এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে: সিকিম

    Arijit
    অন্যান্য | ২৫ অক্টোবর ২০১০ | ৯৭৪৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৩ নভেম্বর ২০১০ ১৬:০১458694
  • হুঁ - সাড়ে ছটা। সাড়ে পাঁচটা থেকে আমি বাইরে দাঁড়িয়েছিলুম।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৩ নভেম্বর ২০১০ ১৬:৩৭458695
  • লাচুং থেকে ইয়ুমথাং খুব দূর নয়, এবং প্রথমদিকটা রাস্তাও মন্দ নয়। দু একটা গ্রাম, মিলিটারি ক্যাম্প পার হয়ে যেতে হয়। এবং অল্প দূর যাওয়ার পরেই দুদিকে ক্যালেন্ডারের ছবির মতন দৃশ্য শুরু হয়ে যায় - নীল আকাশ, সাদা মেঘ, মাঝে বরফে ঢাকা পাহাড়ের চূড়া। ইয়ুমথাংএর কয়েক কিলোমিটার আগে একটা রডোডেনড্রনের বন পার হতে হয়। রাস্তার দুপাশে যতদূর চোখ যায় নানা রকম রডোডেনড্রন গাছ। মাঝে মাঝে বোর্ড লাগানো - গাছের হিসেব দিয়ে। কিন্তু অক্টোবর মাস - আধখানা ফুলও কোথাও ফুটে নেই। তবে গাছের সংখ্যা দেখে আন্দাজ করা যায় মার্চ-এপ্রিলে জায়গাটার কি চেহারা দাঁড়াতে পারে।

    রডোডেনড্রন উপত্যকা পার হওয়ার পরেই ইয়ুমথাং। যদিও এই উপত্যকা পার হতে হতে কোমর ভাঙার বড়সড় সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড় থেকে একটা ঝরনা নেমেছে, সাথে অসংখ্য বোল্ডার। রাস্তাটা ঘুরে ঘুরে বার বার ওই ঝরনার ওপর দিয়ে চলেছে, নৌকোর মতন দুলতে দুলতে - ৩৮ নং ছবি, গাড়ির বাঁ দিকের জানলা থেকে তোলা - পাথরের নদী নয়, উহাই পথ। রডোডেনড্রন উপত্যকার মধ্যে দিয়ে হাঁটা পথও রয়েছে - আর আমার ধারণা মার্চ-এপ্রিলে হাঁটা পথটাই ভালো। ফুলও দেখা যাবে একদম সামনে থেকে, আর কোমরও আস্ত থাকবে।

    ইয়ুমথাং-এ ঢোকার মুখে সারি দিয়ে দোকান, এবং প্রচুর লোকের ভিড়। এখানে দাঁড়াবেন না, আরেকটু এগিয়ে যান। সামনে পড়বে একটা বিরাট উপত্যকা, দুপাশে সারি দিয়ে উঁচু পাহাড়, আর দূরে, যেখানে দুদিকের পাহাড় মাঝখানে এসে মিলছে, সেখানে একটা মেঘে ঢাকা পাহাড়চূড়া। মেঘ এসে তার চূড়াটাকে এমনভাবে দেখেছে যে দেখলে মনে হয় একটা আগ্নেয়গিরি দাঁড়িয়ে রয়েছে - যার মাথা থেকে সাদা ধোঁয়া বেরোচ্ছে। উপত্যকার এক পাশ দিয়ে লাচুং চু বয়ে চলেছে, তার ওধারে ঘন পাইনের জঙ্গল। রাস্তা থেকে নেমে এগিয়ে যান নদীর দিকে - হাঁটাপথের দুধারে দেখবেন গাদা গাদা ইয়াক্‌ ঘুরছে। সবুজ ঘাস থেকে একটু নেমে যান পাথরের ওপর, জল ছুঁতে পারেন। বা একটু বসে থাকতে পারেন পাথরের ওপর, মিঠে রোদ্দুরকে পিঠে নিয়ে। বসে বসে দূরে ওই আগ্নেয়গিরির মতন চূড়াটাকে দেখুন...চারিদিকে বাকি পাহাড়গুলোর মাথার ওপর মেঘ পাল্টে পাল্টে যাচ্ছে, কিন্তু দূরের ওই পাহাড়টা ঠিক তেমনি ভাবেই মাথার ওপর সাদা ধোঁয়ার মতন মেঘ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

    ছবি নং - ৩৯-৪৫। এর মধ্যে ৪০ আর ৪২ হল আমার ওই আগ্নেয়গিরি।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৩ নভেম্বর ২০১০ ১৭:১৯458696
  • ইয়ুম্‌থাং-এ কিছুক্ষণ কাটিয়ে এগোলাম জিরো পয়েন্টের দিকে - ইয়ুমথাং থেকে ঘন্টাখানেক দূরত্বে। এবার ক্রমশ: ওপরে উঠতে থাকা, সরু আর প্যাঁচালো রাস্তা। লাচুং নদী আস্তে আস্তে নীচের দিকে নামতে থাকলো। রাস্তার দুপাশে গাছের সংখ্যাও কমতে শুরু করলো। এর মাঝে এক একটা জায়গায় দেখলাম পাথরের গায়ে লালচে রঙের শেওলা। লাচুং চু-এর ধারে পাথরে এমনভাবে শেওলা ধরে রয়েছে যে রিভারবেডটা অবধি লালচে দেখায় (ছবি নং ৪৯)।

    রাস্তার দুপাশে গাছ কমতে কমতে শূণ্যতে এসে ঠেকলো, শুরু হল দুপাশে যতদূর চোখ যায় ততদূর অবধি পাথুরে বন্ধ্যা জমি। এই পথে একটা মিলিটারী ক্যাম্প চোখে পড়ে, কিন্তু তারপর আর কিছু নেই। দু এক জায়গায় আশেপাশে দেখে মনে হল কিছু বাঙ্কার রয়েছে, কিন্তু ক্যাম্প বা কোনো লোকজন (ট্যুরিস্ট ছাড়া) চোখে পড়লো না। তাও এক সময়ে এমন অবস্থা যে যতদূর চোখ যায়, ওই পথে যাচ্ছে এমন একটা গাড়িও চোখে পড়ে না। ফিরছে অনেক গাড়ি, কিন্তু কেউই যাচ্ছে না। আমরা ভাবছিলুম দেরী হয়ে গেলো কি? কেউ তো আর যাচ্ছে না, সবাই ফিরছে। শেষে বেশ খানিকক্ষণ পর পিছনে আর একটা গাড়ি দেখে নিশ্চিন্ত হওয়া গেলো - যে না, লোকে এখনও যাচ্ছে। চলতে চলতে এক জায়গায় রাস্তা শেষ। তারপর আর কিছুই নেই - পাথুরে জমি, আর দূরে কিছু বরফে ঢাকা পাহাড় ছাড়া। এই হল জিরো পয়েন্ট (ছবি নং ৪৬-৪৮)।

    এবং এখানেও প্রচুর গাড়ি আর লোকের ভিড়। অল্প কিছু দোকান যেখানে তুমুল শস্তায় রাম/হুইস্কির বোতল বিক্রি হচ্ছে। অনেকে লাইন দিয়ে কিনছে। অ্যাজ ইউজুয়াল হুল্লোড়ও চলছে - একটা গ্রুপ থেকে তারস্বরে "হিপ হিপ হুর্‌রে'-ও শুনলাম। বুঝি না, লোকে এসব জায়গায় কি করতে যায়...আমার তো এখানে চুপ করে বসে থাকতে ইচ্ছে করে, অনেকক্ষণ। ওই পাহাড়গুলোকে দেখলে নিজেকে কেমন যেন পিঁপড়ের মতন মনে হয়। সেখানে "হিপ হিপ হুর্‌রে' কেমন বেমানান লাগে।

    এই সময়ে হঠাৎ দু এক পশলা হালকা বৃষ্টি নামলো - ঠাণ্ডায় বৃষ্টির জল জমে ছোট ছোট দু চারটে স্নোফ্লেক হয়ে পড়তেই আবার একচোট হুল্লোড়। ছাপোষা বাঙালী ট্যুরিস্টদের "তুষারপাত' দেখার শখও মিটে গেল (হুল্লোড় শুনে যা বুঝলুম)। পোলারাইজার লাগিয়ে ছবি তুলছিলুম, সেটা লেন্স থেকে খোলার সময় একজনের কনুইয়ের গুঁতোয় সেটা হাত থেকে পড়ে গিয়ে কাঁচ চটে গেলো...

    জিরো পয়েন্ট থেকে ফেরার পথে আর কোথাও দাঁড়ানো নয় - সেই আঁকাবাঁকা পথে নামতে নামতে, ঝরনার বয়ে আনা পাথরে ওপর দুলতে দুলতে বেলা দুটো নাগাদ লাচুং।

    গাড়ি থেকে নেমে দেখি হোটেলের সামনে বেশ ভিড় - কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। এগিয়ে গিয়ে শুনি সেই যে গ্রুপটার গাড়ি বারকয়েক খারাপ হচ্ছিলো, সেটা ইয়ুমথাং যাওয়া-আসার পথে নয় নয় করে বার দশেক বিগড়েছে। শেষে ওই গ্রুপটা প্রায় দশ কিলোমিটার হেঁটে লাচুং পৌঁছেছে। সে গাড়ি আর যাবে না, আর ওখানে গাড়ি সারানো বা অন্য গাড়ির ব্যবস্থা করাও সম্ভব নয়। মানে ওই গাড়িতে যে কজন লোক ছিলো তাদের আর তাদের মালপত্র অন্য দুটো গাড়িতে ভাগাভাগি করে গ্যাংটক অবধি নিয়ে যেতে হবে। উপায় নেই, এসব সিচুয়েশনে কাউকে ওই অবস্থায় ফেলে আসা সম্ভব নয় - কাজেই ঠিক হল অন্য গাড়িটাতে ওঁদের গ্রুপের দুজন আর বাচ্চাটা যাবে, আর আমাদের গাড়িতে বাকি তিনজন। অন্য গাড়িটার মাথায় কেরিয়ার নেই, কাজেই মালপত্র যা যাবে সব আমাদের গাড়ির মাথায় তুলতে হবে - ইনক্লুডিং আমাদের মালপত্র।

    পরে মনে হয়েছে ভাগ্যিস আমাদের কপালে ওই গাড়িটা পড়েনি - পড়লে কি করতুম জানি না। অন্য গাড়িটার ড্রাইভার খুবই যুক্তিসঙ্গতভাবে কেরিয়ার নেই বলে মালপত্র নিতে রাজী হল না বলে ওই গ্রুপের একজনের মুখে "হাতি কাদায় পড়লে ব্যাঙেও লাথি মারে' শুনে মনে হয়েছিলো আমরা বিপদে পড়লে ওঁদের কাছ থেকে সাহায্য পেতাম কি?
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৩ নভেম্বর ২০১০ ১৮:২৬458697
  • খুব তাড়াতাড়ি করে দুপুরের খাওয়া সেরে সমস্ত মালপত্র গাড়ির মাথায় তুলে প্লাস্টিকের চাদর দিয়ে বেঁধে রওনা দিতে দিতে আড়াইটে বেজে গেলো। লাচুং থেকে চুংথাং আসতে বেশি সময় লাগলো না। চুংথাং-এর পর থেকে সেই ভয়ংকর ব্যাককাটিংওয়ালা রাস্তা শুরু। একটা জায়গায় ওপরে পাহাড় রাস্তার ওপরে এসে পড়েছে, নীচে খানাখন্দ, আর তারও নীচে, মানে রাস্তার তলায় মরচে ধরা লোহার বিম দিয়ে আটকানো। রাস্তাটা দেখে আমার একটাই কমেন্ট ছিলো - "এখান দিয়ে আমরা গেছি?' যাওয়ার সময় অন্ধকার ছিলো বলে বোঝা যায়নি, কিন্তু দিনের বেলা ওই অংশটা পার হতে যে কোনো লোকের হার্ট প্যালপিটেশন হবে। ওটা পেরনোর কিছুক্ষণ পর গাড়িটা উল্টোদিকের পাহাড়ে চলে গেলো - তখন দূর থেকে ওই অংশটা দেখা যাচ্ছিলো - আর আমরা এই কথাগুলোই বলাবলি করছিলুম।

    চুংথাং ছাড়িয়ে গ্যাংটকের দিকে অল্প কিছুদূর গিয়েই আটকে গেলুম। লাইন দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে। শোনা গেল একখানি লরি নাকি উল্টে গেছিলো, সেখানাকে তোলার চেষ্টা চলছে। হাঁটতে হাঁটতে দেখতে গেলুম - প্রায় দেড় কিলোমিটার ধরে হাঁটছি তো হাঁটছিই - গাড়ির লাইন আর শেষ হয় না - শেষে এক জায়গায় গিয়ে দেখলুম মূর্তিমান লরিটি মাথা উঁচু করে খাদের গড়িয়েছেন, তখন নাকটা রাস্তা থেকে দেখা যাচ্ছে, আর একটি টো-ট্রাক তাকে তোলার চেষ্টা করছে। গাড়ির কাছে ফিরে এলুম। উল্টোদিকে মেঘের আড়ালে একখানা বরফঢাকা চূড়া মুখ দেখাচ্ছে - তার ছবি তুল্লুম - সময় কাটাতে হবে তো। শুনছি আর আধ ঘন্টা লাগবে, তারপর শুনলাম আরো আধ ঘন্টা লাগবে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হল। রাস্তার ধারের ঝোপে ঝাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকতে শুরু করলো। রাস্তায় দাঁড়ানো গাড়িগুলো কয়েকটা অল্প আলো জ্বালিয়েছে, তাছাড়া আর কোনো আলো নেই। গাড়িতে জলের আকাল। খাবারের আকাল। সঙ্গী অন্য তিনজনের কাছ থেকে বাচ্চাদুটোর জন্যে একটু জল পাওয়া গেলো। সাড়ে চারটে থেকে আস্তে আস্তে সাড়ে ছটা, শোনা গেলো লরিবাবাজী উঠেছেন, এক্ষুনি গাড়ি ছাড়তে শুরু করবে। সাতটা নাগাদ গাড়ি নড়লো - কিন্তু কিছুদূর এগিয়েই আবার আটক। সামনে একটা গাড়ি রাস্তার বাঁদিকের নালায় চাকা আটকে ফেলেছে। ততক্ষণে উল্টোদিকের গাড়িও এসে গেছে - পাশ কাটানোর জায়গা নেই - অতএব ফের বসে থাকো। বৃষ্টি নেমেছে, নীচে নামার উপায় নেই, জায়গাও নেই। এরই মধ্যে সিকিমের কিছু পুলিশ দৌড়োদৌড়ি করে কিছু গাড়িকে একটা চওড়া জায়গায় ঢোকানোর ব্যবস্থা করলো যাতে নালায় পড়া গাড়িটাকে পাশ কাটানোর জায়গা হয়। সে গাড়ি পার হওয়ার পরেও জ্যাম আর কাটে না - এবার সামনে একটি মারুতি অমনি ট্যাক্সি, যার ব্রেক কাজ করে না...এই সব নানা ঝক্কি কাটিয়ে গাড়ি যখন ফাইনালি চলতে শুরু করলো তখন সাড়ে সাতটা। পাক্কা তিন ঘন্টা পরে।

    এর মধ্যে মোবাইলে সিগন্যাল এসেছে। ওয়ান পিস আছি সেই খবরটা বাড়িতে দিয়ে হোটেলে ফোন করলাম যাতে রাতের জন্যে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করে রাখে - কারণ ডিনার টাইমের ঢের পরে গ্যাংটক পৌঁছবো। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে জল আর বিস্কুট কিনে দে দৌড় - ওই রাস্তায় যতটা তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়। পথে সেই পাঁকে ভর্তি অংশটুকু - বৃষ্টি হয়ে অবস্থা আরো খারাপ - একটা একটা করে গাড়ি এগোচ্ছে। আমাদের দুটো গাড়ি আগে একটা গাড়ি অর্ধেক উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো - আর টানতে পারছে না। একবার নয়, বার তিনেক। শেষে নেমে এসে কয়েকজন লোক নামিয়ে ওজন কমিয়ে সে পাঁক পার হল - লোকগুলো ওই পাঁক হেঁটে পেরিয়ে ফের গাড়িতে উঠলো।

    গ্যাংটকে ঢুকলাম তখন দশটা বেজে গেছে। আমাদের হোটেলে নামিয়ে গাড়ি বাকিদের নামাতে চলে গেলো। সেই সতেরো তারিখে শেষ চান করেছি - ভেবেছিলাম গ্যাংটক পৌঁছে চান করবো। কিন্তু এন্থু শেষ। কোনোরকমে ঘুমন্ত ছেলেমেয়েদুটোকে খাইয়ে নিজেরা খেয়ে সোজা বিছানায়।
  • Samik | 121.242.177.19 | ০৩ নভেম্বর ২০১০ ১৮:২৭458698
  • গুড গোয়িং। হোক হোক।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৩ নভেম্বর ২০১০ ১৮:৩১458699
  • আজ এই অবধি। প্রিন্সেসের পরীক্ষার রেজাল্ট দেখে আসি। গ্যাংটক থেকে পেলিং ইত্যাদি আবার কাল।
  • Nina | 64.56.33.254 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ০১:২২458700
  • বাপরে এতো দুর্গমগিরি কান্তার মরু যাত্রা----কিন্তু ছবিগুলো কি সুন্দর--কষ্ট-সার্থক! ছবিগুলো সবই পিকচার পোস্টকার্ড --এক্টাও মিত্তি চেনা মুখ নেই :-((

  • Manish | 59.90.135.107 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১১:০০458701
  • লেখা খুব ভালো হচ্ছে কিন্তু এত কষ্টকর ভ্রমন।
  • i | 137.157.8.253 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১১:০৩458702
  • অরিজিৎ,
    সাঙ্ঘাতিক সুন্দর ছবি।
  • til | 220.253.185.165 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১১:০৯458704
  • এই দুর্গম পথে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়া? বড়দেরও তো ট্রেনিং প্রয়োজন। ছবি দেখলাম, আর্মির ট্রেনিং কোন ছার। তবে হ্যাঁ, দৃশ্য বটে। জলপ্রপাত, এত সুন্দর!
  • d | 14.96.112.214 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১১:১৫458705
  • এই রাস্তায় আমাদের 'হাসতা-খিলতা' অ্যাটিটিউড, এমনকি ঋক ঋতির পর্যন্ত, দেখে দেখে পাসাং একটা বাক্য মাঝেমাঝেই বিড়বিড়াত। অজ্জিত শুনেছে কিনা জানি না। :-D
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১১:৩০458706
  • ও তো প্রায়সই "জিন্দগীতে এই রাস্তায় আর আসবো না' বলতো। আর কিছু খেয়াল করিনি।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১১:৪৭458707
  • রাস্তার ছবি দেখে আর বর্ণনা শুনে ঘাবড়ে গিয়ে যদি না যান, সারা জীবন আফশোস করবেন। প্রাকৃতিক দৃশ্যের দিক থেকে সুইস আল্পস বা স্কটিশ হাইল্যান্ডসের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। শুধু আমাদের সাথে বাইরের তফাত হল সুইজারল্যান্ড বা স্কটল্যান্ডে প্রতিটা রাস্তা মসৃণ - দুর্গম হলেও। আর সুইজারল্যান্ড হলে এই লাচুং থেকে কাটাও অবধি হয়তো একখানা কেব্‌ল কার বানিয়ে দিত।

    তবে ওই উচ্চতায় (গুরুদংমার ১৭৮০০ ফুট, কাটাও এবং জিরো পয়েন্ট পনেরো-ষোল হাজার মতন) মোটরেবল রোড - সে যতই ভাঙা হোক না কেন - সম্ভবত: পৃথিবীর আর কোথাও নেই। আমি রকি মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কে গেছি - গাড়ি নিয়েই - সর্বোচ্চ পয়েন্ট ছিলো ১১ হাজার ফুট মতন - অ্যাপারেন্টলি হাইয়েস্ট মোটরেবল রোড ইন দ্য ইউএস।

    একটু দুর্গম, অফবীট রাস্তায় যেতেই আনন্দ। আগেরবার চেরাপুঞ্জি যাওয়ার আগে ট্র্যাভেল এজেন্ট প্রচুর অ্যান্টিপুরকি দিয়েছিলো - কি করবেন, ওখানে কিছু নেই, বরং শিলঙে থেকে একটা ডে-ট্রিপ মেরে আসুন। ওর কথা শুনে চললে ঠকতাম। আজ অবধি ঘোরা সেরা জায়গার লিস্ট বানাতে বসলে হাইল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, নর্থ সিকিম আর চেরাপুঞ্জি তাতে ওপরের চারটে নাম হবে।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১২:০১458708
  • একটু ডাইগ্রেস করি।

    নর্থ সিকিমকে আমার নিজের অনেকটা হাইল্যান্ডসের মত লেগেছে। সুইজারল্যান্ড সুন্দর। রাদার, অসম্ভব সুন্দর। কিন্তু আমার একটু বেশি ছবি-ছবি মনে হয়। বড় সাজানো। হাইল্যান্ডস অনেক বেশি ডাউন টু আর্থ। ন্যাচারাল। এক এক সময়ে হাইল্যান্ডস এক এক রূপ দেখিয়েছে।

    শীতের সময়ে গেছি - ইনভারনেস ছাড়িয়ে আলাপুলের দিকে চারদিক সাদা, বরফে ঢাকা, কুয়াশা...

    শীত শেষের ঠিক পরে গেছি - বরফ গলে যাওয়ার পর ম্যাড়ম্যাড়ে জমি, সবে ঘাস গজাতে শুরু করেছে।

    একটু গরমে গেছি - চারদিক উঙ্কÄল সবুজ, ব্লু-বেল্‌সে ছেয়ে গেছে সমস্ত জমি। আর বৃষ্টির পর সেই সবুজ কয়েকগুণ চোখ ধাঁধানো হয়ে এসেছে।

    বছরে একবার অন্তত: হাইল্যান্ডস না গেলে মন কেমন করতো। কেয়ার্নগর্মের পাশে লক্‌ লাগানের ধারে পাহাড়ের গায়ে একখান ট্র্যাডিশনাল স্কটিশ পাথরে তৈরী বাড়ি দেখে বউকে বলেছিলুম - পারলে এই বাড়িটাতে থেকে যেতুম। লক্‌ লাগানের ধারে বালির ওপর ঘোড়ায় চড়তুম, আর ওই বাড়িতে থেকে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম (মানে ইজিচেয়ারে শুয়ে বই পড়া আর কি)...

    নর্থ সিকিম অনেকটাই এই রকম। মনে হয় এও বার বার টানবে।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৪:০১458709
  • ২০শে অক্টোবর, গ্যাংটক থেকে পেলিং
    ====================

    গায়ে গতরে ব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙলো। তখন সবে দিনের আলো ফুটছে। বাকি সবাই তখনো গভীর ঘুমে। জানলার পর্দা সরাতেই দূরে একটা বরফে ঢাকা পাহাড় চোখে পড়লো (৫২ নং ছবি)। নামধাম জানি না - গোটা ট্রিপে আরো অনেক পাহাড়ের মতই। এই আরেকটা জিনিস বাইরের কোনো দেশে হলে করে ফেলতো - কাটাও বা জিরো পয়েন্টে একখানা বোর্ড লাগাতো, তাতে কোনটে কোন peak সেই ইনফরমেশনটা লেখা থাকতো ছবিসহ। এরকম ছবি কিনতে পাওয়া যায়, কিন্তু ভিউপয়েন্টে এই ইনফরমেশনটা খুব হেল্পফুল।

    যাওয়ার সময় গ্যাংটকে ছিলাম সোনম-ডেলেক বলে একটা হোটেলে। নর্থ সিকিম থেকে ফিরে উঠেছিলাম মিন্টোক্লিং গেস্ট হাউজে। দুটোই স্বচ্ছন্দে সকলকে রেকমেন্ড করবো। সোনম-ডেলেক হল এমজি মার্গ থেকে ওপরদিকে উঠে বাঁদিকে ঘুরে টিবেট রোডের মাথার কাছে। এমজি মার্গের হইহট্টগোল নেই, অথচ রাস্তাটা খুবই কাছে। হোটেলটাও পরিষ্কার। হোটেল পরিষ্কার কিনা সেটা এক ঝলকে বুঝবে জানলায় ঝোলানো পর্দা দেখে। বাজেট হোটেলের মধ্যে খুব কমই পাবে যেখানে ঝকঝকে সাদা পর্দা ঝোলে।

    মিন্টোক্লিং আরো একটু ওপরে, খুব চুপচাপ একটা জায়গায় - ফ্যামিলি-রান গেস্টহাউজ। খাবার খুব ভালো, এবং ব্যবহারও। এবং এই হোটেলটাও খুব পরিচ্ছন্ন।

    কেউ গ্যাংটক গেলে এই দুটো হোটেলের নাম মাথায় রাখতে পারো।

    দশটা-এগারোটা নাগাদ পেলিং-এর দিকে রওনা দেবার ইচ্ছে ছিলো। হোটেলে ট্যাক্সির খোঁজ করতে গিয়ে প্রথমে বেশ বড়সড় রেট শুনলাম। তারপর দময়ন্তী শুনলাম তার প্রায় অর্ধেক রেটে ট্যাক্সি পেয়েছে - ওয়াগন-আর। ওকে বল্লাম তাহলে ওটাতেই মাথায় জিনিসপত্র তুলে একসাথে পেলিং চলে যাই। সেই মতন কথাও হল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দময়ন্তী ফোন করে জানালো ওয়াগন-আর নয়, একখান অল্টো পাঠিয়েছে, যার মাথায় কেরিয়ারও নেই। কাজেই আগের প্ল্যান বাতিল করে এমজি রোডের দিকে হাঁটা দিলুম ট্যাক্সির খোঁজে। হোটেল থেকে ট্যাক্সির যা রেট বলেছিলো তার চেয়ে অনেক কমে, ইনফ্যাক্ট দময়ন্তীকে যা রেট দিয়েছিলো তার চেয়েও কমে একটা ট্যাক্সি পেয়ে গেলুম - অল্টোই, তবে চারজন + মালপত্র অনায়াসে চলে যাবে। ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে এসে জিনিসপত্র তুলে বেরোতে বেরোতে পৌনে বারোটা। পেলিং গ্যাংটক থেকে প্রায় পাঁচ ঘন্টার রাস্তা। অনেকটা নেমে সিংথাম হয়ে সাউথ সিকিমের রাবংলা পেরিয়ে পেলিং (ওয়েস্ট সিকিম) যেতে হয়।
  • Blank | 170.153.65.102 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৪:০৮458710
  • চিন্তা করো না, গুরু দোংমারের বন্ননা আমি দিয়ে দেবো
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৪:৩১458711
  • হোটেলে বেশ ভারি ব্রেকফাস্ট করা ছিলো। তাও ছেলেমেয়ের দুপুর একটা বাজলেই ক্ষিদে পায় - কাজেই সিংথামে দাঁড়িয়ে দুপুরের খাওয়া মেটানো হল। সিংথাম থেকে গাড়ি গ্যাংটক-শিলিগুড়ির রাস্তা ছেড়ে একটা অন্য রাস্তা ধরে সাউথ সিকিমে ঢোকার জন্যে। এবং নর্থ সিকিমের তুলনায় এই রাস্তাটা ঢের ভালো। এদিকটা একটু বেশি সবুজ। আশেপাশে প্রচুর ছোট ছোট গ্রাম পড়ে। রাবংলা ছাড়িয়ে আরো খানিকটা গিয়ে রঙ্গিতের ওপর একটা ব্রীজ পেরিয়ে ওয়েস্ট সিকিম শুরু হয়। নতুন করে বর্ণনা দেবো না - সেই উঁচু পাহাড়, ঢালু খাদ, তলায় রঙ্গিত ফুঁসছে, ছোট ছোট গ্রাম, গ্রামের সামনে জল-চালিত ধর্মচক্র, আর লাল-নীল-হলুদ-সবুজ পতাকার সারি...এসবের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে প্রথমে পড়ে গেজিং। গেজিং ছাড়িয়ে আরো একটু এগিয়ে পাহাড়ের মাথায় ছোট্ট শহর পেলিং।

    ছোট্ট, কিন্তু ঘিঞ্জি। শুনলাম কয়েক বছর আগেও লোকে পেলিং বেড়াতে যেত না খুব একটা। তখন অল্প কিছু বাড়ি ছিলো - আর বাড়ির মালিকেরা একটা দুটো ঘর ভাড়া দিত। থাকার ব্যবস্থা শুধু ওইটুকুই ছিলো। এখন পেলিং-এ লাইন দিয়ে হোটেল। আপার পেলিং, মিড্‌ল পেলিং, লোয়ার পেলিং - যেখানেই যাও, রাস্তার দুপাশে সারি দিয়ে শুধু হোটেল আর হোটেল। আর থিক্‌থিক্‌ করছে লোক। ৯৯.৯৯% বাঙালী। একজনও অবাঙালী ট্যুরিস্ট দেখেছি বলে মনে পড়ছে না।

    আমাদের হোটেলটা ছিলো লোয়ার পেলিং-এ। উল্টোদিকেই Aryan Regency আর Newa Regency - যে দুটো হোটেলের নাম ট্র্যাভেলগুরু বা মেকমাইট্রিপে সবার আগে আসে। আমরা উঠলাম এদের সামনে হিমালয়ান হাইডঅ্যাওয়ে-তে। ছোট হোটেল, কিন্তু পরিষ্কার। সবচেয়ে বড় অ্যাট্রাকশন হল ঘরে বড় বড় জানলা, এবং ওইদিকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা। পেলিং-এর চেয়ে ভালোভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা নাকি আর কোথাও দেখা যায় না। উল্টোদিকের Aryan আর Newa Regency-তে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে গেলে বাইরে করিডরে এসে দাঁড়াতে হবে। আমরা বিছানায় শুয়ে শুয়েই দেখতে পাবো। মানে পরদিন সকালে। তখন বিকেল হয়ে এসেছে, আকাশেও মেঘ। তখন কিছু দেখা যাচ্ছে না। আমরা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে হাঁটতে বেরোলাম - গ্যাংটকে সময়াভাবে "শপিং' হয়নি, সঙ্গের বিগ-শপারের মনে ভারি দুষ্কু - তাই পেলিং-এর রাস্তায় দেখতে বেরোলুম কি পাওয়া যায়। লোকজনের জন্যে কিছু নিয়ে যেতে হবে, আর আমার একটা জপযন্ত্রের ভারী শখ - সেখানা দেখতে হবে। আর যদি থাংকা আর তিব্বতী মুখোশ পাওয়া যায়...

    সিকিমযাত্রীদের জন্যে টিপ্‌স -যা কিছু মেমেন্টো কেনার, গ্যাংটকে কিনে রাখুন। পেলিং-এ মাত্র দুটো কি তিনটে দোকান আছে - এবং তার সামনে রেশন দোকানের লাইনের মতন ভিড় হয়। জপযন্ত্র পাওয়া যায়, ছোট সাইজের মুখোশ (যেগুলোকে ওয়াল হ্যাঙ্গিং হিসেবে ব্যবহার করা যায়) পাবেন, তবে থাংকা মোটেও ভালো পাওয়া যায় না। আর পাওয়া যায় রাশান ডলের মতন কনসেপ্টের ফ্যামিলি পার্স: মানে একটা পার্স, তার মধ্যে আরেকটা পার্স, পার্সের মধ্যে পার্স - পাঁচটা মনে হয় থাকে সব মিলিয়ে।

    হোটেলের রিসেপশনে বললো পেলিং ঘোরার দুটো স্কীম আছে - হাফ ডে আর ফুল ডে। হাফ-ডে-তে আপনাকে সকালবেলা নিয়ে যাবে রিম্বি ফল্‌স, খেচিপেড়ি লেক, রিম্বি পাওয়ার প্রজেক্ট অ্যাণ্ড রক গার্ডেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা ফল্‌স। দুপুরে ফিরে খেয়ে দেয়ে আবার বেরোতে পারেন - ফুল-ডে ট্রিপ থাকলে - তখন যাবেন ছাগে ফল্‌স, শিংশোর ব্রীজ আর পেমিয়াংচি মনাস্টেরি। হাফ-ডে হলে ষোলশ, ফুল ডে হলে আড়াই হাজার (রিজার্ভ গাড়ি)। বুক করবো কিনা ভাবছি, এমন সময় জিংমি (যার গাড়িতে গ্যাংটক থেকে এসেছি) ফোন করে বললো ও তখন আর গ্যাংটক ফিরতে পারবে না (সন্ধ্যে হয়ে গেছে, অন্ধকারে ফেরা রিস্কি) আর কোথাও থাকার জায়গা পাচ্ছে না। আমরা যদি ওর গাড়িতে পরের দিন পেলিং ঘুরি তাহলে ও কোনোভাবে থেকে যাবে, আর ওই আমাদের এনজেপি-ও পৌঁছে দেবে। অল্পবয়সী ছেলে - এমন করে বললো যে আমি রাজী হয়ে গেলাম। হোটেলের বলা রেটের চেয়ে বেশি পড়েনি, হয়তো বাইরের রেটের চেয়ে একটু বেশি পড়লেও পড়ে থাকতে পারে। কিন্তু ছেলেটাকে ভালো লেগেছিলো বলে আর কোথাও খুঁজতে যাইনি।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৫:২৩458712
  • ২১শে অক্টোবর, পেলিংএর আশেপাশে
    ====================

    রাতে বৃষ্টি হচ্ছিলো। তখনও বাইরের খবর খুব একটা রাখছিলাম না বলে জানতাম না পশ্চিম হিমালয়ে আবহাওয়া কি খেলা দেখানো শুরু করেছে। ভোর চারটে থেকে জেগে শুয়ে - সূর্যের প্রথম আলো কখন কাঞ্চজঙ্ঘায় পড়ে সোনালী রং দেখাবে। ভোর থেকে সকাল হল - কিন্তু আকাশ পরিষ্কার হল না। সেই ঘোলাটে মেঘলাই থেকে গেলো। কাঞ্চজঙ্ঘার টিকি অবধি দেখা গেলো না।

    অগত্যা সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে বেরোনর জন্যে তৈরী হতে লাগলুম। পেলিং-এ বেশ লোডশেডিং হয়। আমি চান করে বেরোতে বেরোতেই লোডশেডিং - কাজেই গীজার বন্ধ - কাজেই আর কারো চান হল না। ঠিক হল দুপুরে ফিরে এসে সেসব সারা হবে'খন। জিংমি এলো সওয়া আটটা নাগাদ - সাড়ে আটটার সময় আমরা বেরিয়ে পরলুম।

    লোয়ার পেলিং থেকেই নীচের দিকে নামতে নামতে প্রথমে রিম্বি ফল্‌স। এই প্রপাতটা ভারি সুন্দর। প্রচন্ড তোড়ে জল নামে না বটে, কিন্তু পাহাড়ের গা বেয়ে ঝিরঝির করে এমনভাবে নামে যে দাঁড়িয়ে দেখার মতন (৫৩, ৫৪ নং ছবি)।

    রিম্বি ফল্‌স ছাড়িয়ে আরো এগিয়ে রঙ্গিতের ধারে রিম্বি পাওয়ার প্রজেক্ট আর রক্‌ গার্ডেন। দশ টাকার টিকিট কেটে ঢুকতে হয়, কিন্তু রক্‌ গার্ডেনটা অতিশয় ফালতু। কিছুই নেই - একটা পার্কের মতন, পাশ দিয়ে রঙ্গিত বইছে। কোটি কোটি লোকের ভিড়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় দেখি দময়ন্তী নামছে। ও সিকিম ট্যুরিজমের একটা ট্রিপ বুক করেছিলো। সাবধান করে দিলুম - যে - যেও না, কিছুই নাই শুধু কোটি কোটি লোক ছাড়া। আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে এগোলাম খেচিপেড়ি লেকের দিকে।

    সেও এক অ্যান্টিক্লাইম্যাক্স। লেক বলতে আমার চোখে ভাসে লেক ডিস্ট্রিক্টের উইন্ডারমেয়ার বা গ্রাসমেয়ার, আর নয়তো লক্‌ নেস। খেচিপেড়ি লেক আদতে একটা কাদাগোলা ডোবার চেয়ে বেশি কিছু নয়। গেটের বাইরে গাড়ি রেখে মিনিট পাঁচেক একটা ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে গিয়ে প্রথমে ভাবলাম এটা মনে হয় রাস্তার পাশে একটা পুকুর। তারপর ওটাই লেক শুনে আর কাছে গিয়ে দেখার ইচ্ছে ছিলো না। তাও ছেলেমেয়েকে নিয়ে যেতে হবে বলে গেলাম। কিছুই না, শুধু কাদাগোলা জল, তারমধ্যে প্রচুর মাছ ঘুরছে। এটা নাকি পবিত্র লেক, তাই লোকে দেখতে আসে। আদৌ দর্শনীয় কিছু নয়। লেকের ধারে কিছু ফুলটুল ফুটে রয়েছে, কিছু অর্কিড দেখা যায়, আর অসংখ্য পতাকা - পতাকা টাঙিয়ে লোকে "উইশ' করে (৫৫-৫৭ নং ছবি)। পতাকার আড়ালে লেকটা প্রায় ঢাকা পড়ে গেছে।

    খেচিপেড়ি থেকে বেরিয়ে বেশ খানিকদূর গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা ফল্‌স। এখানে দুটো প্রপাত আছে - একটা খেচিপেড়ি লেকের জল এসে পড়ছে, আরেকটা মেইন ফল্‌স - যেটা বেশ তোড়ের সঙ্গে নামছে। আমার ওই তোড়ের সাথে নামা বড় প্রপাতটার চেয়ে পাশে ঝিরঝিরিয়ে নামা খেচিপেড়ির জলের ধারাটাই অনেক বেশি ভালো লাগলো। আশেপাশে বাজার বসে গেছে - সেখানে সেই ছোটবেলার সিলিন্ডারের মতন পাঁপড় টাইপের জিনিস, কচুভাজার প্যাকেট, পেয়ারা ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। ঋক ওই পাঁপড়টা খেতে চাইলো, আমি অনেকদিন কচুভাজা খাইনি বলে একখান প্যাকেট কিনলাম, আর কিছু পেয়ারা কেনা হল। সেসব খেতে খেতে প্রচুর রাস্তা পরিয়ে পেলিং-এ ফিরলাম বেলা দুটো নাগাদ। দুপুরে খেয়ে বেরোব শিংশোর ব্রীজ আর পেমিয়াংচি দেখতে।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৭:১০458713
  • দুপুরে থুক্‌পা আর মোমো খেয়ে বেরোলুম শিংশোর ব্রীজ আর পেমিয়াংচির উদ্দেশ্যে। শিংশোর ব্রীজ পেলিং থেকে বেশ কিছুটা দূর - ঘন্টাখানেক তো হবেই। একটা cable-stayed ব্রীজ, এশিয়ার দ্বিতীয় উচ্চতম ব্রীজ। সেই ঘুরতে ঘুরতে, উঠতে নামতে বহুদূর গিয়ে ব্রীজটা চোখে পড়ে। ব্রীজের ওপর দাঁড়ালে দুলুনি টের পাওয়া যায়।

    এখানে ব্রীজের আগে একটা ছোট পার্ক মতন আছে। তার পিছনে একটা ফল্‌স। সেটা দেখবো বলে যখন ঢুকছি তখন জীন্‌স পরা এক ছোকরা ঢুকলো - পকেটে হাত দিয়ে - জীন্‌সের তলাটা প্রায় ছয় ইঞ্চি ফোল্ড করা। হাবভাবটা বেশ হাইফাই। ঢুকে পার্কের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে ব্রীজের ওপর (প্রায় পঞ্চাশ ফুট দূরে) দাঁড়ানো তার বাবাকে তারস্বরে ইনস্ট্রাকশন দিতে লাগলো (তার ছবিটা তোলার জন্যে) - "পুরো জুম করে তোলো'। মানে ব্যাপারটা বেশ হাস্যকর লাগলো বলে লিখলুম এখানে।

    ফেরার পথে সন্ধ্যে হয়ে এসেছিলো। পেমিয়াংচি (পেলিং থেকে অল্প দূরেই) পৌঁছে দেখি বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই পেলিং ফিরে এলুম। হোটেলে ফিরে আর কিছু করার নেই বসে থাকা আর টিভি দেখা ছাড়া।

    ২২শে অক্টোবর, পেলিং থেকে শিলিগুড়ি
    =====================

    সকালে উঠে রেডি হয়ে বেরোলাম। মেঘলা আকাশ বলে এদিনও কাঞ্চনজঙ্ঘা কিছুই দেখা গেলো না। মাঝে কয়েক মিনিটের জন্যে ইঞ্চিখানেক একটা টিকি দেখা গেছিলো - তবে সেটা পাশের একটা সামিট, কাঞ্চনজঙ্ঘা সামিটটা নয়।

    কপাল খারাপ। কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়া পেলিং বলতে গেলে আর কিছুই নেই, আর সেটাও দেখা হল না। কাজেই আর কিছু করার নেই, পেমিয়াংচি ঘুরে সোজা শিলিগুড়ি চলে যাবো। পেমিয়াংচি পৌঁছলাম যখন তখনও বেশ কুয়াশা। কুয়াশার মধ্যে হলুদ পতাকার সারিটা ব্যাপক লাগছিলো - কলাবনই বটে। মনাস্টেরির ভিতরে ছবি তুলতে দেয় না - নইলে তিনতলায় একটা বিরাট প্যাগোডার মতন স্ট্রাকচার আমার ভয়ানক পছন্দ হয়েছিলো। তিব্বতী/চীনা ট্র্যাডিশনে সম্ভবত: গরুড় জাতীয় কোনো জন্তু (আধা পাখি, আধা জন্তু, মুখে সাপ) আছে - প্যাগোডাটার পাশে এরকম একটা মূর্তি দেখে মনে হল।

    পেমিয়াংচি দেখা শেষ মানে আমাদের সিকিম ঘোরা শেষ। ওখান থেকে সোজা নামতে শুরু করলাম শিলিগুড়ির দিকে। ততক্ষণে ওই চঙ্কÄরেও ভালো বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। রাস্তাও পিছল। তার মধ্যেই নামতে নামতে রিন্‌চেম্‌পং পেরোলাম - পেলিং-এর আগে এখানেই যাবো ভেবেছিলাম, কিন্তু জায়গা পাইনি বলে পেলিং। তারপর রংপো হয়ে শিলিগুড়ি।

    সকালের কাঞ্চনজঙ্ঘা ধরার ছিলো বলে শিলিগুড়ি টাউনে না থেকে ভাবলাম এনজেপিতে থাকবো। সে কি হোটেল রে ভাই। সমস্ত সন্ধ্যে বিছানায় উঠে বসে রইলাম - যত কম মাটিতে নামতে হয় আর কি। চান-টানও হল না, সেদিন তো নয়ই, পরের দিন সকালেও নয় - কারণ যা বাথরুমের ছিরি তাতে চান করতে ইচ্ছে করলো না।

    পরের দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস আরেক যন্ত্রণা। এনজেপি এলো নির্ধারিত সময়ের দশ মিনিট আগে। মালদা টাউন পৌঁছলো ঠিক সময়ে। তারপরেই ট্রেনের ইঞ্জিন বদলে মনে হয় কয়েকটা গরু লাগিয়ে দিয়েছিলো। ঢিকির ঢিকির করে ট্রেন চললো, ছোটখাটো স্টেশন, হল্ট স্টেশনে তো বটেই, মাঠেঘাটেও দাঁড়িয়ে পড়ছিলো। বর্ধমানে ভাবলুম নেমে গিয়ে লোকাল ধরি, কিন্তু আবার সব জিনিস নিয়ে নেমে লোকালে উঠতে হবে ভেবে থেকে গেলুম। বর্ধমানের পর চন্দনপুর বলে একটা স্টেশনে ঢোকার মুখে পাক্কা চল্লিশ মিনিট দাঁড়িয়ে রইলো - পাশ দিয়ে দুখানা ডাউন লোকাল চলে গেলো, কিন্তু নামার জন্যে প্ল্যাটফর্ম ছিলো না বলে কিছু করা গেলো না। শেয়ালদা ঢোকার মুখে ফের মিনিট কুড়ি ঠায় দাঁড়িয়ে। আসলে সন্ধ্যের সময় শেয়ালদা স্টেশনটা ওভারলোডেড হয়ে থাকে। উত্তরবঙ্গেরই তো প্রায় চারখানা ট্রেন ছাড়ে আধ ঘন্টা পর পর। তার ওপর লোকাল। এই ম্যানেজমেন্টটা যদ্দিন না ঠিক হবে তদ্দিন এরকম দুর্ভোগ পোয়াতেই হবে - আর লজিক্যালি এটা হ্যান্ডল করার ধক কারো নেই। ট্রেন শেয়ালদা ঢুকলো রাত্তির এগারোটা - সাড়ে সাতটার জায়গায়। তারপর ট্যাক্সি ধরা - ভাগ্যক্রমে একজন রাজী হয়ে গেলো, এবং বেশি না হেঁকেই। বাড়ি ফিরলুম রাত্তির বারোটার সময়।

    লাস্ট সেট অব টিপ্‌স:

    (১) পেলিং না যাওয়ারই চেষ্টা করুন। কিছুই নাই, কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়া। নেহাত যদি যেতেই হয়, আগে থেকে ওয়েদারের খবর নিয়ে এক রাতের জন্যে যান। কপালে থাকলে সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখবেন, তারপর ডে ট্রিপটা কাস্টমাইজ করে নিন - রিম্বি ফল্‌স, কাঞ্চনজঙ্ঘা ফল্‌স, পেমিয়াংচি ছাড়া আর কিসুই দেখার নেই।

    (২) দিনের ট্রেনে কক্ষণো এনজেপি থেকে ফিরবেন না। কাঁদিয়ে দেবে।

    (৩) ভুলেও এনজেপিতে থাকার কথা ভাববেন না। শিলিগুড়ি টাউনে থাকবেন।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৭:১৪458715
  • আমার কথাটি ফুরোল
    নটে গাছটি মুরলো।
    ক্যানরে নটে মুরোলি?
    গরুতে কেন খায়?
    কেনরে গরু খাস?
    রাখাল কেন চড়ায় না?
    কেনরে রাখাল চড়াস না?
    বউ কেন ভাত দেয় না?
    কেনরে বউ ভাত দিস না?
    ছেলে কেন কাঁদে?
    কেনরে ছেলে কাঁদিস?
    পিঁপড়ে কেন কামড়ায়?
    কেনরে পিঁপড়ে কামড়াস?
    কুটুস কুটুস কামড়াবো
    গর্তের মধ্যে সেঁধবো।

    (সমস্ত গল্পের শেষে ঋতি এখন এইটা বলে। আমিও তাই দিয়ে শেষ করলুম। ওভার টু দময়ন্তী।)
  • d | 14.96.173.99 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৭:১৯458716
  • বা: অজ্জিত কেমন সুন্দর স্মার্ট স্লিক একটা ভ্রমন্থন নামিয়ে দিল! :)
    আমি বড্ডবেশী ডিটেলে হেজিয়ে ফেলি। :(
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৭:৫৯458717
  • ও, পেলিং থেকে কি কেনা হয়েছে বলি -

    তিনখানা তিব্বতী মুখোশ, নানা রকম মুখের ড্রাগন, হাঁ করা মুখে একখান আপেল আর একটা তলোয়ার। এগুলো ওয়াল হ্যাঙ্গিং।

    একটা ধর্মচক্র - ট্র্যাডিশনাল স্টাইলের। হাতে করে ঘোরানোর নয়, একটা স্ট্যান্ডের ওপর দাঁড় করানো। হাতে ঘোরানো জপযন্ত্রগুলো ভালো না, প্লাস্টিক জাতীয় কিছু দিয়ে তৈরী। কাঠের হলে কিনতুম। এটা নেপাল ট্রিপের জন্যে তোলা রইলো। থাংকাও দার্জিলিং-এর জন্যে তোলা রইলো - গুরুং-এর কৃপা হলে কেনা হবে।

    আর গাদাখানেক তিব্বতী ট্র্যাডিশনাল গলার হার। কে পরবে কবে পরবে জানা নেই।

    কয়েকটা ওই ব্যাগ, তার মধ্যে ব্যাগ।
  • Arpan | 216.52.215.232 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৮:১৯458718
  • একবারে পড়ে ফেললাম। চমৎকার লাগল অরিজিতের লেখা।

    লং উইকেন্ডে বসে বসে ছবি দেখব। :-)
  • Nina | 64.56.33.254 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ২১:৫৭458719
  • as usual, অরিজিৎ, দারুণ!!!

  • SB | 14.96.166.103 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ২১:১২458720
  • অরিজিৎ, দারুণ!!

    কটা টিপ্স: সিকিমে কেনাকাটা করতে গেলে গ্যাংটকের গভর্মেন্ট এম্পোরিয়াম থেকে কিনবেন।

    জপযন্ত্রটা ওখানে পাওয়া যায়না, সেটা রুমটেক বা এম জি মার্গের দোকান থেকে কিনতে হয়।

    গ্যাংটকে এমজি মার্গের কাছাকাছি হোটেল নিন।

    বাচ্চাদের গুরুদোংমার ভালো লাগে না, বোর হয়ে যায়। অনেক্ষনের জার্নি, আর মাত্র কয়েক মিনিট থেকেই ফিরে আসা, অনেকেরই পোষায় না, তার চেয়ে চোপ্তা ভ্যালি ঘুরে আসা অনেকের বেশি পছন্দ।

    যেখানেই যান দুপুরের আগে ফিরে আসুন। জিরো পয়েন্ট ও খারাপ অবস্থা হয়ে যায় একটা সময়ের পরে।

    উত্তর সিকিমে যাওয়ার জন্যে গ্যাংটকে গিয়েই ব্যবস্থা করা যায়, খরচ কম লাগে, লাচুং লাচেনে ঠিকঠাক হোটেল (?) পাওয়া যায়।

    গতবছর থেকে চিনের সাথে যুদ্ধু যুদ্ধু শুরু হওয়ার পর থেকে কাটাও বন্ধ, আদারওয়াজ কাটাও দুর্ধষ্য, দারুণ ভিউ, ১৮০ ডিগ্রী স্নো ক্যাপ্‌ড মাউনটেন্স, য়ুমথাং এর পরেই বলা যায়। আবার খুলে গেলে মিস করবেন না!

    ইশে ওখানে খুব সস্তা ঠিকই, তবে ওখানকার লোকাল ব্যাপারটার স্বাদ নিতে ভুলবেননা, ছাং :-)
  • Sudipta | 203.171.243.11 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ২১:৪৩458721
  • বাহ অরিজিৎদা দারুণ লিখেছে তো! দমদি থমকে গেল কেন? আর তোমরা এজেন্সি ধরে গেলে কেন? ওতে তো খরচ অনেক বেশী পড়ে! নিজেরা গেলে অনেক সস্তায় অনেক ভালোভাবে ঘুরতে পারতে! গ্যাংটক থেকে মাঙ্গান যাওয়ার রাস্তায় কাঞ্চনজঙ্ঘা টাকে এখন-ও ভুলতে পারি না; তবে পরের বছর একবার সান্দাকফু/ফালুট যাওয়ার ইচ্ছে আছে, মাকালু, এভারেস্ট আর কাঞ্চন কে একসাথে দেখার জন্য; পেলিং টা একদম মনের কথা, পুরো ওভার হাইপড জায়গা, খেচেপালরি লেকটা অবিশ্যি খারাপ নয়, তবে প্যাংগং আর সোমোরিরি দেখার পর আর কোনো লেক ই ভালো লাগবে কিনা কে জানে; এই লেখাটা পড়ে বেশ এন্থু পেলুম, দেখি কিছু শুরু করতে পারি কিনা :)
  • Arijit | 61.95.144.122 | ১০ নভেম্বর ২০১০ ০৯:৫৬458722
  • নিজেরা গেলে খরচ কম পড়ে ঠিকই, কিন্তু দুটো বাচ্চা নিয়ে ব্যাপারটা রিস্কি হয়ে যায়। যদি হোটেল না পাওয়া যায়, যদি গাড়ি না পাওয়া যায় ইত্যাদি। তখন রাস্তার ধারে বসে থাকতে হবে। বছর দশেক আগে কোথাও কিছু বুক করে যেতাম না। তুমিও বছর দশেক পরে হয়তো বুক না করে যেতে পারবে না:-)
  • Arijit | 61.95.144.122 | ১০ নভেম্বর ২০১০ ১০:২৩458723
  • আমি কিন্তু এমজি মার্গ বা ওর বেশি কাছে থাকা ডিসকারেজ করবো। বড্ড ভিড় আর হইহট্টগোল। শপিং মল-এর কাছে থাকলে যা হয় আর কি। তার ওপর এমজি মার্গের ঠিক ওপরেই লোকাল ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, তার জন্যে একটু বেশি কিচিরমিচির হয়। বরং টিবেট রোডের ওপর দিকে থাকুন - এমজি রোড থেকে খুব দূরে নয়, নামার সময় মিনিট পাঁচেক লাগে, ওঠার সময় মিনিট দশেক। বা একদম নিরিবিলি চাইলে মিন্টোক্লিং - সেক্রেটারিয়াট রোডের ওপর। কিন্তু সেটা আরেকটু দূরে।
  • Shibanshu | 59.93.91.249 | ১০ নভেম্বর ২০১০ ১৭:৫৭458724
  • দারুণ মানসভ্রমণ হলো....
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন