দিল্লি এবং লাগোয়া অঞ্চলে কৃষক আন্দোলন তুঙ্গে। হরিয়ানার সমস্ত খাপ পঞ্চায়েতগুলি দিল্লির কৃষক বিক্ষোভকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করেছে। অনেকগুলি খাপ পঞ্চায়েত সরাসরি বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করারও ডাক দিয়েছে। এর মধ্যে পাঞ্জাবের কৃষকদের আন্দোলনে খালিস্তানি স্লোগান দেবার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগটি খুব সম্ভবত বিজেপির আইটিসেলের প্রচার। কারণ যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছিল, বা বলা ভাল ভাইরাল করা হয়েছিল, সেটি অন্তত বছরখানেক আগের ব্রিটেনের ভিডিও। আইটি সেলের কারবার নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, কিন্তু এর মধ্যে পাঞ্জাবি অভিনেতা দীপ সিধু, যিনি আন্দোলনের মুখও বটে, একটি বিস্ফোরক কান্ড ঘটিয়েছেন। আন্দোলনে খালিস্তান যোগ থাকার অভিযোগ ওঠায় বরখা দত্ত, যিনি কারগিলের পর থেকেই প্রচন্ড 'জাতিয়তাবাদী' হয়ে উঠেছেন, দীপের একটি সাক্ষাৎকার ... ...
খবরটা শোনার পর একেবারে স্তব্ধ হয়ে গেল শাঁওলি। সোফার ওপর ধপ করে বসে পড়ে, নির্বাক হয়ে রইল খানিকক্ষণ। তারপর, নিচু গলায় ধীরে ধীরে সৌমিলিকে জিজ্ঞাসা করল, তুই ঠিক শুনেছিস? কোনও ভুল হচ্ছে না তো?
১সেন্ট প্যাট্রিক স্টেশনে নেমে আমি কতবার ওভারকোটের পকেটে হাত রেখে হেঁটে গেছি কুইনস পার্কের ভেতর দিয়ে;দেখেছি জমে-যাওয়া ফোয়ারাগুলো, বরফে বিপর্যস্ত পাখিদের শরীর। সিনেপ্লেক্সের সামনে অপ্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যুবক-যুবতীরা, গাড়ীর উইন্ডস্ক্রিন থেকে ঝরে পড়ছে তুষার,এসময় অন্ততঃ দুটো ফটোগ্রাফ আমার স্মৃতিতে ধরা থাকে: দুটোই বোলানিওর —নিকানোর পারার সঙ্গে।শীতের দুর্ঘটনাময় সন্ধ্যেগুলোয় যখন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার লার্নিং মডেল ট্রেন করাতে ব্যস্ত,জানতে ইচ্ছা করে ফটোগ্রাফগুলোর কথা তোমার কখনো মনে পড়েছে কিনা।তোমার অ্যাপার্টমেন্টে কতদিন যাইনি আর দেখিনি তামাটে রঙের বৃষ্টি, যা শুধু আমাদের যন্ত্রণা দেয়;আমাদের মাঝখানে একটি নিশ্চুপ অ্যান্টেনা মুখ তুলেদাঁড়িয়ে থাকে। ২ আমার মনে আছে একদিন আশ্চর্য নিরর্থক গলায় তুমি বলেছিলে: মহাবিশ্ব একটা হলোগ্রাম,এবং সমস্ত রাত আমরা তর্ক করেছিলাম কৃষ্ণগহ্বর আর তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র নিয়ে;এখন আমার শহর ... ...
নিউ ইয়র্ক সিটি।আমি অনাবিল চ্যাটার্জি । এদেশে এসেছি বছর তিনেক হল । খুব জমকালো রাস্তাঘাট ।ঝলমলে দোকানপাট। রাত নামলে আলোয় ঝলমল করতে থাকে গোটা শহর। অজস্র শপিংমলের ঔজ্জ্বল্যে ভেসে যায় চারপাশ। বসন্ত যেন দিনরাত আকাশে বাতাসে হেসে খেলে নেচে নেচে বেড়ায় ।
খাড়া পাহাড়ের চূড়ায় একজনই দাঁড়াতে পারেন। সুতরাং যিনি দাঁড়াতে পারেন তাঁর মূল্যায়ন কে করবেন? আর তাঁকে মূল্যায়ন করার সাহসই বা কার হবে? এই যেমন, একই স্বীকৃতি বিজ্ঞানে আছে, চিকিৎসা শাস্ত্রের আছে, সাহিত্যেও আছে আবার শান্তিতেও আছে। তাঁর সৃষ্টিতে লুকিয়ে আছে এক বিশ্বব্রম্ভাণ্ডের যে সাহিত্য, তার কাছে পৃথিবীর সমস্ত স্বীকৃতি অতি তুচ্ছ। আবার যে স্বীকৃতি শান্তিতে আছে সেই স্বীকৃতি সুরে নেই! কেন নেই, এর উত্তর আমি জানি না!! থাকলে কবীর সুমনের সুরের কাছে নোবেল কমিটির অনেক আগেই নিঃস্ব হয়ে যাবার কথা। ... ...
আজ প্রকাশিত 'আরেক রকম' পত্রিকা র আষাঢ় সংখ্যায় আমার একটা প্রবন্ধ রয়েছে। ৬ এর দশকে নির্মিত আপোসহীন সোভিয়েত বিরোধী বামপন্থা , সমাজের শুধু অর্থনৈতিক ভাবে না , সামাজিক ভাবে নিপীড়িত , বিপন্ন সমস্ত মানুষের পৃথক পরিচিতির প্রতিনিধিত্বের দাবীকে তত্বায়ন করার কাজে অভ্যস্ত নতুন বামপন্থা (আক্ষরিক অর্থে সে আমলের নিউ লেফট) , হঠাৎ একবিংশ শতকের নতুন ধরনের গণতান্ত্রিক মান্যতা পাওয়া আধিপত্যবাদের সামনে খানিকটা দিশেহারা হয়ে সর্বত্রই মহাজোটের কথা বলছে এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রপরিচালনা বিষয়ে মূলতঃ প্রশাসনিক ভাষ্যে আস্থা রাখছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলিকে ৫ এর দশকে গড়ে ওঠার সময়কার গরিমায় ফেরাতে চাইছে, এটা আমার কাছে একেবারেই কাকতালীয় নয়। ট্রাম্পের ধাক্কায় আমেরিকার ... ...
এ সব বই প্রকাশে আমরা ঝোলাইনি। বইমেলার প্রথম দিক থেকেই সবকটি বই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তার পরেও আনুষ্ঠানিকতার একটা ব্যাপার থাকে। যতই উল্টোপাল্টা প্রতিষ্ঠান হোক না কেন। অতএব এই বইগুলির প্রায় সবকটিরই আজ উদ্বোধন। ছবিতে রুহানির নামও চলে গেছে, কিন্তু রুহানির উদ্বোধন আজ নয়, পরশু। বাদবাকি সবারই একে একে মলাট উদ্বোধন হবে। বইমেলার ৯ নম্বর গেটের কাছে, শঙ্খ ঘোষ মঞ্চে। জায়গাটা আমাদের স্টলের ঠিক কোনাকুনি উল্টো দিকে। গোটা মাঠ পেরিয়ে। ফলে মাঠের দুই কোণে আজ গুরুর ঠেক। সন্ধ্যে ছটা থেকে। জাস্ট চলে আসুন। ... ...
চা খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণ বিষয়। যদিও নয়ের দশকে আমাদের ছেলেবেলা, তখন ধারণা ছিল চা খেতে যাওয়া মানে বে থা করবার কথা বলবে হয়তো। কারণ সেই যে বিখ্যাত গান "সায়েদ মেরা সাদিকা খেয়াল, দিল মে আয়া যায়, মাম্মি নে মেরি তুমহে চেয়ে পে বুলায়া হ্যায়"। কফি উইথ করণ থেকে বুঝলাম চা চক্র আলোচনার জায়গা। ... ...
এই বাংলার বুকেই একসময় দেওয়া হতো প্রকাশ্যে ফাঁসি আরও ভালোভাবে বলতে গেলে একসময়কার ভারতের রাজধানী কলকাতার বুকে প্রচলন ছিল এই প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার। হ্যাঁ চমকে ওঠার মতোই ঘটনা বটে, প্রকাশ্যে ফাঁসি তাও আবার খোদ কলকাতার বুকে!
সালটা ১৮২২। প্রতিষ্ঠিত হল নেটিভ মেডিক্যাল ইনস্টিটিউশন। নেটিভ মেডিক্যাল ইনস্টিটিউশনের প্রধান হিসেবে যোগ দিলেন এক বাঙালি ডাক্তার - মধুসূদন গুপ্ত। এরপর প্রায় তের বছরের বিরতি। ১৮৩৫ সালে ভারতীয় চিকিৎসাক্ষেত্রে ঘটে গেল এক নিঃশব্দ বিপ্লব। কল্লোলিনী তিলোত্তমার বুকে তৈরি হল মেডিক্যাল কলেজ। ইউরোপীয় পদ্ধতিতে ভারতীয় ডাক্তাররা আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে প্রথমবারের জন্য করমর্দন করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বদান্যতায়। ... ...
চররাশি - মেষ, কর্কট, তুলা ও মকররাশি
হারানো-প্রাপ্তি // মৌসুমী ঘোষ দাস গায়ের রঙ শ্যামলা, পরনে একটা রংচটা কুর্তি আর সালোয়ার। কুর্তির বুকের কাছে চুমকি জরির মত কাজ। কুর্তির পেছনের দুটো বোতাম খোলা, বোধহয় বোতাম ছিঁড়ে গেছে। মাথার চুল উস্কোখুস্কো। বোঝা যাচ্ছে তেল-জল পড়েনি অনেকদিন। হাতে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ, তাতে একটা অপরিষ্কার সোয়েটার। উদ্ভ্রান্ত দৃষ্টি। বয়স পনেরো/ষোলো মত হবে, সঙ্গে কেউ নেই। খুব সম্ভবত ভবঘুরে অথবা পাগলী। -মেয়েটাকে কিছুতেই ভুলতে পারছে না অনন্যা। মামাতো দিদি গোপাকে নিয়ে গিয়েছিল নার্সিং হোমে। জাতীয় সড়কের দুই ধারে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নার্সিং হোম, যেগুলো বেশিরভাগই কিছুদিন আগে পর্যন্ত হোটেল ছিল, তারই একটাতে ভর্তি রয়েছে মামাতো দিদির জা। ... ...
এই লেখা আপনারা দেখতে পেলে আমাদের এই ক্লাস সাফল্যমণ্ডিত হবে।
সালটা ১৮৯৯। চুরুলিয়া গ্রামের আকাশের মুখ সেদিন গম্ভীর। গতরাত থেকে অবিশ্রান্ত ভাবে কেঁদে চলেছে সে, এমনকি সকালেও সে কান্নার বিরাম নেই। এমনই এক বর্ষণমুখর দিনে চুরুলিয়া গ্রামের শেষ প্রান্তে এক কুঁড়েঘরে জন্ম নিলেন দুখু মিঞা ওরফে কাজী নজরুল ইসলাম। বাবা ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। জন্মের পর থেকেই সংসার সীমান্তে স্বল্প রোজগেরে বাবা – মায়ের নিত্যদিনের এক অসম লড়াইয়ের স্বাক্ষী ছিলেন একরত্তি নজরুল। যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় খুব দ্রুত বদল ঘটছিল মানুষের যাপনে। খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছিল সমাজ অর্থনীতি এবং বিশ্বরাজনীতির মানচিত্র। সময়ও তার মতো করে গড়েপিটে নিয়েছিল নজরুলকে।১৯১৭ সালে মাত্র আঠেরো বছর বয়সে নজরুল যোগ দিলেন সেনাবাহিনীতে। ... ...
হিটলার যে শুধুই একটি ধর্মের, মানে ইহুদি দের, বিরুদ্ধে ছিল ও তাদের ধবংস করেছিল তা নয়, একটি জাতি র বংশ লোপ করতে চেয়েছিল। ঠিক যেমন আজ মোদী সরকার NRC, CAA এর মাধ্যমে করতে চাইছে বলেই মনে হচ্ছে। কেন বলছি সেটা বিশদে বলার আগে "বাস্টার্ড" দের ইতিহাস একটু বলে নি - প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রেঞ্চ সৈন্য রা জার্মানির রাইন নদীর ধারের বিভিন্ন অঞ্চল দখল করলে ... ...
পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষের সঙ্গে আমাদের পরিচয় শৈশব কাল থেকেই। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বছরের ১ম দিনটিকে বলা হয় পয়লা বৈশাখ। এখন সম্ভাব্য প্রশ্ন এটাই বাংলা নববর্ষ এর সূত্রপাত কিভাবে হয়েছিল .....মধ্যযুগের ভারতবর্ষে ইসলাম ধর্ম প্রবেশের সূচনা থেকেই হজরত মহম্মদ প্রবর্তিত হিজরি পঞ্জিকার প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তীকালে দিল্লির দরবারে সুলতানী শাসকের সময়কালে হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে অর্থনৈতিক বছরকাল গণ্য করা হত, সেই সময় এক হিজরি বছরকাল এর মধ্যেই সমস্ত প্রজাদের রাজকর প্রদান বাধ্যতামূলক ছিল। ... ...
"ধুস। পাহাড়ে চলে যাব।"পনেরো বছর ধরে এই বুলি নিয়ে জীবন কাটানো চলছে, চিরাচরিত ঘুরে বেড়ানো আর ট্রেকিংয়ের ব্যস্ততার বাইরে সত্যি কিছুদিন যে পাহাড়ে গিয়ে কাটাব, সেই স্বপ্ন স্বপ্ন হয়েই রয়ে গেছে। পাহাড়ে এসে আমার আকুলিবিকুলি দেখে ঘড়ির কাঁটা তাই চিরদিন মুচকি হাসে। মেঘ-কুয়াশা-রোদ্দুর-এর স্বাভাবিক লুকোচুরি দেখে আমাদের শহুরে চোখ অভ্যস্ত নয়, তাই দিনকয়েকের ছুটিতে এসে বড়ই বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করি আমরা। এই সূর্যোদয়, এই সূর্যাস্ত, এই ট্রেল, ওই পয়েন্ট...হ্যানাত্যনা! ফলে 'পাহাড়ে চলে যাব' অ্যাটিটিউড হারিয়ে 'পাহাড়ে ঘুরতে এলাম'-টাই প্রধান হয় দাঁড়ায়। কুকুরগুলো বিকেল হলেই চেঁচিয়ে গালি দেয়, পাখিরা কাছে আসে না নিজের মতো, বনফুলের ঝোপ বা দেবদারুর বনের দৃষ্টি বহিরাগতদের প্রতি ... ...
দিল্লি যখন গিয়েছিলাম তখন জামে মসজিদ ঘুরে তারই কাছে সারমাদ কাশানীর দরগায় গিয়েছিলাম। সারমাদ ছিলেন সুফি সাধক। রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের মতো তিনি নিজেকে লয়লা মনে করে মজনু রূপী আল্লাকে খুঁজতেন। মনে করতেন যন্ত্রের মতো কিছু রীতি না মেনে প্রেমের মাধ্যমে আল্লাকে পেতে হয়। আবার বলতেন 'লা ইলাহা' বা 'খোদা নেই' মানে আচারের মাঝে আল্লাকে পাবে না। নামাজ করা, হজ করা বা রোজা রাখা হলো স্থুল ... ...