর্গলমুক্ত স্থানীয় ভাষায়, কুনবি শূদ্র রায়তের প্রতিনিধি হিসেবে :ভগবান তুমি কুনবি করেছ মোরে নইলে কবেই মরে যেতাম দ্বিচারিতার ঘোরে ভগবান তুমি বাঁচিয়ে দিয়েছ মোরে নাচে তুকা পড়ে তোমার শ্রীচরণের দোরে। ... ...
নয়া সঙ্ঘী তত্ত্ব। ব্রিটিশরা না এলে রেল বিমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি ভারতে আসতো না। মূর্খের প্রলাপ। প্রযুক্তিতে এখন দুনিয়া শাসন করছে চীন জাপান জার্মানি। সে-সব দেশ ইংল্যান্ড কখনও শাসন করেনি। তাজমহল অজন্তা ইলোরার প্রযুক্তি কোথা থেকে এলো?কোন প্রযুক্তিহীনতায় পৃথিবীর জিডিপির ২৭% ভারতের হয়েছিল? ইংল্যান্ড স্পেন সহ তথাকথিত উন্নত দেশের বণিকরা ভারতে কেন আসতো?রপ্তানি করতে না এখান থেকে পণ্য কিনে নিজের দেশে আমদানি করতে? ... ...
সকালবেলার আলো এমনভাবে ভিজিয়ে দিচ্ছিল চোখ আর্মহার্স্ট স্ট্রিটকেও সুন্দর দেখাচ্ছিল, আর্মহার্স্ট স্ট্রিট এখন রামমোহন সরণি সেই সরণির দু'পাশের গাছ দুজনকে আলিঙ্গন করতে এতটাই উদগ্রীব যে এটাকে লাভার রাস্তা মনে হচ্ছে, আসলে আমার মনটা এত ভালো করে দিয়েছো কদিন আমার প্রিয় বিট্টুর মৃত্যু শোকও অল্প হাল্কা লাগছে বহুদিন কোনও খুশির খবর ... ...
আমার সঙ্গে বিনয়ের শেষ দেখা হয়েছিল বছর দুয়েক আগে, আমি সেদিন একটু তাড়াতাড়ি দোকান থেকে ফিরছি, বর্ষার রাত, বাড়িতে কৃষ্ণা আর বনি একা আছে, সেই ভেবেই একটু তাড়াতাড়ি দোকানের ঝাঁপ নামিয়ে, সবে সাইকেলে উঠে হাত দশেক এসেছি, এমন সময় পাশের সুড়কির রাস্তা থেকে বিনয় বেরিয়ে এসে "এই দাঁড়া দাঁড়া" বলে পিচ-রাস্তায় দাড়িয়ে গেল। ... ...
এই এক জীবনে কলকাতার কতো কি পরিবর্তন দেখলাম তা বলার নয়। যখন যেমন মনে পড়বে লেখার চেষ্টা করব। তখন কলকাতার উপকন্ঠে জলাশয়ের সংখ্যা অনেক বেশী ছিল।তার টানে পানকৌড়ি, বক ও মাছরাঙাদের আনাগোনা লেগেই থাকত। একটি তেতুল গাছে বকের আস্তানা ছিল।মেঘলা দিনে যখন অসংখ্য বকের জন্য গাছটি সাদা হয়ে যেত তখন ভারি সুন্দর দেখাত।সেকালের কলকাতায় পাখি প্রচুর দেখা যেত।সকালে পাখির ঝাঁককে দলবেঁধে খাবারের সন্ধানে পূব দিকের জলাভূমির দিকে যেতে দেখতাম ... ...
পাহাড়চূড়ার সেই রাতটি আজও মনে পড়ে। / দিনের শেষে পাখিরা ফিরেছিল কুলায়। / কিছু পরেই, সূর্য গেল অস্তাচলে।
ক্যালেন্ডার বলছে বর্ষাকাল। অথচ কলকাতা শহর জুড়ে যেন বসন্তের কৃষ্ণচূড়ার রং! রাস্তায় পা রাখলেই চোখে পড়ছে অসংখ্য লাল পতাকা। পোস্টার ব্যানার দেয়াল-লেখায় সেজে উঠছে শহর। এখানে ওখানে চোখে পড়ছে পথসভা। শুনলাম নানা জায়গায় ঘরোয়া বৈঠকও চলছে। এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) ৫ আগস্ট ডাক দিয়েছে ব্রিগেড সমাবেশের। এই দিন এসইউসিআই(সি)-র প্রতিষ্ঠাতা মার্কসবাদী দার্শনিক শিবদাস ঘোষের জন্মশতবর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে এই আয়োজন করেছে তারা।দুনিয়া জুড়ে বামপন্থীদের মধ্যে যখন হতাশা, তখন এই কলকাতায় একটা বামপন্থী দল একা ব্রিগেডের ডাক দিয়েছে দেখে যেমন বিস্মিত ... ...
কাল রাতে ঘুমোবার সময় সাত আটটা লাইন লিখেছিলাম, ঐ যাকে আমি কবিতা বলি, সেভ করে ঘুমিয়ে গেলাম। সকাল বেলা যখন মোবাইল খুললাম, প্রথমেই হাত গেল সেই কচি কচি সদ্যজাত কয়েকটি লাইনের ওপর। প্রথমে একটি শব্দ বদলে দিলাম, তারপর আরেকটি, তারপর একটি লাইন, দুটো লাইন, তিনটে লাইন, আধঘন্টার মধ্যে সবকিছু বদলে গেলো। গতরাতের একটি অক্ষরও না। এখন যেটা হলো সেটা কি নির্মান। এইসমস্ত পংক্তি কি সত্যিই আমার, না কাল রাতে যেগুলো লিখেছিলাম সেগুলো আমার ছিল। এই বহতা দিনটি কি আমার? না পেরিয়ে আসা সেই নির্জন অন্ধকারতম দীঘির ঘাটটি । কোনটি? মনে হলো বিনির্মিত হয়ে যা এসেছে সেটাই সুন্দর। কিন্তু বন্যতা নেই।কবিতা তো ঐ ... ...
হিন্দুবীর ও বীরাঙ্গনাদের জন্য চিন্তায় আমার ঘুম হয়না। কাল থেকে ভাবছি, এবার আস্ত একটা ইদ চলে গেল, কিন্তু ঢাকার রাস্তা গরুর রক্তে লাল, প্রতি বছরের ন্যায়, এবার এরকম কোনো ছবি দেখছিনা কেন। ঢাকার রাস্তা লাল না হলে পশ্চিমবাংলায় হিন্দুত্ব টিকবে কীকরে। ভেবে ঘুম হচ্ছিলনা, এমন সময় শান্তি। ফিডে চলে ছবি। কুরবানির রক্তে ঢাকার সেই লাল হয়ে যাওয়া রাস্তা, এত লাল, যে, একটা কাস্তে-হাতুড়ি মেরে দিলেই চিনের পতাকা হয়ে যেত। ধন্যবাদটা ঢাকার নিকাশী ব্যবস্থা, নাকি ফোটোশপ ... ...
(শেষ পর্ব) কলতান হেসে হরিপ্রসাদকে বলল, ' আসুন আপনারা .... আমরা পেছনের ঘরে বসে একটু কথাবার্তা বলি .... 'আগরওয়ালজি একগাল হেসে বললেন, ' হ্যাঁ চলুন স্যার ... 'স্বামী স্ত্রী দুজনে কলতানের পিছন পিছন একটা ঘরে গিয়ে ঢুকল। অনেক পুরণো বাড়ি, ছোট বড় মিলিয়ে অনেকগুলো ঘর ।----- ' বসুন বসুন হরিজি। বসুন ম্যাডাম ... আপনাদের মতো ওয়েল ম্যাচড পেয়ার আমি বেশি দেখিনি। খুব ভাল লাগে আপনাদের ... ...
মিথ্যা কে মহান করে,আবার মসনদ ক্রয়-ঘোর অন্ধকারে;হয়তো মানুষ নয়-হয়তো বা শকুন, হায়েনার বেশেহয়তো ভয়ের কারণ হয়ে নিরন্ন এই দেশে!!
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে রাস্তা পার করে যখন ট্যাক্সিতে উঠলাম, তখন সন্ধে ৮টা ১০-১৫ হবে। শহুরে, গৃহমুখী, নিত্যযাত্রীর তুল্য তিক্ত ব্যক্তিত্ব অন্যত্র, অন্য সময় দুর্লভ। গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় সামনেই দুজনের মধ্যে তীব্র তক্কাতক্কি, অল্প ধাক্কাধাক্কি - এসব হয়ে গেল। আজকাল কলকাতায় গাড়ি বুক করাও স্ট্রেসফুল - কেউ ডেস্টিনেশন শুনে 'আসছি' বলে ক্যান্সেল করে, তো কেউ মিষ্টি করে 'কোথায় যাবেন' জিজ্ঞেস করেই বলে 'অফলাইন' করে দেওয়ার কথা। পা খোঁড়া, অতএব গাড়ি বিনে গতিও নেই আপাতত। সব মিলিয়ে, মেজাজের পারা সামান্য গম্ভীরের দিকেই ঢলে ছিল। ফোন এল এক পোস্টডক-রত জুনিয়র বন্ধুর। কথা সেরে কিন্ডল খুলেছি সবে, সামনের সিট থেকে ড্রাইভারের প্রশ্ন, "আপনি কি ... ...
কবিতা ও কিছু কথাসুদীপ ঘোষাল কবিতা ছড়িয়ে আছে জীবনে,প্রকৃতির মাঝে।তবে সবসময় সে ধরা দেয় না।প্রত্যকের অন্তরে জাগ্রত একজন, সদা কথা বলে নিজের সঙ্গে। তার জন্য আবেগ আর, সাধনার প্রয়োজন। কবিতালেখক, লিখতেই পারেন কিন্তু কবিতা হল কি না পাঠক বলবেন।প্রেম করা যায় না,হয়ে যায়। একজন কবির মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, মনের ভিতর ভীষণভাবে অনুরণনশীল বস্তুর বহিঃপ্রকাশ কবিতা লেখায় সমৃদ্ধ হচ্ছে কী?লেখার সময়ে সচেতন ভাবে লেখনীর মধ্যে কবিতার ভাব অনুভব করি না! অবচেতন মন থেকে উঠে আসা দিনলিপির বোধকে প্রকাশ করি কি শব্দচয়নে? শব্দচয়ন সঠিক হচ্ছে কি? কবিতা লেখার কি কোন নিয়ম হয়। কবিতার কি ব্যাকরণ হয়? নানা মুনি নানা মত? অনেকে বলেন, প্রচুর পড়াশোনা না করলে কবি হওয়া যায় না। আবার বাস্তবে দেখি নিরক্ষর ... ...
প্রেম মানেই সমস্যা। বিয়ের আগের দিন দিঠি আমাকে বলল, আমি অহর্নিশকে চুমু খেয়েছি।তাতে কোনো সমস্যা হয়নি, খেয়েছে তো কী আর করা যাবে। তাই আমি কিছু বললামনা। দিঠি একটু থেমে বলল, শুয়েওছি।তাতেই বা আমার কী করণীয়। দিঠি এবার রেগে বলল, তুমি ভাবছ ইয়ার্কি? আমি ওকে ভুলতে পারিনি।আমি এবারও চুপ করে রইলাম। হিংসুটে দৈত্যদের যা করণীয়। দিঠি আরও রেগে বলল, - তোমার তাতেও কিছু বলার নেই?তা অবশ্য ... ...
বেনারস পর্ব ৩ ভোরবেলা অন্ধকার থাকতেই স্নান সেরে তৈরী হয়ে নিলাম বেরোবার জন্য। জলখাবার সেরে অদ্বৈত আশ্রমের মন্দিরে গিয়ে বসলাম। সকালের পূজো চলছে মন্দিরে। মন্দির চত্বরেই দুর্গা দালান – শ্রীশ্রীমা এবং শ্রীশ্রীঠাকুরের সন্তানদের পদধূলি ধন্য । কাশীধামে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করবার জন্য ভিঙ্গার রাজা স্বামী বিবেকানন্দকে কিছু অর্থ প্রদান করেছিলেন। কাশীতে মূলতঃ বেদান্ত প্রচারের উদ্দেশ্যে স্বামীজীর নির্দেশে এই বেদান্ত আশ্রম স্থাপন করেন স্বামী শিবানন্দ। নাম রাখা হয় "শ্রীরামকৃষ্ণ অদ্বৈত আশ্রম"। কোনোও পুণ্যস্মৃতি বিজড়িত স্থানে গেলে তা অনুভূতিতে ধরা দেয়। গোটা বাড়িটি জুড়ে যেন কি এক আধ্যাত্মিকতার পরশ! শত বছরেরও বেশী সময় পার হয়ে গিয়েছে এই আশ্রম বাড়িটির উপর দিয়ে। দেওয়াল, থাম, ... ...
মাটির মূর্তি ভগবান হয়ে যান, আবেগ আর বিশ্বাস জন্য। সেই আবেগ কাজে লাগিয়ে চলে রাজনীতি। গান্ধীজীর জনপ্রিয়তা কমাতে একটা রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছে নেতাজীকে আরও সম্মান দিতে। তাই পাড়ায় পাড়ায় ছোট মেজো গুটকাখোর নেতারা হাজির
জেনোসাইড, সিলেট। ২৫ মার্চ রাতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী হত্যাযজ্ঞ শুরু করে শহরে। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের বাঙ্গালী সৈণিকরা ও প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেন। ২৫ মার্চে আগরতলা মামলার আসামী, পাকিস্তান আর্মি থেকে বহিস্কৃত ক্যাপ্টেম মুত্তালিব প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছিলেন সিলেট শহরে। হবিগঞ্জের দিক থেকে ব্রিগেডিয়ার সিআর দত্তের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর আরেকটি দল ও এগিয়ে আসে সিলেটকে শত্রু মুক্ত করতে। কিন্তু ৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিমান আক্রমন শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ হন। পাকিস্তান আর্মি সিলেট শহরের নিয়ন্ত্রন নিয়ে আরো ভয়ংকর তান্ডব শুরু করে। তারা ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাঙ্গালী পুলিশদের হত্যা করে। ৯ এপ্রিল সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আক্রমন করে কর্তব্যরত অবস্থায় সার্জারী ... ...
সালটা ১৮৯৯। চুরুলিয়া গ্রামের আকাশের মুখ সেদিন গম্ভীর। গতরাত থেকে অবিশ্রান্ত ভাবে কেঁদে চলেছে সে, এমনকি সকালেও সে কান্নার বিরাম নেই। এমনই এক বর্ষণমুখর দিনে চুরুলিয়া গ্রামের শেষ প্রান্তে এক কুঁড়েঘরে জন্ম নিলেন দুখু মিঞা ওরফে কাজী নজরুল ইসলাম। বাবা ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। জন্মের পর থেকেই সংসার সীমান্তে স্বল্প রোজগেরে বাবা – মায়ের নিত্যদিনের এক অসম লড়াইয়ের স্বাক্ষী ছিলেন একরত্তি নজরুল। যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় খুব দ্রুত বদল ঘটছিল মানুষের যাপনে। খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছিল সমাজ অর্থনীতি এবং বিশ্বরাজনীতির মানচিত্র। সময়ও তার মতো করে গড়েপিটে নিয়েছিল নজরুলকে।১৯১৭ সালে মাত্র আঠেরো বছর বয়সে নজরুল যোগ দিলেন সেনাবাহিনীতে। ... ...