এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • নানা দেশের উপকথা

    Tim
    বইপত্তর | ২০ জুন ২০০৭ | ৮৮১৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Tim | 71.67.115.14 | ২০ জুন ২০০৭ ০৭:৫৮389365
  • এই সুতোয় আসছে বহুযুগ ধরে চলে আসা কিছু গল্প, যা কখনো নীতিমূলক, কখনো বা শুধুই মজার। এইসব অনাবিল আনন্দকাহিনি অনেক সময়েই দেশ-কাল-জাতির আয়না হিসেবে আমাদের চোখ টেনেছে। তঙ্কÄকথা থাক। বরং তারা খসা রাতে গোল হয়ে বসে গল্প শুনি।
    চ্যারিটি বিগিন্স এর নিয়ম মেনে, এই সুতোর প্রথম গিঁট হতে যাচ্ছে উত্তর আমেরিকার কিছু ইন্ডিয়ান উপকথা। বইটির নাম legends told by the old people of many tribes। সংকলক Adolf Hungrywolf

  • Tim | 71.67.115.14 | ২০ জুন ২০০৭ ০৮:৪৭389460
  • ---------১--------
    এটা সবথেকে ছোট গল্প। পরমাণু-গল্প ও বলা যায়।

    এক কুকুর আর এক নেকড়ের ভারি ভাব। যাকে বলে হরি-হর আত্মা। দুজনে মহানন্দে খায়-দায়, গান ও গায়। কিন্তু শীতে বেচারিদের বড় কষ্ট। ওদের আগুন নেই।

    মানুষের কাছে আগুন ছিল। তাই দেখে একদিন নেকড়ে কুকুরকে বলল, " একদানা আগুন চুরি করে এনে দিতে পারিস ভাই?"
    তো....কুকুর মানুষের কাছে গেল। মানুষ তাকে খাওয়াল, যত্ন করল। এত আদরে কুকুর ভুলেই গেল যে সে চুরি করতে এসেছে। সেই থেকে সে মানুষের দাস।
  • Tim | 71.67.115.14 | ২০ জুন ২০০৭ ০৯:৩১389471
  • ---------২----------
    (ইনুইট উপকথা)
    দাঁড়কাক আর পেঁচা দারুন বন্ধু। একদিন কাক পেঁচার জন্যে একটা পোশাক বানালো, তার সারা গায়ে সাদা কালো ফুটকি। বদলে পেল একজোড়া জুতো।
    এরপর একদিন পেঁচা কাকের জন্য একটা সাদা জামা বানাতে শুরু করল। কিন্তু জামাটা কাককে পরাতে গেলেই সে বড্ড লাফাত। এমনই একদিন কাককে জামাটা পরিয়ে দেখা হচ্চিল ফিট করেছে কিনা। যথারীতি কাক লাফাচ্ছিল। কাকের এই তিড়িং বিড়িং পেঁচার মোটেই পছন্দ ছিলনা। তাই সে চোখ পাকিয়ে বলল, "খবরদার! আমি কিন্তু লম্ফ হাতে উড়ছি। লাফাস না!"
    কিন্তু কে শোনে কার কথা। কাক লাফিয়েই চলল। তখন রেগেমেগে পেঁচা তার সেই কুপির সমস্ত কালিঝুলি ঢেলে দিল কাকের জামায়। কাক খুউব কাঁদল। কিন্তু তখন যা হবার হয়ে গেছে। সেই থেকে কাক এমন কালো।

  • I | 172.215.232.5 | ২০ জুন ২০০৭ ১৮:৫৬389482
  • টিম, চালিয়ে যা। বাকীরাও বলো।
  • P | 163.244.62.123 | ২০ জুন ২০০৭ ১৯:৫২389493
  • -: আইরিশ উপকথা :-

    এক যে ছিল ভালমানুষ দৈত্য । বাহান্ন হাত লম্বা আর তেমনি চওড়া। নাম ছিল তার ফিন ম্যাককুল । এমনিতে তার বৌ নিয়ে সুখের সংসার উত্তর আয়ারল্যান্ডে , কিন্তু দৈত্যদের কি আর শত্রুর অভাব হয় ?
    বেনানদোনের বলে আর এক দৈত্যা থাকতো তখন স্কটল্যান্ডে । ফিন আর বেনানদোনেরের বেজায় শত্রুতা , একজন আর একজনের নামটিও সহ্য করতে পারে না। তারপর একদিন তারা ঠিক করল সম্মুখে-সমরে একবার একহাত লড়েই নেবে। তাতেই প্রমাণ হবে কে বেশি শক্তিশালী। দিনক্ষণ ও ঠিক। বেনানদোনের আসবে আয়ারল্যান্ডে , সেখানেই হবে তাদের যুদ্ধ।
    সেই দিন সকালে ফিনের বৌ রান্না করতে করতে সমুদ্র পেরিয়ে দেখে সে এক বিশ-আ-আ-আল দৈত্যা আসছে হুমহাম করতে করতে। ফিনের বৌ ছিল ভয়ংকর বুদ্ধিমতী , দুর থেকে দেখেই বুঝেছে এ নিগ্‌ঘাত বেনানদোনের। সে কি চেহারা বেনানদোনেরে , ফিনের থেকে অনেক বেশি লম্বা , চওড়া আর তেমনি শক্তিমান। ফিনের বৌ পড়িমড়ি করে ছুটে এক ফুলেল কম্বল দিয়ে ফিনকে আচ্ছা করে মুড়ে বলেছে টুঁ শব্দটিও না করতে।
    এদিকে বেননদোনের এসে তো খুব চেঁচায় "কোথায় আছিস ফিন , বৌ এর আঁচল ছেড়ে বেরিয়ে আয় , আজ তোর একদিন কি আমার"।
    ফিনের বৌ অম্নি মুখ ঝামরে বলে "আহা ছেলে ঘুম পাড়াচ্চি দেখো না নাকি , অমন চেঁচালে খোকা ঘুমোবে কি করে , দু-দন্ড বসো , জিরোয় , খোকার বাপ এল বলে। তারপর দেবে তোমার হাড়-মাস এক করে"।
    বেনানদোনের শুনে এইসান ভির্মি খেয়েছে , বাহান্নো-হাতি যদি খোকা হয় তবে খোকার বাপ নিগ্‌ঘাত আমাকে আজ শেষই করে দেবে।
    তারপর সে কোনো দিকে না তাকিয়ে এমন দৌড় লাগিয়েছে যে তার পায়ের তলায় পড়ে পৃথিবী একেবারে টুকরো টুকরো।

    বিশ্বাস করলে না বুঝি ?? এসো না আয়ারল্যান্ডে । জায়ান্টস কসওয়ে তো ঐ বেনানদোনেরের পায়ের চাপেই তো তৈরী হয়েছে। এলে গাড়িতে করে বেড়িয়ে আনবোখন।
    এখন বরং ছবিখান দ্যাখো -

  • J | 77.56.75.112 | ২০ জুন ২০০৭ ১৯:৫৮389504
  • এই গপ্পো থেকেই টুকে তাহলে "ফিঙে আর কুঁকড়ো" র গপ্পো লিখেছিলেন উপেন্দ্রকিশোর?
  • tan | 131.95.121.132 | ২০ জুন ২০০৭ ২১:৩২389515
  • আয়ারল্যান্ডের গপ্পের এক রাণী ছিলো বেজায় বুদ্ধিমতী। কৃষককণ্যার বুদ্ধি দেখে আইরিশ রাজা(সে আবার বেজায় বীর আর খোলামেলা,জাতির ঐতিহ্য মেনে বেজায় কারণাসক্ত)টাল খেয়ে ঘুরে পড়ে গিয়ে উঠেই তাকে রাণী কল্লো(সে আরেক গল্পো,পরবাসে আছে সে গল্প।:-)))))
    তো,তারপরে দিন যায় দিন যায়,সুখেই কাটে।কিন্তু একদিন ঘোড়া নিয়ে দুই প্রজার ঝগড়া লেগে গেছে,রাজা সমাধান করতে পারে না,রাণী এসে সমাধান করে দিলো।প্রজারা খুশী হয়ে একে অপরকে "আ ভাই গলে লাগ যা" বলে গলা জড়িয়ে শুড়িখানা গেলো,কিন্তু রাজা খাপ্পা হলো কারণ সমাধান তাঁর পছন্দ হয় নাই।
    রাজা রেগে রাণীকে কইলে,কালই তুমি বাপের বাড়ী চলে যাবে,আর তোমার মুখ দেখতে চাইনা আমি।
    রাণী কইলে ঠিকাছে।
    কিন্তু তারপরে রাজার একটু একটু আফশোস হলো,কি করা যায়?
    রাণীকে কইলো,""এতদিন এত ভালো করে রাণীগিরি করেছ,এর পুরষ্কার হিসাবে তোমার পজেশানে যেসব ধনরত্ন আছে,তার মধ্যে সবচেয়ে দামীটা তুমি নিয়ে যেতে পারবে।""
    রাণী রাজী হলো,বললো,""একটা অনুরোধ,আমি তো কাল সকালেই উঠে চলে যাবো,আজ একসঙ্গে তুমি আর আমি ডিনার করবো।রাজী?""
    রাজা রাজী।
    এরপরে ডিনার পর্যন্ত রাজার মনে আছে,তারপরে রাজার ঘুম ভাঙে ভোররাত্রির আঅলো আঁধারে।খড়ের বিছানা, ঝুপড়ির মতন ঘর।কি রে বাবা?
    উঠে বসে,"কে কোথায় আছিস?" বলে হাঁক দিলে কেবল রাণী আসে,পরনে কৃষকরমণীর পোষাক।
    রাজা বলে,""আমি কোথা? কিছুই যে চিনতে পারি না!"
    রাণীর মুখে একগাল হাসি,বলে,""তুমি তো আমার গাঁয়ে,আমার বাপের বাড়ীতে।""
    রাজা অবাক তো বটেই,বেজায় বিরক্ত।বলে,""কিকরে এখানে এলাম?""
    রাণী বলে,""কেন তুমিই তো বল্লে,আমার পজেশানে থাকা সবচেয়ে দামী রত্নটা আমি নিতে পারবো? তাই ডিনারে ঘুমের ওষুধ দিয়ে তোমায় ঘুম পাড়িয়ে ঘোড়ার গাড়ীতে তুলে নিয়ে এয়েছি।খারাপ করেছি?""
    রাজা তো প্রথমে থ!
    তারপরে রূপকথায় যেমন হয়...
  • NJ | 75.6.175.65 | ২০ জুন ২০০৭ ২১:৩৫389526
  • কাকতালীয় হোতে পারে। মন্তব্য নিস্প্রয়োজন।
  • Blank | 65.82.130.9 | ২০ জুন ২০০৭ ২১:৪০389537
  • বহুত ক্যাবলা রাজা তো
  • kali | 160.36.241.77 | ২১ জুন ২০০৭ ০০:০২389366
  • কাক আগে সাদা ছিলো,কালো কি করে হয়ে গেলো সেই নিয়ে মালয়েশিয়ার সুন্দর গল্প আছে। কিন্তু গল্পটা এক পোস্টে শেষ হবে না তো। একটু বড় আছে। দেব কি?
  • Ishan | 130.36.62.142 | ২১ জুন ২০০৭ ০০:১১389377
  • একিরে, কেষ্টকলি পারমিশন চায় নাকি? :-)
  • kali | 160.36.241.77 | ২১ জুন ২০০৭ ০০:২৩389388
  • পারমিশান চাই না বাছা। লম্বা গল্প পড়তে লোকে বোরড হয়ে যাবে নাকি তাই জিগ্যেস কচ্ছি।
  • Paramita | 143.127.3.10 | ২১ জুন ২০০৭ ০০:৩৭389399
  • কোন লোক বলো, তাকে দেখে নিচ্ছি।
  • kali | 160.36.241.77 | ২১ জুন ২০০৭ ০০:৪৩389410
  • রাজকন্যার নাম ছিলো কেম বাং মেলাতি। পৃথিবী শেষ হয়ে যেখানে আকাশ শুরু হয়েছে ঠিক সেই জায়গায় একটা মস্ত ঝর্না। আর ঝর্নার ধারে রজকন্যার প্রাসাদ। তার সঙ্গে থাকতো ধাই মা সারিনা, আর তার ছেলে নাসিমন। কেম বাং মেলাতি রোজ জানলার পাশে বসে তাকিয়ে থাকতো ঝর্নার দিকে,আর ভাবতো কি জানি কি আছে ওপারে?

    ওপারে ছিলো বৃষ্টির রাজা বনজিরের প্রাসাদ। ভারী একা এই বনজির। বৃষ্টি দিয়ে, মেঘ দিয়ে,হাওয়া দিয়ে ছবি আঁকতেন সারাদিন, রাত হলে বেহালা নিয়ে বসতেন। একলা একলা যখন বেহালা কাঁদতো, ফিসফিসে বৃষ্টি নামতো পৃথিবীতে।

    রোজ রোজ ঝর্নার ওপারে জানলায় বসা রাজকন্যেকে দেখতে দেখতে ভালোবেসে ফেললেন তাকে বনজির। একদিন আর থাকতে না পেরে এক সোনালী প্রজাপতি সেজে ঝর্না পেরিয়ে গিয়ে বসলেন মেলাতির জানলার কপাটে। মেলাতি তো এত সুন্দর সোনালী প্রজাপতি দেখে খুব খুশি। এদিকে প্রজাপতি তার কানে কানে বলছে 'রাজকন্যে, বৃষ্টির রাজা কে বিয়ে করবে?' রাজকন্যা চমকে বলে 'বিয়ে?'

    এদিকে জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো নাসিমন। ভারী দুষ্টু ছেলে সে। রাতদিন চিন্তা করে কেমন করে মেলাতির সব সম্পত্তি বাগিয়ে নেবে। সে তো 'বিয়ে' শুনেই ফন্দি পাকাতে লেগেছে। প্রজাপতি টতি কিছুই দেখেনি ও। শুধু মেলাতির মুখ থেকে 'বিয়ে' কথাটা শুনতে পেয়ে ভেবেছে রাজকন্যের বিয়ে করার বেজায় ইচ্ছে হয়েছে।

  • kali | 160.36.241.77 | ২১ জুন ২০০৭ ০০:৪৯389421
  • নাসিমন দৌড়ে গিয়ে সারিনা কে বলে 'মা, রাজকন্যের বিয়ের সময় হয়েছে। গিয়ে তাকে বলো আমিই ওর উপযুক্ত বর'। সারিনা হাঁকিয়ে দিলে নিজের ছেলেকে।অমন কথা পাড়ার সাহস কি করে করবে সে? মায়ের কাছে ধমক খেয়ে নাসিমন ভাবতে বসে এইবার কি করা যায়?

    ওদিকে কেম বাং মেলাতি তো প্রজাপতির কথা শুনে খুশিতে আর লজ্জায় টুকটুকে হয়ে গিয়েছে। প্রজাপতিও ভারী খুশি হয়ে ঝর্নার ওপারে উড়ে গেলো। আজ বনজিরের বেহালায় সুরের রামধনু জাগে। জলের গুঁড়োর সঙ্গে রং আর রং।

    পরদিনই বনজির তাঁর দূত কাক কে ডেকে পাঠালেন। বলেছি তো ওরা সাদা ছিলো তখন। শুধু তাই নয়, মানুষের মত কথাও বলতে পারতো ওরা। বনজির একটা সোনার তারের ঝুড়ি ভরে দামী দামী গয়না দিলেন মেলাতির জন্যে। একটা সুন্দর চিঠি লিখলেন। সাদা কাক সেই উপহার আর চিঠি নিয়ে উড়ে গেলো ঝর্নার ওপারে।
  • kali | 160.36.241.77 | ২১ জুন ২০০৭ ০০:৫৫389432
  • কিন্তু ঝর্না পেরিয়েই প্রথম তার দেখা হলো নাসিমনের সাথে। কাকের পিঠে সোনার ঝুড়ি দেখেই তো তার চোখ লোভে চকচক করে উঠেছে। কাক তো এপারের কিছুই চেনে না। নাসিমন কে দেখতে পেয়ে জিগ্যেস করলো কোথায় রাজকন্যা থাকেন, রাজার থেকে উপহার এনেছে যে ও। নাসিমনের দুষ্টু বুদ্ধি নেচে উঠলো। খুব মিষ্টি করে ও কাকটাকে বললো ' তা ভাই যাবে বৈকি রাজকন্যের কাছে। কিন্তু এত খানি পথ এসেছো, একটু জিরিয়ে নেবে না। এই দেখো কেমন সুন্দর মাছ রেখেছি। বসে খাও না দুটো'।

    মস্ত মোটা মোটা মাছ দেখে তো কাকের লোভ হয়েছে খুব। ঝুড়ি পিঠ থেকে নামিয়ে রেখেই সে কপাকপ খেতে লেগেছে। সেই ফাঁকে না নাসিমন ঝুড়ি আর চিঠি বেমালুম গাপ করে ফেললো। একটা বেতের চুপড়ি তে মস্ত মস্ত কতক গুলো মাকড়সা ভরে, একটা কাগজে লিখলো ' মেলাতি, তোমার গায়ের রং যেমন বিশ্রী সবুজ পানা, তেমনিই খারাপ দেখতে তোমায়। তাই তোমার রূপের উপযুক্ত এই জিনিষ পাঠালাম তোমায়'।

    এদিকে কাক তো দিব্যি করে পেট ভরে মাছ টাছ খেয়ে দেখে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি চুপড়ি আর চিঠি পিঠে নিয়েই রওনা দিলো রাজপ্রাসাদের দিকে। খেয়ালও করলো না যে সেসব কখন বদল হয়ে গেছে।
  • kali | 160.36.241.77 | ২১ জুন ২০০৭ ০১:০৭389443
  • রাজকন্যার কাছে গিয়ে বনজিরের নাম করে উপহার আর চিঠি দিতে সে যে কি খুশি তা আর কি বলব! কিন্তু ওমা, চিঠি পড়ে আর চুপড়ি খুলে কি অবস্থা হলো তা তো আর কহতব্য নয়! রাগে দু:খে সব ছুঁড়ে ফেলে দিলো মেলাতি।

    এদিকে পরদিন সোনালী প্রজাপতি এসে দেখে রাজকন্যা কেবল কাঁদছে জান্‌লার পাশে বসে। ফিসফিসিয়ে সে বলে ' রাজকন্যে, তোমার ভাবী বর যে উপহার পাঠিয়েছেন, তা পরো নি কেন?'কেম বাং মেলাতি তাই শুনে তো রেগেই আগুন। চিৎকার করে দাসী বাঁদী দের ডেকে সে হুকুম সোনালী প্রজাপতি টাকে দূর করে দিতে।

    এই কথা শুনে বনজিরের ভারী রাগ হয়ে গেলো। তিনি এত আদর করে উপহার পাঠালেন,আর তার বদলে এই অপমান? আর বৃষ্টির রাজার রাগ তো কম কথা নয়? সঙ্গে সঙ্গে আকাশ ভেঙে ঝড় তুফান নামে। ঘুর্ণিঝড়, বন্যা,যে যেখানে ছিলো সব ছুটে আসে। জলের তোড়ে মেলাতির প্রাসাদ শুদ্ধু ভেসে যায়।

    এইবার তো দুনিয়া রসাতলে গেলো ব'লে। ভয় পেয়ে সারিনা চিৎকার করে কেঁদে ওঠে ' ও রাজা, ও বৃষ্টির রাজা। এ সব যে আমার দুষ্টু ছেলেটার কাজ। সাদা কাক যখন মাছ খাচ্চিলো তখন ওই তো সব সোনা দানা লুকিয়েছে,আর ওই তো ভুল চিঠি রেখে দিয়েছে'।

    বনজির বুঝতে পারেন কি হয়েছিলো আসলে। সঙ্গে সঙ্গে রাগ পড়ে যায় তাঁর। ঝড় তুফান থেমে যায়। বন্যার জল নেমে আসে। কিন্তু দুষ্টুদের কিছু শাস্তি তো পেতেই হবে। তাই ঝর্নার জল নামার আগে নাসিমন কে ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেলো কোথায় যেন। আর অতি লোভের শাস্তি স্বরূপ সাদা কাকের রং বদলে কুচকুচে কালো হয়ে গেলো। শুধু তাই নয়, কথা বলতেও ভুলে গেলো ও। খালি বলে ক্ক, ক্ক:।আমরা শুনেছি তার মানে নাকি 'সোনা, কোথায় সোনা?' ঠিকই,নাসিমন যে সোনার গয়না পত্তর কোথায় লুকিয়ে রেখেছিলো তা আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সে তো ভেসে গেছে, তাহলে ইতি শ্রীমান নাসিমনের একমাত্র আশ্রয়ের কথা কি করে কেউ জানবে?
  • Tim | 71.67.115.14 | ২১ জুন ২০০৭ ০১:৪২389454
  • ---একটি ফ্ল্যাটহেড (রেড ইন্ডিয়ান উপজাতি) লোককথা---

    মুখিয়ার মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে। তাই তিনি সব জোয়ানদের জড়ো করে ঘোষনা করলেন, " যার পা সব থেকে শক্তিশালী, তার সাথে বে দেব আমার মেয়ের।"
    (বোঝাই যাচ্ছে যে অর্ধেক রাজত্ব ও তার)

    এই শুনে সবার আগে এল এক নেকড়ে। তার দাবী তার ঢ্যাঙা পায়ে সে জোরে দৌড়োতেও পারে, আবার শক্তপোক্ত হওয়ায় সহজে ক্লান্ত ও হয়না। তাই সেই উপযুক্ত পাত্র।

    তখন এক ভালুক এগিয়ে এসে কয়েকটা ডন-বৈঠক দিয়ে বলল, " আমার পায়ের পেশী লোহার মত শক্ত। তাই আমার সাথেই বিয়ে হওয়া উচিত"। সত্যি বলতে কি কারুর এ বিষয়ে খুব একটা সন্দেহ ছিলনা। কিন্তু মুখিয়ার মিষ্টি মেয়েটাকে ভালুকের পাশে কিছুতেই মানাবেনা, সেই কথা ভেবেই তারা চুপ করে এ ওকে ইশারা করতে লাগল।

    ভিড়ের মধ্যে ছিল এক নীলাম্বর পাখি। এইসব গোলমালে সে টুক করে জঙ্গলে গিয়ে পায়ে কিছু শুকনো আগাছা বেঁধে নিল। তারপর সদর্পে সবার সামনে এসে বলল, " আমার মত শক্ত পা কারো নেই। এই পায়ে আমি ঝড় ঠেলে উড়ে বেড়াই, বাতাস কেটে ছুটি।"
    মুখিয়াও সঙ্গে সঙ্গে তার সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিল। ( বুড়ো ভারি চালাক, এই সুযোগে ভালুককেও এড়ানো গেল, সে বেচারা ততক্ষনে মহুয়া খেয়ে বেহুঁশ)।
    যাই হোক, বিয়ের পর রীতি অনুযায়ী পাখি তার বউকে পিঠে করে নদী পার হয়ে নতুন তাঁবুতে নিয়ে যাবে, এটাই ঠিক ছিল। কিন্তু নদী পার হতে গিয়েই বিপত্তি। জলে ভিজে পাখির পায়ে বাঁধা আগাছা গেল খুলে। তখন তার সরু ঠ্যাং দেখে কারুরি বুঝতে বাকি রইলনা যে পাখি যা বলেছে সব ধাপ্পা। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিলোনা বলে সবাই বুদ্ধিমানের মত খুব একচোট হেসে নিয়ে যে যার বাড়ির পথ ধরল। (শুধু ভালুক সেদিন বেশি নেশা করেছিল কিনা তা জানা যায়নি।)
    :)
  • Tim | 71.67.115.14 | ২১ জুন ২০০৭ ০১:৪৫389459
  • এইরে! চলন্ত গল্পের মাঝে পোস্ট করলাম। সরি :(
  • Tim | 71.67.115.14 | ২১ জুন ২০০৭ ০২:০২389461
  • না:, কান ঘেঁষে বেড়িয়ে গেছে। :)))
  • dri | 129.46.154.111 | ২১ জুন ২০০৭ ০২:১৮389462
  • আ:, এই সুতোটা খুব মিত্তি হচ্ছে।
  • Tim | 71.67.115.14 | ২১ জুন ২০০৭ ০৩:০৩389463
  • এবার অন্য এক বই থেকে। নাম pale moon। সংকলক ও সম্পাদক জন লং।

    -----সু-উপকথা (সুপকথা নয় কিন্তুক, সু একটি উপজাতির নাম, ইংরেজিতে sioux)------
    এক গল্পদাদু সময় কাটাবার জন্যে সবাইকে জড়ো করে গল্প বলছিলেন.....
    "" ভোটের নিয়ম কানুন তোমরা জানো? আমরা ইন্ডিয়ানরা ভোট নিয়ে মোটেই ভাবি না। কারন যেই জিতুক না কেন, হারতে আমাদেরই হয়। কিন্তু ভোট নিয়ে একটা ছোট্ট গল্প তোমাদের শোনাই।
    অনেকদিন আগেকার কথা। কুকুরদের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হচ্ছিল। তার জন্যে আয়োজিত " বৃহত্তর সারমেয় সম্মেলনে " একজন উঠে দাঁড়িয়ে বলল, " পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে বুল্ডগকে সুপারিশ করছি। তিনি শক্তিমান আর দুর্ধর্ষ যোদ্ধা। "
    " কিন্তু তিনি মোটেই ভাল দৌড়োতে পারেন না " - চেঁচিয়ে উঠল আরেকজন-- "তাড়া করতে না পারলে ভাল যোদ্ধা হয়ে লাভ কি? আমি গ্রে হাউন্ড কে সমর্থন ও সুপারিশ করছি "।
    এই কথা শোনামাত্রই বেশ কিছু কুকুর তারস্বরে বলে উঠল, "মানছিনা মানবোনা! উনি জোরে দৌড়োন সেকথা ঠিক, কিন্তু কারুর কাছে ঠ্যাঙানি খেলে সেই দৌড় কোন কাজে লাগবে? ঐ দৌড় খালি পালিয়ে বেড়াবার জন্যেই। এমন নেতা আমরা চাইনা।"

    তখন এক কুৎসিত বদখত কুকুর উঠে দাঁড়িয়ে বজ্রকন্ঠে ঘোষনা করল- " কুকুরদের পরিচয় তাদের ঘ্রাণশক্তিতে। তাই যে ভাল গন্ধবিচার করতে পারে সেই হবে রাষ্ট্রপতি।"
    একথা বলামাত্রই আরো একজন একই গোত্রের কুকুর লেজ আছড়ে তাকে সমর্থন করল।
    সুতরাং এটাই স্থির হল যে রাষ্ট্রপতি হতে গেলে ঘ্রাণশক্তি ভাল হতে হবে। তখন একটা ভারি গোলমাল শুরু হল। সবাই একে অন্যের গা শুঁকে বোঝাতে চাইল যে সে-ই যোগ্যতর। ""
    এই পর্যন্ত বলে বুড়ো একটু হেসে যোগ করলেন, "" তাই আজো যদি কখনো রাস্তায় কুকুর দেখতে পাও, দেখবে তারা পরষ্পরের গা শোঁকাশুঁকি করছে। যোগ্য রাষ্ট্রপতি ওরা আজো পায়নি।""

  • I | 172.200.176.54 | ২১ জুন ২০০৭ ০৩:১১389464
  • ব্যাপক।
  • Tim | 71.67.115.14 | ২১ জুন ২০০৭ ০৯:১৯389465
  • (উত্তর আমেরিকার সমতলের উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত গল্প)

    এক দেশে এক অসামান্যা সুন্দরী ছিলেন। আরো অনেকের মতই একটি সারস আর একটি হামিংবার্ড তাঁর প্রেমে পাগল।
    ভদ্রমহিলা মনে মনে সুশ্রী দেখতে হামিংবার্ডকেই পছন্দ করতেন, আর কুৎসিতদর্শন সারসকে করতেন দুচ্ছাই। কিছুতেই সারসকে হঠাতে না পেরে তিনি (বুদ্ধিমতী ছিলেন তো, পাছে লোকে সারসকে ট্র্যাজিক হিরো আর তাঁকে ভ্যাম্প বানিয়ে দেয়, এই ভয় ছিল বোধহয়) একটা ফন্দি আঁটলেন।
    ঢাকঢোল পিটিয়ে দুই প্রতিযোগী সমেত সব্বাইকে জানিয়ে দেয়া হল, দুই পাখির মধ্যে দৌড়ের বাজি হবে। যে আগে পৃথিবী ঘুরে ফিরবে , কন্যা তার।
    মজা হল, হামিংএর গতি ছিল বিদ্যুতের মত, জবুথবু সারস সে গতির কাছে নস্যি। সুতরাং ফল সম্পর্কে সবাই নিশ্চিত ছিল। সে যাই হোক, মোটামুটি এইরকম সু-বন্দোবস্ত করে সুন্দরী নিশ্চিন্তে মালা গাঁথতে গেলেন।
    ওদিকে দুই প্রনয়ীর দৌড় শুরু হল।
    হামিং শুরু করলে তীরের মত। সারাদিন উড়ে রাতে যখন সে একটা গাছের ডালে বসে জিরোচ্ছিল, সারস তখন তার বহু পেছনে পড়ে রয়েছে।
    সারস কিন্তু থামল না। সে সারারাত চলে ভোরের দিকে একটা খাঁড়িতে বিশ্রাম নিতে বসল। ওদিকে ভোরবেলা হামিং তো ঘুম থেকে উঠেই উড়তে শুরু করেছে। কিছুটা এগিয়েই সে নিচে সারসকে দেখতে পেল। সারস অবিশ্যি তাকে দেখতে পায়নি, সে তখন তার লম্বা ঠোঁট দিয়ে গপাগপ ব্যাঙাচি খাচ্ছে।
    খাওয়া শেষ হতেই সারস আবার উড়তে শুরু করল এবং সারারাত উড়ল। টানা চলার ফলে সে অনেক এগিয়ে গেল। এবং রোজই সে একটু করে এগোতেই থাকল । তাই চতুর্থ দিন হামিং তাকে যখন দেখতে পেল তখন সারস রাতের খাওয়া সারছে। এইরকম করে, পুরো এক সপ্তাহ যখন শেষ হল তখন সারস আর হামিং এর মাঝে পুরো এক রাতের দূরত্ব তৈরী হয়েছে। সপ্তাহান্তে সারস গন্তব্যে পৌঁছল। ঠোঁট দিয়ে পালক-টালক ভাল করে গুছিয়ে বিজয়গর্বে উৎফুল্ল সারস যখন সেই সুন্দরীর বাড়ির দিকে রওনা হল, হামিং তখন ঢের পেছনে।
    কিন্তু সেই সুন্দরী এক কুৎসিত সারসকে বিয়ে করতে অস্বীকার করলেন এবং সারাজীবন কুমারী থাকার কথা ঘোষনা করলেন।
  • I | 172.201.232.82 | ২২ জুন ২০০৭ ০১:৫৯389466
  • গল্প কোথায় গেলো? গল্প?
  • Tim | 71.67.115.14 | ২২ জুন ২০০৭ ০৬:৪২389467
  • পড়ার জন্য থ্যংকু। একটু সবুর। আত্তিরবেলা লিখব।
  • Tim | 71.67.115.14 | ২২ জুন ২০০৭ ১৩:২৬389468
  • ------------সেনেকা উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত গল্প-----

    এক নির্জন বনের ছোট্ট কুটিরে এক শিকারী তার বোনকে নিয়ে থাকত। জোয়ান ভাই শিকার করে আনত, আর বোন সামলাত ঘরের কাজ।
    ভাইটি, ধরে নেওয়া যাক তার নাম পোলক্যাট, প্রায়েই শিকারে গিয়ে দু-তিনদিন পর ফিরত। এরকমই একদিন পোলক্যাট শিকারে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফিরে এল। তার বোন, নাম যার ইকটমি, অবাক হয়ে জিগ্গেস করল, "" ফিরে এলে যে?""
    ""এমনি ইচ্ছে হল""- উত্তর দিল পোলক্যাট। কিন্তু ভাইএর হাব-ভাব ইকটমির মোটেই ভাল লাগল না। সে প্রায় প্রণয়ীর মত আচরন করছিল। কিছুক্ষন সহ্য করে ইকটমি চেঁচিয়ে তাকে তাড়াল।
    পরদিন পোলক্যাট ফিরে দেখল বোন রেগে গুম হয়ে আছে। ""কি হয়েছে রে?"" -অবাক হয়ে জানতে চাইল সে। বোন তখন আগের দিনের ঘটনা বলল।
    ""আমি কোথা থেকে এলাম ? আমি তো এই ফিরছি! এ নিশ্চই আমার বন্ধুর কাজ। তাকে অবিকল আমার মতই দেখতে"" জানাল ভাই। স্বাভাবিকভাবেই বোন তা বিশ্বাস করল না।
    পরের বার পোলক্যাট শিকারে যাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই একই ঘটনা ঘটল। এবারে ইকটমি তৈরী ছিল। ধারাল নখে সে আঁচড়ে দিল ভাইএর গালে।
    যথারীতি পোলক্যাট ফিরল তিনদিন পরে, মুখে তখনো কাটা দাগ। কিন্তু এবারেও সে ঐ একই গল্প বলল। কিন্তু বোন বিশ্বাস করছেনা দেখে সে হতাশ হল।
    এরকম আরো একবার হওয়ায় ইকটমি বেজায় রেগে গেল। যদিও সে আগন্তুকের জামায় গরম তেল ঢেলে দিতে পেরেছিল, কিন্তু তাতে তার রাগ পড়েনি। তাই পোলক্যাট ফিরলে সে ভয়ানক চেঁচামেচি শুরু করল। পোলক্যাতের বলার মত কিছুই ছিলনা প্রায়, কারন তার জামায় তেলের দাগ তখনো স্পষ্ট। অসহায়ের মত সে বলল, "" আমার বন্ধু আর অমাকে অবিকল একই দেখতে সেতো তোকে বলেইছি। তার ওপর আবার আমাদের দুজনের মধ্যে একজনের যা হয়, অন্যকেও তা-ই ভোগ করতে হয়।""
    এরকম আজগুবি গপ্প ইকটমি মোটেই মানল না। তখন পোলক্যাট তার বন্ধুকে খুঁজতে গেল। আর কি অবাক কান্ড! কয়েক ঘন্টা পরেই সে যাকে নিয়ে ফিরল তাকে দেখেতে হুবহু পোলক্যাটের মতই। শুধু তাই নয়, গালে আঁচড় আর জামায় তেলের দাগও ছিল অবিকল।
    ইকটমি তো এইসব দেখে অপ্রস্তুতের একশেষ। কিন্তু পোলক্যাট দারুন রেগে তার বন্ধুকে ধাক্কা দিয়ে বলল, "" তুই আমার বোনকে অপমান করেছিস। এর শাস্তি তোকে পেতেই হবে।"" এই বলে সে তার কোমরবন্ধ থেকে ছুরিটা বের করে বন্ধুর বুকে আমূল বসিয়ে দিল।
    ইকটমি মেঝেতে পড়ে থাকা বদমাসটার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। এমন সময় একটা প্রচন্ড আর্তনাদে সে ফিরে তাকিয়ে দেখল, পোলক্যাট মাটিতে পড়ে ছট্‌ফট করছে। আর তার বুক ভাসিয়ে নেমে আসছে টকটকে লাল তাজা রক্ত।
    --------------
  • Binary | 198.169.6.69 | ২২ জুন ২০০৭ ১৯:৫৭389469
  • ঠিক একইরকম গল্প সত্যজিৎ রায়ের 'এক ডজন' সিরিজে আছে ...... 'রতন বাবু আর সেই লোকটা' .........

    সুতোটা ভাল হচ্ছে ।
  • I | 172.206.64.195 | ২২ জুন ২০০৭ ২০:১২389470
  • জয় গোসাঁই :
    একটিবার হাত রেখেছো, দুবার রাখা বারণ....
    এইটা সবচে প্রাপ্তবয়স্ক গল্প। বেশ বেশ।
  • kali | 160.36.241.77 | ২২ জুন ২০০৭ ২১:৩৭389472
  • তনুর এই গল্পটা পড়েছি,বীরবলের বই তে।

    এবার ওমানের উপকথা বলি :

    সেকালে সব কিছুই একেবারে অন্য রকম ছিলো। আকাশটা ছিলো একেবারে নিরেট শক্ত আর মোটেই অত ওপরে ছিলো না। পৃথিবীর ছাদ তো ঐ আকাশ। কাজেই সেটা ছাদের মতই পৃথিবীর ঠিক ওপরটিতে ছিলো।

    সেকালের মানুষ গুলো ছিলো মস্ত লম্বা আর তাদের গায়ে ভীষণ জোর। ইয়া ইয়া সব হাতুড়ি নিয়ে ওরা কাজ করতো। কি কাজ করতো তা বইয়ে লেখেনি।

    যখন ওরা মস্ত হাতুড়ি দিয়ে কিছু পেটাতো, হাতুড়ির ঘা মাঝে মাঝেই গিয়ে ঐ ছাদ আকাশে লাগতো। অত লম্বা মানুষ ওরা, পেটানোর সময় হাত উঁচু করলে তা লাগবে না? তো যখনই আকাশে ঘা লাগতো, একটা করে ফুটো হয়ে যেতো সেখানে, আর বাড়ির চোটে আকাশটা একটু করে ওপরে উঠে যেতো। সেকালের মানুষরা কিচ্ছু খেয়াল করতো না।

    এই করতে করতে করতে করতে, আকাশ হাতুড়ির বাড়ি খেতে খেতে খেতে খেতে ও--ই অনেক ওপরে চলে গিয়েছে। আর ঐ যে অত গুলো তারা দেখা যায়, সেগুলো ঐ ঘা খেয়ে হওয়া ফুটো ছাড়া কিছু নয়।

    তবে মানুষ গুলো কি করে বেঁটে হয়ে গেলো তা নিয়ে ওমানের উপকথা কিছু বলে নি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন