কুমিল্লার ঘটনায় এবং তার পর বাংলাদেশে পুজোর সময় বহু মন্ডপ আক্রান্ত। সবাই জানেন। যেটা জানা নেই, সেটা হল, হিন্দু 'ভির'রা কী করছেন? নিন্দায় ফেটে পড়েছেন? মিছিল-টিছিল করেছেন? বাংলাদেশ দূতাবাসে ডেপুটেশন দিয়েছেন? নিদেনপক্ষে নিন্দে করে একটা বিবৃতি? ছাপ্পান্ন ইঞ্চি কি একটা চিঠিও লিখেছেন? নাঃ। বালাই ষাট। বরং উল্টোটা। তথাগত রায় বলেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুরা ভালো আছেন। সে হয়তো হাসিনার আমলে হিন্দুরা সব মিলিয়ে ভালই আছেন, কিন্তু কুমিল্লার ঘটনার পর, নিন্দা নেই, হুঙ্কার নেই, স্রেফ মিনমিন করে বলা, হিন্দুরা তো ভালই আছেন। ভাবতে পারছেন? এই নাকি হিন্দু 'ভির'? ওদিকে বাংলার মুসলমানের মুক্তিসূর্য আব্বাস কী বলেছেন? হেবি হুঙ্কার ঝেড়েছেন। হনুমানের পায়ের কাছে কোরান? হালুম। যা ... ...
কপাল...কপাল ! যাক বাবা ইলেকট্রিক গ্রিডগুলো বসে যায়নি। সে কি আর এমনি এমনি। দিনভর রাতভর কি হয়রাণি কি হয়রাণি ।ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারদের নাভিশ্বাস ওঠার যোগাড় । তবে যাই বলুন, কেমন মজা হল বলুন তো।
গত ২০১১ সালে বামফ্রন্ট হেরে যায়। কেন হেরে যায়, তার চর্বিতচর্বণ না করে, যে নেতিবাচক ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেতেন, তারপরের সময়কাল গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এক ভয়ঙ্কর মুষল পর্বের কাল। বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়তে থাকে বামপন্থী দলগুলির সংগঠন। বামফ্রন্টের শেষ পনের আঠারো বছরে শরিক দলগুলিকে মাথা তুলতে না দেওয়ার যে প্রবণতা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল, তার ফলশ্রুতিতে দুই দিনাজপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বাসন্তী, গোসাবা, মুর্শিদাবাদে আরএসপি প্রায় হারিয়ে যেতে বসে। যদিও মুর্শিদাবাদে আরএসপি নিজের তৈরি স্বখাত সলিলে অনেকটাই নিজেরা ডুবেছে। আজ যে অধীররঞ্জন চৌধুরী কংগ্রেসের নেতা, তিনি তো আরএসপির দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্টি। আরএসপি এই অধীরবাবুকে তৈরি করেছিল সিপিআই(এম)কে শায়েস্তা করতে, যেমন করেছিল কলকাতায় পরেশ পালকে। ফরোয়ার্ড ব্লকের অশোক ঘোষ তাঁর বিশেষ পছন্দের অপরাজিতা গোপ্পীকে রাজনীতিতে তুলে ধরতে একদিকে কমল গুহকে উত্তরবঙ্গে চাপে রেখেছিলেন, অপরদিকে সিপিআই(এম)কে শায়েস্তা করতে এই কমল গুহকেই মাথায় তুলেছিলেন। ... ...
সাবভার্সানকে অনেকেই সন্দেহ করেন। আমিও। কারণ, সাবভার্সান সন্দেহজনকই। মঞ্চের কোন কোটপ্যান্টশোভিত কেষ্টবিষ্টুর দিকে হঠাৎ ধেয়ে আসবে পচা ডিম, কখন স্টেজের বক্তার পশ্চাদ্দেশে চিমটি কেটে পালিয়ে যাবে কোন ফচকে ছোঁড়া, কেউ জানেনা।সাবভার্সানে অনেকেই ফুর্তি পান। আমিও। কারণ সাবভার্সান ভবিষ্যৎবাণীর ঊর্ধ্বে। কারণ কখন কোন রোদ্দুর রায়ের মৌখিক খাঁড়া কখন কার উপর নেমে আসবে, কার মোক্ষপ্রাপ্তি হবে আজকের শুভপ্রভাতে, কেউ জানেনা। আমরা যারা ন্যালাভোলা কেরানিযাপন করি, তাদের ওইটুকুতেই ফুর্তি। কারণ ওর বেশি আমাদের মুরোদ নেই।সাবভার্সানে অনেকেরই অস্বস্তি হয়। আমারও। কারণ সাবভার্সান অস্বস্তিকরই। আমরা যে দাদ-হাজা-চুলকুনিকে পোশাকের নিচে চেপেচুপে রাখি, শত প্ররোচনাতেও চুলকে ফেলিনা, সাবভার্সান, সেই দাদ-হাজারই উদযাপন করে। রোদ্দুর রায়ের কার্নিভ্যাল ফুর্তির বসন্তোৎসব ... ...
রবিবারের দুপুরে চিকেন প্যাঁদানো মধ্যবিত্ত হিন্দু বাঙালি প্রায়ই গুরুপাক হজমকারী জোয়ান মৌরী চিবুতে চিবুতে বলেন, "আট্টা, মুঠলমান মানেই কি টেরোরিস্ট, বলো দি'নি?" টলিউডের শিবু নন্দিতা আবার বাঙালিদের নানাবিধ সেন্টিমেন্ট নিজেদের রাডারে ধরতে পারেন ভালো, তারপর সেইসব নিয়ে বস্তাপচা গল্পও ফাঁদতে পারেন। যেমন বাড়ির বউ কম্প্রোমাইজ করতে পারেনি বলে তার বর আজ অন্য কাউকে নিয়ে সুখী, যেমন বৃদ্ধ বরের মুতের ঘ্রাণ ফেরোমেনের সমান ... ...
রবি - জাতক ক্রূর, কৃতান্ত সদৃশ, শ্রবণশক্তিহীন, অতিমূঢ, সদা ক্ষুধিত, মস্তক ও চক্ষুরোগী, পরদ্বাররত এবং প্রবাসী হয়।
তোমার গানেই সকাল হয় / তোমার গানে সারা বেলা, / গাঙুর ভাবছে তোমার কথা / তোমার জন্য সুরের খেলা।
কারো কমড়িয়া পর রঙ্গ নাহি চড়ৈ। কালো কম্বলের পর আর নতুন রঙ ধরে না। - কবীর রসের মধ্যেই রস বর্ষণ হয়, অনন্ত কোটি ধারায়। - কবীর
ছোট্টবেলায় দেখেছিলাম গুপী বাঘা হিরক রাজ
" আমার ভাষা আমার অধিকার, বলে যাব, লড়ে যাব"...এটি এপারে চলতি শাহবাগ বিক্ষোভের একটি জ্বলন্ত শ্লোগান। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুরে কারা হেফাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শাহবাগ। ২খবরে প্রকাশ, ফেসবুকে লেখালেখির কারণে গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হন মুশতাক। এরপর ছয় দফায় তার জামিন আবেদন নাকচ করা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকেই তিনি কিছুটা অসুস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে। এদিকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও মুশতাক হত্যার বিচারের দাবিতে গত দুদিন ধরে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো লাগাতার বিক্ষোভ সমাবেশের মুখে শুক্রবার মুখ খুলেছেন সরকারের মন্ত্রীরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, লেখক মুশতাকের মৃত্যুর জন্য কারা কর্তৃপক্ষ দায়ী ... ...
লীলা মজুমদার বলেছিলেন "পাঁউরুটি হল অনেকগুলো ফুটোকে ময়দা দিয়ে জুড়ে রাখা।" জয়া মিত্র জিজ্ঞাসা করেছেন, "কবিতাও কি নয় অনেকগুলো চুপ করে থাকাকে কয়েকটা মাত্র শব্দ দিয়ে জুড়ে রাখা?" আমাদের মাস্টারমশাই কমলকুমার মজুমদার বলতেন -- "একমুঠো হারিয়ে যাওয়া মানুষকে মিলিয়ে দিয়ে... দুদন্ড জিরিয়ে নিয়ে... দুটো বিড়ি হাতবদল করে নিতে দেবার সরাইখানার নাম হলো গে পথ.."। আর একদিন, কমলকুমার আমাদের craft র ক্লাস নিচ্ছিলেন। হঠাৎ বললেন -- " ' পথ '- কি জানো? পথ হলো পথিকের মাঠের পাশ দিয়ে হেঁটে চলা আর আলপথে সহসা দেখতে পাওয়া আরেকজন পথিক কে ডেকে বলা -- আমি চললাম... তুমিও চলে এসো । " কিছুই না বুঝে বলেছিলাম -- " আর কলকাতা হলে ? ... ...
আমার মনের ভেতরে কোন সিসিটিভি ক্যামেরা নেই, এমনকি ২৪ কেন ১২ পিক্সেলে তোলা ছবিও নেই। ষাট সত্তরের দশকে ওসবের অস্তিত্ব আমাদের চেতনায় থাকার কথা নয়। আছে কিছু জলছবি, সময়ের ছোঁয়ায় বিবর্ণ, ধুসর। কিছু ডাকটিকিটও আছে, বিশিষ্ট ঘটনার, তেমনই অল্প কিছু ফার্স্ট ডে কভার। তাই গরহাজির কোন পূর্বাপর শৃংখলা। ... ...
শুভ জন্মদিন ...জয় গোস্বামী জয় গোস্বামীর কবিতা আমার খুব প্রিয়। কয়েকজন প্রিয় কবিদের কবিতা পড়লে, কিছু আবছা মতো ছায়াঘোর ঘনায়। যেন খরের ঘর হলো। এবার হালকা কুয়াশা পড়া শুরু হবে। ধানগাছের শুকনো শরীরে পা দিয়ে দিয়ে অনুভব করতে হবে শীতঋতুর ঘাম, তাতে কেটে যাবে গোড়ালির ত্বক। ঘরে ফিরে আমিও লিখতে পারব তখন হেমন্তকাল নিয়ে দু চারটি ঝরা পাতার চিঠি। আমার চোখ বিষাদ নিয়ে নেমে আসুক আশ্চর্য সব প্রেমের কবিতায়। তাই সমস্ত শব্দহীনতা এবং লেখাশূন্য দিনে আমি জয় গোস্বামীর কবিতা পড়ি। তারপর কবিতাগুলো কোথাও একটা ছেড়ে দেয় আমাকে, এই ছেড়ে দেওয়াটা ব্যাপক মুশকিলের, পোকার মত অসহ্য, চোখে মুখে অস্থিরতা, যেন কিছু একটা ... ...
আচমকা ধাক্কা। এক বুড়ো ট্যাক্সি। আধ ঘন্টার সফর। ক্যাসকেড থেকে তুলে আনা স্মৃতি।
সংযুক্তা শাড়িটা আপনার কাছে দিয়ে যেতে বলেছে। শাড়ির ব্যাবসা করে সংসার চালাতে পারবি? শাড়ি আজকাল প্রতিদিনের জন্য অনেকেই পরেনা। কি করবো কাকু? লকডাউনে আমাদের দুজনের চাকরিই চলে গেল। আমার বর তো ডিপ ডিপ্রেশনে ডুবে গেছে। অগত্যা আমাকেই শেষ সম্বলটুকু নিয়ে শাড়ির ব্যবসায় নামতে হল। তোর নাচের স্কুল – অনুষ্ঠানে আয় হয় না? কোভিডের ভয়ে সবই বন্ধ......সবাই তো আজকাল অনলাইনে শেখাচ্ছে... হাতে কলমে যা শেখার তা অনলাইনে শেখানো যায় বলে আমি মনে করি না। আমার বাবা যে ভাবে হাতে ধরে আমায় শিখিয়েছেন সেই ভাবে ছাড়া আমি শেখাতে পারবো না। শাড়ির ব্যবসাটা আমি ভালোবাসি না। নাচ আমি ভালোবাসি। আমি ভালোবাসা বিলোতে পারবো বিক্রি করতে পারবো না। ... ...
আমাদের ছোট্ট বেলায় খুব মজার ব্যাপার ছিল গরমের ছুটি। এখনকার সদা ব্যস্ত আর পরীক্ষা দিতে দিতে ক্লান্ত ছোট্ট পড়ুয়া রা বোধহয় এর মাধুর্য্য উপভোগ করতে পারবে না। ১৫০টা অঙ্ক, ৩০ পাতা বাংলা আর ৩০ পাতা ইংরেজী হাতের লেখা এই সব দিয়ে আমার মতো ফাঁকিবাজ ছেলেকে আটকানো যাবে? গরমের ছুটি শুরু হলেই আমি চলে যেতাম আমার গ্রামের বাড়িতে । গ্রামের বাড়ি আর মামার বাড়ি একই গ্রামে। হুগলী জেলার তারকেশ্বরর কাছে গোপীনগর বলে একটা গ্রাম। মামার বাড়ি তে আক্ষরিক অর্থেই অনেক মজা। বড়মামা, ছোট মামা, ছাড়াও ঝন্টু মামা, গুপী মামা, টোকন মামা আর সবার থেকে বড় হল দীপু মামা। মায়ের পিসতুতো ভাই রা। ... ...
২৫শে মে-র আগের মিনিয়াপোলিস আর ২৫শে মে-র পরের মিনিয়াপোলিসে অনেক ফারাক। পিটারের পরিবার আগে মিনিয়াপোলিসে থাকত। চুপচাপ সাতে পাঁচে না থাকা একটা জায়গা। এখন সেখান থেকে প্রতিবাদের গর্জন উঠে আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে গোটা আমেরিকায়।
শেষ রাতের দিকে আঁধি উঠেছিল। ক্ষুব্দ হাওয়ার বদ্ধ জানালা সার্সিগুলির উপর ধমাদ্ধম আঘাত। তারপর ফাঁক ফোঁকর ছিদ্র খুঁজে ধুলো হাওয়া ঢুকে আনন্দকুঞ্জ এপার্টমেন্টের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরগুলির মধ্যে নিদ্রিত লোকগুলিকে জাগিয়ে তুলে দিল দিল্লীর আঁধি। নিদ্রা চোখে মানুষগুলি ছোটাছুটি করলো কিছুক্ষন এ ঘর থেকে ও ঘরে, রান্না ঘরে, বাথরুমে, এখানে ওখানে, খোলা আধখোলা জানালাগুলি বন্ধ করতে।৫নম্বর গেটের গায়ে গুলমোহর গাছগুলির ডালপালা ভেঙ্গে পড়ার সশব্দ আওয়াজ শুনেছে অনেকে। তারপরেই তো বিজলী চলে গেল। ধক ধক শব্দে বন্ধ হয়েছে এসি। ইনভারটারের জোরে কিছু সিলিং ফ্যান ঘুরে যাচ্ছে আপন মনে। বাইরে আরো কয়েক মিনিট মাতামাতি করার পর হাওয়ার শান্ত হয়েছে। মৃদু মৃদু মেঘের আওয়াজ ভেসে আসছে দূর থেকে। ... ...