সবাই সবই জানেন, তবু এই বাজারে একটু ভাবাবেগে আঘাত না দিয়ে পারা গেলনা। ... ...
সাবভার্সানকে অনেকেই সন্দেহ করেন। আমিও। কারণ, সাবভার্সান সন্দেহজনকই। মঞ্চের কোন কোটপ্যান্টশোভিত কেষ্টবিষ্টুর দিকে হঠাৎ ধেয়ে আসবে পচা ডিম, কখন স্টেজের বক্তার পশ্চাদ্দেশে চিমটি কেটে পালিয়ে যাবে কোন ফচকে ছোঁড়া, কেউ জানেনা।সাবভার্সানে অনেকেই ফুর্তি পান। আমিও। কারণ সাবভার্সান ভবিষ্যৎবাণীর ঊর্ধ্বে। কারণ কখন কোন রোদ্দুর রায়ের মৌখিক খাঁড়া কখন কার উপর নেমে আসবে, কার মোক্ষপ্রাপ্তি হবে আজকের শুভপ্রভাতে, কেউ জানেনা। আমরা যারা ন্যালাভোলা কেরানিযাপন করি, তাদের ওইটুকুতেই ফুর্তি। কারণ ওর বেশি আমাদের মুরোদ নেই।সাবভার্সানে অনেকেরই অস্বস্তি হয়। আমারও। কারণ সাবভার্সান অস্বস্তিকরই। আমরা যে দাদ-হাজা-চুলকুনিকে পোশাকের নিচে চেপেচুপে রাখি, শত প্ররোচনাতেও চুলকে ফেলিনা, সাবভার্সান, সেই দাদ-হাজারই উদযাপন করে। রোদ্দুর রায়ের কার্নিভ্যাল ফুর্তির বসন্তোৎসব ... ...
বিরক্তির সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে, কারণ, শিল্পী রূপঙ্করকে নিয়ে যেটা চলছে সেটা বস্তুত ডাইনি জবাই। দক্ষিণে কোনো কোনো জায়গায়, শুনেছি, কোনো মহাতারকা মারা গেলে ভয়ের চোটে দোকান বাজার বন্ধ হয়ে যায়। কারণ, "শোক"এর চোটে জনতা ধড়াদ্ধম ভাঙচুর করতে পারে। হাতের কাছে পেলে গদাম গদাম বাঁশপেটাও করতে পারে। কারণ "শোক" পালন চলছে। বঙ্গে অবশ্য সেটা হচ্ছে না। যেটা হচ্ছে, সেটা হল, "আমার খুব শোক হয়েছে, চল রূপঙ্করকে দুরমুশ করি"। জনতা খাচ্ছে দাচ্ছে, আপিস যাচ্ছে, আর নেটে এসে একটু "শোক" পালন করে যাচ্ছে। বলাবাহুল্য এর কোনো মাথা ও মুন্ডু খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। রূপঙ্কর যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে দ্বিমত যে কেউই হতে পারেন, সে ... ...
ব্রেকিং নিউজ। দত্তবাবুর অপরাজিত দেখলাম এবার রায়বাবুর অপরাজিতকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। আইএমডিবিতে দত্তবাবুর অপরাজিতর রেটিং এই মুহূর্তে ৯.৬। রায়বাবুর অপরাজিতর রেটিং মোটে ৮.৩। বললে বিশ্বাস করবেন না, পথের পাঁচালিরও তাই। সিনেমা রিলিজের আগে খবরের কাগজে ডেন্টিস্টের অস্ত্রোপচারের বিবরণ পড়ে নিজেরই দাঁত কটকট করছিল। রিলিজের পর "জিতুবাবুই কি আসল রায়বাবু?" এই মর্মের "রিভিউ" দেখে ... ...
আপনি কোনো উত্তরপ্রদেশের লোককে কখনও বলেছেন, ব্যাটা পাকিস্তানের ভাষায় কিঁউ বাতচিত করতা হ্যায়? পাকিস্তানিরা কোন ভাষায় কথা বলে? যদি ইসলামাবাদের মান্য লব্জ ধরেন, তো ওরা প্রধানমন্ত্রীকে বলে উজির, সেটা হিন্দুস্তানি চালু কথা, নেহাৎই সংস্কৃত করে এদিকে 'প্রধানমন্ত্রী' করে দেওয়া হয়েছে। এরকম কিছু ফার্সি-সংস্কৃত গোলমাল ছাড়া, ও ভাষাটা পুরোদস্তুর হিন্দুস্তানি। যদি পাকিস্তানি সিরিয়াল দেখেন, দেখবেন হুবহু হিন্দি। ... ...
ধরুন আপনি দিল্লি থেকে কলকাতা আসছেন। কলকাতাগামী বিমানে উঠে দেখবেন, ঘোষণা-টোষণা সব হিন্দি আর ইংরিজিতে। এক বর্ণ বাংলা নেই। বিমানবন্দরে নেমে দেখলেন, নিরাপত্তারক্ষীরা প্রায় কেউ বাংলা বলেননা।উঠলেন ট্যাক্সিতে। চালক হইহই করে এফএম চালিয়ে দিলেন। সেখানে, শুনলেন, একটিও বাংলা গান বাজছেনা। একটিও না।যাহোক, বাড়ি তো ঢুকলেন। একটু জিরিয়ে টিরিয়ে নিয়ে ভাবলেন সিনেমা দেখবেন। কলকাতা হল সিনেমার তীর্থস্থান, সত্যজিৎ ঋত্বিক ইত্যাদি প্রভৃতি। মাল্টিপ্লেক্সে গেলেন। ও মা, একটি সিনেমাও বাংলা চলছে না। একটিও না। ... ...
এ সব বই প্রকাশে আমরা ঝোলাইনি। বইমেলার প্রথম দিক থেকেই সবকটি বই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তার পরেও আনুষ্ঠানিকতার একটা ব্যাপার থাকে। যতই উল্টোপাল্টা প্রতিষ্ঠান হোক না কেন। অতএব এই বইগুলির প্রায় সবকটিরই আজ উদ্বোধন। ছবিতে রুহানির নামও চলে গেছে, কিন্তু রুহানির উদ্বোধন আজ নয়, পরশু। বাদবাকি সবারই একে একে মলাট উদ্বোধন হবে। বইমেলার ৯ নম্বর গেটের কাছে, শঙ্খ ঘোষ মঞ্চে। জায়গাটা আমাদের স্টলের ঠিক কোনাকুনি উল্টো দিকে। গোটা মাঠ পেরিয়ে। ফলে মাঠের দুই কোণে আজ গুরুর ঠেক। সন্ধ্যে ছটা থেকে। জাস্ট চলে আসুন। ... ...
সমকামিতা একটা সময় কার্যত নিষিদ্ধ ছিল। জেল-জরিমানা হত। ঠিক সত্তর বছর আগে, ১৯৫২ সালে বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী অ্যালান টুরিং বিলেতের আদালতে সমকামিতার অপরাধে 'অপরাধী' প্রমাণিত হন। তাঁকে কারাবাস এবং হরমোন-'চিকিৎসা'র মধ্যে, যেটা খুশি বেছে নিতে বলা হয়। টুরিং হরমোন চিকিৎসা বেছে নেন। এবং তারপর এই অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে বছর দুয়েকের মধ্যে টুক করে আত্মহত্যা সেরে নেন।এর পরে অবস্থা বদলায়, জেল-জরিমানা না হলেও, সমকামিতা অসুস্থতা হিসেবে চিহ্নিত থাকে বহুদিন। মানসিক অসুস্থতা বা ডিজঅর্ডারের তালিকায় দীর্ঘদিন ঢুকেছিল সমকামিতা। ... ...
অনেকেই গুরুর বইয়ের দত্তক নিয়েছেন, বা ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ। তার চেয়েও বেশি এসেছে প্রশ্ন। গুরুর বইয়ের দত্তক,কী কেন ? যেহেতু অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে, ছোটো করে লিখেই রাখি।আমরা বইয়ের দাম কম, খুবই কম রাখি। নীতিগতভাবেই। ফলে বইয়ের বিক্রি খুবই ভালো হলেও, আমাদের মেরেকেটে টাকাটা উঠে আসে। কখনও সামান্য কিছু লসও হয়, কিন্তু সেটা অ্যাবসর্ব করে নেওয়া যায়। এগুলোর কোনোটাই কোনো সমস্যা না, কারণ আমরা প্রফিটের জন্য এই খেলায় নামিনি। সমস্যা এই, যে, এইভাবে চললে আমাদের টাইটেলের সংখ্যা প্রত্যাশিতভাবে বাড়ছেনা। ... ...
অজিত রায় আর নেই। আপামর পাঠক সমাজ, অজিত রায়ের লেখা কখনও উদযাপন করেনি। মৃত্যুতে ক্ষণিক শোকপ্রকাশ দেখেছি। সমাজমাধ্যমের পাতায়। তারপর সে পাতা উল্টে গেছে। বদলে গেছে পৃষ্ঠাসংখ্যা, ক্যালেন্ডারের তারিখ। বইমেলা আসছে, কিন্তু একশটি পুস্তকালোচনায় অজিত রায়ের কথা আর নজরে পড়েনা। না পড়ারই কথা। ভূত আর তান্ত্রিক ছেয়ে আছে বাজারে। অজিত রায়দের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই।বাংলা ভাষার অন্যরকম গদ্যলেখকদের এই এক ট্র্যাজেডি। তাঁরা দাঁতে দাঁত চেপে লিখে যান, তারপর চুপচাপ মরে যান। কপাল ভালো থাকলে সব দাঁত-টাত পড়ে, চুল-টুল উঠে যাবার পর এক আধটা পুরষ্কার পান। সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় পেয়েছিলেন, এমন একটা বইয়ের জন্য, যা কস্মিনকালেও তাঁর শ্রেষ্ঠ লেখালিখির মধ্যে পড়েনা। উৎপল কুমার ... ...