এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • অধ্যাপিকা, মার্সিডিজ ও অবক্ষয় সম্পর্কিত কিছু দুর্ভাবনা

    Abin Chakraborty লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৫ আগস্ট ২০২৪ | ১১৩৫ বার পঠিত
  • কলেজ স্ট্রীটের এক নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ততোধিক নামী বিভাগের এক জনৈকা সহকারী অধ্যাপিকা সম্প্রতি একটি মার্সিডিজ গাড়ি কিনেছেন ও সে সম্পর্কে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন। সহকারী অধ্যাপকের কি করে মার্সিডিজ কেনার টাকা হয় এসব অবান্তর প্রশ্ন আমার নেই। কার কত ধনী বাবা, কাকা, বর, দাদা, দিদি, মা, মাসি আছে সে খোঁজ আমার নিতে যাওয়া অর্থহীন। কে কত ধনী পরিবারে জন্ম নিয়েছে সে বিচার ও অমূলক। প্রশ্ন হল একজন অধ্যাপিকা নিজের দামী গাড়ির ছবি ও লং ড্রাইভ এ যাওয়ার গল্প শুনিয়ে কি অর্জন করতে চাইছেন। এটা কি ছাত্রছাত্রী সহ অন্যান্য পরিচিতদেরকে আম্বানীদের কায়দায় নিজের ঐশ্বর্য প্রদর্শনের আরেক পন্থা? নিজের গাড়ি ও সেই সম্পর্কিত বিলাসবহুল জীবনের কাহিনী সমাজ মাধ্যমে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে যে পুরোনো Onida TV এর মত, প্রতিবেশীর ঈর্ষা ও মালিকের গর্ব সুলভ আত্মম্ভরিতার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে, এটা মোটামুটি তর্কের ঊর্ধ্বে। কিন্ত এহেন কাজ তো কত লোকেই করেন। অস্বস্তিটা কি সেখানে? না। অস্বস্তিটা কি ব্যক্তির কর্মপরিচয় সম্পর্কিত? অবশ্যই। কিন্ত শুধু কি তাই? না। সমস্যাটা এজন্যেও যে অধ্যাপিকা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত।

    আসলে আমরা ছোটবেলা থেকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষকের একটা রূপকল্পের সাথে পরিচিত। এটা শুধু বাঙালি সেন্টিমেন্টের বিষয় নয়। কয়েকশ বছর আগে ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসার ও দরিদ্র বিদ্বান ছাত্রের ছবি এঁকেছিলেন, যার যাবতীয় অর্থ বই কিনতেই ফুরিয়ে যায় এবং যার এক এবং একমাত্র আনন্দের বিষয় হল পড়া ও পড়ানো। দেনাগ্রস্ত মধু কবি বা দানের সাগর ঈশ্বরচন্দ্রের কথাও আমাদের স্মরণে থাকার কথা। মনে থাকার কথা উদয়ন পন্ডিতের কথাও। হীরা তার বিবেককে কিনতে পারেনি। কবি ও শিক্ষক জীবনানন্দ বা বিভূতিভূষণ কখনও ধনসম্পদের মুখ দেখেছিলেন? আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের গামছা পরে মুড়ি খাবার গল্প ও আমাদের জানা। প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ তারকনাথ সেন, সুশোভন সরকার, যদুনাথ সরকার, রজতকান্ত রায় এবং আরো অনেক বিশিষ্ট বিদ্বান শিক্ষকদের জীবনচরিতে কখনোই স্থাবর অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কিত কোন ঢক্কানিনাদ শোনা যায় নি। আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকাদের জীবনও এই ধারা থেকে বিশেষ বিচ্যুত হতে দেখিনি। তাদের অনেকেই বহুদিন পর্যন্ত গণপরিবহনে যাতায়াত করেছেন। কেউ একটু বাড়ি গাড়ি করে ফেলতে পারলে তাদের কিঞ্চিৎ সঙ্কোচ ও অনুভব করতে দেখেছি। বর্তমান শিক্ষাজগতের নায়ক নায়িকারা এইসব পুরোনো ধ্যান ধারণা ফেলে এমন সগর্বে সমাজ মাধ্যমে সোচ্চার হয়ে এগিয়ে চলেছেন যে কোথায় একটা অস্বস্তি হয়। কনফুসিয়াস বলেছিলেন যে বৈষম্যময় সমাজে ধনী হওয়াটা কলঙ্কের। কোন শিক্ষক যদি সজ্ঞানে সেই কলঙ্কের ভাগীদার হন তাহলে আমরা কী করে ভাবব যে তিনি তাঁর ছাত্র ছাত্রীদের যথাযথ নৈতিক পথপ্রদর্শন করবেন? নাকি প্রদর্শনমুখী এই ভোগবাদী বাস্তবতাটাই স্বাভাবিক? মার্কিন মুলুকে প্রচলিত "flaunt it if you've got it" আদর্শটাই কি বাঙ্গালী সমাজ আত্মস্থ করে নিয়েছে? অন্নপূর্ণার প্রতি উচ্চারিত ঈশ্বরী পাটনীর সেই প্রার্থনার - "আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে" - মূলে থাকা বাহুল্য বর্জিত স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যের যে মূল্যবোধ স্বাধীনতা - উত্তর যুগেও প্রকট ছিল, বিশ্বায়নের তিন দশক পরে তা হয়ত প্রায় অবলুপ্ত। সাথে এটাও প্রশ্ন, শিক্ষকরা কি আর নির্দিষ্ট মূল্যবোধের প্রতিভূ হিসেবে আদৌ সমাজে বিবেচিত হন? ছাত্রছাত্রীরা কি আদৌ শিক্ষকদের জীবনদর্শন বা জীবনযাপনের মধ্যে কোন ইপ্সিত গুণমানের আধার খুঁজে পায় বা পেতে চায়? সুনির্দিষ্ট উত্তর দেওয়া দুষ্কর। উত্তরগুলো সম্ভবত বিবিধ ও পরিবর্তনশীল। যে সমাজে উপাচার্য থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সবাই দুর্নীতির চক্রে আবদ্ধ, সেখানে এই অনিশ্চয়তা অনিবার্য।

    আরো এক ধরণের সমস্যা আছে। আমার পরিচিত এক ছাত্রীর বাবা তাদের ছেড়ে চলে গেছে বলে তাকে বিয়েবাড়িতে মেহেন্দির কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে হয়। অনেক সময় দুবেলা খাবার মত অর্থও তাদের থাকে না। বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নানাবিধ আর্থিক সমস্যায় আক্রান্ত আরো অনেক মানুষজন রয়েছে যারা নানা হতাশা ও আত্মগ্লানি অতিক্রম করে প্রচুর পরিশ্রম করে যাচ্ছে কোন চাকরি পাওয়ার সন্ধানে। একজন শিক্ষক যখন নিজের সম্পত্তি ও প্রাচুর্য সম্পর্কে সমাজ মাধ্যমে লেখালেখি করেন তখন কি সেটা বেকারী ও দারিদ্র্যে ক্লিষ্ট এই সমাজে এক ধরণের নির্মম পরিহাসে পরিণত হয় না? এহেন সহানুভূতিহীন পরিহাস কি কাম্য? কেউ বলতেই পারেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন আর্থিক অনটনের ছাত্র ছাত্রী পড়ে না। হতে পারে। ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ নেই বহুকাল। তবে আমাদের ছাত্রাবস্থায় হোস্টেলের ভেতরে ও বাইরে এমন অনেকেই থাকত যাদের যাতায়াতের খরচ বা রোজকার ভাত রুটির খরচার বাইরে কোন পয়সাই থাকতো না। এইসব তরুণ তরুণীরাই এককালে দিন বদলের স্বপ্ন দেখে কৃষক মজদুরদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাম্যবাদী সমাজের আকাঙ্খায় প্রাণ বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাদের অনুপ্রেরণা ছিলেন তাদের শিক্ষকরাও। নকশাল আন্দোলনের বিস্তর ভুল ত্রুটি স্বত্বেও সমাজের অনুভূতির স্তরে, সচেতনতার স্তরে যে বিপুল প্রভাব তা রেখে গেছে তা অনস্বীকার্য। মার্সিডিজ কেন, সেই সারস্বত চর্চা ও সমাজ মন্থনের জগতে Benson and Hedges এর সিগারেটও ছিল না। সেই আদর্শ, আবেগ ও আন্দোলনের ভরকেন্দ্রে এইসব মার্সিডিজ বিলাসী মানুষজনের যাতায়াত সঞ্জয় সান্যাল জাতীয় আত্মবিস্মৃত ধনলোলুপ বাঙ্গালীর প্রশাসনিক উত্তরণের মতোই অসুস্থ ও পঙ্কিল।

    এই দেখনদারিতে ভরপুর গল্পে পাঠ্য বিষয়বস্তুর ও একটা ভূমিকা আছে। আমরা যারা ইংরেজি সাহিত্য পড়ার সুযোগ পেয়েছি তারা বারবার দেখেছি শেক্সপিয়ার এর নাটকে অর্থ, স্বর্ণ, মুনাফা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারাবাহিক সতর্ক বার্তা। ধনসম্পদের লোভ কিভাবে পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক ন্যায়, চারিত্রিক পবিত্রতা ইত্যাদি নষ্ট করে মানুষকে ক্রমশ অমানুষ করে তোলে তা শেক্সপিয়ার বারবার দেখিয়েছেন King Lear, Timon of Athens, Merchant of Venice ইত্যাদি নানা নাটকে। বেন জনসনের নাটকেও একই সমস্যার ব্যবচ্ছেদ পরিলক্ষিত হয়। শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। Alexander Pope এর লেখা The Rape of the Lock নামক ব্যাঙ্গকবিতা, এলিয়ট এর The Wasteland বা R.K Narayan এর The Guide - সব ক্ষেত্রেই আমরা দেখি বিত্তের প্রাধান্য ও নৈতিক অবক্ষয়ের এক সমানুপাতিক চালচিত্র। আমার জীবনেই যদি বিত্ত ও তার পরিণতি এত প্রবল হয়ে ওঠে তাহলে এইসব লেখার নৈতিক সমালোচনা আমি নিজে কী করে অনুধাবন করব? কী করেই বা তা অন্যদের বোঝাবো? ম্যাথিউ আর্নল্ড তাঁর Culture and Anarchy গ্রন্থে সাহিত্য ও সাহিত্য সমালোচনাকে ক্ষয়িষ্ণু ধর্মীয় মূল্যবোধের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে এলিয়ট, লিওনেল ট্রিলিং, ফ্রাঙ্ক লিভিস, নরথ্রপ ফ্রাই সহ নানা তাত্ত্বিক ও সমালোচকদের আলোচনাতেও সাহিত্য ও সাহিত্য সমালোচনার এই সামাজিক ভূমিকার কথা উঠে এসেছে। এইসব দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণ সম্পর্কে বিবিধ মতবিরোধ ও আপত্তি থাকলেও সাহিত্য ও সাহিত্যচর্চার সাথে সমাজ, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কটি তাঁরা বিশদে ব্যাখ্যা করেছিলেন তা প্রণিধানযোগ্য। পরবর্তী কালে বিখ্যাত লেখক ও সমালোচক Terry Eagleton ও তাঁর "Literature and the Ethics of Reading" গ্রন্থে লিখেছেন যে "সাহিত্য নৈতিক বিশ্লেষণের একটি প্রকরণ, মানবিক অভিজ্ঞতার নৈতিক ক্ষেত্রসমূহের পর্যালোচনার এক বিশেষ পদ্ধতি"। যে শিক্ষকের নিজের নৈতিক আচরণের মধ্যে বিলাসিতার সম্পদ সম্পর্কিত আত্মশ্লাঘার আধিক্য রয়েছে সে সাহিত্যের বিষয়, চরিত্র বা আঙ্গিকের নৈতিক বিশ্লেষণ করবে কিসের ভিত্তিতে?

    হয়ত এই আলোচনা চূড়ান্ত নিষ্ফল। হয়ত এই লেখা হলো তিল কে তাল করার নামান্তর। তবু বেয়াড়া প্রশ্ন গুলো নিস্তার দেয়না। হয়ত এ একরকমের দুর্ভাগ্যজনক ডিরোজিয়ান উত্তরাধিকার। জানিনা। ইংরেজি সাহিত্য, প্রেসিডেন্সি ও শিক্ষকতার ত্রহ্যস্পর্শ কেমন যেন লিখিয়ে ছাড়ল।

    অনেক নিরুত্তর প্রশ্নের ঘনঘটায় শেষ করার আগে বলে রাখি মার্সিডিজ কিন্তু শুধু গাড়ি নয়। আমার বা আমার বন্ধুর কাছে মার্সিডিজ হল এডমন্ড দান্তের সেই অপরূপা প্রেমিকা যার কথা ভেবে জয়েসের কিশোর ডেডালাস ও দারিদ্র্য, জঞ্জাল ও তিক্ততার মাঝে আগামী অ্যাডভেঞ্চারের স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নালু মার্সিডিজ জয়েসের ক্ষয়িষ্ণু ডাবলিনে রাস্তার দেহব্যবসায়ী হয়ে পড়ে - এক পরিবর্তন যা অতীতের সারস্বত গৌরব থেকে বর্তমানের পঙ্কিল ও অবক্ষয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে। আমরাও কি সেই ভাবে পিছনের দিকে এগিয়ে যাব? নাকি এডমন্ড দান্তের মত আশা ও অপেক্ষার অলিন্দে আত্মসমালোচনার সাহায্যে উত্তরণের স্বপ্ন দেখব? অতঃকিম।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:d89c:fe9b:794a:2779 | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২২:২২535800
  • আমার মার্সেডিজ সেরকম ভালো লাগে না। তার চেয়ে বিএমডাব্লু বা লেক্সাস বেশী ভালো লাগে। তার থেকে এক ধাপ উঠতে পারলে অ্যাস্টন মার্টিন বা মাসেরাটি। তবে কিনা কে কোথায় মার্সেডিজ কিনেছেন আর পোস্ট করেছেন, সে নিয়ে এতো বড়ো প্রবন্ধ পড়ে একটাই কথা মনে হলো - রিয়েলি? :-)
  • Abin Chakraborty | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:০৯535802
  • হয়ত এই লেখা হলো তিল কে তাল করার নামান্তর।...এটা মনে হতে পারে ভেবেই এই বাক্য টা লেখা। তবে পড়তে তো কেউ জোর করেনি। কেনই বা পড়ে সময় নষ্ট করে আবার মন্তব্য করে সময় নষ্ট করলেন বুঝলাম না।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:d89c:fe9b:794a:2779 | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:১৩535803
  • আসলে অ্যামাজন প্রাইমে দ্য বয়েজ সিরিজটা আবার দেখছি, একটা এপিসোড দেখে পরেরটা শুরু করার আগে হাতে খানিকটা সময় আছে। তাই পড়ে মন্তব্য করে ফেললাম :-)
  • kk | 172.58.244.82 | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:১৪535804
  • অবিন চক্রবর্তী,
    দুটো (বা আড়াইটা) প্রশ্ন আছে -- ১) না পড়লে কী করে বুঝবো লেখাটা আমার ভালো লাগছে না খারাপ লাগছে? ২) পাব্লিক ফোরামে প্রকাশিত কোনো লেখা পড়ে খারাপ লাগলে তা কী জানানো চলবেনা? ২.৫) শুধু প্রশংসামূলক মন্তব্যই করা অ্যালাউড?
  • Abin Chakraborty | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:১৭535805
  • না না। যার যা খারাপ লাগছে বলে দিন। কোন অসুবিধা নাই।
  • Abin Chakraborty | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:১৯535806
  • আমি আপনাদের কাউকেই চিনিনা। আপনারা স্বনামে লিখবেন ও না। ফলে যা মনে হয় লিখে যান। মজা হবে।
  • পাপাঙ্গুল | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:৩১535809
  • এটাকে অবক্ষয় বলা যায় না। সমাজ সবসময় বদলায়, সমাজকে দেখার প্যারামিটার, মূল্যবোধের সংজ্ঞা এসবও বদলায়। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপারও আছে। 
  • Abin Chakraborty | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:৪০535810
  • আত্মপ্রশস্তি ও দেখনদারি ব্যাপারটা কে অবক্ষয় নাই মনে হতে পারে। আমার মনে হয়। তবে সব চেয়ে মজার ব্যাপার হল আগের লেখা গুলোয় ভুল করে একটা দুটো মন্তব্য থাকত। এবারে এখনই খান চারেক। বেশ রোমাঞ্চকর।laugh
  • বাহাত্তর | 208.127.183.209 | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:৪২535811
  • এক অধ্যাপক বন্ধু বলেছিলেন আমেরিকার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে (অন্তত কিছু) নাকি শিক্ষকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের পলিসি নিয়ে স্পষ্ট নিয়ম নীতি থাকে, বছর পনেরো আগে বন্ধুটি বলেছিল তাদের নাকি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফেসবুকে যুক্ত থাকা বিষয়ে শক্ত নিষেধ আছে।

    বিত্তের প্রদর্শন রুচিসম্মত কিনা, বা সমাজ মাধ্যমে রুচিসম্মত কাজ কর্মই করতে হবে কিনা - এইসব সাব্জেক্টিভ বিষয়। আমার কাছে যেরকম প্রথমটা কুরুচিকর, দ্বিতীয়টার উত্তর জানা নেই, আবার বন্ধুবান্ধব সবাই বাড়ি গাড়ি কিনলে আপডেট দেয় সুতরাং অনেকেই আমার সঙ্গে দ্বিমত, এবং ওগুলি হয়তো বিত্তের প্রদর্শন না, ঐ বিত্ত তাদের কাছে এতই সাধারন যে সেসব শুধু নির্দোষ ও নির্ভার আনন্দ ভাগ করা।
    আবার আমি নিজেও হয়তো কখনো কিছু করে, এই বেশ একটা কিছু করলাম - এমন মনে করলে সেসব ভাগ করে নেবো, নিতান্ত গরীব বেচারা এবং বলার মত কিছু নেই বলে বলি না- তাও হতে পারে। আবার যে আরো সাদাসিধে থাকতে ভালোবাসে তার কাছে আমার জামা জুতো দেখেও হয়তো বিত্তের প্রদর্শন মনে হতে পারে।
    যেমন মার্সিডিজ গাড়ি, বিশেষ করে ভারতে, আমার কাছে খুবই বড়লোকি ব্যাপার, কিন্তু অনেকের কাছেই তা না।

    সে যাই হোক, কথা হল, ব্যাপারটা বাঞ্ছনীয় হোক বা না হোক, ছাত্র ও শিক্ষককদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপে একটু আড়াল না থাকলে মুশকিল।

    কদিন আগে এক অধ্যাপিকার বিকিনি পরিহিত ছবি দেখে কোন ছাত্রের চিত্তবিকলন ঘটেছিল, তাতে তার অভিভাবকদের নালিশে বোধয় অধ্যাপিকার চাকরিটিও যায়।

    তো, গোলমেলে ব্যাপার স্যাপার।

    তবে শিক্ষাব্যবস্থার যেরকম খবর পড়ি তাতে মনে হয় অন্তত বিত্ত বিষয়ে এসব দোলাচল বেশিদিন থাকবে না - কারন শিক্ষাব্যবস্থায় এখনকার গতিমুখ বজায় থাকলে দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ কমই পাবে। তো, ওপর তলায় বেশ একটা সাম্য আসবে।
  • পাপাঙ্গুল | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:৫৮535813
  • আত্মপ্রশস্তি ও দেখনদারি কোথায় করেছেন উনি? নিজের ওয়ালে? সোশ্যাল মিডিয়া না থাকলে সেটা নিশ্চয় উনি করতে পারতেন না। সোশ্যাল মিডিয়া তো কুড়ি বছর আগে ছিলই না, যে জিনিসের কোনো অতীত নেই তার অবক্ষয় কি করে হয়। 
     
    লেখাতে কিছু হাইপোথিসিস আছে। ধরে নেওয়া হয়েছে প্রেসিডেন্সিতে পড়ালে তাকে সমাজ সচেতন হতে হবে এবং সে অটো লোনে দশবছরের ধারে মার্সিডিজ কিনতে পারবে না। সেক্ষেত্রে অবক্ষয় হয়েছে আসলে প্রেসিডেন্সির যে তারা ঠিকঠাক অধ্যাপিকা নেননি। laugh
  • Abin Chakraborty | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০০:২৩535819
  • বাহাত্তর মহাশয়/মহাশয়ার শেষ অনুচ্ছেদটি খুব সত্যি। বেশ ভালো। আলোচনা জমে গেছে।
  • ambani er choto bhai | 116.206.220.25 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০০:৩৮535822
  • যা ওয়াড়া !!! উনি কিনেছেন ওনার পয়সায় আপনার ঝাঁট জ্বলছে কেন মশাই ? নাকি গরীব গরীব সেজে থাকার মধ্যে একটা এলিটিজম আছে ? চিরকালীন সেই এক বাঙালী হ্যাজ !!!
  • NRO | 165.124.84.35 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৩:৩৪535826
  • Abin, আপনার point গুলোর বেশ সহজ সরল appeal আছে কিন্তু counter-appeal is way stronger. যেমন ধরুন অধ্যাপিকা যদি ওনার টাকায় গাড়ি না কিনে ব্যাঙ্কে জমিয়ে রাখতেন out of sight তা হলে কি আপত্তি করতেন? মানে objection টা কি wealth accumulate করায় না একটা বিশেষ উপায়ে খরচ করায় ? ভালো গাড়ি চালিয়ে ওনার যদি self-satisfaction হয় তার কি কোনো মূল্য নেই? similarly, Mercedes is a very safe car, full of safety features. অধ্যাপিকার পরিবারের লোকেরা যদি instead of a veritable tin box একটা safe গাড়ি চালাতে চান তাতে খারাপ লাগার কি আছে? আর অধ্যাপিকার কাছে তাঁর নিজের আর পরিবারের happiness & well-being তাঁর ছাত্রদের সেন্টিমেন্টের থেকে কেন বেশি গুরুত্ব পাবে না? ছাত্রকে তো তিনি মোটে কয়েক বছর চেনেন কিন্তু পরিবার তো তাঁর সারা জীবনের চেনা। সবচেয়ে বড়  ​​​​​​​কথা অধ্যাপিকা Mercedes চালান ​​​​​​​বলেই ​​​​​​​ছাত্রদের ​​​​​​​জন্য care করেন ​​​​​​​না ​​​​​​​তার ​​​​​​​তো ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​মানে ​​​​​​​নেই। অর ​​​​​​​তিনি Mercedes না ​​​​​​​চালালেই ​​​​​​​যে ​​​​​​​ছাত্ররা ​​​​​​​সুখে ​​​​​​​থাকবে ​​​​​​​বা better educated হবে ​​​​​​​তার ​​​​​​​তো ​​​​​​​একেবারেই ​​​​​​​কোনো basis নেই। Reversing the situation, given an option, তাঁর কোনো ​​​​​​​ছাত্র ​​​​​​​কি Mercedes drive করার ​​​​​​​সুযোগ ​​​​​​​ছেড়ে ​​​​​​​দেবে অধ্যাপিকার সেন্টিমেন্টের ​​​​​​​কথা ​​​​​​​ভেবে? 
     
    আমি ​​​​​​​নিজে American-style personal freedom এ সম্পূর্ণ ​​​​​​​বিশ্বাস ​​​​​​​করি। Without infringing on others’ rights আমি ​​​​​​​আপনি অধ্যাপিকা তাঁর ​​​​​​​ছাত্ররা - we all have equal rights to live out our lives as we please. আমার নিজের কাছে আমি আর আমার পরিবার first, only and everything. Who cares for some stupid sentimental Bengali student? I don't give a rat's ass for them.
  • Abin Chakraborty | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৬:৩৪535831
  • বাঙালি হ্যাজ ও american style personal freedom এর সমাহার, লেখাতে উত্থাপিত কিছু প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরছে। তা বেশ। ছদ্মনামের মতামত চলতে থাকুক। যেহেতু কিছু ইংরেজি শব্দের ব্যবহার হয়েছে তাই বলছি যে আমার কাছে বিষয় টা narcissistic exhibitionism এর প্রমাণ। It is symptomatic of the excess of acquisitive instinct born out of unchecked consumerism encouraged by late capitalism. পাবলিক ফোরাম এ দেওয়া লেখা। যাদের খারাপ লাগছে নিশ্চিন্তে বলে যান ও একই যাপনকে উপভোগ করুন।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:8f4:a916:349c:8f0a | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৬:৫৬535832
  • আমার মনে হয় একেকজন জীবনকে একেকভাবে উপভোগ করেন। কেউ গাড়ি কিনে, কেউ ঘুরে বেড়িয়ে, কেউ খাবার খেয়ে, কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। এ নিয়ে এতো সমালোচনা করার কি আছে। আর তাও তো বেচারি অধ্যাপিকা মার্সেডিজ কিনে লং ড্রাইভে গেছেন, যা একটা মিডল বাজেট গাড়ি। বেন্টলি বা বুগাটি তো কেনেননি, ল্যাম্বরগিনিও না। আশা করি উনি ওনার গাড়ি অনেকদিন উপভোগ করবেন, সুন্দর মেমোরি তৈরি হবে, সেসব হয়তো পোস্ট করবেন (যদি উনি চান)। লিভ লং অ্যান্ড প্রসপার আর কি :-)
  • &/ | 151.141.85.8 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৭:০৭535833
  • কী বিষয় পড়ান উনি? কীরকম পড়ান?
  • :|: | 174.251.163.212 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৭:১৩535834
  • ছটা ছাপ্পান্নর শেষ দুটি লাইন এতো ভালো লাগলো! খুবই আন্তরিক। 
    তবে মনে হয় লেখকের সমস্যাটি "অধ্যাপিকা" এবং "মোটামুটি দামী গাড়ি" কেনা সর্বোপরি সেটি "পাবলিকলি ঘোষণা" করায়। এই কম্বিনেশনের একটিও অনুপস্থিত হলে হয়তো প্রবন্ধটি দিনের আলো দেখতো না। 
    আসলে আমাদের ভাবতে ভালো লাগে সেই প্রাচীন পণ্ডিতমশায় যেমন সায়েবের কুকুরের একটি পায়ের সমান মায়না পেতেন অধ্যাপকরা তেমনই পাবেন। যদি বেশী পানও তবে সেটি ব্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখবেন। প্রাচুর্য দেখানোর চেয়ে দারিদ্র দেখানেপনা আমাদের বেশীরভাগেরই পছন্দের। যদিও দুটিই দেখানেপনা মাত্র। এবং কোনও মানুষই অন্যের দেখানেপনার দ্বারা পার্মানেন্টলি প্রভাবিত হয়না তবু তেমনটি ভাবতে ভালো লাগে। আর ভালোলাগার পথে কোনও বাধা এলে কিই বা করবো -- একটি কবিতা অথবা একটি প্রবন্ধ লেখা ছাড়া! (দীর্ঘশ্বাসের কোনও ইমো হয়না, হায়!)
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:8f4:a916:349c:8f0a | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৭:২০535835
  • হুঁ, আমারও তাই মনে হলো। অধ্যাপিকা কেন সোশ্যাল মিডিয়ায় গাড়ি পোস্ট করেছেন, সে নিয়ে বোধায় লেখক মনক্ষুন্ন হয়েছেন। তাহলে সেই পুরনো প্রশ্ন করা যায় - অধ্যাপিকা বলে কি মানুষী নয়? তবে প্রবন্ধ লেখা ভালো অভ্যেস :-)
  • &/ | 151.141.85.8 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৭:২০535836
  • হুঁ, যদি ইনি কোনো নেতা বা ব্যবসায়ী হতেন...
  • Abin Chakraborty | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৭:৩৪535837
  • অধ্যাপিকা না হয়ে অধ্যাপক হলেও বক্তব্য একই থাকত।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:c1:3f7a:df0d:926e | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৭:৪৭535838
  • হ্যাঁ, অধ্যাপক বা অধ্যাপিকা। যিনি যে প্রফেশনেই থাকুন না কেন, তিনি তাঁর মতো এনজয় করুন, অন্যদের সাথে নিজের ভালো লাগা শেয়ার করুন (বা না করুন)। জীবন একবারই পাওয়া গেছে, কাজেই আনন্দ করুন। 
  • NRO | 165.124.84.35 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ০৯:৪৭535844
  • আমার তো অবাক লাগছে এটা জেনে যে ছাত্ররা অধ্যাপিকার social network monitor করে বলে। That's kind of weird stalking. তাছাড়া where to draw the line? অধ্যাপিকা যদি ভালো দামি কোনো Salon এ যান দামি শাড়ী কেনেন তাহলে কি দরিদ্র female student রা নিজেদের বঞ্চিত মনে করবে? দামি হোটেলে গেলেও তাই ? একটা দামি ​​​​​​​গাড়ি ​​​​​​​চড়া narcissistic exhibitionism হবে কেন? In fact, কেউ ​​​​​​​দামি ​​​​​​​গাড়ির ​​​​​​​ছবি ​​​​​​​দিচ্ছে ​​​​​​​মানেই ​​​​​​​সেটা narcissistic exhibitionism  তা ​​​​​​​ভাবাটাই ​​​​​​​তো sickening, abnormal.
     
    No, there is another way to look at it. দরিদ্র ​​​​​​​বঞ্চিত ​​​​​​​নিপীড়িত ​​​​​​​ছাত্ররা ​​​​​​​বরং ​​​​​​​সফল successful অধ্যাপিকা কে ​​​​​​​দেখে ​​​​​​​উদ্বুদ্ধ  হবে - they will get encouraged, motivated to be successful in life too. They will understand that if they study well, work hard then they too will one day drive a Mercedes. Sort of like the way Ambani marriage triggered a rush in high-end ceremonies. That is the American way. 
     
    Footnote: What kind of sick twisted perverted student minds declared that one of history's worst mass murderer, Mao, was their chairman too? the Naxals! Their feelings carry zero zip zilch nada weight in civilized society. 
  • Abin Chakraborty | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১০:৪০535853
  • You are free to disagree. I don't care about the American way just as you don't care about my perspective. 
  • :) | 2406:7400:63:355f:ac7e:245c:9b2:34d1 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৩৮535874
  • এই কমি টা ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্স এ ভুগছে | এরও ওষুধ রড থেরাপি |
  • Suvasri Roy | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৫:৩০535881
  •  প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গী পৃথক। সেটা মনে রেখে মন্তব্য করছি। গাড়ি দেখানোটা অবক্ষয় নয় , দেখনদারি মানসিকতা। অধ্যাপক অধ্যাপিকা থেকে শুরু করে সব্জি ব্যবসায়ী যে কারুর মধ্যে এটা থাকতে পারে। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:5560:e69d:ef83:1c69 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৬:০৫535882
  • এই দেখুন মার্সেডিস কুপের রিভিউ। অটোকার ইন্ডিয়া আমার প্রিয় চ্যানেলগুলোর মধ্যে একটা, ওরা ঘন্টা চারেক আগে এই ভিডিওটা আপলোড করেছে। তবে কেন জানি, মার্সেডিস এর ডিজাইন ল্যাংগুয়েজ আমার কোনদিনই খুব একটা পছন্দ হয় নি। 
     
  • বাহাত্তর | 134.238.164.191 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৮:১২535889
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যকলাপে আড়াল ব্যাপারটাই এখানে ম্যাটার করে বলে মনে করি। দোকানী, প্রোমোটার, মিস্তিরী, ব্যাংকার - ইত্যাদিদের সঙ্গে খদ্দেরের যা সম্পর্ক, শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সম্পর্ক তো ঠিক তা না, তাই শিক্ষকের বৈঠকখানায় সারাক্ষন উঁকুঝুঁকি মারার সুযোগ থাকলে মুশকলি হতে পারে - কোন ব্যক্তিগত ভালোবাসা, প্রশ্রয়, সখ্য - এইসবের সেতু ছাড়া।
    অনেক শিক্ষকই তাঁদের ছাত্র ছাত্রীদের বাড়ি টাড়ি নিয়ে যান, বিজয়ায় লাড্ডু, ইদে ফিরনি বা খ্রিসমাসে কেক খাওয়ান - তবে সেখানে সামাজিকতার উষ্ণতা থাকে, সমাজ মাধ্যমের নৈর্ব্যক্তিক শীতলতার বদলে, তো ঐটা ম্যাটার করে বলে মনে হয়।

    তো, অধ্যাপিকা গাড়ি কিনেছেন, তাতে কার কী। সত্যিই কারো কিছু হওয়া উচিত না, আর প্রেসিডেন্সি না হয়ে কোন প্রাইভেট কলেজ ইউনি হলে এসব হতোও না (সত্যি বলতে কি কী হচ্ছে বা হয়েছে বা আদৌ এই নিয়ে কোন কথা হচ্ছে কিনা কিছুই জানি না, গুরুতে এই লেখাতেই শুধু পড়লাম)। ব্যক্তিগতভাবে, এই নিয়ে কোন কূটকচালী হওয়া উচিত না - এমনই আমি মনে করি।

    মুশকিল হল, সুমন গেয়েছিলেন, কেউ যদি বেশি খায় খাওয়ার হিসেব নাও কেন না অনেক লোক ভালো করে খায় না। তো, ভালো করে খায় না এমন লোক অনেক, আর যে ভালো করে খায় না, তাঁর চোখে নিতান্ত পরিমিত আহারকারীকেও বেশি খাওয়ার দলে বলেই মনে হবে।

    এইটা একটা খুবই বড় সমস্যা বলে মনে হয়। লোকজন সব আলাদা দুনিয়ায় থাকে। যেমন ডিসির কাছে মনে হচ্ছে মার্সিডিজ মিডল বাজেট গাড়ি, আমার চোখে মার্সিডিজ বড়লোকির পরাকাষ্ঠা। অনেকের চোখে গাড়ি ব্যাপারটাই দূর স্বপ্ন - এবং এমনও না যে তাঁরা খুব দূর গ্রহের বাসিন্দা। আবার এমনও অনেকে আছেন যাঁরা ব্যক্তিগত গাড়ি দূরে থাক, প্রয়োজনে লাশ বইবার জন্য ভ্যান রিক্সাও ভাড়া করতে পারেন না।

    এবার যে মার্সিডিজ কিনছে- সে কী এসব ভেবে কেনা বন্ধ রাখবে, বা ফেসবুকে দেবে না? কেন দেবে না, অবশ্যই দেবে। আমি নিজেই তো কদিন আগে বারো বছরের পুরনো গাড়িটা হেড অন কলিশনে টোটাল হয়ে যাওয়ার পর নতুন গাড়ি কেনার পর একটা অবিচুয়ারি পোস্ট করবো বলে ভাবছিলাম, আগের গাড়িটা অনেক দুঃসময়ে সঙ্গে ছিল। ল্যাদ খেয়ে দেওয়া হয়নি।

    তো, সেইসব ঠিকই আছে, অথবা নেই, কিন্তু আমরা সবাই সেই সব নিয়েই আছি।
    কিন্তু আমাদের নিজেদের দুনিয়ার বাইরেও অন্য অন্য দুনিয়া আছে, সেসব নিয়েও লোকে চিন্তা ভাবনা করে, তা করুন, ভালো তো।

    অধ্যাপিকাকে সমালোচনা করার সত্যিই কিছু নেই, একেবারে একমত।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় একত্রে পাত পেড়ে পাশাপাশি বিরিয়ানি আর পান্তা খাওয়ার ব্যাপারটা সুবিধের লাগে না। সেটাও মার্সিডিজ মালিকের দোষ না, যুগের হাওয়া।
    হাওয়াটা একটু বেশি এলোমেলো আরকি।
    দিনকর রাও, টোপি সাম্হাল - এইরকম।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:5560:e69d:ef83:1c69 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৮:২৭535892
  • "তো, অধ্যাপিকা গাড়ি কিনেছেন, তাতে কার কী। সত্যিই কারো কিছু হওয়া উচিত না, আর প্রেসিডেন্সি না হয়ে কোন প্রাইভেট কলেজ ইউনি হলে এসব হতোও না (সত্যি বলতে কি কী হচ্ছে বা হয়েছে বা আদৌ এই নিয়ে কোন কথা হচ্ছে কিনা কিছুই জানি না, গুরুতে এই লেখাতেই শুধু পড়লাম)। ব্যক্তিগতভাবে, এই নিয়ে কোন কূটকচালী হওয়া উচিত না - এমনই আমি মনে করি"
     
    এখানে ১০০% সহমত, তবে একজন আছেন র২্হ নামে, তাঁর সাথে আমি প্রায়শই সহমত হই :-)
     
    "অনেকের চোখে গাড়ি ব্যাপারটাই দূর স্বপ্ন - এবং এমনও না যে তাঁরা খুব দূর গ্রহের বাসিন্দা। আবার এমনও অনেকে আছেন যাঁরা ব্যক্তিগত গাড়ি দূরে থাক, প্রয়োজনে লাশ বইবার জন্য ভ্যান রিক্সাও ভাড়া করতে পারেন না"
     
    এখানেও ১১০% সহমত। তবে তার দায় কোন প্রফেসরের নেওয়ার কথা না, তিনি যেখানেই পড়ান না কেন। অবশ্য সেকথাও ৭২ বলেছেন :-)
     
    তবে ইয়ে, মার্সিডিজ কিন্তু বড়োলোকির পরাকাষ্ঠা নয়, মাইরি বলছি। আর সেটা আমার মতও নয়। বেশীর ভাগ লোক মনে করে বড়োলোকির পরাকাষ্ঠা হলো গিয়ে রোলস রয়েস, যারা আপনাকে জিগ্যেস করে আপনার পছন্দমতো গাড়ি বানিয়ে দেবে। বা ধরুন কোনিগসেগ, যা এখনো অবধি পৃথিবীতে আড়াইশোটা মতো বানানো হয়েছে। একটা জেকব অ্যান্ড কো এর ঘড়ি পড়ে যদি কোনিগসেগ চালিয়ে ঘুরতে বেরোন, সে হলো গিয়ে বড়োলোকির পরাকাষ্ঠা। কাউকে জিগ্যেস করে দেখুন :-)
     
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:5560:e69d:ef83:1c69 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৮:৩৪535893
  • আর হ্যাঁ, কি হয়েছে আর সে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কি হচ্ছে সে আমিও একেবারেই জানিনা, এই টইতেই প্রথম জানতে পারলাম। এমনকি কোন মডেলের মার্সেডিজ, টপ এন্ড না বেস ভ্যারিয়্যান্ট, তাতে অপশনাল অ্যাকসেসরিস কিছু আছে কিনা, সেটা লং ড্রাইভে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, এসব কোন কিচ্ছুই জানিনা (জানার দরকারও নেই) :-)
  • ☠️ | 2406:7400:63:355f:b956:d04:6141:3280 | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৮:৫২535894
  • এক লাইন এ লিখতে গেলে , লেখক অবিন চন্দ্র পাতি হিংসেয় ভুগছে | 
     
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন