এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • দেশভাগঃ ফিরে দেখা(দ্বিতীয় পর্ব)

    I
    অন্যান্য | ২৬ অক্টোবর ২০১৭ | ৫৯১২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অর্জুন অভিষেক | 127812.79.56900.202 | ২৯ আগস্ট ২০১৮ ১৩:৩৫370762
  • @. ওয়াটসঅ্যাপ থেকে নয়। আমি ওয়াটসঅ্যাপের ফরওয়ার্ড পড়িনা, কোনো আলোচনায় এসব include করা ত কল্পনার বাইরে।

    আমার দুটি পোস্টের সোর্স হল বিশিষ্ট সাংবাদিক শংকর ঘোষের 'হস্তান্তর' বইয়ের প্রথম খণ্ড। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত।

    শংকর ঘোষের এই লেখা 'দেশ' পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে ১৯৯৮- ২০০০ অবদি প্রকাশিত হয়েছিল।

    মোট তিনটে খণ্ড।

    দুটো খণ্ড আমার সংগ্রহে আছে।

    রেফারেন্স হিসেবে প্রথম খণ্ডের পাতাও উল্লেখ করে দিলাম।

    ১৫- ২০
  • অর্জুন অভিষেক | 127812.79.56900.202 | ২৯ আগস্ট ২০১৮ ১৩:৪১370763
  • . বই তিনটে পড়ে দেখবেন।

    typos প্রথম পোস্টে ৩য় বাক্যে হবে 'তিনি গান্ধী ও নেহেরুকে পছন্দ করতেন না'

    এবং ৪র্থ 'বর্মা থেকে মাউন্টব্যাটেনকে নিয়ে আসেন।'
  • I | 7845.15.124512.58 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫৫370764
  • ১৯৪০ এর মে মাসে ব্রিটেনে কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির জোট সরকার ক্ষমতায় এল। প্রধানমন্ত্রী হলেন চার্চিল, উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাট্লী। পরের মাসেই ফ্রান্সের পতন হল। বিশ্বযুদ্ধ ব্রিটেনের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছল।গান্ধি ঘোষণা করলেন-"আমরা ব্রিটেনের ধ্বংসের বিনিময়ে ভারতের স্বাধীনতা চাই না।"(1) জাতীয় কংগ্রেস একটু নরম হয়ে ব্রিটেনকে যুদ্ধে সহযোগিতার প্রস্তাব পাঠালো। শর্ত হিসেবে ভারতের শাসনক্ষমতা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। অগাস্ট মাসে লর্ড লিনলিথগো এর উত্তর দিলেন। জানালেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা সম্ভব নয়। তবে তিনি ভাইসরয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে আরো বেশী ভারতীয় সদস্য নিতে রাজী আছেন এবং একটি যুদ্ধকালীন উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করতে সম্মত আছেন; যুদ্ধশেষে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের একটি প্রতিনিধিদলের হাতে ভারতের ভবিষ্যত সংবিধান রচনার দায়িত্ব তুলে দিতেও রাজী হয়েছে।অর্থাৎ ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের আশ্বাসের রকমফের। সেইসঙ্গে মুসলিমদের আশ্বস্ত করা হল, ক্ষমতা কেন্দ্রে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত থাকবে।কংগ্রেসের আধিপত্য তাঁদের মেনে নিতে হবে না।(2)

    নাকের বদলে এহেন নরুণ পেয়ে স্বভাবতঃই জাতীয় কংগ্রেস খুশী হল না। ওয়ার্ধা সম্মেলনে লিনলিথগোর এই অগাস্ট প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হল। চরমপন্থীরা দেশ জুড়ে আইন অমান্য শুরু করবার প্রস্তাব দিলেও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কথা বিচার করে সে প্রাস্তাব খারিজ করা হল। সরকারকে বেশী বিব্রত না করার উদ্দেশ্যে গান্ধি 'একক সত্যাগ্রহ'র ডাক দিলেন। প্রথম সত্যাগ্রহী নির্বাচিত হলেন বিনোবা ভাবে; দ্বিতীয়জন জওহরলাল নেহরু। এক এক করে আরো ২৫ হাজার সত্যাগ্রহী 'ডিফেন্স অফ ইন্ডিয়া' আইন অমান্য করে জেলে গেলেন। কিন্তু এই না-ঘরকা-না ঘাটকা আন্দোলন দেশে তেমন সাড়া ফেলল না। বিব্রত গান্ধি ডিসেম্বর মাসে একক সত্যাগ্রহ আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন।

    পক্ষান্তরে মুসলিম লিগও যে তেমন খুশী হল, এমনটা নয়।প্রস্তাবে পাকিস্তানের দাবীর প্রতি কোনো স্পষ্ট সমর্থন না থাকায় লিগও এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল।

    ১৯৪১- এ আমেরিকা ও জাপান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করল। লন্ডন ও নয়া দিল্লির সরকারের শিরঃপীড়ার দুটি নতুন কারণ তৈরী হল। এক তো যে কোনো সময়ে জাপানের ভারত আক্রমণের ভীতি। দ্বিতীয়তঃ যুদ্ধের ছোট শরিক হিসেবে বড় শরিক আমেরিকার সাহায্যমুখাপেক্ষী হয়ে থাকা ও বিনিময়ে
    ব্রিটেনের এশীয় কলোনিনীতি বিষয়ে আমেরিকার তেতো পরামর্শ (অনেক ক্ষেত্রে যা আদেশের সামিল) সোনামুখ করে গিলতে বাধ্য হওয়া।

    এরপর এল '৪২এর ১৫ই ফেব্রুয়ারির সেই ভয়ংকর দিন। 'অপরাজেয়' সিঙ্গাপুরের পতন হল। সিঙ্গাপুরের তটরেখা ধরে বসানো কংক্রীটে গাঁথা বিশাল বিশাল সমুদ্রমুখী কামানগুলি থেকে একটিও গোলা বর্ষিত হল না; জাপানীরা পেছন থেকে এসে স্থলভূমি দিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যকে কুপোকাত করল। একটাও গুলি না ছুঁড়ে কর্নেল হান্ট তাঁর ৬০০০০ সৈন্যের বিশাল ভারতীয় বাহিনী নিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন।ব্রিটিশ সিংহের মানমর্যাদা বুঝি ধূলায় গড়াগড়ি যায়।

    এতদিন ভারতীয় রাজনীতিকদের দাবীদাওয়া নিয়ে চার্চিলের খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু সিঙ্গাপুরের পতন জাপানকে ভারতের দরজা অবধি নিয়ে এল। ওয়ার কাউন্সিলের মাথারা চার্চিলকে জানালেন-"If the Japanese adopt a bold policy, we are in real danger of losing our Indian empire-with incalculable consequences to the future conduct of the war." (3) ভারতীয় এম্পায়ার ছিল বৃদ্ধের দুর্বলতম স্থান। ভারত হারানোর আশংকায় চার্চিল নড়েচড়ে বসলেন। ভারতের জাতীয় আন্দোলনের প্রতি তাঁর প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাবের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের চাপও তাঁর ওপরে কম ছিল না। লেবার নেতা অ্যাটলী তাঁকে স্পস্টাস্পস্টি জানালেন, তাঁর এই মনোভাব মোটেই "widely shared" নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট চার্চিলের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছিলেন ভারতকে দ্রুত স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য। (আটলান্টিক চার্টার তৈরীর সময় চার্চিলের সঙ্গে তাঁর বাগ্‌যুদ্ধ -"I can’t believe that we can fight a war against fascist slavery, and at the same time not work to free people all over the world from a backward colonial policy" অথবা দু বছর পরে কাসাব্লাঙ্কা সম্মেলনে তাঁর ঘোষণা ‘"India should be made a commonwealth at once. After a certain number of years – five perhaps, or ten – she should be able to choose whether she wants to remain in the Empire or have complete independence’’ স্মর্তব্য।) (4) মুখে 'সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতা'র কথা বললেও আমেরিকার এতে দুটি স্বার্থ ছিল। প্রথমটি আশু-ভারতকে বেস করে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত চিয়াং কাইশেককে রশদ যোগানো। দ্বিতীয়টি অবশ্যই দূরের ভাবনা-স্বাধীন ভারত তথা অন্যান্য ডিকলোনাইজড দেশে বাণিজ্যবিস্তার ও কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের সাপেক্ষে ভূরাজনৈতিক (geopolitical ) প্রাধান্য গড়ে তোলা।

    সে যাই হোক, সিঙ্গাপুর পতনের তিন সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই চার্চিল লেবার এম পি সার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসকে দিল্লি পাঠালেন ভারতীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে, যাতে যুদ্ধে ভারত থেকে আরো বেশী সংখ্যক সেনা ও রসদ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।

    Notes
    1.http://www.historydiscussion.net/essay/indian-polity-1939-1945-during-the-period-of-second-world-war/2089.
    2.Radhey Shyam Chaurasia (2002). History of Modern India, 1707 A. D. to 2000 A. Atlantic Publishers. pp. 281-283.
    3.Chiefs of Staff Committee,1April,1942. Cited in Thorne, Allies of a kind, pp.233-4.
    4.https://www.thequint.com/news/world/franklin-roosevelt-role-in-india-independence-british-rule-churchill.
  • গবু | 2345.110.125612.232 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:২১370765
  • পড়ছি।
  • I | 7845.15.013412.144 | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২৩:৪২370766
  • তুলে রাখলাম। নইলে খুঁজে পেতে অসুবিধে হয়।
  • সিকি | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৯:২৭370767
  • আমিও আরেকবার তুলে রাখলাম। উইকেন্ড আসছে কিনা।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.894512.5 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৪370768
  • এই সমৃদ্ধ লেখাটায় Choudhry Rahmat Ali র কথা জানতে চাই। যিনি ছাত্র থাকাকালীন কেমব্রিজ শহরের হাম্বারটোন রোডের একটি বাড়িতে প্রথম 'PAKSTAN' শব্দটা সৃষ্টি করেন।

    Subcontinent র Muslim দের জন্যে একটি separate state র দাবীর earliest proponent বলা হয় তাকে । জিন্না প্রথমে ওকে বিশেষ পাত্তা দেননি যদিও। পরে তার দেওয়া নামটিই আলাদা রাষ্ট্রের জন্যে বরাদ্দ হয়।
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.143 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:১৭370769
  • @অর্জুন অভিষেক, আপনি হয়তো খেয়াল করেননি কিন্তু লেখক এই ব্যাপারটা গত ২৯ জুলাই লিখেছেন (৩এর পাতায় পাবেন) ---

    এর তিন বছর পর ১৯৩৩ সালে আর এক পাঞ্জাবী মুসলিম চৌধরী রহমৎ আলি কেম্ব্রিজে একটি প্যাম্ফলেট প্রকাশ করবেন-"Now or Never; Are We to Live or Perish Forever?" সেই প্রচারপুস্তিকায় উত্তর ভারতের পাঁচটি প্রদেশ নিয়ে একটি পৃথক মুসলিম হোমল্যান্ডের দাবী জানানো হয়। পাঞ্জাব, আফগান প্রদেশ (উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ),কাশ্মীর, সিন্ধ ও বালুচিস্তান-এর প্রথম চারটির আদ্যক্ষর ও বালুচিস্তানের 'স্তান' নিয়ে এর নাম দেওয়া হয় 'পাকস্তান'। পরবর্তীকালে উচ্চারণের সুবিধার জন্য রহমৎ আলি একে ঈষৎ বদলে করেন 'পাকিস্তান'(9)। শব্দটি যে নিছকই অ্যাক্রোনিম নয়, উর্দু ও ফারসীতে এর যে একটি অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে, "পাকিস্তান" নামের জনক রহমৎ আলি তা-ও বুঝিয়ে বলেন-'It means the land of the Paks – the spiritually pure and clean.'(10)

    পরের বছর অর্থাৎ ১৯৩৪ সালে রহমৎ আলি ও তাঁর বন্ধুরা জিন্নার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে পাকিস্তানের দাবীকে সমর্থনের অনুরোধ জানান। জিন্না তাঁদের কিঞ্চিৎ আশাহত করেই বলেন-"My dear boys, don't be in a hurry; let the waters flow and they will find their own level"(11)। বস্তুত জিন্না কেন, সেইসময় কোনো মুসলিম নেতাই হয়তো ভারতীয় মূল ভূখন্ড থেকে আলাদা হয়ে একটি পৃথক মুসলিম হোমল্যান্ডের দাবী জানানোর মত র‌্যাডিক্যাল অবস্থানে গিয়ে পৌঁছন নি। ১৯৩৩ সালের অগাস্ট মাসে একটি মুসলিম প্রতিনিধিদল ভারতীয় সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত একটি পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে গিয়ে বলে আসেন-'পাকিস্তানের দাবী কাল্পনিক ও অবাস্তব'(12) । অনেক ঐতিহাসিকের মতে, যে ইকবাল ১৯৩০ সালে উত্তর-পশ্চিম ভারতের মুসলিমদের জন্য একটি পৃথক রাজ্য দাবী করেছিলেন, তিনিও খুব সম্ভবতঃ দেশভাগ চান নি। আসলে তিনি যা চেয়েছিলেন, তা হল ভারতীয় ফেডারেশনের মধ্যে একটি পৃথক স্বশাসিত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ(13),(14),(15),(16)। জিন্না তো আরো বছর দশেক কংগ্রেসের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা-দর কষাকষি চালিয়ে যাবেন ও অবশেষে ১৯৪০ সালে লাহোর বক্তৃতায় দ্বিজাতিতত্বের প্রতি তাঁর সমর্থন সুস্পষ্টভাবে জানাবেন। (যদিও আয়েষা জালাল মনে করেন জিন্না মন থেকে কখনোই পাকিস্তান চান নি; কংগ্রেসের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা রাস্তা বেরোবে বলে তাঁর বিশ্বাস ছিল। পাকিস্তানের দাবী ছিল তাঁর কাছে দর কষাকষির একটি অস্ত্রমাত্র)।
  • অর্জুন অভিষেক | 341212.21.0178.1 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২২:১৩370770
  • @ এলেবেলে, ধন্যবাদ, আপনার সুচিন্তিত সংযোজনের জন্যে।

    আমার মোবাইল ফোনে জানিনা কেন, সব কটা পাতা খোলেনা। পাতার নম্বর গুলো দেখতে পারছি, কিন্তু ক্লিক করলে খুলছেনা।

    ল্যাপটপ থেকে লগ-ইন করে দেখতে হবে।

    আবারো ধন্যবাদ।

    Choudhry Rahmat Ali? নিয়ে একজন একটি বইও লিখেছেন। গুরিন্দর চাড্ডার একটা ডকুমেন্টরিতে তার ইন্টার্ভিউ আছে।
  • সিকি | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:০০370772
  • ইন্দোদাদাআআআআ, এই উইকেন্ডে হল নি?
  • I | 7845.15.235612.227 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০২370773
  • ছেলে পেটাচ্ছিলাম।সামনের হপ্তা থেকে একটু রেগুলার হওয়ার চেষ্টা করবো।ছেলের পরীক্ষা কাল শেষ হবে।
  • I | 7845.15.786712.207 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২৩:৩৯370774
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ক্রীপস মিশন নিয়ে লেখার আগে লীগের পাকিস্তান-চিন্তা নিয়ে কিছু সংযোজন ঃ

    ৩৮-৩৯ সাল নাগাদ হিন্দু আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মুসলিম লীগ বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে।জাফরুল হাসান ও হুসেন কাদরীর আলিগড় প্রকল্পে প্রস্তাব দেওয়া হয় চারটি স্বাধীন রাষ্ট্রের-পাকিস্তান, বাংলা, হায়দরাবাদ ও হিন্দুস্তান। অন্যান্য প্রকল্পগুলিতে অবশ্য দেশভাগের কথা ভাবা হয় নি। ভাবা হয়েছিল একটি আলগা ভারতীয় মহাসঙ্ঘের মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত কয়েকটি মুসলিম ব্লকের কথা । যেমন পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী সিকন্দর হায়াৎ খানের আনীত প্রস্তাবে ছিল একটি ত্রিস্তরীয় কাঠামোর ভাবনা। স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশগুলিকে সাতটি অঞ্চলে ভাগ করা হবে; প্রতিটি অঞ্চলের থাকবে নিজস্ব আইনসভা।কেন্দ্রের হাতে থাকবে শুধু প্রতিরক্ষা, বিদেশদপ্তর, সীমাশুল্ক ইত্যাদি কয়েকটি জরুরী বিষয়। এ যেন ১৯৪৬-এর ক্যাবিনেট মিশনেরই ভাবনা, আরো বছর সাতেক আগে ভেবে ফেলা।

    এইসব বিকল্প অনুসন্ধানের পেছনে যে ব্রিটিশ সরকারের প্রচ্ছন্ন মদত ছিল, তা এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ভাইসরয় লিনলিথগো ও ভারত সচিব জেটল্যান্ডের কাগজপত্র সেই দিকেই অঙুলিনির্দেশ করে। (1) ৬ই ফেব্রুয়ারি , লাহোর প্রস্তাবের ৬ সপ্তাহ আগে জিন্নাকে লিনলিথগো বলেন-"যদি তিনি ও তাঁর বন্ধুরা চান যে মুসলমানদের বিষয়টি যুক্তরাজ্যে হেলায় হারিয়ে যাবে না,তাহলে সত্যিই যা না হলেই নয় তা হল অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নিজস্ব পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।"(2) ১২ই মার্চ,১৯৪০ লিনলিথগো জেটল্যান্ডকে লেখেন-" আমার নির্দেশে জাফরুল্লা (মুহাম্মদ জাফরুল্লা খান, মুসলিম লীগ নেতা ও লাহোর প্রস্তাবের খসড়া-প্রস্তুতকারী-লেখক) দুটি ডোমিনিয়ন রাষ্ট্রর বিষয় নিয়ে একটি স্মারকলিপি তৈরী করেছেন...।" (3)

    ১৯৪০ এর লাহোর প্রস্তাবটি ছিল অস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থবোধক। সম্ভবতঃ এটি ছিল ইচ্ছাকৃত। প্রস্তাবে মুসলিমদের জন্য 'কয়েকটি স্বাধীন রাষ্ট্র' ('States') গঠনের কথা বলা হয়। জিন্না পরে বলেন যে আসলে একটিই রাষ্ট্রের কথা বলতে চাওয়া হয়েছে, 'States' শব্দটি ছাপার ভুল।(4) পাকিস্তান রাষ্ট্রের (অথবা স্বায়ত্তশাসিত ইউনিট) ধারণা তখনো জিন্না ও তাঁর দলের কাছে সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি, অতএব দর-কষাকষির সব রকম রাস্তা খোলা রাখতেই এই ইচ্ছাকৃত অস্পষ্টতা, এই ভাবনা নেহাত অযৌক্তিক নয়।

    Notes
    1.আধুনিক ভারতঃ সুমিত সরকার, কে পি বাগচি অ্যান্ড কোম্পানী, ১৯৬০, পৃ ৩২৬।
    2.Uma Kaura, Muslims and Indian Nationalism, pp. 149.
    3.Facts are Facts: The Untold Story of India's Partition, Wali Khan, p.29.
    4.যুক্ত বাংলার শেষ অধ্যায়, কালিপদ বিশ্বাস, পৃ ২২১-২।
  • Du | 7845.184.1256.215 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৩৭370775
  • একটা দেশ যে ভেঙে যেতে পারে বিশ্বযুদ্ধের আগে কেউ আদৌ ভাবতে পারত কিনা কে জানে!
  • I | 7845.15.893423.90 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০১370776
  • ১৯৪১ সালের শেষ অবধি সব বামপন্থীরাই যুদ্ধের বিপক্ষে ব্রিটিশ-বিরোধী জঙ্গী আন্দোলনে উৎসাহী ছিলেন ( ব্যতিক্রম এম এন রয় -পন্থীরা, তাঁরা তখনই বিশ্বাস করতেন এই যুদ্ধ ফ্যাসিবিরোধী যুদ্ধ, অতএব যুদ্ধে ব্রিটিশকে সহায়তা করা উচিৎ)।(১) কংগ্রেসের নরমপন্থী নীতির প্রতিবাদে একটি সমাবেশ আহুত হয়, সুভাষচন্দ্র তার সভাপতিত্ব করেন। জয়প্রকাশ নারায়ণ সহ কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টির নেতারা ছিলেন আরো জঙ্গী; জেলে বসে জয়প্রকাশ সশস্ত্র অভ্যুত্থানের চিন্তা অবধি করেন। সি এস পি ও কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক তখন বেশ তিক্ত, কেননা বেশ কিছু সি এস পি নেতা ততদিনে সি পি আই-তে যোগ দিয়েছেন। তবুও উভয় দলের রাজনৈতিক মতবাদে বিশেষ কোনো পার্থক্য তখনো ধরা পড়ে নি। কমিউনিস্টরা বিশ্বাস করতেন এই যুদ্ধ সাম্রাজ্যবাদীদের ভেতরকার যুদ্ধ, এই সুযোগে একে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের যুদ্ধে পরিণত করতে হবে। (2) কমিউনিস্টরা আওয়াজ তুললেন- ব্রিটিশের যুদ্ধে একজন ভাইও নয়, একটি পয়সাও নয় (না এক পাই, না এক ভাই)।

    অবশ্য ব্রিটিশের তীব্র দমন-নীতির প্রতিরোধ করে বামপন্থীরা তেমন কোনো বড় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেন না। ১৯৪০এর জুলাই মাসে সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণের দাবীতে একটি সফল আন্দোলন হল, তাতে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকেরাই প্রচুর পরিমাণে যোগ দিলেন। ঐ বছরই সেপ্টেম্বর মাসে বাম-প্রভাবিত কেরল প্রদেশ কংগ্রেস মালাবারে জমিদার-বিরোধী একটি কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলে। চার জন কৃষক -কিশোরের মৃত্যুদন্ড হয়; এঁরাই কাইয়ুর-শহিদ নামে সারা ভারতে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন ।(৩) কিন্তু এইসব বিক্ষিপ্ত আন্দোলন ব্রিটিশ শাসনকে দেশব্যাপী চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলার জন্য যথেষ্ট ছিল না।

    ৪১ এর জুন মাসে হিটলার অনাক্রমণ চুক্তি ভেঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে বসলেন। ভারতের কমিউনিস্টরা পড়লেন উভয়-সংকটে-একদিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জাতীয় মুক্তি আন্দোলন, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রকে রক্ষা করবার দায়। তবুও প্রথম ৬ মাস সি পি আই স্ট্যান্ড রইল সাম্রাজ্যবাদকে উপড়ে ফেলে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারলেই সোভিয়েত ইউনিয়নকে সঠিকভাবে সাহায্য করা যাবে। কিন্তু কমিন্টার্নের ইউরোসেন্ট্রিক নীতি ও পরামর্শ এবং বিশেষ করে ব্রিটিশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হ্যারি পলিট প্রমুখের সুরবদল (যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানো উচিৎ) সি পি আইয়ের যুদ্ধসংক্রান্ত নীতি বদলে দেয়। খোদ স্ট্যালিন পর্যন্ত বলে বসেন-"আজ প্রতিটি সৎ মানুষের উচিৎ আমাদের দেশ এবং যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানো; শুধু ইউরোপেই নয়, ভারত-ইরানের মত এশীয় দেশেও"(4)১৯৪২এর জানুয়ারি মাসে সি পি আই অবশেষে ঘোষণা করে, যুদ্ধের চরিত্রবদল ঘটেছে, এটি এখন আর সাম্রাজ্যবাদীদের মধ্যেকার যুদ্ধ নয়, এই যুদ্ধ জনযুদ্ধ-এই যুদ্ধে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের মুখ চেয়ে ব্রিটিশের যুদ্ধপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে হবে। (5)

    সোভিয়েতের প্রতি সহানুভূতি সেসময় শুধু কমিউনিস্টরাই দেখান নি। রবীন্দ্রনাথ তাঁর শেষ শয্যায় শুয়ে বলেন -একমাত্র সোভিয়েতরাই 'দানবদের' রুখতে পারবে। নেহরু-র সোভিয়েত ও চীন-অনুরাগ কোনো গোপন খবর ছিল না; তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালান ক্রীপস মিশনের সময় এমন কোনো রফায় আসবার যাতে ভারতীয় জনগণ ফ্যাসিবিরোধী যুদ্ধে সমর্থন করতে পারে। সম্ভাব্য জাপানী আক্রমণের মুখে গেরিলা-প্রতিরোধ করবার কথা তিনিই প্রথম বলেন। কিন্তু দেশপ্রেমিকদের অধিকাংশই (দক্ষিনপন্থী, গান্ধিবাদি, সোশ্যালিস্ট, সুভাষপন্থী যাই হোন না কেন) আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাতে ইচ্ছুক ছিলেন না। (6) ব্রিটিশের শত্রু হিটলার তাঁদের কাছে পরম বন্ধুতে পরিণত হলেন। কমিউনিস্টরা একঘরে হয়ে পড়লেন, যা আরো ভালোভাবে বোঝা যাবে '৪২ এর অগাস্ট আন্দোলনের সময়।

    Notes
    1.আধুনিক ভারতঃ সুমিত সরকার, কে পি বাগচি অ্যান্ড কোম্পানী, ১৯৬০, পৃ ৩২৯।
    2."On our Policy and Tasks in the Period of War” Statement of the Politburo of the CPI, Oct. 1939.
    3.মনে করুন গণনাট্য সঙ্ঘের বিনয় রায়ের লেখা সেই গান-ফিরাইয়া দে, দে, দে মোদের কাইয়ুর-বন্ধুরে।
    4.J. Stalin, 6 November, 1941, quoted in “The Indian Communist Party. Its Policy and Work in the War of Liberation.”
    5.এই নিয়ে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ করবেন সমর সেন তাঁর বাবু-বৃত্তান্ত বইতে-সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ রাতারাতি জনযুদ্ধে পরিণত হল।
    6.সুমিত সরকার, পৃ ৩৩১
  • I | 7845.15.015612.76 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০৮370777
  • দাদা, অঙ্ক কী কঠিন।
    একে তো নেট বিভ্রাট, কম্পু বিভ্রাট, ফুরিয়ে আসা সময়, তদুপরি ৫-৬টা বই জড়ো করে একসাথে বসা, পড়া, নোট নেওয়া, খসড়া বানানো, অনেকটা লিখে ফেলার পরে সেভ করতে ভুলে যাওয়া, তাপ্পর কম্পু গোলযোগে হট করে তা উড়িয়ে দেওয়া ও আবার লিখতে বসা- মা গো মা ! এই করে করে রাত দুটো বেজে গেল।

    নাঃ, অজুহাত দিচ্ছি না, তবে এসব আমার সাধ্যি না। এর চেয়ে দুটো হাবিজাবি নিজের মনের কথা ঘসঘস করে লিখে ফেলা সহজ। মুশকিল হচ্চে মনেও কোনো কথা নেই।

    কিন্তু কপি-পেস্টও সহজ নয় রে দাদা!
  • Du | 7845.184.1256.215 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০১370778
  • সেই যে একটা অফ্লাইন নোটপ্যাড ছিল সেটা আর নেই?
  • সিকি | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:৫৪370779
  • না না, লেখো সময় নিয়ে। বছর দু বছর লাগুক। পড়ছি, পড়ব।
  • স্বাতী রায় | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১০:৩৬370780
  • খুব ভালো লাগছে পড়তে।
  • | 230123.142.5678.202 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:২৯370781
  • ১০ বছর লাগলেই বা ক্ষতি কি?
  • I | 7845.15.564523.97 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৩৭370783
  • হ্যাঁ সেই। মনে আছে হুচি-তিমির বিয়েতে না কোথায় যেন দেখা হয়েছিল, তুমি নবারুণ ভট্টাজের একখান কথা বলেছিলে।তুমি বোধ হয় ভাষাবন্ধনে কি একটা লেখা লিখছিলে, আর মিনমিন করে নবারুণবাবুরে বলেছিলে-লেখাটা ইয়ে মানে কেমন(যদিও আমার সন্দ হয়, তুমি এইরম মিনমিন্যা লোকই না)।তাতে নবারুণ নাকি পিঠ চাপড়ে দিয়ে-বেশ তো, বেশ লেখা;তুমি লিখতে থাকো।চিন্তা নাই, ও কেউ পড়ে না, তুমি লেখো, লিইখ্যা যাও।
  • এলেবেলে | 230123.142.1278.202 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৪৮370784
  • @I, আপনি এ লেখা থামাবেন না। পড়ছি, অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ছি। এই লেখার জন্য অকারণ তাড়াহুড়ো না তো লেখকের জরুরি, না পাঠকের।
  • অর্জুন অভিষেক | 341212.21.7867.126 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২২370785
  • এ লেখাটাও এগোক।
  • I | 3445.239.2389.218 | ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:২৬370786
  • ১৯৪২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জেনারেল চিয়াং কাই শেক ও মাদাম চিয়াং কাই শেক ভারতভ্রমণে এলেন। সরকারী তরফে বলা হল জেনারেল সস্ত্রীক ভারত-সরকারের আমন্ত্রণে ভারতভ্রমণে এসেছেন, যদিও তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। তাঁরা এসেছিলেন বিশ্বযুদ্ধে চীনের পক্ষ থেকে ভারতীয় জনসাধারণের সাহায্য চাইতে ও এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার এবং ভারতীয় নেতাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে। ব্রিটেন চিয়াং কাই শেকের এই ভারতভ্রমণে একেবারেই ইচ্ছুক ছিল না,কিন্তু যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে চীনা নেতাকে চটানো তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে আগে থেকেই চিয়াং কাইশেকের পরিচয় ছিল এবং জেনারেল নিজে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তিনি জানতেন ভারতীয় জনসাধারণের সাহায্য ছাড়া জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চীনের পক্ষে কায়দা করে ওঠা মুশকিল, কেননা চীনে মার্কিন রশদ সরবরাহের জন্য ভারতীয় স্থলভাগ ব্যবহার করা খুব জরুরী এবং অনিচ্ছুক/প্রতিকূল ভারতবাসীদের দিয়ে এই সাপ্লাই লাইন চালু রাখা খুব শক্ত। ব্রিটিশ সরকারকে বিব্রত করে জওহরলাল, মৌলানা আজাদ (আজাদ তখন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি) ও গান্ধির সঙ্গে কয়েক দফায় কথা বলেন জেনারেল চিয়াং কাই শেক (মাদাম চিয়াং কাই শেক এইসব মিটিংগুলিতে দোভাষীর কাজ করছিলেন, কেননা জেনারেল নিজে ইংরেজি বলতে পারতেন না।) আজাদ বলেন যুদ্ধে কংগ্রেসের সাহায্য পেতে হলে ব্রিটিশ সরকারকে যুদ্ধ অবসানে ভারতকে স্বাধীনতা দানের বিষয়টিতে রাজী হতে হবে। মাদাম চিয়াং কাইশেক জানতে চান, আজাদের এই মন্তব্যটি ব্রিটিশ সরকারের কর্ণগোচর করলে তাঁর কোনো আপত্তি আছে কিনা। উত্তরে আজাদ বলেন, যেহেতু এটি কংগ্রেস দলের গৃহীত রাজনৈতিক লাইন, অতএব একথা ব্রিটিশ সরকারকে জানানোর ক্ষেত্রে তাঁর কোনো আপত্তিই নেই (1)। দেশে ফিরে যাওয়ার আগে জেনারেল চিয়াং কাই শেক ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন জানান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতের ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টিকে চূড়ান্ত করতে।

    বিশ্বজনমতের চাপ,মুখ্যত সমরসঙ্গী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের চাপের মুখে ভারত নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের কিছু একটা করে দেখানো জরুরী হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে যুদ্ধ যখন ভারতের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছল এবং ভারতীয় উপনিবেশ হাতছাড়া হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিল। অবিশ্বাস্য দ্রুততায় জাপান একের পর এক পূর্ব এশীয় ব্রিটিশ ও ওলন্দাজ কলোনিগুলি দখল করে বার্মায় এসে পৌঁছল। তার আগেই দুর্ভেদ্য সিঙ্গাপুরের পতন ঘটে গেছে; পৃথিবীবিখ্যাত এইচ এম এস প্রিন্স অফ ওয়েলস আর এইচ এম এস রিপাল্স তো কবে মালয় উপকূলে সমুদ্রের গভীরে তলিয়ে গেছে। কোনোরকম যুদ্ধের চেষ্টা না করেই জেনারেল আলেকজান্ডার ও জেনারেল স্টিলওয়েল বার্মা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে এলেন ; তাঁদের এই পলায়নের (নাকি স্ট্র্যাটেজিক পশ্চাদপসরণের) নাম দেওয়া হবে 'এপিক অফ আ রিট্রিট'। চার্চিল আর দেরী না করে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসকে ভারতে পাঠালেন।

    স্যার রিচার্ড স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ছিলেন এক্জন বিত্তশালী ব্যারিস্টার, কিন্তু রাজনৈতিক দিক থেকে উদারনৈতিক বামপন্থী। লেবার পার্টির এই নেতা সোভিয়্তে ইউনিয়নের সঙ্গে পপুলার ফ্রন্টের তত্বে বিশ্বাস করতেন ও এই কারনে ১৯৩৯ সালে লেবার পার্টি থেকে বহিস্কৃত হন। ১৯৪০ সালে চার্চিল যখন ব্রিটেনের যুদ্ধকালীন জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন, তখন ক্রিপসের কপাল খুলে গেল। ক্রিপসের মার্ক্সবাদী ঝোঁকের কারণে তাঁকে সোভিয়েত ইউনিয়নে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত করে পাঠানো হয়।মলোটভ-রিবেনট্রপ চুক্তি ভেঙ্গে হিটলার যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করেন, তখন ক্রিপস স্ট্যালিনকে বুঝিয়েসুঝিয়ে পশ্চিমী শক্তির সঙ্গে জোট তৈরীতে রাজী করান। ফলতঃ, ৪২ সালে ব্রিটেনে ফিরে এলে তিনি তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তাঁকে ওয়ার ক্যাবিনেটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়; লর্ড প্রিভি সীল ও হাউজ অফ কমনসের নেতার পদে নিয়োগ করা হয়। জনপ্রিয়তায় তিনি তখন চার্চিলের সঙ্গে টক্কর দিতে পারেন, এমন অবস্থা।

    ক্রিপস ভারতের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন।লেবার পার্টির ক্লিমেন্ট অ্যাটলি ও আগাথা হ্যারিসনের সঙ্গে তিনি ইন্ডিয়া কনসিলিয়েশন গ্রুপ বলে একটি ভারত-বান্ধব গোষ্ঠী তৈরী করেছিলেন। ১৯৩১ সালে গান্ধীর বিলেতভ্রমণের সময় এই গ্রুপ তৈরী করা হয়েছিল; ১৯৩৮ সালে নেহরু এঁদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন (2) ।যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে পরেই ক্রিপস ভারতে এসেছিলেন ; সেসময় গান্ধি, মৌলানা আজাদ ও জওহরলালের সঙ্গে নানান রাজনৈতিক বিষয়ে তাঁর মতামত বিনিময় হয়। মৌলানা আজাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, যুদ্ধ নিয়ে গান্ধীর যা মতামত, তাতে ভারতের পক্ষে ব্রিটিশ সরকারের সহানুভূতি পাওয়া একরকম অসম্ভব।বরং মৌলানার মতটি (ভারতের স্বাধীনতার বিনিময়ে যুদ্ধে ব্রিটিশপক্ষে ভারতের অংশগ্রহণ) ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে অনেক বেশী গ্রহণযোগ্য;কিন্তু সরকার এই প্রস্তাবে রাজী হয়ে গেলে গান্ধীর বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে মৌলানা কংগ্রেস পার্টি ও ভারতীয় জনগণকে তাঁর মতের স্বপক্ষে আনতে পারবেন কি? উত্তরে আজাদ বলেন-কংগ্রেস তথা গোটা ভারতবর্ষ গান্ধীজিকে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে রেখেছে; তা সত্বেও তাঁর বিশ্বাস এই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে জাতীয় কংগ্রেস ও ভারতীয় জনগণের গরিষ্ঠাংশ তাঁর পাশে থাকবে (3)। স্যার স্ট্যাফোর্ড তখন আজাদকে তাঁর তৈরী একটি খসড়া সমঝোতা প্রস্তাব পাঠিয়ে তাঁর মতামত জানতে চান। আজাদ বলেন, আন্দাজী খসড়ার ওপর মন্তব্য চলে না; সরকারীভাবে কোনো প্রস্তাব এলে তিনি ও তাঁর দল অবশ্যই ভেবে দেখবে।

    সুপটু ব্যারিষ্টার, ভারতবান্ধব ও ভারতীয় রাজনীতি সম্বন্ধে ওয়াকেবহাল এবং সদ্য সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সফল আলোচনা-সেরে ফেরা ক্রিপস ছিলেন ১৯৪২ সালে চার্চিলের ন্যাচারাল চয়েস। মার্চ মাসের শুরুতে ক্রিপস তাঁর খসড়া প্রস্তাবটি ওয়ার ক্যাবিনেটকে দেখিয়ে তাঁদের সম্মতি আদায় করেন। তাতে ভাইসরয়ের পরামর্শদাতা পুরনো ব্রিটিশ কাউন্সিল বাতিল করে সম্পূর্ণভাবে ভারতীয়দের নিয়ে গঠিত একটি নতুন এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়।যুদ্ধ চলাকালীন এই কাউন্সিলই ভারত শাসন করবে। যুদ্ধ শেষ হলেই ভারতকে ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের মর্যাদা দেওয়া হবে; কমনওয়েল্থ থেকে তার বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকারও থাকবে। প্রাদেশিক বিধায়করা একটি 'সংবিধান -প্রণয়ন সংস্থা' নির্বাচন করবেন । দেশীয় রাজাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে এই সংস্থাতে প্রতিনিধি নিয়োগ করবার জন্য। ডোমিনিয়নে যোগদান করা- না করার অধিকার প্রদেশগুলির হাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে (4) ।সেইসঙ্গে একথাও পরিষ্কার করে বলা হয়, যুদ্ধের সময় 'ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা'র ভার ব্রিটিশের হাতেই থাকবে। ঘোষণাপত্রটি তখনি প্রকাশ করা হয় না, কিন্তু এর ভিত্তিতে আলোচনা করার জন্য ক্রিপস ভারত রওনা দেন।

    ভাইসরয় লিনলিথগো ও ভারত সচিব লিও আমেরি ছিলেন ক্রিপস-মিশনের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। লিনলিথগো এমনকি পদত্যাগ করারও হুমকি দেন। কিন্তু চার্চিল তাঁকে বোঝান-"দুর্ভাগ্যজনক সব গুজব ও প্রচার আর মার্কিনদের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বিশুদ্ধ নেতিবাচক মনোভাবের ওপর দাঁড়ানো হবে অসম্ভব। আমাদের উদ্দেশ্যের সততা প্রমাণ করার জন্যই ক্রিপস মিশন অপরিহার্য...ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি যদি একে প্রত্যাখ্যান করে... তাহলে দুনিয়ার কাছে আমাদের ঐকান্তিকতা প্রমাণ হবে (5)।

    অর্থাৎ শুরু থেকেই ক্রিপস মিশন নিয়ে লন্ডন ও দিল্লির মনোভাব ছিল সম্পূর্ণ নেতিবাচক। ক্রিপস মিশনের সাফল্য নয়, একটা দেখনদারীর মনোভাবই ছিল প্রধান। ক্রিপস নিজে এই মিশন নিয়ে কতটা ঐকান্তিক ছিলেন, তা অবশ্য বলা মুশকিল। তবে একে আঁতুড়ঘরেই নুন খাইয়ে মেরে ফেলার নানাবিধ প্রয়াস যে লিনলিথগো ও আমেরি চালিয়েছিলেন, সে কথা বেশ পরিষ্কার(6) ।গান্ধীও এই মিশন সম্বন্ধে শুরু থেকেই সম্পূর্ণ বীতরাগ ছিলেন, যে কথায় পরে আসছি।

    ভারতে এসে ক্রিপস কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ ছাড়াও দেশীয় রাজা, হিন্দু মহাসভা এবং জাতীয়তাবাদী মুসলিম নেতা ও সিন্ধের প্রধানমন্ত্রী খান বাহাদুর আল্লা বক্সের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়ে রেখেছিলেন। আজাদ মনে করেন, এত অজস্র , বিভিন্ন মতের দল ও নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে চাওয়ার পেছনে দুটি উদ্দেশ্য ছিল-১। বিশ্বকে দেখানো যে কংগ্রেসই ভারতের একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিনিধি নয়, ২। অন্যান্য দলকে ব্যবহার করে কংগ্রেসের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

    ক্রিপসের সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাৎকার মৌলানা আজাদের কাছে বেশ আশাব্যঞ্জক লেগেছিল। এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে ভাইসরয়ের ভূমিকা কী হবে, তার উত্তরে ক্রিপস বলেন ব্রিটেনের রাজার মতই ভাইসরয়ের পদটি হবে আলঙ্কারিক; তাঁর কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকবে না, আসল ক্ষমতা থাকবে কাউন্সিলের হাতে।

    ক্রিপস প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভা বসে ২৯ মার্চ; চলে ১১ এপ্রিল অবধি। গান্ধী শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে ছিলেন;আজাদের মতে তার কারণ ছিল তাঁর যুদ্ধবিরোধী মানসিকতা- কোনো অবস্থাতেই তিনি ভারতকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে চান নি, এমনকি স্বাধীনতার বিনিময়েও না।নেহরু ক্রিপস প্রস্তাব সমর্থনের পক্ষে ছিলেন, তার কারণটি ছিল সম্পূর্ণই বিশ্ব-রাজনীতিতে তাঁর ফ্যাসিস্টবিরোধী অবস্থান; তিনি প্রবলভাবে চাইতেন ফ্যাসিস্ট জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চীনের পক্ষ অবলম্বন(যদিও একই মত পোষণ করার জন্য ও ৪২-এর অগাস্ট আন্দোলনের বিরোধিতা করার জন্য তিনি কমিউনিস্টদের 'দেশদ্রোহী' বলতে ছাড়েন নি)। বিশ্বরাজনীতি সম্বন্ধে আজাদের মতামতও নেহরুর মতই ছিল; কিন্তু তাঁর কাছে ভারতের স্বার্থই ছিল প্রথম ও প্রধান।চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারিও ছিলেন ক্রিপস প্রস্তাবের পক্ষে, কিন্তু কংগ্রেসে তিনি তেমন ওজনদার নেতা ছিলেন না। বাকিরা, যেমন প্যাটেল, রাজেন্দ্রপ্রসাদ প্রমুখের বিশ্বরাজনীতি নিয়ে না ছিল তেমন কোনো ধ্যানধারণা, না ছিল কোনো মাথাব্যথা। তাঁরা গান্ধীর সুরে সুর মিলিয়ে চলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন।

    ১লা এপ্রিল ক্রিপসের সঙ্গে মৌলানার বৈঠকে কিন্তু অবস্থা অনেকখানি বদলে গেল। ক্রিপস তাঁর প্রাথমিক অবস্থান থেকে অনেকটাই সরে এলেন।কাউন্সিলের ক্ষমতা সম্বন্ধে তিনি জানালেন যে তাঁর 'আশা' যুদ্ধের সময়েও কাউন্সিল মন্ত্রী পরিষদ (ক্যাবিনেট)-এর মত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। কাউন্সিলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে কিনা , আজাদের এই প্রশ্নে তিনি একটি ভাসাভাসা উত্তর দিলেন। ভাইসরয়ের ক্ষমতা সম্বন্ধেও তিনি পিছু হটলেন।বোঝানোর চেষ্টা করলেন ,নতুন আইন প্রণয়ন না করা অবধি ভাইসরয়ের বর্তমান স্ট্যাটাস পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।তবে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী যে আইনে যা-ই থাকুক না কেন, ভাইসরয় কার্যক্ষেত্রে কাউন্সিলের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করবেন না (7)।

    প্রতিরক্ষার প্রশ্ন নিয়েও আলোচনা চলতে থাকে। রুজভেল্ট-এর ব্যক্তিগত প্রতিনিধি হিসেবে কর্নেল জনসন সামরিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য দিল্লি আসেন। একটি আপস-সূত্রও বের হয়। ঠিক হয়, প্রতিরক্ষা বিভাগের ক্ষমতা থাকবে একজন ভারতীয়র হাতে। কিন্তু রণাঙ্গনের সর্বময় কর্তা হবেন ব্রিটিশ সর্বাধিনায়ক। এইবার কিন্তু ভাইসরয় লিনলিথগো ও সর্বাধিনায়ক ওয়াভেল রীতিমত শঙ্কিত হয়ে পড়েন।চার্চিলের সঙ্গে একজোট হয়ে তাঁরা মীমাংসার রাস্তা বন্ধ করে দিলেন। ৯ই এপ্রিল যুদ্ধমন্ত্রক ক্রিপসকে একটি টেলিগ্রাম পাঠায়। তাতে লিনলিথগো ও ওয়াভেলের সঙ্গে যথেষ্ট আলাপ-আলোচনা না করার ও জনসনকে বড্ড বেশী সুযোগ দেওয়ার জন্য তাঁকে ভর্ত্সনা করা হয়।জোর দিয়ে বলা হয়-'আপনি যা নিয়ে কথা বলতে গেছেন, সেই ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনার মধ্যেই গোটা ব্যাপারটাকে ফিরিয়ে আনা চাই' (8) । ৯ই এপ্রিল সন্ধ্যাতেই কংগ্রেসের সঙ্গে ক্রিপসের আলোচনা ভেস্তে যায়।

    আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পুরো দোষটাই ক্রিপস অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দিলেন কংগ্রেসের ঘাড়ে। এদিকে জিন্নাও পাকিস্তান নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব না থাকায় ক্রিপস মিশন প্রত্যাখ্যান করেন। চার্চিল অবশ্য খুব খুশী হন; ১১ই এপ্রিল তিনি ক্রিপসকে সাদর অভিনন্দন জানান তাঁর প্রচেষ্টার জন্য,কেননা এর ফলে বিশ্বকে , বিশেষতঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানো গেছে ভারতীয় সমস্যার জট খোলার জন্য ব্রিটিশরা কতখানি আন্তরিক। যদিও তিনি জানেন-'কিছু যে করতেই হবে তাতে তেমন কিছু আসত যেত না, কিছু একটা করার যে চেষ্টা করা হয়েছে সেটা দেখাতে পারলেই হল' (9)।

    Notes
    1.Maulana Abul Kalam Azad, India Wins Freedom, Orient BlackSwan, ed. 2020, pp.44.
    2.সুমিত সরকার, পৃ ৩৩২
    3.Azad, pp.46.
    4.Ibid pp. 253-255.
    5.Churchill to Linlithgow, 10 March, 1942, N. Mansergh (ed) , Transfer of Power,Vol 1, London, 1970, pp. 394-95.
    6.Shyam Ratna Gupta, "New Light on the Cripps Mission," India Quarterly, (Jan 1972), 28#1 pp 69-74.
    7.Azad, pp 52-53
    8.Mansergh, Transfer of power, pp. 707-08.
    9.Tomlinson, B. R., The Indian National Congress and the Raj, pp.156.
  • সিকি | 894512.168.0145.123 | ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ১১:৪৮370787
  • সব ঠিকঠাক চললে এই জেনারেল স্টিলওয়েলের তত্ত্বাবধানে বানানো স্টিলওয়েল রোডে পা রাখতে চলেছি কদিন বাদেই। ইতিহাসে ভরা রাস্তা। আ ম্যান আ মাইল।
  • I | 7845.15.566712.16 | ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:৩১370788
  • অরুনাচল যাবে নাকি?
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.454512.75 | ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৯370789
  • চিয়াং কাইশেক ও মাদাম কাইশেকের এই ভারত ভ্রমণ যে এত ইম্পরট্যান্ট একটা ঘটনা জানতাম না। ওরা তো শান্তিনিকেতনেও গেছিলেন।

    মাদাম কাইশেককে বলা হয় 'One of the most influential women of her time in world politics। চীনকে বিশ্ব রাজনীতির পুরোভাগে রাখতে তিনি মরিয়া ছিলেন।সেটাই 'কাল' হয়েছিল । গুজব ছিল, চীন দেশকে তার স্বামী নন, তিনিই চালান।

    একটা গল্প শুনেছিলাম ১৯৪৩ র কায়রো সামিটে তিনি চার্চিলকে বলেছিলেন 'আপনি আমার স্বামী হলে, বিয়ের রাতেই আপনার চায়ে বিষ দিতাম।' উত্তরে চার্চিল জানান 'আর আপনি আমার স্ত্রী হলে আমি সেটা জেনেও পান করতাম'।

    এখানে ইউ টিউব থেকে তার সম্পর্কে একটা লিঙ্ক দলাম।



    দ্রুত লেখা চলুক। অনেক কিছু জানছি।
  • Atoz | 125612.141.5689.8 | ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:২৯370790
  • নির্ঘাত চার্চিল এটা শিখেছিলেন দাড়িদাদুর কাছে । "আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান/ প্রাণের আশা ছেড়ে সঁপেছি প্রাণ" ঃ-)
  • dc | 127812.61.452323.212 | ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৯:৪১370792
  • এই জোকটা জানতাম না তো! অর্জুন অভিষেককে ধন্যবাদ, আর ডিডিদাকে ধন্যবাদ লিংকটার জন্য।
  • সিকি | 894512.168.0145.123 | ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ১০:৪৫370794
  • ইন্দোদা, হুঁ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন