এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • বিজ্ঞান-মনস্কতার অ-আ-ক-খ # দুই

    Ashoke Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ১৩৯০৫ বার পঠিত
  • [গ] বিজ্ঞানমনস্কতা বলতে কী বোঝায়

    এপর্যন্ত পড়ে কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, বিজ্ঞান-মনস্কতার কথা বলতে বসে আমি স্রেফ ভূগোল আর ইতিহাস নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম কেন? বিজ্ঞান নিয়ে এখন অবধি একটাও কথা তো পাড়িনি। বিজ্ঞান বাদ দিয়ে বিজ্ঞান-বোধ হয় নাকি? বিজ্ঞান মানে বিশেষ জ্ঞান যা পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্তের উপর প্রতিষ্ঠিত—এই সব কথা তো বলছি না। বিজ্ঞান মানে সব কিছুকে যুক্তি তর্ক করে বিচার বিশ্লেষণ করে তবে গ্রহণ করতে হবে—সেই সব পুরনো কাসুন্দির কথা তুলছি না তো? ধান ভানতে বসে শিবের গীত গাইছি কেন?

    সেই কথাই এবার বলব। তারও কারণ আছে।

    বিজ্ঞান-মনস্কতা মানে নিছক বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সচেতনতা নয়, প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষতা বা সপ্রতিভতা নয়। বিজ্ঞান-মনস্কতা মানে হল বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তি, যুক্তিশীল মননচর্চা, বৈচারিক চিন্তাকৌশল। ব্যাপারটা এমন নয় যে শুধু বিজ্ঞানের ছাত্রদেরই বিজ্ঞান-মনস্ক হওয়া প্রয়োজন, অন্য বিষয়ের ছাত্রদের বিজ্ঞান-বোধ না থাকলেও চলবে। বিজ্ঞানের কোনো বিষয় নিয়ে পড়ি বা না পড়ি, শিক্ষকতা গবেষণা করি বা না করি, সবাইকেই সব কিছু বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তির আধারে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। বিজ্ঞান আর বৈজ্ঞানিক মানসিকতা পরস্পর সম্পর্কিত হলেও দুটো ঠিক এক জিনিস নয়। একটা হলেই আর একটা হয় না। আপনা আপনি হয় না। একজন বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে, গবেষণা করে, চর্চা করে, ছাত্র পড়ায়—কিন্তু হাতের আঙুল ভর্তি আংটি; একটা হয়ত মঙ্গলকে ভয় দেখাচ্ছে, আর একটা হয়ত আবার ভাইরাস ব্যাকটিরিয়াদের শাসন করার কাজে ব্যস্ত, তৃতীয়টার উদ্দেশ্য কোনো জটিল মামলা জেতা, ইত্যাদি—এমন তো আকছারই দেখা যায়। যারা এইরকম আংটি পরে, ধাতুরত্ন ধারণ করে, তার পক্ষে তারা আবার কত বৈজ্ঞানিক যুক্তি দেয়! বস্তুর উপর বস্তুর কি ক্রিয়া নেই? জীবাণুদের সম্পর্কে রসায়ন-শাস্ত্র রাসায়নিক অস্ত্র ধারণ করতে বলছে না? কিংবা, সব শেষে একখানা মোক্ষম প্রশ্ন, “বিজ্ঞান কি সব জানে?” আর অন্যরা জানুন বা না জানুন, বিজ্ঞানের লোকেরা তো জানেই—যে বিজ্ঞান এখনও সব জানে না, আর কখনও সব জানবে বলে মনে করে না। সুতরাং . . .

    এমন অনেককেই দেখা যায়, যারা ভগবান মানে না কিন্তু যাদের ভূতের ভয় আছে। কিংবা তাদের হয়ত ভূত-প্রেতে ঘোর অবিশ্বাস, অথচ ছেলেমেয়ের কোনো সময় কঠিন অসুখ-বিসুখ হলে মা কালীর থানে বা রাস্তার মোড়ের শনিঠাকুরের বেদীতে দু টাকার বাতাসা মানত করে রাখে। আবার এমনও বহু লোক আছে, যাদের পড়াশুনো কলা বিভাগে, কিন্তু খাদ্যাখাদ্য বিচারে রান্নার উপকরণে ছেলেমেয়ের পোশাক বা স্বাস্থ্যের প্রশ্নে তারা অত্যন্ত যুক্তিশীল এবং বিজ্ঞান-মনস্ক।

    ধরুন, বিজ্ঞাপনে দেখাচ্ছে, কমপ্ল্যান খেলে একটি ছেলে বা মেয়ে দ্বিগুণ তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে, লম্বা হবে। বহু লোক বিশ্বাস করছে। তারা বেশিরভাগ লক্ষই করছে না, যে স্কেল দিয়ে বৃদ্ধিটা দেখানো হচ্ছে, তাতে চার ফুট পর্যন্ত উচ্চতার মাপটা ফুটে দেখিয়ে বৃদ্ধির পরিমাপ দেখানো হচ্ছে সেন্টিমিটারে। কেন? এরকম স্কেল বাজারে হয় নাকি? কারোর উচ্চতা আপনি কি বলবেন চার ফুট পাঁচ সেন্টিমিটার? তার মানে বিজ্ঞাপনটায় গোলমাল আছে। বা কোনো গূঢ় মতলব আছে। কজন সাধারণ মানুষ এটা খেয়াল করেছে? এই ধরনের একটা সাধারণ চালাকি বোঝার জন্য কি বিজ্ঞান পড়ার বিশেষ দরকার আছে? রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা অ্যাকাউন্টেন্সিতে অনার্স নিয়ে পড়লে এটা বোঝা যাবে না? বরং বাস্তবে আমরা দেখছি, বিজ্ঞানের ছাত্ররাও এটা ধরতে পারছে না। তাদেরও একটা বিরাট অংশ এই সব বিজ্ঞাপনী চালাকিতে ভিরমি খেয়ে যাচ্ছে। এবং লম্বা হওয়ার জন্য রোজ রোজ কমপ্ল্যান খাচ্ছে। অথবা তীক্ষ্ণবুদ্ধি পাওয়ার জন্য শক্তি সঞ্চয় করার জন্য অন্য কিছু খাচ্ছে। এই প্রশ্নটা তারা করছে না, স্বাস্থ্যবান হওয়া বা লম্বা হওয়ার যে জৈবিক প্রক্রিয়া, এই ধরনের কৌটোবন্দি খাদ্য বা পানীয় তার উপরে কীভাবে প্রভাব ফেলে। অথবা আদৌ ফেলতে পারে কিনা।

    রাজশেখর বসু তাঁর একটি বৈজ্ঞানিক মনোভাব সংক্রান্ত প্রবন্ধে দেখিয়েছিলেন, বিজ্ঞাপনে কীভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ঠকানো হয়। কোনো একটি মাথার তেলের কোম্পানি তাদের বিজ্ঞাপনে লিখেছিল, “ইহাতে পারদ নাই।” যেন, অন্য সব প্রস্তুতকারকের তেলে ভেজাল হিসাবে পারদ থাকার কথা। আজ বেঁচে থাকলে তিনি দেখতে পেতেন, সেই সাবেকি কায়দাটা আজও মরেনি। আজ আবার কোনো এক তেল উৎপাদকের হয়ে একজন বিখ্যাত ফিল্মি নায়ক বলছেন, তাঁদের বিজ্ঞাপিত তেলে নাকি অ্যামোনিয়া নেই। এই রকম অসংখ্য বিজ্ঞাপনী চালাকি ধরতে না পারার পেছনেও আছে বিজ্ঞানমনস্কতার অভাব।

    [ঘ]
    এবার কয়েকটা কাজের কথা পাড়া যাক।

    বিজ্ঞান-মনস্কতার প্রধান প্রধান লক্ষণগুলি কী কী?

    অবিশ্বাস, ভয়, কৌতূহল, সংশয়, প্রশ্ন, . . . ।

    সে কি? কী বলছেন মশাই? এসব তো নেতিবাচক লক্ষণ।

    ঠিক তাই। বিজ্ঞান-মনস্কদের যে লোকে নাস্তিক বলে জানেন নিশ্চয়ই। সেটা এই কারণেই বলে। সব ব্যাপারেই শুরুতে তারা খালি বলে—না, না, না, নাস্তি, নাস্তি, নাস্তি, . . .। এতে বিশ্বাস করতে পারছি না, ওটা বলতে ভয় পাচ্ছি পাছে ভুল প্রমাণ হয়ে যায়, অমুক তত্ত্বটায় ঘোরতর সন্দেহ আছে ঠিক হবে কিনা, . . ., ইত্যাদি। আর কেবলই বলেন, জানি না, খানিকটা জানা গেছে, অনেক কিছু এখনও জানায় বাকি আছে, অল্প অল্প করে জানা যাচ্ছে, এই রকম আর কি। সহজে কোনো প্রস্তাবে কিছুতেই হ্যাঁ বলতে পারেন না বিজ্ঞান জগতের লোকেরা। একেবারে বলেন না তা নয়, তবে না-এর তুলনায় হ্যাঁ-এর সংখ্যা খুব কম। মাইকেল ফ্যারাডে এক সময় একটা গড় হিসাবে বলেছিলেন, বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের দশটা প্রস্তাবের নটাতেই নাকি ওনারা না বলে দেন। একটাতে অতি কষ্টে হ্যাঁ বলেন। সায় দেবার ব্যাপারে বড্ড কিপটে। বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যান। দেখবেন, প্রতিটি ব্যাপারে খালি প্রশ্ন, প্রশ্নের পর প্রশ্ন। কী ভয়ানক সন্দেহবাতিক ভাবা যায় না। কারোর সঙ্গে কারোর ঝগড়াঝাঁটি আছে, ব্যাপারটা এমন নয় কিন্তু। হয়ত বাইরে গলায় গলায় ভাব। কিন্তু বিজ্ঞানের সমস্যা এলে, পরীক্ষার ফলাফলের কথা উঠলে অমনি তক্কাতক্কি শুরু হয়ে যায়। তাঁদের শুধু ভীষণ ভয়, পাছে কিছু একটা ভ্রান্ত তত্ত্ব সম্মেলনে গৃহীত হয়ে যায়।

    তুলনায় একটা ধর্মের জলসায় গিয়ে দেখুন। কোনো একজন বড় ধার্মিক সাধুর বচনামৃত পাঠ করুন। বারবার কী দেখতে পাবেন? বিশ্বাস, নির্ভাবনা, নিঃসন্দেহ, নিস্তর্ক, মেনে নেবার আগ্রহ, . . . । যেমন এদেশে তেমনই ওদের দেশে। আমাদের পূর্বপুরুষরা যখন বলতেন, “বিশ্বাসে মিলায় কৃষ্ণ তর্কে বহুদূর”, লাতিনে ওরা বলত “Credo ut intelligam” (বিশ্বাস করলে তবেই আমি বুঝতে পারব)। এগুলো সবই হচ্ছে ইতিবাচক লক্ষণ। সব কিছুতেই হ্যাঁ বলবার ঝোঁক বা ইচ্ছা। এই জন্যই ধর্মে বিশ্বাসীদের লোকে আস্তিক বলে। তারা সব কিছু সহজে মেনে নেয়, বিশ্বাস করে, তাদের কোনো ব্যাপারেই খুব একটা সন্দেহ হয় না, প্রশ্নও জাগে না। তাদের মনে কোনো কিছুই গভীরে গিয়ে জানার খুব একটা ইচ্ছা নেই। ধর্মগুরুরা আবার মানা করেও দেন। যেমন, রামকৃষ্ণ রূপক ছলে বলে দিয়েছিলেন, “বাগানে আম খেতে এয়েছ খেয়ে যাও; বাগানে কটা গাছ, গাছে কটা করে আম—এত খোঁজে তোমার দরকার কী?”

    শিবদুর্গার তিনটি ছেলে মেয়ে স্বাভাবিক, কিন্তু গণেশের বেলায় হাতির মুন্ডু। তা-ই কোটি কোটি লোক দু তিন হাজার বছর ধরে মেনে এসেছে। সন্দেহ করেনি, প্রশ্নও তোলেনি। গণেশের একটা মাথা থাকা দরকার, আছে। তা হাতির না কিসের, অত খোঁজে দরকার কী বাপু আমাদের?

    আচ্ছা, সে না হয় পুরা কালের কথা। কিন্তু এই সেদিন যে পাথরমূর্তি গণেশের শুঁড় দিয়ে দুধ পানের গল্প দেশময় ছড়িয়ে গেল, শুধু সাধারণ পিকলু-ন্যাবলা-পাচি নয়, বহু ডক্টরেট, অফিসার, ম্যানেজার, আইনজ্ঞ তথা ভিআইপি যে গ্লাশে দুধ আর হাতে চামচ নিয়ে রাস্তায় লম্বা লাইনে আম আদমিদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়লেন, সারা দেশে কম বেশি বাহাত্তর লক্ষ লিটার দুধ মাটিতে খেল, তার পেছনেও তো সেই আদি অকৃত্রিম বিশ্বাস। প্রশ্ন বা সন্দেহ নেই। মেনে নেবার কী অসীম আগ্রহ। প্রত্যকেরই বক্তব্য, গনেশের ধাতব বা পাথরের মূর্তি দুধ যদি না-ই খাবে, এত এত লোকে তাহলে ছুটে এল কেন? সকলেই কি বোকা?

    বিজ্ঞান-মনস্কতা এই অন্ধ বিশ্বাসকেই বদলাতে চায়। আগেভাগেই বিশ্বাস না করে, প্রথমে প্রশ্ন কর, নানা দিক থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বুঝবার চেষ্টা কর, সমস্ত সন্দেহ মোচন হলে তবে মানবে। তথ্য যুক্তি প্রমাণ ও প্রয়োগ—এই হল বিজ্ঞান তথা বিজ্ঞান-মনস্কতার প্রধান চারটে স্তম্ভ। নানাভাবে পর্যবেক্ষণ করে বাস্তব তথ্য যোগাড় কর, তার মধ্যে তুলনা করে হিসাবনিকাশ করে মাপজোক করে যুক্তি দিয়ে সাজিয়ে মূল পরিঘটনাটিকে দেখার চেষ্টা কর। হাতে কলমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রমাণ করা যায় কিনা দেখ। যে সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসছে তাকে কোন জায়গায় কীভাবে প্রয়োগ করা যায় দেখ, অর্থাৎ, তাকে কাজে লাগানো যায় কিনা দেখ। তারপর সেই সিদ্ধান্তকে গ্রহণ কর।

    আমার অবশ্য মাঝে মাঝে মনে হয়, আস্তিক নাস্তিক শব্দ-জোড়ার অন্য রকম অর্থও থাকা সম্ভব। যে বিচারের ধারায় যুক্তিবুদ্ধি স্বভাবগতভাবে অস্তমিত হয়ে যায় তাই হল আস্তিক দর্শন। পক্ষান্তরে, যে ধরনের চিন্তাধারার মধ্যে যুক্তিতর্ক প্রমাণ ও প্রয়োগের বুদ্ধি আবশ্যিকভাবে ন্যস্ত রয়েছে, তাকে বলা হয় নাস্তিক দর্শন। এইভাবে ভাবলেই বা ক্ষতি কী?

    [ঙ]
    এই পার্থক্যটা ঠিকমতো বোঝার দরকার আছে। কেন না, অনেক সময়ই কিছু লোককে বলতে শুনি, ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের নাকি কোনো বিরোধ নেই। বিরোধ নাকি দুই তরফেরই কট্টরপন্থীদের মধ্যে। সত্যিকারের ধর্মের সারকথা যে মেনে চলে সে নাকি সত্য জানতে কখনও আপত্তি করে না, বরং জানতেই চায়। সত্যিকারের বড় বিজ্ঞানীদেরও নাকি ধর্মের প্রতি কোনো অসহিষ্ণুতা নেই, তাঁরা নাকি ধর্মকে বুঝতে চান, অনেকে নিজেরাই ধর্মপ্রাণ হয়ে থাকেন। ইত্যাদি।

    এই বক্তব্যে আমার দ্বিবিধ আপত্তি আছে। আপত্তিটা ব্যক্তিগত বিশ্বাসের জায়গায় গিয়ে নয়। যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে ধর্মে বিশ্বাস করেন কিন্তু বিজ্ঞানের কাজটা বিজ্ঞানের নিয়মেই করেন, তাঁদের এই বিশ্বাস-আচরণের দ্বিভাজন (dichotomy) নিয়েই আমার আপত্তি। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী বিজ্ঞান চর্চা করা যায় না বলেই তাঁদের জোড়াতালি দিতে হয়। অক্ষয় কুমার দত্তের ফরমুলা অনুযায়ী বলতে পারি, জ্বর হলে আপনি মা কালীর নাম করতে পারেন, প্যারাসিটামল খেতে পারেন, আবার মা কালীর নাম নিতে নিতে প্যারাসিটামল খেতে পারেন। জ্বর কমার হলে ওই ওষুধেই কমবে। মা কালীর নামের মাহাত্ম্যে নয়। বীজগণিতের সমীকরণের আকারে লিখলে কালীনামের ফলাফল শেষ অবধি শূন্যই হবে।

    হ্যাঁ, এর মধ্যে ফরাসি যুক্তিবাদী দার্শনিক ভোলতেয়ারের সেই বিখ্যাত রসিকতারও ছাপ আছে। কে একজন তাঁকে বলেছিল, “আচ্ছা মশাই, মন্ত্র দিয়ে কি কাউকে মেরে ফেলা যায়?”

    “যায়, অবশ্যই যায়। তবে সঙ্গে আর একটা জিনিসও লাগবে।”

    “আর কী লাগবে?”

    “তেমন কিছু নয়, উপযুক্ত পরিমাণে কিছুটা সেঁকো বিষ। তাহলে মন্ত্রের কাজ ভালো হবে।”

    বিজ্ঞানের সাথে যে কোনো প্রকারের অন্ধ বিশ্বাসের একমাত্র এরকম “সেঁকো বিষ যুক্ত” সমন্বয়ই করা যায়। ধর্মের ক্ষেত্রেও এটা সত্য।

    সুতরাং, কোনো বড় বিজ্ঞানী হয়ত বলতে পারেন, অনেক কিছু জানার পরেও আমাদের এত জানতে বাকি যে জগতের রহস্য যেন আরও নিগূঢ় হয়ে উঠছে। জগতের এই শৃঙ্খলা, এত জটিলতা—এসবের ব্যাখ্যা হয় না একজন সুপারপাওয়ারের কথা ধরে না নিলে। তখনও আমাদের প্রশ্ন থেকেই যাবে, ধরে নিলেই কি সমস্ত রহস্যের ব্যাখ্যা হয়? সকলেই জানেন, হয় না। একটি বাস্তব পরিঘটনার পেছনে আর একটি কোনো আরও মৌলিক ও বাস্তব পরিঘটনাকে খুঁজে পেলে দ্বিতীয়টার সাহায্যে প্রথমটার ব্যাখ্যা হয়। মেঘ কীভাবে উৎপন্ন হয় জানলে বৃষ্টির একটা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। অন্যত্র সেই জ্ঞানের প্রয়োগ ঘটানো সম্ভব হয়। কিন্তু ভগবান আমাদের বৃষ্টি দেন বললে নতুন কী জানা যায়? বৃষ্টি সম্পর্কে আমাদের এক দানাও জ্ঞান বাড়ে না। সেই জানা কাজেও লাগে না। যা জানি না, ঐশী শক্তি ঘটাচ্ছেন ধরে নিলেও তা অজানা এবং অধরাই থাকে। আবার অক্ষয় কুমারের ফরমুলায় বলতে হবে, জ্ঞানের জগতে একজন সুপারপাওয়ার আছে ধরে নেবার ফলও সেই শূন্যই। তবে আর তা ধরে নিয়ে কাম কী? অর্থাৎ, প্রশ্নটা ঝগড়ার নয়, ফলাফলের।

    জ্ঞানের সাথে জ্ঞানের সমন্বয় হয়। জ্ঞানের সাথে অজ্ঞতার কোনো সমন্বয় হয় কি? হয় না বলেই বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের সমন্বয় সম্ভব নয়। যুক্তিবাদের সাথে কুসংস্কারের সমন্বয় সম্ভব হয় না। একটা চাইলে আর একটাকে ছাড়তে হবেই। ধর্ম হিন্দুকে বলে, গোমাংস ভক্ষণ করিও না, উহাতে মহাপাপ; ধর্ম মুসলমানকে বলে, কদাচ ভুলিও না, শুয়রের মাংস ভয়ানক হারাম। আর খাদ্য সংক্রান্ত বিজ্ঞান থেকে জানা যায়, রক্তচাপ হৃদরোগ ইউরিক অ্যাসিড ইত্যাদির সমস্যা না থাকলে বাল্য কৈশোর যৌবনে এই দুই (এবং আরও নানা) প্রকারের মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে শুধু ভালো নয়, অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অশিক্ষিত ধর্মান্ধ গোঁড়া হিন্দু-মুসলমানের কথা ছেড়ে দিন, শিক্ষিত উদার মনস্ক কতজন এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে আগ্রহী হবেন? বা আদৌ হয়ে থাকেন? এইভাবে দেখলে বোঝা যাবে, জীবনের সর্বক্ষেত্রেই বিজ্ঞান মনস্ক হতে চাইলে ধর্মমনস্কতাকে ছাড়িয়ে আসতে হবে। তা না হলে যেটা হবে সেটা আরও হাস্যকর। ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি তাঁদের শিক্ষার মালমশলা কাজে লাগিয়ে সেই ধর্মান্ধতার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া শুরু করবেন। অশৌচ পালনের সাথে ব্যাক্টিরিয়া নিধন, দাড়ি রাখলে গালে মশার কামড়ের হাত থেকে অব্যাহতি, ইত্যাদি . . . ।

    উল্টোটা তাঁরা কেউ করবেন না। কোনো বিজ্ঞানশিক্ষিত ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিই কখনও বলবেন না, অন্তত এযাবত আমি কাউকে বলতে শুনিনি, “আমাদের ঈশ্বর ভক্তির সঙ্গে আমরা কে কী খাই তার কোনোই সম্পর্ক নেই। ঈশ্বর মুরগিও দিয়েছেন, কলাও দিয়েছেন; গরুও দিয়েছেন, লেটুস পাতাও তৈরি করেছেন; ফুলকপিও বানিয়েছেন, শুয়রও পয়দা করেছেন। যিনি আল্লাহ তিনিই ভগবান তিনিই তো গড। নামে ভিন্ন হলেও আসলে তো এক। তা না হলে দুনিয়ায় অনেক ভগবানের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে হত; সেটা সমস্ত ধর্মের পক্ষেই অস্বস্তিকর হয়ে যেত। সবই যখন সেই তাঁরই সৃষ্টি, তাঁর একটা জিনিস খেলে ভালো আর অন্য একটা খেলে দোষ হবে কেন? বিশেষ করে যখন এক ধর্মের নিষিদ্ধ খাদ্যগুলো অন্য ধর্মের ঈশ্বর বিশ্বাসীরা খেয়েদেয়ে দিব্যি হাজার হাজার বছর ধরে হজমও করেছে, টিকেও রয়েছে?” এইভাবে তাঁদের কেউ বলতে পারলে, ঈশ্বরব্যঞ্জনার কথাটা সত্য না হলেও একটা সমন্বয়ের আভাস অন্তত পাওয়া যেত। সেটুকুও আজ অবধি পাইনি।

    আরও একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ দিই। ভারতে প্রতিবছর সাগরমেলায় বা প্রতি চার বছর অন্তর কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ লোক জড়ো হয়ে যে পবিত্র গঙ্গাস্নান করে তাতে সংশ্লিষ্ট জায়গায় ব্যাপক পরিবেশ দুষণ হয়। এই অসংখ্য মানুষের ফেলে যাওয়া বর্জ্য থেকে নদী সমুদ্র ও মেলার চারপাশের জল মাটি বায়ুর দীর্ঘমেয়াদি অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়। অনেক সময় ব্যাপক দুর্ঘটনাটা ঘটে, বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়। আরবে যারা হজ করতে যায় তাদের ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য। আজ পর্যন্ত কোনো একজন ধর্মপ্রাণ শিক্ষিত চিন্তাশীল মানুষকে বলতে শুনেছেন কি কেউ, “না, এরকম জমায়েত ভালো নয়। ব্যক্তি স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের স্বাস্থ্য—কোনোটার পক্ষেই ভালো নয়”? কেউ কি বলেছেন, “ভগবান বল, আল্লাহ বল তিনি সর্বত্র বিরাজমান; তাঁকে খুঁজতে বা পেতে এত ক্লেশ স্বীকার করে কোনো একটা বিশেষ জায়গাতেই বা যেতে হবে কেন? তুমি যেখানে আছ, সেখানেও তিনি আছেন। সেখানেই তাঁর পূজাপাঠ আরাধনা সেজদা কর”? আমার জানা নেই।

    যদি ধর্মে বিশ্বাসী একজনও কেউ সাহস করে এসব কথা বলতে পারতেন, তাহলে বুঝতাম, সমন্বয়ের সামান্য হলেও সম্ভাবনা আছে। কিন্তু না। ধর্মে বিশ্বাসী কেউই তা বলতে পারেন না। পারেন না কেন না, তাঁরাও জানেন, শুধু একজন আপনভোলা ঈশ্বর নিয়ে ধর্ম হয় না। বাকি সমস্ত আচার বিচার প্রথা প্রকরণ গরু শুয়র টিকি দাড়ি আলতা সিঁদুর বোরখা মিলিয়েই ধর্ম। হিন্দুদের ক্ষেত্রে জাতপাত ছোঁয়াছুঁয়ি বজায় রেখেই ধর্ম। অন্তত বৃহত্তর জনসমষ্টির জন্য ধর্ম মানে তাই।

    এই অবস্থায় বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করার একটাই মানে। তা হল, ধর্মবিশ্বাসীরা তাঁদের বিশ্বাস ও আচরণ থেকে এক চুলও নড়বেন না; বিজ্ঞান অনুরাগী যুক্তিবাদীদেরই তাঁদের জায়গা থেকে সরে আসতে হবে। মেনে নিতে হবে, হ্যাঁ, ধর্মে কিছু কিছু সত্য থাকলে থাকতেও পারে। ঈশ্বর বিশ্বাস থাকলে বিজ্ঞানের তো আর তেমন কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। অতএব আপাতত না হয় এরকম একটি প্রতিপাদ্যকে মেনে নেওয়াই যাক। আমার মনে হয়, বিজ্ঞানমনস্কতার তরফে এরকম ছাড় দেবার কোনো প্রয়োজন সপ্তদশ শতকে দকার্তের সময়ে থাকলেও আজ আর নেই। আমাদের পক্ষ থেকে এই সত্যটা স্পষ্ট উচ্চারণে বলতে পারা উচিৎ।

    [চ]
    পরিশেষে এ-ও দেখা দরকার, মানুষের জ্ঞান কোন রাস্তাতে বাড়ছে। যতদিন মানুষ শুধু ধর্মে গুরুতে মান্যগ্রন্থে বিশ্বাস করেছে ততদিন তার জ্ঞানের বিকাশ কতটা হয়েছে, আর যবে থেকে মানুষ জিজ্ঞাসার পথে, সংশয়ের পথে জানতে শুরু করেছে তখন থেকে তার জ্ঞানের বৃদ্ধি ও বিকাশের হার কী। এই তুলনায় গেলেই বোঝা যাবে কোনটা সত্যিকারের জানার পথ, আর কোন পথে হাঁটলে বিহারের ঘটনায় গিয়ে পৌঁছতে হবে। শুধু পদার্থবিজ্ঞান রসায়ন গণিত জ্যামিতি জীববিদ্যা ভূতত্ত্ব নৃতত্ত্ব ইত্যাদি নয়, ইতিহাস ভূগোল পুরাতত্ত্ব ভাষাতত্ত্ব অর্থনীতি—সব ক্ষেত্রে প্রশ্ন করে করে উত্তর খুঁজতে খুঁজতে, একের পর এক সন্দেহ নিরসন করতে করতে, মানুষ জানছে। মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধতর হচ্ছে। এই পথ ছেড়ে দেওয়ার মানে হল এযাবত যা জেনেছেন তাকে একটা গুদামঘরে ঢুকিয়ে দরজায় তালা মেরে চলে আসা।

    আমাদের দেশের ছাত্রদেরও তাই প্রশ্ন করতে শেখাতে হবে। শুধু বিজ্ঞানের বিষয় নয়, ইতিহাস ভূগোলও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে শেখাতে হবে। সূর্য চন্দ্রকেও চেনাতে হবে। দিক চেনাতে হবে। ছোটবেলা থেকেই যেন দিকভ্রষ্ট হয়ে না যায়। ইতিহাসের শিক্ষককেও ক্লাশে সংশ্লিষ্ট ভূগোলের মানচিত্র নিয়ে ঢুকতে হবে। শিক্ষার মধ্যে আরও অনেক কিছু করতে হবে, করা যায়। বিজ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রেই শুধু নয়, শিক্ষার সমস্ত প্রকোষ্ঠেই বিজ্ঞানকে নিয়ে যেতে হবে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তিকে নিয়ে যেতে হবে। বিজ্ঞান-মনস্কতা বৃদ্ধির আর কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই।

    পুনশ্চ: এই প্রবন্ধে কোনো ধর্মবিশ্বাসীর ব্যক্তিগত বিশ্বাসে আঘাত দেবার কোনো অভিপ্রায় ছিল না। তথাপি যদি কেউ আহত বোধ করেন তার জন্য আমি আমার অসহায়তা প্রকাশ করে রাখছি। বিহারের ঘটনাটি জানার পর ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে বিজ্ঞানমনস্কতার পক্ষ থেকে উপরোক্ত কথাগুলি উচ্চারণ না করে আমিও পারছিলাম না।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ১৩৯০৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • T | 165.69.191.249 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৩51932
  • না, এরম নয়। পপারের একটা গুরুত্বপূর্ণ দাবী আছে। সেইটা হ'ল এইরম।
    ধরা যাক একটা আর্গুমেন্ট রয়েছে, নাম ধরা যাক 'ক'। এই আর্গুমেন্টের করেস্পন্ডিং একটা ফলসিফায়ার সেট রয়েছে, ধরা যাক সেটার নাম, 'ফ'। এইবার আরো একটা আর্গুমেন্টের অস্তিত্ত্ব কল্পনা করা যাক যার নাম 'ক!' এবং করেস্পন্ডিং ফলসিফায়ার সেট 'ফ!'। দাবী অনুযায়ী, 'ক!' যদি 'ক' এর থেকে মোর সাফিশিয়েন্ট হয়, তাহলে 'ফ!' < 'ফ' হবে। এখানে < এর মানে হচ্ছে সেট ইঙ্কলুশন সাইন।

    এইটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এইটা স্পেসিফিক থিয়োরী থেকে মাচ মোর জেনারেল থিয়োরীর দিকে মানুষকে প্রলুদ্ধ করে। এটা ঠিক কতগুলো ঘটনাকে ব্যাখ্যা করতে পারলে সেটা তবে থিয়োরীর মর্যাদা পাবে সেইরম ব্যাপার নয়। এ চলমান একটা ব্যাপার। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী 'আমাদের সায়েন্স' ট্রুথ নয়। ট্রুথের একটি রিজনেবল এক্সপ্ল্যানেশন মাত্র। রিজনেবল কোন সেন্সে, না ঐ পপারীয় সেন্সে। এইটাই সায়েন্সের কনসিস্টেন্সি।

    মনে করি, জেনারেলিটির দিকে এই ক্রমাগতঃ এগিয়ে যাওয়া ইত্যাদি আসলে ঈশ্বরকেই (মানে যদি সেরম কিছু থাকে, বা না থাকে) তৈরী করা। যে ঈশ্বর অত্যন্ত আইনমাফিক।
  • ঈশান | 183.24.110.20 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৪51933
  • "তাই আইন্স্টাইনের তত্ব এখনো পরীক্ষার সম্মুখীন হয়"

    মানুষ যে অসংখ্য গাছপালার মধ্য থেকে কিছু খাদ্যশস্য চিহ্নিত করেছিল, এবং তার থেকে 'বৈজ্ঞানিক' বদ্ধতিতে উন্নততর খাদ্যশস্য তৈরি করেছিল, সেসবই হাজার দশেক বছর আগে।

    এটা কী মডেলে করা যায়, ভেবে দেখবেন। পর্যবেক্ষণ-হাইপোথিসিস-থিয়োরি-পর্যবেক্ষণ-হাইপোথিসিস-থিয়োরি -- এই চক্র আজকের তো নয়ই, প্রাগৈতিহাসিক যুগের।

    ব্যস। আর বকাবেন্না। :-)
  • পবিত্র | 103.174.93.133 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৬51934
  • দেখুন, এ পাতাতেই রামকেষ্টর হ্যালুসিনেশনের তত্ত্ব এল । প্রমাণ ? প্রমাণ নেই । কিন্তু যিনি এটা বলছেন, আসলে অন্য কিছু হওয়াটা 'বিজ্ঞান'-এর পক্ষে ইনকনভিনিয়েন্ট বলে মনে করছেন । তেমনি আরেকজন 'নাক কাটা সাধু'-র তত্ত্ব নিয়ে হাজির । প্রমাণ ? প্রমাণ নেই । কিন্তু ওনারা যা 'পবিত্র গ্রন্থ' পড়েছেন, তা অনুযায়ী এই ব্যাখ্যাই পছন্দসই । একেই অনেকে বিজ্ঞানমনস্কতা ভাবেন । যদিও আদতে এটি বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে যায় বলেও কেউ বলতে পারেন ।
  • ঈশান | 183.24.110.20 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৭51935
  • "বুঝলাম না। অক্যামস রেজর কয়েকশো বছরের পুরনো ধারনা। তাতে কি হল?"

    এইটাই তো প্রথম পোস্টে বলেছি। যে চিন্তার ধরণটা একই আছে বহুযুগ ধরে।

    টিকে কাল লিখব।
  • T | 165.69.191.249 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৭51936
  • হ্যাঁ, এই চক্র প্রাগৈতিহাসিক যুগের হ'ল। তো কি হ'ল? যা ত্তারা।
  • dc | 132.174.114.23 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪০51938
  • আমি তো দাবী করিওনি যে এই চক্র হালে তৈরী হয়েছে! ঃ)

    আমিও পরে লিখব।
  • ঈশান | 183.24.110.20 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪০51937
  • এটাতে এগ্রি করলে তো বাকি তক্কো গুলো দাঁড়ায়না। এই কথাই তো কইছি মাত্র, যে পদ্ধতিটা পাল্টায়নি। তাহলে তক্কোটা কী নিয়ে?
  • ঈশান | 183.24.110.20 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪২51939
  • হ্যাঁ, পরেই লিখুন। কিন্তু মতবিরোধটা কী নিয়ে সেটা একটু পষ্টো করে লিখুন।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৪51945
  • এবার টি এবং পপারকে নিয়ে পড়া যাক। বেসিক সমস্যাটি আসলে একই।

    একটা উদাহরণ দিয়ে বলি। বাস্তবের উপরেই দাঁড়ানো হলেও, আমার উদাহরণটা অনেকটাই কল্পিত। ধরুন, একটা সমস্যা "মেয়েরা অঙ্কে কাঁচা"। নানারকম স্টাডি থেকে সাধারণভাবে দুনিয়াজুড়ে তুলনামূলকভাবে বিষয়টা দেখা গেছে।

    এর নানারকম ব্যাখ্যা আছে বা হতে পারে।

    ১। জিন তাত্ত্বিকরা প্রথমেই বলবেন, ওমুক জিনের কারণে অমনটা হয়, তার পিছনে তমুক সিলেকশনের হাত আছে।
    এটা একটা তত্ত্ব, যার কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ হয়না, কিন্তু যাকে নানা ভাবে ফলসিফাই করা যায়।

    ২। ব্রেনের পন্ডিতরা এসে বলবেন, এসবই ব্রেনের ডানদিক আর বাঁদিকের খেলা। তারও নানারকম ফলসিফিকেশন সম্ভব। এবং ১ আর ২ নিয়ে একটা জেনেরাল থিয়োরিও হয়তো তৈরি সম্ভব কোনো এক সময়ে।

    ৩। গোল বাধবে এর পরে। শিক্ষাবিদ বা মানবীচর্চার পন্ডিতরা এসে বলবেন, 'সমস্যা'টাই আসলে গোলমেলে। "মেয়েরা অঙ্কে কাঁচা" এটা কোনো সমস্যাই নয়, এই স্টেটমেন্টটা নিজেই একটা সমস্যা। "মেয়েরা অঙ্কে কাঁচা" একটা প্রি-এক্সিস্টিং ধারণা। এর স্টাডিগুলো এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে ধারণাটা 'প্রমাণিত' হয়। এবং এই ধারণা মেয়েদের মধ্যে এমনভাবে প্রোপোগেট করা হয়েছে, যাতে তারাও অঙ্কে কাঁচা হয়ে নারীত্ব 'প্রমাণ' করতে পারে।

    এবার এটাও একটা তত্ত্ব, এরও ফলসিফিকেশন সম্ভব হয়তো।

    ৪। এর পরে আসবেন লিঙ্গুইস্টরা। এসে বলবেন, ভাষা একটা সিস্টেম। সেখানে মেয়ে এবং অঙ্ক, এমনভাবেই নির্মিত হয়েছে, যাতে অঙ্ক র‌্যাশ্নালিটিকে চিহ্নিত হরে, আর মেয়ে চিহ্নিত করে ইমোশনকে। এর বাইরে বেরিয়ে কোনো স্টেটমেন্ট ভাষাতে ফর্ম করাই অসম্ভব।

    এটাও একটা থিয়োরি। কিন্তু এর ফলসিফিকেশন সম্ভব না। কারণ স্টেটমেন্ট বা ফলসিফায়ার উভয়েই ভাষার নির্মিতি। ভাষা নিয়েই যেখানে ডিল করা হচ্ছে, সেখানে ভাষাগতভাবে ফলসিফায়ার তৈরিই সম্ভব না, বা তৈরি করলেও তার কিছু লিমিটেশন থাকবে।

    এইটা হচ্ছে, পপারকে নিয়ে সমস্যা। স্টেটমেন্ট এবং তার ফলসিফায়ার, এই মাল্টিডিসিপ্লিনারি বহুমাত্রিক দুনিয়ায়, তৈরি সম্ভব না। নানারকম পরস্পরবিরোধী এলিমেন্ট পাশাপাশি থাকে। জিনতত্ব আছে, মানবীচর্চাও আছে, আবার লিঙ্গুইস্টরাও আছেন। ডারউইন আছেন, জেনেটিক্স আছে, এপিজেনেটিক্সও আছে। ফিজিক্সেও নির্ঘাত একই গপ্পো, কিন্তু আমি তার বিশেষ খোঁজ রাখিনা। একটা নির্দিষ্ট থিয়োরি, তার একটা নির্দিষ্ট ফলসিফায়ার সেট, এটা বড়ো পিকচারে অবাস্তব। এখানে জিনচর্চা করতে হলে মানবীবিদ্যা সংক্রান্তবা লিঙ্গুইস্টিক্স ফলসিফায়ারগুলিকে ইগনোর করে চলতে হবে। কটা ইগনোর করব, আর কটা করবনা, এর কোনো গাইডলাইন নেই, থাকা সম্ভবও না। এইটাই আগের পোস্টে লিখতে চেয়েছিলাম।

    পুঃ যে উদাহরণটা দিয়েছি, সেটা একেবারে আকাশকুসুম না। "কালো বাচ্চাদের আইকিউ কম", এই নিয়ে এর কাছাকাছিই একটা তক্কো হয়েছ্হিল। আর সোশিও বায়োলজি এবং মানবী চর্চার সম্পূর্ণ উল্টো চলন সর্বজনবিদিত।
  • dc | 132.174.114.23 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৯51940
  • ঈশানের সাথে মতবিরোধটা 'বিজ্ঞান' = 'পবিত্র গ্রন্থ' এটা নিয়ে। কোন থিওরি বা প্রিন্সিপল খুব পুরনো কিনা সে নিয়ে আদৌ না।

    পবিত্র বোধায় 'পবিত্র গ্রন্থ' ব্যাপারটা ভুল লিখলেন, কারন 'বিজ্ঞান' এ 'পবিত্র গ্রন্থ' ব্যাপারটাই হয়না। কিন্তু এখন না, সন্ধেবেলা লিখব।
  • T | 165.69.191.249 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫১51941
  • বুঝলাম না, পরীক্ষা-পর্যবেক্ষণ-ফলাফল তো আদতে একটা ডিসকোর্স। সে তো বিজ্ঞান ও ধর্ম ইত্যাদি উভয়ের ক্ষেত্রেই ঘটছে। তা দিয়ে আলাদা করা যাবে কি করে। এই পদ্ধতি প্রাচীন কি প্রাচীন নয় তা দিয়ে কি এসে যায়।

    আমি তো লিখলুম, বেসিক তফাত আসে কনসিস্টেন্সিতে তে। উল্লিখিত ডিসকোর্স যে যে আর্গুমেন্টের জন্ম দেয় তা নিজেরা নিজেদের মধ্যে সেয়ানে সেয়ানে রিলেশন মেন্টেন করছে কিনা সেইখানেই তো বিজ্ঞান আসবে। আদারওয়াইজ পরমপিতা।
  • T | 190.255.250.156 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৩51947
  • এই একই উদাহরণ অন্য টইতে আমি নিজেই দিয়েছি। কিন্তু তুমি যেভাবে ভাবছ সেভাবে নয়। এইটা পপারের প্রস্তাবিত ফলসিফায়াবিলিটি মডেলের লিমিটেশন কিন্তু কোনো সমস্যা না। তোমার দেওয়া উদাহরণে গলদ আছে। স্টেটমেন্ট এবং তার ফলসিফায়ার বহুমাত্রিক দুনিয়ায় তৈরী একশো শতাংশ সম্ভব, কিন্তু তার আগে প্রবলেমকে সঠিক ভাবে ফর্মুলেট করতে হবে। এর মানে হচ্ছে এক প্রশ্নে সমস্তটা ধরা যেতে পারে না। সেরকম মডেল হয় না। এইটা 'মেয়েরা অংকে কাঁচা' এই টাকে একটা থিয়োরী বললে সেটা অপপ্রয়োগ হবে। এবং ভাষার চোরাগুপ্তি ব্যাপার ঢুকে যাচ্ছে। এটা গোড়ায় গলদ। প্রথমে দেখতে হবে কোনটাকে থিয়োরী হিসেবে ধরা যাবে। বক্তব্য অনুযায়ী 'সিঙ্গুলার স্টেটমেন্ট' এর একটা ফিল্ড থাকতে হবে যা থেকে একটা থিয়োরী তৈরী হবে। 'মেয়েরা অংকে কাঁচা' এটা কখনো সিঙ্গুলার স্টেটমেন্ট নয় কারণ টু মেনি ভেরিয়েবল রয়েছে। 'অংক' মানে কি, কাঁচা মানে কি, মেয়েরা বলতে সব বয়সের মেয়েদের বোঝানো হচ্ছে কি না, কাঁচার উল্টোটা এগজিস্ট করে তো ইত্যাদি ইত্যাদি। ওয়ান্স এইভাবে সব কেটে ছেটে মেদ বাদ দিয়ে তারপর বিভিন্ন সিঙ্গুলার স্টেটমেন্টের সমাহার হিসেবে থিয়োরী দাঁড়াবে। তারপর তার ফলসিফিকেশন দেখতে হবে। ওরম জেনারেল 'থিয়োরী' নামক কোনো ছাতা নেই যার তলায় সবাই দাঁড়াচ্ছে। ই কী মাইরি, এতো কথার মধ্যে অ্যামবিগুইটি রয়েছে পপার কি করবে। বলছ 'নির্দিষ্ট' থিয়োরী, অথচ সে থিয়োরীর কোনো কিছুই নির্দিষ্ট নয়। মানবী বিদ্যা, সোশ্যাল বা লিঙ্গুইস্টিক কেসগুলোতে ওরম দড়াম করে পপারের আঙ্গিক ঢেলে দেওয়া যায় না। মানে দিতেই পারো কিন্তু তার আগে সিঙ্গুলার স্টেটমেন্টগুলোকে দাঁড় করাতে হবে।

    পপারের থিয়োরীর অন্যতম সমস্যা অন্য টইটাতে লিখেছি, দ্যাখো। তার মোকাবিলা কিভাবে হয় সেটা একটু পরে লিখছি।
  • T | 190.255.250.156 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৩51946
  • এই একই উদাহরণ অন্য টইতে আমি নিজেই দিয়েছি। কিন্তু তুমি যেভাবে ভাবছ সেভাবে নয়। এইটা পপারের প্রস্তাবিত ফলসিফায়াবিলিটি মডেলের লিমিটেশন কিন্তু কোনো সমস্যা না। তোমার দেওয়া উদাহরণে গলদ আছে। স্টেটমেন্ট এবং তার ফলসিফায়ার বহুমাত্রিক দুনিয়ায় তৈরী একশো শতাংশ সম্ভব, কিন্তু তার আগে প্রবলেমকে সঠিক ভাবে ফর্মুলেট করতে হবে। এর মানে হচ্ছে এক প্রশ্নে সমস্তটা ধরা যেতে পারে না। সেরকম মডেল হয় না। এইটা 'মেয়েরা অংকে কাঁচা' এই টাকে একটা থিয়োরী বললে সেটা অপপ্রয়োগ হবে। এবং ভাষার চোরাগুপ্তি ব্যাপার ঢুকে যাচ্ছে। এটা গোড়ায় গলদ। প্রথমে দেখতে হবে কোনটাকে থিয়োরী হিসেবে ধরা যাবে। বক্তব্য অনুযায়ী 'সিঙ্গুলার স্টেটমেন্ট' এর একটা ফিল্ড থাকতে হবে যা থেকে একটা থিয়োরী তৈরী হবে। 'মেয়েরা অংকে কাঁচা' এটা কখনো সিঙ্গুলার স্টেটমেন্ট নয় কারণ টু মেনি ভেরিয়েবল রয়েছে। 'অংক' মানে কি, কাঁচা মানে কি, মেয়েরা বলতে সব বয়সের মেয়েদের বোঝানো হচ্ছে কি না, কাঁচার উল্টোটা এগজিস্ট করে তো ইত্যাদি ইত্যাদি। ওয়ান্স এইভাবে সব কেটে ছেটে মেদ বাদ দিয়ে তারপর বিভিন্ন সিঙ্গুলার স্টেটমেন্টের সমাহার হিসেবে থিয়োরী দাঁড়াবে। তারপর তার ফলসিফিকেশন দেখতে হবে। ওরম জেনারেল 'থিয়োরী' নামক কোনো ছাতা নেই যার তলায় সবাই দাঁড়াচ্ছে। ই কী মাইরি, এতো কথার মধ্যে অ্যামবিগুইটি রয়েছে পপার কি করবে। বলছ 'নির্দিষ্ট' থিয়োরী, অথচ সে থিয়োরীর কোনো কিছুই নির্দিষ্ট নয়। মানবী বিদ্যা, সোশ্যাল বা লিঙ্গুইস্টিক কেসগুলোতে ওরম দড়াম করে পপারের আঙ্গিক ঢেলে দেওয়া যায় না। মানে দিতেই পারো কিন্তু তার আগে সিঙ্গুলার স্টেটমেন্টগুলোকে দাঁড় করাতে হবে।

    পপারের থিয়োরীর অন্যতম সমস্যা অন্য টইটাতে লিখেছি, দ্যাখো। তার মোকাবিলা কিভাবে হয় সেটা একটু পরে লিখছি।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৮51948
  • ওতে লিখলাম তো। কিন্তু
    ১। আমি একটা উদাহরণ চাই, যেখানে একটা 'সঠিক ভাবে ফর্মুলেটেড" অর্থাৎ ভাষাবিবর্জিত স্টেটমেন্ট দেওয়া সম্ভব।
    ২। "মেয়েরা অঙ্কে কাঁচা" তো থিয়োরি না, প্রবলেম। "মেয়েরা অঙ্কে কাঁচা", "কালোদের অগ্রগতি কম", "মেয়েদেরকে পুরুষরা রেপ করে" এসব তো সোশিও বায়োলজির অ্যাড্রেস করা সমস্যা। আমার বানানো না।

    ইন ফ্যাক্ট একটা সময়ে "আর্য জাতির তুলনায় বাকিরা নিরেস" এটাও একটা ঘোরতর বৈ`জ্ণানিক সমস্যা ছিল। এটা ফুটনোট। :-)
  • cm | 127.247.98.48 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:২৪51949
  • অঙ্কের ভাষা ব্যবহার করুন।
  • একক | 53.224.129.58 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৩৬51950
  • উল্টো চললে আপত্তি নেই । কিন্তু চলাচলি তো বিজ্ঞানের এরিয়া নয় । রিকগনিশন সিস্টেমটা বিজ্ঞানের ।

    আমি একটা ক্যাট ফার্মে গেলুম । গিয়ে দেখলুম ওজন করে যে কালো বিলাইগুলো রোগা রোগা । বললুম "কালো বিলাইরা রোগা "। এইটে আমার অবসার্ভেশন । এটাকে অস্বীকার করে লোকে যদি বলে আরে আপনি কী জানেন কালো বিলাইদের ওপর অত্যাচারহয়েছে অমুক তুসুক তাদের রোগা বলছেন ? আরে আমি যদি রেকগনাইস করতেই আটকে যাই পরের স্টেপে যাবো কীকরে । ওটা তো করতেই হবে । এতে কোনো ভুল নেই ।

    এবার কালোবিলাইবিদ্যার লোকজন এসে বললেন ওদের কে বাকি বিলাইরা অত্যাচার করে , খাবার ভাগ দেয়না ।

    তখন ফেলাইন ফিজিওলজির লোকজন বলবেন কালো বিলাইদের শরীরে ফেল ডি হরমোন বেশি বলে ওদের অন্য বিলাইরা পছন্দ করেনা । এটা ফলসিফাই করা যাবে ব্রেইন ওয়েভ -হরমোন স্পাইক ইত্যাদির ডেটা নিয়ে ।

    তখন ডিসিশন নাও কিভাবে এই সমস্যা ম্যানেজ করবে । বিলাইদের নতুনভাবে ট্রেইন করবে না কালো দের আলাদা করবে , যা মোর ফীসিবল ।

    এবার সমস্যা বাধে কোথায় ? আমি যদি ধাঁ করে আমার অবসার্ভেশনের সঙ্গে একটা এসাম্পশন জুড়ে দিতুম যে "কালো বিলাইরা হজমশক্তিতে কাঁচা তাই রোগা " । সেটা কিন্তু একটা ডাবল লেয়ার জিনিস । রোগা অবসার্ভেশন তার সঙ্গে হজমশক্তি জুড়ে দিয়েছি । সেক্ষেত্রে আবার স্টুল চেকাপ করে দেখতে হতো কালো বিলাইরা অন্য বিলাইদের চে হজম শক্তিতে কাঁচা কিনা । মোদ্দা কথা কালোবিলাইবিদ্যার লোকেরা যা বলছেন তা হলো একটা এসাম্পশন , আমার ওই হজমশক্তির এসাম্পশনের মতো । সেটাও ফলসিফায়েবল নয় এমন না । ওদের বিরোধটা আপাত | কাটিয়ে নেওয়া যায় যদিনা বাচিক পলিটিকাল কারেক্টনেসএর চুলকানি না থাকে ।

    এখন শেষমেশ ম্যাওভাষার বিলাইকুল যদি এসে বলেন : আমাদের বিলাইদের মধ্যে কালোবিলাইরা হলো ম্যাও তাদের রোগাত্ব নিয়েই আর বাকি বিলাইরাও ম্যাও তাদের মোটাত্ব নিয়ে | এমতবস্থায় আপনি ইনক্লুসিভ নেচার আলাদা করে "কালো বিলাইরা রোগা" এই স্টেটমেন্ট দিলেন কী করে ?? তাহলে এইটুকুই বলার যে তোমার ম্যাওভাষার ম্যাওহেজিমনি নিয়ে তুমি ম্যাওম্যাও করোগে যাও , আমার যখন মনে হয়েছে যে এই ডিসাইনকে আমি রীবিল্ড করব কাজেই ইঞ্জিনিয়ারিং লাইসেন্স টা আমার । ভাষাও আমার | এই বলে গায়ে চাট্টি ঠান্ডা জল ঢেলে দেব | এটা অন্যায় নয় কারন একজন লিন্গুইস্টএর কান্নাকাটি আসলে ফ্রেটবোর্ডের অভিমান ...আরে এই গানটা অমুক সালে তমুক বাবু আমার এখান থেকে সা নিয়ে বাজিয়েছিলেন তার মানে এই তার মানে তাই .....ফিচকেমির একশেষ এবং এক্সেস | বাজাচ্ছ যখন তুমি তুমি ইঞ্জিনিয়ার | নোটের চলন ঠিক রেখে কোথায় শুরু করবে তুমহারা মর্জি বেসড অন হওয়াট ইউ ওয়ান্ট টু প্রডিউস । ওই প্লাস্টিকের চাঁদার মত ভাসমান পার্টটা বিজ্ঞান ।

    [ এখানে এইটুকুই খেয়াল রাখার বৈজ্ঞানিক সমস্যা মেটাতে আমি কোনো গুন্ডামি করি নাই । করেছি ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা মেটাতে । লিন্গুইস্টরা ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমস্যা খাড়া করে সায়েন্স কে গলাচ্চিলো বলে ঠান্ডা জল ইত্যাদি :) ]
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:০৮51951
  • অঙ্কের ভাষা? ধরুন, ১+১ = ২ চলবে?
  • cm | 127.247.98.48 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:২২51952
  • ভাষাবিবর্জিত স্টেটমেন্ট হবে কি করে? অঙ্কের ভাষায় অ্যাম্বিগুইটি ন্যূনতম হওয়ার কথা।
  • T | 190.255.250.156 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:২৬51954
  • ঈশানদা, তুমি আগে ঠিক কি জানতে চাও সেটা ভালো করে লেখো। 'মেয়েরা অংকে কাঁচা' এইটা থিয়োরী স্টেটমেন্ট না প্রবলেম স্টেটমেন্ট? মানে দাঁড়ি পড়ছে না জিজ্ঞাসা চিহ্ন? থিয়োরীর ফলসিফায়েবেলিটি হয়। প্রবলেমের কি ভাবে হবে রে বাবা।
    ভাষা বিবর্জিত স্টেটমেন্ট নিয়ে এরম করার কি আছে, :) যে থিয়োরী সোশিও বায়োলজি নয় সে কোনো থিয়োরীই নয় এরম বললে ঠিক আছে, অসুবিদে নেই। আইনস্টাইন বলেচেন এনার্জ্জী ইক্যুভালেন্ট টু মাস। এইবার তো চেঁচানোই যায় সিঁড়িঙ্গে রোগাপানা মেয়েরা বা ছেলেরা সোশ্যাল ইঞ্জাস্টিসের প্রতিবাদ করার শক্তি কোথা থেকে পাবে, আইনস্টাইন তাহলে আর কীঈঈ বা বললেন। :)
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:২৬51953
  • অ্যাম্বিগুইটি কিচ্ছু কম না। ওই যে লিখলাম, ১+১ =২ -- এদের লজিকের অংশটা বাদই দিলাম, স্রেফ সংখ্যাগুলো নিয়ে ভাবুন। সংখ্যা জিনিসটা অ্যাজ ইট ইজ জগতে এক্সিস্ট করেনা। কোনো দুটো 'একদম এক' আপেল নেই পৃথিবীতে। সংখ্যা বস্তুটাই এসেছে ভাষাগত অ্যাব্স্ট্রাকশন থেকে। দুটো আপেল, ছটা কমলালেবু। এই অ্যাবস্ট্রাকশন বাদ দিলে ১,২,৩,৪ হয়না। x,y,z,= এসব বাদই দিলাম।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৩০51955
  • 'মেয়েরা অংকে কাঁচা' -- এটা প্রবলেম স্টেটমেন্ট।

    এটা ব্যাখ্যা করতে যা বলা হল, সেটা থিয়োরি।

    এসবই বাস্তবে হয়েছে। 'বিজ্ঞান' এই। খালি আমি যত সরল ভাবে ব্যাখ্যা করেছি, তত লিনিয়ার এবং সোজা ভাবে হয়নি।
  • T | 190.255.250.156 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৩১51956
  • কেউ হনুদাকে ইমিডীয়েট ডাকো। গোঁসাইবাগানের ভূতে বুরুন মাস্টারমশাইকে ঠিক এই প্রশ্নই করেছিল। আমি দেখতে চাই হনুদা সব স্তেঁহ ঝেড়ে ফেলে ঈশানদার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

    আর এইটা বাজে এগজাম্পল দিলে। দুটো আপেলের বদলে আমি যদি দুটো হাইড্রোজেন নি। তাহলে?
  • cm | 127.247.98.48 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৩৫51957
  • ১+১=২অঙ্কের ভাষা হবে কেন? ওদের তো আপনি ডিফাইন করেননি। আর দুটো আপেল আর ছটা কমলালেবু বাদ দিলেও সংখ্যাগুলো থাকবে।
  • cm | 127.247.98.48 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৩৬51958
  • সংখ্যার বা অঙ্কের কোন কিছুরই ফিজিকাল এক্সিস্টেন্স নেই, ওরা কনসেপ্চুয়াল, ভগবানের মত।
  • T | 190.255.250.156 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৩৭51959
  • আমি এখনো বুঝলাম না। 'মেয়েরা অংকে কাঁচা' এটা প্রবলেম স্টেটমেন্ট ক্যানো। মানে মেয়েরা ক্যানো অংকে কাঁচা এইরকম মিন করছ? বেশ, এইবার করেস্পন্ডিং ব্যাখ্যা পাওয়া গেলো। কিন্তু এদের একটাও থিয়োরী নয়। কারণ কোনোটাই বাঞ্চ অব সিঙ্গুলার স্টেটমেন্টস নয়। প্রতিটিতে প্রচুর ভেরিয়েবেল যাদের কিছু লিঙ্গুইস্টিক মিনিং রয়েছে যা কিনা অ্যাামবিগুয়াস, আবার পলিটিক্যাল ইত্যাদি রয়েছে যাও অ্যামবিগ্যুয়াস। তো এগুলোর কোনোটাই আদপে থিয়োরীই না। ফলসিফিকেশন তো পরে আসবে। তুমি যে জায়গায় ঘা মারতে চাইছ এগুলো তার এগজাম্পল নয়। উদাহরণ ঐ আগের টইতে দিয়ে রেখেছি, পড়ে দেখতে পারো। ওইটা পপারের থিয়োরীর জেনুইন সমস্যা।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৪51960
  • এগুলো থিয়োরি না, কে কইল?

    https://en.wikipedia.org/wiki/Sociobiology এই ডিসিপ্লিনটা সম্পর্কে জানা হোক। টি এবং পপারের মতে এইগুলো বিজ্ঞান নয়, তাই কি?
  • dc | 132.164.214.238 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৫৩51961
  • অঙ্কের ভাষা বলতে cm বোধায় লজিকের ভাষা বলেছেন। লজিকের নির্দিষ্ট ভাষা তো রয়েইছে, ইন ফ্যাক্ট ফলসিফায়েবিলিটি ইত্যাদিরও লজিকাল এক্সপ্রেশান আছে যাতে ভাষাজনিত অ্যাম্বিগুইটি ইত্যাদি না আসে। কিন্তু প্রোপোজিশনাল ফাংশান ইত্যাদি তো এখানে লেখা যাবেনা।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:০২51962
  • যেকোনো একটা কনসেপ্ট, যেকোনো একটা, লিখে দেখান, যেটা স্রেফ সিম্বল দিয়েই বুঝে ফেলা যায়। কোনো প্রায়র লিঙ্গুইস্টিক নলেজ দরকার নেই।
  • T | 190.255.250.156 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:০৫51963
  • সিরিয়াসলি! 'থিয়োরী' মানে কি জিনিস অনেকবার লিখলাম তো। চলতি যাকে থিয়োরী বলে ঐরম করলে কি করে হবে। তুমি সোশিওবায়োলজির নির্দিষ্ট একটি সমস্যাকে প্রথমে খুব নির্দিষ্ট ভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করো, যাতে কোনো রকম অস্বচ্ছতা না থাকে। তারপর তো থিয়োরী বা আর্গুমেন্ট তৈরী হবে। বিজ্ঞান তো একটা কালেক্টেড সেট অব ফলসিফায়েবল থিয়োরীস, পপারের মতে।

    আমি চেষ্টা করলে এইরকম ভাবে করতাম। প্রথমে ভারতের কোনো একটি স্থান ও কোনো একটি পর্যায়কাল চিহ্নিত করতাম। তারপর সেখানকার পপুলেশনের উপর যে যে ফ্যাক্টর কাজ করছে যদ্দুর সম্ভব নোট করতাম। তারপর অবজার্ভেশনের ভিত্তিতে ইনফারেন্স ড্র করতাম। তারপর একটা তত্ত্ব খাড়া করতাম যে ক্যানো এইরূপ হ'ল। সেটার স্বপক্ষে আরো রেজাল্ট ইত্যাদি। এইবার, এখানটা মন দিয়ে শোনো, যখন আমি থিয়োরী বলে চালাচ্ছি তখন আমাকে আগের ফ্যাক্ট ও অ্যাসাম্পশন গুলো, মানে ঐ স্থান কাল ফ্যাক্টর ইত্যাদি বলে টলে তারপর থিয়োরেমটা টানতে হ'ত এবং তার স্কোপকেও নির্দিষ্ট করতে হ'ত।

    গোলমালটা বাঁধে যখন স্পেসিফিক থেকে লোকে জেনারেলে এক ধাক্কায় যেতে চায়। তখন সোশিওবায়োলজিস্টরা সমস্যায় পড়েন। পড়বেনই কারণ আফ্রিকার সেউ ফল দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এক্সপ্লেন করতে গেলে সমস্যা। সেইখানে এই থিয়োরী খাটে না। সোশিওবায়োলজি বা এই জাতীয় সাবজেক্ট (সে যে কোনো কিছুই হতে পারে, এস লং এস এই প্যাটার্ন ফলো করছে) একটা জায়ান্ট কালেকশন অব থিসিস হয়ে দাঁড়ায়। বিজ্ঞান নয়। এ তো খুব সিম্পল ব্যাপার।
  • π | 71.90.218.161 (*) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:০৭51964
  • টি, সোশিওবায়োলজির কাজকর্মগুলো দেখিস। আর এটা বিজ্ঞান বলেই অনেকে মনে করেন। ঐ রেপ নিয়ে স্টাডিও এই সোশিওবায়োলজিতেই পড়ে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন