এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ভাগাড়পাড়া স্কুল থেকে বলছি


    অন্যান্য | ২৫ নভেম্বর ২০১২ | ৭৯৫৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 24.96.175.192 | ২১ জুন ২০১৩ ০৮:১৪576149
  • আর লিখতে ইচ্ছে করছে না যে।
  • nina | 78.34.162.175 | ২২ জুন ২০১৩ ০৪:১১576150
  • সব্বোনাশ!! গাছে তুলে দিয়ে মই কেড়ে নিওনা প্লিজ------আরও রেসিপি ভেবে ভেবে জানাব---লিখতে থাক লক্ষী মেয়ে----
  • | 24.97.207.118 | ২৩ জুন ২০১৩ ১৮:৫০576151
  • ১২)
    অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস শুরু হতে হতেই দুজন নতুন বন্ধু পেয়ে গেলাম, আমাদের পাড়ায় দুজন নতুন মেয়ে এসে গতবছর থেকে ভর্তি হয়েছে আমাদের স্কুলে| গায়ত্রী আর মনস্বিতা, গাতু আর মনাই| গাতু এসেছে বাংলাদেশ থেকে, ওর বাবা মা এখনও ওখানেই থাকেন, বড় মেয়ে সেখানে দূরে স্কুলে গিয়ে পড়া অসুবিধের তাই ও এখানে মামাবাড়ীতে থেকে পড়বে, রাণুকাকু জয়ীকাকীমা ওর মামা-মামী| জয়ীকাকীমাকে পাড়ার বয়স্ক লোকজন বেশ অপছন্দ করেন 'ঝি চাকরদের মাথায় তোলার জন্য'| মুন্নি, বেবী আর ওদের মা পাড়ার বারোটা পরিবারের ঘরমোছা, বাসন মাজা, কাপড়কাচা সামলায়, সেই বেবী মুন্নিকে জয়ীকাকীমা লেখাপড়া শেখায়, সেলাই শেখায়, টেডি বেয়ার বানানো শেখায় আর এই শেখানোর সময় বেবী মুন্নি কাকীমার খাটেই কাকীমার দুপাশে বসে, কাকীমার ছেলে গুড্ডুর সাথে তিনজনে একসাথে খেলে, এটা আবার পর্দাতোলা জানলা দিয়ে দিব্বি দেখাও যায়| তো, গাতু এসে অষ্টম শ্রেণীতেই ভর্তি হয়েছিল আগের বছর, এইবারে নাইনে উঠে গেছে| সকালে তৈরী হয়ে আমি গাতুদের বারান্দার সামনে গিয়ে ডাক দিই, বেশীরভাগ দিন গাতু তৈরী হয়ে বসে থাকে, মনাই এলে আমরা রওনা দিই| মনাই এসেছে আসাম থেকে, ক্লাস সেভেন অবধি সেখানেই পড়াশুনো, তারপর ওর পিসেমশাই চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর ওরা এখানে চলে এসেছে| মনাই নাইনে উঠতে পারে নি, আমাদের সাথে এইটেই পড়ে, মনাই ভারী লম্বা, আমাদের থেকে অনেকটা উঁচু মাথায়, রোগা পাতলা, মুখটা খুব মিষ্টি| গাতুও বেশ ভাল দেখতে, তবে একটু গোলগালমত আর অত লম্বাও নয়| বাইরে থেকে এসেছে বলেই হয়ত এরা দুজনেই খুব পরিপাটী হয়ে স্কুলে যায়, বালিকা শিক্ষা সদনে তো সাধারণত অত পরিপাটী হয়ে কেউ যায় না| আমরা তিনজনে হেঁটে হেঁটে মেটেপুকুর অবধি পৌঁছলে অনেকদিনই মিতালী চৈতালী আর শীলাবল, ছবিবল আমাদের সঙ্গে চলে, মস্ত একটা দল হয়ে আমরা গল্প করতে করতে, রাস্তায় পড়ে থাকা খালি ডাবের খোলা পা দিয়ে ঠেলতে ঠেলতে ভাগাড় পেরিয়ে স্কুলে যাই, স্কুলের বাড়ী তৈরী হয় নি, হওয়ার কোনও উদ্যোগও কোথাও দেখিশুনি না| রীমার দিদি মিতাদি গতবারে মাধ্যমিক পাশ করেছে প্রথম ডিভিশানে, ১১ বছর বাদে এই স্কুল থেকে একজন প্রথম ডিভিশান পেল, দিদিমণিরা রীমাকে রোজ পইপই করে বলেন ও যেন দিদির মত হয়| তবে এইবছর আরও অনেক ভাল রেজাল্ট হওয়ার সম্ভাবনা, তিনজন দিদিমণির মেয়ে এবারে পরীক্ষা দেবে| সুচন্দ্রাদি, হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের পদ্মাদিদিমণির মেয়ে, শ্রীপর্ণাদি, হাইস্কুলের প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের শৈলদিদিমণির মেয়ে আর রুণাদি, মেয়েদের প্রাইমারি সেকশানের অনুরেখাদির মেয়ে| সেই পঞ্চম শ্রেণী থেকে এরা যথাক্রমে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়ে চলেছে| মা'র কাছে শুনি সুচন্দ্রাদি নাকি খুবই ভাল পড়াশোনায়, হাইস্কুলের দিদিমণিরা নাকি তটস্থ হয়ে থাকেন ওর প্রশ্নের ভয়ে| খুব অবাক লাগে, দিদিমণিরা তো প্রশ্ন শুনলে হয় উত্তর বুঝিয়ে দেন্, নয়ত রেগে যান| তাহলে? চৈতালী বলে পদ্মাদিদিমণিকে নাকি সবাই একটু ভয় পায়, অথচ উনি কাউকে মারেন নি কোনওদিন, বকেনও না, এমনকি অমন যে মণীষাদি তিনিও নাকি পদ্মাদিকে সমীহ করে চলেন| আরও জানতে পারি পদ্মাদি নাকি বটানিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম আর তাইজন্য গোপালবাবু ওঁকে খুব ভালবাসেন, এখনকার সেক্রেটারি দর্শনবাবুও| এতদিন মা বকে মেরেও যেটা বোঝাতে পারে নি, সেইটা এবারে ঝট করে বুঝে যাই, পরীক্ষার ভালফলই হচ্ছে সেই যাদুদন্ড যা সব্বাইকে চুপ করিয়ে দেয়|
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ২৪ জুন ২০১৩ ১০:৩৪576152
  • এতদিন পরে এসে এইটুকু !!!!!!!!!!!!!!!!!! ও দমুদি আর লিখবা না ?
  • ভাটিয়ালির পাতা থেকে | 132.167.68.103 | ২৫ জুন ২০১৩ ১২:৪৬576153
  • name: phutki mail: country:

    IP Address : 131.241.146.122 (*) Date:25 Jun 2013 -- 11:37 AM

    আর দমদি। তোমাকে একটা কথা লেখার ছিল। তুমি যবে থেকে ভাগারপাড়ার টই টা লিখছ, খালি আমার মনে হত , কেন লিখছ। না লিখলেও তো চলে। পড়তে গিয়ে এমন লাগছে তো কলম বেয়ে শব্দ গুলো নামাতে তোমার কেমন লাগছে ঠিক বুঝে পেতাম না। সেদিন দেখলাম লিখেছ যে তোমার আর ইচ্ছে করছে না। তুমি যদি আর নাই লেখো তো এই একটা লেখা অসম্পূর্ণ পড়েছি বলে আমার মনে কোনো খচখচানি থাকবে না। আমি বলব যে, তোমার ইচ্ছে না হলে লিখো না।

    name: দ mail: country:

    IP Address : 24.97.55.128 (*) Date:25 Jun 2013 -- 12:30 PM

    ফুটকি,
    না না শেষ করে ফেলব। অন্য অন্য সব এরকম মেয়েরা, ফেসবুকে যাদের স্কুলের বন্ধু খুঁজে পাওয়া যায় না, নাহলে জানবে না তো জীবন মানে এগিয়ে চলার গল্প, কক্ষণো হারতে নেই।
    ঃ-)
  • | 24.97.207.114 | ০৬ জুলাই ২০১৩ ১৯:২৬576154
  • সঞ্চুদা বাড়ী ফিরে আসবার আগেই রমণীদাদু মারা গেছেন, রমণীদিদা সকালবেলা ওদের জানলা দিয়ে রুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলেন আর পাড়ার কুকুরগুলো মারামারি করে খায়| স্কুলে যাওয়ার আগে মনাই সঞ্চুদাদের বাড়ীর উল্টোদিকে প্রবোধদাদুদের বাড়ীর গায়ের টাইমকলে থেকে বালতি করে জল ভরে নিয়ে যায় রূপুর সাথে| রূপু নাকি ওর 'বেস্ট ফ্রেন্ড'| স্কুলে যাওয়ার সময় মনাই বলে ডানকুনিতে ওর 'বেস্ট ফ্রেন্ড' ছিল পাপু, তার সাথেই সব গল্প করত ও, আসামে ওর বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল নীতি, ওরা একসাথে স্কুলে যেত, আসত, অনেক অনেক গল্প করত| আমাকে জিগ্যেস করে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কে? আমি উল্টে জিগ্যেস করি ইংরিজি করে বলিস কেন রে? তাতে লজ্জা পেয়ে চুপ করে যায় মনাই| ওর গল্প শুনতে শুনতে মনে হয় ইশ একজন প্রিয়বন্ধু না থাকলে তো জীবনই বৃথা| এদিকে আমার তো একজনও প্রিয়বন্ধু নেই, খুব ইচ্ছে করে ওকে আমার প্রিয়বন্ধু হতে বলতে| কিন্তু দূর তাই কি বলা যায়? ভারী লজ্জা করবে তো| গাতু খালি মুচকি মুচকি হাসে, কিছু বলে না, আমি জানি গাতুর প্রিয়বন্ধু হল টোটোন| টোটোন অবশ্য হিন্দু গার্লসে পড়ে, আগে ছোটদির সাথে স্কুলে যেত বুড়ীর্-মা মাসির সাথে, এখন একা একা যায়| রূপুরা চারবোন, বীরেন শা'য়ের বাড়ী ভাড়া থাকে| বীরেন শা'য়ের বাড়ীটা বেশ মজার, একটা উঠোনমত জয়গার চারদিকে অনেকগুলো ঘর, সবগুলো ঘরে আলাদা আলাদা পরিবার, দিতলায় বীরেন শা'য়েরা থাকে| বীরেন শা'কে পাড়ার ছোট ব্ড়্ সবাই পুরো নামধরেই বলে, কাউকে কক্ষণো জেঠু, কাকু, দাদাবলতে শুনি নি| বীরেন শা নাকি মাতাল, রোজ সন্ধ্যেবেলা কোথায় যেন মদ খেতে যায়, আর আমরা সবাই জানি মদখাওয়া মানুষরা খুব খারাপ লোক হয়| বীরেন শা'কে দেখতেও বেশ মজাদার; মাঝারি উচ্চতার লোকটির আগে আগে চলে তাঁর মস্ত ভুঁড়ি, আর দেখেই বোঝা যায় সে ভুঁড়ি একদম শক্ত সলিড ভুঁড়ি, খোঁচা দিলেও এতটুকু টসকাবে না| দুপুর বারোটা নাগাদ বীরেন শা একটা গামছা পরে আরেকটা গামছা কাঁধে নিয়ে হিউম পাইপের পুকুরে চান করতে যান, আধঘন্টা বাদে একটি ভেজা গামছা পরনে ও অপরটি মাথায় বেঁধে ফিরে আসেন| ওঁদের বাড়ীতে কোনওরকম জলের ব্যবস্থা নেই, ফলে বাড়ীওয়ালা ও ভাড়াটেদের সকলেই রাস্তার কলে স্নান সারেন ও পানীয় জল ভরে নিয়ে যান| পাশের বাড়ীর মুখার্জীদাদুর ভাষায় এই বীরেন শায়ের গুষ্ঠির লাইগ্যা কুনও কল থেইক্যা একফোঁটা জল পাওনের কুনও আশা নাই, হ্যারায় কলডিরে অ্যাক্কেরে জুইড়্যা থাহে| মুখার্জীদাদুও সাংঘাতিক মোটা আর তেমনি মোটা মুখার্জীদিদা| ওঁরা দুজনে একসাথে কোথাও গেলে রিকশায় ওঠার সময় ভারী মজা হয়, দুজনে কিছুতেই একসঙ্গে রিকশার খোলে আঁটে না, একজন বসে গেলে অন্যজর আর বসতে পারে না, এদিকে ওঁরা দুটো আলাদা রিকশায়ও যাবেন না, দুজনে মিলে বারবার এগিয়ে পিছিয়ে অনেক কসরৎ করে শেষে কোনমতে ফিট করে গেলেই কমলকাকু রিকশাওয়ালাকে তাগাদা দেয় এগোনর জন্য|

    কমলকাকু, শ্যামলকাকুরা পাড়ার সমস্ত ব্যপারে সবচেয়ে আগে থাকে| সেই গতবছর যখন মিঠু বুম্বার জেঠিমা মাঝে মাঝেই চীৎকার করে কাঁদত আর ওদের বাড়ী থেকে ভীষণ জোরে মারার আওয়াজ ভেসে আসত আর আর সবাই বাড়ীর সামনে বেরিয়ে উঁকিঝুঁকি মারত আর চিন্তিত মুখে আলাপ অলোচনা করত, তখন একদিন কমলকাকু, শ্যামলকাকু, সুকুমারদারা গিয়ে ওদের গেট খুলে জোর করে ভেতরে ঢুকে পড়ে দেখে যে বুম্বার জ্যাঠা বুম্বার জেঠিকে একটা বেল্ট দিয়ে সমানে মারছে আর বুম্বার মা রান্নাঘরে রান্না করছে, মিঠু পড়ার বই নিয়ে বসে আছে| কমলকাকুরা তারপর বুম্বার জেঠিকে ছাড়িয়ে দেয় ওর জ্যাঠার হাত থেকে, ওর জ্যাঠা চীৎকার ক্রে গালি দিতেই কমলকাকু আরো জোরে চীৎকার করে গালি দেয় আর শ্যামলকাকু চুপচাপ গিয়ে ওর জ্যাঠার হাতটা মুচড়ে ধরে| আর কিছু বলতে হয় নি, ওর জ্যাঠা ঘরে ঢুকে যেতে যেতে জেঠিকে বাড়ী ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলে| কমলকাকু গর্জন করে বলে উনি কোত্থাও যাবেন না, আর একটাও এদিক ওদিক হলে রেললাইনের পাশের পুকুরে আপনাকেপাওয়া যাবে এই বলে গেলাম| এরপরে পাড়ায় মিটিং হয় সব বড়দের নিয়ে| জ্ঞানদাদু, তারাপদজেঠু, বড়মামা এরা খুব আপত্তি করছিল এরকম 'পরের বাড়ীর ঝামেলা' ঘাড়ে নেবার জন্য, কিন্তু কাজলকাকু, বাবলাকাকু, অরূপদা, সুকুমারদারা কমলকাকুদের সাথে ঘুরে ঘুরে সবাইকে বুঝিয়ে জড়ো করে| মিঠুর জেঠির নাকি বাপের বাড়ীতে তেমন কেউ নেই, অথচ মিঠুর জ্যাঠা, বাবারা খালি ওনাকে বাড়ী থেকে বের হয়ে যেতে বলে আর উনি যান না বলে মারে| পাড়ায় সবাই মিলে ব্যবস্থা করে দেয় মিঠুর জেঠি আলাদা রান্না করবে, আলাদা একটা অংশে থাকবে, ওঁর খরচ ওর জ্যাঠাই দেবেন| সেইমত ওদের বাড়ীর মাঝখান দিয়ে পাঁচিল ওঠে, বড় গেটটা আলাদা আলাদা ছোট দুটো গেট হয়ে যায়| ওর জ্যাঠা মিঠুদের ঘরেই খেতেন, তবে ওদের বাড়ী থেকে আর কোনোদিন কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায় নি| বেশ কিছু বছর পরে একদিন ওর জ্যাথা আবার একজনকে বিয়ে করে আনলেন আর পুরানোজেঠি কোথায় যেন চলে গেলেন আর আসেন নি কোনোদিন| শেষপর্যন্ত একলা নিঃসহায় মানুষটি কোথাও একটা যাওয়ার জায়গা করতে পেরেছিলেন নাকি এমনিই নিরুদ্দেশের পথে ভেসে গেছিলেন, কে জানে!
  • sch | 126.203.214.57 | ০৭ জুলাই ২০১৩ ০২:৫৮576155
  • তারপর??
  • ladnohc | 116.216.127.81 | ০৭ জুলাই ২০১৩ ১২:০৫576156
  • এইরকম জ্যেঠি, কাকী আজও দেখা যায় শিক্ষিত-শহরের বুকে, কিন্তু কাজলকাকু অরূপদাদের আর দেখা মেলে না!
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.246.110 | ০৭ জুলাই ২০১৩ ১৩:২৩576157
  • ভালো লাগছে। সঙ্গে আছি।
  • | 24.97.86.225 | ০৭ জুলাই ২০১৩ ১৯:২০576159
  • আমাদের বাড়ীর বাঁ দিকে ইঁটবাঁধানো সরু গলি আর তার পরেই মস্ত মাঠ, মস্ত মানে মস্ত লম্বা, চওড়া তেমন নয়| মাঠের পরেই বড়সড় কাঁচা নর্দমা আর তারপরেই শুরু হয়ে গেছে কালীতলা কলোনী| বাংলাদেশ থেকে আসা নিম্নবিত্ত ও বিত্তহীন উদ্বাস্তুদের ডেরা, আমি যখন থেকে দেখছি তখন তো কাঁচা পাকা ছোট বড় সব বাড়ী| কিন্তু মা বলে মা'রা যখন প্রথম এখানে বাড়ী করে আসে ১৯৫৬ সালে, তখন নাকি সব 'ঢোল' ছিল, ৫০ ফুট লম্বা লম্বা টানা হলঘরের মত ছিল সারিসারি মাথায় অর্ধবৃত্তাকৃতি ছাউনি, ঢোলের আকৃতির একটানা ঘর, তাতেই প্ল্যাস্টিক শিট বা কাপড় টাঙিয়ে আলাদা আলাদা পরিবারের বসবাসের ব্যবস্থা, কোনো এক পরিত্যক্ত মিলিটারি ক্যাম্প উদ্বাস্তুরা এসে দখল করে থাকতে শুরু করে| 'কালীতলা কলোনী' নামটা তাদেরই দেওয়া, তবে লোকের মুখে মুখে 'ক্যাম্প' শব্দই অধিক পরিচিত| ১৯৭৫-৭৬'এ ঢোলের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে, শুধু অরবিন্দ বিদ্যাপীঠের কাছে একটি দুটি তখনও আছে| বাদবাকী যে যেমন পেরেছে, যতটা পেরেছে জমি নিয়ে বাগানসহ বাড়ী তুলে নিয়েছে| জমিজায়গার বিলিবন্টন নিয়ে কোনও ঝগড়া মারপিটের কথা কেউ শোনে নি| ছিন্নমূল মানুষগুলি নিজেরাই তৈরী করেছিলেন 'উদ্বাস্তু সহায়ক সমিতি', তাদেরই তত্ত্বাবধানে নাকি সমস্ত বিলিবন্টন নির্বিঘ্নে হয়ে গেছে| কিন্তু জমি বাড়ীর মালিকানা তখনও সরকারের, কোনও ব্যক্তি নিজের নামে তা নথিভুক্ত করতে পারেন না| আমাদের পাড়ায় এই ক্যাম্প সম্পর্কে একধরণের ভীতি ও তাচ্ছিল্য ছিল, ক্লাস ফোর পর্যন্ত যখন আমি বিকেলবেলা মাঠে খেলতে যেতাম, তখনও ক্যাম্পের কোনও বাড়ীর মেয়েরা খেলতে এলে বাড়ী থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে যেতে হত| বিভিন্নসময় পাড়ায় বিভিন্ন আলোচনায় 'ক্যাম্পের ছ্যারা তো অমনিই হইব' বা 'ক্যাম্পের ছেমড়িগুলান বড় কাইজ্যা করে' জাতীয় বাক্য বড় অবহেলায় উচ্চারিত হত| ক্যাম্পের ভেতরে সরু সরু মাটির রাস্তা আর অল্প দূরে দূরেই বড়সড় গভীর পুকুর, অজস্র গাছপালায় ঘেরা বাড়ীগুলি --- যেন কোন্নগরের মধ্যে আরেক অজানা গ্রাম, বাইরের কোন্নগরের শহরতলীপনা যাকে স্পর্শও করে না| ক্যাম্পের ভেতর দিয়ে দিয়ে শর্টকাটে চটকল কিম্বা বিশালাক্ষীতলা পর্যন্ত চলে যাওয়া যেত, তবে আমাদের যাওয়া মানা ছিল| আমাদের পাশের মাঠের পরে ক্যাম্পের শুরুতে প্রথম বাড়ীটাই ছিল গাঙ্গুলীবাড়ী - মালুদের বাড়ী| মালুরা চারবোন যেমনি ফর্সা তেমনি সুন্দরী আর তেমনি বিচ্ছিরি গানের গলা| রোজ সন্ধ্যে হলেই মালু আর টুলু বেসুরে গলা সাধতে শুরু করত, আশ্চর্য্য এই যে টানা আট বছর ওদের একইরকম বেসুরে সা-রে-গা-মা সাধতে আর 'এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার' গাইতে শুনেছি, একদিনও একটুও অন্যরকম হল না| ওরা দুইবোন একসাথেই গলা সাধত| বুড়ি-বসন্তি খেলায় মালুকে হারানো এক্কেবারে অসম্ভব, যেমন জোরে ছুটতে পারে, তেমনি প্রচন্ড দম|

    দাদু আসলে রাস্তার কোণায় বাড়ী বানিয়েছিল, তাই আমাদের বাড়ীর সামনেও রাস্তা, তবে এটা পিচের, আর তারপরেই কাজলকাকু বাবলাকাকুদের বাড়ী| ওদের বাবা জ্ঞানদাদু আর জ্ঞানদিদা বছরের বেশীরভাগ সময় শান্তিনিকেতনে থাকেন, মাঝেমধ্যে এখানে আসেন| কাজলকাকু বিয়ের পর এসে উঠোনের জঙ্গল পরিস্কার করে এই বাড়ীটায় থাকতে শুরু করে| জ্ঞানদাদু এসে প্রায় সব বাড়ীতেই ঘুরে ঘুরে খুব আক্ষেপ করে বলে গেছিলেন কাজলকাকু নাকি 'পার্টির মেয়ে' বিয়ে করেছে, সে একে পার্টিকরা মেয়ে তায় নাকি ব্রাহ্মণ - এই পাপ তাঁরা কী করে খন্ডাবেন ভেবে পান না, পার্টিই নাকি বাবলাকাকু, কাজলকাকুর মাথা খেয়েছে| কাজলকাকু অনেকদিন আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলেন, এখন ডানকুনির স্কুলে চাকরি পেয়েছেন, রুমাকাকীমা এতদিন চাকরি করতেন বিয়ের পর ছেড়ে দিয়েছেন, সারা দুপুর ক্যাম্পের বাড়ী বাড়ী ঘুরে সবার খবর নেন, কেউ অসুস্থ পড়ে থাকলে যতটা পারেন কাজকর্ম করে দিয়ে আসেন, এছাড়াও এর পোস্টাপিসের ফর্ম, তার ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা এইসব করে বেড়ান| রুমাকাকীমাদের পরের বাড়ীটাই গাতুদের| গাতুর মামী, জয়ীকাকীমার সাথে রুমাকাকীমার খুব ভাব| এদিকে আমাদের কোনাকুনি রুমাকাকীমাদের পাশেও সরু ইঁটের গলির পরেই একটা ছোট্ট মাঠ আর মাঠের পাশেই বাবুদের বাড়ী| ঐ মাঠটাও নাকি বাবুদেরই জমি| বাবুর বাবা সুশীল গুহ তাঁর নিঃসন্তান বিধবা পিসীর জমিবাড়ী সব পেয়েছেন, দিদারা বলে জোর করে সই করিয়ে নিয়েছেন| বাবুর সম্পর্কে এই পিসীদিদাকে আমরা পাড়াশুদ্ধ সব ছোটরা কেন যেন 'সুনীতিপিসী' বলে ডাকতাম, আর মা মামী, কাকীরা সবাই 'সুনীতিদি' বলে ডাকত| কালচে মলিন থানপরা সুনীতিপিসী যতদিন হাঁটতে পারতেন হেঁটে হেঁটে রমণীদিদার বাড়ী যেতেন বিকেলবেলা আবার সন্ধ্যের আগে আগেই ফিরে আসতেন| শীতের রোদে ওদের ন্যাড়াছাদে বসে রোদ পোয়াতেন পিঠময় কালোসাদা চুল ছড়িয়ে| নিয়মিত খাওয়াটুকু জুটত, তবে অসুখবিসুখে চিকিৎসার বালাই ছিল না| বাবুর মা লম্বাচওড়া চেহারার গীতাজেঠি, খুব একটা সংসারী ছিলেন না, জয়ীকাকীমা কিম্বা রুমাকাকীমার বারান্দায় গিয়ে গল্প করতেন বেশীরভাগ সময় আর সুশীল গুহর নেশা ছিল তাসখেলা| অফিস থেকে বাড়ী ফেরার সময় মাঠ থেকেই 'ও-ও কাজো-ও-ও-ল' বলে চীৎকার করতে করতে ঢুকতেন, যাতে ওঁর হাতমুখ ধোওয়া হতে হতেই কাজলকাকু তাসখেলার জন্য পৌঁছে যান| সুনীতিপিসী পড়ে গিয়ে একদিক অবশ হয়ে যাওয়ার পরেও ইনি ডাক্তার ডাকতে বা চিকিৎসা করাতে রাজী হন নি| একলা নিঃসহায় এই মানুষটি কিছুদিন গুয়েমুতে এক হয়ে পড়ে থেকে অবশেষে মরে গিয়ে রেহাই পান|
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.210.49 | ০৮ জুলাই ২০১৩ ১২:১৫576160
  • শীতের রোদে ন্যাড়াছাদে বসে রোদ পোয়াতেন পিঠময় কালোসাদা চুল ছড়িয়ে, বিকেলবেলা হেঁটে হেঁটে রমণীদিদার বাড়ী যেতেন, আবার সন্ধ্যের আগে আগেই ফিরে আসতেন। ছবিগুলো চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি।
  • | 24.97.101.87 | ০৮ জুলাই ২০১৩ ১৩:২৬576161
  • থে্ঙ্কু। :-)
  • kumu | 94.65.212.200 | ০৮ জুলাই ২০১৩ ১৬:৪০576162
  • সুনীতিপিসীর জন্য একটু দুক্ষু রেখ্র দিলাম।
  • hu | 199.138.253.173 | ১০ জুলাই ২০১৩ ১০:৫৪576163
  • কি সাঙ্ঘাতিক জীবন্ত লেখা!
  • | 24.96.190.171 | ২২ আগস্ট ২০১৩ ১৯:০১576164
  • অষ্টমশ্রেণীতে সবচেয়ে বড় সমস্যা শুরু হল অঙ্ক নিয়ে| সপ্তম পর্যন্ত পাটীগণিত নিজে নিজেই পারতাম, খুব সামান্য কিছু কখনও হয়ত দাদুকে জিগ্যেস করতাম, সেও নিজে তো জানিই একবার দাদুকে বলে নেওয়া| বীজগণিত শুরু হয়েছিল সপ্তম শ্রেণীতে, সে শুরুর দিকে অসুবিধে হলেও মোটামুটি পেরে গেছি| কিন্তু এখন তো বীজগণিত বেশ কঠিন লাগে, এমনকি পাটীগণিতেও মাঝে মাঝেই আটকে যাই| অঞ্জলীদি কতগুলো বাড়ীর কাজ দিয়ে রাখেন, না করে নিয়ে গেলে কেমন করে বকেন তো বটেই, মা'কে বলেও দেন| মা ভাবে আমি মন দিয়ে করার চেষ্টা করি না, কখনও ঠাঁই ঠাঁই করে দুটো থাপ্পড় দেয়, কখনও আমার দ্বারা যে কিস্যু হবে না সেটুকু বলে নিজের কপালের দোষ দেয়| একদিন ভয়ে ভয়ে বড়মামার কাছে নিয়ে গেলাম অঙ্কের বই আর খাতা| বড়মামা খানিকক্ষণ দেখে করেও দিল অঙ্কটা, খানিকটা বুঝিয়েও দিল| তাতে বাকী অধ্যায়টা নিজে নিজেই করে ফেলতে পারলাম| সেই থেকে মাঝে মাঝেই নিতে লাগলাম বড়মামার কাছে|

    বড়মামাকে এমনিতে আমার একটু ভয় ভয় লাগে, খুব একটা বেশী কথা বলে না| কোনোকারণে বড়মামার ভুরুদুটো প্রায় সবসময়ই অল্প কুঁচকে থাকে| বড়্মামা ওঠে খুব ভোরে, প্রায় দিদার সঙ্গে সঙ্গেই| সাড়ে ছটা থেকে সাতটার মধ্যে বেরিয়ে যায়, হেঁটে হেঁটে আটটার আগেই পৌঁছে যায় রিষড়ার অ্যালকালি| অ্যালকালির ভোঁ আমাদের বাড়ী থেকে শোনা যায় না, বেশ অনেকটা দূর| বেলা দশটা নাগাদ টিফিনওলা, একটা রোগা ছেলে সাইকেলের দুইদিকে অনেকগুলো টিফিন ক্যারিয়ার ঝুলিয়ে এসে দাঁড়ায়, বড়মামীমা কিম্বা দিদা গিয়ে একটা ভাত, ডাল, মাছেরঝোল ভরা হিন্ডালিয়ামের তিনথাক টিফিন ক্যারিয়ার দেয় তাকে, সে শোঁও করে সাইকেল বেঁকিয়ে চলে যায়| একটা দেড়টা নাগাদ এসে খালি টিফিনকারিটা ফেরত দিয়ে যায়| একটা কোন বাড়ীর যেন টিফিনকারি থাকে ওর কাছে, যার মাঝখানের আর ওপরের বাটিদুটো টোল খাওয়া, ওপরের বাটিটার টোলের পাশে কালো কালো দানা দানামত, দেখে কেমন বিশ্রী লাগে| আরেকটা টিফিনকারি আছে তামার তৈরী বোধহয়, টাট, কোশাকুশির মত ঝলমল করে, বাটিগুলো একটু ছোট, ফলে পুরো টিফিনকারিটাই অন্যগুলোর থেকে কম লম্বা| আমার খুব পছন্দ ওটা, যতক্ষণ টিফিনওলা অপেক্ষা করে, আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি| খুব লোভ হয় অমনি একটা টিফিনকারির, কিন্তু আমার স্কুলে তো অতবড় টিফিনকারির কোনও দরকারই নেই, মনে মনে ঠিক করে ফেলি বড় হয়ে যখন চাকরি করব, তখন ঠিক অমনি তামার তৈরী একটা তিনথাক টিফিনকারি আমি কিনব| আরেকটা টিফিনকারি আছে তুঁতে রঙের, এটাও খুব ঝকঝকে, ভাল করে খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যায় এটা হিন্ডালিয়ামের ওপরে তুঁতে রঙ করা, ঢাকনির জোড়ার কাছে রঙ অল্প অল্প ফেটে সাদাটে হিন্ডালিয়াম বেরিয়ে আছে| টিফিনওলার চুল কপালের ওপরে বারান্দার মত ঝুলে থাকে আর দুপাশে কানঢাকা, দিদা খুব বিরক্ত হয়ে বলে 'লক্কাপায়রার লাহান ছ্যামড়া'| এদিকে বড়মামার মাথায় মস্ত চকচকে ফরসা টাক, পেছনে একদম ঘাড়ের কাছে দুই ইঞ্চি চওড়া একটা বর্ডারের মত কিছু চুল এইকান থেকে ঐকান অবধি| বড়মামার চকচকে টাক আর টিফিনওলার লটপটে চুল পাশাপাশি ভেবেই আমার খিলখিলিয়ে হাসি পায়| অন্য মামাদের তুলনায় বড়মামা বেশ বেঁটেও, বড়মামীমা বলে 'হাইডে বেঁটে', বিকেলবেলা পাঁচটা নাগাদ ঘেমেটেমে একশা হয়ে আবার পুরো রাস্তাটা হেঁটে হেঁটে ফিরে আসে| ডানদিকের পোস্তায় বসে জুতো খোলে, তারপর জুতোটা দুবার ঠুকে ঠুকে তলা থেকে সব ধুলোকাদা ঝেড়ে ভুরু কুঁচকে বিরক্তমুখে ভেতরে ঢুকে সোজা দোতলায় পুবের ঘরে চলে যায়|

    মাসে একদিন ছুটির পর বাড়ী না এসে সোজা বড়বাজার চলে যায়| সারামাসের ডাল আর মশলা বড়বাজার থেকে আনে| বড়বাজারে নাকি দাম অনেক কম আর জিনিষ বেশী ভাল| বাংলাদেশ থেকে সবাই চলে আসার পর একটু থিতু হয়ে বসতেই খরচ কমানোর চেষ্টায় বড়বাজারে থেকে জিনিষ আনা শুরু করেছিল বড়মামা, এখন আর চাল, আটা, ময়দা, চিড়ে, মুড়ি, বাতাসা এসব আনা হয় না, কিন্তু দিদা আর বড়মামীমার হাজার বারণ, অনুরোধেও ডাল আর মশলা আনা বাদ দেয় নি| সবচেয়ে আশ্চর্য্য হল, বড়মামা নাকি হাওড়া থেকে নেমে হেঁটেই বড়বাজার যায়, মালপত্র নিয়ে ফেরেও হেঁটে| শুধু শ্যামবাজার বা গড়িয়াহাটের মত দূরে কোথাও যেতে হলে তবেই হাওড়া থেকে বাসে ওঠে বড়মামা| বড়মাইমা বলে বড়মামা নাকি 'শিশুবয়স' থেকে চাকরি করছে, সেই সবাই যখন বাংলাদেশ থেকে চলে এল, তখন বড়, মেজ, সেজ তিনমামাই কলকাতায় মেসে থেকে পাড়াশোনা করছিল| দাদু তো এসে তক্ষুণি কোনও কাজ পায় নি, বাঙাল বলে, উদ্বাস্তু বলে অনেক অফিসে দাদুর কথা নকল করে ভেঙচে না বলে দিত, কেউ কেউ জিগ্যেস করত দাদু কিশোরগঞ্জে কী করত| ব্যাঙ্কের ম্যানেজার শুনলে কেউ মুখ ভেটকে, কেউ বা মুচকি হেসে বলে দিত 'হ্যাঁ হ্যাঁ আপনারা তো সবাই হয় জমিদার, নয় ম্যানেজার'| অথচ দাদুর কাছে ব্যাঙ্কের কাজের প্রশংসাপত্র ছিল| তখন মুখার্জীদাদুরা বিশালাক্ষী সড়কে দাদুদের পাশের বাড়ীতে থাকত মুখার্জীদাদু অ্যালকালিতে একটা চাকরি পায়, কেমিকেল ল্যাবে আরেকজনকে ঢোকাতেও পারবে, তবে বয়স ২০র মধ্যে হতে হবে| প্রি-ইউনিভার্সিটি পাশ করে বড়মামা তখন বিজ্ঞান নিয়ে প্রথম বর্ষ, নুল্ল্পড়া ছেড়ে চাকরিতে ঢোকে| আরো কয়েকমাস পরে দাদুও অ্যালকালির স্টোরে চাকরি পেয়েছিল, তবে বেশীদিন করে নি, অরবিন্দ বিদ্যাপীঠে প্রধানশিক্ষকের চাকরি পেয়ে মাইনে কম দেখেও অ্যালকালি ছেড়ে দেয় দাদু| অনেক পরে সিটি কলেজে রাত্রের কোর্সে বি-কম পড়ে গ্র্যাজুয়েট হয় বড়মামা, ততদিনে মেজমামা, সেজমামা দুজনেই পাশটাশ করে গেছে| সেই বড়মামার শিশুবয়স থেকে চাকরি করা, কে জানে, সেই জন্যই হয়ত ভুরু অল্প কুঁচকে থাকে!
  • সে | 203.108.233.65 | ২২ আগস্ট ২০১৩ ২০:০১576165
  • বাংলাদেশ থেকে না পুর্ব পাকিস্তান?
  • | 24.97.11.82 | ২২ আগস্ট ২০১৩ ২০:০৭576166
  • ইতিহাস অনুযায়ী ওটা পূর্ব পাকিস্তানই বটে। কিন্তু আমাদের বাড়ীতে সেই ৭১ এর আগে থেকেই শুনে আসছি 'বাংলাদেশ থেইক্যা আওনের সময়' কিম্বা 'বাংলাদেশে যহন --', 'বাংলাদেশে আমরার ----' ইত্যাদি।
    সেই আভ্যেসেই লিখেছি।
  • ranjan roy | 24.99.71.33 | ২৩ আগস্ট ২০১৩ ০০:২৬576167
  • বড়মামাকে দেখতে পাচ্ছি, হেঁটে রিষড়া অ্যালকালিতে যাচ্ছেন, অংকে মেধাবী কিন্তু অল্পবয়সে সংসারের জোয়াল কাঁধে তুলে নিয়ে ভুরু কুঁচকে গেছে,
  • nina | 78.34.162.175 | ২৩ আগস্ট ২০১৩ ০৩:২১576168
  • টিফিনকারি ---কতদিন পর শুনলাম ----অনেক হারানো প্রিয় জিনিষ দমুর লেখায় খুঁজে পাই--বড় ভাল লাগে।
  • ঐশিক | 213.200.33.67 | ২৩ আগস্ট ২০১৩ ১০:৩১576170
  • দমুদি, কি আর বলব তোমাকে লেখা গুলো খুব ছুয়ে যায় আমাকে, লিখতে থাক ভালো থেক
  • | 24.97.31.182 | ২৪ আগস্ট ২০১৩ ১৬:২৫576171
  • অফিসের পরে বড়বাজার ছাড়াও আরো একটা জায়গায় বড়মামা যেত মাঝে মাঝে, আলিপুরে এক উকীলের অফিসে| বাবা মারা যাওয়ার কিছু মাস আগে দক্ষিণ কলকাতায় একটা জমি কিনেছিল, মারা যাওয়ার পর মা'র কথায় সেটা বিক্রীর চেষ্টা করতে গিয়ে মামারা জানতে পারে নতুন রাস্তা বানাবার জন্য সরকার ঐ জমিটা নিয়ে নিয়েছে, চেষ্টা করলে কিছু ক্ষতিপুরণ পাওয়া যেতে পারে| তখন বড়মামা খুঁজেপেতে বাবার অফিসের আরো দুই তিনজন, যাদের ঐ একই অঞ্চলের জমিও সরকার নিয়ে নিয়েছে, তাদের সাথে যোগাযোগ করে| সেই সুত্রেই এই উকীলবাবুর সাথে যোগাযোগ| ইনি মাঝেমধ্যে পোস্টকার্ডে মা'র নামে চিঠি পাঠান ওঁর অফিসে দেখা করতে বলে| বড়মামা তখন যায়| উকীলবাবুর বলে দেওয়া বয়ানে মা দরখাস্ত লিখে চলচ্চিত্রমের পাশের টাইপবাবুর কাছ থেকে টাইপ করিয়ে আনে, আরো কিসব যেন কাগজপত্র হাতে লিখে কপি করে নেয়, তারপর কপিগুলো হাইস্কুলের বড়দি প্রমীলাদিকে দিয়ে অ্যাটেস্ট করিয়ে আনে| আমাদের পাড়ার গেজেটেড অফিসার ননীজেঠু রিটায়ার করার আগে ননীজেঠুকে দিয়েই করানো যেত, দূরে যেতে হত না| এখন অ্যাটেস্ট করানোর জন্য একদিন দেরী হয়| তারপর বড়মামা আবার যায় ঐ দরখাস্ত আর অ্যাটেস্টেড কপি নিয়ে| কখনও কখনও আরো একবার যেতে হয় আরো কোনও কাগজের কপি নিয়ে বা দরখাস্ত একটু পাল্টে নিয়ে| মোটামুটি চিঠি আসার এক সপ্তাহের মধ্যে দুই তিনবার যাওয়া হয়| আলিপুর গেলে ফিরতে অনেক রাত হয়, সাড়ে ন'টা দশটা বেজে যায়| বড়মামা বাইরে কোথাও কিচ্ছু খায় না, বড়মাইমা বারবার বারান্দা ঘর করতে থাকে| দিদা খুব রাগ করে 'এমন প্যাডে বাণ দিয়া উকীলের পিসনে ঘুরনের কামডা কি? আস্তে ধীরে যা হইব, হইব|'| মা'ও বারবার জানলা দিয়ে দেখে রাস্তার দিকে| আমাদের ঘর থেকে সামনের গলিটা বেশ কিছুদূর সেইই শুভ্রাদের বাড়ী অবধি দেখা যায়| আমাদের ঘরের ওপরের ঘরটাই বড়মামাদের পুবের ঘর| দোতলার জানলা দিয়ে আরেকটু দূর পর্যন্ত সেই বুড়ো টোটোনদের বাড়ী ছাড়িয়ে দেখা যায়| বড়মাইমা নীচে এসে ফ্রীজ থেকে শরবতের গ্লাস করে বের করে নিলেই বোঝা যায় বড়মামাকে আসতে দেখা গেছে| একটা লম্বা কাঁসার গ্লাসের একদম নীচের দিকে অল্প ঠান্ডা জলে চিনি গুলে রাত আটটা নাগাদ ভিজিয়ে রেখেছে বড়মাইমা, এখন বের করে কলসীর জল ভরে গ্লাস ভর্তি করে, অল্প নুন আর একফালি পাতিলেবু চিপে মেশায়, স্টীলের চামচ দিয়ে নাড়ে ঠিঠিনিন ঠিঠিনিন করে| তারপর দোতলায় বড়মামার ঘরে বিছানার পাশের ছোট্ট টেবিলে কাঁসার ছোট্ট গেলাস ঢাকনি ঢেকে রেখে আসে| বড়মামা কালো বা নেভি ব্লু নরুণপাড়ের ধবধবে সাদা লুঙ্গী পরে বসে হাতপাখা দিয়ে হাওয়া খেতে খেতে আস্তে আস্তে শরবত খায়| অন্ধকার ঘরে একটা জিরো পাওয়ারের সবুজ আলো জ্বলে|

    বড়মামাও দাদুর মত ইলেকট্রিক পাখা চালায় না খুব একটা, নাকি শীত লাগে| গরম লাগলে হাতপাখা নাড়ে, খুব গরমে হাঁসফাঁস হলে তবেই ফ্যান চালায়| তাও বেশীরভাগ সময় বরমাইমাই চালায়| মেজমাইমা কোন্নগরে এলে জিগ্যেস করে 'হ্যাঁরে দিদি, দাদা এখনও ফ্যান চালায় না?' বড়মাইমা বিরক্তমুখে বলে 'নাঃ| এই এক মানুষ সেই একইভাবে চলল সারাটাজীবন, না একটা রিকশা নেবে স্টেশান থেকে আসার সময়, না বাস ধরবে বড়বাজার যেতে আসতে, কারো কথাই কানে নেয় না তো দাদা'| মেজমাইমা অমনি বলবে 'একটাই তো মেয়ে, এখনও অত কিপটামির কি আছে!' বড়মাইমা বলবে 'সেই কথা বোঝায় কে?' মা এক আধবার বলে এদেশে আসার প্রথমদিকের অসহায় অবস্থার কথা, প্রচন্ড দুশ্চিন্তা, বলে বড়মামার মনে সেই দিনগুলোর নিরাপত্তাহীনতা গেঁথে গেছে, তাই হয়ত পারে না| কোনো কোনোদিন সবাই মেনে নেয়| কোনোদিন আবার বড়মাইমা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে 'সেই শিশুবয়স থেকে চাকরি করছে -- এখনও দায়িত্বের হাত থেকে মুক্তি নেই কোথায় আলিপুর কোথায় কি করে শরীরটা দিনদিন খারাপ হচ্ছে'| দিদাও খুব রেগে ওঠে বড়মামার বেয়াক্কেলপনায়, মা আস্তে আস্তে বলে 'আমি কতবার বারণ করসি ঐ উকীলের পিসনে দৌড়াইতে'| দিদা আরো রেগে ওঠে, সমানে গজগজ করতে থাকে| যেবার উকীলবাবুর চিঠি এলে দুবার যেতে হয় সেবার দুই তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ী থমথমে হয়ে থাকে, যেবার একবার গেলেই হয়ে যায়, সেবারে খুব কিছু হয় টয় না, এমনকি মাঝেমাঝে যখন উকীলবাবু তিনশো কিম্বা সাড়ে তিনশো টাকা দেন সরকার থেকে পাওয়া গেছে বলে, সেবার সকলেই একটু খুশী খুশীই থাকে|

    গরমের ছুটি হতে তখনও দিন কুড়িমত বাকী, অঞ্জলীদি একসাথে অনেকগুলো অঙ্ক দিয়ে দিলেন হোম ওয়ার্কে, আর সেগুলো প্রায় সবকটা হয়ে গেলেও একটা পাটীগণিতের অঙ্ক আর কিছুতেই পারছি না| যা বুঝলাম তেমনভাবে করে কিছুতেই উত্তর মিলছে না| সেইভাবেই পরেরদিন ক্লাসে নিয়ে গেলাম, অঞ্জলীদি সেদিন ওটা বোর্ডে করে দিলেন না, বললেন 'আরেকবার চেষ্টা কর, না পারলে কাল বলে দেব'| আমাকে বললেন 'তুমি তো এর চেয়ে কঠিন অঙ্ক আগে করেছ, এটা কী হল? মন কোথায় থাকে?' রীমাকে বললেন 'কি দিদি বুঝি করে দেয় নি?' বাড়ীতে এসেও সে অঙ্ক আর কিছুতেই উত্তর মেলে না, এদিকে আগেরদিন চিঠি এসেছে, বড়মামা তাই আজ আবার যাবে আলিপুরে| তারমানে আসতে আসতে সেই রাতে খাওয়ার সময় হয়ে যাবে, তাহলে অঙ্ক দেখাব কখন? এদিকে মা'দের সময়ে নাকি সপ্তম শ্রেণী থেকেই অঙ্ক বাদ দিয়ে দেওয়া যেত চাইলে, আর মা নাকি অঙ্ককে খুব ভয় পেত বলে ওটাই সবার আগে বাদ দিয়েছিল| মেজমামা, সেজমামা এখনও মাঝে মাঝে মা'কে ক্ষেপ্যা জেদ করে অত আগে অঙ্ক ছেড়ে দেওয়ার জন্য| ওদিকে সন্ধ্যে থেকেই লোডশেডিং| হ্যারিকেনের সামনে বই নিয়ে বসে থাকতে থাকতে আমি ভাবতে থাকি মা যদি অঙ্ক ছেড়ে না দিত তাহলে তো আজকে অন্তত জিগ্যেস করতে পারতাম| বড়মামা ফেরে সাড়ে নটা নাগাদ, আলোও আসে তক্ষুণি| একটু বাদে আমি আস্তে আস্তে গিয়ে বড়মামাকে বলি একটা অঙ্ক কাল থেকে হচ্ছে না| বড়মামা খেঁকিয়ে ওঠে 'কাল আনিস নি কেন?' নাঃ হল না| আমি দরজা ছেড়ে পিছাতে শুরু করতেই কি ভেবে আবার বলে 'যা নিয়ে আয়্'| আমি তাড়াতাড়ি পেছনে করা হাত সামনে আনি, অঙ্ক্বইও, খাতা আর ছাইরঙ, সোনালী ক্লিপওলা আর্টেক্স কলম| বড়মামা হাত বাড়িয়ে টেবিলল্যাম্প জ্বালায়| কি আশ্চর্য্য! প্রথমবারে বড়মামার উত্তরটাও আমার মতই হয়| বড়মামা সমানে কিসব হিসেব করে আর ভুরু কুঁচকে যেতে থাকে, মুখে ভীষণ দুর্গন্ধ, বড়মামা কথা বললেই আমার নাক চেপে ধরতে ইচ্ছে করে, কিন্তু করি না| আমি ভাবি দাঁত মাজে নি নাকি! তখন জানতাম না অনেকক্ষণ খালিপেটে থাকলেও মুখে অমন দুর্গন্ধ হয়| তারপর অনেকক্ষণ ভেবে শেষে আরেকরকম করে অঙ্কটার উত্তর বইয়ের সাথে মেলে, কিন্তু আমি ঠিক করে বুঝি না এইটা কী করে হল| কিন্তু জিগ্যেস করতে সাহস হয় না, এর মধ্যে বড়মাইমা দুবার এসে বলে গেছে খেয়ে এসে বসতে, বড়মামা কান করে নি| যাগ্গে অন্তত কাল স্কুলে তো আর বকা বা ব্যঙ্গ সহ্য করতে হবে, লাফিয়ে লাফিয়ে নীচে নেমে আমাদের ঘরের দিকে যেতে নিতেই দিদা ডাকে ভাঁড়ারঘরের ফাঁক থেকে| ভাঁড়ারঘরে পা দিতে না দিতেই দিদা হিসহিসিয়ে ওঠে কেন গেছি আমি? অত কিসের বিদ্যেধরী যে এত রাতে এত খেটে মানুষটা আসার পরেও আমাকে যেতেই হল! আমি বলার চেষ্টা করি অঙ্কটা কাল থেকে হচ্ছে না, স্কুলে আজ করে নিয়ে যেতে বলেছে| দিদা আরো জ্বলে ওঠে 'ফ্যালের মইধ্যে ফাস্ট হইয়া তুই সাপের পাঁচ পা দ্যাখছস! কি হইসে একদিন অঙ্ক কইর‍্যা না নিয়া গেলে, অই তো ধুচুনির নম্বর'| আরো কিসব বলে, আমি আর কিচ্ছু শুনি না| মাথায় ঘুরতে থাকে 'ফ্যালের মইধ্যে ফাস্ট', 'ফেলের মধ্যে ফার্স্ট'| খুব ইচ্ছে করে কাউকে এমন একটা কিছু বলতে যাতে সে বেশ দুখ পেয়ে ভেউভেউ করে কাঁদে -- তাহলে মনে হয় একটু ভাল্লাগবে আমার|
  • a x | 86.31.217.192 | ২৪ আগস্ট ২০১৩ ১৯:৩৩576172
  • siki | 127.192.12.126 | ২৪ আগস্ট ২০১৩ ২২:০১576173
  • ঝাপসা লাগছে।

    অঙ্কটার কী হল?
  • nina | 78.34.163.242 | ২৫ আগস্ট ২০১৩ ০০:২৭576174
  • ছোট্টদের মন ও তো মন----বড়রা ভুলে যায়!
  • | 24.97.187.237 | ২৫ আগস্ট ২০১৩ ১৩:১২576175
  • ১৩)
    ক্লাস এইটের ক্লাসরুমটা বেশ নিরিবিলি মনে আনন্দে হইহল্লা করলেও চট করে বিপদে পড়তে হয় না| বেড়ার ঘরের ক্লাস সেভেন সেই পেছনে স্কুলের মাঠে ঢুকতে, আর এদিকে টীচার্স কমন রুম, ক্লাস নাইন, সিক্স এগুলো সামনের দিকে আরো একটু এগিয়ে| ফলে দিদিমনি না আসা অফ পিরিয়ড কাটে আমাদের খেলাধুলো করে| অ্যাসবেস্টসের চাউনি দেওয়া ছাদ অনেক উঁচুতে, তার অল্প নীচে জানলা, যাকে আসলে একটু বড়সড় ঘুলঘুলিই বলা যায়| সেখান দিয়ে পাশের কোনও বাড়ীর মস্ত অশ্বত্থ গাছের চকচকে সবুজ পুষ্ট পাতা দেখা যায়, শালিখ মা এসে একটা বাসা বানায় পেছনের দিকের ঘুলঘুলিটায়, তাদের পায়ের ধাক্কায় ছিটকে পড়া খড়ের কুচি, ছেঁড়া কাগজ, পাটের ফেঁসোয় ভরে যায় লাস্ট বেঞ্চ্| লাস্ট বেঞ্চে বসে শীলাবল, ছবিবল, শ্যামা, সুতপা| এরা রোজ বসে আর মাঝে মাঝে অন্য কেউ হয়ত জায়গা পায় নি আগের কোনও বেঞ্চে কিম্বা রেখাদির ক্লাসে বসে কোনও সেলাই শেষ করতে হবে, তখন গিয়ে বসে| শীলাবল নাকি ছবির চেয়ে তিন চার বছরের বড়, তবে দুই ক্লাসে দুবার ফেল করে ছবির সমান হয়ে গেছে| শীলা খুব ঝগরুটেও, চড়াই কিতকিত খেলায় বিপক্ষদলের সাথে চিরকাল শীলার ঝগড়া লাগে| গোধুলির খুব নাচের শখ, গোধুলিকে শীলা বলে 'তোকে যা বিচ্ছিরি দেখতে, তুই নাহলে কেউ দেখবে নাকি? যারা নাচে, তাদের সুন্দর দেখতে হতে হয়|'| গোধুলি বড় বড় অসমান দাঁত বের করে হাসে আর বলে 'আমি কত্থক শিখতে ভর্তি হচ্ছি|' আমাকে শীলা বলে 'তোকে ঠিক ঐ হংসরাজের টিয়ার মত দেখতে, ঐরকম বাঁটলুমত, ঐরকম ট্যারাচোখে চশমা, বলেই ফিসফিসিয়ে গান ধরে 'টিয়া টিয়া টিয়া অজ পাড়াগাঁয়ে থাকে'| আমি 'হংসরাজ' সিনেমা দেখিনি, আমাদের সিনেমা দেখা মানা, তাই ঠিক বুঝতে পারি না টিয়া আসলেকেমন দেখতে| ছবি খুব ফরসা ধবধবে, একটু হলদেটে নিখুঁত নিদাগ ত্বক, আমুল মাখনের তৈরী পুতুলের মত দেখতে| ছবিকে অনেকেই জিগ্যেস করে 'শীলা কি তোর সৎবোন?' ছবি একটু লাল হয়ে বলে 'না'| শেলা ছবিকে 'ধলি' বলে ডাকে, ওটাই নাকি ছবির ডাকনাম| শীলার কাছেই আমরা শুনি রূপসী ছবি পড়াশোনায়ও ভাল, আজ পর্যন্ত কোনোদিন ফেল করে নি, তাই বাড়ীতে তার খুব আদর| কোনোদিন কোনো খুব বড়লোকের ছেলে ওকে বিয়ে করে নিয়ে গিয়ে সোনার খাটে বসিয়ে রাখবে| শীলার কথায় কোথাও পড়ে গিয়ে নুনছাল উঠে যাওয়া চামড়া আর রক্তের হালকা আঁশটে গন্ধ পাই আমি|
  • | 24.97.187.237 | ২৫ আগস্ট ২০১৩ ১৩:১৪576176
  • *তুই নাচলে কেউ দেখবে নাকি?

    গুচ্ছ টাইপো হয়েছে কালকেও :-(
  • তাতিন | 127.197.70.151 | ২৫ আগস্ট ২০১৩ ১৪:৩৩576177
  • বড়মামাকে সত্যিই ভীষণ চেনা লাগছে। সাইরেন-টিফিনকারি, বড়বাজার হাঁটা, মুখের গন্ধ সব মিলিয়ে। আর এখন যে করে কম্মে খাচ্ছি, তার পেছনে কোথাও বড়মামার হাতও আছে।জানি।
  • I | 24.96.8.74 | ২৫ আগস্ট ২০১৩ ১৪:৫৪576178
  • ঠিঠিনিন ঠিঠিনিন শব্দটা বেড়ে লাগলো।

    আর হ্যাঁ, বাঙালের সব গল্পগুলৈ এক। হয়তো ঘটিদেরও। তবে তাদের তো দেশভাগ নেই ।
  • aranya | 154.160.130.16 | ২৬ আগস্ট ২০১৩ ০৬:১৩576179
  • খুব ভাল লেখা
  • | 24.97.108.143 | ২৬ আগস্ট ২০১৩ ১১:৪৩576181
  • তাতিন, বড়মামার সাইকেল ছিল না তো।

    ইন্দো, না রে। আমার বাবার বাড়ীর গল্পটা স্লাইট আলাদা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন