এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ভাগাড়পাড়া স্কুল থেকে বলছি


    অন্যান্য | ২৫ নভেম্বর ২০১২ | ৭৯৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • nina | 79.141.168.137 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১১:১৪576049
  • সত্যি কি নিঁখুত লেখা----
  • | 24.97.164.220 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১৮:০৫576050
  • মীনাদি, আমাদের সেলাই দিদিমণিও মা'র সাথে একই সময় যোগ দিলেন আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসেবে| মেয়েদের স্কুল অথচ ছাত্রীরা তিন তিনটে বছর একটুও সেলাই শিখবে না এই নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি অনেকদিন থেকেই চিন্তিত ছিলেন| তাছাড়া ইংরিজির জন্য অতিরিক্ত অর্থব্যয় করে শিক্ষক নিয়োগ করা হল, কিন্তু সেলাই কিম্বা কর্মশিক্ষা উপেক্ষিত রইল, তাও আবার এমন একটা স্কুলে যেখানকার মেয়েরা পড়াশোনা শিখে দারুণ দিগগজ হয়ে যাবে এমনটা শিক্ষিকারা বা কমিটি কেউই আশা করেন না, বরং হাতের কাজ, সেলাই ফোঁড়াই শিখলেই এইসব মেয়েদের জীবনে বেশী কাজে লাগবে বলে মনে করেন সবাই, তাই একইসাথে মীনাদিও এলেন আমাদের সেলাই শেখাতে| এসেই আমাদের শেখালেন দড়ির পাপোষ বানানো, নাইলন সুতো আর তার দিয়ে ফুল পাতা বানিয়ে তারকাটা বাল্বের চারদিক দিয়ে নানারঙের নাইলন সুতো জড়িয়ে বানানো ফুলদানীর মধ্যে বসিয়ে ঘর সাজানোর জিনিষ| সপ্তাহে দুদিন টিফিনের পর আসতেন স্কুলে, এসেই নির্দিষ্ট ক্লাসে চলে যেতেন, কমনরুমে খুব একটা বসতেন না| একদিন বলেছিলেন উনি ম্যাট্রিক পাশ, তার বেশী পড়াশোনা করেন নি, তায় আংশিক শিক্ষক, তাই অন্য দিদিমণিরা ওঁর সাথে কথা বলতে চান না, বললেও ঠেস দিয়ে দিয়ে কথা বলেন| শুনে আমরা কেউই অবাক হই নি, আমাদের দিদিমণিদের পক্ষে এরকমটাই স্বাভাবিক| এমনিতে সর্বদা হাসিখুশী মীনাদি ক্লাসে কাউকে বকতে পারতেন না, ফলে ক্লাসে প্রচন্ড হই হট্টগোল হত, একদল মেয়ে ওঁর চারদিকে একেবারে ঘিরে ধরে নিজের নিজের কাজ দেখিয়ে নিত, অনেকে বাড়ী থেকে স্কুলের কাজের বাইরের অনেক সেলাই টেলাইও ওঁকে দিয়ে দেখিয়ে নিত| আর আমার মত যারা সেলাই ফোঁড়াইয়ে এক্কেরে ঢ্যাঁড়শ, আমরা কোনওমতে ক্লাসের কাজটুকু সেরেই বেঞ্চের ফাঁক দিয়ে বা ওপর দিয়ে দৌড়ে দৌড়ে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলতাম| এক একসময় এমন হট্টগোল হত যে পাশের ক্লাস থেকে কোনও দিদিমণি এসে আমাদের বকে যেতেন, মীনাদিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে| এরকম দু তিনবার হওয়ার পরে ক্লাসে গোলমাল বেড়ে গেলেই মীনাদি যাকে সামনে পেতেন তাকেই প্রাণপণে খিমচে দিতেন| মুহূর্তে ওঁর চারপাশ ফাঁকা হয়ে যেত, তখন উনি দুই হাত বাড়িয়ে এগিয়ে যেতেন দ্বিতীয় কাউকে খিমচানোর জন্য আর আমরা নতুন খেলা পেয়ে টপাটপ হাইবেঞ্চে উঠে বেঞ্চের ওপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে লাস্ট বেঞ্চের দিকে চলে যেতাম| কেউ কেউ অবশ্য 'কুমির তোর জলকে নেমেছি' স্টাইলে মেঝের ওপর দিয়েও এঁকে বেঁকে দৌড়ে যেত|
  • সে | 203.108.233.65 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১৮:১৭576051
  • এবার একটু হাসা গেল।
  • h | 127.194.250.16 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১৮:৪২576052
  • গুড এইটা আমাদের ও হত। ডিটেল অন্যত্র ঃ-)
  • kiki | 69.93.247.129 | ০৫ মার্চ ২০১৩ ২১:২২576053
  • একি! আর এগোয় নি।ঃ(
  • | 190.215.65.183 | ০৬ মার্চ ২০১৩ ২০:৪২576054
  • অদ্ভুত সুন্দর লেখা দ। পড়তে পড়তে মন টা কেমন হয়ে যায় । এই জন্যেই গুরু তে আসা।
  • DB | 125.187.36.193 | ০৭ মার্চ ২০১৩ ১৫:২২576055
  • এত দেখছি আমাদের বিবেকানন্দ স্কুলেরই অরো এক সংস্করণ !!
  • | 24.97.40.187 | ১০ মার্চ ২০১৩ ১৫:৪৮576056
  • একটু তুলে রাখি। আসছি ........
  • | 24.97.49.73 | ১৪ মার্চ ২০১৩ ২১:৩৪576057
  • ৮)
    পুজো আসবার মাসখানেক আগেই হয়ে গেল সেই স্কুল কমিটির নির্বাচন| তার আগে প্রায় একমাস ধরে সব ছাত্রীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে কিছু লোক বোঝালেন ভোট দেবার প্রয়োজনীয়তা, কমিটি বদলের প্রয়োজনীয়তা; আর সঙ্গে সঙ্গে আরো বললেন স্কুলের নামে ব্যাঙ্কে অনেক টাকা জমা আছে, কুড়ি পঁচিশ লক্ষ, সেই দিয়ে ইচ্ছে করলেই বর্তমান কমিটি স্কুলের নিজস্ব বাড়ী বানাতে পারতেন্, কিন্তু বানান নি| প্রশ্ন তুললেন কেন? কী তাঁদের উদ্দেশ্য? ক্রমশ ভোট এগিয়ে এলে এই প্রশ্নের উত্তরও দিতে লাগলেন তাঁরা; বর্তমান কমিটি এই টাকা স্কুলের নামে যোগাড় করে এখন নিজেরা মেরে দিতে চাইছেন| একলক্ষ টাকাই তখন একটা অসম্ভব কল্পনাতীত জিনিষ ছিল, কুড়ি পঁচিশ লক্ষ তো কেমন একটা গপ্পের বই গপ্পের বই ব্যপার| এই এত্ত এত্ত টাকা থাকা সত্ত্বেও মেয়েদের স্কুলের কোনও বাড়ী নেই, ছেলেদের স্কুলের বাড়ীও অমন আধাখ্যাঁচরা!! ওদিকে কলকাতা থেকে বর্তমান কমিটি মেম্বার হেরম্ববাবু, বঙ্কিমবাবুরা আসেন, গোপালবাবুর সাথে অভিভাবকদের বাড়ী বাড়ী ঘোরেন, বলেন অত টাকা নেই, একলক্ষের কিছু কম আছে, বলেন টাকা খরচ করায় কিছু আইনি জটিলতা আছে, ওঁরা খুব চেষ্টা করছেন সেটুকু কাটাতে| সেসব মিটে গেলেই নতুন বিল্ডিঙের কাজ শুরু হয়ে যাবে| সবাই শোনে চুপ করে মুখে কিছু বলে না, কিন্তু চোখেমুখে অবিশ্বাস ফুটে ওঠে| কাজল, কুমকুম, উমারা ক্লাসে বলে কী করে বিশ্বাস হবে বল্? ওঁরা তো এতদিন আমাদের ডাকেনও নি, কথাও বলেন নি, এখন এসেছেন বলতে! ঠিকই কথা, আমাদের সকলেরই মনে হয় সত্যিই তো গোপালবাবুরা এতদিন কিছু বলেন নি, স্কুলের বাড়ী বানানোর কোনও চেষ্টাও করেন নি কেন? দুই পক্ষই আমাদের বাড়ীতেও আসেন, মা'র সাথে কথা বলতে| দুই পক্ষই মা'কে বলেন 'একটু দেখতে', দুই পক্ষই বলেন 'আপনাকে নতুন করে আর কি বলব? আপনি তো সবই জানেন'| মা চুপ করে থাকে, কাউকেই কিছু বলতে পারে না, এতদিনে যাওবা একটু সুরাহা হয়েছে, সেটাও না চলে যায়!

    ভোট হয়ে যায়, সবকটি আসনে জিতে আসেন তৎকালীন শাসকদলের প্রতিনিধিরা, প্রেসিডেন্ট হন দর্শনানন্দ রায়চৌধুরী, ইনিও যেন কোথাকার অধ্যাপক, তবে কোন্নগরেই থাকেন, কলকাতায় নয়| দিদিমণিদের মধ্যে অদ্ভুত অসন্তোষ, ক্লাসে গোধুলি, উমা, আল্পনা, কল্পনাদের পড়া না পারলেই শুনতে হয় আজেবাজে ভোট দেবার কথা| অথচ আমরা তো ভোট দিই নি, দিয়েছেন আমাদের অভিভাবকরা| আসলে এখন মাসে একদিন করে সমস্ত অভিভাবকদের ডাকা হবে বলে শোনা গেছে, এই ব্যপারটা দিদিমণিরা একদম পছন্দ করছেন না| এদিকে আমরা রোজই ক্লাসে বসে নজর রাখি বাইরের মাঠে স্কুলের বাড়ী তৈরীর কাজ শুরু হল নাকি| কিন্তু সেসব কিছু হবার আগেই হঠাৎই আকাশে মেঘের পরিমাণ খুব বেড়ে গেল, টানা বৃষ্টি চলতে লাগল --- চলতেই লাগল| তা এরকম তো পুজোর আগে হয়ই প্রত্যেকবার, প্রথম তিনদিন কেউ তেমন গ্রাহ্য করে নি, কিন্তু বর্ষার প্রায় শেষ, এইসময় এমনিতেই পুকুর, খাল, নর্দমাগুলো ভরাই থাকে ----- তৃতীয়দিনের দুপুর থেকে এমন মুষলধারে শুরু হল যে সে আর থামাথামি নেই ---- সন্ধ্যের একটু আগে কারেন্ট চলে গেল ---- এদিকে নর্দমা উপচে রাস্তা ছাড়িয়ে জল ক্রমশ দাদুর উঠোনে আর সামনের বাগানে ভরে যেতে লাগল ---- সারা পাড়ায় কারো বাড়ীতেই লাইট নেই --- কোথাও হারিকেন, কোথাও কুপী জ্বলছে ----- শ্রীদুর্গা মিলের নাইট শিফটের লোকেদের জল কেটে কেটে হেঁটে যাওয়ার, সাইকেলের আওয়াজ ----- আমরা খুব খুশী, কাল স্কুলে যেতে হবে না এত জল ভেঙে ------ রাঁচি থেকে দিদার বোন রাঁচিদিদা এসেছে দেবীমাসিকে নিয়ে, কৃষ্ণনগর থেকে ছবিমাসিও এসেছে মা আর দিদির সাথে দেখা করতে ---- এরকম সময় এমন একটা ছুটি! কি আনন্দ! পরেরদিন সকালে যখন ঘুম ভাঙল তখনও বৃষ্টি একইরকম পড়ছে ---- জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়েই চারদিকে শুধু ধুসর জল ---- খুশীর চোটে ভাইকে ঠেলে জাগিয়ে বাইরের বারান্দায় বেরিয়ে দেখি জল একেবারে পোস্তা পর্যন্ত উঠে এসেছে --- বারান্দা থেকে একধাপ সিঁড়ি নেমে বাকী সিঁড়ির দুইপাশে দুই হাতের মত পোস্তা বানানো লাল সিমেন্টের --- ওটুকুই শুধু মুখ ভাসিয়ে ভেসে রয়েছে ---- নীচের লাল সিমেন্টের সিঁড়িগুলো আর দেখা যাচ্ছে না ---- ধুসর জলের একটা সমান স্তর --- শিউলি স্থলপদ্ম গাছগুলোর মাঝামাঝি জায়গা থেকে কিছু ডালপালা জেগে রয়েছে ------ রাস্তা দিয়ে কেউ গেলেই বড় বড় ঢেউ আসছে বাড়ীর মধ্যে ---- আর -- আর ---লাল সিমেন্টের বারান্দায় অগুন্তি মাটি রঙের কেঁচো আর ডিপ মেরুণ রঙের কেন্নো --- জলের থেকে বাঁচার জন্য বাগান থেকে উঠে এসে কিলবিল করে চলে বেড়াচ্ছে|
  • siki | 132.177.73.122 | ১৪ মার্চ ২০১৩ ২১:৫৮576059
  • কোন সাল সেটা?
  • kc | 188.61.96.29 | ১৪ মার্চ ২০১৩ ২২:০৩576060
  • ৭৮
  • pi | 172.129.44.120 | ১৪ মার্চ ২০১৩ ২২:০৭576061
  • ৭৮ হবে নিশ্চয়
  • siki | 132.177.73.122 | ১৪ মার্চ ২০১৩ ২২:০৯576062
  • ও হ্যাঁ, আটাত্তরের বন্যা।
  • | 24.97.49.73 | ১৪ মার্চ ২০১৩ ২২:১১576063
  • হ্যাঁ :-)
  • সে | 203.108.233.65 | ১৫ মার্চ ২০১৩ ১০:৩১576064
  • মোটে এইটুকু?
  • de | 190.149.51.67 | ১৫ মার্চ ২০১৩ ১৬:৫৬576065
  • আরেকটু বেশী করে লেখো দমদি --

    খুব সুন্দর হচ্ছে--
  • sosen | 125.242.215.55 | ১৫ মার্চ ২০১৩ ১৭:১২576066
  • এদ্দিন পর এসে মোটে এক কিস্তি? কিন্তু তাড়া দেব না---
  • | 126.203.141.60 | ১৫ মার্চ ২০১৩ ১৯:৪১576067
  • চলুক চলুক।
  • | 24.97.249.163 | ১৬ মার্চ ২০১৩ ১৮:২৮576068
  • বেলা বেড়ে গেল ঘড়ির ডায়াল বেয়ে, ক্ষিদের মতে ক্ষিদে পেল কিন্তু ঘরে বাইরে আকাশ তেমনি অন্ধকার হয়েই রইল, বৃষ্টি তেমনি একইভাবে পড়তেই লাগল, সঙ্গে শুরু হল জোলো ঠান্ডা হাওয়া, বুড়ির-মা মাসি আজ কাজে আসে নি, এই বারান্দার কোণায় মা আর ঐ বারান্দার কোণায় বড়মামীমা বসে বসে বাসন মেজে নিল| আমি বলেছিলাম হাত বাড়ালেই তো জল, বাসনগুলো ওতেই চুবিয়ে ধুয়ে নিতে, মা বলল নর্দমার জলে তো সব একাকার --- তাই প্রায় কোমর জল ভেঙে কলতলায় গিয়ে জল ধরে আনল, কুয়োল থেকেও তুলে নিল খানিকটা| কুয়োর জল নাকি অনেক বেড়ে গেছে --- আমাদের তো উঠোনে নামতে দিচ্ছে না --- কিন্তু আমি আর ভাই মতলব আঁটতে থাকি দুপুরবেলা সবাই শুয়ে পড়লে নেমে গিয়ে দেখতে হবে কতটা বেড়েছে --- দাদুদের আর আমাদের বাথরুমেও জল উঠে গেছে তাই আমাদের চান বাদ -- বড়রা কুয়োতলায় হাঁটুজল, কোমরজলে দাঁড়িয়ে বালতি করে মাথায় জল ঢেলে চান সেরে নিয়েছে --- আজ খিচুড়ি সাথে কড়কড়ে আলুভাজা, শুকনো লঙ্কা ভাজা আর একটা করে ডিমের অমলেট --- মা কী দিয়ে খাবে? আলুভাজা, শুকনোলঙ্কাভাজা আর কালকের আলুপোস্ত দিয়ে খিচুড়ি খেল মা --- বাবলাকাকুদের মস্ত আমগাছটা থেকে আজ পাখীগুলো বেরোয় নি --- ভাই বলে সব নাকি ডালের ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে আছে ---- কাকগুলো কিন্তু ঝুপ্পুস ভিজে ওড়াউড়ি করছে আর কা কা করে চেঁচাচ্ছে -- অত ভিজে ওদের ডাকেও কেমন যেন ড্যাম্প লেগে গেছে --- শ্রীদুর্গা মিলে আজ লোকজন বিশেষ যায় নি --- ভোরের শিফটে যাও বা কিছু লোক গেছিল দুপুরের শিফটে তো প্রায় কেউ না --- রাস্তা তাই ফাঁকাই প্রায় --- আমাদের বাড়ীর ঠিক পেছনেই করবীদের বাড়ী উঠোনে, একতলার ঘরেও জল ঢুকে গেছে -- ওরা সব জিনিষপত্র খাটের ওপরে তুলে দোতলার ঘরে যায় -- রান্নাঘরেও জল ঢুকে উনুন ডুবিয়েছে --- কাকীমা কাকে যেন বলেন উনুনটা গেল আর ওতে রান্না করা যাবে না --- ওদের বাড়ীতে অনেক লোক, প্রায় ষোল সতেরো জন -- সবাইমিলে দোতলায় আঁটবে কী করে কে জানে! কাকীমা আর জ্যেঠিমা মানে মধুকাকুর মা ওপরের বারান্দায় স্টোভ জ্বেলে রান্না করে --- হাওয়ার ঝাপটে, জলের ছাটে স্টোভ নিভে যেতে চায় -- এদিকে মধুকাকু একটা নীল রঙের বড় প্লাস্টিকের চাদর দিয়ে আর ওদিকে কল্যাণ আর বাসু চটের ত্রিপল ধরে আড়াল করে --- করবীদের পাশে সানাইদাদের বাড়ীতেও জল উঠেছে ঘরে -- শান্তিকাকু, করবীর বাবা ওপরের বারান্দা থেকে কাকে যেন বলেন আরও পেছনের খগেন দত্ত, ললিত দাস সক্কলের বাড়ীতেই ঘরে জল উঠে গেছে --- খাওয়াদাওয়ার পর বাইরের বারান্দায় গিয়ে আমি আর ভাই ঝাঁটার কাঠি দিয়ে কেঁচো আর কেন্নোগুলোকে ধরে ধরে জলে ফেলতে থাকি ---- ওরা খুব চেষ্টা করে আমাদের কাঠির আওতা থেকে পালাতে --- কিন্তু আমার দুজনে দুদিক থেকে ধরে বারান্দা খালি করে ক্যারমবোর্ড বের করে খেলতে বসি ---- ভাই তো দুধভাত, আমি আর দাদু ক্যারম খেলি --- দিদার ঘরে ধৌকির ওপরে দিব্বি গল্পের আসর বসেছে দেইদা, রাঁচিদিদা, মা, বড়মামীমা, দেবীমাসি, ছবিমাসি এমনকি ছোটদিও| আমি গেলেই বকা দিয়ে বলবে 'বড়দের কথার মধ্যে এসেছ কেন? যাও পড়তে বোসো গিয়ে'| এমন বোকা এরা --- আরে কারেন্ট নেই কিছু না, আকাশও একদম কালো মিশমিশে, এই অন্ধকারে পড়া যায় নাকি? তাহলে তো আমি 'ভোম্বোল সর্দার'টাই শেষ করে ফেলতাম| ছয় বোর্ড খেলার পর দাদু আর খেলতে চায় না --- আমি একটা বই মুখের সামনে ধরে দিদার ঘরের দরজার দিকের জানলার পাশে বসি --- এখানে বসে ওঘরের কথা সব শোনা যাচ্ছে --- দেবীমাসি, ছবিমাসি ওদের অফিসের গল্প করছে ---- রাঁচিদিদা বলছে বাংলাদেশ থেকে চলে আসার কথা --- দেবীমাসিদের বাবা, অ্যাল! উনি আমার দাদু হন, ঐ দাদুকে নাকি মুসলমানরা কেটে ফেলেছিল --- মুসলমান কারা? দাদু বলেছে আরেকটু বড় হলে বুঝতে পারব ---- সেজমামা বলেছে বই এনে দেবে, পড়লেই জেনে যাব ----জিজি বলেছে ওদের বলে নেড়ে, ওদের ধারে কাছে যেতে নেই --- বাংলাদেশ থেকে আসার সময়, তার পরেও রাঁচিদিদাদের হাতে নাকি একটুও পয়সা ছিল না -- খুব কষ্ট করে, অন্যদের থেকে সাহায্য নিয়ে নিয়ে চালিয়েছে যতদিন না দেবীমাসি চাকরি পায়, পিনুমামা চাকরি পায় --- তারপর ছবিমাসি চাকরি পেয়েছে, তখন পিনুমামা আস্তে আস্তে প্রস্তুতি নিয়ে ম্যাট্রিক দিয়েছে --- রুবীমাসি বি এ পাশ করে চাকরি পেয়েছে --- এখন ওরা সবাই মিলে চাইছে চিনুমামা যেন অনেক পড়াশোনা করে, ইঞ্জিনিয়ার হয় --- রাঁচিদিদা খুব ফর্সা, মোটাসোটা, সাদা ধবধবে থান পরা, আস্তে আস্তে কথা বলে --- সেই রাঁচিদিদা হঠাৎ বেশ জোরে কেঁদে ওঠে ---- মা'রা সবাই চুপ করে যায় --- শুধু দিদা বলতে থাকে 'কান্দিস না, সুবর্ণ, এই সুবর্ণ, কান্দিস না রে, কপালে যা আছে হেইডাই হইব| হয়ত এই সব ভাসিয়ে দেওয়া বৃষ্টির জন্যই রাঁচিদিদার মনে পড়ে গেছে নিজের সব্টুকু সম্বল ভেসে যাওয়ার দিনগুলো -- কি জানি!
  • | 24.97.249.163 | ১৬ মার্চ ২০১৩ ১৮:৩১576070
  • *চৌকি
    দিদা
  • sosen | 125.241.108.203 | ১৬ মার্চ ২০১৩ ১৮:৪১576071
  • জলের স্রোতের মতই লাগলো--সব ধুয়ে দেওয়া!
  • | 24.97.217.249 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ১৮:১৬576072
  • আরও তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলল, কখনও একটু কমে গুঁড়িগুঁড়ি হয়, কখনও বাড়ে| তিনদিন কারেন্ট রইল না, শ্রীদুর্গা মিলে কাজ হল না, ভোঁ বাজল না, তিনদিন প্রায় কেউ কোনও স্কুলে, কাজে কোত্থাও গেল না, দোকানপাটও খুলল না তেমন| কুশলদা, সন্টিদা, সুকুমারদারা গিয়ে কোথায় যেন নর্দমার মুখ খুঁচিয়ে দিয়ে এল, যাতে জল একটু নেমে যেতে পারে --- তাতে জল একটু কমলও, কিন্তু তাও হাঁটুজল রয়েই গেল রাস্তায়, উঠোনে, আর রয়ে গেল অনেকের বাড়ীর ঘরে| দ্বিতীয়দিন সকালে ঐ ধুম বৃষ্টি মাথায় করে মা গেল স্কুলে ---- বেলা আটটা নাগাদ ফিরে এল একদম স্নান করে --- স্কুলের বারান্দায় নাকি দক্ষিণপাড়ার অনেক লোক এসে পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে থাকছে -- ওদের ঘর একদম ডুবে গেছে --- কোনও ঘর খোলা নেই -- মা আবার গোপালবাবুর বাড়ী গেছিল জানতে ---- উনি বলেছেন এত লোক ঘরবাড়ী হারিয়ে এসেছে, নীচের ক্লাস টেন আর ক্লাস সিক্সের ঘরদুটোর বেঞ্চি সরিয়ে ঘর দুটো ওদের খুলে দেবার চেষ্টা করছেন --- দর্শনবাবু নিয়মিত দুইবার খিচুড়ি দেবার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছেন ---- জল না নামলে স্কুল খোলার কথা ভাবাও সম্ভব নয়| ক্রাইপার রোডের খানিকটা জায়গায় জল নেই, সেখানে কয়েকটা দোকান বসেছে --- মা কিছু আলু পেঁয়াজ, আদা, লঙ্কা নিয়ে এসেছে| সুকুমারদারা কলাগাছ কেটে কেটে একটা ভেলা বানিয়ে তাতে চড়ে ঘুরে ঘুরে সবার খবর নিচ্ছে --- সানাইদাদের বাড়ীর লাইনে অনেক বাড়ীতেই নাকি চালডাল ফুরিয়ে গেছে --- ওরা কিছু এনে দেয় --- সবচেয়ে মুশকিল যেগুলো একতলা বাড়ী তাদের ---- ঘরে জল উঠে যাওয়ায় সেখানে থাকা প্রায় অসম্ভব অথচ সরে যাবার জায়গাও নেই -- কোথা থেকে যেন খিচুড়ি রান্না করে এনে সুকুমারদারা ঐসব বাড়ীতে দিয়ে আসে ---- বীরেন শা'য়ের বাড়ীর দুইঘর ভাড়াটে নাকি গিয়ে সাতুদের দোতলায় উঠেছে --- এদিকে দাদুদের গোয়ালঘরেও ভালই জল উঠেছে --- প্রথমদিন তো লালি আর আকাইম্যা সারাদিনরাত দাঁড়িয়ে রইল --- পরেরদিন ভোররাতে লালি কেমন অদ্ভুতভাবে ডাকতে লাগল ---- তখন দাদু গিয়ে ওদের দড়ি ধরে এনে দাদুদের দিকের ভেতরের বারান্দায় তুলল --- সে বেচারাদের কি ভয় সিঁড়ি দিয়ে উঠতে ---- আর্ধেক সিঁড়ি তো জলে ডোবা, তড়বড় করে আসতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে আকাইম্যা একেবারে দাঁড়িয়ে গেল শক্ত হয়ে, কিছুতেই নড়েচড়ে না| দাদু শেষে ওকে পাঁজাকোলা করে বারান্দায় তুলে দিল ---- লালি বেচারীর শিগগিরই বাছুর হবে, পেটটা ফুলে একেবারে ঝুলে গেছে, প্রায় মাটি ছুঁইছুঁই -- খুব কষ্ট করে বারান্দায় উঠল ---- বারান্দার কোণায় ছোট গামলা করে ওদের জাবনা দেবার ব্যবস্থা হল --- লালি উঠেই সেই যে বসে পড়ল, সারাদিনে আর উঠে দাঁড়াল না ---- শেষে দাদু আর দিদা সন্ধ্যের আগে অনেকক্ষণ ধরে ছোবড়ার আগুন জ্বালিয়ে লালিকে সেঁক দেওয়ার পরে বেচারী একটু ধাতস্থ হয়ে জাবনায় মুখ দেয়| পরেরদিনটাও লালিরা বারান্দায়ই রইল, তার পরের দিন জল অনেক নেমে গেল; উঠোনে আধহাঁটু, গোয়ালে গোড়ালি ভেজে কি ভেজে না ----- লালি আর আকাইম্যা আবার গোয়ালে ফেরত গেল ---- বারান্দায় দুই বোতল ফিনাইল ঢেলে ধোয়া শুরু করল বড়মামীমা --- লালির জন্য গোয়ালে একটা ভাঙা দরজা পেতে দেওয়া হল| পাড়া থেকে কারা যেন জিটিরোডে গিয়ে ইলেকট্রিক অফিসে খবর দিয়ে এল ---- এইবার শুরু হল উঠোনে মাছের আনাগোণা --- এদিকে শ্রীপল্লীর মাঠের পেছনের অংশের পুইকুরটা ভেসেছে -- ওদিকে শ্রীদুর্গা মিলের পুকুর --- এই শিউলি গাছের গোড়া বাটামাছের ঝাঁক তো নারকেল গাছের গোড়ায় কইমাছ কানে হাঁটছে --- বাবু, সুবীর, রতন, বুম্বারা ছেঁড়া মশারি, গামছা আর মাটির হাঁড়ি নিয়ে হইহই করে সারাপাড়া জুড়ে মাছ ধরে বেড়াচ্ছে --- বুড়ীর মা মাসি আজ কাজে এসেছে --- পেয়ারাগাছের সামনে থেকে খপ করে একটা মাঝারি সাইজের শোল্মাছ ধরে ফেলল --- বড়মামীমা মাছ কাটতে কাটতে মা'কে বলে 'কালিয়া করব, ওদের জন্য দেব, আগেভাগেই ওদের ভাত খাইয়ে দিস না দিদি' --- ভাই মুখ বেজার করে, ও মাছ খেতে একদম ভালবাসে না ---- ছবিমাসি দিদাকে বলে 'মাসিমা আফনে রান্ধেন, আফনের রান্ধা কালিয়ার সয়াদ মুহঅ লাইগ্যা থাহে' --- দিদা হাসিহাসিমুখে বলে 'হ বৌমা তুমি অন্যটি দেহ, মাছটা আমি দেখ্তাসি'|
  • | 24.97.217.249 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ২০:২৯576073
  • কারেন্ট এল সাড়ে চারদিন পরে, অনেক জায়গায় পোস্ট উপড়ে গেছে, তার ছিঁড়ে গেছে, সেসব ঠিক করতে অনেক সময় লাগে| কারেন্ট আসার পর ঘরের আলোগুলো কেমন অদ্ভুত কটকটে লাগে, মনে হয় বড্ড চোখে লাগছে, কেমন যেন হারিকেন আর কুপিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম| ট্রেনের আওয়াজ একটু একটু শোনা যায়, নাকি কারশেডে এখনও অনেক জল তাই হাওড়া পর্যন্ত যাচ্ছে না, কয়েকটা বালি অবধি কয়েকটা লিলুয়া অবধি যাচ্ছে| ছবিমাসি তাড়াতাড়ি চলে যায়, কৃষ্ণনগর থেকে একদিনের জন্য এসে আটকে গিয়েছিল বন্যার জন্য, সরকারী চাকরি, অমন না বলেকয়ে অত ছুটি নেওয়া যায় না তাতে| জল কিন্তু পুরোটা নামল না দশদিনেও| রোজ বিকেলে বেড়ে যায় আবার সকালের দিকে অনেকটা নেমে যায়| গঙ্গার জল বাঘখাল দিয়ে ঢুকে নর্দমা দিয়ে চলে আসছে, বাড়িয়ে দিচ্ছে জমে থাকা জলের লেভেল| আর চারদিকে কি ভয়ংকর আঁশটে গন্ধ| অরূপদা, সুকুমারদারা পঞ্চুর দোকান থেকে ব্লিচিং পাউডার কিনে এনে পাড়াময় ছড়ায়| বিকেলবেলা আবার জল বেড়ে উঠে ব্লিচিং ভাসিয়ে নিয়ে যায়| দাদুর ঘরের মস্ত রেডিওতে শুনি দামোদর জল ছাড়ছে --- দাদু, বড়মামা, ছোটমামা আবার চিন্তিত হয়ে পড়ে| কিন্তু দামোদরের জল কী করে কোন্নগর অবধি আসবে? আমি চন্ডীচরণ দাশের মস্ত ম্যাপবই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ম্যাপ খুলে বোঝার চেষ্টা করি| রাঁচিদিদা তাই দেখে বলে 'কী খুঁজস?' আমি বলি কী খুঁজছি, ত্খন বলে 'বই দেইখ্যা বুঝবি না রে ছেমড়ি, নদীনালা হইল গিয়া মাটিমায়ের পোলাপান| অগো সব মাটির ভিৎরে ভিৎরে যুগাযুগ থাহে, উফর থাইক্যা বুঝবি না|' হবেও বা, কে জানে! সত্যিই সেদিন জল খুব বাড়ে, আবার উঠোনে ঢুকে পড়ে| শিউলি গাছগুলো মরে গেল, স্থলপদ্মদুটোও| শুকিয়ে দড়িমত হয়ে গেল| আরও কত কি সব গাছ যেন মরে গেল| এমনি করে কতদিন কেটে গেল, আমি এখনও স্কুলে যাই না, স্কুলে নাকি এখনও অনেক লোক, মা অবশ্য যায় রোজ, একটা কমনরুম খোলা হয়, হাই, জুনিয়ার হাই, প্রাইমারী মিলিয়ে সব দিদিমণি ওখানেই বসেন তিনঘন্টা, তারপর ঘর ভাল করে বন্ধ করে চলে যান| রেডিওতে শুনতে পাই কত লোক মারা গেছে, ভেসে চলে গেছে, বাড়ীঘর ভেঙেচুরে ভেসে গেছে| কেমন দমবন্ধ লাগে, ভয় ভয় লাগে, কেমন যেন কান্না কান্না পায় -- এমনি করেই মহালয়া চলে গেল ---- ভোর চারটেয় দাদু রেডিও চালিয়ে দিয়েছিল --- কে শুনল কিজানি, আমি তো ঘুমোলাম| মহালয়ারও কদিন পরে একদিন বিকেলবেলা দিদা আমার চুলে বেড়াবিনুনী বেঁধে দিচ্ছিল, বাঁদিকের বিনুনীটা বাঁধা হয়ে গেছে, ডানদিকেরটা আধখানার একটু বেশী --- সেইসময় দেখি রাস্তা থেকে শিবানী আমার নাম ধরে ডাকছে --- আমি তো অবাক, ওদের বাড়ী তো নাকি অনেকদূর, ও এলো কী করে? কেন? ও রাস্তা থেকেই চীৎকার করে বলে ওরা আমাদের স্কুলে আমাদের ক্লাসরুমটাতেই ছিল, আজকে বাড়ী গেছে, বাড়ী খুব নোংরা -- এতদিন পরে বাড়ী যেতে পেরে ওর মনে খুব আনন্দ হয়েছে, তাই ওর বোন সরস্বতীকে নিয়ে বেড়াতে বেরিয়েছে| আমাকে বলে 'বাইরে আয়, কত গল্প জমে রয়েছে'| আমিও এতদিন একটাও বন্ধুর মুখ দেখিনি, খুশীতে লাফিয়ে উঠে বেরোতে যেতেই চুলে হ্যাঁচকা টান লাগে, আমি বলি 'ছেড়ে দাও বাকীটুকু আমি বেঁধে নিতে পারব'| দিদার গন্ভীর গলা 'চুপ কইর‍্যা ব, একদম উঠন লাগব না', গলা চড়িয়ে শিবানীকে বলে 'ও এখন যাইব না, তুমি যাও গিয়া' আগাগোড়া আমার চুল শক্ত করে চেপে ধরে রাখে| শিবানী কেমন অবাক হয়ে যায়, অল্প একটু দাঁড়িয়েই হঠাৎ শুভ্রাদের বাড়ীর গলির দিকে দৌড়ে চলে যায়, সরস্বতীও পেছন পেছন দৌড়োয়| দিদা বিড়বিড় করতে থাকে, 'কোত্থাইক্যা আসে যত চুডুলোকের পোলাপান' --- বিনুনী দুটো মাথার পেছন দিয়ে আড়াআড়ি করে কানের পাশ দিয়ে তুলে মাথার চাঁদিতে একটা ফুল বেঁধে ছেড়ে দেয় আমাকে| অদ্ভুত লাগে আমার -- কান্না কান্না পাচ্ছে --- পাছে কেউ দেখে ফেলে তাই তাড়াতাড়ি বাথরুমে চলে যাই --- চোখ দিয়ে কিন্তু জল বেরোয় না -- মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে 'বুড়ী হারামি' ---- কোথায় যেন শুনেছিলাম কথাটা? আমার মত সাইজের একটা ছেলে বলছিল চীৎকার কাকে যেন --- সে কি মেথরপট্টিতে --- নাকি সূর্য সেন স্ট্রীটে? আমি চৌবাচ্চার জলে মগ দিয়ে ঝপাস ঝপাস করে বাড়ি মারতে থাকি --- জল ছিটতে থাকে চারপাশে --- আমার চোখমুখ ভিজে যায় --- তবু থামি না --- ফ্রক ভিজে যায় --- তবু থামি না--- বাইরে কাদের যেন গলার আওয়াজ --- তবু থামি না ---- সমানে মগ আছড়াতে থাকি জলের ওপরে আর দাঁত কিড়মিড় করে বলতে থাকি বুড়ী হারামি --- বুড়ী হারামি --- বুড়ী হারামি ---
  • Abhyu | 85.137.8.86 | ১৯ মার্চ ২০১৩ ২১:২৩576074
  • তারপর?
  • siki | 132.177.4.113 | ১৯ মার্চ ২০১৩ ২১:৩৪576075
  • তারপর?
  • mila | 212.21.158.14 | ২০ মার্চ ২০১৩ ১০:৫৮576076
  • তারপর?
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ২০ মার্চ ২০১৩ ১২:১৪576077
  • তারপরে??????
  • kumu | 132.176.32.39 | ২০ মার্চ ২০১৩ ১২:৩৩576078
  • কিশোরী মনের অক্ষম রাগের প্রকাশ -এমন তীব্র ফুটিয়েছে দ,যে পড়ার পর পাঠিকার মনেও রাগ হয়।
    ছোট্ট বাক্যদের ড্যাস দিয়ে জুড়ে জুড়ে সুন্দর চিত্রকল্প তৈরী হচ্ছে।
    হ্যাঁ,তারপর?????????
  • titas | 127.194.203.157 | ২৬ মার্চ ২০১৩ ২২:০০576079
  • যাহ এখনো সেখানেই থেমে!
  • | 24.97.112.7 | ২৬ মার্চ ২০১৩ ২২:১১576081
  • হ্যাঁ হ্যাঁ এই সপ্তায় অনেক ছুটি আছে। :-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন