এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • সুচিত্র মিত্র

    ulpu sen
    গান | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ | ১০৫৮২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • DeMu | 122.248.183.1 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১১:৫০464277
  • এর বেশী এই সুতোয় মানায় না। একটা অন্য সুতো খুলে নিলে কেমন হয়?
  • Abhyu | 97.80.156.83 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১২:১১464279
  • আলোচনাটা আবার সেই পুরোনো সুর বিতর্কের দিকে যাচ্ছে - শেষ পর্যন্ত সেই অঞ্জন দত্তের পাগলা হাওয়া না কি একটা গান ছিলো না, নিজের সুরে গানের ভুষ্টিনাশ করে ছেড়েছিল - সেই দিকে চলে যাবে :(
    আমার মনে হয় দেমুবাবু যথেষ্ট পরিষ্কারভাবে নিজের বক্তব্য বলেছেন। চ্যুতি মানে চ্যুতি।
  • Shibanshu | 59.97.232.128 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১২:৫০464280
  • এ বিষয়ে আমি এক মত। স্বরবিতানে দেওয়া ছাঁচে যদি না মেলে, তবে তাকে 'সুরচ্যুতি' বলতে হবে। স্বরলিপি কে বানিয়েছেন সেটা অপ্রাসঙ্গিক।( DeMu যে গান গুলির উল্লেখ করেছেন, সেগুলির সুচিত্রাকৃত একাধিক গায়নের রেকর্ড আছে, সেগুলি শুনে এ বিষয়ে বলার প্রয়াস নেবো)। অন্য যে প্রশ্নটি আসছে সেটি অন্য প্রসঙ্গে। রবীন্দ্রসঙ্গীতে ঈষৎ স্পর্শস্বর লাগালে, বা যতিবিভাগে ব্যতিক্রম ঘটানোর স্বাধীনতা নিলে , তা কোনও শিল্পীর (নিছক 'গায়ক' বর্গের থেকে পৃথক) ক্ষেত্রে অগৌরবের লক্ষণ কি না? এই প্রশ্নে এতো এতো আলোচনা, নিন্দাভজনা, মতান্তর, মনান্তর হয়েছে যে সব কিছুর পুনরুল্লেখ এই টইতে মনে হয় নিÖপ্রয়োজন। সম্প্রতিকালেই অন্য একটি টইয়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে শ্রুতি/ স্পর্শস্বর, তার যৌক্তিকতা, নান্দনিকতা নিয়ে অনেক চর্চা হয়েছে।
  • pi | 72.83.86.24 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১২:৫৫464281
  • 'স্বরচ্যুতি' বলতে পারি। 'সুরচ্যুতি ' বলতে নারাজ।
    আর সেটাকে অগৌরবের তো কোনোরকম ভাবেই মনে করিনা।
  • nyara | 203.110.238.16 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:০৯464282
  • স্বরবিতানকে ব্যাদ বলে ধরা হলেও, সব ক্ষেত্রে তার স্বরলিপি রবীন্দ্র-অনুমোদিত বোধহয় ভাবা যায় না। বড়জোর বিশ্বভারতী অনুমোদিত বলা যেতে পারে।

    তো স্বরবিতান থেকে সরলে প্রাতিষ্ঠানিক দিক থেকে স্বর/সুরচ্যুতি বলা হয়তো যায়। কিন্তু আবার যায়ও কি? স্যারই বলে গেছিলেন না যে স্বরলিপির বাইরে যেতে হবে - কী ও কতটা, সেটা গায়ক-গায়িকার ব্যাপার। স্বরলিপি মধ্যমেধার ব্যাপার।

    যাকগে এটা বড় টপিক। কোনদিন কোন মতৈক্য হয় না।
  • Baijayanta | 14.96.202.233 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:২৮464283
  • কিছু বলব "না" বলে এসেছিলেম, তবু..। দেবজিৎবাবুর বক্তব্য "লেটারে" চৌখস, কিন্তু "স্পিরিট" নিয়ে কিছুটা খটকা থেকে গেল। যে "খটকার" দায়টা আমার নয়, স্বয়ং সেই ভদ্রলোকের।

    "আজ সংস্কৃত ভাষায় কেহ যদি কবিতা লেখেন, তবে নস্য-সেবক চালকলা-জীবী আলংকারিক সমালোচকেরা তাহকে কী চক্ষে দেখেন? তৎক্ষণাৎ তাঁহারা ব্যাকরণ বাহির করেন, অলংকারের পুঁথিখানা খুলিয়া বলেন, ষত্ব, ণত্ব, তদ্ধিত প্রত্য, সমাস সন্ধি, মিলাইয়া যদি নিখুঁত বিবেচনা করেন, যদি দেখেন যশকে শুভ্র বলা হইয়াছে, নলিনীর সহিত সূর্যের ও কুমুদের সহিত চন্দ্রের মৈত্র সম্পাদন করা হইয়াছে তবেই তাঁহারা পরমানন্দ উপভোগ করেন। আর, কেহ যদি আজ গান করেন, তবে তানপুরার কর্ণপীড়ক খরজ সুরের জন্মদাতাগণ তাহাকে কি চক্ষে সমালোচন করেন? তাঁহারা দেখেন একটা রাগ বা রাগিণী গাওয়া হইতেছে কি না; সে রাগ বা রাগিণীর বাদী সুরগুলিকে যথারীতি সমাদর ও বিসম্বাদী সুরগুলিকে যথারীতি অপমান করা হইয়াছে কি না; এ পরীক্ষাতে যদি গানটি উত্তীর্ণ হয় তবেই তাঁহাদের বাহবাসূচক ঘাড় নড়ে। অবিকল নকল দেখিলেই বুঝা যায় যে, অনুকরণকারী অনুকৃত পদার্থের ভাব আয়ত্ত করিতে পারেন নাই। মনে করুন, আমি সাহেব হইতে চাই; অথচ আমি সাহেবদিগের ভাব কিছুমাত্র জানি না, তখন আমি কী করি? না, অ্যাণ্ড্রু নামক একটি বিশেষ সাহেবকে লক্ষ্য রাখিয়া, অবিকল তাহার মতো কোর্তা ও পাজামা ব্যবহার করি, তাহার কোর্তার যে দুই জায়গায় ছেঁড়া আছে, যত্নপূর্বক আমার কোর্তার ঠিক সেই দুই জায়গায় ছিঁড়ি ও তাহার নাকে যে স্থানে তিনটি তিল আছে, আমার নাকের ঠিক সেইখানে কালি দিয়া তিনটি তিল চিত্রিত করি। ঐ একই কারণ হইতে, যাহাদের স্বাভাবিক ভদ্রতা নাই, তাহারা ভদ্র হইতে ইচ্ছা করিলে আনুষ্ঠানিক ভদ্রতার কিছু বাড়াবাড়ি করিয়া থাকে। আমাদের সংগীতশাস্ত্র না কি মৃত শাস্ত্র, যে শাস্ত্রের ভাবটা আমরা না কি আয়ত্ত করিতে পারি না, এইজন্য রাগরাগিণী, বাদী ও বিসম্বাদী সুরের ব্যাকরণ লইয়াই মহা কোলাহল করিয়া থাকি। যে ভাষার ব্যাকরণ সম্পূর্ণ হইয়াছে, সে ভাষার পরলোক প্রাপ্তি হইয়াছে।"
  • Shibanshu | 59.97.232.128 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:৪৪464284
  • ঠিক কথা। সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে 'পাত্রাধার তৈল বা তৈলাধার পাত্র' বাঁধাবাঁধির নিয়ম নিম্ন ও মধ্য মেধার মানুষদের জন্যই থাকুক। যাঁরা শুদ্ধ গায়নকে উপলব্ধির শীর্ষ স্তরে নিয়ে যেতে সক্ষম, তাঁদের সিদ্ধিলাভ ঘটেছে এবং এইসব 'চ্যুতি'র কালি ঐ স্তরে পৌঁছোয় না।
  • kallol | 220.226.209.2 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১৫:১০464285
  • খুব অধিকারি নই। তবু কিঞ্চিত হাত সুরসুর কচ্ছিলো।
    স্বরলিপিতে ঠিক ঠিক যেমনটি আছে তাকে মা-মা-কের মতো নামাতে হবে - এমন কথা কে কবে বলেছে। সোজা র্সা না লাগিয়ে যদি নি র্সা লাগিয়ে থাকেন সুচিত্রা মিত্রের মতো কেউ, তবে তারও হয়তো কারন ছিলো।
    ঠিক একই প্রসঙ্গ নয় তবু। এস আর এর প্রথম অনুষ্ঠানে আলি আকবর সাহেব নাকি ইমনকল্যান বাজাতে বাজাতে হঠাৎ নীচ থেকে উপরের সা পর্যন্ত সোজা টিপ টেনে দিয়েছিলেন। সেটা নাকি পাগল করে দিয়েছিলো উপস্থিত গুণীজনকে।
    ওঁরা জানেন কোথায় স্বরলিপি/ব্যাকারণ ভাঙ্গতে হয় - ওঁরাই জানেন।
  • kumudini | 59.178.147.140 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১৬:১৯464287
  • স্বরলিপির আলোচনায় আমার অধিকার নেই।এইটুকু বুঝি,আলোচনা,সমালোচনা-সবই অত্যন্ত প্রয়োজন,ঋদ্ধ হওয়ার জন্য।এই টইয়ের পাতাই তো তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।পাই,সুচেতা,নীনা ও কল্লোলের কথা আমারই কথা,অন্যদের লেখাগুলো সবটা বুঝি না বুঝি,বার বার পড়ি,চেষ্টা করি কিছু শিখে নিতে।
    তবে আবারও সবিনয়ে বলতে চাই,সুচিত্রা মিত্র এক প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্বের নাম।এক জীবনে তিনি যা করেছেন ,তার দিকে তাকালে গভীর শ্রদ্ধা আসে না কি?আর সেই প্রেক্ষিতেই সুচিত্রা-বিষয়ক আলোচনায় সৌজন্যের মাত্রা মেনে চলা সম্ভবত: বাঞ্ছনীয়। "" কি দরকার ছিল আর রেকর্ড করার?একটা ভুল উদাহরণ রেখে যাওয়া""/""সুরের বিচ্যুতি অমার্জনীয়"" -না,এই ভাষা বোধহয় সুচিত্রার প্রাপ্য নয়।তাঁর প্রাপ্য সশ্রদ্ধ,বলিষ্ঠ অথচ আবেগবর্জিত, নিরপেক্ষ মূল্যায়ন।
  • Sibu | 184.194.214.177 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ১৮:১৭464288
  • গানের আমি কিছু বুঝি না, তাই এখানে কথা বলার চেষ্টা করলে কিল খাবার সম্ভাবনা। তবে বড্ড প্রশ্ন পাচ্ছে। তাই রিস্ক নিয়ে ফেলি।

    মনে হয় সবাই একমত যে কোন কোন গানে সুচিত্রা মিত্র স্ট্যান্ডার্ড স্বরলিপি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। প্রশ্ন হল, তাতে নান্দনিক কোন অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে কি না। এ নিয়ে কিন্তু কোন ভাল আলোচনা দেখলাম না। সবই শেষ পর্য্যন্ত - সুচিত্রা মিত্র যখন করেছেন তখন সেটা নিশ্চয় ভাল, এইখানে গিয়ে পৌঁচেছে। বৈজচ'র তোলা দাঁড়িদাদুর মন্তব্যটি এখানে একটু লাগসই লাগছে। তফাতের মধ্যে, দাঁড়িদাদু বলছিলেন ব্যাকরণ অলংকারে ভক্তির কথা, আর এখানে সুচিত্রা মিত্রে ভক্তির কথা।

    কেউ বলতে পারেন, তবে DeMu-র বক্তব্য কেন বিশ্বভারতীতে ভক্তি বলে গন্য হবে না? তাই হত, যদি না উনি অন্য সুতোয় ব্যাখ্যা করতেন কেন মূল স্বরলিপি মেনে চলা নান্দনিকভাবে বাঞ্ছনীয়। সে ব্যাখ্যা ভুল কি ঠিক, তা নিয়ে আলোচনা করার মত গান আমি জানি না। কিন্তু আলোচনার স্তর ঐখানে না থাকলে সেটা ভক্তির শাউটিং ম্যাচ হয়ে যায়।
  • Nina | 64.56.33.254 | ১২ জানুয়ারি ২০১১ ২৩:৩৫464289
  • যাক বাবা, এই প্রথম খুব আনন্দ হচ্ছে নিজের অজ্ঞানতার জন্য! ভাগ্যিস গানের ব্যাকরণ অতশত জানিনে বুঝিনে---মন দিয়ে যেমন চিরদিন সুচিত্রা মিত্রের গান শুনে এক অপার্থিব আনন্দ পেয়েছি --সারাজীবন পেয়ে যাব---নইলে কি শুনতাম--যদি ঐ সব সা, নি, গা , স্বরচ্যুতি সুরচ্যুতি বুঝতে পারতাম!! থাক সেই ভাল সেই ভাল, নাহয় স্বরলিপি তেমনকরে নাই জানি---
    মন দিয়ে শুনি
    মনে রেখ, তবু মনে রেখ------
  • kallol | 115.242.204.104 | ১৩ জানুয়ারি ২০১১ ০০:১১464290
  • স্বরলিপি না মানায় নান্দনিক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে কি না, তা কে ঠিক করবে? সকলের নান্দনিকতা তো এক ছাঁচে ঢালা নয়। আর স্বরলিপি না মানার, ""না মানা""টুকু কতোটা? সা এর জায়গায় নি সা ? নি কোমল রে সা তো করে নি কেউ। বা, "পাড়ায় পাড়ায় ক্ষেপিয়ে বেড়ায়" কেউ কি "রূপ তেরা মস্তানা"র সুরে গেয়েছে? ""স্বরচ্যুতি""র আলোচনাগুলোয় এরকম একটা স্বর থাকে - ""তাহলে গানটা আর রবীন্দ্রনাথের রইলো না""। এই স্বরটা আমার কেমন যেন ""মৌলবাদী"" লাগে।
    দেবব্রতর যে গানগুলো শুনে আমরা (মানে, ঐ ম্যাঙ্গো পাবলিক) ভেসে গেছি নানান জলসায়, সেগুলো বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কানে নান্দনিক ঠেকেনি (তাতে সুচিত্রাও ছিলেন)। তো? অনেকেরই পীযুষকান্তি ভালো লাগে, আমার লাগে না। তো কি করি? অনেকের চিন্ময় চট্টো ভালো লাগে না, আমার লাগে। কি করি?
    এই তর্কটার আবেগের জায়গা নিয়ে একটা আস্তো বই আছে - ব্রাত্যজনের রুদ্ধসঙ্গীত, দেবব্রত বিশ্বাসের লেখা (না, ব্রাত্য বসুর লেখা নাটক নয়)। এটা নিয়ে টেকনিকাল আলোচনা হয়েছে প্রচুর। তবে বই আছে কি না মনে নেই।
    শান্তিদেববাবুর একটা "আলো আমার আলো ওগো" শুনেছিলাম রেকর্ডে। এই গানটি সাধারনত যে লয়ে গাওয়া হয়ে থাকে (প্রার্থনা সঙ্গীত হিসাবে), তার চাইতে অনেকটাই বাড়িয়ে গাওয়া। আশ্চর্য উচ্ছল একটা গান হয়ে যায় ঐ প্রার্থনা সঙ্গীত। এটাও কি বিচ্যুতি? গান তো শুধু স্বর দিয়ে হয় না, তাল লয়ও তো গানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাহলে?
    বা, দেবব্রত "আকাশ ভরা সূর্য্য তারা" অনেক সময় শুরু করতেন "অসীমকালে যে হিল্লোলে" দিয়ে। আমার তো এখনো গায়ে কাঁটা দেয়।
    রবীন্দ্রনাথ ছেড়ে অন্য গানে যাই যদি। "অবাক পৃথিবী" (শুধু অবাক পৃথিবী। বিদ্রোহ আজ-এর অংশটুকু বাদ) হেমন্তর চাইতে দেবব্রতর গাওয়ায় অনেক প্রাণবন্ত লাগে আমার। কিন্তু "যদি কিছু আমারে শুধাও" দেবব্রতর চাইতে শ্যামলের গাওয়া, অনেক সুন্দর লাগে। আমার এই মতে সকলে একমত না হতেই পারেন, তাতে আমার ভালো/খারাপ লাগা কমে/বেড়ে যায় না।
    দেমুর একরকম মনে হয়েছে, অন্যদের অন্যরকম।
  • siki | 155.136.80.174 | ১৩ জানুয়ারি ২০১১ ০৯:১১464291
  • কল্লোলদাকে বড় করে ক। অ্যাক্কেবারে ফিলিং মিলে যাচ্ছে :-)
  • kumudini | 59.178.134.227 | ১৩ জানুয়ারি ২০১১ ১২:০৬464292
  • কল্লোল,একেবারে আমার কথাগুলো লিখে দিলেন।কেমন করে ভাই?আমার মনেও যে এই কথারাই ছিল,শুধু আপনার মত সুন্দর করে লিখতে পারছিলাম না।
  • DeMu | 122.248.183.1 | ১৩ জানুয়ারি ২০১১ ১২:৪৯464293
  • মনে আছে কমবয়সে ওনার গান তেমন ভাল লাগত না। শুনতাম, বাবার ভাল লাগত বলে। সুচিত্রা মিত্রকে বেশেষ ভালো লাগতে শুরু করে কায়েক বছর আগে একটা HMV-র mp3CD কিনে শোনার পর থেকে। সেই ৪০-শের দশক থেকে ৯০-এর দশক পর্যন্ত খান পঞ্চাশেক গান শুনে। বিশেষ করে প্রথম দিকের গান গুলো। পুরোনো দিনের বলে মনেই হয় না। নাকি, ন্যাকা, হার্মনিয়মের প্যাঁ প্যাঁ কোন জাদুবলে উধাও। গায়কী বলিষ্ঠ পরিশীলিত। উচ্চারণ আধুনিক।

    আর কয়েকটা দিক। ওনার সারা জীবন ধরে রবীন্দ্র সাধনা। শুধু গান নয়, সব। উনি এটা মানতেন যে রবীন্দ্রনাথকে গাইতে গেলে রবীন্দ্রনাথকে পড়তে হবে, বুঝতে জবে। মুখে হয়তো অনেকেই বলেন, কিন্তু সুচিত্রা মিত্র করে দেখিয়েছেন।

    শিক্ষক হিসেবে উনি অসাধারণ ছিলেন। এটার কোনো প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেই তবে যাঁরা শিখেছেন তাঁরা বলেছেন। শৈলজারঞ্জনের ওনার মত ছাত্রধনে ধনী কজন ছিলেন।

  • kumudini | 59.178.134.42 | ১৩ জানুয়ারি ২০১১ ১৬:৫৪464294
  • শিবাংশু,আপনার ১২।১।১১,১২-৫০ পিএমের পোষ্ট-আপনার মতামত শুনবার জন্য অনেক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।
  • Shibanshu | 117.195.137.104 | ১৪ জানুয়ারি ২০১১ ০৯:০৯464295
  • @কুমুদিনী, প্রথম দিনই লিখেছিলুম শুধু মুগ্‌ধতা দিয়ে DeMu প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবেনা। ব্যক্তিগতভাবে যদিও আমি মুগ্‌ধ, তবু যদি কেউ এই মুগ্‌ধতার কারণ জিজ্ঞাসা করে তবে একটা অবস্থান আমাকে নিতেই হবে।
    আসলে এই বিষয়টি এতই ব্যপ্ত ও বহুমুখী ( সে প্রসঙ্গ ইতোমধ্যে nyara বা sibu তুলেছেন) আর এতই বহুআলোচিত যে আর লিখতে মন চাইছিলো না। আপনার আদেশমতো সামান্য লেখার প্রয়াস পাচ্ছি।

    আমাদের গান শোনার অভ্যেস বিষয়ে দুটো কথা। উত্তর ভারতে যে শাস্ত্রীয় গান আমরা শুনে থাকি সেখানে কোনও একটি সুর, যাকে স্ট্রাকচারড ভাবে 'রাগ' বলা হয়, তার শুধু কংকালটুকুই নথিবদ্ধ থাকে। আরোহ ও অবরোহ। এর পর শিল্পীকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয় ঐ কংকালের উপর রক্ত মাংস মেদ ত্বক আরোপ করে একটি রাগের শরীরী ও আত্মিক সত্বাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য।তারও অনেক প্রথাবদ্ধ নিয়ম আছে, কিন্তু কোনও ধরাবাঁধা স্বরলিপির সংস্থান নেই। কিন্তু পাশ্চাত্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ বিপরীত। সেখানে সুরস্রষ্টার তৈরি করা স্বরলিপির বাইরে একবিন্দু সরে যাবার অধিকার পরিবেশক শিল্পীর থাকেনা। এনিয়ে 'স্নেহের মন্টু', ধূর্জটি ও 'গুরুদেবে'র অসংখ্য বোধ, যুক্তি ও আলোচনার কথা সবাই জানেন।

    সঙ্গীত উপভোগ করার নানা মার্গ আছে। তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে আবেগমুখী ও সন্ধানমুখী। একটু সাধারণীকরণের ঝুঁকি নিয়ে বলি, প্রথমটি আমাদের ধরন, দ্বিতীয়টি পাশ্চাত্য ধরন।
    আমাদের সঙ্গীত চর্চা ও উপভোগ করার ব্যাকরণ যেহেতু ইম্প্রোভাইজ করার কৌশলকেই অনেক বেশি মূল্য দেয়, তাই আমাদের সন্ধানমুখী সাঙ্গীতিক প্রবণতা তেমন প্রত্যক্ষ নয়। স্বরলিপির মাধ্যমে সুরের কাঠামো ধরে রাখার কায়দাটি য়ুরোপীয়রাই আমাদের দিয়েছে। পন্ডিত ভাতখন্ডে যখন সুরসংস্থানের বিচারে হিন্দুস্তানি রাগরাগিনীর বিন্যাস করতে চেয়েছিলেন তখন তাঁকে প্রভূত বিরোধের সম্মুখীন হতে হয়ে ছিলো।
    তো এই সুরকে বেঁধে রেখে সঙ্গীত চিন্তা ও পরিবেশন আমরা ভিতর থেকে এখনও খুব একটা মেনে নিতে পারিনা। এর বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ থাকে, স্বরলিপির বাঁধনে গানের আবেগ উচিৎ মাহাত্ম্যে প্রকাশ করা যায়না।
    আমরা সতত মনে রাখি যে কবি লেখেন ' বাঁধন ছেঁড়ার সাধন হবে' বা 'তোমার জ্ঞানী আমায় বলে কঠিন তিরস্কারে, পথ দিয়ে তুই আসিসনি যে, ফিরে যারে', তাঁকে এই বাঁধনে বদ্ধ করার চেষ্টা অনুচিত। কল্লোল বা পাই যেমন বলেছেন, স্বরলিপি থেকে ঈষৎ বিচ্যুতি থেকে যদিগানের স্পিরিটকে আরও ভালোভাবে প্রকাশ করা যায়, তবে তাই হওয়া উচিৎ। ব্যক্তিগতভাবে আমি সহমত। কিন্তু কেউ প্রশ্ন করলে আমার অবস্থানটি ব্যাখ্যা করার মতো 'যুক্তি' আমার কাছে থাকা দরকার। রবীন্দ্রনাথের গান বহিরঙ্গে যতোটা সরল, প্রকৃতপক্ষে তা নয়।
    রবিবাবুই প্রথম প্রধান বঙ্গীয় সুরস্রষ্টা যিনি এই স্বরলিপির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন এবং অত্যন্ত সিরিয়াসভাবে তাকে কার্যান্বিত করেন। মুখে যাই বলুন না কেন, তাঁর সম্যক ধারণা ছিলো তাঁর গানের প্রকৃত স্বরলিপি তৈরি না করে গেলে তাঁর আপাত সরল সৃষ্টিসকল একদিন শিকড়হীন লোকরুচি ও লোকমতের বেনোজলে মাহাত্ম্য হারাতে পারে। এর সঙ্গে তিনি বিশেষ সচেতনও ছিলেন যে তাঁর গানকে এই য়ুরোপীয় পদ্ধতির ধরাবাঁধার মধ্যে চেপে রাখলে তার প্রাসঙ্গিকতা ও লোকপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন হবে। তাই জীবৎকালে তিনি কাউকে কাউকে তাঁর গানে 'স্টিমরোলার' চালানোর অধিকারও দিয়েছিলেন। তবে এই অধিকার নেহাতই ব্যক্তিস্তরের, তার সামূহিক কোনও প্রয়োগ তিনি স্বীকার করেননি।

    স্বরলিপির প্রয়োগ একটি ডিসিপ্লিনের অঙ্গ, যা মানুষ স্বেচ্ছায় মেনে চলে। তাকে কোনও এসমা দিয়ে মানাতে হয়না। যাঁরা অধিকারী, তাঁরা স্বরলিপির 'বন্ধন'এর মধ্যে পূর্ণত থেকেও অতি উপভোগ্য সঙ্গীত পরিবেশন করতে পারেন। তবে অধিকারীর পাত্রভেদ আছে। যে সব শিল্পীর সঙ্গীতের এই ধারাটিতে সিদ্ধিলাভ হয়েছে তাঁরাই অধিকারী। এই সিদ্ধিলাভের তকমা কোনও কলেজে কিনতে পাওয়া যায়না। দীর্ঘসময়ের নিবিষ্ট সাধনা ও অনুশীলন ও তার সঙ্গে অন্তর্লীন সঙ্গীত চেতনার মেলবন্ধন যখন সংবেদনশীল শ্রোতার কাছে প্রকাশ পায় তখন এই স্বীকৃতি আপনিই আসে। সুচিত্রা বা জর্জ বিশ্বাস সেই স্তরে পৌঁছে গেছিলেন, তাই তাঁদের সেই সব 'বিচ্যুতি'র জন্য কৈফিয়ৎ চাওয়াটা বাতুলতা। এই সব বাঁধাবাঁধি আমাদের মতো নিম্ন ও মধ্যমেধার মানুষের জন্যই থাক । আমরা সেই সুধাসাগরের পারে বসে থাকার লোক, ডুব দেবার সামর্থ্য এখনও অর্জন করতে পারিনি।

    এটা 'ভক্তি' নয়, 'ভালোবাসা'। :-)
  • kallol | 220.226.209.2 | ১৪ জানুয়ারি ২০১১ ১০:০৭464296
  • অ্যায়, দ্যাখো। অধিকারী মানুষ লিখলে কেমন হয়। শিবাংশুকে দুহাত তুলে।
    তাবে ভাই, ভক্তিতে দোষ কি? ভালবাসা ছাড়া ভক্তি হয়?

  • kumudini | 59.178.45.177 | ১৪ জানুয়ারি ২০১১ ১২:০৯464298
  • শিবাংশু,আমাদের সকলের হয়ে আপনার লেখা সুচিত্রাদিকে নিবেদন করলাম।
  • nyara | 122.172.159.178 | ১৪ জানুয়ারি ২০১১ ২২:৫৪464299
  • শিবাংশুবাবু ভাল ধরেছেন বিষয়টাকে। খুব খেলানো আলোচনায় না গিয়েও কয়েকটা কথা বলা জরুরী মনে হল। আমার নিজের কাছেই, অন্য কারুর কাছে নয়।

    ভারতীয় মার্গ সঙ্গীতে ইম্প্রোভাইজেশনকে অসম্ভব বেশি মূল্য দেওয়া হয় বটে, কিন্তু রাগে যে শুধু আরোহ-অবরোহ বলে দিয়েই শেষ, তা নয়। বরং আমাদের মার্গসঙ্গীত ব্যকরণে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। লিখিত নয়, গুরুমুখী। আমাদের মার্গসঙ্গীতের মস্তানদের তাই একাধারে গাইয়ে, কম্পোজার এবং গানের বৈয়াকরণও হতে হত ও হয়। আসলে ধ্রূপদী সাহিত্য, ধ্রূপদী ভাষা, ধ্রূপদী সঙ্গীতে সবেরই ধ্রূপদী হবার অন্যতম শর্ত হল কঠিন ব্যকরণ ও অলংকারের বাঁধন।

    তো সেই জায়গা থেকে মনে হয়, রবীন্দ্রসঙ্গীতও ক্রমশ: সেইরকম ধ্রূপদী জয়গায় চলে যাচ্ছে যেখানে স্বরলিপির বাঁধন একেবারে এঁটে ধরছে। এ ব্যাপারে সুচিত্রা মিত্ররও যে একেবারে কোন ভূমিকা নেই তা নয়। কিন্তু একটা ব্যাপার বুঝতে হবে, স্বরলিপি একটা স্থানু জিনিস। ভাব-টাবের মতন হাওয়া-হাওয়া জিনিস ছেড়ে দিলেও, স্বরলিপিতে সব ইনফর্মেশন ধরা সম্ভব নয়। স্টাফে যেটুকু ধরা যায়, আকার-মাত্রিকে তো তাও নয়। যেটা ধরা যায় সেটা কাঠামো। এখন সেই কাঠামোকেই যদি প্রতিমা ধরে পুজো করা হয়, তাহলে যা হবার তাই হবে। এবং হচ্ছেও। লক্ষ লক্ষ গান, হাজার হাজার গাইয়ে, স্বরলিপি অনুযায়ী গায়ন। কিন্তু নিÖপ্রাণ। মন ছুঁচ্ছে না। গান হয়ে উঠছে না।
  • Abhyu | 85.137.1.116 | ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ ২০:২৪464300
  • Abhyu | 107.89.20.78 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১০:২২464301
  • আমার অলটাইম ফেভারিট গানের একটা
  • Abhyu | 107.89.20.78 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১০:২৭464302
  • সে তখন স্বপ্ন কায়া বিহীন নিশীথ তিমিরে বিলীন দূরপথে দীপশিখা রক্তিম মরীচিকা
  • PT | 213.110.243.23 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১৩:২১464303
  • স্বরলিপি না মানলে নান্দনিকতার তফাৎ হয় কিনা সেটা আলোচনা করার জন্য এই দুটো উদাহরণ চমৎকার। তালের ফারাক গানের মুডটাকেই সম্পুর্ণ বদলে দেয়।




    এই গানে তালের ব্যবহার প্রসঙ্গে একটি মনোজ্ঞ মন্তব্যঃ
  • Somen Dey | 125.187.48.21 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ২২:৪৯464304
  • এখানে অনেক গুলি লেখা পড়ে এমন মনে হচ্ছে যে একমাত্র স্বরলিপিই রবীন্দ্রসঙ্গীতকে নান্দনিকতার স্তরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বা গানে যথাযথ প্রাণ সঞ্চার করার প্রয়াসে একমাত্র বাধা ।
    আমার মতে স্বরলিপি না মানলে মহাভারত অশুদ্ধ হয় না ঠিকই কিন্তু রবি ঠাকুর অশুদ্ধ হন । মহাভারত অশুদ্ধ হলে অন্তত আমার কিছু যায় আসেনা কিন্তু রবি ঠাকুর অশুদ্ধ হয়ে অনেক কিছু যায় আসে ।
    রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুরের ক্ষেত্রে ইম্প্রোভাইজেসনের কোনো জায়গা নেই , প্রয়োজন তো নেইই । তবে হ্যাঁ লয়ের ক্ষেত্রে যেহেতু রবীন্দ্র নাথ কোনো নির্দেশ দিয়ে যাননি সেখানে স্বাধীনতা নেওয়ার জায়গা আছে । আর প্রিলিউড ইন্টারলিউড অরকেস্ট্র্সনে তো অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যেতেই পারে । তবে যদি যারা এই কাজ করবেন তাঁদের অন্তত রবীন্দ্র মানস সম্পর্কে কিছুটা ধ্যান ধ্যারনা এবং যে গানটি নিয়ে কাজ করবেন সে গানটির বাণীটি ঠিকঠাক বোঝার ক্ষমতা থাকে । এই দুটি না থাকলে তার ফল কি হতে পারে অঞ্জন এবং নীল দত্তরা দেখাচ্ছেন । এটাকে যদি নান্দনিকতা বলে তা হলে তা হলে এ যাবৎ নান্দনিকতা নিয়ে যা জানতাম তা সবই ভুল ছিল। রেকর্ডে সব সময়েই স্বরলিপি মেনে চলা উচিত । লাইভ অনুষ্ঠানে অনেক সময় শিল্পী অনুষ্ঠানের মুড অনুযায়ী একটু আধ্টু ইম্প্রোভাইজেসন (বিকৃতি না করে ) চলতে পারে ।
  • brcalg | 37.125.201.20 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০০:১৬464305
  • .
    PT এবং Somen Dey -- দু'জনকেই আন্তরিক অভিনন্দন ।

    The defense rests your honour ....
  • Ekak | 125.118.42.34 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৫:৪২464306
  • আলোচনা দারুন এগোচ্ছে । অনেক কিছু জানতে পারছি । ভাবছি । ধন্যবাদ সবাই কে । একটা জিনিস একটু অদ্ভূত লাগলো বলে বলি :
    অনেকেই ইটা বলে থাকেন যে রবিবাবুর গান কে বুঝতে গেলে রবিবাবু এবং তার সমগ্র সৃষ্টি সম্বন্ধে ধারণা থাকা প্রয়োজন ।
    কিন্তু ক্যানো ?
    সাহিত্য শিল্পের বিনির্মান এ আরোহী এবং অবরোহী দুটি পথ ই তো বিদ্যমান । আমি যেমন সমগ্র থেকে খন্ডের বিনির্মান করতে পারি এক ই ভাবে খন্ড থেকেও সমগ্রে পৌছনো যায় । এটাই মহত শিল্পের গুণ । শুধুই রবিবাবুর গান বা এমনকি হতে পারে মাত্র কয়েকটি গান কে আশ্রয় করেও সেই শিল্পকে ছুঁতে পারা উচিত এবং যায় ও । এখানে অন্ধের হস্তিদর্শনের যুক্তি খাতে না কারণ উদ্দেশ্য হাতি কে বোঝা নয় :) যেটুকু ছুন্ছি সেইটে বোঝা ।
    কখনো তো এমন ও হয় যে অন্য অংশগুলো একেবারেই অপ্রীতিকর । আমার কাছে রবিবাবুর কবিতা ইস্কুলের ওয়াল ম্যাগাজিন স্ত্যান্দ্সার্দ এর বেশি কিছু না । উপন্যাস মানে পাতা ভরানো । ছোটগল্প শিশুতোষ । গান একদম আলাদা । সাপের সব বিষ যেমন তার বিষথলি তে তেমন ভাবেই নিজের ই নিতান্ত মধ্যমেধার বাকি সব শিল্পকর্ম থেকে আচমকা সটান উঠে দাঁড়িয়ে কালকেউটের তীব্র ছোবল এবং জাত চিনিয়ে দেওয়া ।
    তাই খন্ড কে বোঝার একমাত্র পথ সারাজীবন ধরে সমগ্র কে জানা এতে একটু খটকা থেকে গ্যালো । ব্যক্তিবিশেষের সেটা ধরন হতে পারে অবস্য ।
  • কল্লোল | 125.241.47.146 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৭:৩৫464307
  • একক কে ক।
    যদিও প্রত্যেকের অনুভব আলাদা। সুচিত্রা মিত্র মনে করতেন সামগ্রিকভাবে রবীন্দ্রনাথকে না জানলে, ওঁর গানের প্রতি সুবিচার করা যায় না। এটা অবশ্যই গান গাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বলা।
    আমার সৌভাগ্য, আমি প্রায় ১২ বছর ধরে প্রতি রবিবার ওনার গান শেখানো শুনতাম। একটা গান নিয়ে পড়তে শুরু করতেন। গানের প্রত্যেকটা লাইন আলাদা করে স্পষ্ট উচ্চারণ করে পড়াতেন প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে। তারপর গান শেখানো শুরু হতো। মডিউলেশন আর উচ্চারণ নিয়ে ভীষন কড়া ছিলেন। আর গানের সুর ও তার দর্শন নিয়ে অসম্ভব ভালো বলতেন। প্রচুর রবীন্দ্রসাহিত্যের রেফারেন্স আসতো। যারা ওগুলো পড়েনি তাদের পক্ষে সেসব নেওয়া বেশ মুস্কিল হতো। কেউ বিশেষ প্রশ্ন করতো না। কারন যদি না পড়ার কথা জানতে পারেন তো খুব বকতেন।
    নিজে হারমোনিয়াম বাজিয়ে শেখাতেন না। নিজে গেয়েও দেখাতেন না। ওনার সহযোগী থাকতেন কাশীদা বা রবিনদা। ওঁরাই গানটা গেয়ে শেখাতেন। উনি বিশেষ বিশেষ জায়াগায় ধরিয়ে দিতেন। মনে আছে - শীতের হাওয়ার লাগলো নাচন গানে, পাতাগুলো শিরশিরিয়ে / শিরশিরিয়ে ঝরিয়ে দিলো তালে তালে - এই লাইনে দুটো শিরশিরিয়ে সুর ও ভাবের তফাৎ বুঝিয়েছিলেন খুব সুন্দর করে, বারবার করে গেয়ে গেয়ে। প্রথম শিরশিরিয়েতে সুরের সূক্ষ্ম ওঠাপড়া আর তাকে ঠিকঠাক মডিউলেট করে শীতের শিরশিরানির ভাবটা আনা, আর পরেরটাতে পাতা ঝারার আনন্দের প্রকাশ। পাতা ঝরার আনন্দ উনি ব্যখ্যা করেন এভাবে যে, গাছ জানে পুরোনো পাতা ঝরলেই নতুন পাতা আসবে - তাই পাতা ঝরার আনন্দ।
    এখন মনে হয় লুকিয়ে যদি রেকর্ড করে রাখতাম সেসব।
    আসলে সময় সময়ের তফাতে অনেক কিছুই বদলায়। সুচিত্রা মিত্রেরা যখন শিখেছেন, শান্তিনিকেতনে, তখন সেই সুযোগ আর অবকাশ ছিলো - রবীন্দ্রনাথকে সামগ্রিকভাবে জেনে তাঁর গান শেখা। সারাক্ষন সারাদিন ওঁরা রবীন্দ্রনাথেই থাকতেন।
    সেটা নিশ্চই কলকাতায় লেকমার্কেটের গায়ে রবিতীর্থে সপ্তাহে একদিনে হওয়া সম্ভব নয়। তাই রবিতীর্থ আমাদের পূর্বা দাম বা রমা মন্ডল দিয়েছে, সুচিত্রা মিত্র দিতে পারেনি।
  • Abhyu | 107.89.17.83 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৮:২৯464309
  • লয় নিয়ে কথা হচ্ছিল। সামান্য লয়ের একটু তফাতে গান কতটা বদলে যায় - দেবব্রত গেয়েছেন

    আর একটু ধীর লয়ে গেয়েছেন সুবিনয়
    http://www.youtube.com/watch?NR=1&v=neSO6jHYJJc&feature=endscreen
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত প্রতিক্রিয়া দিন