এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে: সিকিম

    Arijit
    অন্যান্য | ২৫ অক্টোবর ২০১০ | ৯৭৪৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৪:৩৯458582
  • দমু আর আমি ভাগ ভাগ করে লিখতে পারি। আমরা একসাথে নর্থ সিকিমে গেসলুম, তাপ্পর পেলিং। দমু আগে পরে আরো কয়েকটা জায়গা (ছাংগু, নাথু লা, রাবংলা ইত্যাদি) ঘুরেছে।

    শর্ট আইটিনেরারি -

    ১৫ই অক্টোবর রওনা দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি ১৬ তারিখ গ্যাংটক। ১৭ তারিখ গ্যাংটক থেকে উত্তর সিকিমের দিকে - লাচেন। ১৮ তারিখ লাচেন থেকে গুরুদংমারের দিকে যাওয়া, আর ফিরে লাচুং আসা। ১৯ তারিখ লাচুং থেকে কাটাও, ইয়ুমথাং, জিরো পয়েন্ট ঘুরে গ্যাংটক ফিরে আসা। ২০ তারিখ গ্যাংটক থেকে পেলিং। ২১ তারিখ পেলিং এবং আশেপাশে ঘোরা। ২২ তারিখ পেলিং থেকে নিউ জলপাইগুড়ি। ব্যাস্‌।

    বিধিসম্মত সতর্কীকরণ -

    (১) নর্থ সিকিম গেলে উইলটা অন্তত: করে যাবেন।
    (২) ছোট বাচ্চা নিয়ে গুরুদংমারের দিকে যাবেন না, মিলিটারি আটকে দেবে।
    (৩) ফরচুনা নামক ট্যুর অপারেটরের থেকে দূরে থাকবেন।
    (৪) মেঘলা আকাশ এবং বৃষ্টি থাকলে পেলিং যাবেন না - অত্যন্ত ওভারহাইপড জায়গা। বিশেষ করে খেচিপেড়ি (Khecheopalri) লেকটি একটি কাদাগোলা ডোবা বিশেষ।
  • dd | 124.247.203.12 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৪:৫১458648
  • আসলে ক্ষি,আমার হেথায় লেখার কথাই নয়। তাও ও, না লিখেও পারি না। ঐ যে এক রোগ ধরে বসেছে - সত্যের পথ থেকে বিচুত হতে পারি না।

    অর্জিতের এই প্রায় দাঁত খিঁচুনো মারমুখো ভুমিকার পরে সত্যের জন্য আমি এটাও লিখি।

    সিকিমে আবগারী ট্যাক্সো নেই। নেই তো নেই। ফলত: ইসে অসম্ভব সস্তা। তিরিশ তাকাতেই পেটভরে রাম খেতে পারবেন।

    তব্বে ?
  • Samik | 121.242.177.19 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৪:৫৩458659
  • কিন্তু অজ্জিতের ট্র্যাভেলগ কি এইটুকুনই? কির'ম তারিখ টারিখ লিখে বলে দিল এত তারিখে নিউ জলপাইগুড়ি। ব্যস।

    কেমন ভয় হচ্ছে। বুক গুড়গুড় কচ্ছে।

    ছোটো বাচ্চা মানে, কত ছোটো বাচ্চা? আজ থেকে দুবছর বাদে ভূতোর বয়েস হবে সাড়ে সাত-আট। তখনও আটকে দেবে?
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৪:৫৮458670
  • না, ট্র্যাভেলগ আসছে। ইদানিং প্রচুর কাজ করছি (ফর আ চেঞ্জ), তাও আনট্রেসড টেরিটরিতে - তাই একটু সময় লাগে।

    হ্যাঁ - সিকিমে আবগারি ট্যাক্সো নাই, তাই অসংখ্য তরল পদার্থের দোকান। মানে দুপুরের খাওয়া নাও পেতে পারো, কিন্তু বোতল পেয়ে যাবেই যাবে। গুরুদংমার যাওয়ার পথে যদি দরকার হয় ভেবে এক বোতল ব্র্যান্ডি আমরাও কিনে রেখেছিলুম, তবে কাজে লাগেনি - গাড়িতেই রেখে এসেছি। পাসাং-এর (মানে ড্রাইভার ছেলেটি) কাজে লেগে যাবে:-)
  • d | 14.96.131.132 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৫:৪৬458681
  • মাইরী ঐটা আর নামানো হয় নি তাই না? কিন্তু বেচারা যদি গাড়িটা চেক না করেই ওর কোং এ ফেরত দেয়, তো ওটা অন্য কেউ পাবে। :))

    হ্যাঁ অজ্জিত এইটা ভাল কাজ করেছে। আমিও লিখবো একটু ধীরেসুস্থে।

    আপাতত আমার তরফে বক্তব্য হল:
    ১ নাথু-লা বুধবারে গেট খোলে, কাজেই দেখতে গেলে ঐদিন যাওয়াই ভাল।
    ২। সিকিম ট্যুরিজম এর জন বলে ভদ্রলোক অতি ভদ্রলোক।
    ৩। গুরুদংমারের দিকে যেতে গেলে ৫ বছরের ছোট বচ্চা নিয়ে যাবেন না। আর নিতান্ত যেতে গেলে 'গেছোদাদা'-কৌশিককে সঙ্গে নিয়ে যাবেন।
    ৪। সিকিমের বুদ্ধমূর্তি ও বুদ্ধের অন্যান্য জাতকদের মূর্তিগুলো কেমন যেন হিংস্র মুখের। অমন হিংস্রটাইপ বুদ্ধ বা বুদ্ধের জাতক আমি আগে কক্ষণো দেখিনি।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:০০458692
  • পুজোর সময় এই তল্লাটে থাকবো না সেটা আগস্টেই ঠিক করেছিলাম। কিন্তু কলকাতার বাকি লোকজন একই সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে ফেলায় ট্রেনের টিকিট হল ওয়েটিং লিস্ট। প্রথমে প্ল্যান ছিলো অরুণাচল যাবো - তাওয়াং, ভালুকপং ইত্যাদি। ট্রেনের টিকিটও সেই হিসেবে কাটা - ১৫ই অক্টোবর কাঞ্চনজঙ্ঘায় শেয়ালদা-গৌহাটি আর ২২ তারিখ ওই ট্রেনেই ফেরা।

    কিন্তু অরুণাচলের গুড়ে বালি, কারণ কোত্থাও থাকার ব্যবস্থা করা গেলো না। একবার ভাবলুম ভূটান, কিন্তু সে এমন খরচের ব্যাপার যে শেষে সিকিম ঠিক হল। গ্যাংটক হয়ে গুরুদংমার, ইয়ুমথাং, আর ফেরার আগে পেলিং। নেট ঘেঁটে ফরচুনা বলে এক ট্যুর অপারেটরের খোঁজ পাওয়া গেলো, যাদের লাচেন এবং লাচুং-এ হোটেল আছে, গ্যাংটক-লাচেন-গুরুদংমার-চোপতা ভ্যালী-লাচুং-কাটাও-ইয়ুমথাং-জিরো পয়েন্ট-গ্যাংটক (২ রাত, ৩ দিন) ট্যুরের ব্যবস্থা এরা করে - থাকা/খাওয়া/পারমিট/যাতায়াত সবই এদের দায়িত্ব - গ্যাংটকে পৌঁছে এদের হাতে নিজেদের সঁপে দিলেই নিশ্চিন্ত, এবং খরচও রিজনেব্‌ল (অন্তত: কলকাতার কিছু চেনা ট্র্যাভেল এজেন্ট যা হাঁকছিলো তার তুলনায়)। সাথে দময়ন্তীও জুটে গেলো - গাড়ির খরচটা ভাগাভাগি করা যাবে। এদের ট্যুরটাই বুক করা হল। এই করতে করতে পুজো এসে গেলো, যাওয়ার টিকিট তখনও ওয়েটিং লিস্ট।

    জয়দাদার (ভলভো সার্ভিস) টিকিট কাটা ছিলো, কিন্তু তাও তেরো তারিখ তৎকালের একটা চেষ্টা করলুম - কপাল ভালো - কাঞ্চনকন্যাতে পাওয়া গেলো - পনেরো তারিখেরই, রাতের ট্রেন। ভাগ্যিস গেলো, নইলে দিনের বেলা কাঞ্চনজঙ্ঘায় গেলে সেই যে মেজাজ বিগড়োত তাতে পুরো ট্রিপটাই বাজে কাটতো (কেন, সে পরে আসছি)।

    পনেরো তারিখ - অষ্টমীর বাজার। তার আগের তিন দিন ধরে আনন্দবাজার এবং স্টারানন্দে কলকাতার তুমুল জ্যামের গুচ্ছ গুচ্ছ খবর বেরোচ্ছে। গুচ্ছের লোকজন নাকি প্লেন/ট্রেন মিস্‌ করছে। রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা আটক থাকছে। ভয় টয় পেয়ে বাড়ি থেকে রওনা দিলুম পাঁচটা নাগাদ - ট্রেনের সময় সাড়ে আটটা (যদিও শুরুতে আমার প্ল্যান ছিলো সাড়ে তিনটে-চারটের সময় বেরোব - ভাগ্যিস সেটা করিনি)। কোথায় জ্যাম, কোথায় কি। এমনি দিনে বাড়ি থেকে শেয়ালদা লাগে ঘন্টাখানেক, সেদিন মোটামুটি আধ ঘন্টা/পঁয়ত্রিশ মিনিটে শেয়ালদা পৌঁছে গেলুম। ওয়েটিং রুমে তুমুল ভিড়, কারণ আরো অনেক সাবধানী লোক আছে - যাদের অনেকে সাড়ে দশটায় দার্জিলিং মেল ধরবে বলে পাঁচটায় বেরিয়ে পড়েছে। মানে, ভিড়ভর্তি ওয়েটিং রুমে তিন ঘন্টা কাটানো - সাথে দুজন পায়ে চরকি লাগানো পাবলিক। ধৈর্য্যের নোবেল থাকলে সেটা আমাদের পাওয়া উচিত।

    ট্রেনে উঠে প্রথম সাক্ষাত একটি ইঁদুরের সঙ্গে - সহযাত্রীদের আগেই। সাইড বার্থের সীটে ব্যাগ রাখতেই দুদ্দুর করে সীটের তলা থেকে বেরিয়ে এদিক ওদিক একটু দৌড়োদৌড়ি করে ফের সীটের তলায় কোথায় ঢুকে গেলো (কদিন আগে বাবা-মা ভ্যালী অব ফ্লাওয়ার্স গেছিলো - সেই ট্রেনেও একই দৃশ্য ছিলো - তবে সেই ইঁদুরটা একটু কুঁড়ে ছিলো মনে হয়, কারণ মা চটি দিয়ে সেটাকে মেরেছিলো - বাবা-মায়ের ছবির লিস্টে সেটাও আছে)। মোদ্দা ব্যাপারটা হল সীটের নীচে ব্যাগ রাখা গেলো না, পেল্লায় রুকস্যাকগুলোকে বাংকে তুলতে হল - রাতে ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার চান্স সত্বেও।

    কাঞ্চনকন্যায় প্যাϾট্র-কার নেই, তাই বাড়ি থেকে প্যাক করে আনা লুচি-আলুমরিচ খেয়ে সেই রাত্তিরে ঘুমনো, পরের দিন সকালে নিউ জলপাইগুড়ি। ট্রেন আধ ঘন্টা লেট।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:০২458703
  • হিংস্র বুদ্ধমূর্তি নিয়ে পরে লিখবো। যাওয়ার সময় স্টেশনের বাইরে সিপিএমের স্টল থেকে রাহুল সাংকৃত্যায়নের "তিব্বতে সওয়া বছর' কিনেছিলুম - সেখান থেকে বেশ কিছু ফান্ডা পেয়েছি।
  • Samik | 121.242.177.19 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:০৭458714
  • হুঁ, জ্যাম। এইবার কলকাতায় গিয়ে দেখলাম সিগন্যালের সংখ্যা গাড়ির থেকে বেশি।

    আরেকটা ইনফো। এয়ারপোর্ট থেকে গাড়ি করে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে-দিল্লি রোড হয়ে ব্যান্ডেলে আমার বাড়ি পৌঁছতে টাইম নেয় এক ঘন্টা পাঁচ মিনিট। এয়ারপোর্ট থেকে জেবিনগর হয়ে হাওড়া স্টেশন পৌঁছতে সময় নেয় আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। পিক আওয়ারে।
  • d | 14.96.131.132 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:২২458725
  • হুঁ জয়দাদা ...... জয় মা বলে 'জয়দাদা' থেকে যতটা পারেন দূরে থাকবেন সকলে। লেগস্পেস এত কম ..... এতই কম .... যে কি বলব!! আমাহেন বেঁটে বাঁটকুলেরও মারাত্মক হাঁটুতে ব্যথা হয়েছে এদের ভলবোতে চেপে। এত্থেকে পুণের নীতা ভলভো অনে-এ-এক ভাল।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:২৮458583
  • সকালে এনজেপি পৌঁছনোর পর প্রথম যুদ্ধ ট্যাক্সির জন্যে। প্রিপেইড বুথে একখানাও ট্যাক্সি নেই - কারণ প্রিপেইডের রেট হল সতেরোশো চল্লিশ, আর সেটা ঠিক হয়েছে ২০০৫ সালে। তারপর তেলের দাম বহুবার বেড়েছে। এখন কোনো গাড়িওয়ালা প্রিপেইড বুথে গাড়ি দেয় না। তায় পুজোর ছুটির মরসুম, পীক্‌ ট্যুরিস্ট সীজন - আড়াইয়ের কমে কেউ কথাই বলে না। তাও একটু দরদাম করে বাইশশো করা গেলো। ট্যাক্সি বিনে গতি নাই, আর শেয়ারে যাওয়াও মুশকিল, অতএব...

    রাম্বি বাজারে উপোস ভেঙে গ্যাংটক পৌঁছতে দুপুর দুটো। সেবক রোড গত বছরেও দেখেছি দিব্যি সুন্দর - এখন মহানন্দা স্যাংচুয়ারি পেরনোর পরই পুরো নৌকোযাত্রা। ড্রাইভার বললো - "এ আর কি দেখছেন, যেখানে যাচ্ছেন সেখানে যে কি আসছে তা তো জানেন না...'

    দুপুরে গ্যাংটক পৌঁছে কিছু খেয়ে এক লোকাল ট্যাক্সিওয়ালার সঙ্গে এদিক ওদিক ঘোরা হল - একটা স্তুপ আছে কাছেই, তার পাশে টিবেটোলজি মিউজিয়াম - অবিশ্যি এটাতে ঢুকতে পারলাম না, কারণ হাতে বেশি সময় ছিলো না। সেখান থেকে গেলুম "বন ঝকরি ফল্‌স অ্যাণ্ড এনার্জি পার্ক' - জলপ্রপাতটা মন্দ নয় (তবে সিকিমে প্রতি মোড়ে একখানা দেখতে পাওয়া যায়, আর নামীদামীগুলোর চেয়ে অনামা প্রপাতগুলো কোনো অংশে কম নয় - ইন ফ্যাক্ট "ফল্‌স অব সিকিম' বলে অনায়াসে একখান ছবির বই বের করা যায়)। কি ভিড় এখানে - আর ৯৯% পাবলিকই বাঙালী। তারা সবাই একের পর এক লাইন দিয়ে প্রপাতের সামনে পোজ দিয়ে দাঁড়ায় আর সঙ্গীসাথীরা ছবি তোলে। অনেকের আবার একটাতে সখ মেটে না, বিভিন্ন পোজে দাঁড়িয়ে ছবি তোলায়। বাদবাকি কারো ছবি তোলার কোনো দরকার নেই কিনা...আর সবচেয়ে জ্বলে যখন শাটার টেপার মুহুর্তে কেউ হুড়মুড়িয়ে সামনে এসে যায়...হিসেব কষে শাটার স্পীড/এক্সপোজার সেট করার পর এরকম ঘটলে ইচ্ছে করে এদের কানে কাঠপিঁপড়ে ছেড়ে দিই।

    বন ঝকরি থেকে গেলুম রঙ্কা মনাস্টেরি। রুমটেক একটু দূর, সেদিনই যাওয়ার সময় ছিলো না, তাই এই নতুন মনাস্টেরিটাই দেখতে গেছিলুম। মন্দ নয়, বেশ বড়সড়, তবে বড় হলেই কি আর রুমটেক হয় - রুমটেকের ঐতিহ্যই অন্য...তাও নেহাত ফেলনা নয়, ভিতরের মূর্তিগুলো বেশ সুন্দর। আর ফেরার পথে রাস্তায় এক জায়গা থেকে উল্টোদিকের পাহাড়ে পুরো গ্যাংটক শহরটা দেখা যায়।

    এটুকু ঘুরে সেদিনের মতন ট্যুর শেষ। হোটেলে ফিরে আসার পর ফরচুনার লোক এলো - পরের দিন সকাল দশটায় তারা আমাদের হোটেল থেকে তুলে নেবে কথা হল। সেই মতন দময়ন্তীকে জানিয়ে দিলুম।
  • Samik | 121.242.177.19 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:৪০458594
  • এনজেপি সবসময়ে গলা কাটার জায়গা। ওখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে বা রিক্সা নিয়ে চলে আসতে হয় মহানন্দা রোডে তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ডের সামনে। ঠিক উল্টো ফুটেই সিকিম ট্র্যান্সপোর্টের টার্মিনাস। ওখানে অজস্র জিপ-মারুতি দাঁড়িয়ে থাকে। শেয়ার করার লোকও পেয়ে যাবে, এমনিতেও এনজেপির থেকে কম রেট নেবে। আর বাসে যেতে চাইলে বাস তো আছেই।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:৫৩458605
  • ১৭ই অক্টোবর, যুদ্ধ শুরু। এ যুদ্ধ যে কি যুদ্ধ, তার কোনো ধারণাই ছিলো না।

    দশটার সময় ফরচুনা থেকে লোক আসবে বলে সাতসকালে খেয়েদেয়ে তৈরী হতে গিয়ে দেখতে পেলুম অত গোছানোর মধ্যে ঋতির কোনো জামা আসেনি! বাকি সব এসেছে - সোয়েটার, ওয়াটারপ্রুফ, কট্‌সউলের গেঞ্জি - বাট্‌ নো জামা। ভাগ্যক্রমে ফরচুনা থেকে ফোন করে জানালো যে দশটা নয়, ওরা এগারোটায় আসবে। দময়ন্তীকে সেটা জানিয়ে আমি হাঁটা লাগালুম গ্যাংটকের এমজি মার্গের দিকে - কোনো দোকান থেকে কিছু জামা কিনতে হবে। জামা কিনে ওপরে টিবেট রোডে উঠতে গিয়ে প্রায় দম বেরিয়ে যায় আর কি - হোটেলে ঢোকার মুখে দেখি দময়ন্তী এসে গেছে। এগারোটা বাজলে চেক-আউট করে লবিতে বসে আছি তো বসেই আছি। ফরচুনাকে ফোন করলে বলে - এই আসছি, পাঁচ মিনিটমে পঁওছ যায়েঙ্গে - কিন্তু কেউ আর আসে না - সাড়ে এগারোটা বাজতে চললো। তখন ফের ফোন করাতে বলে কিনা ট্যাক্সি পাচ্ছি না। হতভাগা - আমরা আগের দিন থেকে জানি যে দশমীর দিক ট্যাক্সি পাওয়া মুশকিল হবে - নেপালীদের দশেরা মানে কেউ রাস্তায় নামবে না - আর এখানকার ট্র্যাভেল অপারেটর, তারা কিনা সে খবর রাখে না? প্রায় পৌনে বারোটা নাগাদ একজন এলো একখানি অল্টো নিয়ে (নর্থ সিকিমের গাড়িগুলোকে সকাল আটটার পর গ্যাংটক শহরের ভিতরে আসতে দেয় না, লাচেন স্ট্যান্ড অবধি ট্যাক্সি নিয়ে যেতে হয়)। পাঁচজন লোক (একটা না হয় কোলে যাবে, কিন্তু তার পরেও চারজন) প্লাস লাগেজ - আর একখান অল্টো!!! ঠিক হল দুবারে যাবো। প্রথমবার কিছু লাগেজ নিয়ে আমি আর ঋক, পরের বার বাকিরা। লাগেজ তুলতে গিয়ে ট্যাক্সির জানলার ওপরের প্লাস্টিকের শেড্‌ ভাঙলো (ট্যাক্সি ড্রাইভার আর ফরচুনা তারপর সেটা কিভাবে অ্যাডজাস্ট করলো সে খবর আমরা জানি না), ব্যাগদুটোকে ছাতের ওপর বাঁধেনি বলে রাস্তায় একটু এগোতেই একখানা ধড়াম করে পড়লো - সেগুলোকে তুলে ভিতরে চালান করা হল। লাচেন স্ট্যান্ডে পৌঁছে বাকিদের ফোন করে শুনি নর্থ সিকিমের গাড়িটাই নাকি তখনো আসেনি। তবে পরের ট্রিপে সুমনা, ঋতি আর দময়ন্তী আসার পরেই সেই গাড়ি চলে এলো - একখান নতুন বোলেরো - তখনও টেম্পোরারি পারমিট লাগানো।

    সেই গাড়িতে রওনা তো দিলুম। গ্যাংটক শহর ছাড়ার পরই বুঝলুম শিলিগুড়ির ট্যাক্সিওয়ালা কি বলতে চেয়েছিলো...নর্থ সিকিম হাইওয়েতে রাস্তা বলতে কিছু নেই। ওটা "নেই-রাস্তা'। পাথর, বোল্ডার, কাদা - এই দেখা যায় শুধু। পিচ? কারে কয়? পাশের পাহাড় থেকে হুড়মুড়িয়ে ঝরণা নেমে আসছে রাস্তার ওপর, তলায় বোল্ডার, তার ওপরেই গাড়ি চলছে। কোথাও ষাট ডিগ্রীতে নীচে নামছে, কোথাও উঠছে। প্রতি উঁচুনীচু ভাঙা জায়গায় ড্রাইভারে মুখ পুরো চূণ। জান অগেলো সে (মানে পাসাং) শিলিগুড়ি-গ্যাংটক র‌্যুটে ট্রাক চালায়, এই পথে কখনো আসেনি, রাস্তাও চেনে না, কোথায় কি করতে হবে তাও জানে না। গাড়ির শর্টেজ ছিলো বলে ফরচুনা ওকে অন্য একটা হোটেল থেকে তুলে এনে ভিড়িয়ে দিয়েছে। সে গাড়ি চালাবে না কপাল চাপড়াবে সেটাই ঠিক করতে পারছিলো না। ফরচুনার আরেকটা জীপকে সামনে রেখে সে যাচ্ছে।

    দুপুরে খাওয়ার কথা ফোডোং বলে একটা জায়গায়। ওদিকে সেভেন সিস্টার্স (ফল্‌স) দেখার পর সামনের সেই জীপ হাওয়া। ফোডোং-এ তাকে কোথাও দেখা গেলো না, পাসাং জানেও না কোথায় কি পাওয়া যাবে - ওদিকে ক্ষিদে পেতে শুরু করেছে। বেশ কিছু দূর গিয়ে একটা "ঘাট' ছিলো - সেখানে দাঁড়িয়ে টইক করা হল এখানেই যা পাওয়া যাবে খেয়ে নেওয়া যাক - লঙ্কা আর বেগুনের তরকারি, আর চিকেনের ঝোল - খেতে খেতে সেই সবুজ জীপ এসে হাজির - তারা ফোডোং-এ কোনো এক হোটেলে দাঁড়িয়ে খেয়েছে - এমনই বেয়াক্কেলে যে নতুন ড্রাইভারকে এগুলো যে জানিয়ে দিতে হয়, সেই বুদ্ধি নেই।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৬:৫৮458616
  • ** জানা গেলো **
    ** ঠিক **

    ঘাট - সরু রাস্তা যেখানে একটা একটা করে গাড়ি পাস করে। আর এই ঘাটটা বেসিক্যালি পাঁকে ভর্তি - ফুটখানেক গভীর কাদা, একবারে গাড়িটাকে সেই কাদাভর্তি হাফ কিলোমিটারের বেশি পেরোতে হবে। দাঁড়িয়ে পড়লেই মুশকিল - চাকা আর এগোবে না।
  • sinfaut | 203.91.193.93 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৭:০৭458627
  • আগের বছর নর্থ সিকিমে গিয়ে এরকমই ভয়াবহ রাস্তা দেখেছিলাম। পুরোটা। আর এত খারাপ অবস্থা হওয়ার অন্যতম কারন প্রচুর মিলিটারি ট্রাকের যাওয়া আসা। বৃষ্টি তো আছেই।

    ওখানেই একটা যায়গায় রাস্তায় বিশাল পাথর পড়ে আটকে যাওয়াতে আমাদের ড্রাইভার (সে অবশ্য নমস্য ড্রাইভার ) একটা শুধু পাথর আর কাদার পাকদন্ডি দিয়ে যে পাহাড়ে ছিলাম, সেই পাহাড়ের মাথায় তুলে দিয়ে অন্য একটা রাস্তা ধরেছিল। তখন বিকাল পাঁচটা, অন্ধকার নেমে আসছে। ৮০ ভাগ গাড়িই সেদিন ফিরে গেছিল।

    আর আমরা, ঐ সন্ধেবেলা, কাদা পিছল কখনও ৪০ ডিগ্রির কম নয় এমন পাথর বসানো রাস্তা দিয়ে উপরে উঠছিলাম। আর চরমতম ঘটনা হচ্ছে, সেই রাস্তাতেও কিছু কিছু জায়গায় সাইড করে নেমে আসা দু একটা জিপকে জায়গা করে দিতে হচ্ছিল।

    দুদিন বাদে যখন ফিরেছিলাম, ঐ একই রাস্তা দিয়ে নেমেছিলাম। তখনও সে পাথর পুরো ফাটানো যায়নি।

    লাচুং থেকে ইয়ুমথাং যাওয়ার পথে দেখেছিলাম রাস্তাটাই ঝর্ণা হয়ে গেছে।

    আর গুরুদোংমার থেকে ফেরার পথে একটা মিলিটারি ট্রাক ইচ্ছে করে আমাদের গাড়ির পিছন দিকটা ছুঁয়ে গেলে, আমাদের ড্রাইভার বাবু মনের দু:খে ঐ মাটি পাথরের উপর দিয়ে ৬০-৬৫ তে গাড়ি ছুটিয়েছিলেন, অনেক কষ্টে বাবা বাছা করে তাকে ঠান্ডা করা হয়েছিল।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৭:১৯458638
  • স্কটিশ হাইল্যান্ড্‌সে শিখেছিলুম নুড়িপাথর ফেলা চড়াইয়ে কি করে গাড়ি চালাতে হয়। একটা হোটেলের সামনে কয়েকশো মিটার ওরকম একটা চড়াই ছিলো - প্রথমবার উঠতে গিয়ে ঠেকে গেলুম, তাপ্পর আর গাড়ি ওঠে না। তখন হোটেলের মালকিন্‌ বলেছিলেন রিভার্সে নেমে গিয়ে ফার্স্ট গিয়ারে একবারে ওঠো - না দাঁড়িয়ে, নইলে পারবে না।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৭:৪১458644
  • তো এই রকম ভয়ানক রাস্তা দিয়ে চুংথাং পৌঁছতে পৌঁছতে অন্ধকার হয়ে গেলো। পথে পেরোলাম মঙ্গন, রঙ্গরঙ্গ বলে ছোট ছোট কয়েকটা জায়গা। অ্যাজ ইউজুয়াল অতীব সুন্দর দৃশ্য - কিন্তু পথের অবস্থা জাস্ট ভয়াবহ।

    চুংথাং থেকে রাস্তা দুভাগ হয়েছে। একদিকে লাচেন চু নদীর ধার ধরে লাচেন, অন্যদিকে লাচুং চু-র ধার দিয়ে লাচুং। আমরা যাবো লাচেনের দিকে।

    একদিকে অনেক নীচে লাচেন চু ঝড়ের মত ছুটছে, ফুঁসছে (গোটা সিকিমে এই নদীর গর্জনটা কমন - যেখানেই যাও না কেন - হয় তিস্তা, নয় কালী নদী, নয় রঙ্গিত, নয়তো এদিকে লাচেন চু বা লাচুং চু), অন্যদিকে পাথুরে পাহাড়, এর মাঝে অসংখ্য হেয়ারপিন বেন্ড। এরকম ভাঙা রাস্তা না হলে বলতুম "এই পথে গাড়ি চালিয়ে থ্রিল আছে' - এরকম পাহাড়ি পাকদন্ডী রাস্তাতেই গাড়ি চালাতে আমার বহুত ভালো লাগে - হাইল্যান্ড্‌স বা লেক ডিস্ট্রিক্ট বা ইয়র্কশায়ারে এমনটাই - কিন্তু সেখানে এরকম ভাঙা রাস্তা নয়। অনেকটা জায়গা জুড়ে "ব্যাক-কাটিং' চলছে - মানে পাহাড়ের গায়ে ব্লাস্টিং - রাস্তা চওড়া করার জন্যে - আর সেই জন্যে রাস্তার অবস্থা এরকম ভয়ানক।

    চুংথাং পেরনোর পর মোটামুটি একটা কনভয় টাইপ হয়ে গেলো - প্রায় বারোখানা গাড়ি পর পর চলছে - সবাই লাচেনের দিকে। মাঝে মাঝে মিলিটারি লরি বা জীপ যাচ্ছে। দুলতে দুলতে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে লাচেন পৌঁছলুম প্রায় সাড়ে আটটা নাগাদ। সন্ধ্যে থেকেই বৃষ্টিও চলছে, সাথে ঠান্ডা হাওয়া।

    হোটেলে ঢুকে আরেক ধাক্কা। ভেজা ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে ঘর, টিম টিম করে আলো জ্বলছে, বাথরুমে জল নেই কো, গীজারে আলো জ্বলে কিন্তু তাতে জল গরম হয় না। আমাদের ঘরে দু পিস কম্বল, তাতে সকলের হবে না বলে আরেকখান চাইলাম। এক্সট্রা কম্বল মনে হয় ওই এক পিস্‌ই ছিলো - কারণ তার পর দমু একটা চেয়েছিলো - পায়নি। ব্লো হীটারও মনে হয় এক পিস্‌ই ছিলো - সেও একটা ঘরে দেওয়াতে আর কেউ পায়নি। অথচ ফরচুনার ওয়েবসাইতে বড় বড় অনেক কিছু লেখা আছে - ঘরে অমুক আছে, তমুক আছে...আদতে কিসুই নেই। জল কখন আসবে জিগ্গেস করলে বলে "আ যায়েগা'। গরম জল চাইলে বলে "আভি দে রাহে হ্যায়'। ওই অবধিই। পাওয়া কিছুই যায় না। দশ মিনিটে খাবার দেবে বলে প্রায় ঘন্টাখানেক লাগিয়ে দেয়। শুনলাম ওদের নাকি একটা গোটা দিন ধরে টাওয়ার (মোবাইল) ছিলো না বলে কজন আসছে কখন আসছে কোনো খবরই পায়নি। আমরা পৌঁছনোর পর রান্নাবান্নার ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু তাতেও বাকি ব্যাপারগুলো - যেমন জল নেই, গীজার চলে না, কম্বল নেই ইত্যাদির কোনো এক্সকিউজ হয় না। দমু তো ওদের ধরে পেল্লায় ধমক দিলো বেশ কিছুক্ষণ ধরে...
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৭:৫৮458645
  • ঠান্ডা যদিও সেরকম কিছু ছিলো না, তবে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরণার জলে কাজকম্মো করা সম্ভব নয়। গায়ে তখনো ঠান্ডা লাগেনি - মানে ওরকম ঠান্ডায় আমি অভ্যস্ত (ছিলুম), আর সেই অভ্যেস ভুলিনি এখনো। আমি গেছি একখান জামার ওপর একটা সামার জ্যাকেট (হাত কাটা, অনেকগুলো পকেটওয়ালা - ক্যামেরার লেন্স ইত্যাদি রাখার পক্ষে খুব উপযোগী) পরে, সুমনাও একটা সামার জ্যাকেট গায়ে, দমুরও তাই। কুচেগুলোকে অবশ্য সোয়েটার পরানো হয়েছে। আমাদের দেখে বাকি বাঙালী গ্রুপগুলো বেশ অবাকই হয়েছিলো।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৫ অক্টোবর ২০১০ ১৮:২৮458646
  • হিংস্র বুদ্ধ/জাতকমূর্তির ব্যাপারটা লিখে দিই -

    তিব্বতে বৌদ্ধধর্ম প্রচারে যে কয়েকজনের নাম সবার প্রথমে আসে তাঁরা হলেন আচার্য শান্তরক্ষিত, পদ্মসম্ভব এবং অতীশা বা অতীশ দীপঙ্কর। তিব্বতের রাজা প্রথম ডেকে নিয়ে যান শান্তরক্ষিতকে। শান্তরক্ষিত প্রথমবার কিছুদিন থাকার পর কিছু রাজকর্মচারী ওঁর নামে অপপ্রচার শুরু করে - ঝড়/মড়ক ইত্যাদি ঘটনা ওঁর জন্যে হচ্ছে বলে। শান্তরক্ষিত তখন ফিরে আসেন। কয়েক বছর পর রাজা ফের ওঁকে ডেকে নিয়ে যান। এই দ্বিতীয় ফেজে শান্তরক্ষিত কোনো কারণে তিব্বতী দেবদেবী/ভূত ইত্যাদিদের ভয় পেতে শুরু করেন, এবং রাজাকে অনুরোধ করেন আচার্য পদ্মসম্ভবকে নিয়ে যেতে। পদ্মসম্ভব উড়িষ্যার কোনো মঠের আচার্য ছিলেন, এবং তন্ত্রে (বৌদ্ধধর্মেরই) পারদর্শী ছিলেন। কথিত আছে যে পদ্মসম্ভব তিব্বতে গিয়ে তন্ত্র দিয়ে তিব্বতী দেবদেবী/ভূত ইত্যাদিদের হারিয়ে দেন আর বৌদ্ধধর্ম প্রচারে সাহায্যের আশ্বাস দিতে বাধ্য করেন। এর পরেই শান্তরক্ষিত গোটা তিব্বতে মঠ প্রতিষ্ঠা করেন, বই অনুবাদ করে, বই লেখেন। পদ্মসম্ভব তিব্বতে গুরু রিম্পোচে নামেও পরিচিত। যে কোনো তিব্বতী মঠে দেখবে এই গুরু রিম্পোচের মূর্তি রয়েছে। এবং যেহেতু তিব্বতী buddhism অনেকটাই তন্ত্রঘেঁষা, তাই ওই দেবদেবী/ভূত/তন্ত্রমন্ত্র ইত্যাদি মিস্টিক্যাল ব্যাপারের ছাপ অনেক বেশি (সিংহলী buddhism-এর তুলনায়)।

    পরবর্তীকালে অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে গেছিলেন - সেই সময় বৌদ্ধধর্মের প্রভাব কিছুটা কমে আসছিলো। এবং দীপঙ্কর নিজেও তন্ত্রে আগ্রহী ছিলেন। কাজেই সেই ছাপটাও কিছুটা পড়েছিলো।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১০:২৫458647
  • এই পুরো সময়ে গাড়ির মধ্যে নন-স্টপ এন্টারটেইনমেন্টও ছিলো - ঋক আর ঋতির মারামারি। তবে এন্টারটেইনমেন্ট বেশি হলে মাথাধরার কারণ হয়। দময়ন্তী নির্ঘাৎ রোজ রাতে স্যারিডন খেয়েছে।
  • d | 14.96.186.85 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৩:৪৬458649
  • না না শুধু বাগডোগরা থেকে গ্যাংটক যাওয়া ছাড়া গোটা ট্রিপে আর কোনোদিনই মাথাধরা বা অন্য কিছুর ওষুধ খেতে হয় নি। :)
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৪:৪১458650
  • ১৮ই অক্টোবর, ২০১০ - গুরুদংমারের দিকে

    রাতেই ড্রাইভারসকল জানিয়ে দিয়েছিলো যে একদম ভোরে বেরোতে হবে। হিমালয়ের খুব কমন ফিচার - দুপুর বারোটার পর আবহাওয়া আনপ্রেডিক্টেবল হয়ে পড়ে, হাওয়া দেয়, বৃষ্টি পড়ে। যারা পাহাড়ে চড়ে তারা সকলেই ভোরে বেরিয়ে বারোটার আগে ক্যাম্পে ফিরে আসার চেষ্টা করে। এখানেও তাই। ইন ফ্যাক্ট, গুরুদংমারের আগে মিলিটারি চেকপয়েন্টে বেলা ন'টার পরে আর ঢুকতে দেয় না। কাজেই সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বেরোনোর প্ল্যান হল।

    সাড়ে চারটের সময় উঠে দেখলুম গীজারে জল নেই। জলের কল থেকে আধ বালতি জল বেরিয়ে বন্ধ হয়ে গেলো। আর একদম বরফগলা জল। মুখ ধুতে গিয়ে মনে হল দাঁতগুলো খুলে হাতে চলে এসেছে। গরম জল চাইলাম - সেই একই "আভি দে রাহে হ্যায়'। আধা ঘন্টারও বেশি পরে আধ বালতি গরম জল পাওয়া গেলো - চারজনে সেটাই ভাগ করে চালালুম। ব্রেকফাস্ট? রাস্তায় হবে। বেরোতে বেরোতে পৌনে ছটা।

    লাচেন নদীর ধার দিয়ে গাড়ি চললো - দুলকি চালে। এই ওঠে, এই নামে, এই দোলে, গাড্ডায় পড়ে...তখন অল্প অল্প আলো ফুটছে, আর দূরে প্রথম বরফঢাকা চূড়াগুলো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। আগের রাতে বৃষ্টির পর আকাশ ঝকঝকে নীল, মাঝে সাদা মেঘ, আর সামনের সবুজ পাহাড়গুলোর পিছনেই বরফঢাকা চূড়া। মোড় ঘুরলেই ঝরণা বয়ে যাচ্ছে, রাস্তার ওপর দিয়েই। বোল্ডারের ওপর দিয়ে গাড়িগুলো এক এক করে পার হয়। আর দেখলাম "ইন্ডিয়ান ফল কালার্‌স' - এক একটা জায়গায় পাহাড়ের গায়ে গাছগুলো লাল-হলুদ হয়ে রয়েছে। ছবি তুলতে গেলে একটু সময় দিয়ে তুলতে হত - সেই সময় ছিলো না, আর গাড়ির ঝাঁকুনিতে চলন্ত গাড়ি থেকে তোলাও সম্ভব ছিলো না। আস্তে আস্তে ওপরে উঠছি - গাছ কমতে কমতে শুধু পাথুরে পাহাড়ী এলাকা - স্নো লাইন ক্রমশ: কাছে আসছে, বরফঢাকা চূড়াগুলোও। মাঝে মাঝে দু একটা মিলিটারি ক্যাম্প, আর আমাদের কয়েকটা গাড়ি ছাড়া রাস্তায় শুধু মিলিটারি লরি। চোদ্দ হাজার ফুটে একটা ক্যাম্পে পাস দেখাতে হল, সেটা পেরনোর পরেই থাংগু বলে একটা ছোট গ্রাম - সাড়ে চোদ্দ হাজার ফুট। গ্রামে ঢোকার মুখেই একটা ছোট ব্রীজ, নীচ দিয়ে লাচেন চু বয়ে যাচ্ছে ঝড়ের মতন। থাংগুতে চা খেলুম, সঙ্গে পপকর্ন - ওই উচ্চতায় কম অক্সিজেন লেভেলে পপকর্ন নাকি উপকারী। ব্রেকফাস্টের জন্যে দোকানী মেয়েটি একটা পাত্রে কিছু মোমো প্যাক করে দিলো - বললো ফেরার পথে পাত্রটা দিয়ে যেতে, "নেহি তো পাপা মারেগি'। একটা ছোট বোতল ব্র্যান্ডিও কিনে নিলুম - যদি দরকার পড়ে।

    থাংগুর পর পুরোপুরি স্নো-লাইনের ওপর। রাস্তার ধারে আর গাছ নেই, কিছু কিছু জায়গায় অনেকটা হেদারের (heather) মতন লাল লাল ফুল টাইপের হয়ে রয়েছে। বাকি শুধু পাথর, বোল্ডার আর ব্যারেন ল্যান্ড, এদিক ওদিক বরফ। আস্তে আস্তে আরো ওপরে ওঠার সাথে সাথে বরফের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলো। তারই মধ্যে একটার পর একটা মিলিটারি ব্যারাক। একটা আর্টিলারি ইউনিট রয়েছে, আশেপাশে প্রচুর বাঙ্কার, কোথাও বোর্ডে লেখা "এক গোলি, এক দুশমন', কোথাও বা "রেসপেক্ট অল, সাসপেক্ট অল'। এই সব পেরোতে পেরোতে পৌঁছলুম ষোল হাজার ফুটের কাছাকাছি। আরেকটা মিলিটারি ক্যাম্প আর আবার পাস দেখানো। পাসাং গেলো পাস দেখাতে, আমরা গাড়িতে বসে রইলুম। সামনে যতদূর চোখ যায়, শুধু একটা বরফের মরুভূমি শুয়ে রয়েছে।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৫:০৪458651
  • জানলায় টকটক শুনে দেখি এক আপাদমস্তক গরম কাপড়ে ঢাকা চোখে ঢাউস গগল্‌স পরা এক মিলিটারি "আফ্‌সার' আমায় ডাকছেন। জানলা খুলতে ঋতিকে দেখিয়ে জিগ্গেস করলেন "এই বাচ্চাটার বয়স কত?' - আমি বল্লুম তিন। তখন তিনি বল্লেন - "আপনাদের একটা রিকোয়েস্ট করছি - এটা মেডিক্যাল অ্যাডভাইস। আপনারা এই বাচ্চাটাকে নিয়ে ওপরে যাবেন না। এখান থেকে গুরুদংমার আরো ষোল কিলোমিটার, আর প্রায় আরো দু হাজার ফুট উঁচু। সেখানে অক্সিজেন লেভেল ভীষণই কম। প্রায় সমস্ত বাচ্চাদের সমস্যা হয়। আমরা পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চা আর বয়স্কদের যেতে বারণ করি।'

    আমি বল্লুম যে এই মেয়ে তো জুংফ্রাউয়ে বারো হাজার ফুট অবধি ঘুরে এসেছে, এখানেও এতদূর এসেছে, কোনো সমস্যা হয়নি তো। তো তিনি বল্লেন - "আপনারা যেতেই পারেন, তবে আপনাদের রিস্কে। যদি কিছু হয়, আমাদের এখানে কোনো মেডিক্যাল ফেসিলিটি নেই যে দরকারে আপনাদের সাহায্য করবো। আমাদের এক্সট্রা গাড়িও নেই যে আপনাদের তাতে করে হাসপাতাল পাঠাবো। বাকি ট্যুরিস্ট গাড়িগুলোকেই বড়জোর অনুরোধ করতে পারি, আর এই রাস্তায় পাঁচ-দশ কিলোমিটার স্পীডে কখন হাসপাতালে পৌঁছবেন সেটা তো বুঝতেই পারছেন।'

    সেদিনই নাকি আরেকটি বাচ্চার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিলো, এবং কিচ্ছু করতে না পেরে তার বাপ-মা ওখানে কেঁদে ভাসিয়েছে। ঋতি তখনও অবধি ঘুমোচ্ছিলো - অনেক ভোরে উঠেছে, আর ওর এখনও পাহাড়/বরফ দেখে আনন্দ পাবার বয়স হয়নি। আমরা একটু ঘাবড়ে গিয়ে ওকে ডাকলুম - জিগ্গেস করা হল যে শরীর খারাপ লাগছে কি না। ঋতি প্রথম কথাই বললো যে মাথায় ব্যথা করছে। হাতে-পায়ে-গলায়-কানে নয়, সোজা মাথায় ব্যথা - যেটা হল কম অক্সিজেন লেভেলের প্রথম সিম্‌টম। ঋকও বললো মাথায় ব্যথা করছে। ওদিকে আমাদের বাকি কারোরই কোনো প্রবলেম হচ্ছে না।

    তখন একবার ভাবলুম যে ফরচুনার তো তিনটে গাড়ি এসেছে, আর অন্য দুটো গাড়িতেই ছোট বাচ্চা আছে। তাহলে একটা গাড়িতে বাচ্চাগুলো আর একজন করে বড়দের যদি নীচে নামিয়ে দেওয়া হয় (ওই ক্যাম্পেও বসে থাকা যাবে না বলেছিলো মিলিটারি), তাহলে বাকি দুটো গাড়িতে বড়রা যারা যেতে পারবে তারা গুরুদংমার অবধি গিয়ে আবার নেমে আসবে। আরেকটা গ্রুপের সাথে সেই মত কথাও হল, কিন্তু শেষমেষ প্ল্যানটা লাগলো না (কেন, সেটা বুঝেছিলুম আরো পরে) - আর ওই ষোল হাজার ফুট থেকেই গুরুদংমারকে টা-টা করে নীচে নেমে আসতে হল।

    দু:খ রয়ে গেলো - অতদূর গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হল বলে। আর একটা বোকামি করলুম - ওই ক্যাম্পে ছবি তোলা বারণ, কিন্তু ওখান থেকে আর কিলোমিটারখানেক গেলেই ওই বরফের মরুভূমির ছবিগুলো অন্তত তুলে আনা যেত...
  • Samik | 121.242.177.19 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৫:২০458652
  • এ-হে-হে-হে-হে ... বাজেরকমের মিস্‌!

    যাক, ভূতোর পাঁচ ছাড়িয়েছে। গ্যাংটক তো দুবার ঘোরা কলেজ থেকে। আরেকবার অবশ্যই যাবো।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৫:২৫458653
  • ফেরার পথে দু এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছবি তুল্লুম। চোপতা ভ্যালীর দিকে এক চক্কর দিয়ে আসা হল। চোপতা ভ্যালী আসলে পাহাড়ের নীচে প্রায় মার্শল্যান্ড বলা যায় - একটা জোলো জায়গা, তার মাঝে মাঝে কয়েকটা বাড়ি নিয়ে একটা গ্রাম। ওপরদিকে একটা স্নো-পিক বেশ কাছেই, ঋক তার নাম দিলো "ভ্যানিলা অ্যাণ্ড চকোলেট আইসক্রীম'।

    লাচেনের অল্প আগে ফরচুনার একটি গাড়ি বিগড়ে গেল। তাকে ঠিক করার জন্যে বাকি সমস্ত গাড়ির ড্রাইভারেরা লেগে পড়লো। এদের এই ইউনিটিটা দেখার মতন। একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়লে সকলে তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। অবিশ্যি এতে স্বার্থও রয়েছে, কারণ একটা গাড়ি খারাপ হয়ে রাস্তা আটকে রাখলে সকলেরই অসুবিধা। সেই গাড়ি ঠিক হওয়া অবধি আমরা দাঁড়িয়ে রইলুম। শেষে লাচেন অবধি পৌঁছতে পৌঁছতে প্রায় বেলা দুটো। জলের ক্রাইসিস তখনো রয়েছে - অন্য বাড়ি থেকে জল এনে দিচ্ছে বালতি করে। এরকম কিছু জল যোগাড় করে কাজকম্মো সারা হল। চান তো তার আগের দিন থেকেই বন্ধ...

    দুপুরে খাওয়া মিটিয়ে আবার সেখান থেকে রওনা দিলুম লাচুং-এর দিকে। প্রথমে লাচেন চু-র ধার দিয়ে দিয়ে চুংথাম অবধি, আর সেখানে বাঁদিকে বেঁকে লাচুং চু-র ধার দিয়ে দিয়ে লাচুং অবধি। এই রাস্তাটা তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো। চুংথাম থেকে লাচুং-এর দূরত্ব ২১ কিলোমিটার, আর রাস্তা ভালো বলে পৌঁছতে বেশি সময় লাগে না।

    পথে পড়লো "ভীম নালা' বলে একটা জলপ্রপাত, সেখানে কিছু ছবি তুলে বিকেল পাঁচটা নাগাদ আমরা হাজির হলাম লাচুং-এ। ফরচুনা লাচেনের হালত দেখে ধরে নিয়েছিলুম যে লাচুং-এও অমনই কিছু একটা হবে, কিন্তু না - ফরচুনা লাচুং লাচেনের থেকে ঢের ভালো। গ্যাংটকের সোনম-ডে-লেক না হতে পারে, কিন্তু ওই চত্বরে যা দেখেছি তার চেয়ে ঢের ভালো। গীজার চলে, তাতে গরম জল পাওয়া যায়, এবং ঘরে আলো-টালো জলে, দরজায় চাবিও আছে (লাচেনে আবার চাবি ছিলো না)। সন্ধ্যেয় একটু চা টা খেয়ে ল্যাদ খেতে শুয়ে পড়লুম সকলে। পরের দিন ফের ভোরে উঠে কাটাও-ইয়ুমথাং-জিরো পয়েন্ট ঘোরা।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৫:২৮458654
  • দমু - লাচুং অবধি আরো কিছু যোগ করো, তাপ্পর ইয়ুমথাং-জিরো পয়েন্ট লিখবো।
  • dd | 124.247.203.12 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৫:৫৮458655
  • ঐ যে "হিংস্র বুদ্ধ" নিয়ে অজ্জিত যে কইলো, সেইটা ঠিক কথা। বাঙালী শান্তরক্ষিত প্রথম চীন তিব্বতে যান। তার দুশো বছর পরে অতীশ দীপংকর।

    কিন্তু সত্যেন্দা খামোখাই অতীশ বাবুকে আগ বাড়িয়ে রিওয়ার্ডটা দিয়ে দিলেন, "সেই যে - "বাঙালীর ছেলে,ডিং ডিং ডিং, অতীশ দীপংকর,লংঘিল গিরি,ডিং ডিং ডিং, তুষারে ভয়ংকর"।

    ওনার উচিৎ ছিলো আগেই একবার এই টই টা পড়ে তারপরে কবিতা লেখার।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৬:০৫458656
  • ইয়ে - রাহুল সাংকৃত্যায়ন নিজে কিন্তু শান্তরক্ষিত এবং অতীশ দীপংকরকে বাঙালী বলাতে তীব্র আপত্তি করেছেন। দুজনেই একই রাজবংশের ছেলে - এক্ষুণি নামটা ঠিক মনে পড়ছে না, তবে অধুনা ভাগলপুর অঞ্চলের। কাল "তিব্বতে সওয়া বছর' থেকে কোট করে দেবো।

    এই প্রসঙ্গে - রাহুল সাংকৃত্যায়ন যে প্রথম জীবনে বাবা রামাদার নাম নিয়ে বৈষ্ণব সন্ন্যাসী ছিলেন সেটা জানা ছিলো না। "তিব্বতে সওয়া বছর' পড়তে পড়তে ভদ্রলোকের ওপর শ্রদ্ধা কয়েকগুণ বেড়ে গেলো। "ভোলগা থেকে গঙ্গা' একটা অনন্য ক্লাসিক, কিন্তু এই বইটা রাহুল সাংকৃত্যায়নের টেনাসিটির ছবি যা তুলে ধরে, সেটা এক কথায় অসামান্য।
  • Tutai | 12.20.48.10 | ২৬ অক্টোবর ২০১০ ১৮:০৮458657
  • এই টি'লগ'টিও বেশ। অপেক্ষায় রয়েছি পরের পোস্টগুলোর জন্য।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৭ অক্টোবর ২০১০ ০৯:৫৮458658
  • সিকিমের রাস্তার ধারের গ্রামগুলো মোটামুটি টিপিক্যাল। দুটো কমন জিনিস লিখছি।

    এক নম্বর - গ্রামের আশেপাশে প্রচুর পতাকা টাঙানো দেখা যায়, হয় সারি সারি সাদা পতাকা, নয়তো পর পর লাল-নীল-হলুদ-সবুজ কিছু পতাকা। সবগুলোতেই মন্ত্র লেখা (ওই "ওঁ মণিপদ্মে হুম' জাতীয়)। এই দুই ধরণের পতাকার আলাদা মানে আছে। সাদা পতাকা হল যারা মারা গেছে তাদের আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে টাঙানো, বা ভূত তাড়ানোর জন্যে টাঙানো। আর রঙীন পতাকাগুলো গ্রামের শান্তিকল্যানের জন্য - যাতে ফসল ভালো হয়, পাহাড়ে ধ্বস না নামে ইত্যাদি। পতাকাগুলোর আরেকটা উপকারিতা আছে - দূর থেকে দেখলে কাছাকাছি জনবসতির খোঁজ পাওয়া যায়।

    দুই নম্বর - প্রায় সমস্ত গ্রামেই একটা জলচালিত ধর্মচক্র দেখা যায়। ধর্মচক্র অর্থাৎ জপযন্ত্র, কিন্তু পেল্লায় সাইজের। রাহুল সাংকৃত্যায়ন তিব্বতের গ্রামগুলোর যা বর্ণনা দিয়েছেন, একেবারে সেই জিনিস। ওই বইতে এগুলোকে বলা হয়েছে "মাণী', সিকিমে বলে "ধর্মচক্র'। এর ভিতরেই সেই কাগজে লেখা "ওঁ মণিপদ্মে হুম' মন্ত্রটি থাকে, এবং জলের শক্তি এটা ঘুরতেই থাকে, ঘুরতেই থাকে - কখনও না থেমে। প্রতিবার ঘোরায় এক একটা পাপ ধুয়ে যায়। গ্রামের সকলের নিখরচায় পূণ্য অর্জন হয় এই ধর্মচক্র ঘোরার ফলে। কোথাও এর সাথে একটা ঘন্টাও লাগানো থাকে, প্রতিবার ঘোরার সময় টুং করে একটা আওয়াজ হয়।
  • d | 14.96.210.150 | ২৭ অক্টোবর ২০১০ ১০:০৭458660
  • দাঁড়াও বাপু আমার একটু সময় লাগবে। আজ সবে ছবিগুলো নামিয়েছি। এরপর বেছেবুছে ধুয়েমুছে তুলব
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন