এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • সুনীল গাঙ্গুলী - জনপ্রিয় বাংলা লেখক

    Abhyu
    বইপত্তর | ১৬ অক্টোবর ২০১১ | ১০৪৮৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সিদ্ধার্থ | 141.104.245.196 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১০:২৬494080
  • যদি ভুল না হয়, আপনার বক্তব্যের দুখানা দিক আছে। একটা দিক নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সেটা তর্কের বিষয়। হিস্টরিকাল আপ্রোচ কেমন হবে, কোন স্প্যান, তার মধ্যে লোকাল হিস্টরি প্রাধান্য পাবে কি না এটা একটা বিশাল প্রশ্ন। আমার ধারণা সুনীলকে এই জায়গাটা দিয়ে ধরতে যাওয়া হয়ত ভুল। সুনীল খুব সম্ভবত ন্যাশনালিস্ট হিস্টরির মডার্নিস্ট ধারায় বিলং করেছেন , সারাজীবন বিশ্বাস করেছেন ওতেই। সেই সময় বা প্রথম আলো অনেকটা বেনেডিক্ট আন্ডারসনের ইমাজিনড কমিউনিটির একটা অংশ হিসেবে দেখা যায়, যেখানে জাতীয়তাবাদী ধারণাটাই তখনো আসেনি, এনলাইটেন্ড ক্লাসের চেতনায় বিলং করছে এবং সেখান থেকে একটা ইমাজিন্ড নেশনহুড, মনে করা যাক প্রথম আলোতে সরলা দেবী চৌধুরাণীর চরিত্র, বা সেই সময়তে হরিশ মুখার্জী বা দেবেন ঠাকুর। ফলে সুনীল প্রথম থেকেই নিজের লক্ষ্যটা সেট করে রাখছেন নট টু দ্য সোসাইটি বাট টু দ্য এমার্জিং কনসাসনেস রাইজিং ডিউ টু ইকনমিক ডেভেলপমেন্ট, যেজন্য দ্বারকানাথ ঠাকুর। তো, এটাও একটা ধারা, হয়ত তাতেও ঠিকঠাক রিপ্রেজেন্ট হয়না, হীরা বুলবুল বা চাঁদুর বাইরে আখ্যান কিছুতেই মাটির সংগে জুড়তে চায়না। তবে সেটা সম্ভবত লেখকের দোস নয়, দায়টা তিনি কেমনভাবে ইতিহাসকে দেখছেন তার ওপর। সেই দেখাটাকে প্রশ্ন করা যায়।.

    কিন্তু দ্বিতীয় দিকটায়, প্রশ্নটা লেখক নিয়ে নয় লেখা নিয়ে বলেও আপনি সেই গ্রসম্যানের প্রসংগ-ই টানলেন ? ঃ) ইম্প্যাক্ট বেশি কারণ গ্রসম্যান ডিসিডেন্ট হননি এতে কে বেশি গুরূত্ব পায়, লেখক না লেখা? ঃ) কি হত গ্রসম্যান যদি টার্নকোট হতেন? লাইফ এন্ড ফেটের গুরূত্ব কি কমত? তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনের কোন সময়ে কংগ্রেসের সাথে ছিলেন আর কোন অংশে কমিউনিস্টদের সংগে, এভাবে তাকে বিচার করা যায় কি? কংগ্রেসের সংগে থেকেও তো তারাশংকর রশিদ আলী দিবস নিয়ে বাংলার সম্ভবত একমাত্র উপন্যাসটা লিখে গেছেন , `ঝড় ও ঝরাপাতা।` অথবা আপনার বুল্গাকভকেও ভাবা যায়। ব্যাপারটা হল আপনি কাকে ধরবেন! লেখার মধ্যে দিয়ে লেখককে খুঁজবেন কি? তাহলে লেট আস এগ্রি টু ডিসেগ্রী ঃ) আমার মনে হয়না এরকমভাবে ভাগ করা যায়। লেখক কিভাবে দেখছেন, সুনীল কিভাবে দেখছেন সময়কে, বা মার্কেজ, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা আর কিভাবে লিখছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা আমার কাছে আলাদা। আমি নিজেই ইতিহাসের মার্ক্সবাদী ধ্যানধারণায় বিশ্বাসী, কিন্তু সেই বিশ্বাসের দায়ভার যখন নিজের ওপর চেপে বসে তখন লেখাটা আর লেখা থাকেনা বলে মনে করি। তখন এই প্রশ্নগুলো প্রাসংগিক হতে পারে। বুল্গাকভের দেখাটা আমার কাছে গ্রহণীয় না হলেও মাস্টার এন্ড মার্গারিটাকে এই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ভাবতে কোনো দ্বিধা হয়না। ..
  • aranya | 78.38.243.161 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১১:৫১494081
  • সিদ্ধার্থের লেখা যত পড়ি, মুগ্ধতা বেড়ে যায়, উদার, মুক্ত, নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী ইঃ।
    'কবির মৃত্যু'-র প্রথম লাইনও ভুলে গেছি, স্মৃতির কি করুণ অবস্থা :-( ।
    হানু, রাজদীপের কথাটা মমতার উদ্দেশ্য বলা - সুনীলের মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করার পরিপ্রেক্ষিতে।
  • h | 213.99.212.54 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১১:৫৬494082
  • গ্রসম্যানের একটা উপন্যাস এর কথা বলেছি, লাইফ অ্যান্ড ডেথ। বাকি লেখার কথা বলিনি। আর সংগে ওনার জার্নালিস্টিক কাজের উদাহরণ দিয়ে বলেছি, দুটো লেখার ধরণ থেকে দুটো আলাদা সিদ্ধান্তে পৌঁছোনো সম্ভব। একটা সোভিয়েতের পক্ষে যাবে, আরেকটা বিপক্ষে। যেটা বিশের দশক থেকে আশির দশক অব্দি একটা অন্য মানে রাখতো। ডিসিডেন্স এর জন্য দেশত্যাগ তখন আনকমন ছিল না।

    বুলগাকভ প্রচন্ড মজার। একমত। একশো বার। স্টেট কে ঐ লেভেলের প্যাঁক দিয়েছে বেশ করেছে। তবে প্রসংগত ১৯৫০ অনওয়ার্ড্স প্রচুর আন্ডারগ্রাউন্ড আনফিসিয়াল কালচারাল মুভমেন্ট ছিল, বুল্গাকভ তার মধ্যে, যে কোনো কারণেই হোক, ফেভার্ড ছিলেন রেজিমের কাছে। গার্ডিয়ান পত্রিকায় একবার মিলিটারি র গে পার্টি / সমাবেশ এর ছবি ছেপেছিল। ৫০ এর দশকের। বুল্গাকভ সম্পর্কে আমার একটাই বক্তব্য উনি ওতিহাসিক সময় নিয়ে লিখলেও, তাঁর কাছে ওটা কন্টেম্পোরারি, এবং এনগেজমেন্ট টাও সময়ের সম্পর্কে কনশাস হলেও , ইতিহাসের এনগেজমেন্ট নয়, হোয়ারায়াজ, গ্রোসম্যান বা এরেন্বুর্গ গোটাটাই তাই, ইন ট্র্যাডিশন অফ রাশিয়ান নভেল্স।
  • সিদ্ধার্থ | 141.104.245.196 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:০২494083
  • লাইফ এন্ড ফেট বলছেন সম্ভবত। আমার গ্রসম্যান নিয়ে একটু রিজার্ভেশন আছে। সে যাক, এভরিথিং ফ্লোজ পরে এটা এসেছিল। সে যাক- .

    বুলগাকভ সম্পর্কে একমত
  • h | 213.99.212.54 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:০৪494084
  • বিশ্বাসী আমি কিসুতেই আর নই। আমার কথা সিম্পল, পাঠকের বিশ্বাসের দায় লেখক নেবেন কেন, সেরকম ই তাঁর হিস্টরিকাল অবসারভেশন এর দায় তাঁকেই নিতে হবে। কে বড় লেখক টা ইমেটেরিয়াল, সেটা পাঠক বলার কথা। তবে প্রকাশনার রাজনীতি হল, একটা হিস্টরিওগ্রাফি এন্ডোর্সমেন্ট পাবে, আরেকটা পাবে না। একজন ক্রিটিসিজম/রিভিউ নামক ইনডাস্ট্রির এনডোর্সমেন্ট পাবেন, আরেকটা পাবেন না।

    তারাশংকর কেন, উনি প্রায় দেবতা আমার কাছে, বীরভূম বব্লে ভীষণ আইডেন্টিফাই করতে পারি, খুব সাধারণ লেখক কেও আমি ইন্টারপ্রিটেশন এর দায় নিতে বলিনি। সেটা আমাদের মত ল্যাদানে পাঠকের কাজ। তারাশংকরের কবি উপন্যাসের মত একটা উপন্যাস একটা লোকশিল্প ভিত্তিক লেখা, ঐ কম্প্যাসনের গুরুত্ত্ব, একটা লোক শিল্পকেন্দ্র স্থাপনের গুরুত্ত্বের চেয়েও হয়তো বেশি। কিন্তু তাই বলে যা কিছু গ্রামীন রিসিভড ট্র্যাডিশন, সেটাকে তারাশংকর টেনে খেলালে দু কথা শোনাবো না কেন বাপু, নিজেদের মধ্যে। এতো আর কেউ সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। কোথায় তারা শংকর সুনীল, কোথায় আমর বালের কমেন্ট ;-)
  • h | 213.99.212.53 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:০৮494085
  • আবার রাজনীতি কি হল। উফ ফ বাবা, কিস্যু রাজনীতি হয় নি। গ্যাছেন, অনেক মিলে একটু হই হই করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, ভিড় সামলেছেন। যেরকম প্যান্ডেমোনিয়াম আমাদের শ্মশান যাত্রায় হয় , হয়েছে। এতে রেগে যাবার কি হল? সবাই কি সব সময় লাইন দেবে নাকি। এ কি মুসোলিয়াম? ;-)
  • h | 213.99.212.53 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:১৬494086
  • সিদ্ধার্থ এক জায়গায় দেখছি, ন্যাশনালিস্ট হিস্টরিওগ্রাফি তে সুনীলের আস্থা কে মেনে নিচ্ছে আরেকবার বলছে, সুনীলের ইতিহাসের বিষয়ে উন্মুক্ত দৃষ্টি।

    এটা তো কন্ট্রাডিকশন হল। বলতে পারো সাংঘাতিক বুদ্ধিমান বলে, এবং নান কমিটাল বলে, ডাইরেক্ট কনফ্লিক্ট এর ইতিহাসের প্রসংগে লেখেন নি, ব্যক্তিগত জার্নি গুলোর উপরে জোর দিয়েছেন। তাতে কি বলা যায়, হি হ্যাজ নট টেকেন সাইড্স ;-)
  • h | 213.99.212.53 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:১৭494087
  • *নন

    নান কমিটাল তো জসপাল ভাট্টি ;-)
  • সিদ্ধার্থ | 141.104.245.196 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:২১494088
  • ধুত, ন্যাশনালিস্ট ভিউতে আস্থা রাখলে কি মুক্তদৃষ্টি হওয়া যায়না? তাহলে বিষাদবৃক্ষ টাইপ লেখাপত্তরকে কোন জায়গায় রাখব? (তপন রায়চৌধুরীকে সচেতনভাবেই ধরছি না)।

    আমি বলতে চেয়েছিলাম ডায়ালজির কথা। যেটা অন্য এই ধরণের লেখাপত্তরে দেখিনি।
  • aranya | 78.38.243.161 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:২৩494090
  • আসলে সুনীল বুদ্ধ-কে পছন্দ করতেন, তাই তিনি সিপিএম ঘনিষ্ঠ, মানে দিদির চোখে আর কি। পাওয়ারে এসেই সুনীলকে শিশু-কিশোর অ্যাকাডেমির সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে বসালেন অর্পিতাকে, ন্যক্কারজনক কাজ। মারা যাওয়ার পর সুনীলের জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে মাইলেজ পাওয়ার চেষ্টা করছেন - স্বাভাবিক অভিযোগ।
  • সিদ্ধার্থ | 141.104.245.196 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১২:২৫494091
  • মমতা আজকাল বেশ ঝাঁটু হয়ে উঠছে। বোকার মতন কাজ করছে একটার পর একটা, তাই খিস্তিও খাচ্ছে বেশ ওপেনলি .
  • h | 213.132.214.156 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ১৪:২১494092
  • ন্যাশনালিজম তো নানা রকমের। কেবল মাত্র এলিট ন্যাশনালিজম এ আস্থা রাখলে একটু মুশকিল আমাদের দেশে, যেখানে তার মানে বেসিকালি মুসলমান দের এক্সক্লুড করা, নীচু শ্রেণীর লোকেদের এক্সক্লুড করা।

    প্লাস, এটা আরো বেশি ইম্পর্টান্ট, নতুন কিসু ভিউ উঠে আসছে না ঐ ইতিহাস বিষয়ের লেখা থেকে, যেটা চলতি মেজরেটারিয়ান ট্র্যাডিশন সেই একই ইতিহাস বোধ ওখানে। রবি কেমন করে নরেন এর দিকে তাকালেন, বা নিবেদিতা কষ্টে অভিমানে থর থর করে কাঁপছিলেন কিনা টা ইমেটেরিয়াল। জেনেরাল হিস্টরি র বইয়ের অভাব আছে, তাই এই সব বইয়ের উপরে আমাদের ইতিহাস বোধ ডিপেন করছে, ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। পিরিয়ড স্ট্রাকচার হই হই করে টিঁকে আছে, 'বাংআলি রেনেসাঁ' ধারণ হই হই করে টিঁকে আছে। শুধু যোগ হয়েছে, শুধু ধূতির আবহমানে কর্পোরেট আবহ একটু জুড়েছে এই যা ভরসা। ইন করাপশন দেয়ার ইজ অলওয়েজ আ পসিবিলিটি অফ চেঞ্জ, মানে সত্যি তাই কিন জানি না, তবে ধরে বসে আছি আর কি করব।
    বিষাদবৃক্ষ নিয়ে সকলেরি দুর্বলতা আছে, আমারো আছে, কিন্তু তাই বলে কি অন্য সম্ভাবনার কথা, অন্যান্য কন্টেম্পোরারি (বংকিমের) দিকটা তলিয়ে দেখবো না?
  • সুশান্ত | 127.203.164.36 | ২৭ অক্টোবর ২০১২ ২২:৪৫494093
  • আলোচনাটা ভালো লাগছে বেশ।
  • ddt | 135.20.82.166 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ০১:০২494094
  • উৎপলের লেখাটা ভাল লাগল।
    ---------------------------
    নিজেই ক্রমশ হয়ে উঠেছিল ব্যবহৃত
    উৎপলকুমার বসু

    বন্ধুর মৃত্যুর পর তার কাজ নিয়ে লেখা মুশকিল। এবং সেই বন্ধু যদি হয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় লেখক, আরও মুশকিল।
    প্রতিটি লেখকেরই নিজস্ব একটি দর্শন থাকে। সুনীল তার নিজস্ব সাহিত্যদর্শনের প্রসঙ্গে বারংবার একটি কথা বলত। সেই কথার মর্মার্থ, ‘মহাকাল আমাকে মনে রাখবে কিনা, তা নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র ভাবিত নই। এখন যে লেখাটা লিখলাম, সেটা পড়ে তুমি আনন্দ পাচ্ছো কি না, সেটিই আসল কথা। আমি যদি পাঁচটা খারাপ গল্প আর তিনটে বাজে উপন্যাস লিখে থাকি, দুনিয়ায় কোনও মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।’ সুনীল তার বেশির ভাগ লেখায় সাহিত্যের প্যাঁচপয়জারের চেয়েও মানুষকে বেশি বিনোদন দিতে চেয়েছে।
    ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার আদিযুগে সুনীল অবশ্য বিনোদন বিতরণের এই দায়িত্ব নেয়নি। সিগনেট প্রেসের স্বত্বাধিকারী ডি কে বা দিলীপকুমার গুপ্ত সুনীলকে খুব ভালবাসতেন। ওই প্রেসেই ‘কৃত্তিবাস’ ছাপা হত। দীপক (মজুমদার), আনন্দ বাগচী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তিন সম্পাদকই স্থির করেছিল, ওই পত্রিকায় তরুণরা কবিতা লিখবে। গদ্য ছাপা হবে শুধু বয়স্ক লেখকদের।
    বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তার আগে ‘কল্লোল’, ‘কালিকলম’, ‘প্রগতি’ ইত্যাদি পত্রিকা ছিল। ছিল বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’। কৃত্তিবাস তরুণ কবিদের মুখপত্র ঠিকই, কিন্তু সেটি ছাপতেও কাগজ কিনতে হয়, দফতরিকে বাঁধাইয়ের টাকা দিতে হয়। সদ্য স্বাধীনতা পাওয়া এক দেশ, চারদিকে উদ্বাস্তুর মিছিল, জিনিসপত্রের দাম আক্রা... আমার বয়সী সবাই জানেন, সে বড় সুখের সময় নয়।
    সুনীল নিম্নমধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলে, বাবা স্কুলের মাস্টারমশায়। তাদের ভাড়াটে বাড়ির ভাড়াও সেই আক্রার বাজারে বাড়ছে। বড় ছেলেকে পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয়, সুনীলকেও অজস্র টিউশনি করতে হয়েছে। এক সময় ‘জনসেবক’ কাগজে চাকরি নিতে হয়েছে। পরে আনন্দবাজার। আমার মতো অনেকে তখন শিক্ষকতার চাকরি নিয়েছে। কলেজে পড়ানোর মাইনে মাসে ৩২৫ টাকা।
    খবরের কাগজে কবিতার ব্যাপার বিশেষ থাকে না। পাতা ভরানোর জন্য গদ্যই প্রধান। সুনীল ক্রমে এই বিষয়টিতে দক্ষ হয়ে ওঠে। প্রতিভার সঙ্গে দক্ষতার মিশেল ঘটলে যা হয়, সুনীলের ক্ষেত্রে তাই ঘটল। কবিতাই তার প্রথম প্রেম। তবু টাকার জন্য তাকে গদ্য লিখতে হচ্ছে বলে বহু বার আক্ষেপ করেছে সুনীল।
    বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস জানে, এই গদ্যযাত্রার শুরু ‘দেশ’ পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যায় আত্মপ্রকাশ উপন্যাস থেকে। সেটিই সুনীলের প্রথম উপন্যাস। ওর এক-দেড় বছর আগে-পিছে শীর্ষেন্দু, দেবেশ রায়, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় অনেকে উপন্যাস লিখছেন। প্রত্যেকে আগের প্রজন্মের সাহিত্যের ছক ভাঙার চেষ্টা করছেন।
    সুনীল এই চেষ্টাটা নিল অন্য ভাবে। নতুন আখ্যানরীতির গদ্য সে লিখল না, বরং কলকাতার নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সমাজের মুখের ভাষাকে তুলে আনল। তৈরি হল জনপ্রিয় এক গদ্যরীতি। ঝরঝরে ভঙ্গি, যে কোনও লোকেই সেখান থেকে বিনোদনের আস্বাদ খুঁজে নিতে পারে। আবার সেই গদ্যরীতিতেই তৈরি হয় ‘গরম ভাত অথবা নিছক ভূতের গল্প’র মতো ছোট গল্প। সুনীল বলত, এক দিনে বসে গল্পটা লিখেছে। কিন্তু ওই ভাবে তো লেখার রসায়ন তৈরি হয় না। অনেক দিন ধরেই তার মাথায় ওই গল্পের ছবি ঘুরত।
    সুনীলের উত্থান আসলে কলকাতার মধ্যবিত্তের উত্থান। তার ভাষার উত্থান, চিন্তার উত্থান। ‘মনীষার দুই প্রেমিক’-এর মতো প্রেমের গল্প ছেড়ে সুনীল পরে সেই সময়, প্রথম আলো-র মতো বড় উপন্যাসে হাত দেয়। সেখানেও কিন্তু উনিশ শতকের নাগরিক কলকাতা। শরদিন্দু ঐতিহাসিক উপন্যাসে সামগ্রিক গৌড়মল্লার-এর ঝঙ্কার তোলেন, চেনা পরিবেশ ছেড়ে চলে যান তুঙ্গভদ্রার তীরে। কিন্তু সুনীল তাঁর প্রিয় কলকাতার ইতিহাসকেই যেন ঘুরেফিরে দেখতে চান। মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং গৌরদাস বসাকের সম্পর্কে সমকামিতা ছিল কিনা, ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ এবং ‘ভাই ছুটি’র অবস্থান কী রকম ছিল, তাকেই পরখ করে নেন। দুটি উপন্যাস লিখতেই প্রবল পরিশ্রম করেছিল সুনীল। উত্তরপাড়ার জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরি থেকে বহু জায়গায় খুঁটে তথ্য আহরণ করেছিল। বাংলা সাহিত্যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মানে শুধু প্রতিভা এবং দক্ষতার মেলবন্ধন নয়। তার সঙ্গে জুড়তে হবে প্রবল পরিশ্রমের ক্ষমতা। পরিশ্রমের ক্ষমতা না থাকলে একই সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নীললোহিত এবং সনাতন পাঠক হওয়া যায় না।
    আমাদের বন্ধুদের অবশ্য একটি দুঃখ থেকে যাবে। খবরের কাগজে চাকরি নিয়ে কৃত্তিবাস সম্পাদক বলেছিলেন, ‘সিস্টেমকে ভিতর থেকে ভাঙতে হয়। বাইরে থেকে ভাঙা যায় না।’ কিন্তু সিস্টেমকে ভাঙা যায়? সুনীল সত্যিই তাকে ভাঙতে চেয়েছিল? নাকি ব্যবহার করতে চেয়েছিল? আর তা করতে গিয়ে নিজেই ক্রমশ হয়ে উঠেছিল ব্যবহৃত, ব্যবহৃত এবং ব্যবহৃত!
    তবু সুনীল পাঞ্জা লড়েছিল!
  • সিদ্ধার্থ | 141.104.245.196 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ০১:১১494095
  • বুঝেছি কি বলতে চাইছ। কথাটা হল, আমি সুনীলের কাছ থেকে সাব-অল্টার্ন ভিউ আশা করিনা। একজন ন্যাশনালিস্ট স্কুলের লোকের কাছ থেকে সেটা চাইব-ই বা কেন! সুনীল যেটুকু করেছেন সেটাই যথেষ্ট। ইমাজিন্ড কমিউনিটির যে ধারণা থেকে লিখছেন, মানে যেখানে জাতীয়তাবোধ সবে আস্তে আস্তে চেতনায় রূপ নিতে শুরু করেছে, এনলাইটেন্ড ক্লাসের হাত ধরে রেনেশাঁ আসছে, সেটা একটা ইউরোপীয়ান মডেল। সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। কিন্তু এই মডেলের গুরূত্ব-ও কম নয়, আমাদের ইতিহাসবোধের ক্ষেত্রে। মার্ক্সিস্টরাও কি এই মডেলের বাইরে বেরিয়েছেন? মানে ক্লাসিকাল মার্ক্সিস্টদের কথা বলছি-ই এইচ কার তো হোয়াট ইজ হিস্টরিতে ক্লাস কনফ্লিক্টকে এত চ্যাম্পিয়ন করেও শেষমেষ ইতিহাসের ইউরোপীয়ান ধ্যান ধারণার বাইরে বেরোতে চাননি, কনক্লুডিং জায়গাগুলো দেখা যেতে পারে। এমনকি আমাদের কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো-ও আসলে এক ইউরো-সেন্ট্রিক ধ্যানধারণা থেকে উদ্ভূত দলিল, পাতার পর পাতা উদাহরণ দেওয়া যায়। ফলে সেই মেকলে-র সন্তানরা যখন সময়কে ইন্টারপ্রেট করবে, সেই দেখাটা খণ্ডিত হতে পারে, কিন্তু ভুল সম্ভবত নয়। যদিও এটাও পুরোপুরি এক্সপ্লানেশন হয়না, কারণ সেই সময়-তে চাঁদুর চরিত্র ভাবো। যখন আলোকপ্রাপ্তি ঘটছে, ইয়াং বেংগল এসে গেছে, স্কুল কলেজ খুলছে, তখনি বাইজির ছেলে হবার অপরাধে তাকে স্কুলে পড়তে দেওয়া হয়না, এবং কি আশ্চর্য, স্বয়ং বিদ্যাসাগর নীরব থাকেন, কারণ তিনি জানেন রাইজিং মধ্যশ্রেণীকে চটিয়ে তিনি রিফর্ম আনতে পারবেন না। ফলে এই রিফর্ম যে মধ্যশ্রেনীর আনুকুল্যে, সেটা তো ঠিক-ই। কথাটা হল, তাতে কি তার গুরূত্ব কমে? আজকে গৌতম ভদ্ররাও ভাওয়াল রাজকুমারের ফিরে আসা নিয়ে জনজাগরণ ও রাইজিং স্বদেশচেতনা, এস্পেসালি `সন্নাসী` এই ইমেজটার স্বাদেশিকতার ওপর প্রভাব নিয়ে যখন কাজ করেন, আমার তো সেটাকেও ইউরোপীয়ান দেখা লাগে। রাসপুটিন এফেক্ট নিয়ে কাজগুলোর একটা প্রাচ্য সংস্করণ মাত্র লাগে। আমার প্রশ্নটা হল, কতটা নেব আর কতটা অস্বীকার করব। ইউরোপীয়ান মডেল মানেই অস্বীকার হলে গোটা মার্ক্সিস্ট ইতিহাসকেই অস্বীকার করতে হয়। আর আমার কেন জানিনা মনে হয়, অন্যান্য সম্ভাবনা যেমন বংকিম বা আজকালকার যোগেন মন্ডলদের গুরূত্ব দিয়ে আমাদের সাম্প্রদায়ীক চেতনাকে কোথাও একটু প্রশ্রয়ের চোখে দেখা হচ্ছে না তো? সাব-অল্টার্নদের, এস্পেসালি আশীষ নন্দীরা যখন ন্যাশনালিজমের মডেলটাকে প্রত্যাখ্যান করতে করতে সেকুলারিজমের আইডিয়াগুলোকেও রিফিউট করেন, ধর্মভিত্তিক কৌম-চেতনার ওপর জোর দেন, তখন ভয় লাগে। আমাদের উপমহাদেশ তো কম রক্তারক্তি দেখেনি! তবে এসবের বাইরে, প্রশ্ন তো তোলাই যায়! আমারি যেমন হেভি জানতে ইচ্ছে করে, দেশভাগ নিয়ে বা বাংলাদেশ থেকে শরনার্থী চলে আসা নিয়ে আমরা যেমন পাতার পর পাতা লিখেছি, সেগুলো তো ম্যাক্সিমাম হিন্দু মধ্যশ্রেনীর দুর্দশার কথা। মার্জিনালদের কি অবস্থা হয়েছিল, মানে তাদের সত্যি-ই কিছু এসে গেছিল কি না, সেটা নিয়ে পপুলার লেখাপত্তর কই? তাই আজকাল বাংগালনামা টাইপের স্মৃতিচারণ-ও ক্লান্তিকর লাগে। অথবা উল্টো ছবিটা-মানে, প্রাণ তো শুধু বগুড়া বরিশালের ভিটেমাটি ছেড়ে শ্যামবাজারের দেড় কামরার বাসায় মাথা গুঁজলেই কাঁদে না, যেসব মুসলিমরা আমাদের ব্যারাকপুর বারাসাত ছেড়ে বাংলাদেশ চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদেরো তো প্রাণ কেঁদেছিল। কোথায় সেসব লেখা? আমি তো একমাত্র মাহমুদুল হকের একটা ছোট্ট উপন্যাস বাদে আর কোনো পপুলার লিটারেচারে এসবের কথা পাইনা। এগুলো নিয়ে তো প্রশ্ন করাই উচিত। কথাটা হল, তাতে কি কনভেনশনাল লিটারেচারগুলোর গুরূত্ব কমে? সম্ভবত না। দেখার চোখটা খণ্ডিত হয়ে যায়, এই মাত্র .
  • Rana | 133.237.160.78 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ০১:৪৩494096
  • এইটা আমার ভার্সনে কবির মৃত্যু

    এত পরে এত কথা বলার কোনো মানেই নেই,
    বিশেষত যখন কেউ কথা রাখেনি.

    কবির মৃত্যুর পরে হাতে লেগেছিল সবুজ পাতা,
    আশে পাশে ছিলেন অনেক মানুষ.
    অনেক মানুষ, অনেক মন্ত্রী সান্ত্রী, ভিড় ব্যস্ততা,
    হায়রে, মৃত্যুর পরে আর প্রতিবাদের দাম কি থাকে?

    যে মানুষ জীবনে আর মিছিলে নামবেনা বলেছিলো,
    বলেছিলো বিবমিষার সমতুল্য যে পরিবর্তন;
    সেই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে, সরু গলি, উপগলি, কানাগলি দিয়ে,
    লোকটা নিজেই একটা মিছিল হয়ে ছাই হতে চলল.

    মৃতের সঙ্গে বিবাদ মিথ্যা,
    নইলে সুনীল, সালা, তোর সাথে আর একবার
    খালাসীটোলাতে ডুয়েল লড়তে যেতাম.
    দেখতাম, তুই কত বমি করতে পারিস.
  • কল্লোল | 111.62.46.148 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ০৬:১৬494097
  • সুনীল আর ধর্ষণ - টইয়ের মান কোথাও একটা লাফ মেরেছে। সিদ্ধার্থ আর হনুর তরজা চেটেপুটে পড়ছি।
  • aranya | 78.38.243.161 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ০৯:০৪494098
  • আম্মো গোগ্রাসে গিলছি। ইয়ে, ঐ রেনেসাঁ মালটা কি তাইলে আদৌ হয় নি ? হানু লিকেচে ''বাংআলি রেনেসাঁ' ধারণ হই হই করে টিঁকে আছে।'
    আমার কিসুই পড়াসুনা নাই এ বিষয়ে, তাই শুদোচ্ছি।
  • aranya | 78.38.243.161 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ১০:১৫494099
  • আজকালে প্রচেত গুপ্ত সুনীল-কে নিয়ে লিখতে গিয়ে একটা খুব দামী কথা বলেছেন - 'টলটলে নদীর মত' তার ভাষা। অবলীলায় বয়ে যাওয়া ঝরনার মত, তরতরে, সাবলীল। প্রচেত এই 'সুনীল' ভাষায় লেখার চেষ্টা করেন, চট করে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য, এবং অচিরেই বোঝেন জাস্ট হচ্ছে না। কারণ শুধু ভাষা তো নয়, একটা জটিল বিষয়কে সহজ ভাবে ভাবতে হবে, সহ্জ করে বলতে হবে, পাঠককে পড়িয়ে নিতে হবে, এ এক দুর্লভ গুণ, আশ্চর্য ক্ষমতা, যা শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় কিছু লেখকের করায়ত্ত। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে শরদিন্দুর কথা, ভাষা অন্য কিন্তু গল্প বলার অসামান্য ক্ষমতা, যা পাঠককে বেঁধে রাখে।
    জনপ্রিয় লেখকদের টিটকিরি দেবার প্রথা আছে, আমরাও 'মহর্ষি' 'হুনীল'-কে নিয়ে খিল্লি করেছি অনেক, কিন্স্তু এটা মেনে নেওয়া ভাল যে পাঠক মনোরঞ্জনের জাদুকাঠিটি খুব কম লেখকেরই করায়ত্ত। ভাষা নিয়ে, ফর্ম নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা যারা করছেন, তাদের ছোট করছি না। ধরুন কমলকুমার, আমার প্রিয় লেখক, সুনীলেরও গুরু ছিলেন তো। কি শ্রদ্ধাই না করতেন কমলকুমারকে, তার সাহিত্যসৃষ্টিকে। সেই কমলকুমারকেও যদি চ্যালেঞ্জ করা হত 'সুনীল' ভাষায় লিখতে, পারতেন কি? নিশ্চিতভাবেই বলতেন আমি সব পাঠকের জন্য লিখি না, আমার লেখার রস পেতে হলে অনেক খাটতে হবে। সেটা আন্তরিক ভাবে মেনে নিয়েও ঐ প্রশ্নটা থাকে - পারতেন কি? না কি প্রচেত-র মত হার স্বীকার করতেন?

    মনের কথা সহজে বলা সহজ নয়।

    ডিঃ এখানে কমলকুমার, বুঝতেই পারছেন, প্লেসহোল্ডার। তাকে ছোট করার কোন উদ্দেশ্য নেই।
  • Tim | 105.59.101.91 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ১২:১৩494101
  • এই টইটা ব্যাপক হচ্ছে। পড়ছি মন দিয়ে। অরণ্যদার কথায় মনে পড়লো, ছোটবেলায় আজকালে প্রচুর লেখালেখি পড়তাম রবিবাসরীয়তে এঁদের (মানে সুনীল-শক্তি-শরৎ-উৎপলকুমার বসু), আর বেজায় ধাক্কা খেতাম।
  • h | 127.194.229.8 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ২০:০১494102
  • সুনীল গংগোপাধ্যায়ের সাহিত্য সৃষ্টি সংক্রান্ত আলোচনায় এই দাবী আমি করেছি বলে মনে পড়ছে না, যে মার্কসিস্ট বা সাব অলটার্ন হিস্টরিওগ্রাফি যে ইতিহাস-বিষয়ক উপন্যাসের দর্শনকে প্রভাবিত করে নি, তাকে পড়ব না, বা তাকে যথেষ্ট পড়ার যোগ্য বলে মনে করব না। প্রশ্ন ই ওঠে না।
    আরেকটা জিনিসে মনে হয় বোঝাতে অসুবিধে করছি। আমি কিন্তু প্রতিনিধিত্ত্ব মূলক চরিত্রের আশায় বই পড়ি না। মানে কেউ ই পড়েন না, আমি সেটা এন্ডোর্স করছি বলে মনে পড়ছে না। অসংখ্য শ্রমজীবী ও সাব অল্টার্ন চরিত্র সম্বলিত ওঁছা উপন্যাস হতেই পারে (হয়তো আমি ই লিখবো, এবং তখন ছুঁড়ে যদি লোকে ফেলে দেয়, রাগ করব না ;-) ) রাজা বা বড়লোক ব্যবসায়ী দের কথা পড়ব না বললে আস্তে করে ওয়ার অ্যান্ড পিস ফেলে দিতে হয়, বাডেন ব্রুক্স পড়ব না বলতে হয়, শুধু অলিভার টুইস্ট পড়তে হয়, তাও আবার পাতা বেছে। সুতরাং বিদ্যাসাগরের চুপ করে যাওয়া তাঁর উপন্যাসে সিগনিফিকান্ট হলেও, উপন্যাস হিসেবে যে সম্মান ও জনপ্রিয়তা এই উপন্যাস পেয়েছে, তার তুলনায় এই ঘটনার বর্ণনা, যথেষ্ট চমকপ্রদ ছাড়ো, এমনকি উল্লেখযোগ্য ও কিসু না। এটা অনেকটা ফোন বুকে দুটো মুসলমান বন্ধুর ফোন রাখার মত, হ্যাপি ইদ লেখার জন্য। দায় সেরেছেন।

    আমি সুনীল পড়ব না বলিনি, আমি শুধু বলেছি, কোনো নতুন ভিসন, তাঁর ই বেছে নেওয়া সময় সংক্রান্ত বিষয়ে আমি পাই নি। সেটা মার্কসিস্ট, বা সাবল্টার্ন ছাতার মাথা কিছু হলে বা না হলে কিছু এসে যায় না।
    একটা উদাহরণ দেই, ধরো উম্বের্তো ইকো। নেম অফ রোজ। আমরা জানি এন্টায়ার মধ্যযুগ একটা কালো অন্ধকার ব্যাপার, চার্চ ক্ষমতালোভী মোনোলিথিক একটা ব্যাপার, এবং রেনেসাঁ এসে তাকে মুক্ত করলো। অথচ আমরা সাবভারসিভ নলেজের যে কন্টিনুইটি হেরেসি গুলোর মধ্যে ছিল, মিলিনেরিয়ান ট্র্যাডিশন যে শত অত্যাচারেও দাবিয়ে রাখা যায় নি, এবং ভ্যাটিকানের মধ্যে যে ডিবেট, শুধু অ্যাভিনিও আর রোমে র মধ্যে সম্পত্তি/ট্রেড রুটের নিয়ন্ত্রন এর ভাগ না, যে ডিবেট হচ্ছিল, তার টানা পোড়েন এর একটা ইতিহাস পাছি, চার্চের নলেজ কন্টিনিউআম টার মধ্যে আরবিক ইনফ্লুএন্স দেখতে পাচ্চি, সর্বোপরি, সাধারণ মানুষের যে অস্টারিটি ও পোভার্টির দাবী চার্চের কাছে, তার বীজ দেখতে পাচ্চি মিলিনেরিয়ান হেরেসির মধ্যে, এবং শুধু তাই না, সরাসরি অক্সফোর্ড সেমিনারি, যা কিনা আজ সংরঅনশীলতার পরাকাষ্ঠা তার হেরেসির ঐতিহ্য টা কে পুনরায় মনে করিয়ে দিতে দেখছি। এমনকি কনফেসন অফ সেন্ট অগাস্টাস এর মত করে, আমি বিশ্বাসী দের মধ্যে নানা মরাল ডাউট এর এভিডেন্স এর একটা প্রমাণ পাছি। এটা আকাদেমিক হিস্টরি তে ছিল। হয়তো নতুন কিসু না। কিন্তু পপুলার ইমাজিনেশনে ছিল না। নতুন ভিউ আনলেন। নন-আকাডেমিক হিস্টরিকাল পারসেপশান ভাংআ একটা হিস্টরিয়ান'স ডিবেটে অংশগ্রহণ করার থেকে ঢের কঠিন। সোমনাথ মন্দির/অযোধ্যা এইসব বিতর্ক থেকে তোমার সেসব জানার কথা।
    বাংলায় এই অসাধারণ কাজ করেছেন, প্রায় একশো বছরের ব্যবধানে, মাঝে সোপান একজন হিউমরিস্ট। ভূদেব এর যে অসামান্য নতুন সিন্ক্রেটিক ঐতিহ্য খোঁজার চেষ্টা, সেটা নেহরুর ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়ার অনেক অনেক আগে, এবং আরেকজন করছেন শওকত আলি। শওকত বাস্তববাদী, হয়তো সিনিকাল, নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন না, ঊনবিংশ শতকের ইনটেলেকচুয়াল দের মত, (যেটা হয়তো একদিক থেকে দেখলে, বংকিমের মতই অ্যাসপিরেশনাল)।
    মাঝে সোপান হলেন রাজসেখর বসু। কেন আমি হিউমরিস্ট কে একটা বিরাট ব্রিজ হিসেবে ধরছি। কারণ আমাদের দেশে ইতিহাস চর্চার আবেগ অনেকটাই মিথোলোজির গ্লোরি। হিউমর দিয়ে তার বারোটা বাজাচ্ছেন, রাজসেখর। হ্যাঁ তুলসীদাসী রামায়নের আধারে লেখা ধোঁড়াই একটা বড় ধাপ, ইতিহাস চিন্তার সেকুলারাইজেশনে, কিন্তু ভাদুড়ি মহাশয়ের এনগেজমেন্ট কনটেম্পোরারি। বুল্গাকভের মত, ঐতিহাসিক না। সেই কাজ করছেন শওকত আলি। সব রকম জ্ঞানচর্চার ট্র্যাডিশন কে, শাসনের পেছনের দর্শনের একটা মেল্টিং পট হিসেবে তৈরি করছেন, বাংলার ইতিহাসের শুরুর দিকটাকে। প্রায় একই কথা হয়তো আকাদেমিয়ায় অনেক দিন ধরেই চলছে, বৌদ্ধ মনাস্টারিরি মধ্যে কার ডিবেট, বুদ্ধের আমলে না, অনেক পরে, পোলিটিকাল ডিবেট, সাধারণ মানুষের আলোচনা গল্প, রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্যারেকটার না, অনেক রকম চরিত্র, অনেকে নানা ঐতিহ্য থেকে এসেই শিকড়হীন এবং নিজেদের কমিউনিটি তে একলা, ঘটনাচক্রে। এইটা নতুন ভিসন। এই ভিসন আমি অনিরুদ্ধ রায় আর ব্রজদুলাল চট্টোপাধ্যায় বা ইটন সাহেবের বইগুলোর সংগে যাঁরা পরিচিত নন, পেশাদারী ইতিহাসের শিক্ষা যাঁদের নেই, আমার মত চোদু লোক, তাঁদের একটা ভিসন দিচ্ছে। চতুর্দশ-পঁচদশ শতকের বাঙালির যে কালে কালে আনন্দবাজার পত্রিকা তৈরি করা ছাড়াও বেঁচে থাকার অন্যান্য উদ্দেশ্য ছিল, সেটা অন্তত স্পষ্ট হচ্ছে। এমনকি সুকুমার সেন বা নীহার রঞ্জনের কাজের একটা যে ভুল ব্যবহার হয়ে থাকে, মেন স্ট্রীমে, একটা জাতি আইডিয়ার ধীরে ধীরে ক্রিস্টালাইজেশন হচ্ছে এমন একটা দেখানো হয়ে থাকে, একাদশ-দ্বাদশ শতকের ইংল্যান্ডের ন্যাসেন্ট ন্যাশলালিজম যেমন ভাবে আলোচনা হয়ে থাকে, সেরকম ভাবে। শওকত সেরকম কিসুই করছেন, মনোরঞ্জনের জন্য একটি নবেল লিখছেন মাত্র, একটা পট বয়েলিং ইতিহাস উন্মোচিত করে দিচ্ছেন, যেটা থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শিক্ষা নিলে ভালো, না নিলে অন্তত একটা শিক্ষা অ্যাভয়েড করা কঠিন, ইতিহাস জিনিসটা ঐতিহাসিকের বিশ্লেষণের সুবিধের জন্য তৈরি হয় নি।
    আশীষ নন্দী ইত্যাদি সম্পর্কে একমত। আমি সম্ভবত চিনুআ আচেবে প্রসংগে বা ডঃ ম্বেম্বের অনুবাদ টা করার সময়ে ফুটনোটে লিখেছিলাম, ভুলে গেসি, কোথায় বলেছিলাম, (এতো বড় ভাটের কর্পাস ;-) ) যে আজকাল কার (মানে দশ দুই আগেকার) সাহিত্যালোচনার সমস্যা হল, চিনুয়া আচেবে বা সোয়িন্কা বা আমাদের অনন্তমূর্থি বা ও বি বিজয়ন বা মার্কেজ দের লেখার ভুল ইন্টারপ্রিটেশন করা হবে, যে শুধু যদি সেগুলো কে ইউরোপীয় যুক্তিবাদ কে রিজেকট করা ছাড়া আর কোন পারপস ছিল না। প্রথমত প্রগতিশীল নানা গণাঅন্দোলনে এরা নিজেরা নানা ভাবে, কলোনির স্বাধীনতার আমলে জড়িয়ে ছিলেন, যখন যে খানে যে ভাবে চাপ খেয়েছেন, রিয়াক্ট করেছেন। নিজেরা এই ইন্টারপ্রিটেশন কে নানা ভাবে নানা জায়গায় রিফিউট ও করেছেন। অন্য ধরণের প্রচুর লেখা লিখেওছেন। ইকো র কোন একটা লেখার ভীষণ উত্তর আধুনিক বিচার করেছিলেন কেউ, ইকো ইয়ার্কি মেরে, প্রায় প্রতিটি উত্তরাধুনিক গুণাবলী ই দেখিয়েছিলেন দান্তের মধ্যে আছে ;-)
    অতএব, আমার দাবী কখনৈ ছিল না, আমার আশা অনুযায়ী উপন্যাস সুনীল বাবুকে লিখতে হবে, তবে একটা দীর্ঘ সময়ের, ইতিহাস বিষয়ে অ্যাকসেপ্টেড উইসডমের, কোলে মাথা রেখে সুনীল বাবু একটা নিরাপত্ত র ভিত্তি চেয়েছেন, গল্প বলার , কোনো অসুবিধে নেই, তবে ইতিহাস দর্শনটি রাজনইতিক দর্শন ও ছিল, এটা অস্বীকার করতে চাইলে, ঐ আমরা যারা বাংলা সাহিত্যের আলবাল লিতল ম্যাগাজিন পন্থী তারা একটু ইসে করব এই আর কি। এতে তো বিক্রিবাটার কোন ক্ষেতি হয় নি, অতবে, উঅদয়ন কে পুশ সেল করতে গিয়ে অ্যাম্বুশ মার্কেটিং করেছি এটা কেউ বলতে ফারবা না। বরং মার্কেটিং আর্মের জোরে উল্টো দিক থেকেই এই কালচারাল বা কনজিউমার চয়েসের নামে, ভিন্ন ভিন্ন রূপে একই ঐতিহাসিক দর্শন পরিবেশিত হয়েছে।

    এইবার ভাষা। হ্যা খুব ভালো। অসামান্য মুখের ভাষা র একটা উত্তরণ। হ্যাঁঅ হেমন্ত বাবু যেমন গানের উচ্চারণে আধুনিকতা আনলেন, তেমন বলা যেতে পারে, লেখার ভাষা কে বলার ভাষার মত হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন অনেকে, সুনীল তাঁদের মধ্যে একজন। কিন্তু এ বলা তো সকলের বলা না। এ খানিকটা বাহামনির বাংলা বলার মত। এই ভাষা গঠনটির যে একসক্লুশন, লোকায়ত ভাষার মৃত্যু, সেগুলো সম্পর্কে এই নাগরিক ভাষা তো নিশ্চুপ। লিখতে তো পারতেন বাংআল ভাষায় লেখেন নি, হয়তো ঢাকায় থেকে গেলে লিখে ফেলতেন, হয়তো আমার আরোপিতো বীরভূমীর থেকে ভালৈ লিখতেন, ভালৈ মানে মিলিয়ন্ট টাইম্স ভালো, কিন্তু করেন নি। আমি কথা রাখতে বলছি না, লিখে দেখাতে বলছি ;-) উত্পল বসুর যে অনুযোগ পাছি লেখায়, আমার সেসব অনুযোগ ফোগ নাই। শ্রধা করি, কিন্তু আশা করি না। কি পেলাম না, বলে রাখছি, কারণ কি পেয়েছি অনেকেই বলে গেছেন ;-)

    আমি কমলকুমারের খুব একটা ফ্যান নই। ঐ দু চারিটি ঢেউ, ঐ পর্যন্ত। তবে মানুষ কি ভাষায় নিজেকে এক্সপ্রেস করবে, সেটা তার উপরেই ছেড়ে দেওআ ভালো। প্রতিষ্ঠান এনডোর্সমেন্ট করুন, টিভি বলে দিন, কার গান না শুনলে, প্রাণ যাবে, কিন্তু আপনাকে আসুন ভাই একটু সোজা করে বলি, নইলে আবার আপনার তো তেমন মাথা নেই বলতে হলে , পাঠক কে শ্রোতা কে সরাসরি ব্লার্বে বলা হোক, চিন্তা হীনতা কে সাধরণ মানুষের একমাত্র গুণ হিসেবে প্রমোট করা হচ্ছে কেন সর্বত্র? মানুষ কি সত্যি ই লিনিয়ার ভাবনা ছাড়া আর কোন ভাবে ভাবেন না? আরে অত জটিল রামায়ন মহাভারত বুঝে নিচ্ছে মানুষ, সামান্য বাংলা সাহিত্য পারবেন না?

    লেখার বা গানের ভাশা র পরিবর্তন এ সুনীল ই একমাত্র বাঁক নন। এটা একটা বড় ধারা। ধারার বিপক্ষে চললে বুঝতাম, দম আছেঃ-) জীবনানন্দ তো সম্পূর্ণ কৃত্রিম ভাষা, মার্ক্সবাদী ও নন, সাবল্টার্ন পন্থী ও নন, কই এতটুকু ঝগড়া করিচি? চুপ করে বসে আছি আর ভাব্ছি এই সব লোকের লেখার ভাষায় আমি পড়ি ও লিখি, কি লজ্জার আর কি গর্বের।

    বড় পোস্ট নানা ভুল হবে। তুমি বাপু একটা ফাইনাল লিখে দাও, আমরাও মানুষ কে বোর করা বন্ধ করি। অনেক হল, যার যা ভালো লাগবে পড়বে মিটে গেল।

    সব চেয়ে বড় কথা অনামী লেখক, লিট ক্রিট এর দর্শন, ভাষা এই সব নিয়ে কথা বলার জন্য আমার থেকে ঢের যোগ্য লোক এইখানেই অসংখ্য আছেন, অন্যত্র তো ভূরি ভূরি। আমি বাপু পয়হা খচ্ছা করে সুনীল গংগো র শেষের দিকের গদ্য কিনে পড়বো না। প্রথম দিককার হলে বলেছি আগেই, কবিদের ডিসকাউন্ট আমি দিয়ে থাকি, আগে দিতাম না, এখন বয়স হয়েছে, কম্ব্যাট সব সময়ে ভালো লাগে না। কবিদের একটা প্রাইভেট কনভারসেশন আছে, সেখানে এত ক্যাচাল ভালো লাগার কথা নয়, আমার প্রবেশাধিকার শূন্য থাকলেও নয়।
  • h | 127.194.229.8 | ২৮ অক্টোবর ২০১২ ২০:২১494103
  • তবে একটা জিনিসের জন্য আমি কৃতজ্ঞ, টিভি চ্যানেল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান, সুনীল সকলের কাছে। কবির, মূলতঃ এক কবির মৃত্যুর পরে শ্মশান যাত্রার সময়ে যানজট হচ্ছে, এইটা ভালো খবর। কত বড় সম্মান, মুশকো মুশকো সিনিকাল মন্ত্রী আমলা আজে বাজে লোক গোদা গোদা লোকজন, কত ধরণের লোক কে আসতে হচ্ছে, কবির শেষ যাত্রায়, পাছে লোকে রেগে যায়, যে কবিকে সম্মান জানাতে কেন ভুলে গেলেন বলে। এই রাজনইতিক বাধ্য বাধকতা আমার ভালো লেগেছে। একটা কবিতার বই বিক্রি করা এতে সহজ হবে কিনা জানি না, অন্তত আমি কবিতা ঘৃণা করি এই কথা বলা পাবলিক লাইফে আসতে আরেকটু সময় লাগবে। এটা কম পাওয়া না।
  • aka | 85.76.118.96 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০১:৪১494104
  • হ্যাঁগা হানু, এইসব ভারি ভারি কথাবার্তা ঠিক বুই না। যেটুকু বুইলাম, তোমার সুনীল গাঙ্গুলি ভালো লাগে না কিন্তু উদয়ন ঘোষ লেগেছে। এইটা সহজ কথায় বুঝিয়ে থুইবে একটু।
  • ranjan roy | 24.97.136.159 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০৪:৪৯494105
  • হানু এবং সিদ্ধার্থ,
    চমৎকার লাগছে। এবং ,যদিও হানু হাসবে বা নাক কোঁচকাবে( সুন্দর অমলিন হাসে, ক্র্যাব খেতে খেতেও) তবু বলব- সমৃদ্ধ হচ্ছি।
    আমার কাছে হানু সুনীলের কী কী পড়বে, কেন পড়বে বা আদৌ পড়বে কি না ( দেখতে তো যাচ্ছি নাঃ)) -- ইম্পর্ট্যান্ট নয়। আমার প্রাপ্তি ---এদের যুগলবন্দীতে যে যে প্রশ্নগুলো উঠে আসছে--সেগুলো; ইতিহাসের এবং সাহিত্যের সম্ভাব্য ভিন্ন পাঠ, ভাষা ও শৈলীর উৎসমুখ, ইত্যাদি। আরেকটু চলুক। আর বুলগাকভ নিয়ে সিধু-হানুর ঐক্যমতে গলা মেলালাম। হানু যদি ওনার কোন প্রবন্ধ বা লেখা বাংলায় অনুবাদ করে থাকে, তো পড়তে আগ্রহী।
    আর কবিদের কনসেশন দেয়ার প্রশ্নে ভারি খুশি হলাম। সব বাঙালী যুবকের মনে একজন কবি বসবাস করে।
  • সিধু | 141.104.245.196 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০৫:৫৭494106
  • নতুন ভিউপয়েন্ট এসেছে কি না সে তক্কে যাচ্ছিনা । হ্যাঁ প্রথাগত ঐতিহাসিক স্ট্যান্ডের সংগে তাল মেলানোর সমস্যাটা হল যে কনফ্লিক্টের জায়গাগুলো সরলীকৃত হয়ে যায় । সুনীল যেভাবে ইতিহাসকে দেখেছেন তার মধ্যে নতুন কিছু নাও থাকতে পারে, তবে পপুলার হিস্টরি নন-অ্যাকাডেমিক লেখায় তুলে আনাটাও তো বিশাল ব্যাপার । আমি যেটুকু বুঝেছি, আমাদের আলোকপ্রাপ্তির ইতিহাসকে, যদি একে আলোকপ্রাপ্তি ভাবতে সমস্যা থাকে তাহলে অন্য কোনো নামে ডাকা যেতে অআরে, তো, তাকে এনলাইটেন্ড মধ্যশ্রেণীর দর্শন, কনফ্লিক্ট এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির মধ্যে দিয়ে একটা ঘনায়মান ফোর্স হিসেবে দেখেছেন । এখন সেই ফর্সের মধ্যে সেই সময়ের হরীশ মুখার্জী যেমন আছে তেমনি ওই পাগলটা, যার হাতে নবীনকুমারের মৃত্যু ঘটল, মানে অর্থনৈতিক ভাংগাচড়ার বলি যার কোনো এনলাইটেনমেন্টেই কিছু এসে যায়না কিন্তু তবুও নিজের জীবন দিয়ে তার দাম দিতে হয় এবং তাই উত্তরপুরুষের হাতেই তার বিনাশ একরকম নিশ্চিত, এসব ব্যাপার স্যাপার-ও আছে । `নেম অফ দ্য রোজ`-এর সংগে তো তুলনাই চলে না কারণ ওই স্প্যানে ভাবতে আমি আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাড়া কাউকে দেখিনি । এছাড়া উমবের্তো একোকে সাহায্য করেছিল তাঁর দীর্ঘদিনের অ্যাকাডেমিক অভিজ্ঞতা এস্পেসালি ইউরোপীয়ান আলোকপ্রাপ্তি নিয়ে। এছাড়াও আমার বারেবারেই মনে হয়েছে একো তার দুখানা মেইন উপন্যাসেই একটা ব্যাপার নিয়ে ভীষণ অবসেসড, সনাতন ক্রিশ্চিয়ানিটির প্রেমিসেসগুলোতে হাসির উত্তরাধিকার। মানে হাসি, রসিকতা, গ্রাম্য খেউড় যেগুলো কাল্ট হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেগুলো প্রতিষ্ঠান কেমনভাবে অ্যাকসেপ্ট করছে অ্যাসিমিলেট করছে অথবা করছে না, এসব একোকে বহুদিন তাড়া করে বেড়িয়েছে, এবং একো এগুলোর দিকে তাকিয়েছেন যেমনভাবে আইন্স্টাইন একজন কলেজ গ্র‍্যাজুয়েটকে রিলেটিভিটি বোঝাতেন সেভাবে । মানে খোলসটা ক্যাওড়ামির, কিন্তু ভেতরে একজন অ্যাকাডেমিসিয়ান জ্বলজ্বল করছে । মার্কেজ-ও তো বলতেন যে কর্নেল অরেলিআনো বুয়েন্দিয়া নাকি মাকন্দো ছাড়ার সময় পকেটে করে র‍্যাবলের রচনাবলী নিয়ে নিরুদ্দেশ হন ঃ) । সে যাক।

    সুনীলের প্রশ্নগুলো আলাদা ছিল। ডিরেক্ট কনফ্লিক্টে যাননি, মানে জানি না ইচ্ছে করেই কিনা বংকিম বিদ্যাসাগরের ঝগড়া একটা ইমার্জিং ভাষার প্রগ্রেস নিয়ে যেটা খুব ইম্পর্টান্ট, অথবা ধরা যাক অন্যদিকে বিবেকানন্দের সংগে প্রাতিষ্ঠানিক হিন্দু ধর্মের সংঘাত, সমাজ সংস্কারের রাশ কে নিজের হাতে নেবে, বা নিছক শ্রেণি সংঘাতের প্রশ্নেই সিপাহী বিদ্রোহকে জাস্ট মধ্যশ্রেণীর দৃষ্টিভংগী থেকে দেখিয়েই ছেড়ে দিয়েছেন। খুব সম্ভবত এর বেশি যাওয়ার উদ্দেশ্যটাও ছিলনা, কারণ নিজের লক্ষ্যটা সেট করে রাখছেন যে কোনোমতেই অ্যাকাডেমিক চর্চায় যাবেননা, তার জন্য ঐতিহাসিকরা আছেন । এই দেখাটা একটা মডার্নিস্ট ভিউ-র ফসল। সে ঠিক-ই আছে । যতটুকু তাঁর আয়ত্বে তিনি তাই করেছেন। আমি সুনীলের থেকে এর বেশি কিছু এক্সপেক্ট-ও করিনা । মানে, ধরো নাম্বুদ্রিপাদের লেখা ওই অসাধারণ বইটা, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, সেটা তো একটা বিশাল কাজ । তার কোনো লিটারারি প্যারালেল যে সুনীল লিখবেন না, মানে ক্লাস পার্স্পেক্টিভ থেকে, বা অন্য বালের যে পার্স্পেক্টিভ-ই হোক না কেন, সেটা পাঠকেরা সম্ভবত সবাই জানে । কিন্তু ওই রিসার্চ বেসড সাহিত্য মনে হয় শেষ হয়ে গেল ঃ(

    শওকত আলী পড়িনি, কোনো মতামত রাখতে পারলাম না । তবে ঢোঁড়াই বললে, এই রেসপেক্টে আমি খোয়াবনামার নাম টানব। মিথ মিথ্যে পুরাণ লোককথা স্বপ্ন ধাঁধা এই সব সব মিলিয়ে যে আমাদের বিশাল উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার গড়ে উঠছে, এমনকি দেবী চৌধুরাণী ভবানী পাঠক মুন্সী কেরামতুল্লারাও মিথের অংশ হয়ে যাচ্ছে, কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যে আলাদা করা যাচ্ছেনা আর, আর এই সব কিছুর শরীর গরে উঠছে তেভাগা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে, স্বপ্নের শরীর বলা যায়, এভাবে কেউ ভাবতে পারে কল্পনাও করতে পারিনা। উপন্যাসের শুরু হয় পাকুড় গাছের বর্ননায় যেখানে মুন্সীর ভূত এসে বাসা বাঁধে যার আদেশে বিলের গজাড় মাছেরা ভেড়া হয়ে রাত্রিবেলা সাঁতার কেটে বেড়ায়, আর উপন্যাসের মাঝখানে এসে সে গাছটাকে আর খুঁজেই পাওয়া যায়না । মানে, সকলেই জানে পাকুড় গাছটা আছে, তাই এতদিন আর ফিরে তাকায়নি। হঠাত একদিন খুঁজতে গিয়ে দেখে অত বিশাল গাছটা অদৃশ্য হয়ে গেছে। আমাদের ঐতিহ্য্সাধনা, শিকড় বিচ্ছিন্নতা সাংস্কৃতিক লুপ্তবোধ এই সবকিছুকে এরকমভাবে একটা বামপন্থী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে, একটা স্বপ্নের বই যার মালিকানা হাতে মিললে মানুষের সমস্ত স্বপ্নের ব্যাখ্যা মিলবে, এরকমভাবে বিশ্লেষণকে আমার সত্যি-ই মনে হয়েছিল যুক্তিবাদের ইউরোপীয়ান মডেলকে অস্বীকার । ঢোঁড়াইয়ের পর এমন বই পড়ি নাই । আইরিশ সাহিত্যের যে তিনখানা ভাগ, সেরকম মনে হয়েছিল ইলিয়াস একা বাংলা সাহিত্যের একটা ভাগের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যে ভাগটা রুরাল ঐতিহ্য বা ইউরোপীয়ান উত্তরাধিকার দুখানাকেই অগ্রাহ্য করে, ভারতীয় উপমহাদেশের সাহিত্যের অংশ হয়ে উঠতে চায় । মহাশ্বেতা দেবীকেও এই প্রসংগে কিছুটা ভাবা যায়, বা আরো পরের অভিজিত সেন, `রহু চণ্ডালের হাড়` ।

    যাক, ডাইগ্রেস করছি প্রচুর । বালবিচি অনেক বকাও হল। এবার গুটিয়ে নি-ই । রিগার্ডিং ভাষা, সুনীলের প্রথম দিককার কয়েকটা উপন্যাস পড়তে বলব। যেমন যুবক যুবতীরা । বিশ্বাস হবেনা এটা সুনীলের ভাষা। সহজ সরল যে ভাষার কথা সবাই বলে আসছে এখানে, সেটাই সম্ভবত চাপিয়ে দেওয়া। দেশ আনন্দের স্বার্থে। নিজেকে ডিফিকাল্ট/অবসোলেট না করার জন্য । অরিজিনাল সুনীল পেতে গেলে চল্লিশ বছর আগে যেতে হবে। যেখানে বিজনের রক্ত্মাংস আর বিজনের সুখ দুঃখ দুখানা গল্প-ই হাত ধরাধরি করে চলে । তবে এই প্রসংগে একটা অবজার্ভেশন আছে । এই দেশ আনন্দের লেখকরাই যখন লিটল ম্যাগে লেখে তখন এদের ভাষা আলাদা হয়ে যায় । সম্পূর্ণ অন্য লেখা বেরোয় । শীর্ষেন্দুর ওই অনুকূল তাড়িত গপ্প উপন্যাসগুলোর পাশাপাশি-ই লিটল ম্যাগে এল্খা নিবারণ পটুয়া গল্পটাও আছে, যা না পড়লে ভদ্রলোক যে কতখানি মর্বিড হতে পারেন, কি স্কেলে ভাবতে পারেন, কল্পনা করা যায়না। সুনীলের পলাতক ও অনুসরণ্কারী গপ্পটাও লিটল ম্যাগেই লেখা। আবার উল্টোটাও ঘটে । মুলত লিটল ম্যাগের লেখকরা দেশ ফেশ-এ লিখতে এসে ছড়িয়ে মাঠ ময়দান করে দেন । সুব্রত মুখোপাধ্যায়, এই মুহূর্তের খুব ইম্পর্টান্ট গল্পকার, যখন দেশ-এ ধারাবাহিক `রসিক` উপন্যাসটা লিখতে যায় ছড়িয়ে মাখিয়ে লাট করে। কেন এটা হয় জানিনা।

    যাক, প্রচুর আটভাট বকেছি এবং সকলকে বোর করেছি । এবার ঈশানদা ক্যালাবে। বাকি তক্ক কলকাতায় গিয়ে ঃ)
  • i | 147.157.8.253 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০৮:৪৩494107
  • আমি সিধুবাবুর ফ্যান হয়ে গেলাম এই পোস্ট পড়ে।
    একটা প্রশ্ন-আমার ভুল হতেই পারে-এই সুব্রত মুখোপাধ্যায় কে কি এই মুহূর্তের গল্পকার বলা যাবে? আমার যদি ভুল না হয়-ইনি তো লিখেছিলেন পৌর্ণমাসী , তারপরে বলাগড়ের নৌকোর কারিগরদের নিয়ে উপন্যাস ( নাম মনে পড়ছে না)- ওঁকে আমার সেই সময়ে সমরেশ বসুর উত্তরাধিকারী মনে হোতো- টানাপোড়েন ইত্যাদি মনে পড়ত-সেই সুব্রত হলে ওঁকে এই মুহূর্তের গল্পকার বলা যাবে কি?
  • সিধু | 141.104.245.196 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০৯:০৭494108
  • সুব্রত মুখো বছর ষাটেক বয়েস। ওই সুনীল দের পরের যুগটায় লিটল ম্যাগ সম্বল এক গুচ্ছ যে নতুন লেখক উঠে এসেছিলেন, ধরুন কিন্নর রায়, স্বপ্নময়, মানব চক্রবর্তী (হায়, কোথায় যে হারিয়ে গেলেন ইনি ঃ( ), ভগীরথ মিশ্র, সাধন চট্টোপাধ্যায়, অভিজিত সেন, এই সুব্রতকেও তাদের-ই সংগে ধরা যায়। তা, এই সময়তেও তো লিখে যাচ্ছেন। ভাল-ই লেখেন। সেজন্য-ই বলেছিলাম আর কি
  • সিধু | 141.104.245.196 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০৯:১৪494109
  • বাই দ্য ওয়ে, ওই নৌকা কারিগরদের নিয়ে লেখা উপন্যাসটা সম্ভবত রক্তের নিচে
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০৯:৩৯494110
  • না না, রক্তের নিচে না । কী যেন নামটা - মধুকর না ওরকম কিছু। আহা - বড় ভালো ।
  • lcm | 34.4.162.218 | ২৯ অক্টোবর ২০১২ ০৯:৪২494112
  • ওহ্‌, ওভার অ্যানালিসিস চলছে। লেখক মানেই সমাজসেবক নন, মেসেঞ্জার ও নন। লেখককে বিপ্লবী, বিদ্রোহী হতে হবে এমন কুনো কথাও নাই। কলোনিয়াল, পোস্ট কলোনিয়াল, সাব-অল্টার্ন, পোস্ট-মডার্ন, রিয়্যালিজ্‌ম... ইত্যাদি জার্গনের বাইরে আর চাট্টে লোকের মতন খেয়ে দেয়ে শুয়ে বসে, টিভি দেখে, সংসার করেও লেখা যায় - ভালো লেখা যায়। লোকে পয়্সা দিয়ে সেই লেখা কিনে পড়ে, রেলিশও করে।

    মোটামুটি বাংলা পড়তে জানলে সুনীলের বাংলা গদ্য পড়ে বোঝা যায় - এবং এটাই সুনীলের বৈশিষ্ট্য। সিম্পল, সিম্পল। সুনীলের গদ্য সিম্প্‌ল। সিমপ্লিসিটি ইস দ্য আলটিমেট উইপেন - সুনীলের মোক্ষম অস্ত্র ছিল ঐটাই। এবং, সিম্পল এক্স্প্রেশন ইজ নট সো সিম্প্‌ল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন