আমিও ঢুকতে চাই না, তবে ওই হাত সুড়সুড় কচ্চে! ইন ফ্যাক্ট প্রথম পর্বে শিক্ষাসংস্কার শেষ করার পরে দ্বিতীয় পর্বে সমাজসংস্কারে হাত দেওয়ার আগে হপ্তাখানেক কিছু নতুন-পুরনো লেখা ঝালিয়ে নেওয়ার দরকার হচ্ছিল। ফাঁকে সামান্য বোরডম কাটাতে এখানকার 'সেন্টার স্টেজ'-এ চলে এসেছিলাম। সম্ভবত পরশু থেকে গা ঢাকা দেব। আপনারাও শান্তি পাবেন।
আজ্ঞে না, অ্যাডাম দেশজ শিক্ষাপদ্ধতিকেই সামান্য অদলবদল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাকে খারাপ তো বলেনইনি, উল্টে তার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন তাঁর তৃতীয় প্রতিবেদনে। সেই ব্যবস্থাকে টোমাসন চালু করে দেন। চরম সফল হওয়ার পরে ডালহৌসি তাকে বাংলায় চালু করতে বলেছিলেন। মানা হয়নি। অনেক পরে ১৮৭২ নাগাদ বাংলায় তা চালু করেন ক্যাম্পবেল। উচ্চশিক্ষায় কোপ পড়ছে বলে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি তাঁকে তাড়িয়ে ছাড়ে। অথচ মহসীনের টাকায় চলা কলেজে তাদের পড়তে আপত্তি হয়নি! হান্টার কমিশনের রিপোর্ট দেখবেন, মুসলমানদের কী হাল হয়েছিল তা স্পষ্ট লেখা আছে। তারও আগে হান্টারের ইন্ডিয়ান মুসলমানস-এও সেই চিত্র ধরা আছে।
আর কেন মেকলে আসলেন, এসেই কমিটির মাথার বসলেন, কেন পাশ্চাত্য শিক্ষা চালু হল, কেন মাতৃভাষাকে অবহেলা করা হল - তার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। শিক্ষিত বাঙালির ব্রিটিশপ্রীতি ও মুসলমান ভীতি তাতে স্পষ্ট। একই সময়ে বোম্বেতে কিন্তু মাতৃভাষাকে অবহেলা করা হয়নি। সোমপ্রকাশ ও সমকালীন বাংলা ও ইংরেজি সংবাদপত্রের একাধিক সম্পাদকীয় ও প্রতিবেদনে এই পাশ্চাত্য শিক্ষা চাকরির জগতে অতি দ্রুত কী অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছিল তার চিত্র আছে। ফলে আমাদের আম ও ছালা - দুই-ই গিয়েছিল। এত ইংরেজি চালু করেও ১৯৭১ সালে সংস্কৃত কলেজে আন্ডারগ্রাজুয়েট ছাত্র ২৬ জন, বহরমপুরে ৬ আর কৃষ্ণনগরে সম্ভবত ১৪ কিংবা ১৫! কী লাভ হল সব মিলিয়ে?
//কার মনে কী ছিল, কে বদমাইশ, কার মনে প্যাঁচ, কে স্টুজ বা দালাল//
ভাটিয়ালিতে করা একটা হালকা মন্তব্য যে লেখাতে থাকবেই, সেই সিদ্ধান্তে দ্রুত চলে আসা কেন?
খ, "আইডিয়ার ভ্যালিডেশন চাইবার প্রয়োজনীয়তা কেউ বোধ করে নি"। এটা আপনি আমাকে এর আগেও বলেছেন এবং বিশ্বাস করুন আদৌ আমি সেই ভ্যালিডেশন এখানে চাইছি না। মানে আপনি আমার সঙ্গে একমত হলেন কি না কিংবা হবেন কি না - এসব ভেবে-টেবে এখানে কেউ লেখে বলে মনে হয় না। আমি আমার জায়গা থেকে বলছি, সে জিনিস আপনি মানতেও পারেন। না মানতেও পারেন।
এখানে সবাই কৃতবিদ্য মানুষ। ভালো অ্যাকাডেমিক কেরিয়ার, জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রায় সবাই বিদেশে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের অধিকাংশই ওখানেই চাকরি নিয়ে থিতু হয়ে গেছেন দীর্ঘদিন। এখন সবার তো আর একই বিষয়ে আগ্রহ থাকতে পারে না। কাজেই ওসব কথা মাঝে-মধ্যে বেরিয়ে আসে।
'amount of hostility'-র কারণ খুব সোজা। এক, আপনি যেটা জানেন সেটা আমি জানি না, বা জানলেও সম্পূর্ণ উল্টো জানি - এটা স্বীকার না করতে পারার সততা। দুই, আমি নিছকই ডিগ্রি ও পেডিগ্রিহীন এক লোক। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি মুখে বললে কী হবে, এ বিষয়ে তার অহং জ্ঞান টনটনে। ফলে...
আমি শুধু আশ্চর্য হই জেন্ডার স্টাডিস যেখানে বর্তমানে ইতিহাসচর্চার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন্ড, সেখানে মানুষজন কি উইডো ম্যারেজ অ্যাক্টটা পড়ে অবধি দেখেননি? রঘুনন্দনের দায়তত্ত্ব না-ই পড়তে পারেন। তাহলে এত উলুতপুলুত কেন? কেন শিক্ষাবিস্তারের ডিসকোর্সে মহসীন, সাবিত্রী ফুলে কিংবা গুরুচাঁদ-হরিচাঁদ চিরদিনই প্রান্তিক অবস্থানে থাকেন? সে কি জীবনেও তাঁরা প্রান্তিক হতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে? কে জানে।
kc | 37.39.144.141 | ৩০ আগস্ট ২০২০ ১৩:২১
না পাইনি। নামের পরে 'বাবু'টা স্বচ্ছন্দে বাদ দিয়ে দিন।
পড়ুন, আলেকজান্ডার দুগিন'এর সঙ্গে মিল পাবেন।