মামাতো ভাই ইমুর নামে প্রায়ই উল্টাপাল্টা কথা শুনি। পাশের বাসার আন্টি প্রায় রোজই আমাকে দেখলেই বলেন, তোমার ভাই এত বেসন কেনে কেন? পাড়ার দোকান থেকে যখনই দেখি বেসন কিনছে। আর বারবার বলে বেসনের দাম এত বাড়াইছেন,আব্বার কাছ থেকে টাকা নেয়াই ঝামেলা। এত বেসন সে কি করে? তোমরা কি ভাজাভুজির ব্যবসা শুরু করেছো?
ব্যাপারটা বুঝে নিয়ে আমিও হালকা হেসে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে করতে বলি,রোজার মাসতো আন্টি! বেসন একটু বেশী লাগে। তাছাড়া আমাদের বাসার সবার চপ,পেঁয়াজু এসব একটু বেশী পছন্দ।
কিন্তু ভ ... ...
ফেক আইডিতে সুন্দর একটা মেয়ের ছবি প্রোফাইলে দিয়ে বরকে নক দিলাম।
"কেমন আছেন? আপনি আমার রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করছেন না কেন?"
ঘন্টাখানেক পর রিপ্লাই পেলাম,
"আসলে এই আইডিতে একটু সমস্যা আছে,এটাতে সব ফ্যামিলি মেম্বার! বাইরের মেয়ে দেখলে রাগ করে। আপনি আমার ফেক আইডিতে রিকোয়েস্ট দিতে পারেন!''
আমি আঁতকে উঠলাম। দুঃখী চোখে মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম,
-আপনার ফেক আইডির লিংক দেন।
সে লিংক পাঠালো। আইডি নেম, এলোন বয় শিহাব! প্রোফাইলে ... ...
টিভিটা অন করতেই দেখি অফিসের বসকে টিভিতে দেখাচ্ছে। সাংবাদিক তার মুখের সামনে মাইক ধরে বলছে, কতদূর হলো ঈদের শপিং?
বস হাসিহাসি মুখ করে বলছেন,এইতো! মাত্র ছেলের পাঞ্জাবী আমার স্যুট আর স্ত্রীর শাড়ি কেনা হয়েছে। এখনো সবই বাকি।
সাংবাদিক:কত টাকার শপিং হলো এ পর্যন্ত?
বস: এইতো গতকাল আর আজ দিয়ে মাত্র আড়াই লাখের মতো হয়েছে। এখনো যদিও সবই বাকি!
আমি বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছি। এদিকে আমরা কেউ ঈদ বোনাস পাইনি। বস সবাইকে ডেকে নিয়ে দুঃখী দুঃখী গলায় বলেছেন,
এবারের ... ...
দুইবার এসএসসি ফেইল আর ইন্টারে ইংরেজি আর আইসিটিতে পরপর তিনবার ফেইল করার পর আব্বু হাল ছেড়ে দিয়ে বললেন, "এই মেয়ে আমার চোখে মরে গেছে।" আত্নীয় স্বজন,পাড়া প্রতিবেশী,বন্ধুবান্ধব সবাই একএক করে ধিক্কার জানিয়ে বলে গেল, তোর জীবনে কি হবে? তোর ভবিষ্যত অন্ধকার! সমবয়সী কাউকেই তাদের বাবা-মা আমার সাথে মিশতে দেয় না। বলে, ঐ গাধার সাথে মিশলে ওর মতো হয়ে যাবি। বড়বোনের বাচ্চা হবে। সে একদিন আমাকে কঠিন গলায় বললো, তুই আমার আশেপাশে আসবি না। বাচ্চা পেটে থাকতে মা যার সংস্পর্শে বেশী ... ...
"লাবণ্য! লাবণ্য!! লাবণ্য!!! আমি মা হতে চলেছি!"
নীরা আপুর কথায় আঁতকে উঠলাম। নীরা আপু আমার ফুপাতো বোন। এখনো বিয়ে হয়নি তার। সেই মেয়ে মা হতে চলেছে আর সেটা এত আনন্দের সাথে বলছে!
আমি ভীতু গলায় বললাম, কি বলো এইসব তুমি! তোমার এখনো বিয়ে হয়নি আর তুমি এই আকাম করে এসেছো! ছিঃ আপু ছিঃ!
নীরা আপু ঠাস করে আমার গালে একটা চড় কসিয়ে দিয়ে বললেন, বাচ্চা হতে বিয়ে হওয়া লাগে? বাচ্চা হতে যদি বিয়ে হওয়া লাগতো তাহলে বিয়ের আগে বাচ্চা হওয়ার সিস্টেমই থাকতো না। এইসব সমাজের অন্ধ কা ... ...
মাঝরাতে চিপস খেয়ে জানালা দিয়ে খালি প্যাকেট ফেলতে গিয়ে দেখি গাছতলায় এক ছায়ামূর্তি বসে বসে মাথার চুল ছিঁড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই আমি ভয়ে শিউরে উঠলাম। এত রাতে আমি ছাড়া এই অঞ্চলে আর কারোরই জেগে থাকার কথা না। নাইট গার্ডের অলিখিত চাকরিটা শুধুই আমার। নিজেকে সামলাতে না পেরে আমি চাপা গলায় চিৎকার করে উঠলাম, কে ওখানে? কে? কে? -আহ! একবার বললেই তো হয় নাকি? তিনবার কে কে বলে চিল্লানোর দরকারটা কি? কানে কালা নাকি আমি? গলাটা শুনে কিছুটা ধাতস্থ হলাম। গলাটা আমার ... ...
"নির্দ্বিধায় বলুন, আপনার সমস্যা কি?"
সাইক্রিয়াটিস্টের কথায় নড়েচড়ে বসলাম। কি উত্তর দেবো ভেবে পাচ্ছি না। আমি পাগল নই। তারপরেও আমার বাড়ির লোক জোর করে ধরে আমাকে সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে নিয়ে এসেছে।আমার দোষ একটাই আমি লেখিকা। নতুন নতুন গল্প লেখা শুরু করেছি। মাথার ভেতর সারাক্ষণ খালি গল্প ঘোরে। ঘুমাতে না পেরে ছটফট করি আর উঠে উঠে গল্প লিখি। প্রায়ই বাড়ির লোককে জোর করে ধরে গল্প পড়ে শোনাই। দেখা যাচ্ছে ভাবী রান্না করছে। আমি ট্যাব নিয়ে ভাবীর সামনে গিয়ে বলি, একটা গল্প ... ...
ভার্সিটি পড়ুয়া কাজিন শেলু আপার হঠাৎ করে বিয়ে হয়ে গেছে এক বড়লোক ব্যবসায়ীর সাথে। শেলু আপা ব্যাপক পরিমাণে স্মার্ট একটা মেয়ে। স্টাইলিশ, সুন্দরী,চুল প্রায় কোমর ছুঁইছুঁই। ইন্টার পাশ করতেই না করতেই শখানেক লাভ লেটার ডাস্টবিনে ফেলা হয়ে গেছে। বাড়ির সামনে ছেলেদের লাইন। রোজই একটা না একটা বিয়ের প্রস্তাব আসে যেগুলো তিনি নিজেই রিজেক্ট করে দেন। তাহলে এতকিছু ছেড়ে পড়ালেখার মাঝখানেই এই ব্যবসায়ীকে বিয়ে করার মানে কি? কারণ জানতে ছুটে গেলাম।
যা জানলাম তা এখনকার জামানায় খুব স্বাভাবিক। ধনকুব ... ...
বহু কষ্টে আব্বুর সাথে চয়ন গুন্ডাকে দেখা করতে রাজি করিয়েছি। চয়ন গুন্ডার সাথে আমার দশবছরের প্রেম।ছোটবেলায় যখন আমি চুলে দুই ঝুঁটি করে বাসার পেছনের গাছতলায় ফুল কুঁড়াতাম চয়ন গুন্ডা সেইসময় বন্ধুবান্ধব নিয়ে সেই গাছতলার এক চিপায় বসে গান্জা টানত। মাঝেমধ্যে আমি ফুল হাতের নাগালে না পেলে সে এসে গাছে ঝাঁকি দিয়ে ফুল ঝরাতো। সেই সূত্রেই আমাদের পরিচয়।
শিশুহৃদয় লজিক বোঝে না। সেই ছোটবেলায়ই তাই চোপাভাঙ্গা গান্জাখোর চয়ন গুন্ডাকেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম। পরিবারের বকাবকি, মারধোর কোনো কিছুতে কোনো ... ...
সাতদিন ধরে আব্বুর পেছন পেছন ঘুরছি পঞ্চাশহাজার টাকার জন্য। সামনে ক্রাশের শুভ জন্মদিন। তারজন্য তেলেগু একটা সিনেমা দেখে ইউনিক একটা বার্থডে প্লান করেছি। সেই প্লান এক্সিকিউট করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আব্বুর টাকা দেয়ার খোঁজ নাই। এদিকে বার্থডে চলে আসছে।
দিনে তিনবেলা আব্বুর সামনে গিয়ে এটা সেটা খোঁচাখুঁচি করি। আব্বুর ঘরের সামনে থেকে রান্নাঘর দেখা যায়। তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বারবার রান্নাঘরে যাই আর পেঁয়াজ মরিচ কাটি। আম্মু একদিন ধমক দিয়ে বললেন, অকারণে এত পেঁয়াজ কাটতেছিস কি জন্য? ... ...