এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • চুনসুরকি অলিগলি

    Sayantan
    বইপত্তর | ২৮ ডিসেম্বর ২০০৫ | ১৪৪৪৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • de | 59.163.30.3 | ০৬ নভেম্বর ২০১১ ১৭:৪৭451248
  • সান্দার কবিতা নিয়ে জাস্ট কোন কথা হবে না -- শুধু চুপচাপ ডুবে গেলাম!
  • sayan | 101.63.244.242 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৮:৪১451249
  • টেস্ট। আর্হুতো আছো? :-)
  • sayan | 101.63.244.242 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৩০451250
  • সে আবার এসেছিল পূর্ববৎ অনাহূত ভূমিকাবিহীন
    অনুষ্ঠানসূচি ফের সামান্য বা অসামান্য বদলে গেল, ফের
    রাগ করল নৈশাহার-আহ্লাদের সপ্তপদী কুমকুমের টিপ -
    প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হল, জ্বলে উঠল বুকশেল্‌ফে বেডশীটে ওৎপাতা
              সুভদ্র ফার্নেস
    কেউ জানতে পারবেনা বীমাপত্রনিরপেক্ষ দাহনের ঈর্ষা কত
              মারাত্মক সাহিত্যসম্ভব।

    এসব পুরনো গল্প
    নতুনের মধ্যে হয়ত র-সিল্কের তুমুল পাঞ্জাবি
    অথবা নাতিশীতোষ্ণ অস্পষ্ট বিদেশপথ খুলে যায় সুবিনয় রায়ের
    সম্বৃত গানের মন্ত্রে। ক্রমশ নিষ্পাপ হয় আমার চোখের দীর্ণ
              হলদে পরকলা
    ক্রমশ নিষ্পাপ হয় অপরাধী উঠোনের ধূলিময় অপরিহার্যতা
    তখন আকাশ থেকে সরাসরি মর্তে নামে দূরত্বঘনিম মৃদু থরথর
              ভিন্ন শয্যায়
    এতে কারও ক্ষতি নেই, লাভ নেই। তবুও আগুন
    লেগে যায় বেডশীটে, বুকশেল্‌ফে। চেয়ে দেখি, দমকল একঘন্টা পরে।

    ততক্ষণে যা হবার হয়ে যায়। যুদ্ধপ্ররোচক
    নিশ্চুপ ঘরোয়া ফোটোফ্রেম মজা দেখে নৈঋতের ঝুলবারান্দায়।
    আমার চোখের সামনে তার চোখ, প্রশ্রয়মেদুর মেঘ,
              নীচে আরও নীচে
    নেমে আসে, চন্দ্রসূর্যগ্রহতারা-বিন্যস্ত বিধান আর
    ছন্দের গার্হস্থ্য ফেলে অসুস্থ ঠোঁটের তপ্ত তৃষ্ণা নিয়ে সকরুণ ঝড়।
    নিভে যায় মোমবাতি, ছিঁড়ে যায় বৈদ্যুতিক তারের প্রগতি ...

    অত:পর সাহিত্য সৃষ্টি হয়।
  • Nina | 12.149.39.84 | ০১ মার্চ ২০১২ ০০:০৮451251
  • সান্দা---বাহ!
  • Tim | 173.166.51.226 | ০১ মার্চ ২০১২ ০০:৪৮451252
  • অত:পর সাহিত্যের সৃষ্টি হয়। পুরোনো বইয়ের পোকাকাটা পাতা, হলদেটে হয়ে আসা আঙুলের ছাপ শুষে নেয়া কোনাগুলো তাকিয়ে থাকে। পিচ্ছিল, শিরশিরে একদল শরীর বাঁধানো বইয়ের খাঁকেখোপে ক্রমশই নড়াচড়া করে ওঠে, সামান্য স্পর্শে দলা পাকায়, অথবা শুধু মরে পড়ে থাকে।

    সেই সাহিত্য, ব্যর্থ সাহিত্যও বলা যায়- যা একদা উদ্বেল করেছিলো। আজ সেইসব অমোঘ পংক্তি মুখোশের মত লাগে। শস্তা ছবির প্রচ্ছদ, সীমাহীন কল্পনায় জারিয়ে নেওয়া উইঢিপিস্বরূপ পাহাড় ও স্তেপের ছবি, দিগন্তবিস্তৃত উপত্যকা বলে ভেবে নেওয়া যাকে, সে নেহাৎই শস্য কেটে নেওয়ার পর পড়ে থাকা মরা খেত। নদীবিভ্রমে যাকে নিয়ে কবিতা উপন্যাসে আদিখ্যেতা হয়েছে--- দেখা যাচ্ছে সে নেতাৎই খাল, তায় কুমীরের ডিম জমানো পলির থাকে থাকে।

    তবু প্রশ্রয় দিতে ইচ্ছে করে। ঐ মরা খেতকে ঢেউখেলানো উপত্যকা বলে ভেবে নেওয়ার জন্য, ঐ ঢিপিকে আকাশছোঁয়া পাহাড় ভেবে ফেলার, ঐ নর্দমাকে স্বচ্ছতোয়া ভাবার জন্য উচাটন হয়। ইচ্ছে হয় দৃষ্টি ঘোলাটে হোক, বুদ্ধি ভেস্তিয়ে যাক, কার্য্যকারণের গাঁটগুলো আলগা হয়ে আসুক। ইচ্ছে হয় যুক্তিকে জঞ্জালের ঝুড়িতে বিসর্জন দি। শুধুই, স্রেফ ইচ্ছেপূরণ হয়ে নি:শ্বাস নিতে ইচ্ছে করে আমরণ।
  • siki | 155.136.80.36 | ০১ মার্চ ২০১২ ০৯:১৫451253
  • অত:পর সাহিত্যের সৃষ্টি হয়।

    সান্দা, আই লাভ ইউ। :)
  • sayan | 160.83.96.84 | ০১ মার্চ ২০১২ ১২:৩০451254
  • কিসি, ভোকাল-কর্ড'কে জানাচ্ছি!
  • siki | 155.136.80.36 | ০১ মার্চ ২০১২ ১২:৩২451255
  • :)

    ভোকাল কর্ড হাঁপ ছেড়ে বাঁচবে। :-))

    কীভাবে লিখিস বল তো এত ভালো? রিসেন্টলি কিছু ঘটল নাকি? ;-)
  • Nina | 12.149.39.84 | ০১ মার্চ ২০১২ ২২:৫১451256
  • আহা সিকির মুখে ঘী শক্কর ;-))
    অন্নেক্কটা করে
    ( মোটা হওয়ারও ভয় নেই ওর :D)
  • sayan | 115.241.4.63 | ০১ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৩451258
  • নি:শ্বাসে সুগন্ধী রজনীর দমক লাগে কই আর! সাহিত্যের সম্বিত ফিরলে এপাশ-ওপাশ করতেই থাকে, কানে আসে হাপর টানার আওয়াজ। আমি লোহা পুড়তে দেখেছি। নি:শ্বাসের আগুনে জীবন পুড়তে দেখেছি অনেক। কবি বলেছেন, "পুড়তে আমি ভালোবাসি, ভালোইবাসি / পুড়তে আমি চাচ্ছি কোনো নদীর ধারে'। সেই হাঁটুজল নদীর চরে ময়াল সাপিনী মাতৃগর্ভে লুক্কায়িত রাখে সর্পিল গতিবেগ এবং স্নেহ। সেখানে পলি নাই। সেখানে যদি আচমকা ছুঁয়ে দিস, দেখবি আজও উঠে বসে শিহরণ।

    কোন্‌ বেভুল ঠিকানায় ডাকটিকিট লিখে বুঝি কেমন উদগ্র ঘুরপথ। পায়ের নীচে গলিত শবের অনুভূতি। ঘেমে চান, ধড়মড় ঘুম ভেঙে দেখি নিজের শবদেহের উপর দিয়ে হেঁটে চলার স্বপ্নের রেশ কী ভীষণ প্রবল। আমার অতুল মোহের তাগিদে নদীর কোলে বালু ভরেছিলাম আপ্রাণ, বাঁধের মত কিছু যাতে ভেসে থাকা যায়। সব স্বপ্নের কুহক দূরে রেখে হাঁটু মুড়ে অঞ্জলি দিয়েছি অনেক, আমার সাধের দৈনন্দিন লবণাক্ত না করে তুলবার মত কিছু, আর দেখেছি বাঁধ ভেঙে গেছে। বইয়ের পাতায়, লেখার খাতায়, অনর্থক মোহমায়ায় বিন্দু বিন্দু স্বেদ জমেছে দীর্ঘকাল। এসব মুক্ত হোক। কেটে যাক পিছুটান। পরমুখাপেক্ষিতা জেরবার আর না করুক তুচ্ছাতিতুচ্ছ সেইসব থেকে-যাওয়ার মত দুটো তিনটে রিংটোন। এবার যেন আর না থামি। তুই, তোরা আসিস কোনওদিন আমার বাড়িতে। দেখি কেমন খেলেছিস ট্রেজার হান্ট। খুঁজে নিস আটলান্টিস। পূণ্যভূমে পূণ্যস্নান তোলা থাক পূণ্যার্থীদের শরণে। আমি লোহা ঘষটাই। হাঁটুতে। শিরস্ত্রাণে। বল্লমের ফলায়। আজ নিহতদের লিস্ট, আজ রেজাল্ট আউটের দিন। শঙ্খধ্বনি।

    (টিম'কে)
  • aranya | 144.160.98.31 | ০২ মার্চ ২০১২ ১০:৪৪451259
  • টু গুড।
  • de | 180.149.51.68 | ০২ মার্চ ২০১২ ১৪:১২451260
  • সান্দার লেখা পড়লে চোখে জল আসে, বিনা কারণেই!
  • Tim | 70.88.243.246 | ০২ মার্চ ২০১২ ২১:৫৯451261
  • শাঁখ বাজার আওয়াজ বড়ো মধুর, বড়ো করুণ, বড়ো মনকেমনকরা, নারে? ঠিক বুকের মধ্যে ধড়ফড় করে ওঠা মনখারাপের দিনের মত, আচম্বিতে ঝাঁপিয়ে পড়া, মনখারাপের চোরাবালির মধ্যে তলিয়ে যাওয়ার মত শাঁখের ডাক। যুদ্ধ নেই, ধনুক শিথিল হয়ে খসে পড়া আছে। মৃত্যু নেই, হারিয়ে যাওয়া আছে। আর বিষাদ।

    লেখার জন্য চিঠির কাগজ, ব্লটিং পেপার
    কালি কলম, সব কিনেছি। আপিস থেকে
    আগাম টাকা শুক্রবারে; সবই আছে
    সময় শুধু হারিয়ে গেছে।

    বিষাদ আর বৃষ্টি আসে হাত ধরাধরি করে। দু:খবিলাস। চোখের জল, খানিকটা লজ্জা, আর অসঙ্গতি। নিহত মানুষের তালিকায় চোখ বুলিয়ে যাই, সেখানে তামাম সুখের সময় আর শোকের সময় মিলেমিশে আছে। সেখানে শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিলে তিলে মরে যাওয়া রবিঠাকুর, পেশায় পুরোহিত, যার দমকে দমকে কাশির জন্য তিতিবিরক্ত হত সবাই- তাঁরই পাশে হাঁটুমুড়ে বসে থাকে সদ্য হাঁটতে শেখা এক খিলখিলে মেয়ে, তার আধোবুলি পুরোহিতের কাশির আওয়াজকে সহনীয় করে।

    কিংবা সেই বাঁশিবাজানো লোকটির কথা বলি, ভাবি। যিনি লোডশেডিঙের গুমোট সকালে সর্বাঙ্গে বিন্দু বিন্দু ঘামের ফোঁটা নিয়ে আপনমনে বাজিয়ে যেতেন একটানা। উনুনের ধোঁয়া, রেডিওর চটুল বিজ্ঞাপনকে হারিয়ে দিয়ে টিঁকে যেত তাঁর সুর, কড়া নেড়ে ঘুম ভাঙাতো আমাদের। আজ রোব্বার, ছুটির দিন। অবশ্য মানুষ চিরকালই অসুখের দাস, শোকের আজ্ঞাবহ। শোনা যায় শেষের দিকে শ্বাসকষ্ট থামিয়ে দিত তাকেও।

    এইসব তুচ্ছতাই বেঁচে থাকে, জেগে থাকে শুধু। শাঁখের আওয়াজে জেঠির মুখটা আবছা হয়ে লুকিয়ে থাকে। পায়ে পায়ে ঘোরা রাস্তার হা-ঘরে কুকুরটা, না খেতে পাওয়া করতাল বাজানো ভিখিরির একমুঠি চাল পেয়ে ম্লানহাসি বাঁচিয়ে রাখে আমায়। এই মৃত সময়ে, এই মরে আসা আমি, কোমায় থাকা আমার চৈতন্য কোনমতে বেঁচে থাকি। শাঁখটা বেজেই চলে।

    (সায়নের জন্য)
  • aranya | 144.160.226.53 | ০২ মার্চ ২০১২ ২২:০৯451262
  • আরেকটা টু গুড। এবার টিম-কে :-)
  • sayan | 115.241.83.47 | ০২ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৬451263
  • এক শিশি ভালো কালি চাই, আর ক্রিস্পি একতাওয়া কাগজ।
  • সায়ন | 125.242.155.123 | ১১ মে ২০১২ ০০:০০451264
  • যদি বুকে হাত রাখো যদি আজ সত্যি কথা বলো
    তোমার গর্বিত গ্রীবা অথবা ভ্রূভঙ্গীতে পুরস্কার রাখতেই পারি
    স্খলিত দু'একটি চাউনি ছদ্মপ্রেম নীলাভ চন্দ্রদ্যূতিময় ছটায়

    যদি দেখি মিথ্যের পর মিথ্যে সাজিয়ে
    আবারও গড়তে চলেছ নষ্টামির উপকথা বেপরোয়া চোরাবালি টান
    তোমার দম্ভের নিক্তি পরিপূর্ণ করতেই পারি নিঃস্বতায় নির্দ্বিধায়

    যখন আর দোষারোপের কিছু নেই
    যখন জেনে যাই আমাকে ভালোবাসতে পারবে না তুমি আর
    সযত্নে তুলে রাখি তোমার জান্তব নখর আমার শরীরজোড়া আঁচড়ময়

    অন্ধকারকে আর মনেও কোরও না
    রাত্রির ধারালো দাঁত যদি প্রহর কাটতে পারে না আর, জেনো
    ঠিকানা বদলালে রাতারাতি ছেনালি অন্ধকারেও ভালোবাসা সফল হয়

    আমার স্বপ্নের প্রতি দন্ডে মৃত্যু গুনি
    যখন ভঙ্গুরতা মুখ ফুটে নির্লজ্জ কথা কয়
    আমি স্বপ্ন দিয়ে হিংসা ভরি তোমার মনের গোপন ঠিকানায়

    রীতি-নীতি ভেঙে যদি এভাবেই সত্যি হত
    যে সমাজে টিকে থাকতে আর করে খেতে জীবন তোমাকে বানিয়েছে
    ব্ল্যাক ম্যাজিক উওম্যান, তার বুকে মাথা কুটে মরি সমাজ সচেতনতায়

    জিতে নিয়ে কিছু উপেক্ষিত মন স্বকীয় কঠিনতায়
    বারংবার ছটফট করেছো কালজয়ী কথামালার প্রসববেদনায়
    ভেবেছিলে অমোঘ সাহিত্য সৃষ্টির জ্বালায় এমন দু'একটা প্রাণ উৎসর্গ করাই যায়

    "কী কথা তাহার সাথে" বলে তুমি কূহকিনী ডাকের
    অছিলায় দ্বীপ নিভে দিয়েছিলে আর অন্‌মোল সজনাও এসে দাঁড়ায়নি দ্বারে
    তুমি মন নিয়ে মাতামাতি রক্তাক্ত করেছিলে ঘন বরষা হৃদয়-হৃদয় খেলায়

    .... এভাবেও বেঁচে থাকা যায়।
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১১ মে ২০১২ ১২:৩১451265
  • জ্জিও সায়ংকবি।
    এভাবেও বেঁচে থাকা যায়।
    যায়ই তো।
    অনুচ্চারিত ফোট !
    শিখে গেলে
    এভাবেও বেঁচে থাকা যায়।
  • সায়ন | 125.242.254.155 | ১২ মে ২০১২ ০১:৫৩451266
  • যদি চলে যেতাম
    যদি ডাকলেও ঘুরে চাইতাম না আর
    এক পৃথিবী আমার
    বুকে বাজতো
    বাদবাকি যৌবন বেখেয়াল

    কেন এত প্রশ্ন করো
    কেন ক্ষতে আঙুল রাখো বারবার
    কষ্ট সহ্য করতে শিখেছি
    সমান্তরাল জীবনে
    এসব ছিটেফোঁটা বাঁচা
    শিখিয়েছে মৌনভাষা
    প্রচ্ছন্ন সবকিছু
    হারিয়েছি বেখেয়ালে
    এসব চেওনা আর
    এখানে দীর্ঘ রাত্রি
    কুঠার বয়
    একাকী

    আয় ভুলভ্রান্তি আয় শোক
    হাঁটু মুড়ে বোস আমার স্মৃতির পাশটিতে
    যা কিছু ক্রন্দনের রেশ নয়
    যেখানে অনিচ্ছা বিপন্নতা নিয়ে
    ধাবমান দাম্ভিক চলে যাওয়া
    ছবি আঁকে অবিরল
    সেই কুহুবাঁকে
    ক্লান্ত দিনাবসানে
    আঙুলে আঙুল জড়িয়ে নিস
    আমার মৌলিক উত্তাপ বিন্দু
  • সায়ন | 125.184.90.239 | ২৬ মে ২০১২ ০১:৫২451267
  • লোডশেডিং-১

    সে যুগের লোডশেডিঙে ম্যাজিক ছিল। হাপর টেনে যাওয়ার মত বেখেয়ালি বাতাস, চাঁদের আলোয় উজ্জ্বল নারকেলপাতার ফাঁক দিয়ে ঝিরঝির আলো, বারান্দার জাফরিগুলোর আলো চিরে অদ্ভুত নকশিকাঁথা নির্মাণ, সবচাইতে উজ্জ্বল তারাটির হঠাৎ অনেএএক নীচে নেমে আসা, দূরের কোনও গৃহস্থ বাড়ি থেকে হঠাৎ ওঠা শঙ্খধ্বনি, কলতান .... ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসা, আধোঘুমে কাঁসার সেই থালাটায় একমুঠি গরম ভাতের নিতান্তই থেকে যাওয়া, পরিশেষে সফেদ বিছানা, মায়ের ওম্‌।

    তবে তো স্বপ্ন দেখা শুরু হয়।
  • সায়ন | 125.184.90.239 | ২৬ মে ২০১২ ০১:৫৫451269
  • লোডশেডিং-২

    তেমন সন্ধ্যে তো অনেকই ছিল, হাঁটু পর্যন্ত ধুলো মাখা সাদা-কালো ফুটবলটা, মুন্সিফ কোর্টের মাঠটা, বেএক্তিয়ার বাড়ি-ফেরার রাস্তাটার দখল, পথের ধারে অনেকানেক সাবলীল আকর্ষনের অবলীলা উপেক্ষা, বাড়ির নীচের টাইম-কলটায় পা-ধুয়ে হাতের আঁজলা ভরে ভরপেট লৌহগন্ধী জল ভরে সেই চেনা সিঁড়িটা বেয়ে পাখীদের নীড়ে প্রত্যাবর্তন। একটা ফ্রীল-দেওয়া আসন ছিল, আর তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম, ঢের জলছবি, চেনা মলাটগুলো উল্টেপাল্টে আরও কিছু সময় যখন যায় চলে যায়, খেয়াল জাগত এবার বই না বার করলেই নয়। যা কেউ বোঝেনি, আমাদের সেই মূহুর্তে ভরা জগতটার প্রতিটা আনাচেকানাচে ভরা কত শত অমোঘ নতুনত্বের হাতছানি - উড়ন্ত বাদলাপোকাদের আক্রমণ এড়াতে কে যেন আবিষ্কার করেছিল ষাট ওয়াটের ঝুলন্ত বাল্বটাতে একটি ঝুনঝুনি গাছ উল্লম্বভাবে ঝুলিয়ে দিয়ে পোকারাও তাদের নষ্টনীড় খুঁজে পেয়ে শান্ত হবে, থিতু হয়ে বসবে। তাও দেখি ডানা খসে পড়া দুখানি তিনখানি পোকা একসাথে ট্রেন হয়ে কেমন সুন্দর সরসর করে কোথায় যেন চলে যাচ্ছে। এই সব নতুন আবিষ্কারের মাঝে তিনি গেলেন। মানে আপাতত ঘন্টা খানেক শান্তি। হ্যারিকেন ভালো লাগল না কোনওদিনই। অতঃপর মোম। কারণ গলন্ত মোম একটা অসাধারণ বস্তু। শুধু গরমটুকু সয়ে নিলে বাকিটা সবটাই নির্মাণ। আঙুলে পাতলা পরত, তার ফাঁদে ধরা মশা, মাথার একটা চুল ছিঁড়ে আগুনে ধরলে কেমন পুটপাট করে পোড়ে - শুধু বিটকেল গন্ধটা বাদ দিয়ে বাকিটা। মোমালি ভালোবাসায় শিখেছিলাম ফাঁপা পেঁপেডালে গলন্ত মোম ঢেলে মোমবাতি তৈরী, অথবা ডিমের খোলায়, ক্যামলিনের জল রং মিশিয়ে তৈরী। অন্ধকার খাটের নীচটায় সুরক্ষিত পাখীটাও কেমন থুম হয়ে বসতো। বাইরেটা ভয়ের হলে চোখ বন্ধ রাখতে হয় - এটা জানত ও। শুধু যেই ঝড়জলের রাতগুলোয় তিনি নেই, মানে সেই হয়ত সকালে আসবেন, আর এদিকে পড়া বাকি, না করলে বাড়িতে রিপোর্ট - তেমন তেমন অসুবিধেময় রাতগুলো একটু অন্যরকম, ,জলের গুঁড়োয় মিশে, নিভন্ত মোম, জোর করে বসিয়ে যাওয়া অখাদ্য হ্যারিকেন, তার কাঁপা রোশনিতে চুনকাম করা দেওয়ালে তৈরী হওয়া যত সব ভয়ঙ্কর কল্পনার ছায়ামূর্তি অশরীরী। এমন সময় কড়াং করে বাজ পড়া আর দমকা হাওয়ায় ঘর পুরোপুরি অন্ধকার হওয়া, আমার সব অপরাধের সাক্ষী আরেকটা নীচ থেকে উঠে আসতো, বলতো, চল ঘেরাছাদের কোনটায় নৌকো ভাসাই।

    যদি ঠাহর করতো কেউ, দেখতো দুটো অসমবয়সী ছেলে তুমুল বৃষ্টির নিকষ রাতে টর্চের আলোয় এক ছাতার নীচে উবু হয়ে বসে তোড়ে হওয়া বৃষ্টিতে নৌকোর গতিপথ নির্ণয় করছে। মস্ত মস্ত ফোঁটা তাও চুল গড়িয়ে ঝরে। কতোদূরে!
  • T | 24.139.128.15 | ২৬ মে ২০১২ ০২:২৯451270
  • উফফ, জ্জিও বস।
  • ranjan roy | 24.96.231.191 | ২৬ মে ২০১২ ২০:৫০451271
  • সায়ন্তন,
    কোন কথা হবে না!
  • সিকি | 132.177.245.52 | ২৭ মে ২০১২ ১০:৩৩451272
  • সান্দা,

    নাঃ থাক, পাব্লিকলি বলব না।
  • -- | 127.194.99.13 | ২৭ মে ২০১২ ১১:৩৪451273
  • কোন এক দেশে কোন কোন দেশলাই বাক্সের ওপরে ছাপা থাকে রানীর মুখচ্ছবি। কেক খাওয়ানো রানী। বটগাছের তলায় যারা তাস খেলে যায় দিন থেকে রাত, তাদের হাতেও ধরা থাকে চার-চার রানী,কহানীর বিদ্যা বালান। সেই যে কীর্তনগান, ছলা-কলায় রাধিকাসুন্দরী গানের ছত্র ছত্র চললেন অভিসারে। ছবি বন্দোপাধ্যায় আজ চলে গেছেন, অন্য কোন সুরলোকে। হ্যাঁ আজকেই অভিসার, আজকেই ফুলগুলি ছড়িয়ে থাকে বিছানা জুড়ে। অলৌকিক সুগন্ধের মশারি নেমে এসেছে জোৎস্না হয়ে। বাইরে বেশ হাওয়া, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পেঁপেফুলগুলি মৌচাকের মত গাছের গায়ে লেগে। এই হাওয়াতেই পেঁপের ডালে বাজে বাঁশি, জোৎস্না মাখানো সবুজের পাতায় ঢাকা গাছগুলিতে সহস্র বাদুড়ের মত সবেদাগুলি অনেক দুধ সাদা কান্না বুকে বুজে ঝোলে। দুলতে দুলতে গান, অভিমান, সাদা, নীল ব্লাউজ পরা মেঘগুলি অপেক্ষা করছে দস্যিপনার। শাড়িগুলি উদ্যান গালিচার মত, নরম কান্ডের সাদা-গোলাপী-বেগুনী মিলমিশে নরম কান্ডের দোপাটি গাছেরা চাইছে একটু শিল্পকলার ছাপ। কবে সে লিখবে, এলোমেলো হাতের লেখায়, নদীর জলে চিঠি, একটা বুলবুলি তার অপেক্ষা করছে জাম গাছের ডালে বসে, রাগে ঝুঁটি নাড়িয়ে নাড়িয়ে না খেয়েই মাটিতে ছুড়ে ফেলছে। জাম ফাটতে ফাটতে জন্ম নিল নদী। অনেকগুলোই। সরু সরু সুতর মত নদী, ঘাসফুল আর চোর কাঁটার পাশ দিয়ে কোথাও বা থমকে দাঁড়ায় কোন চরে, লাল, কালো পিঁপড়ে চরে বেড়াচ্ছে নরম ঘাসে আর জাম বিচির সারসার কুঁড়েঘর। দেশলাই বাক্স সেখানে বড় বেমানান, বাক্সোবাড়ি, ফ্ল্যাট বাড়িতে কোন ফুলকারি চাদরের নকশায় শ্রীরাধা শুয়ে থাকার কোন সম্ভবনা নাই। সে তখন সূর্যমুখীর বনের ভেতর দিয়ে একাকী যেতে যেতে গ্রীবা তুলে দেখে এক ঝাঁক টিয়া। তার খোলা চুল ঢেকে দেয় আকাশ। হাওয়ায় ওড়া চুলে হদিস পাই না তার ঠোঁটের, সে কথা বলে পাখিদের সঙ্গে, গানে গানে, সুরদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস, আমরাও দাস হয়ে বসে থাকি রাত জাগা কীর্তনের আসরে।

    ( ২৩ মে'র লেখা)
  • সায়ন | 125.184.57.246 | ০৮ জুন ২০১২ ২২:৫৫451274
  • সব আশরফি মোহর তোমার হবে
    যদি আমার নিথর দেহ আজ বয়ে নিয়ে চলো
    মৃতদের উপত্যকায়
    যদি জেনে গিয়ে থাকো
    মন গুনগুনিয়ে চলে মৃত্যুর খুব কাছেও
    সেই ভেবে অশ্রু বিসর্জন কোরও না
    মনেতে ভয়কে ঠাঁইও দিও না তেমন
    অবশ চিন্তার মত কুশ্রী এখনও হয়ে উঠতে পারেনি মৃত্যু
    একবার ভাবি, এই শেষ
    এর শেষ নেই, বহমান
    আধো তন্দ্রা ঘুমে বিলয়গামী কুয়াশায়
    একে একে জীবনের সব যোগফল সেরে রাখে
    মৃত্যুপথগামী খেরো খাতা
    লেখে ভালোবাসার সব হিসেব নিকেশ
    শুধু তুমিই জেনো
    তোমার উচ্ছল অবগুন্ঠিকায়
    নিয়মিত নাম লিখেছে শারীরবৃত্তীয় মায়াবন্ধন
    সেসব লুকিয়ে রেখো আমার কবরের গভীরে
    নিত্য শুদ্ধ, বদ্ধ মুক্ত
    অবরূদ্ধ উঠান, বন্ধাত্বের উন্মোচন
    প্রতিপালিত হোক শেষ অশ্রুবিন্দুর উন্মোচনে
    আধোজাগরণে, নৈশপ্রক্রিয়ায়
  • সায়ন | 125.184.57.246 | ০৮ জুন ২০১২ ২৩:২৩451275
  • আলোর রোশনাইতে চপল ধূলিকণা আমি
    আমি সেই সূর্যছটা যা দিয়ে তুমি অন্ধকার তাড়াও

    আমি ধূলিকণাকে বলি, যাও এই নির্মম বিশ্ব থেকে
    আর হাত পাতি সূর্যের দোরে - আলোকিত করো

    আমি নরম মৃত্তিকার হায়া শরম রূপে লাজ রাঙাই
    শেষ গোধূলির আলোয় পক্ষীদের বাসা ফেরাই আমি

    আমি বেপথু হৃতদের চেনাই ঘরে ফেরার পথ
    আর হারিয়ে ফেলি নিজের গতিপথ খাদের সীমানায়

    আমি ঢেউ হয়ে নৌকার তলে অবাধ্য আছড়াই
    ডুবোপাহাড়ের গায়ে জলজ উদ্ভিদ হয়ে জন্মাই আমি

    আমি জাহাজ ডুবিয়েছি, কেড়ে নিয়েছি প্রিয়জন
    কিন্তু সময় থামাতে চেয়ে পরাজিত হাস্যষ্পদ আমি

    আমি সেই মুখ যা আত্মহননের পথ বাতলায়
    কী করে মুছে দিতে হয় স্মৃতি সেই রক্তোচ্ছ্বাস আমি
  • Sam | 127.192.231.74 | ০৮ জুন ২০১২ ২৩:২৭451276
  • বেপথু মানে কম্পমান, পথভ্রষ্ট নয়।
  • সায়ন | 125.184.57.246 | ০৮ জুন ২০১২ ২৩:৫৪451277
  • বিপথগামী?
  • Sam | 127.192.231.74 | ০৮ জুন ২০১২ ২৩:৫৭451278
  • না, কম্পমান, মানে যেটা কাঁপছে।
  • সায়ন | 125.184.57.246 | ০৯ জুন ২০১২ ০০:০৩451280
  • সন্দিহান অবস্থান! কম্পাঙ্ক জানা থাকলে পথ বেরিয়ে আসে। জানো তো মানোঃ-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন