এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বাড়ি বদলে যায়।

    I
    অন্যান্য | ১৭ জানুয়ারি ২০১৩ | ৩৩৮৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • I | 24.99.183.193 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ ০১:৪৩585125
  • পাটনা আসার আগে একটুও হিন্দি জানতাম না। তার ওপরে ঐ কালচারাল শক। সব মিলিয়ে কেমন একটা বিচ্ছিরি রকমের ডিপ্রেশনের পাল্লায় পড়ে গেছিলাম শুরুতে। হাত-পা নাড়াতে ইচ্ছে করত না। রোজ সকালে হসপিটাল যেতে হবে ভাবলেই মন খারাপ হয়ে যেত। আবার সেই স্যাডিস্ট গাইড, দুর্বোধ্য ভাষা, বন্ধুহীন অচেনা পরিবেশ। এই সময় থেকেই আমি অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট খেতে শুরু করি। সকালে কোনোমতে একমুঠো চিঁড়ে লেবু ও জল দিয়ে ভিজিয়ে ঢক করে খেয়ে নিতাম। দীপাংশুও। তাই নিয়ে দীপাংশুর ইউনিটে হাসাহাসি হয়েছিল। চুড়া খানে কে লিয়ে দহি ভি নহী মিলতা হ্যায় পটনামে ! দীপাংশুর ইউনিটে ছিল এক মৈথিলী ব্রাহ্মণ সহকর্মী। তাদের নাকি সামনাসামনি প্রচন্ড মিষ্টি মুখ , পেছনে বাঁশ দেওয়ায় ওস্তাদ। সে অবশ্য ভূমিহারদের সম্বন্ধেও বলা হত। আমাদের প্রতিবেশী বোসদা (পদবী পরিবর্তিত) বলতেন ঘরে একটা সাপ আর একজন ভূমিহার ঢুকলে আগে ভূমিহার মেরে নেবে। এতটা কিনা জানি না, তবে অসম্ভব কাস্টিস্ট হত ভূমিহারেরা। লিবারেশনে একটি ভূমিহার ছেলে জয়েন করায় তার বাপ-মা তাকে খুন করবার জন্য সুপারি দিয়েছিল।রণবীর সেনা মুখ্যতঃ ভূমিহার জমিদারদের তৈরী করা মিলিশিয়া। ভূমিহাররা নিজেদের ব্রাহ্মণ বলেই মনে করে; পৈতেও পরে। কিছুকাল আগে শিবুদার খড়দা'র বাড়ির আড্ডাতে ভূমিহারদের উৎপত্তি সম্বন্ধে খুব ইন্টারেস্টিং গল্প শুনি। সেটির পেটেন্ট আসলে শিবাংশুদা'র, তাই আর এখানে বললাম না। রাজপুতদের সম্বন্ধে বোসদা বলতেন তাদের নাকি হাঁটুতে বুদ্ধি। রাজপুত মারার সহজ উপায় নাকি তাকে দোতলার ছাদে উঠিয়ে দিয়ে নিচ থেকে তেড়ে গাল দেওয়া। তাহলেই হেডস্ট্রং রাজপুত তোমাকে মারার জন্য সটান দোতলা থেকে ঝাঁপ মারবে এবং পপার চ মমার চ।

    নাইট ডিউটিতে যাবার সময় কেমন একটা ইয়েরি ফিলিং হত।রাস্তার পানের দোকানের ঝাঁপ পড়ে যেত, রেডিওতে ভোজপুরী গানের সুর বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ক্ষণ ।দূরে এস টি ডি বুথ ও ভাতের হোটেলে ছাত্রছাত্রীদের জমায়েত , এছাড়া চারদিক শুনশান। একজন-দুজন মাতাল ছাড়া রাস্তায় প্রায় কেউই নেই। কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করছে। কেউ এসে বুকে ছুরি বসিয়ে দিলে ডাকবারও উপায় নেই। অবশ্য ডেকে কিছু লাভও হত বলে মনে হয় না। শীতকালে মোড়ে মোড়ে অব্শ্য আগুন পোয়াত ভিখারীরা, বোধ হয় সরকারের তরফ থেকেই জ্বালানী কাঠ দেওয়া হত, কেননা রাস্তায় রাস্তায় জ্বালানী কাঠের ডাঁই পড়ে থাকতে দেখতাম। পাটনা শহরের দরিদ্রতম ভিখিরির গায়েও একটা কোট অন্ততঃ থাকতই,সে যত ছেঁড়াই হোক না কেন, কেননা কোট ছাড়া ঐ প্রবল মর্মভেদী ঠাণ্ডায় বেঁচে থাকা ছিল অসম্ভব। শীতকালে দেখতাম রুম হিটার জ্বালিয়ে এবং থার্মোকট, মোজা, গ্লাভস পরে লেপের তলায় ঢুকেও ঠাণ্ডা লাগত, এপাশ ফিরে শুলে লেপের ওপাশটায় মনে হত কেউ ঠাণ্ডা জল ঢেলে দিয়েছে।
    তেমনি ছিল গরম।ওরে গরম ! আমরা যে তিন বছর ছিলাম তার মধ্যে প্রথম বছরটাই ছিল সবচেয়ে মর্মান্তিক। সেবছর প্রচুর লোক হিটস্ট্রোকে মারা গিয়েছিল। হিটস্ট্রোক ব্যাপারটা এই প্রথম চাক্ষুষ দেখলাম। হট্টাকট্টা লোকেরা ১০৬-১০৭ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে বেহুঁশ অবস্থায় হাসপাতালে আসছে, অথচ একটুও ঘাম নেই, মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে, প্রবল খিঁচুনি হচ্ছে এবং ঘন্টা কয়েকের মধ্যে মারা যাচ্ছে। রোগীদের বরফের চাঁইয়ের ওপর শুইয়ে আত্মীয়্স্বজনদের বলা হত পাখার বাতাস দিতে। সঙ্গে চলত জেটে স্যালাইন। এখন জানি সেসব মোটেও হিট স্ট্রোকের সম্পূর্ণ সঠিক চিকিৎসা নয়। বস্তুতঃ হিট স্ট্রোকের চিকিৎসা করার মত পরিকাঠামো পাটনা মেডিক্যাল কলেজে ছিল না, ভারতবর্ষের অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালেই সম্ভবতঃ নেই। দেহাতি আত্মীয়্জনরা রোগীর সারা গায়ে পাকা আমের খোসা ঘষত, তাই নাকি এই রোগের চিকিৎসা। বারণ করতাম না। কী লাভ !

    মৃত্যুর আর একটা নিশ্চিততম উপায় ছিল অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড খাওয়া। এ জিনিষ গম ও অন্যান্য দানাশস্য সংরক্ষণের কাজে ব্যবহার হয়, সেলফস নামে পাওয়া যায়। অব্যর্থ বিষ, ০. ১৫ গ্রাম পেটে গেলেও একজন পূর্নবয়স্ক যুবক ঘন্টাখানেকের মধ্যে মরে যাবে। নতুন কন্টেনার থেকে খেলে তো কথাই নেই। এর কোনো অ্যান্টিডোট নেই, স্যালাইন চালিয়ে দিয়ে হাঁ করে মরতে দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় ( অথবা তার অভাব) ছিল না। বিহার সহ গোটা উত্তর ভারতের গ্রামেই এটি আত্মহত্যার একটি সহজলভ্য পদ্ধতি। বাংলার গ্রাম এখনো এর সঙ্গে পরিচিত হয় নি, ভাগ্যিস।

    গরমের কথা হচ্ছিল। বেলা দশটা বাজলেই আর বাইরে থাকা যেত না, ভরদুপুরে যখন এমারজেন্সি ডিউটি করতে বেরোতে হত মাথা ও মুখ মুড়ে বেরোতে হত। লু বইত, চোখ লাল হয়ে উঠত; যদিও শুকনো গরম মূলতঃ, ঘাম একদম হত না যে তা নয়। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলত লোড শেডিং , আট ঘন্টা-দশ ঘন্টা । সন্ধ্যে হতেই দু পা অন্তর অন্তর লস্যির দোকান খুলে হাঁকডাক করত; আহা, লস্যি বানাত বড় দরদ দিয়ে, সবশেষে বেশ খানিকটা ক্রীম ঢেলে দিয়ে তার ওপর একটি চেরি নামধারী লাল রংয়ের করমচা'র টুকরো যত্ন করে বসিয়ে দিতে ভুলত না। খেয়ে প্রাণ তরর্‌ হয়ে যেত। পাটনায় সবই বেশী বেশী । বর্ষাকালে জলে জলাক্কার হয়ে যেত। ভিখনাপাহাড়ী, নয়াটোলা, মছুয়াটোলি, লঙ্গরটোলি সব জলের তলায়, অশোক রাজপথ জলে থৈ থৈ; কী করে যাওয়া আসা করতাম ভগায় জানে। শীতকালে এক ধরনের বৃষ্টি হত, সেসব দিনগুলো কী যে বাজে লাগত ! সারাটা দিন গোমড়া আকাশ, মাঝেমধ্যেই ছুঁচের মত বৃষ্টি, হাড় কাঁপিয়ে দিত। এইরকম ওয়েদার পরে ইউ কে-তে গিয়ে পাবো সেকথা আগে থাকতে জানা ছিল না।
  • Lama | 127.194.234.164 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ ০২:০৯585126
  • ডাক্তার, এন আর এসের হোস্টেলে অনেক রাত কাটিয়েছি। মনে পড়ে গেল। কালীর দোকানের চা ওমলেট, রাত একটায় কোলে মার্কেট, গ্লোব নার্সারির গাঁজা, লেবার রুম থেকে ভেসে আসা আর্তনাদ। আর হ্যাঁ, করিডোরে কার যেন পোষা পাখির খাঁচা রাখা থাকত। একটু রাতের দিকে অন্য ফ্লোরে বা ব্লকে কারা যেন থালা বাজাত।

    ভালো কথা- আশুতোষ রাস্তোগী, নিরুপমা ব্যানার্জি, শাঁওলী দত্ত, এই সব নামের ছেলেমেয়েরা কি তোমার সমসাময়িক?
  • I | 24.99.183.193 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ ০২:১২585127
  • লামা,
    আমাদের ব্যাচমেট তো নয়। আমার আবার নাম মনে রাখার ব্যাপারটা একটু ইয়ে। তবে খুব চেনা চেনা লাগছে। মনে হয় আমাদের সিনিয়র ব্যাচ।
  • Yan | 161.141.84.239 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ ০৫:৪০585128
  • চিঁড়াকে বিহারে চূড়া বলে জানতে পেরে খুব খুশি হলাম। থ্যাংকু বড়াই। কতকিছুই জানি না, কত মন ভালো করা সব সংবাদ অজানা পড়ে আছে।

    খুব ভালো লাগছে বড়াই, তোমার এই "বাড়ী বদলে যায়", বারে বারে মনে পড়ছে বহু যুগ আগের বা লা তে তোমার সেই প্রথম লেখা, কবরখানায় ফুটে থাকা রাশি রাশি ফুল আর এক ছোট্টো মেয়ে সেই ফুল তোলে, কোথা থেকে সে আসে কোথায় চলে যায়! আর পার্কের বেঞ্চিতে বসে থাকে একজন, তার চেহারা দুঃখী রাজপুত্রের মতন। নতুন ডাক্তার যাতায়াতের পথে তার গ্লাভসে গ্লাভস ঠেকিয়ে যায়, আর কেউ তাকে দেখতে পায় না, শুধু ডাক্তার পায়। সে মৃত্যু, তার বন্ধু ও প্রতিদ্বন্দ্বী। কী মায়াময় সব লেখা!!!
    অনেক লেখো বড়াই, অনেক।
  • I | 24.96.104.156 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ ১৩:৩২585129
  • পি এম সি এইচ ছিল বিহারের সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস মেডিক্যাল কলেজ। কাজেই গোটা বিহার থেকে রোগীরা সেখানে ছুটে আসতেন। আর আসতেন রাজনীতিকরা। বিহারে তাঁদের নেতাজী বলে ডাকা হত, বোধ হয় গোটা উত্তর ভারতেই তাই। নেতাজী ও তাঁর চেলাদের একধরণের ড্রেস কোড ছিল , সাদা , নিখুঁত ইস্ত্রি করা পাঞ্জাবী ও কুর্তা পাজামা। নেতাজীর আগমন ঘটলে ডাক্তারদের বসার ঘর মুহূর্তে চেলাবেলাদের দখলে চলে যেত, মধ্যিখানে ঘর আলো করে বসে থাকতেন নেতাজী স্বয়ং। আর মুহুর্মূহু শ্লোগান উঠত- যব তক সূরয চান্দ রহেগা নেতাজী তেরা নাম রহেগা।কার ঘাড়ে কটা মাথা নেতাজীকে বলবে -আপনি দয়া করে অন্যান্য রোগীদের মত এমার্জেন্সী রুমে রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারে বসুন ! একবার আনন্দ মোহন এসেছিলেন মনে আছে।

    আর একধরণের প্রাণী ছিলেন, এঁরা মাঝেমধ্যেই পি এম সি এইচ আসতেন ও বেশ কিছুকালের জন্য আমাদের আতিথ্য গ্রহণ করে ধন্য করতেন। এঁরা বিহারের নানান রং ও ঢংয়ের সব বাহুবলী, জাতীয় ও আঞ্চলিক সব খবরের কাগজে খুললেই এঁদের নাম দেখা যেত। কোনোভাবে আইন-আদালতের চক্করে পড়ে গিয়ে জেলে ঢুকলেই এঁদের প্রবল বুকে ব্যথা শুরু হত এবং তখন আর পি এম সি এইচ না এসে কী বা গত্যন্তর আছে ! এঁরা থাকতেন ভি আই পি ব্লকে, রাজার মত, এবং সেখান থেকেই নিজস্ব রাজ্যপাট চালনা করতেন, সঙ্গে থাকত নিজস্ব দেহরক্ষী ও খিদমতগার। এক আধজন দীনহীন পুলিশ ঘরের বাইরে ঘুরঘুর করত, তাদের কাজ ছিল বাহুবলীর চেলাচামুণ্ডাদের সঙ্গে গপ্পগাথা ও খৈনী শেয়ার করা। কিন্তু পাহারা নৈব নৈব চ। তাদের ঘাড়েও কি আর একাধিক মাথা?

    এরকম দুএক্জন বাহুবলীর ( নাম বললেই সবাই চিনতে পারবেন) সঙ্গে কয়েকবার মোলাকাত করতে যেতে হয়েছিল। এগুলো সাধারণতঃ রাতের ডিউটিতে ঘটত। ভি আই পি ব্লক থেকে এত্তেলা(কলবুক ) এলে আর এম ও চট করে কোনো জুনিয়র পি জি ট্রেনিকে পাঠিয়ে দিতেন, কেননা তারাই সবচেয়ে সহজলভ্য মুরগী। আর বঙাল সে আয়া হুয়া পিজিটি হলে তো আরোই কথা নেই, তার কোনো ফাইলাম (অর্থাৎ কিনা কাস্ট বেসড গ্রুপ) নেই,অর্থাৎ কোনো গায়ের জোর নেই, কী আনন্দ ! (ফাইলাম কথাটা খুব চলত পাটনায়-কেয়া , ফাইলামবাজি চল রহা হ্যায় !)

    একদিনের কথা মনে আছে।গিয়ে দেখলাম বাহুবলীজী, তিনি আবার নেতাজী-ও বটেন, ধবধবে সাদা চাদর বিছানো তাকিয়ায় আধশোয়া হয়ে বসে আছেন, চারদিকে চেলাদল। পচরপচর করে পান চিবোচ্ছেন,আমাকে দেখে উঠে বসে বললেন-আইয়ে ডাগদরসাব ! বলে মুখ ঘোরালেন , চেলা পিকদানি এগিয়ে দিল। " এক মিনিট রুকিয়ে '-বলে অপর এক চেলাকে কিছু বললেন, সে ঘাড় কাত করে নোট নিল। বোঝা গেল, ওঁর এলাকায় কোনো দাতব্য ধর্মশালায় অর্থ অনুদানের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। " হাঁ, অব শুনিয়ে'-বলে বেশ ভদ্রভাবেই বললেন -ওঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন চরিত্রের সব ব্যথারা হঠাৎ করে ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছে, অতএব ওঁকে আরো মাস খানেক হাসপাতালে না থাকলেই নয়। এদিকে বেয়াড়া কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে কাল অতি অবশ্যই ওঁকে হাজিরা দিতে হবে। কাজেই আমি যেন ওঁর হাসপাতালে থাকার মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়ে দিই। আমি গম্ভীরভাবে সেইসব অলীক ব্যথাদের উৎসসন্ধানে এখানে ওখানে টেপাটিপি করে কিছুক্ষণ পরে ক্ষান্তি দিলাম এবং আরো বিনীতভাবে বললাম- এরকম নির্দেশ দেওয়া আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না, তবে আমি অতি অবশ্যই আমার সিনিয়রের সঙ্গে কথা বলব এবং তাঁকে প্রভাবিত করবার যথোচিত চেষ্টা করব। আশা করিনি ইন ওয়ান পিস সে ঘর থেকে বেরোতে পারব।
    ববিদার সঙ্গে অব্শ্য এক মজার ঘটনা ঘটেছিল। অপর এক বাহুবলী, তিনিও কম নামজাদা নন, সত্যি সত্যি বুকে জল নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। জল বার করবার জন্য যেই না প্যাঁট করে ছুঁচ ফোটানো, বাহুবলীজী অমনি চক্ষু উল্টে অজ্ঞান। ভেসোভেগাল শক। জ্ঞান ফিরলে পরে লজ্জিত হয়ে ( নাকি না হয়েই ? ) বলেছিলেন- ''ডাগদরসাব, আমি কতজনার মুণ্ডু হাসতে হাসতে নামিয়ে দিলাম, আর আপনি যেই একটা ছুঁচ ভুকে দিলেন, অমনি বেহোঁশ হয়ে গেলাম ? হাঁ? ইয়ে কোই বাত হ্যায়?''
  • nina | 79.141.168.137 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ ২১:১৮585130
  • ঃ-((( কিচ্ছু ভাল ছিলনা পাটনায়/ বিহারে?
  • Tim | 12.133.44.30 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:১০585131
  • এপিক !
  • I | 24.96.61.239 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ০০:০৮585132
  • আইন -শৃঙ্খলার অবস্থা ছিল ভয়াবহ। বিশেষ করে আমাদের ঐ এলাকাটার বেশ দুর্নাম ছিল। বেশ কয়েকবার-কখনো ভোরে, কখনো রাতে আমাদের বাড়ির সামনেটায় ছিনতাই হতে দেখেছি। দেখেছি মানে চাক্ষুষ দেখেছি। দোতলার ঘর থেকে। " আরে মাইয়া রে' চীৎকার শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল, উঠে দেখি হাতে বাক্সোঅলা একজন লোকের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে হাত থেকে বাক্স ছিনিয়ে নিচ্ছে। একবার ফটফটে দিনের বেলায় আমাদের উল্টোদিকের দোকানের সামনে একজনকে গুলি করে বাইকে করে চলে গেল। সবক্ষেত্রেই কিন্তু পুলিশ আসত, বেশ ক্ষিপ্রতার সঙ্গে, কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। সন্দেহ হত এরা কি পুলিশের সঙ্গে সাঁট করে অপারেশন চালাত?
    বাড়ির কাছেই একটি ছাত্রাবাস ছিল, সেখানকার ছেলেদের নাম শুনে এলাকার লোক কাঁপত। তারা নাকি ভয়ঙ্কর গুণ্ডা ও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মদতপুষ্ট। মাঝেমধ্যে বাড়ির সামনে দিয়ে বরাতীরা ব্যান্ড বাজিয়ে নাচ-গান করতে করতে যেতেন। পটাকা ফাটত , শূন্যে গুলি ছোঁড়া হত। বোসদা গল্প বলেছিলেন, একবার একজন বরাতী নাকি পেটে পানির আধিক্যের কারণে শূন্যে গুলি ছোঁড়ার বদলে ব্যাণ্ডপার্টির একজন তরুন বাদকের গায়ে গুলি চালিয়ে দেন। বিনা কারণে গুলি নষ্ট হওয়ার জন্য সেই বরাতী পরে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন কিনা, সে কথা বোসদা বলেন নি। তবে সোনপুরের মেলার কথা ব্যাখ্যান করে বলেছিলেন। সোনপুর মেলা নাকি যতটা তার জন্তুজানোয়ার বিক্কিরির জন্য (গরু-মোষ-ছাগল-ভেড়া-কুকুর-গাধা-ঘোড়া -হরেক কিসিমকা পাখী মায় হাতি, উট এমন কি শিম্পাঞ্জি ) বিখ্যাত ততটাই বিখ্যাত তার নাচনেওয়ালী রাণ্ডীদের জন্য। সেইসব রাণ্ডী নৃত্য কেমন হয়, তাতে কী কী হয়, আর সেসব দেখতে দেখতে কিশোর-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সকলের চোখ কেমন গোল্লা গোল্লা হয়ে ঠিকরে বেরিয়ে আসে ও জিভ ঝুলে পড়ে, বোসদা তার তুখোড় বর্ণনা দিতেন। ওমকারা ফিল্মের "বিড়ি জ্বালাইলে '' গানটির সঙ্গে বিপাশা বসুর নাচ ও তার অ্যাম্বিয়েন্স মনে করলে পাঠক তার কিছুটা আন্দাজ পাবেন। বোসদার কাছেই জানা গেল রাণ্ডী নাচ নাকি বিহারের বিবাহবাসরেও বেশ কমনপ্লেস।
  • I | 24.96.61.239 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ০০:৩৮585133
  • নাইট ডিউটি সেরে ভোরবেলা বাড়ি ফেরার সময়ও অতএব বেশ বুক ছমছম করত। এমনই এক ভোরবেলা বাড়ি ফেরার পথে পাটনা শহরটাকে দেখে চমকে গেলাম। কোন ভোজবাজিতে এতদিনের চেনা নোংরা বিশৃঙ্খল শহরটা হঠাৎ করে একদম পাল্টে গেছে। রাস্তাঘাট ঝকঝকে তকতকে, বিশাল বিশাল এলাকা জুড়ে লম্বা লম্বা সুসজ্জিত চাঁদোয়া টাঙানো। ছট পুজোর সকাল। মনে হল, এরা এত সুন্দরভাবে শহরটকে সাজাতে পারে,তাহলে রোজ রোজ সাজায় না কেন !

    গান্ধী ময়দান দেখে বেশ অবাক হয়েছিলাম। "তিনদিকে তিন দেয়াল ঘেরা বাহান্ন রাউণ্ড গান্ধী মাঠে / ভিজল মাটি ভিজল মাটি ভিজুক মাটি রক্তপাতে' মাথায় ছিল বলে আমি বেশ কনফিউজড হয়ে যাই যখন দেখি গান্ধী ময়দান একটি চারদিক খোলা মাঠ। পরমুহূর্তে অবশ্য পুলিশ ব্যারিকেডের কথাটা মাথায় আসে। এই গান্ধী ময়দানেই পাটনা বইমেলার আয়োজন হত। আয়তনে বেশ ছোট এবং বইয়ের স্টলের চেয়ে নাগরদোলা, খেলনা ও খাবারের দোকানই বেশী থাকত। পাটনা ছেড়ে যাবার ঠিক আগে আগে এই বইমেলাতে প্রথমবার আসা এবং সাহিত্য একাদেমি'র স্টলে জীবনানন্দ দাশের ওপর একটি খুব ভালো বাংলা বই খুঁজে পাওয়ার কথা মনে আছে। বইটি আসলে জীবনানন্দ দাশের ওপরে বেশ কিছু কবি-গদ্যকারের প্রবন্ধের একটি সংকলন, সম্পাদনা করেছিলেন শঙ্খ ঘোষ। এখানেই ত্রিদিব সেনগুপ্ত'র " মাল্যবান ঃ একটি না-উপন্যাস '' পড়ে চমকে যাই। শীতের ভোর, ভোরের কমলা আলো, মুখে কমলালেবুর কোয়া এবং বুকের মধ্যে বহুদিন বাদে বাড়ি ফিরবার এবং পাটনাকে ছেড়ে যাবার নিশ্চিন্দি, সঙ্গে বাংলা ভাষা ও জীবনানন্দের প্রলেপ-সব মিলিয়ে সকালটা মায়ায় ভরে গিয়েছিল।
  • I | 24.99.89.138 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ০১:৪৭585135
  • মাঝেমধ্যে চেনা রাস্তা ছেড়ে অন্য রাস্তায় হসপিটাল যেতাম, বিশেষ করে বিকেলের রাউণ্ডের সময়। সেই রাস্তায় একটি কবরখানা পড়ত, কবরখানায় অজস্র দোপাটি ফুলের গাছ, দোপাটি গাছগুলো বেশ সতেজ, রসে টইটুম্বুর, গাঁটে গাঁটে স্বাস্থ্য ফেটে পড়ছে। ফুলও হত তেমনি বিশাল বিশাল, আর রং কী ! সাদা, লাল, গোলাপী, ফিকে লাল, বেগুনী, হরেক রকম রংয়ের পাপড়িতে ভরে থাকত কবরখানার ঘাস। ওকে মৃত্যুফুল বলতাম আমি, মনে মনে। একজন সৌম্য বৃদ্ধ মুসলমান কবরখানায় চেরাগ জ্বালাতে আসতেন, তাঁর আবক্ষলম্বিত সাদা দাড়ি।

    আমাদের লাইব্রেরিটা ছিল গঙ্গার পাড়ে। লাইব্রেরির সামনে বেশ খানিকটা খোলা জায়গা, ফুল গাছ, কাঠ গোলাপ গাছ। গঙ্গার পাড় রেলিং দিয়ে বাঁধানো। রেলিংয়ে ভর দিয়ে গঙ্গার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে সময় কেটে যেত। বড় বড় মালবাহী নৌকা চলেছে গঙ্গার ওপর দিয়ে। অদূরে ঘাটে নৌকা থেকে মাল ওঠানামা চলছে, কেউ চান করে ভেজা গায়ে ঘাটে উঠে আসছে। দূরে দিয়ারার চর, ঘন কাশবন শরৎকালে, ওখানে নাকি অনেক লাশ লুকোনো আছে। জোয়ারের টানে ভাঙা মালসা, গাঁজার কলকে, মূর্তির কাঠামো, জবা ফুলের মালসা ভেসে ভেসে আসত। সন্ধ্যা নামলে নদীর ওপর ঘন অন্ধকার।
    বেবি বলে একটি শান্তস্বভাব মেয়ে আমাদের রান্না করত। বেবির মুখশ্রীতে খুব লাবণ্য ছিল, খুব পরিপাটি সে, মুখ টিপে হাসত। বিহারীদের মধ্যে ওর রান্নার হাত ছিল সত্যি রিমার্কেবল। খুব তাড়াতাড়ি নতুন রান্না শিখে নিতে পারত, শেখবার আগ্রহ ছিল খুব। বেবী একদিন আমায় জিগ্গেস করেছিল, ববি ভাইয়া বলেছে সিগ্রেট খেলে মানুষের ফেঁপরা -( একটি কালো স্পঞ্জকে দেখিয়ে)- নাকি এইরকম কালো হয়ে যায়! হাঁ ভাইয়া, সে কী সত্যি? বেবির মুখে ভাইয়া ডাক খুব মিষ্টি শোনাতো। এই ঘোর রক্ষণশীল সামন্ততান্ত্রিক-পিতৃতান্ত্রিক সমাজে এই মেয়েরা কীভাবে বেঁচে আছে ভেবে বড় মায়া হত।

    পাটনা এসে প্রথম ভালো চায়ের সঙ্গে আলাপ হয়। রাংলি রাংলিয়ট ছিল আমার প্রিয় ব্র্যান্ড। মাঝেমধ্যে কালো কফি। ব্ল্যাক কফি অথবা প্রিয় চায়ের কাপ হাতে নিয়ে পড়তে বসা কিম্বা মার্কেজের বইয়ের পাতা ওল্টানো ছিল আমাদের সেসব কঠিন দিনের মধ্যে সুখের ছোট ছোট ওয়েসিস। মার্কেজও প্রথম পড়া পাটনা এসে। ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার্স অফ সলিচ্যুড। গেঁজে যাওয়া বাংলা সাহিত্যের থেকে একটা বড় রকমের মুক্তি এল বিশ্বসাহিত্যের হাত ধরে। জুজে সারামাগো তখন সদ্য নোবেল পেয়েছেন। অতএব ইয়ার অফ ডেথ অফ রিকার্ডো রেইজ কিনে পড়া হল। টিন ড্রাম পড়ে গ্যুণ্টার গ্রাসের ওপরে পুরো ফিদা।

    মাও নাকি বলেছিলেন ,ভারতে বিপ্লব আসবে বিহারের দরজা দিয়ে। আমি পাটনা এসে সেইসব বিপ্লবের ভ্যানগার্ডদের দেখতে চাইতাম। সেইসব মরনপণ করা মানুষজন যাঁরা ধোঁয়া ওঠা কড়া শীতের রাতে গ্রামের ক্ষেতে-নালায়-আলপথে রাষ্ট্র-ভূস্বামী কম্বাইনের ভাড়াটে গুণ্ডাদের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছেন। দেখতে পেতাম না, সে আমারি শহুরে চোখের দোষ। বড় বেশী বাঙালীয়ানায় নিজের সুরক্ষিত ঘেটোয় সুখে থাকতাম। পি এম সি এইচের প্রাক্তন প্রিন্সিপ্যালদের মধ্যে পরপর বাঙালী নাম দেখে বুক ফুলত তো অবশ্যই। রাজা রামমোহন রায়ের নামে বানানো মেয়েদের স্কুল দেখেও বাঙালী হিসেবে শ্লাঘা-এসব তো হত। বাংলার এককালের এই পশ্চিমপ্রদেশ ছিল প্রকৃত প্রস্তাবে আমাদের একদা কলোনি-সে বোধ রক্তের মধ্যে বইত না কি আর?

    অনেক খারাপ লাগার বোধ ছিল। কিন্তু কোথাও গিয়ে বসলে এদিক-ওদিক থেকে শিকড় তো গজাতেই থাকে, শিকড়ের ধর্মই এই। সন্ধ্যেয় ইভনিং রাউণ্ড সেরে ফিরবার পথে হসপিটালের বটতলায় খচাখচ শব্দে করতাল আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অতি দ্রুতলয়ে কীর্তন শুনে পা দুলে উঠত। মুসলিম মহল্লার বাজারের মধ্যে দিয়ে ফেরবার সময় আতর-ফিরনির গন্ধ, মছুয়াটোলিতে মাছওলার হাঁক-ডাক- অনেক সময় বিশুদ্ধ বাংলায়, হোটেল আনন্দের ভোজ সেরে মৌড়ি চিবোতে চিবোতে ফুরফুরে হাওয়ায় হালকা পায়ে হেঁটে আসা,শহর জুড়ে অগণিত মানুষ, তাদের বিচিত্র পেশা, বিচিত্র বোলি, শহরের বিচিত্র রং, গরীব প্রান্তিক রোগীদের অশেষ সারল্য, বিশ্বাস আর ভক্তি -এইসবই আমার তিন বছরের পাওনা। শেষবারের মত পাটনা স্টেশন ছেড়ে অমৃতসর মেলে উঠে বসলাম যেদিন, স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলাম ঠিকই, কিন্তু বুকের মধ্যে কোথাও একটা ফাঁকা লেগেছিল এও সত্যি। আলবিদা পাটনা ! আর স্টেশন ছেড়ে ভারি লাগেজ কাঁধে হনুমান মন্দিরের দিকে হেঁটে যাওয়া হবে না, কুলির দলবল ছেঁকে ধরবে না, রিক্সায় উঠে বলব না-চলিয়ে জী ভিখনাপাহাড়ী। আর তুলি বোলাবো না আমার করা পিকাসো'র গ্যের্নিকা'র দেয়ালজোড়া কপি'র ওপরে। বোসদা-বৌদি'র সঙ্গে সান্ধ্য আড্ডা আর বসবে না। জয়া চক্রবর্তী নামের আমার সেই সহপাঠিনী-তাকে আমি ডাকতাম দিদিভাই বলে, বড় ভালবাসতাম-তাকে আর কোনোদিনই খুঁজে পাবো না। ফেসবুকেও না।
    বিদায়, পাটনা !
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ১০:৫১585136
  • শেষ নাকি ?
  • siki | 132.177.216.71 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ১১:০৪585137
  • ডাক্তারের হাতে আরেকটা এপিক। টিমকে ক।
  • kumu | 132.160.159.184 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ১৩:৩৫585138
  • মায়াময় লেখা।বড়াইএর সোনার কীবোর্ড হোক আর অনেক ভাল ভাল ছুটি হোক-এই ছুটিটা অসুস্থতাজনিত ছিল,এরম না।
  • de | 69.185.236.52 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ১৭:১৭585139
  • অনেকটা একসাথে পড়লাম -- অদ্ভূত লেখা -- পড়ার পর আলস্যে ছেয়ে যাচ্ছে মগজ, কিচ্ছু লিখতে ইচ্ছে করছে না, কোন কমেন্টও না!
  • a x | 118.207.194.116 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ২০:০৯585140
  • ২৬ তারিখ থেকে আবার পাঁচিল উঠে গেল।
  • nina | 79.141.168.137 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ২২:২২585141
  • অপূর্ব !
    অবশ্য ডাগদার সাহেবের কাছে এর থেকে একটুও কম আশাও করিনা---
    বুঁদ হয়ে পড়ে গেলাম এক সেনসেটিভ চোখে দেখা পাটনা----আমার জন্মের ও বেড়ে উঠা এই শহরের গাথা--অবশ্য ডাক্তারের সময় আমার শহর ছেড়ে দেবার অনেক পর থেকে শুরু------মনে হল
    আহারে আমি যদি তখন থাকতাম তাহলে ডাক্তারের পাটনার দিনগুলো এত কঠিন হতে দিতেম না! ঐ ঝুনো নরকোল বিহারীদের ভিতরকার কিছু শাঁস ও মিঠে পানির ও হদিস দিতেম--
    যাইহোক ---
    মনে ভরপুর আনন্দ নিয়ে আর একটি নিঁখুত লেখার সঙ্গে একাত্ম হলাম।
  • I | 24.99.71.153 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:৪১585142
  • আরে না না, শেষ হয় নি।
    নীনাদি, তুমি একটু লেখো না কেন !
    আর অক্ষদা'র পোস্টের মানে বুইলাম না।
  • a x | 138.249.1.198 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:৫৫585143
  • মানে হল তার আগে অবধি লেখক লিখে যাচ্ছিল। তারপর থেকে কেমন সচেতন হয়ে গেল।
  • nina | 79.141.168.137 | ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ ০০:২৮585144
  • কি যে বল ডাক্তার-
    -সবাই কি লিখতে পারে--
    আকাশ জোড়া তোমার দিকে তাকিয়ে আছে!!!

    তবে কখনো হাতে সময় পেলে কিছুমিছু বলার ইচ্ছে রইল----এই পাটনার/ বিহারের পুরোনো বাঙালীরা---তাদের অকৃতিম বন্ধু কিছু বিহারীরা--যাঁদের বড় কাছ থেকে দেখেছি বাবা-মার হাত ধরে----যখন বিহারী বাঙালী মাঝে ছিলনা দেয়াল--সবাই তখনও একসঙ্গে সারে জহাঁ সে অচ্ছা হিন্দুস্তাঁ হামারা গাইত--সেসব দিন এখন কেমন যেন আনরিয়াল হয়ে গেছে। অ্যালাস!

    তোমার পরবর্তী অধ্যায়ের অপেক্ষায় রইলাম-----
  • nina | 79.141.168.137 | ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ ০০:৩০585147
  • * আকাশ জোড়া লেখা
    তোমার দিকে তাকিয়ে আছে
    সবাই কি লিখতে পারে----
  • nina | 79.141.168.137 | ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ ০০:৩০585146
  • * আকাশ জোড়া লেখা
    তোমার দিকে তাকিয়ে আছে
    সবাই কি লিখতে পারে----
  • Suhasini | 202.165.213.236 | ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ ২০:২৮585148
  • এতদিন অবধি জমিয়ে রেখে দিয়েছিলাম এক সাথে পড়ব বলে - মন ভরে গেলো।
  • aka | 85.76.118.96 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৩ ০৫:৫৭585149
  • বিগাইয়ের এই ঝরঝরে লেখার স্টাইলটা বেশ। ভালো লাগল।
  • dd | 132.167.0.98 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৩ ১০:২৬585150
  • না। লিখেই দি।
    যেমতি আকা লিখলো। মানে মীন করলো এই "ঝরঝরে'স্টাইলটা ভালো। সেটাই আমার মুল প্রতিপাদ্য।বেশ খাসা তরতরিয়ে লেখা। এমন কি চায়ের সাথেও পড়া যায়। বেশ বেশ।

    এই পর্যন্ত্য। আর কিছু না।

    কিন্তু এতে ইন্দোদা কই? এক্কেবারে নেই। সেই চিতাকলস ভেঙে দুখানিয়ার ধারা, একেবারে লাস' মোমেন্টে কোনো নতুন শব্দ যুগলদিয়ে পাঠককে মুচড়ে দেওয়া? ইঃ? মিসিং,মিসিং,বিলকুল মিসিং।

    এরম লেখা তো সবাই ল্যাখে,অমল,বিমল,যদু,মধু, শাহরুখ খান ..... সব্বাই। এতে ই আহ্লাদে ডিগবাজী খেতে আমি রাজী নই।

    ইন্দোদার জং বেশ গভীর পৌঁছেছে। আরো ডন বৈঠক না করলে কাটবে না। কয়ে দিলাম।
  • lcm | 34.4.162.218 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৩ ১১:০৬585151
  • ধুস, ডিডিদা কিসব বলছে। সবাই এমন লেখে না, অবশ্য শারুখের লেখা পড়ি নি।
  • dd | 132.167.0.98 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৩ ১১:১৩585152
  • সবাই?
    অমল = অমল পালেকার। বিমল =বিমল মিত্র,যদু= যাদব চন্দ্র দে,মধু= মধুসুদন দত্ত। এঁয়ারা খারাব লেখক? যদুর পাটিগণিতের বই বোধয় এখনো চলে।
  • I | 24.99.154.50 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২২:২৫585153
  • ডিডিদা। একটু ঝরঝরে গদ্য লিখতে ইচ্ছে হল আসলে। নইলে কেমন স্টিরিওটাইপ হয়ে যায় না? লোকে ছি ছি করে।
  • dd | 132.167.4.33 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:১০585154
  • বেশ করেছিস।

    সব সময়েই যে তোকে ইন্দোদার মতোমই লিখতে হবে, লিখতেই হবে এ মন বন্ড সাইন করবি ই বা ক্যানো?

    তবে সেরম ভিন্টেজ ইন্দোদা না হলে পেটও ভরে না। সেটাও সত্তি।
  • aka | 178.26.203.155 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:১৬585155
  • না না ডিডিদার সাথে ডিসেগ্রি

    "সাদা, লাল, গোলাপী, ফিকে লাল, বেগুনী, হরেক রকম রংয়ের পাপড়িতে ভরে থাকত কবরখানার ঘাস। ওকে মৃত্যুফুল বলতাম আমি, মনে মনে। একজন সৌম্য বৃদ্ধ মুসলমান কবরখানায় চেরাগ জ্বালাতে আসতেন, তাঁর আবক্ষলম্বিত সাদা দাড়ি।"

    আমি জীবনে লিখতাম না এই লাইনটা। এটাই সিগনেচার, আমার মনে হয়। অন্য স্টাইলটা অন্যরকম। কিন্তু ঝরঝরে কি কিঞ্চিৎ প্যাঁচানো সেটা বড় নয়, লেখকের দেখার চোখটাই আসলে ডিফারেন্স। আমার ব্যক্তিগতভাবে ঝরঝরে লেখা ভালো লাগে, অ্যাটেনশন স্প্যান কম বলে।ঃ) তবে নিহত অশ্বও ভালো লেগেছিল। ইত্যাদি।
  • Yan | 161.141.84.239 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:১৮585157
  • সেই ছিলকা ছিলকা নিমের ফুল, বাসন্তী হাওয়ার থিরথির, দিকুভাষার সম্প্রচার, ফিটাস প্যাপিরাসিয়াস ---এইসব আশ্চর্য শব্দমোচড় তো ইন্দোদাদার লেখা ছাড়া মেলে না!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন