এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • অন্য দেশের পাখি - ৫

    শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৪ আগস্ট ২০২৪ | ২৮০ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • | | | | | | | পর্ব ৮
    ছবি: রমিত


    কথা অনুযায়ী ভোর পাঁচটায় মালপত্তর গুছিয়ে গেস্ট হাউজের পোর্টিকোয় এসে দাঁড়াল ওরা, আর ঠিক তখনই বিরাট একটা কালো গাড়ি ঢুকল গেট দিয়ে। ড্রাইভারের পাশে যিনি বসেছিলেন, কদমছাট চুল, চোখে পড়ার মতো স্বাস্থ্যবান এক মাঝবয়েসী ভদ্রলোক, গাড়ি থেকে নেমে একটু হেসে এগিয়ে এলেন।

    আমার নাম অ্যাফোনসো এসপিণ্ডোলো, ডারেল কনজার্ভেশন ফাউণ্ডেশনের সাউথ অ্যামেরিকান অপারেশনের ডিরেক্টর। প্রফেসর চন্দ্রশেখরের ইচ্ছে ব্রাজিলের প্রথম জঙ্গলের অভিজ্ঞতাটা তোমাদের আমার সঙ্গেই হোক, তাই তোমাদের সঙ্গে আমি। অফিশিয়ালি তোমরা ব্রাসিলিয়া য়্যুনিভার্সিটি স্পনসর্ড ভিজিটর, আমি শুধুমাত্রই তোমাদের ট্যুর গাইড। নাও, গাড়িতে ওঠ।

    ওদের মালপত্রগুলো বূটে রেখে দিল ড্রাইভার, তারপর পেছনের সীটে আরাম করে বসল ওরা। গাড়ি স্টার্ট নেবার পর প্রথম কথা বললেন এসপিণ্ডোলো; মনে রেখো, তোমরা যে কাজ করতে এসেছ, সে কাজের সঙ্গে আমার কিন্তু কোন সম্পর্ক নেই, আর আমার কোন রকমের এক্সপার্টিজও নেই। উদ্ধার-করা প্রাণীদের বাঁচাবার চেষ্টা করতে পারি আমি, কিন্তু উদ্ধারের কাজে কোন অভিজ্ঞতাই নেই আমার। লী আমাকে বলেছেন ফল্গু এবং তার সহকারীদের ওপর ওঁর দারুণ ভরসা, অতএব দারুণ ভরসা আমারও। কোন দরকার হলে আমাকে জানিও, যতটা পারি সাহায্য করব।

    তারপরেই একটু হেসে বললেন, দেখ, একাই বকবক করে যাচ্ছি, তোমাদের কার কী নাম সেটাই তো জিজ্ঞেস করা হল না। আচ্ছা, একটু আন্দাজ করি। আমার থেকে সবচেয়ে দূরে, অর্থাৎ বাঁদিকের জানলা ঘেঁসে ঠিক ড্রাইভারের পেছনে যে বসে আছো, তার নাম উল্কি, মাঝখানে ফল্গু, আর ডানদিকের জানলায়, কী যেন নাম তোমার, একটু ডিফিকাল্ট নাম, তবে সহজ একটা অল্টার্নেটিভও আছে, মুড়কি, রাইট?

    মুড়কি বললো, হ্যাঁ রাইট। তবে আপনার যে নাম, অ্যাফোনসো এসপিণ্ডোলো, সেটা আমার নামের চেয়েও শক্ত, সেটা কিন্তু আমি মনে রেখেছি। কালই এখানে একজন বলছিল, আপনাদের সব নামেরই নাকি একটা কিছু মানে আছে, কী মানে আপনার নামের?

    এই রে, বিপদে ফেললে, এসপিণ্ডোলোর কী মানে বলতে পারবো না, আদৌ মানে আছে কিনা তা-ও জানিনা। আমাদের কালচারে কয়েক জেনারেশন পর পর ইচ্ছে মতো সারনেম বদলে দেওয়া হয়, অনেকে বেশ পছন্দসই একটা ফ্যান্সী সারনেম নিয়ে নেন। কখনো কখনো তার মানে একটা থাকে, আবার এমনও হয় যে শুধু শুনতে ভালো লাগল বলেই কেউ একটা সারনেম নিয়ে নিলেন। তবে হ্যাঁ, যেটা আমার নিজস্ব নাম, মানে ফার্স্ট নেম যেটা, সেটার তো নিশ্চয়ই একটা মানে আছে। আমারটার মানে হলো, মহৎ এবং প্রত্যুৎপন্ন, নোব্‌ল্‌ অ্যাণ্ড রেডী।

    নোব্‌ল্‌ অ্যাণ্ড রেডী? বাঃ দারুণ তো।

    দেখ না, আমি নিজে নোব্‌ল্‌ হই বা না হই, যে কাজটা আমি করি, লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা, সেটা যে একটা নোব্‌ল্‌ কাজ, তা তো মানবে নিশ্চয়ই। আর প্রত্যুৎপন্নমতি হতেই হয় নিজের দায়ে, জীবজন্তুদের নিয়ে কারবার তো। আমার মনে হয়, আমার নামটা দেখেই লী আমাকে এই চাকরিটা দিয়ে দিয়েছেন।

    আড়চোখে মুড়কির দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে হাসলো ফল্গু, মুখের মতো জবাবটা পেয়ে গেছিস তো, ভাবটা এই।

    জাতিস্মর পাশে বসে আছে, তবুও কোন কৌতূহল না দেখিয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় নকল হাজরাকে সন্দেহ করেছিল ফেলুদা, নকল না হয়েও শরীরে ইঞ্জিনের মৃদু একটানা কম্পনের হাত বোলানোয় হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ল ওরা তিনজনেই, অনেকগুলো টাইম জোন পেরিয়ে আসার নিদ্রাহীনতা যেন অতর্কিত আত্মসমর্পণ করল নিদ্রাদেবীর কাছে।

    ঘুম ভাঙল ঘন্টা চারেক পর, এসপিণ্ডোলোর ডাকে। চোখ রগড়ে লজ্জিত হাসি হেসে ওরা উঠল যখন, এসপিণ্ডোলো বললেন, তাড়াতাড়ি নেমে এস, আমরা এখন চাপাদা ডো ভিডীরস ন্যাশনাল পার্কে ঢোকবার মুখে। এখান থেকে পারমিট-টারমিট করাতে হবে, আর তার আগে আমরা ব্রেকফাস্ট করে নেব।

    পাশেই একটা ছোট দোকান, নানারকমের টুকিটাকি বিক্রী করে, টূথপেস্ট-সাবান থেকে শুরু করে তোয়ালে-টোয়ালে পর্যন্ত। জঙ্গলে ঢোকবার আগের মুহূর্তে যে যা আনতে ভুলেছে, সে সেগুলো কিনে নেয়। এ ছাড়াও পাওয়া যায় গরম টোস্ট, কফি আর কলা। সেই সব দিয়ে ব্রেকফাস্ট করার সময় এসপিণ্ডোলো বললেন, তোমরা কাজের কাজ করলে একটা। এ ঘুমটা তোমাদের ঘুমোতেই হতো, গাড়িতে ঘুমিয়ে সময়টা ভালোই কাজে লাগালে। ভাব তো, বিছানায় শুয়ে ঘুমোতে যদি, আমাদের বেরোতে চার ঘন্টা দেরি হয়ে যেত! ওরা বুঝতে পারলো না এসপিণ্ডোলো মজা করছেন নাকি যা বলছেন, সেটাই ওঁর মনের কথা!

    পারমিট করাতে সময় লাগল না বেশি; দেখা গেল ওখানে সবাই ভালোই চেনে এসপিণ্ডোলোকে, আর তাছাড়া অ্যাডভান্স খবরও পাঠানো হয়েছিল য়্যুনিভার্সিটি থেকে। ভেতরে ঢোকবার ঠিক আগের মুহূর্তে যে মহিলা সই-টই করছিলেন পারমিটে, ফল্গুকে বললেন এই পার্কের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ অগুণতি পাহাড়ি ঝরনা, ঝরনায় চান করার জন্যে সুইম-স্যুট এনেছ তো, না এনে থাকলে ঐ দোকান থেকে কিনে নাও, ওরা সবকিছু বিক্রী করে।

    তিনদিন এ জঙ্গলে কাটানো, তা-ও অ্যাফোনসো এসপিণ্ডোলোর তত্ত্বাবধানে, সে এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা। পাহাড়ী উঁচু-নীচু জঙ্গল, যে পাথর দিয়ে তৈরি এ পাহাড়, এসপিণ্ডোলো বললেন, সেটা পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো রক ফর্মেশন, প্রায় একশো সত্তর কোটি বছরের পুরোনো। এখানকার ভাষায় উঁচু জায়গাকে বলা হয় সেরা, এই জঙ্গলের উচ্চতম পয়েন্টের নাম সেরা দা সান্টানা, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ফুট উঁচু। এসপিণ্ডোলো দেখালেন প্রায় পঁচিশ-তিরিশ রকমের অর্কিড হয় এখানে, আর তা ছাড়াও নানা রকমের গাছ-গাছালি, যার মধ্যে অনেকগুলোরই বাজারে দাম অনেক। তাই ফরেস্ট গার্ডদের সতর্ক থাকতে হয় চব্বিশ ঘন্টাই। এ ছাড়া কত যে ঝরনা, ওয়াটারফল! আর কী সে ফল! প্রায় সাত-আটশো ফুট ওপর থেকে সোজা নামছে যে কতগুলো! আর কী তাদের বৈচিত্র, ছোট-বড় মিলিয়ে কী তাদের রূপ! আশ্চর্য এক দৃশ্য দেখালেন এসপিণ্ডোলো। একটা ফাঁকা জায়গায় অনেকটা পিছিয়ে নিয়ে এলেন ওদের। সেখান থেকে একসঙ্গে ঝরনাগুলো দেখলো ওরা। আরে, এ কী! সবকটা ঝরনার নীচের দিকে একই সঙ্গে একটা একটা করে আলাদা আলাদা রামধনু! মুড়কি আর উল্কি বায়না ধরলো রামধনুর গায়ে হাত দিয়ে চান করবে! এসপিণ্ডোলো হেসে বললেন, যাও না, এ সুযোগ আর পাবে কোথায়? করলো চান, সোজা ওয়াটারফলের নীচে দাঁড়িয়ে, সে যে কী মজা, কাকে বলবে! কিন্তু রামধনু? কোথায় সে?

    আহা রে, শ্রীমতি লজিক!

    নানারকমের জীবজন্তুও দেখা হলো নাইট-সফরিতে, দিনেও। কয়েকরকমের হরিণ, কেশরওয়ালা নেকড়ে, আর জাগুয়ার। এ ছাড়াও ওরা দেখলো টাপির, খানিকটা শুয়োরের মতো দেখতে; এসপিণ্ডোলো বললেন শুয়োরের চেয়েও এদের বেশি মিল ঘোড়া আর গণ্ডারের সঙ্গে, একই রকমের খুর এদের পায়ে। দেখা হলো রিয়া, উড়তে-না-পারা বিরাট পাখি, এমুর মতো খানিকটা; বর্ম দিয়ে ঢাকা শরীরের খুদে আর্মাডিলো, আর চোখ-ধাঁধানো ঝলমলে রঙের কিং ভালচার।

    জঙ্গল ঘোরা শেষ হলো যেদিন, এসপিণ্ডোলো বললেন, এই ন্যাশনাল পার্কে একটা নিয়ম আছে, পৃথিবীর আর কোথাও এমন নিয়ম আছে কিনা জানিনা। এখানে যত প্রাণী দেখলে, এরা প্রায় সবাই লুপ্তপ্রায়, এদের বাঁচানোর জন্যে প্রাণপণ চেষ্টা চলছে। সে চেষ্টায় আমরাও, মানে ডারেল ফাউণ্ডেশনও এদের পার্টনার। বহুদিনের চেষ্টায় তিন চার রকমের প্রাণীর সংখ্যা অনেক বাড়ানো গেছে, এদের আর লুপ্তপ্রায় বলা হচ্ছে না। বন্যপ্রাণীদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর জন্যে এখানে একটা নতুন কাজ পরীক্ষামূলকভাবে করা হচ্ছে। এ জঙ্গলে যারা বেড়াতে আসে, তাদের মধ্যে পনেরো বছর বয়েসের নীচে যারা, সেই ছেলেমেয়েরা যদি আগ্রহ দেখায়, তাহলে তাদের ঐ সদ্য-বাড়ানো-গেছে এমন প্রাণীদের একটা বাচ্চাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পোষ মানাতে দেওয়া হবে। অবিশ্যি অনেক রকমের প্রশ্ন-টশ্ন করে বুঝে নিতে হবে তাদের আগ্রহটা কতটা গভীর। এই পর্যন্ত বলে মুড়কির দিকে চেয়ে বললেন, কী, নেবে নাকি একটা?

    নেবে নাকি, এ তো হাতে স্বর্গ পাওয়া!

    এসপিণ্ডোলো বললেন, তাহলে যাও, ঐ ভদ্রমহিলা, যিনি পারমিটে সই করছেন, তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর কোন্‌ কোন্‌ প্রাণী দেওয়া হচ্ছে এখন, আর তার থেকে ঠিক কর কোন্‌টা নেবে তুমি।

    এক দৌড়ে চলে গেল মুড়কি, আর কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে হাঁফাতে হাঁফাতে বলল, চয়েস দিয়ে এলাম।

    দিয়ে এলি, কী চয়েস দিলি? – উল্কির প্রশ্ন।

    কিং ভালচার।

    ভালচার, শেষ পর্যন্ত শকুন পছন্দ হলো তোর?

    শকুন, তো কী হয়েছে? কল্যাণীতে ধীরেন মেসোর বাড়ি গিয়েছ কখনো?

    যাব না কেন, প্রায়ই তো যাই, শকুন পোষে নাকি ওরা?

    পুষবে কী করে, পেলে তো! আমি একবার ওদের বাড়ি গেছি গরমের ছুটিতে, সকালবেলা ওদের লনে দেখি কী সুন্দর দুটো পাখি, আগে দেখিনি কখনো ওরকম। বেশ বড়সড়ো, মোটাসোটা, বারো চোদ্দ ইঞ্চি হবে। আমি তো চেয়েই আছি, ময়ূরকণ্ঠী আর পাটকিলে মিলিয়ে রং, খুঁটে খুঁটে কেঁচো-টেচো খাচ্ছে। এমন সময় মেসো বেরিয়ে এল ভেতর থেকে। জিজ্ঞেস করলাম, মেসো, কী পাখি ওগুলো? মেসো বললো, কেন, তোর পছন্দ? বললুম হ্যাঁ, ভারি সুন্দর তো। মেসো বললো, ওর
    রং-টং ভুলে গিয়ে শুধু মাথাটার দিকে চেয়ে থাক কিছুক্ষণ। থাকলাম, কিছুই বুঝলাম না। সেকথা বলতে মেসো বললো চোখটা দেখ ভালো করে, কাকের মতো লাগছে না? হ্যাঁ সত্যি, মেসো বলার পর মনে হলো মাথাটা খানিকটা কাকেরই মতো। মেসো বললো দেখ্‌, ওটাকে আমরা কুবো বলি, কেউ কেউ কৌকালও বলে। আসলে কিন্তু ওটা একটা কাক জাতীয় পাখি। বললাম, মেসো, কাক এত সুন্দর! মেসো বললো, দেখ্‌, আমাদের সৌন্দর্যবোধ অনেক সময়েই সংস্কারনির্ভর। যেই জানলাম কাক, তাকে আর সুন্দর বলা চলবে না!

    মুড়কি এবার ফল্গুদির দিকে ফিরে বললো, বল ফল্গুদি, ঐ যেটার কিং ভালচার নাম, ওর গায়ে রঙের কী বাহার, না? রামধনুর সবকটা রং ওটার গায়ে! শকুন তো হয়েছেটা কী?

    আমি মুড়কির সঙ্গে একমত, বললো ফল্গু, ভালচার যতই হোক, ওটাকে দেখতে সুন্দর সন্দেহ নেই। কিন্তু এখন তো বাচ্চা আছে, বড় হলে রাখতে পারবি তো?

    হঠাৎ বাংলায় কথাবার্তা শুরু হওয়ায় চুপ করেছিলেন এসপিণ্ডোলো – চুপ, কিন্তু হাসি হাসি মুখে। এবার বললেন, তোমাদের সব কথা তো বুঝতে পারিনি আমি, কিন্তু মনে হলো মুড়কির পছন্দ একটা কিং ভালচার, আর উল্কির তাতে অবজেকশন আছে, রাইট?

    উল্কি বললো ঠিক অবজেকশন নয়, আমার মনে হচ্ছে অত বড় একটা পাখি, যেটা অ্যাডাল্ট অবস্থায় পাখা মেললে এক মিটারের চেয়েও বড় হয়, সেটা কলকাতার একটা বাড়িতে রাখা কি প্র্যাকটিকাল?

    দেখো, আমি কলকাতায় যাইনি কখনো, আর শহরটার সম্বন্ধে কোন ধারণাও নেই আমার, তবে একটা কথা তোমাদের বলতে পারি, পাখিটা যদি এখানকার কর্তৃপক্ষ দেয় ওকে, তাহলে সেটা প্র্যাকটিকাল কিনা ভেবেচিন্তেই দেবে। ওকে তো আজ কিছুই দেবে না ওরা, একটা লম্বা-চওড়া প্রশ্নপত্র দেবে শুধু, আর ওদের সামনে বসে ইণ্ডিপেণ্ডেন্টলি সেটার উত্তর দিতে হবে ওকে। তারপর সেই উত্তর নিয়ে আলোচনা করবে ওরা, এক্সপার্ট কমিটি আছে, তারা সব কিছু চিন্তা করে যদি মনে করে, তখন পনের দিনের মধ্যে ওদের নিজেদের লোক ইন্টারন্যাশনাল পারমিট আর পাখিটা দিয়ে আসবে ওকে। মনে রেখ, পাখিটা যদি শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে ও, তাহলে ওর বাড়িটা, অর্থাৎ পাখির নতুন বাসস্থানটা, তখন এক্সটেনশন অব চাপাদা ডো ভিডীরস ন্যাশনাল পার্ক। ওকে মাঝে মাঝেই রিপোর্ট পাঠাতে হবে পাখিটার ব্যাপারে; ওরা খবর রাখবে, পরামর্শ দেবে। আর কখনো পাখিটার অসুবিধে হচ্ছে বলে যদি মনে হয় ওদের, তাহলে পাখিটা ওরা ফেরত নিয়ে নেবে, অথবা লোকাল চিড়িয়াখানায় পাঠিয়ে দেবে, অথবা অ্যাপ্রোপ্রিয়েট যা, তা-ই করবে। অহেতুক চিন্তা কোরো না তোমরা।

    ঘন্টা দুয়েক সময় লাগল মুড়কির, ওদের ঐ লম্বা প্রশ্নটার উত্তর দিতে। এসপিণ্ডোলো বললেন রাতের খাওয়াটা তাড়াতাড়ি সেরে ঘুমিয়ে পড়াই ভালো, কারণ পরের দিন ভোরবেলায় ওদের রওনা দিতে হবে আক্‌রে স্টেটের উদ্দেশে।

    আক্‌রে স্টেটের কথা প্রথমে বলেননি এসপিণ্ডোলো, শুধু বলেছিলেন প্রফেসর চন্দ্রশেখরের ইচ্ছে অনুযায়ী ব্রাজিলের জঙ্গলের সঙ্গে প্রথম পরিচয়টা উনিই করিয়ে দেবেন ফল্গুদের। উনি যেভাবে বোঝেন, সেই জঙ্গলের সংজ্ঞাটা জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে পরে বোঝালেন উনি।

    জঙ্গল মানে কী? জঙ্গল মানে কি শুধু গাছপালা-নদী-ঝরনা আর পশুপাখি? জন্মের দিন থেকে এই গাছপালা-পশুপাখির সঙ্গে এক সঙ্গে যারা বেড়ে উঠেছে, সেই মানুষকে বাদ দিয়ে কি জঙ্গলের কথা ভাবা যায়? দক্ষিণ আমেরিকার এই বিস্তীর্ণ জঙ্গলের কথাই যদি ধর, তাহলে ভেবে অবাক হতে হয় আজও কী করে টিকে আছে এ জঙ্গল। মোটামুটি পনের-ষোলশো খৃষ্টাব্দ থেকে য়্যোরোপের অতি লোভী সভ্য মানুষ বারবার হানা দিয়েছে এই জঙ্গলে রবারের লোভে, কাঠের লোভে, আর জঙ্গলের নানা সম্পদের লোভে। ক্রমে তারা দখল করে নিয়েছে পুরো জঙ্গলটাকেই। সঙ্গে করে নিয়ে আসা নানা অসুখ-বিসুখ আর বদভ্যাস ছড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গলের মানুষের মধ্যে, খুন করেছে এক দলকে, বশে এসেছে আর এক দল। তবুও তো ধ্বংস হয়নি জঙ্গল। ভাবতে পারো, পৃথিবীতে মোট যত বন্যপ্রাণী আছে, তার অর্ধেকই এই পাহাড়-নদী-বর্ষায় ঘেরা দক্ষিণ আমেরিকার বনভূমিতে? কী করে সম্ভব হলো এটা? সম্ভব হলো, তার কারণ হারতে হারতেও হেরে যায়নি জঙ্গলের মানুষ, যাবেও না। তারাই বাঁচিয়ে রেখেছে তাদের জঙ্গলকে। জঙ্গলকে যারা ধ্বংস করতে চায়, তাদের হাত করতে হয় এই জঙ্গলের মানুষকেই, নানা লোভ দেখিয়ে, ভুল বুঝিয়ে। আর যারা বাঁচাতে চায় জঙ্গলকে, তাদেরও সঙ্গে নিতে হয় জঙ্গলের অধিবাসী মানুষকেই।

    আমি যে তোমাদের নিয়ে এলাম চাপাদা ডো ভিডীরস ন্যাশনাল পার্কে, তার কারণ কী বল তো? এখানে যত প্রাণী দেখলে, তারা সবাই এই কিছুদিন আগেও সঙ্কটের মুখে ছিল, প্রায় সবাই ছিল লুপ্তপ্রায়। আজ যে তাদের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে, সে কি মনে করো আমাদের মতো কিছু শিক্ষিত বিশেষজ্ঞের বিদ্যের জোরে? মোটেই নয়। এই জঙ্গলের মানুষদের আমরা সঙ্গে পেয়েছিলাম, তারা হারাতে চায়নি তাদের আজন্ম-বন্ধু পশুপাখিদের; তারাই আমাদের সাহায্য করেছে, আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। তাদেরই আগ্রহে বেঁচে উঠেছে তাদের বন্ধুরা।

    এই পর্যন্ত বলে থামলেন এসপিণ্ডোলো। তারপর বললেন, এই পার্কে তোমরা যা দেখলে তা হলো জঙ্গলের ফিফটি পারসেন্ট। বাকি যে ফিফটি পারসেন্ট তারই জন্যে আমরা যাব ব্রাজিলের উত্তর-পশ্চিম সীমায় আক্‌রে স্টেটে। বেশ খানিকটা দূরে, আর একটা নতুন টাইম-জোনে। এখানকার তুলনায় ওদের সময় এক ঘন্টা পিছিয়ে।

    বেশ জোরে গাড়ি চালিয়েও – আর সময়ের পার্থক্যের সুবাদে এক ঘন্টা পড়ে-পাওয়া বেশি সময় পাওয়া সত্ত্বেও – আক্‌রেতে পৌঁছতে অনেক রাত হয়ে যাবে বোঝা গেলো। সঙ্গে বিস্কুটের প্যাকেট ছিলো, বেলা চারটে পর্যন্ত খিদে মেটাবার রসদ। চারটের পর ছোটখাট একটা রেস্টোর‍্যান্ট-কাম-জেনারাল-স্টোরে গাড়ি দাঁড় করালেন এসপিণ্ডোলো, বললেন, এখানে যে খাবারটা পাবে, আমার মনে হয় তোমাদের এবারের ট্রিপে সেরকম খাবার আর পাবে না কোথাও। খেতে ভালোই লাগা উচিত, না লাগলে আমার কিছু করার নেই। পারলে বেশি করে খেও, মনে হয় না আর কোন খাদ্য জুটবে আজ; এটাই আজকের ডাঞ্চ, মানে লাঞ্চ অ্যাণ্ড ডিনার কম্বাইণ্ড!

    পরের দিনের ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চটাও যদি কম্বাইন করে খাওয়ার মতো পেটে জায়গা থাকত, ততটাই বোধ হয় খেত ওরা। আহা, এমন খাবারও হয়! তিনটে আইটেম; ভাত, মাংসের ডিশ একটা, আর মাছ। কিসের মাংস ওরা খোঁজ নেয়নি, ডিশটার নাম কার্ণে-ডী-সল। পুরো রান্নাটা হয়েছে আগুন ছাড়া, শুধু সূর্যের তাপে। কাঁচা অবস্থায় মাংসের থেকে সমস্ত হাড় বের করে নিয়ে প্রায় কাগজের মতো পাতলা পাতলা করে কেটে, মাঝে মাঝে টুকুপি নামের একটা ঘরে-তৈরি সস একটু একটু করে দিয়ে, মাংসটা মজিয়ে মজিয়ে রান্না করা হয়েছে এই ডিশ। লক্ষ্ণৌ-এ হজরতগঞ্জের একটা গলিতে এক বিখ্যাত হাত-কাটা রসুই-এর দোকানে একবার বাবার সঙ্গে কাবাব খেয়ে মোহিত হয়েছিলো উল্কি, সে কাবাবওয়ালা এই রসুই-এর কাছে রান্নার পাঠ নিতে পারে কয়েক বছর! আর মাছটা? এর কাছে জাপানী সুশী, দূর! মাছটার নাম বললো পিরারুকু, অ্যামাজনের নিজস্ব মাছ। সসটার রেসিপি জানবার জন্যে অনেক করে ধরাধরি করার পর, আর স্থানীয় ভাষায় এসপিণ্ডোলোর রেকমেণ্ডেশনের জোরে, জানা গেল যে সসটার মূল উপাদান একটা স্থানীয় কন্দ, নাম ম্যানিয়ক।

    অনেক রাতে যখন আক্‌রের রাজধানী রিও ব্র্যাঙ্কোতে পৌঁছোল ওরা, টিমটিম করছে ছোট শহরটা, দোকান-বাজার সব বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট একটা হোটেলে জায়গা পাওয়া গেল রাতটার জন্যে।

    যে জায়গায় যাবার প্ল্যান নিয়ে বেরিয়েছেন এসপিণ্ডোলো, সেখানে পৌঁছনোর জন্যে পরের দিন সকালে আরো পনেরো-কুড়ি কিলোমিটার পাহাড়ী রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে প্রায় ছ হাজার ফুট ওপরে উঠতে হল, জায়গাটার নাম সেরা ডা কন্টামানা। নামে শহর, কিন্তু প্রায় গ্রামেরই মতো। আক্‌রের যারা আদি অধিবাসী তাদের নাম আক্রিয়ানো; হাজার খানেক আক্রিয়ানোর বাস এখানে, কিন্তু তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্যে এখানে আসা নয়, আসলে এখানে বাস করে আর একটি জনজাতির প্রায় পাঁচ-ছশো মানুষ, এদের নাম আশানিঙ্কা। এদের সঙ্গেই ফল্গু-উল্কি-মুড়কির আলাপের উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন এসপিণ্ডোলো।

    অনেক আক্রিয়ানোকেই চিনতেন তিনি, মাঝে মাঝেই এদের সাহায্য নিতে হয় বিভিন্ন কারণে। এদের মধ্যেই একজন, নাম ফিনিগান। তার সঙ্গে দেখা করে জানা গেল, যে গ্রামটায় পেরু থেকে প্রায় রিফিউজি হয়ে আসা আশানিঙ্কা-মাৎসিগোঙ্কা জনজাতির মানুষরা বাস করছে, সেটা এই পাহাড়েরই উল্টো ঢালে, খানিকটা নীচে নেমে গিয়ে জুরুয়া নদীর ধারে। গ্রামের নাম শিম্পাটিয়া। ইংরিজিতে বানান করে এসপিণ্ডোলো যদিও বললেন মাৎসিগোঙ্কা, ওদের সঙ্গে দেখা হবার পর ওরা কিন্তু নিজেদের নাম যেভাবে উচ্চারণ করছিল সেটা ফল্গুদের কানে শোনাচ্ছিল মাছিয়োঙ্গা।

    খোঁজ করে করে পৌঁছোনো গেল শিম্পাটিয়ায়। এসপিণ্ডোলোর একটা মস্ত সুবিধে, অ্যামাজনের অনেক জনজাতির ভাষাই তিনি জানেন; যেটা ঠিক ঠিক জানেন না, সে ভাষাতেও কথা শুনলে বুঝতে পারেন, আর সহজে না হলেও, কিছুক্ষণ শরীরের ভাষা, ইশারা-ইঙ্গিত, ইত্যাদির পর, নিজের জানা ভাষাটার কোন কোন শব্দ এমন ভাবে প্রয়োগ করতে পারেন যে দিব্যি কথাবার্তা চালানো যায়। সেভাবেই কিছুক্ষণ কথা হল আশানিঙ্কা-মাৎসিগোঙ্কাদের সঙ্গে।

    চাপা রাগে প্রায় ফেটে পড়ছে এই জনজাতির লোকরা। গত দশ-পনেরো হাজার বছর ধরে অ্যামাজন এবং তার অজস্র করদ নদীর ধারে বৃষ্টিলালিত অরণ্যে এরা বাস করছে স্বাধীনভাবে, জঙ্গল ছাড়া আর কারো কাছে কখনো হাত পাতেনি, বনের স্বাধীন পশুপাখিদের মতো এরাও নিজেদের বনেরই অংশ বলে জেনে এসেছে চিরকাল। বনের বাইরের অন্য মানুষেরও যে লোভ আছে বনসম্পদে, সেটা এরা প্রথম বোঝে ইনকাদের সময়, কিন্তু তাদের জঙ্গল অভিযানও আশানিঙ্কারা প্রতিহত করে। পনেরো-ষোল শতাব্দীতে যখন প্রথম য়্যোরোপীয়দের নজর পড়ে অ্যামাজনের সম্পদে, তখন থেকেই এরা বুঝতে শুরু করে মানুষের লোভের দৌরাত্মের আসল চেহারাটা। এরপর শুরু হয় কাঠের চোরা-ব্যবসায়ী আর
    রবার-দস্যুদের দাপাদাপি। নিরস্ত্র এই মানুষরা দলে দলে নিহত হয় তথাকথিত সভ্য এই দস্যুদের হাতে, জোর করে ক্রীতদাস বানানো হয় হাজার হাজার আশানিঙ্কা-মাৎসিগোঙ্কা জনজাতির স্ত্রী-পুরুষকে, মাত্র তিরিশ-চল্লিশ বছরেই এদের সংখ্যা কমে কমে নেমে আসে মাত্র শতকরা কুড়ি ভাগে। অনেক লড়াই করে শেষ পর্যন্ত এনী নদীর ধারে ওটিষি ন্যাশনাল পার্কে জায়গা পায় এরা। সেই এনী নদীতে বিশাল বিশাল ড্যাম বানিয়ে এখন তৈরি হবে জলবিদ্যুৎ। এরই মধ্যে দশ হাজার আশানিঙ্কা-মাৎসিগোঙ্কা রিফিউজি হয়েছে আর একবার! নদী পেরিয়ে, পেরুর সীমানা ছাড়িয়ে কয়েকশো পরিবার এসেছে আক্‌রে রাজ্যে, ব্রাজিলে; কিন্তু আর নয়, এত সহজে ওরা ওদের স্বাধীনতা ছেড়ে দেবে না।

    সবাই যখন গোল করে ঘিরে বসেছে, আশানিঙ্কা-মাৎসিগোঙ্কাদের মেয়েপুরুষ সবাই, আর মাঝখানে ওরা, অতিথিরা, এসপিণ্ডোলোকে হঠাৎ বললো মুড়কি, কিন্তু আমরা তো এসেছি জঙ্গলের প্রাণীরা যাতে জঙ্গলেই থাকতে পারে যেমন থেকেছে চিরকাল সেই চেষ্টা করতে, তাহলে আমরাও তো এদের স্বাধীনতারই যোদ্ধা, তাই না? সবায়ের মধ্যে মুড়কির বয়েসী একটা মেয়েকে কথা বলতে দেখে আশানিঙ্কাদের কৌতূহল বেড়ে গেল খুব, ওরা জিজ্ঞেস করল এসপিণ্ডোলোকে, কী বলছে মেয়েটা?

    এসপিণ্ডোলো বুঝিয়ে বললেন যখন, সবায়ের সে কী মাথা নাড়ার ধুম! আরো কাছে এসে ঘেঁসে বসলো আশানিঙ্কা মেয়েদের দল, ওদের তিনজনের গালে আর মাথায় হাত বুলিয়ে অনেক কিছু বললো তারা। এসপিণ্ডোলোকে বুঝিয়ে বলতে হলো না কী বলছে ওরা। ভাষা জানা থাক বা না থাক, আবেগ কে না বোঝে!

    হঠাৎ তাড়াহুড়ো করে একজন বৃদ্ধা বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে, দৌড়োতে দৌড়োতে হাঁপাতে হাঁপাতে ফিরে এলেন কিছুক্ষণ পর। বৃদ্ধার হাতে তিনটে মালা, সাদা সাদা ছোট ছোট কিছু একটা দিয়ে গাঁথা হয়েছে মালাগুলো। এসপিণ্ডোলো হেসে বললেন, এই মালাগুলো কী দিয়ে গাঁথা হয়েছে বুঝতে পারছ? এগুলো বাঁদরের দাঁত, অতি যত্নে ছোট ছোট ছ্যাঁদা করে, বন্যপ্রাণীর লোম দিয়ে গেঁথে তৈরি করা হয়েছে এগুলো। মেয়েদের দল থেকে ঠিক ওদেরই বয়েসী তিনটে মেয়ে এগিয়ে এসে, প্রত্যেকের নিজের বয়েসের কাছাকাছি যে, তাকে পরিয়ে দিল তার মালাটা। খুশিতে হাততালি দিয়ে উঠল ঘরের সবাই! ওরা যেভাবে আদর করে গালে-মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছিল, ঠিক সেভাবেই ফল্গুকে মালা পরাল ওরই বয়েসী যে মেয়েটা, তাকে আদর করে তারও মাথায়-গালে হাত বোলাল ফল্গু। ওর দেখাদেখি উল্কি আর মুড়কিও। আবার হাততালি আর সে কী স্বতস্ফুর্ত হাসির ধুম! প্রথমে আশানিঙ্কারা যাতে বুঝতে পারে সে রকম ভাষায়, পরে ইংরিজিতে এসপিণ্ডোলো বললেন, তোমাদের আশানিঙ্কা-মাৎসিগোঙ্কা গোষ্ঠীর সভ্য করে নেওয়া হলো আজ থেকে। এই যে মালা তোমরা পরলে, এই মালাই তার পরিচয়।

    যে কথাটা বলেছিলেন চাপাদা ডো ভিডীরস ন্যাশনাল পার্কে, সেই কথাটাই আরও কয়েকবার বললেন এসপিণ্ডোলো ফেরার পথে। অ্যাণ্ডিয়ান কক-অব-দ্য রককে যদি বাঁচাতে চাও, জঙ্গলের মানুষের সাহায্য পেতেই হবে তোমাদের। এই যে দেখলে আশানিঙ্কাদের, এরা অসম্ভব আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন মানুষ, স্বাধীনতার জন্যে সব কিছু করবে এরা। সভ্য চেহারার মানুষদের এরা আর বিশ্বাস করেনা খুব একটা, কিন্তু সে অসুবিধেটা হয়তো তোমাদের কেটেই গেল। যে লড়াইয়ে তোমরা নেমেছ, তাতে জিততে হলে এদের পুরোপুরি বিশ্বাস অর্জন করাটাই হবে তোমাদের কাজ।



    চলবে ---
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    | | | | | | | পর্ব ৮
  • ধারাবাহিক | ২৪ আগস্ট ২০২৪ | ২৮০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • স্বাতী রায় | 117.194.33.86 | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ১৭:২৮536806
  • পড়ছি। ভাল লাগছে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন