বুঝি না... যখন হাওয়া তাঁত বোনে আমাদের শরীরের কলে। তখন অন্ধতাঁতি জানতো না, তাঁর শ্রমের মাপকাঠি। তখন অন্ধকৃষক জানতো না, তার উৎপাদন। ফড়িংও ফুরিয়ে গেছে মাঠে মাঠে। ইন্টারনেট তাও বেজায় লাগে নাজেহাল। ওরে হৃদপিণ্ড, তোর ধমক বুঝি না! তোর শিরা উপশিরার পরিশ্রম বুঝি না। জীবনের কলকাঠি কে নাড়ে তাও বুঝি না। সবজির দোকান রাতে বন্ধ হয়ে গেলে
- তারপর? - তারপর হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা আবার বাঁশি ওঠালেন। আবার সারা রাস্তা ভরে উঠল তার সুরের মূর্ছনায়। বাঁশি বাজাতে বাজাতে তিনি পাহাড়ের দিকে এগিয়ে গেলেন। তার পেছন পেছন এবার চললে ইঁদুর নয়, গ্রামের সকল ছেলেমেয়েরা। অনি ঢোক গিলল। তারপর? - তারপর? তারপর কি হলো, কেউ জানে না। দুটো শিশু ফিরে এসেছিল। একজন অন্ধ, একজন বোবা। ফলে বাকিদের পরিণতি যে ঠিক কি হয়েছিল, জানা যায়নি ... ...
বর্ষাসিক্ত সন্ধ্যা। রাস্তাঘাট ধুয়ে গেছে আবছা নিয়নের আলোয়। অঞ্জন-রিনা হাতে হাত ধরে বাড়ি ফিরছে। রিনার মন খারাপ। আজ রেইনি ডে-র জন্য ছুটি দেওয়ার কথা ছিল। প্রিন্সিপাল দেননি। অঞ্জন আলতো করে তার হাতে হাত বুলিয়ে বলে, মন খারাপের কি আছে রে পাগলী, চিনিসই তো মানিক স্যার কে। রিনা আমতা আমতা করে, হ্যাঁ তাও...। কলেজ স্কোয়ারের মোড়ে এসে দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়। দুজনে একে ... ...
মা,তবু দেখো কী অসহ্য আলোয় বেঁচে আছি। গল্প বলতে বলতে যেখানে তুমি ঘুমিয়ে পড়েছিলে সেখান থেকে মনে না পড়া কথাগুলো বলতে শুরু করেছি আমরা। আমাদের অভাবগুলো আজ তোমার গল্পের মতো শোনায়। আবছা আলোয় আমাদের ব্যথাগুলো প্রলাপ হয়ে ওঠে। যেমনটা তুমি বলতে। বড়ো হয়ে মায়ের মতো হব। "ফিরব বললে ফেরা যায় নাকি..." জন্মদাগ বরাবর ... ...
মাথায় নেই ঘীকরতে গেলাম স্কী!এক্কালে হঠাৎ হঠাৎ আমার মাথায় ভুত চাপত। তখন ভীতুর ডিম আমি দুঃসাহসী হয়ে উঠতাম। ব্যাপারটা খুলে বলি।আমি একটা কনফারেন্সে পেপার পড়ার ডাক পেলাম। থাকা খাওয়া দেবে আর প্লেন ভাড়া। যেখানে যেতে হবে সেটা অস্ট্রিয়ার ইন্সব্রুক শহরের কাছে একটা গ্রাম। কলকাতা থেকে যাওয়া অনেক হাঙ্গামা। কনফারেন্স যারা সংগঠন করছে তারা বলে দিল তুমি মিউনিক হয়ে একটা শাটল ট্যাক্সি ধরে ... ...
মা বনাম বউ লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা। সুন্দরী বউ পেয়ে মাকে ভুলে যেও নাতুমি অকালে দুনিয়া থেকে চলে গেলেবৈবাহিক সঙ্গী দুই দিনের বেশি কাঁদবে নাতোমার চেয়ে ভাল একজন সঙ্গী খুঁজে নেবে। সন্তানহারা মায়ের চোখের জল কেউ কখনো মুছতে পারবে না।দশ মাস দশ দিন গর্ভ যন্ত্রণায় ভোগে তিনি যে সন্তানের গর্ভধারিণী
ইংরাজীতে ‘COMPACT’ বলে একটা শব্দ আছে। ‘নাস্তিক পণ্ডিতের ভিটা’ সেই অর্থেই কমপ্যাক্ট লেখা। ঝরঝরে, নির্মেদ এক উপন্যাস, যার জন্যে পড়াশোনা করতে হয়। ‘নাস্তিক পণ্ডিতের ভিটা’ গত চার বছরের অন্যতম জনপ্রিয় এবং আলোচনাপ্রিয় উপন্যাস। মাথা চটকিয়ে দেওয়া এমন আর কোন উপন্যাস এযাবৎ মনে পড়ে কি? না। অন্তত এতদিন ধরে সাধারণ পাঠকসমাজে এতটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে নি আর কোনও উপন্যাস। বর্তমানে এর ২৩-তম মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসটির রহস্যময়তা ... ...
শাহাজাদা দারা শুকোহর রাজনৈতিক প্রকল্প ছিল নিজেকে রামায়ণ – মহাভারতের মতো ইন্ডিক টেক্সটের প্রেক্ষিতে ভাবী আদর্শ বাদশাহ হিসেবে ভাবা। এর জন্য একটা স্বপ্নের গল্প বানালেন তিনি। দারা বলছেন :একদিন বশিষ্ঠ মুনি ও শ্রীরাম স্বপ্নে তাঁকে দেখা দেন। মুনিবরকে দেখেই শাহাজাদা দারা শুকোহ আভূমি প্রণত হলেন। খুশি হয়ে মুনিবর বলেন, ''বৎস রামচন্দ্র, এ হল তোমার একনিষ্ঠ ভক্ত, আলিঙ্গনে ধন্য কর একে।'' এর পর দারা বলছেন - শ্রীরাম আমাকে সস্নেহে আলিঙ্গন ... ...
আজব সভ্য সমাজে বসবাস ! লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা। দেবর কখনো বৌদির ভাই হতে পারে না, বৌদির দুর্বলতার সুযোগে দেবরের সদ্ব্যবহার। শালী কখনো জামাই বাবুর বোন হতে পারে না, আড়ালে একা পেলে অবৈধ সম্পর্কিত লিপ্ত। প্রেম করলেই স্বামী-স্ত্রী হওয়া যায় না, কেউ একজন মত পরিবর্তন করলেদীর্ঘদিনের স্বপ্নের সম্পর্ক ভেঙে যায়। স্বার্থ ফুরালে জগতের সবকিছুই ফাঁকা। ধর্মের ভাই, বোন, মা-বাবা বলতে ... ...
জন্ম সাল জানার কৌশললেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা। ৮৩ থেকে নিজের বয়স বিয়োগ করুন। বিয়োগফলের সাথে ১৯৪১ যোগ করলে, আপনার জন্ম সাল দেখতে পাবেন। ৮৩ সংখ্যা - ৫৬ বছর বয়স = ২৭ বিয়োগফল আবার বিয়োগফলের সাথে ১৯৪১ সংখ্যা যোগ আপনার জন্ম সালের তারিখ জানা
গুরুপদ নষ্করের সম্পত্তি বলতে ছিলো বাপ-ঠাকুরদার আমলের একটা ভাঙ্গাচোরা বাড়ী - নদীর ধার ঘেঁষে। আর ছিলো বাড়ীর লাগোয়া কয়েক বিঘা চাষের জমি। এছাড়াও ছিলো ওর বুকের একটা পাষাণভার -একটা কালো মেয়ে ঢলঢলে দুটি চোখ কিন্তু কপালে শ্বেতীর দাগ জ্বল জ্বল করে । তাই গুরুপদ মেয়েকে পাত্রস্থ করতে পারছে না। ঘটকরা ওকে দেখলে অন্য রাস্তায় হাটে, কারণ গুরুপদ ওর শ্বেতীওয়ালা কালো ... ...
"আমরা একে অন্যকে সাহায্য করতে পারি, কিন্তু নিজের ক্রুশ নিজেকেই বইতে হয়।"সংবেদনশীলতা কি কাউকে আদতে শেখানো যায়? অধুনা আপাত নিউরোডাইভার্স কর্পোরেট সংস্কৃতিতে কথায় কথায় অন্যের জুতোয় পা গলানোর যে প্রবাদ চালু আছে, সেই দুনিয়ায় সম্পূর্ণ অচেনা একজন মানুষের প্রতি সহমর্মী হয়ে ওঠার জন্য কতটা কাজে দিতে পারে আশি বছরের পুরনো টি-গ্রূপ মেথড? এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে, ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ এডভান্সড বিহেভিওরাল সায়েন্সের দুই আবাসিক শিবিরে যোগ দিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন লেখক। এই পদ্ধতিতে দশজন প্রতিভাগীরা কদিন রোজ আট ঘণ্টা আলাদা ঘরে যেভাবে একে অপরের সঙ্গে যা ব্যবহার করেন, তাই হয়ে ওঠে তাদের নির্জ্ঞান মনের ডেটাবেস। পুরো পদ্ধতি পরিচালনার দায়িত্ত্বে থাকেন কতিপয় ফেসিলিটেটররা। শুরুতেই সবাইকে এক ফর্মে সই করতে হয় এই মর্মে যে এই ... ...
বছরের শুরুতে দিল্লিতে জোর মিটিং। অবস্থা অতীব কঠিন, এবার বৈতরণী পার হওয়া যাইবে কী করিয়া? অমিত শাহেনশাহ কহিলেন, হোক রামমন্দির। যেমন কথা তেমন কাজ। ঢাক ঢোল ও টিভি চ্যানেল আনিয়া, ধাঁইধপাধপ ডিজে চালাইয়া উদ্বোধন হইয়া গেল। চারদিকে হই হই কান্ড। শাহেনশাহ ঢেকুর তুলিয়া মিডিয়া ম্যানেজারকে তলব করিলেন। কী সংবাদ হে? সে কাষ্ঠহাসি হাসিয়া কহিল, সংবাদ অতি উত্তম। কেবল বঙ্গাল মুলুকে দুষ্ট বালকেরা ছড়া কাটিতেছেঃজলে ভেজেনা পদ্মপাতা ... ...
মশাররফ সাহেবের অফিসে আমি গিয়েছিলাম সেইদিন বিকেলের দিকে। অনেক গোপনে যেতে হয়েছিল। মিডিয়ায় আমার ব্যাপারে নিউজ হয়েছে, পুলিশ খুঁজছে। আমার কাছে মনে হয়েছিল, ওই অবস্থায় আমাকে একমাত্র সাহায্য করতে পারেন সাইকিয়াট্রিস্ট মশাররফ সাহেব। বিশ্ববরেণ্য এই সাইকিয়াট্রিস্ট এর অফিসে আমাকে অপেক্ষা করতে হলো না, গিয়ে দেখলাম অপেক্ষারত অন্য কোন রোগীও নেই। সম্ভবত ঐদিন বিকেল হয়ে গিয়েছিল ... ...
“সময়ের সমস্ত চিহ্ন ইতিহাস তার পেটিকায় তুলে রাখে না। অনেক বাদ দিয়ে সামান্য কিছু সঞ্চয় ক’রে রাখে মাত্র। ইতিহাসের সেই সামান্য সঞ্চয় থেকে শুধু অস্পষ্ট একটা আদল ধরা পড়ে। শূন্যস্থানগুলি ভরাট করে নিয়ে সময়ের নবনির্মাণ ক’রে নেয় ইতিহাসাশ্রয়ী সাহিত্য। সেই নবনির্মানে সৃজনশীল কল্পনার মুক্ত পক্ষবিস্তার।” লিখছেন সন্মাত্রানন্দ। কথা সত্য। তবু কি এইটাই শেষ কথা ... ...
নয়া সঙ্ঘী তত্ত্ব। ব্রিটিশরা না এলে রেল বিমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি ভারতে আসতো না। মূর্খের প্রলাপ। প্রযুক্তিতে এখন দুনিয়া শাসন করছে চীন জাপান জার্মানি। সে-সব দেশ ইংল্যান্ড কখনও শাসন করেনি। তাজমহল অজন্তা ইলোরার প্রযুক্তি কোথা থেকে এলো? ভারত কীভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ ছিল?.২৭% জিডিপি হল কীভাবে?ইউরোপিয় বণিকরা কী করতে আসতেন?বেচতে না কিনতে? ভারত মূলত রপ্তানিকারক দেশ ... ...
নয়া সঙ্ঘী তত্ত্ব। ব্রিটিশরা না এলে রেল বিমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি ভারতে আসতো না। মূর্খের প্রলাপ। প্রযুক্তিতে এখন দুনিয়া শাসন করছে চীন জাপান জার্মানি। সে-সব দেশ ইংল্যান্ড কখনও শাসন করেনি। তাজমহল অজন্তা ইলোরার প্রযুক্তি কোথা থেকে এলো?কোন প্রযুক্তিহীনতায় পৃথিবীর জিডিপির ২৭% ভারতের হয়েছিল? ইংল্যান্ড স্পেন সহ তথাকথিত উন্নত দেশের বণিকরা ভারতে কেন আসতো?রপ্তানি করতে না এখান থেকে পণ্য কিনে নিজের দেশে আমদানি করতে? ... ...
চারিদিকে শুধু জল আর জল। দোতলা বাড়ি জলের তলায়। বাড়ি তেতলা হলে শুধু গলাটুকু বাইরে। দোতলা তেতলা এখানে আর কোথায়। যা দেখা যাচ্ছে তা অনেক দূরে দূরে। ও..ই দূর গঞ্জে। এ তো নিকষ্য গেরাম। কুঁড়েঘরে খড়ের ছাউনি। দু চারটে ইঁটের গাঁথনির কোঠা আছে। মাথায় টিনের বা টালির ছাউনি। সব ডুবে আছে। চারদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের বাঁধ ভেঙেছে। দুরন্ত বেগে উল্টে পাল্টে ... ...
সুভাষবাবু বিকেল বেলায় মুড়ি আর নারকেল খাচ্ছিলেন। সারাদিন রোদ্দুরে অনেক ঘুরেছেন। সেই সকালে বেরিয়েছিলেন পান্তাভাত খেয়ে।গ্রামের ছেলে। গ্রামেই কেটেছে সারাজীবন। পান্তাভাতেই এই শরীর এবং মাথা ঠান্ডা থাকে তার। হৈ হৈ করে ভোটের মেলা এসে পড়েছে। পার্টি এবারেও তাকে টিকিট দিয়েছে। সকলেই জানে সুভাষ গিরির প্রায় অর্ধশতাব্দীর রাজনৈতিক জীবন সম্পূর্ণ কলঙ্কহীন। রাস্তায় ... ...
বুরহানপুর কেল্লায় শাহাজাদা ঔরঙ্গজেব ছিলেন ন মাস, ষোলোশো তিপান্নর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর। শাহাজাদা, যিনি ক্ষমতাবৃত্ত থেকে বরাবরের জন্য দূরে যার কাজ হল ঘন যুদ্ধের মধ্যে অথবা শান্তির সময় শাহেনশাহের জন্য ডালিম বা খরমুজা পাঠানো, এখন বাদশাহের বিশেষ প্রিয় আম গাছ বাদশাহ পসন্দের বোল পাহারা দিতে ব্যস্ত। লোক লাগাচ্ছেন, রাতের ঘুম চলে গেছে সবার। বাদশাহের কাছে ... ...