এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • প্রিয় কবিতা

    Riju
    অন্যান্য | ১৮ জুলাই ২০০৬ | ৩৯১১৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • m | 173.26.17.106 | ৩০ নভেম্বর ২০০৯ ২০:৩৯633253
  • * শঙ্খ ঘোষ
  • tkn | 122.161.63.245 | ৩০ নভেম্বর ২০০৯ ২২:৫৮633254
  • ইন্দুদি, গৌরাঙ্গ ভৌমিকের কোনো কবিতা পড়িনি কখোনো। আরো আছে? পড়াবে? এটা অসম্ভব ভালো লাগল.. মানে, বসন্তবেদনায় এ আবদার করতেও কিন্তু কিন্তু লাগে, তবু..
  • ranjan roy | 115.184.97.206 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ০০:০৯633255
  • আমি আজকে ভীষণ নস্টালজিয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছি। সেই ষাটএর দশকে ক্লাস সেভেন এ বরানগরের এক বামপন্থী কিন্তু রবীন্দ্রভক্ত মাস্টারমশাই আমাকে একটু একটু করে কবিতাকে ভালবাসতে শিখিয়েছিলেন। তারপর জীবন যুদ্ধে হেরে যান। স্কুলের ক্যাশ থেকে সামান্য ক'টি টাকা সরিয়ে আর মেলাতে পারেন নি। আমার মনে তাঁর জন্যে শ্রদ্ধা, তার চেয়ে বেশি ভালবাসা আজও অম্লান।
    যাকগে, আমি বলতে চাইছি সেই সময় বাংলা কবিতা বাঁক নিচ্ছে। জীবনানন্দ অনন্যো, যেন বাংলার কোলরিজ। সুধীন দত্ত,সমর সেন-- বিষ্ণু দের লেখায় এলিয়ট-এজরা পাউন্ড পড়া পাশ্চাত্ত্য মননের ছাপ বড় প্রবল। কিন্তু সুকান্তের থেকেশুরু হয়ে যে বামপন্থী কবিতার ধারা দেবেশ দাস, মঙ্গলাচরণ, যুগান্তর চক্রবর্তী, রাম বসু হয়ে সুভাষ মুকুজ্জের সহজিয়া শৈলীতে উত্তরিত হল তার ষাটের দশকের রূপ অন্যরকম ছিল।
    তখনকার সেইধারার অনেক মাইনর কবিদের মধ্যে এক্‌জন আমার স্যার---সমীর রায়।

    আজকে আমি ওঁর লেখা একটি কবিতা স্মৃতি থেকে লিখছি।
    দেখুন, ওমনি ধরণের শব্দপ্রয়োগ আজকাল কেউ করে না। যেন পুরোনো আলমারীর তালা খুললাম।
    আর দেখুন, তখন সোভিয়েত দেশের জন্যে আমাদের পূর্বসূরীদের একধরণের রোমান্টিক মুগ্‌ধতা ছিল।

    নতুন মানুষ
    ---------------------
    তোমারে দেখেছি আমি নেভা তটে ফিন উপসাগরের মুখে,
    যেখানে দিনের আলো নেভে নাকো পৃথিবীর বুকে।
    সেই আধো সন্ধ্যা লগ্নে গোধূলির নেভা নদী যেথা কম্পমান,
    তোমায় দেখেছি সেথা , পৃথিবীর নবাগত -হে নওজোয়ান।
    দেখেছি সে রণতরী, যেথা লালপতাকার প্রবল বিদ্রোহ,
    জারের প্রাসাদে যেথা পড়েছিল অগ্নিগোলা বিষম দু:সহ
    রক্তক্ষত ইতিহাস
    পয়ে পায়ে কি দুর্দান্ত দুরন্ত মিছিল!
    কে রুধিবে গতি তার?
    দৃপ্ত মুখে সূর্য্যালোক করে ঝিলমিল।

    নীপার নদীর বাঁকে দেখেছি তোমার মুখে
    স্নিগ্‌ধ শ্যামলিমা;
    দিগন্ত প্রান্তরব্যাপীফসলের মাঠে যেন
    নাই কোন সীমা।
    কসাকের অশ্বখুরে ধূলি উড়ে ডন নদী যেথায় স্তিমিত,
    চাবুকে জর্জরগাত্র এতদিন যে মানুষেরা
    ছিল মৃত্যুভীত।
    তারা যেন আয়ু পেল, আশা পেল,
    জীবনের বাঁচিবার আশা।
    শহরে বন্দরে পেল সর্বহারা মানুষের জয়ধ্বনি ভাষা।

    শিরদরিয়র রেখা পার হয়ে দেখেছিনু সেই রণভূমি,
    তাতার, মোঙ্গল আর তৈমূরের করধৃত তরবারি চুমি।
    কোথায় সমরখন্দ? কোথা জাগে
    বোখারার বর্বর প্রহরী?
    অতীতের ইতিবৃত্ত আজ যেন বোর্খাঢাকা নির্জীব শর্বরী।

    মধ্যএশিয়ার বন্ধু, জাগিয়াছ বধ্যভূমি হতে?
    দীর্ঘ চিনারের ছায়ে তোমারে দেখেছি আমি পামীরের পথে।
    পূর্বগিরি অরণ্যেরে ভেদ করি বহে যেথা নীল ডানিয়ুব,
    মধ্যযুগ বর্বর সামন্তেরা একদিন মেতে ছিল খুব।
    বোতলে ডুবিত যারা নারীসঙ্গে রণরঙ্গে ঘোর মাতলামি,
    রাজায়প্রজায় যুদ্ধে দিত যারা জীবনের আক্কেল-
    সেলামি।
    তোমারে দেখেছি সেথা নীলচক্ষু ড্যানিয়ুব তীরে,
    নয়াগণতন্ত্র দেশে স্বপ্ন যেথা আসে আজ দুই তীর ঘিরে।
    পাখের পালকে যেথা ঘুম নামে কিষাণের খামারে খামারে,
    সেই পূর্ব ইউরোপে রক্তাভ আপেলকুঞ্জে দেখেছি তোমারে।
    আমি এক পর্য্যটক,
    এসেছিনু দেশে তব, দেখে গেনু তোমাদের নব নব জনপদে জীবনের কি আশ্চর্য্য সাধনা গভীর।
    তোমরে প্রণাম কতি-- নবযুগ সাধনার হে বিপ্লবী বীর!

    পুরানো এ পৃথিবীর ইতিহাস ঝরে পড়ে জীর্ণ পত্র সম,
    এই সিন্ধু, এই গঙ্গা, এই পদ্মা তীরে
    হোক নবজন্ম মম।।
  • Sayantan | 159.53.46.141 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ০০:২৩633256
  • গোটা কবিতাটা জোরে জোরে পড়তে ইচ্ছে করছে। একলা।
  • tkn | 122.161.62.100 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ১৩:৩১633257
  • একটি মৃত্যুদৃশ্য -

    ও: সেই কখন থেকে নাড়ি টিপে বসে আছি
    এখনও ভীতু ধুকপুক!
    এতবার বাইপাস করলে তুমি
    এত ছুরি কাঁচি গজাল চালালে

    আগে থাকতেই ফ্রিজে এতগুলো যুবকের
    টাটকা কলজে ঢুকিয়ে রেখেছে
    একবা প্রাণাপাখিটা ফুরুত হলেই
    ওদের কারোর একটার মধ্যে আবার ঢুকিয়ে দেব

    শিয়রে গঙ্গাজলও রেডি
    তবু তোমার প্রতি প্রেমটা মরতে -

    বেহায়া।

    উজবুক।

    এত সময় নিতে হয়??

    - অঞ্জনা চক্রবর্তী

  • tkn | 122.161.62.100 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ১৩:৩৩633258
  • রেখেছি**
    একবার**
  • tkn | 219.64.11.35 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ১৪:১৮633259
  • প্রাণপাখিটা **
  • ranjan roy | 115.184.93.68 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ২২:২৬633260
  • সায়ন্তন,
    ঠিক বলেছ। সেই ভদ্রলোক তখনকার দিনে একটি ""অল্‌ বেঙ্গল"" আর একটি ""সারা বাংলা'' আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় প্রাইজ পাওয়া।
    আমাদের শেখাতেন, আজকের বিচারে হয়তো সামান্য নাটকীয়। কখনো মুখোমুখি আড্ডা দেবার সুযোগ হলে এটি আবৃত্তি করে শোনাবো।
    আর আজকেখেয়াল হল।
    "" নীপার নদীর বাঁকে দেখেছি তোমার মুখে--''র ঠিক আগে চার লাইন বাদ গেছে।
    "" মস্কোভা নদীর বুকে রাজ্য গেল,শান্ত্রী গেল,
    গেল সিপাহী -লস্কর।
    বরফে ডুবিয়া মরে রাজগুরু, অভিজাত, জুয়াড়ি-তস্কর।
    ক্রীতদাস তোলে মাথা, ভূমিদাস আসে-
    দুই শীর্ণবাহু মেলি,
    এল নারী নবনেত্রী, মধ্যযুগ অন্ধকার কারাগার ফেলি।''
    এরপরে নীপার নদীর বাঁকে-- খাপ খাচ্ছে।

    আরেকটি আবৃত্তি যোগ্য ওই ধারার কবিতা দিচ্ছি। একজন মেজর কবি--প্রেমেন্দ্র মিত্র। হ্যাঁ, ঘনাদা সিরিজ লিখে অমর।
    তবে আমার স্মৃতি খুব বিশ্বাসযোগ্য নয়। কেউ শুদ্ধ এবং পূর্ণপাঠ দিলে আনন্দিত হব।
  • ranjan roy | 115.184.93.68 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ২২:৪৭633261
  • ফেরারি ফৌজ
    ----------------
    নীল নদীতট থেকে সিন্ধু উপত্যকা,
    সুমের,আক্কাড আর গাঢ় পীত হোয়াংহোর তীরে।
    বারবার নানা শতাব্দীর আকাশ উঠেছে জ্বলে
    ঝলসিত যাদের উষ্ণীষে,
    সেইসব সেনাদের চিনি, আমি চিনি।
    --সূর্যসেনা তারা;
    রাত্রির সাম্রাজ্যে আজও সন্তর্পণে ফিরিছে ফেরারি।
    মাঝরাতে একদিন বিছানায় জেগে উঠে বসে
    সচকিত হয়ে তারা শুনেছে কোথায় শিঙা বাজে।
    --""সাজো, সাজো"" ডাকে কোন অলঙঘ্য আদেশ।
    জনে জনে যুগে যুগে বার হয়ে এসেছে উঠানে;
    আগামী দিনের সূর্য দেখেছে আঁধারে
    গুঁড়ো গুঁড়ো করে সারা আকাশে ছড়ানো।
    সহসা জেনেছে তারা-
    এইসব সূর্যকণা তিল তিল করে বয়ে নিয়ে যেতে হবে কালের প্রান্তরে, রাত্রির শাসনভাঙা ভয়ংকর চক্রান্তের গুপ্তচর রূপে।

    একএকটি সূর্যকণা তুলে নিয়ে বুকে
    দুরাশার তুরঙ্গে সওয়ার,
    দুর্গম দুরন্তমরু পার হবে বলে
    তারা সব হয়েছে বাহির।
    সুদূর সীমান্ত হায় তারপর সরে গেছে প্রতি পায়ে পায়ে।
    গাঢ় কুজ্ঝটিকা এসে মুছে দিয়ে গেছে সব পথ।
    ভয়ের তুফানতোলা রাত্রির ভ্রূকুটি হেনেছে হিংসার বজ্র,
    দিগ্বিদিক ভুলানো আঁধারে
    কে কোথায় গিয়েছে হারিয়ে,
    রাত্রির সাম্রাজ্য তাই এখনো অটুট।

    ছড়ানো সূর্যের কণা জড়ো করে নিয়ে
    যারা জ্বালাবে নুতন দিন,
    তারা আজও পলাতক, দলছাড়া, ঘোরেফেরে দেশে আর কালে।
    তবু সূর্যকণা বুঝি হারাবার নয়,
    কত ম্লান শতাব্দীর প্রহর ধাঁধিয়ে
    থেকে থেকে ঝলসিত
    কোথা কোন লুকানো কৃপাণে,
    ফেরারি সেনার।

    এখনো ফেরারি কেন?
    ফেরো সব পলাতক সেনা,
    সাতসাগরের পারে ফৌজদার হেঁকে যায় শোনো।
    --- আনো সব সূর্যকণা রাত্রিমোছা চক্রান্তের প্রকাশ্য প্রান্তরে।

    এবার অজ্ঞাতবাস শেষ হল ফেরারি ফৌজের।।
    (প্রেমেন্দ্র মিত্র)
  • I | 59.93.221.11 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ২২:৫১633263
  • বাপ্পো রে ! রঞ্জনদা, এত মনে থাকে কী করে !
  • I | 59.93.221.11 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ২২:৫৫633264
  • বই মিলিয়ে দেখলাম , শুধু একটামাত্র শব্দ ভুল হয়েছে। "অলঙ্ঘ্য' না হয়ে "অলক্ষ্য' হবে।

    পায়ের ধুলো দেবেন?
  • ranjan roy | 115.184.93.68 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ২৩:১৮633265
  • ডাক্তার,
    আসলে ওই কবিতাটা ক্লাস এইট থেকে বহু জায়গায় আবৃত্তি করেছি, তাই!:)))))))
  • ranjan roy | 115.184.93.68 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৯ ২৩:২১633266
  • তেকোণা স্যার!
    অঞ্জনা চক্কোত্তিকে বলুন-- আমার জন্যে কেউ ওরকম কবিতা লিখলে আবার প্রেমে পড়ে মরতে রাজি!
  • tkn | 122.173.176.114 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ০০:২৪633267
  • রঞ্জনদা, অঞ্জনার উত্তর হয়ত এমন হতে পারে -

    আমার চোখের তারায় সেই বাঘিনীর
    ওঁত পেতে থাকা
    দেখে ফেলার পর থেকেই
    তুমি ভয়ে আর আমার চোখে
    চোখ ফেল না

    পাছে সেই উপোসী বাঘিনী
    ঝাঁপিয়ে পড়ে তোমার ঘরে
    আগুন দেয় তোমার চালে
    স্ত্রী পুত্র নিয়ে পালাতে ভুলে যাও তুমি

    পাছে ঘুম ভাঙে তোমারও উপোসী বাঘের -
  • Sayantan | 159.53.110.140 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ০২:১১633268
  • তারা ফাটায় ব্রহ্মতালু
    জ্ঞান হারানো রাস্তা ঢালু
    অতল থেকে ধোঁয়া পাকায়
    জ্ঞান হারানো গতি চাকায়
    খাদের নীচে, নদীর তলায়
    আরো কি খাদ সোনা গলায়
    জ্ঞানহারা সেই আগুন স্রোতে
    পার হতে পার হতে হতে
    কোথায় এলি, পারের ওপার
    কী অন্ধকার, কে অন্ধকার
    ফিরে এলো হারানো শ্বাস
    দৃষ্টি এলো, কি দেখতে পাস
    ঝাপসা কুয়ো, দুপাশে ঘাস
    শোয়ানো ঘাস, দাঁড়ানো ঘাস
    শোয়ানো ঘাস, দাঁড়ানো ঘাস

    - শক্তি চট্টোপাধ্যায়
  • vikram | 86.42.4.243 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ০৩:৪০633269
  • এইটা হেবি তো।

  • Sayantan | 159.53.110.140 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ০৩:৪৮633270
  • "... ফিরে আসছে হারানো শ্বাস'। "এলো'-টা ভুল মনে হয়।
  • vikram | 86.42.4.243 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ০৪:০০633271
  • অফ কোর্স
  • Sudipta | 122.169.162.184 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ০৯:৫৬633272
  • যেন কোনোদিন : শঙ্খ ঘোষ

    যেন এই পৃথিবীতে কেউ কোনোদিন
    প্রেম বলে কোনো ঋণ রাখেনি কোথাও,
    যেন কেউ কোনোদিন কিশোর শিশির
    বুকে নিয়ে পুব সাগরের নীল পাড়ে
    দেখেনি প্রথম নারী যেন কোনোদিন।
    নারী যে চোখের কোণ হৃদতটমূলে
    ভাসায় দু-ধার, যেন কেউ কোনোদিন
    তার মুখ রেখে দিয়ে আসেনি কখনো
    গাঢ়তল ভুবনের গহন শিলায়!
    যেন শুধু জলস্তম্ভে ছুটে যায় ফুল
    ঘট ভেঙে ভেসে যায় সিঁদুরের নাম
    আবর্ত বাজায় বুকে বুকে খর তালি -
    যেন কেউ কোনোদিন এমন নীরব
    পল্লবের মত নত প্রেমিক ছিল না!

    (কাব্যগ্রন্থ: দিনগুলি রাতগুলি)

  • Sudipta | 122.169.162.184 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ১০:০৩633274
  • ক্রমাগত : শঙ্খ ঘোষ

    এইভাবে হতে থাকে ক্রমাগত
    কেউ মারে কেউ মার খায়
    ভিতরে সবাই খুব স্বাভাবিক কথা বলে
    জ্ঞানদান করে

    এইদিকে ঐ দিকে তিন চার পাঁচ দিকে
    টেনে নেয় গোপন আখড়ায়
    কিছু-বা গলির কোণে অ্যাসফল্ট রাজপথে
    সোনার ছেলেরা ছারখার

    অল্প দু-চারজন বাকি থাকে যারা
    তেল দেয় নিজের চরকায়
    মাঝে মাঝে খড়খড়ি তুলে দেখে নেয়
    বিপ্লব এসেছে কতদূর

    এইভাবে, ক্রমাগত
    এইভাবে, এইভাবে
    ক্রমাগত

    (কাব্যগ্রন্থ: আদিম লতাগুল্মময়)

    প্রথম কবিতাটা স্মৃতি থেকে লিখেছি (এটা আমার বিশেষ একটা পছন্দের কবিতা), কোনো শব্দে ভুল থাকলে কেউ একটু শুধরে দিও; দ্বিতীয়টা ডায়রী থেকে, কিন্তু যতিচিহ্‌ণ গুলো নিয়ে ঠিক নিশ্চিত নই, কেউ যদি বলে দাও। তবে পড়লে মনে হয়, ঠিক ঠাক হতে-ও পারে।
  • san | 123.201.53.3 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ১০:১০633275
  • সুদীপ্ত, প্রথমটা নিহিত পাতালছায়ার কবিতা না? আমারও খুব প্রিয়।
  • I | 59.93.217.48 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ১২:১৪633276
  • আচ্ছা, বহুরূপী'র মিস্টার কাকাতুয়া-তে এই কবিতাটা("ক্রমাগত') ব্যবহার হয়েছিল না?
  • I | 59.93.245.4 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২০:৪৭633277
  • কষ্ট দিয়ে কষ্ট দিয়ে রান্না কাজ ঘরমোছার পাকে
    আমি বেঁধে রেখে দিই আমার ঐ দু:খী মহিলাকে
    তাকে ছেড়ে চলে যাবো? জায়গা নেই আমার যাবার
    এ বয়সে সব ছেড়ে সে-ই বা কোথায় যাবে আর?
    দুজনে দুঘরে থাকি, মাঝখানে পলকা এক সাঁকো
    পিঠে ইস্কুলের ব্যাগ, নতুন রঙের বাক্সো হাতে
    স্নেহ ছুটোছুটি করে এপার ওপার করছে, আর
    প্রতিদিন মরে যাওয়া পলকা সাঁকোর ঐ কাঠে
    তার দাপাদাপি করা ছোট ছোট পায়ের আঘাতে
    ফুল ফুটে ওঠে, ফুল ফুটে উঠতে থাকো....

    (কষ্ট দিয়ে কষ্ট দিয়ে : জয় গোস্বামী)
  • I | 59.93.245.4 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২০:৫৪633278
  • কখনো চোখের জল ফেলতে নেই ভাতের থালায়
    তাহলে সে-জল গিয়ে শ্রীভগবানের হাতে পড়ে
    হাতে ফোস্কা পড়ে যায়, তিনিও তো খেতে বসেছেন
    তাঁর সেদিন খাওয়া হয় না। তিন দিন হাতে ব্যথা থাকে।
    শ্রমভাগ্যে যা এসেছে দুমুঠো চারমুঠো তাতে খুশি থাকতে হয়
    খুশি যদি না-ও থাকি তবুও ভাতের সামনে বসে
    অন্তত ভাতের সামনে বসে আর অভিযোগ করতে নেই তাঁকে
    এ কথাটা কতবার, কতভাবে বলেছি, তোমাকে?

    তুমি তা শোনোনি আর আমিও শুনি না-দিন যায়....
    খেতে বসি, দায়ী করি, দোষ ধরি পরস্পর, অশ্রু পড়ে
    ভাতের থালায়

    (কখনো চোখের জল-জয় গোস্বামী)
  • ranjan roy | 115.184.18.185 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২১:০২633279
  • ইন্দো-সায়ন্তন,
    আরও চাই। আরও আরও।

    ইন্দ্রাণী( সিডনি),
    BL এর মজলিশে একবার শক্তি চাটুজ্জের"" শিকড়-বাকড়'' গোছের একটা দারুণ কবিতা তুলে দিয়েছিলে। সায়ন্তনের টা পড়ে মনে হল তুমি যদি ওই কবিতাটা এখানে কোট কর দারুণ হবে।
  • I | 59.93.245.4 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২১:৪৪633280
  • কে মেয়েটি হঠাৎ প্রণাম করতে এলে?
    মাথার ওপর হাত রাখিনি
    তোমার চেয়েও সসংকোচে এগিয়ে গেছি
    তোমায় ফেলে

    ময়লা চটি, ঘামের গন্ধ নোংরা গায়ে,
    হলভরা লোক, সবাই দেখছে, তার মধ্যেও
    হাত রেখেছ আমার পায়ে

    আজকে আমি বাড়ি ফিরেও স্নান করিনি
    স্পর্শটুকু রাখব বলে
    তোমার হাতের মুঠোয় ভরা পুষ্করিণী

    পরিবর্তে কী দেব আর? আমার শুধু
    দুচার পাতা লিখতে আসা

    সর্বনাশের এপার ওপার দেখা যায় না
    কিন্তু আমি দেখতে পেলাম, রাঙা আলোয়
    দাঁড়িয়ে আছে সে-ছন্দ, সে কীর্তিনাশা!
    অচেনা ঐ মেয়ের চোখে যে পাঠাল
    দু'এক পলক বৃষ্টিভেজা বাংলাভাষা।

    (বৃষ্টিভেজা বাংলাভাষা : জয় গোস্বামী)

  • I | 59.93.245.4 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২১:৪৯633281
  • হাঁ-করা উচ্চাশামুখ, আমি তার মুখের ভেতরে
    দেখেছি দাঁতের সারি। আমি তার মুখের ভেতরে
    দেখেছি আলোর মালা। আমি তার মুখের ভেতরে
    মুখ ঢুকিয়েছি, মুখ ওঠালেই মাথা ঠুকে যায়
    লোহাশক্ত টাগরায়, প্রতিষ্ঠার পচা গন্ধ নাকে আর আমার গলার
    নলিতে ঠেকানো দাঁতে বাঁকানো ক্ষুরের মত ধার

    হাঁ-করা উচ্চাশা তার মুখ বন্ধ করেছে এবার
    মুখের ভেতরে মুণ্ড রয়ে গেল, মুণ্ডহীন ধড়
    উঁচুনিচু ঢাল বেয়ে ধাক্কা খেতে খেতে নামছে-
    নামছে এই শহরে আবার !

    (হাঁ-করা উচ্চাশামুখ)
  • Sayantan | 159.53.78.143 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২১:৫৩633282
  • আমার কাছে এখনো পড়ে আছে
          তোমার প্রিয় হারিয়ে যাওয়া চাবি
    কেমন করে তোরঙ্গ আজ খোলো

    থুৎনি 'পরে তিল তো তোমার আছে
          এখন? ও মন, নতুন দেশে যাবি?
    চিঠি তোমায় হঠাৎ লিখতে হলো

    চাবি তোমার পরম যত্নে কাছে
          রেখেছিলাম, আজই সময় হলো
    লিখিও, উহা ফিরৎ চাহো কিনা

    অবান্তর স্মৃতির ভিতর আছে
          তোমার মুখ অশ্রু-ঝলোমলো
    লিখিও, উহা ফিরৎ চাহো কিনা

    - শক্তি চট্টোপাধ্যায়
  • I | 59.93.245.4 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২১:৫৭633283
  • কোন রাস্তা ডাইনে রইল, কোন রাস্তা চলে গেল বাঁয়ে
    মনে করে রেখো কিন্তু আর ঝগড়া কোরো না দু ভায়ে
    ছুটি হলে বাড়ি এসো, মা বলেন হারুর রিক্সায়-
    হারুর এবেলা কাজ, তাই দু ভাই নিজেরাই যায়
    ইস্কুলে-নিজেরা খায় বুড়ির চুল, চালতার আচার
    লাল বরফ, তিলখাজা এবং পড়া না পেরে মার
    দুভাই অক্লেশে খায় সারাদিন যা কিছু বারণ
    যা কিছু নিষেধ খায় দিনভোর, কেন না এমন
    সুযোগ কি বারবার আসে? সমস্ত নিষেধ দু পকেটে
    ঢুকিয়ে বাড়িতে ফেরে দুই ভাই, রিক্সায় না, হেঁটে;
    দু ভাই দু পথে ফিরছে, দুইটি কান্তার, গোলকধাঁধা
    দুরকম বাঁকাপথ, দু রাস্তায় দুরকম কাদা
    দূরে সন্ধ্যে হয়ে আসছে, পায়ে শত্রু, সন্দেহ, কাঁকর
    দুজনে দু মাঠ থেকে টেনে তুলছে বাসস্থান, কাদামাখা ভাত ও কাপড়।

    (কোন রাস্তা ডাইনে রইল)
  • Sayantan | 159.53.78.143 | ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ ২১:৫৯633285
  • তোমাকে পেতেই হবে শতকরা অন্তত নব্বই (বা নব্বইয়ের বেশি)
    তোমাকে হতেই হবে একদম প্রথম
    তার বদলে মাত্র পঁচাশি!
    পাঁচটা নম্বর কম কেন? কেন কম?
    এই জন্য আমি রোজ মুখে রক্ত তুলে খেটে আসি?

    এই জন্যে তোমার মা কাক ভোরে উঠে সব কাজকর্ম সেরে
    ছোটবেলা থেকে যেতো তোমাকে ইস্কুলে পৌঁছে দিতে?
    এই জন্য কাঠফাটা রোদ্দুরে কি প্যাচপ্যাচে বর্ষায়
    সারাদিন বসে থাকতো বাড়ির রোয়াকে কিংবা পার্কের বেঞ্চিতে?

    তারপর ছুটি হতে, ভিড় বাঁচাতে মিনিবাস ছেড়ে
    অটো-অলাদের ওই খারাপ মেজাজ সহ্য করে
    বাড়ি এসে, না হাঁপিয়ে, আবার তোমার পড়া নিয়ে
    বসে পড়তো, যতক্ষণ না আমি বাড়ি ফিরে
    তোমার হোমটাস্ক দেখছি, তারপরে আঁচলে মুখ মুছে
    ঢুলতো গিয়ে ভ্যাপসা রান্নাঘরে?

    এই জন্যে? এই জন্যে হাড়ভাঙা ওভারটাইম করে
    তোমার জন্য আন্টি রাখতাম?
    মোটা মাইনে, ভদ্রতার চা-জলখাবার
    হপ্তায় তিনদিন, তাতে কত খরচা হয় রে রাস্কেল?
    বুদ্ধি আছে সে হিসেব করবার?

    (টিউটোরিয়াল - জয় গোস্বামী)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন