এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • নানা দেশের উপকথা

    Tim
    বইপত্তর | ২০ জুন ২০০৭ | ৮৮১৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • samik | 61.95.167.91 | ০৯ আগস্ট ২০০৭ ১৩:০২389390
  • দুর্দান্ত গল্প, টিম। টুপি খুললাম।

    কলিজাখাকীর গল্প এ বার তিলোত্তমা লিখেছেন, এ বারের দেশে রাজপাট ধারাবাহিকে। মুর্শিদাবাদের নবাব পরিবারের কাহিনি। মুর্শিদকুলি খাঁ-য়ের কে এক রিশ্‌তেদার।

    মহিলার কী এক অসুখ, বৈদ্য দাওয়াই দিয়েছিলেন রোজ একটি করে শিশুর কলিজা খেতে হবে।

    সেই খেয়ে তাঁর রোগ সেরেও গেছিল, কিন্তু শিশুদের তাজা কলিজা খাবার নেশা গেল না। গুপ্তঘাতক লাগিয়ে তিনি রোজ শিশু খুঁজে আনতেন, তাদের মেরে কলিজা খেতেন (অনেকটা নয়ডা কান্ডের মত)।

    এর পর একদিন মুর্শিদকুলির কানে আসে ব্যাপারটা, তিনি সেই মহিলাকে হাতেনাতে ধরে হত্যা করেন।

    সেকেন্ড ভার্সন, তিনি যুবকদের সঙ্গে প্রণয়লীলা করে যখন সেই যুবক অবসন্ন, তখন তাকে হত্যা করে তার কলিজা খেতেন।

    মুর্শিদকুলি অবশেষে সন্দেহ করে তাঁর এক সুদর্শন যুবক সৈন্যকে পাঠান সেই মহিলার কাছে। সেই যুবক ঐ কলিজাখাকী মহিলাকে হাতেনাতে ধরে তাঁর প্রাণ নেন।
  • Arijit | 128.240.233.197 | ০৯ আগস্ট ২০০৭ ১৩:০৪389391
  • কেউ এট্টু দায়িত্ব নিয়ে গল্পগুলোকে এক জায়গায় করো না। মানে সবাই পোস্ট করে ভাগ ভাগ করে, সেগুলো সব তুলে ওয়ার্ডে ফেলে এক একটা গল্পকে গোটা করে দেওয়া আর কি।
  • Tim | 204.111.134.55 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ০০:২৬389392
  • শমীক, থ্যাংকু। এই কলিজাখাকীর গল্পেও কিন্তু অন্য গল্পের ছায়া বেশ স্পষ্ট। অনেক সময়েই একটা গল্পের সাথে আরেকটা গল্পের এই যে মিল পাওয়া যায়, এর ব্যাখ্যা কি? শুধুই দুটো জাতির ঐতিহাসিক কারণে কাছাকাছি চলে আসা? না এছাড়াও অন্য কিছু?
  • tan | 131.95.121.132 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ০৬:৪২389393
  • টিম,
    অপূর্ব গল্প। এইধরনের গল্প অন্য দেশেও পাওয়া যায়,তাই না? এরকম আরো কটা ঝুলি উপুড় করে দাও দেখি!
    ঐ যে, ভুট্টাগাছের দেবতা আর সেই ভালো ছেলেটার গল্প---ওটাও তো রেড ইন্ডিয়ানদের,ওটা বলবে না?
  • tan | 131.95.121.132 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ০৮:০০389394
  • এটা আয়ারল্যান্ডের উপকথা,একটু বাঙালি করে বলছি।
    সে বহুদিন আগের কথা।এক দেশে এক গরীব চাষী থাকতো। তার থাকার মধ্যে ছিল শুধু এক মেয়ে।ছোট্টো একটি কুটিরে তারা বাপমেয়েতে থাকতো।তাদের চষবার মতো ছোট্টো জমিটুকুও যখন হাতছাড়া হয়ে গেল তখন মেয়ে তার বাবাকে বললো," বাবা তুমি রাজার কাছে যাও। তিনি শুনেছি গরীবকে সাহায্য করে থাকেন।তাঁকে গিয়ে আমাদের অবস্থার কথা জানাও। হয়তো তিনি প্রসন্ন হলে আমরা ফসল ফলাবার মতো একটু জমি পাবো।তাতে চাষ করে বেঁচে থাকার মতো আয়টুকু করতে পারবো।"
    চাষীর কাছে তার মেয়ের এই পরামার্শ মন্দ বলে মনে হলো না। সত্যি রাজার দয়ালু বলে সুনাম ছিল।সে যেতে রাজী হলো কিন্তু বললো মেয়েকেও তার সঙ্গে যেতে হবে।
    শুভদিনে চাষী আর তার মেয়েতে মিলে তো রওনা হলো রাজপ্রাসাদের উদ্দেশ্যে।অনেক মাইল পথ হেঁটে ক্লান্ত হয়ে দুজনে পৌঁছলো রাজার বাড়ী।
    রাজা তখন রাজসভাতেই ছিলেন।তিনি মন দিয়ে চাষীর কথা শুনলেন।তাদের দারিদ্রের কথা শুনে মন গলে গেল তরুণ রাজার।বিশেষ করে চাষীর মেয়েটির এতই লক্ষ্মীমন্ত সুন্দর চেহারা যে তার ছেঁড়া কাপড় আর অনাহারের কথা শুনে রাজা খুব বিচলিত হয়ে পড়লেন।
    খুব তাড়াতাড়িই তিনি তাদের জন্য ঐ অঞ্চলের সেরা জমিটি মঞ্জুর করে দিলেন। চাষী আর তার মেয়ে তো রাজাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে আর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাড়ী চলে এলো।

    তারপরে দিন যায়। চাষী আর তার মেয়ে এখন সেই জমিতে চাষবাস করে খেয়েপরে সুখেই আছে। একদিন চাষী তার ঐ জমিতে লাঙল দিতে গিয়ে হঠাৎ পেয়ে গেল একটা সোনার শিল। শুধু শিলই,নোড়া নেই। সে তো হন্তদন্ত হয়ে বাড়ীতে চলে এলো শিলটা নিয়ে। মেয়েকে বললো কি হয়েছে। এরপরে বললো সে মনস্থ করেছে রাজাকে এই সোনার শিল দিয়ে আসবে সে।কারণ এই জমি রাজার দেওয়া।
    চাষীর মেয়েটি ছিল দারুণ বুদ্ধিমতী। সে বললো "বাবা তুমি যদি রাজাকে এটা নিয়ে দাও, রাজা বলবেন নোড়াটা কোথায় গেল?"
    চাষী মোটেই সে কথা শুনলো না,বললো যে রাজা সোনার শিল পেয়েই খুশী হবেন, নোড়ার কথা কখনই জিজ্ঞেস করবেন না।
    সোনার শিল গামছায় ভালো করে মুড়ে তো চাষী চললো রাজার বাড়ীর দিকে।রাজদরবারে এসে তো রাজাকে সোনার শিল দিল আর খুলে বললো কিকরে সে এটা পেয়েছে।রাজা কিন্তু বললেন," নোড়াটা কোথায় গেল? ব্যাটা চোর,নোড়া সরিয়ে রেখে শুধু শিল দিতে এসেছ আমায়?আমি কি ঘাসে মুখ দিয়ে চলি?তোর মতো চোরকে কিকরে সোজা করতে হয় আমার খুব ভালই জানা আছে।এই কে কোথায় আছিস,একে ধরে নিয়ে কারাগারে রাখ বন্দী করে।যতক্ষণ না নোড়া আমার হাতে আসে মোটেই একে ছাড়বি না।আমি দেশের রাজা, আমার সঙ্গে বদমাইশি? এবার বোঝো,কত ধানে কত চাল।"
    কোতোয়াল এসে তো চাষীকে বেঁধে নিয়ে গেল কারাগারে। চাষী এতই হতভম্ব হয়ে গেছিল যে তার মুখ দিয়ে একটি শব্দও আর বেরোলো না।
    পরের দিন সকালে কারারক্ষী এসে রাজাকে জানালো যে চাষী সারারাত ধরে এতই বিলাপ করেছে আর বলেছে "ইশ যদি আমি মেয়ের কথা শুনতাম!",যে কারারক্ষীর একটুও ঘুম হয় নি,মাথা ধরে গেছে।
    রাজা খুব কৌতূহলী হয়ে উঠলেন। তার চাষীর মেয়েকে খুব ভালই মনে ছিল।মেয়েটি সুন্দরী ছিল সত্যিই,কিন্তু সে এতই বুদ্ধিমতী?
    রাজা বললেন চাষীকে মুক্ত করে তার কাছে নিয়ে আসতে।সে এলে তাকে জিজ্ঞেস করলেন যে তার মেয়ে তাকে কি বলেছিল। চাষী কাঁদতে কাঁদতে বললো যে মেয়ে তাকে আগেই বলেছিল যে রাজাকে শিল নিয়ে দিলে রাজা বলবেন নোড়াটা কোথায় গেল।
    রাজা বললেন,"বটে? মেয়ে তোমার এত চালাক? ঠিক আছে তোমাকে ছেড়ে দিলাম।কিন্তু কাল তোমার মেয়েকে এখানে আসতে হবে হেঁটেও নয় বা দৌড়েও নয়,কোনো গাড়ীতে চড়েও নয় বা কারুর পিঠে চড়েও নয়। তাকে এখানে আসতে হবে কাপড় পরেও নয়,কাপড় নাপরেও নয়।যদি সে তা না পারে তাহলে তোমাদের দুজনকেই শূলে চড়াবো।"
    শুনে তো চাষীর চক্ষুস্থির। সে তো কাঁদতে কাঁদতে আর চোখ মুছতে মুছতে বাড়ী দিকে চললো।নিজের মুক্তির আনন্দ তার সম্পূর্ণ মাটি হয়ে গেছিল কালকের বিপদের কথা ভেবে।
    সে বাড়ী পৌঁছে তো একেবারে ভেঙে পড়লো।মেয়ে তাঁকে জলবাতাসা দিল, হাওয়া করলো। তারপরে সে একটু সামলে উঠলে তাকে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে।সে অনেক কষ্টে সব বললো। বলা শেষ হলে সে একেবারে কেঁদে ফেললো,বললো " আমি মরি ক্ষতি নেই, আমারই বোকামির জন্য তোকে মরতে হবে এই অল্পবয়সে এইটাই আমার আফশোস।"
    চাষীর মেয়ে হেসে বললো,"তুমি এত ভাবছো কেন বাবা? ভগবান সহায় থাকলে আমরা ঠিক তরে যাবো এই বিপদ থেকে।নাও এখন নেয়ে এসে দুটো মুখে দাও দেখি।কালরাতেও তো কিছু খাওয়া হয় নি নিশ্চয়। ইশ,মুখ শুকিয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি যাও,পুকুরে দুটো ডুব দিয়ে এসো। আমার রান্নাবান্না সব তৈরী,শুধু চানটা করে এসো।এই নাও তোমার গামছা, দেরী কোরো না,খাবারদাবার সব জুড়িয়ে জল হয়ে যাবে।"
    চাষী তার মেয়ের এই ভরসাভরা কথা শুনে আর তার হাসি দেখে কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়ে স্নান করতে চলে গেল।
    পরের দিন রাজা দেখলেন,বিশাল দুই ষাঁড় একটা বোঝা টেনে নিয়ে আসছে। আরো কাছে এলে দেখা গেল বোঝাটা আর কিছুই নয়,চাকালাগানো এক কাঠের চৌকো পাতের উপরে মাছধরার জালে খুব ভালোভাবে জড়ানো সেই চাষীর মেয়ে।চাষীর মেয়ে কাপড়ের বদলে পরেছে মাঝধরার জাল-সে জাল এতবার পেঁচিয়েছে যে তা কাপড়ের চেয়েও ভালো ভাবে তাকে ঢেকেছে।সে হেঁটেও আসে নি,দৌড়েও না,কারুর পিঠে চড়েও না,গাড়ীতে চড়েও না।সে কাপড় পরে নি, আবার সে অনাবৃতাও নয়।
    রাজা চমৎকৃত হয়ে গেলেন।এই অত্যন্ত বুদ্ধিমতী মেয়েটিকে রানী না করতে পারলে তাঁর জীবন বৃথা মনে হলো।
    যা ভাবা সেই কাজ। তক্ষুণি জরুরী তলব পেয়ে চলে এলেন রাজপুরোহিত।তিনি সেইদিনই শুভক্ষণে রাজার সঙ্গে সেই কৃষককন্যার বিবাহ দিলেন।
    গোটা রাজ্যের লোক নিমন্ত্রণ খেয়ে ধন্য ধন্য করতে লাগলো।
  • d | 192.85.47.11 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:০১389395
  • সব দেশের রূপকথা বা উপকথায় আর একটা বৈশিষ্ট্য খুব দেখা যায়। সেটা হল দৈববাণী। বেশ মোক্ষম সময়ে এই দৈববাণীগুলো হয়। এই যেমন মদনভস্মের পরে রতি যখন বিলাপ করে আত্মাহুতি দিতে যাচ্ছে তক্ষুণি দৈববাণী। আবার বিক্রমোর্বশী তেও নারদের দৈববাণী বেশ একটা মোক্ষম মুহূর্তে। আর মিশরে তো দৈববাণীর ছড়াছড়ি।
  • tan | 131.95.121.132 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:০৩389396
  • গ্রীসেও। ওর‌্যাকল। ডেলফি মন্দির।সেখেনে তো প্রায় ইন্ডাস্ট্রি গজিয়ে গেছিলো এই দৈববাণীর জন্য।উঁচুঘরের সব কাস্টোমার!
  • d | 192.85.47.11 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:১০389397
  • হ্যাঁ।

    তবে ওর‌্যাকল নিয়ে বেশী কিছু না বলাই ভাল। ওর‌্যাকল ইন্ডাস্ট্রি হবে না তো কি ট্যালী হবে নাকি?

    আরেকটা আদিকল্প অনেক জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় --- হংস হংসী। সেই উর্বশী পুরূরবার গল্পে আছে। ঋগ্বেদেও আছে। বিক্রমোর্বশী লেখার সময় কালিদাস সরাসরি হাঁস হয়ে যাওয়ার ব্যপারটা না বললেও ব্যপারটা যে ওঁর মাথায় ঘুরছিল সেটা দৃশ্যকল্পগুলোর বিবরণেই বোঝা যায়। আবার রাশিয়ান সোয়ান লেকের ব্যালেটাও সমজাতেয় কাহিনীকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। একটা আইরিশ উপকথাও বোধহয় পড়েছিলাম।
  • tan | 131.95.121.132 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:১৮389398
  • বেদে প্রচুর দৈববাণী।সেখেনে তো হাঁস, মদ্‌গুপাখি, ষাঁড়, আগুন ---সময়বিশেষে সবাই কথা টথা বলে নেয়।:-)))
    হরিশ্চন্দ্রের গল্পে ঝড়জলের মধ্যে শ্মাশানে দৈববাণী!!!
    রুরু আর প্রমদ্বরার গল্পে তো দৈববাণীর সঙ্গে কথাও কয়ে নিলো রুরু,শুধু শুনেই থামলো না!
  • Blank | 65.82.130.9 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:২৬389400
  • বেদ জিনিস টা পড়ে দেখতে হবে। ওখানে কি গপ্প আছে? মানে ফেবলস টাইপ?
  • Tim | 204.111.134.55 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:৩০389401
  • রে রে রে পামর, বেদেরে ফেবলস বলিস? বেদ সেই আদি অনন্তকাল ধরে চলে আসা ফিল্টারিত বিশ্বকোষ, শুধু শেষ এডিশান ছাড়া বাকিগুলো পাওয়া যায়না।:-)
  • tan | 131.95.121.132 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:৩২389402
  • আরে বেদ দুর্দান্ত গপ্পে কবিতায় গানে একেবারে ভর্তি। সব নাকি সিম্বলিক!
    টইয়ে একটা বেদ উপনিষদের থ্রেড আছে তো!
    (স্বগত: গুরুতে কি নেই?)
  • Blank | 65.82.130.9 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:৩৭389403
  • তবে এবারে এক পিস বেদ জোগাড় করে দেখি
  • Tim | 204.111.134.55 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:৪৮389405
  • আরিব্বাস! এতো মহাকাব্যিক সুতো ট্যান।
  • tan | 131.95.121.132 | ১০ আগস্ট ২০০৭ ২০:৫৩389406
  • যা নাই গুরুতে, তা নাই গুরুতে।
    :-))))
  • Tim | 204.111.134.55 | ১১ আগস্ট ২০০৭ ০০:০৫389407
  • ট্যান,
    চাষি আর তার মেয়ের গল্পটা দারুণ। আমি ভেবেছিলাম উড়ে আসবে মেয়েটি :্‌))।
  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৪:৩৮389408
  • যাদুকরী রাজকুমারীর গল্প
    (রুশদেশের রূপকথা অবলম্বনে)

    বহু বহুকাল আগে,এক দেশে এক রাজা ছিল। তার ছিল বিরাট ঝলমলে রাজপ্রাসাদ, হাতিশালে হাতি, ঘোড়াশালে ঘোড়া। বিরাট সৈন্যবাহিনী। দেশ জুড়ে ছড়ানো অজস্র সম্পদ। রাজার রাজত্বে প্রজারা খুবই সুখে ছিল।তারা দুবেলা রাজার গুনগান করতো।
    রাজার ছিল তিন ছেলে।ঝকমকে তিন রাজপুত্তুর। তারা শাস্ত্র ও শস্ত্রশিক্ষা করে বড়ো হয়ে উঠছিল।
    ছেলেরা যখন বেশ বড়ো হয়েছে, রাজার রানী তাকে বললো,"এবার ছেলেদের বিয়ের বন্দোবস্ত করো।এরপরে তো এদের হাতেই দায়িত্ব দিয়ে আমাদের অবসর নিতে হবে প্রজাপালন থেকে।"
    রাজা বললেন,"তাই হবে।তবে তার আগে তাদের একটা পরীক্ষা নেবো আমি।তাদের ধনুর্বিদ্যার পরীক্ষা।নির্দিষ্ট জায়গা থেকে তারা তিনজনে তীর ছুঁড়বে।যে মেয়ে যার তীর কুড়িয়ে পাবে,সেই মেয়েই হবে তার বৌ।"
    শুনে রানী একই সঙ্গে ভারী অবাক আর শঙ্কিত হল।এ তো পুরোপুরি ভাগ্যের হাতে ছেলেদের ছেড়ে দেওয়া! এইভাবে তাদের জন্য স্ত্রী নির্বাচিত হবে? কত কত রাজকন্যাকে দেখেশুনে ছেলেদের জন্য বৌ আনবেন ঘরে,তারা হবে রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী,তা নয়,এ কি উৎপেতে ব্যপার?
    তিনি রাজাকে এইধরনের অদ্ভুৎ পরিকল্পনা থেকে নিরস্ত করার অনেক চেষ্টাই করলেন, কিন্তু রাজা কিছুতেই শুনলেন না।খুবই একগুঁয়ে আর জেদী রাজা,একথা বলতেই হবে।
    তখন রানী এক গোপন বন্দোবস্ত করলেন। তিনি গোপণে বিভিন্ন রাজ্যের রাজকন্যাদের সংবাদ পাঠালেন যেন তারা ছদ্মবেশে তার মহলে আসে। রাজপুত্রদের তীরন্দাজির প্রতিযোগিতার দিন তিনি তাদের তীরছোঁড়ার অঞ্চল থেকে বেশ খানিকটা দূরে দূরে ছদ্মবেশে
    দাঁড় করিয়ে রাখলেন যাতে তীর এসে পড়লেই তারা ছুটে গিয়ে তুলে নিতে পারে।আর তাহলেই তো কেল্লাফতে। রাজপুত্তুরের বৌ হয়ে যাবে,কম কথা? ভাগ্যে থাকলে ভবিষ্যতে কোনোদিন রানীও হয়ে যেতে পারে।
  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৪:৪১389409
  • তিন রাজপুত্র প্রতিযোগিতার দিন সকালে নির্দিষ্ট স্থান থেকে তীর ছুঁড়ে মারলেন-বড়ো রাজপুত্র পুবের দিকে,মেজো পশ্চিমে আর ছোটো দক্ষিণে।তীরে রাজকীয় চিহ্ন আঁকা ছিল আর রাজপুত্রদের নাম লেখা ছিল।
    এরপরে তারা বাবার নির্দেশে ঘোড়ায় চড়ে চলল তাদের তীরের কি গতি হলো দেখতে।বাবা তাদের বলেছে,যে মেয়ে যার তীর তুলবে,সেই হবে তার স্ত্রী।
    বড়ো রাজপুত্র ঘোড়ায় চড়ে আশায় আশংকায় চললো পুবের দিকে। মাইলখানেক গিয়ে সে দেখতে পেল একজন সুন্দরী তরুণী তার তীর হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।সে তাকে নিজের ঘোড়ায় তুলে নিয়ে রাজপ্রাসাদে ফিরলো।সে ছিল পাশের রাজ্যের রাজকুমারী।
    মেজো রাজপুত্র ঘোড়া নিয়ে পশ্চিমে চলতে চলতে মাইলদুয়েক গিয়ে দেখা পেল তার তীরের। এক রূপসী কন্যা তার তীর হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।মেজো রাজপুত্র তাকে নিজের ঘোড়ায় তুলে নিল।রাজপ্রাসাদে ফিরতে ফিরতে সে তার কাছে জানতে পারলো যে সে চন্দ্রপত্তনের রাজকন্যা।

  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৪:৪৫389411
  • ছোটো রাজপুত্র ইরাবান ঘোড়ায় চলেছিল দক্ষিণে। সে চলে আর চলে আর চলে। তীরের দেখা আর পায় না। মাইলের পর মাইল পথ পেরিয়ে তার ঘোড়া শ্রান্ত হয়ে পড়ে।সে গাছের ছায়ায় ঘোড়াকে একটু বিশ্রাম দিয়ে আবার চলে।অনেক অনেক পথ পার হয়ে সে এসে
    পৌঁছয় তরাইনের জলা অঞ্চলে।
    এখানে সে তার তীরের দেখা পায়।একটি ব্যাঙ,তার তীর মুখে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। রাজপুত্তুর বলে,"ওগো ব্যাঙ,আমার তীর ফেরৎ দাও,দয়া করে।"
    ব্যাঙ ঠিক মানুষের গলায় বলে,"ফেরৎ দিই,যদি তুমি আমায় বিয়ে করো।"
    রাজপুত্তুর শিউরে ওঠে।বিয়ে? এই কদাকার ব্যাঙকে? তা কিকরে সম্ভব?
    সে কাতর গলায় বলে,"ওগো ব্যাঙ,তোমায় আমি কিকরে বিয়ে করবো? আমি যে মানুষ,তুমি যে ব্যাঙ!"
    ব্যাঙ অভিমানের গলায় বলে,"তবে তোমার তীর নাহয় নাই ফিরে পেলে।"
    রাজপুত্র ব্যস্ত হয়ে বলে,"তীর যে আমায় ফিরে পেতেই হবে।"
    ব্যাঙ বলে,"তাহলে আমায় তোমার বিয়ে করতেই হবে।"
    রাজপুত্র হতাশ হয়ে নিজের মাথার উষ্ণীশ খুলে পেতে দেয়। বলে,"ঠিক আছে, ভাগ্যে যখন আমার এই আছে।এই হোক তবে।এসো,এর ওপরে বসো।তোমায় প্রাসাদে নিয়ে যাই।"
    ব্যাঙ খুশী হয়ে বলে,"তুমি বড়ো ভালো, রাজপুত্র। তোমার ভালো হবে,দেখো তোমার অনেক ভালো হবে।"
    রাজপুত্র ব্যাঙ্কে উষ্ণীষে মুড়ে ঘোড়ায় চড়ে প্রাসাদে ফিরে আসে।

  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৪:৪৮389412
  • পরদিন রাজা মহাসমারোহে তার তিন পুত্রের বিবাহ দেন। বড়োজনের সঙ্গে পাশের রাজ্যের রাজকন্যার, মেজোজনের সঙ্গে চন্দ্রপত্তনের রাজকন্যার আর ছোটোজনের সঙ্গে এই নামহীনা ব্যাঙের।
    সবাই ছোটো রাজপুত্র আর তার ব্যাঙ বৌকে নিয়ে হাসাহাসি আর ব্যঙ্গ করছিল।ছোটো রাজপুত্র দু:খে অপমানে মাথা নীচু করে ছিল।অনুষ্ঠান শেষ হলে সে ব্যাঙকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে এলো। ঘরে এসে ব্যাঙটাকে মেঝেতে রেখে (ছুঁড়ে ফেলেনি কিন্তু, আস্তেই রেখেছিল, সে এমনিতে খুব সদয় হৃদয় ছিল কিনা!) নিজে বিছানায়
    উপুড় হয়ে পড়ে রইলো। ব্যাঙ থপ থপ করে লাফাতে লাফাতে এসে তার বালিশের কাছে উঠলো। বললো,"প্রিয় রাজপুত্তুর,আমার জন্যই তোমার এই হেনস্থা হলো। তুমি বরং আমাকে সাজা দাও।"
    ইরাবান হাত বাড়িয়ে তার ব্যাঙ বৌয়ের স্যাঁতসেতে গায়ে আলতো হাত বোলাতে বোলাতে কান্না চেপে বলে,"না না তোমার আর কি দোষ বলো। সবই আমার কপাল।"
    ব্যাঙ খুব নরম গলায় বলে,"তুমি খুব ভালো ইরাবান,তুমি খুব ভালো।"তারপরে রাজপুত্তুরের হাতের আঙুলের উপরে নিজের মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।রাজপুত্র ক্লান্তিতে ভেঙে ঘুমিয়ে পড়ে বলে টের পায় না যে সে ঘুমোলেই ব্যাঙ ছদ্মবেশ ত্যাগ করে হয়ে যায় এক অপরূপা রাজকন্যা। তার রূপের ছটায় ঘর আলো হয়ে যায়।
  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৪:৫৩389413
  • বেশ কয়েক দিন গেছে কেটে।রাজা এবার ঠিক করেছেন তার বৌমাদের পরীক্ষা নেবেন। প্রথমদিন হবে তাদের রন্ধনের পরীক্ষা।তিনি তার প্রিয় পদটি রান্না করার নির্দেশ দিলেন বৌমাদের।পরদিন সকালে তিনি তা চাখবেন ও নম্বর দেবেন।
    শুনে তো ইরাবানের মাথায় হাত।দুই দাদা হাসতে হাসতে চলে গেল, সে মাথা নীচু করে চোখের জল চেপে ঘরে এলো।
    এসে সে বসেই আছে,কপাল টিপে ধরে,দেখে ব্যাঙ কাছে এলো। বললো,"কি হয়েছে,রাজপুত্র?"
    রাজপুত্র টের পেয়েছে যে তার ব্যাঙ বৌ এমনিতে ভালো।তাই বললো," সে কথা শুনে আর কি করবে বৌ? যা হবার নয়,তা তো আর করতে বলতে পারিনা তোমায়।"
    "কি সে জিনিস,ইরাবান?"
    "বাবা তার প্রিয় পদটি রান্না করতে বলেছেন তার বৌমাদের।কাল সকালে তিনি তা খেয়ে দেখবেন কে কেমন রাঁধলো।তুমি তো মানুষ নও,ব্যাঙ,কিকরে তুমি রান্না করবে লুচি আর মাংসের ঝোল?"
    "এই কথা? এই জন্য তুমি ভাবছো এত?ভেবো না,ঘুমোতে এসো, দেখো রাত পোহালে সব ঠিক হয়ে যাবে। জানোনা, রাত পোহালে বুদ্ধি বাড়ে?"

    হতাশ ইরাবান ভাবে,না ঘুমিয়ে জেগে জেগে ভাবলেই কি আর সমস্যা সমাধান হবে? তার চেয়ে ঘুমোনোই ভালো।এই ভেবে সে তার ব্যাঙ বৌকে পাশে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
    সে ঘুমোলেই ব্যাঙ ছদ্মবেশ খসিয়ে হয়ে যায় রাজকন্যা।
    বিছানা ছেড়ে জানালার কাছে গিয়ে সে ডাকে তার যাদু সহকারিণীদের। রাত্রির আকাশে উড়ে উড়ে এসে পড়ে তারা। সে বলে, "সখীরা, তোমরা বানাও সেরা ময়দার সেরা লুচি আর বানাও লবঙ্গ এলাচ দারুচিনি দেওয়া চমৎকার মশলাদার মাংসের ঝোল। সঙ্গে বড়ো বড়ো আলু দিতে ভুলো না যেন।ঠিক যেরকম আমার বাবা,যাদুকর
    সম্রট, উৎসবের দিনে খেতে ভালোবাসতেন।"
    কিছুক্ষণের মধ্যেই সখীরা সব তৈরী করে,সোনারুপোর পাত্রে রেখে রেশমী রুমাল ঢাকা দিয়ে আবার উড়ে যায় আকাশে।রাজকন্যা নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুম যায়।

  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:০১389414
  • পরদিন সকালে যখন সে আবার ব্যাঙের বেশে,তখন ইরাবান ওঠে ঘুম থেকে।সে তো লুচি মাংসের ঘ্রাণে অবাক।রেশমী রুমালের ঢাকনা সরিয়ে ফুলকো ফুলকো লুচি দেখে তো সে প্রায় মেঝেতে পড়ে যায়।সত্যি সত্যি তার ব্যাঙ বৌ এইসব বানিয়েছে?
    সে মহানন্দে সব নিয়ে চললো রাজার কাছে।সেখানে অন্য রাজপুত্ররা তখন এসে পড়েছিল।প্রথমে বড়ো বৌমার হাতের রান্না চেখে দেখতে ঢাকনা খুললেন রাজা।লুচি তুলে ছিঁড়তে
    গেলেন,উ:,লুচি তো নয়,যেন চামড়া। কোনোক্রমে একটুকরো ছিঁড়লেন।তারপরে মাংসের ঝোলে ডুবিয়ে মুখে দিয়েই রাজা মহা খাপ্পা।এ কি!!! ঝোলে এতটুকু নুন নেই? রাজা রেগে বললেন,"এ যা রান্না হয়েছে দশে চারও পাবে না।টেনেটুনে সাড়ে তিন।"
    অপ্রসন্নমুখে বড়ো বৌমার খাবার একপাশে সরিয়ে রেখে রাজা এবার মেজো বৌমার লুচিতে হাত দিলেন।এ লুচি যদিও একেবারে চামড়া নয়,তবু সেরকম উঁচুদরেরও নয়।এবার মাংসের ঝোলে লুচির টুকরো ডুবিয়ে মুখে দিয়েই বিষম খেলেন রাজা।নুনে একেবারে পোড়া! এ জিনিস
    খেতে পারে মানুষে?রাজা রেগে লালচে হয়ে বললেন,"এই নাকি রাজাকে খেতে হলো!এই রান্না দশে পাবে মোটে দুই।"
    রাজা হতাশ হয়ে ছোটো বৌমার খাবারের পাত্রের ঢাকনা সরালেন। এখানে লুচিগুলিকে দেখেই তিনি খুশী হয়ে উঠলেন।মুচমুচে ফুলকো লুচি।তিনি তুলে এক কামড় দিলেন।আহা,মুখে যেন অমৃতের স্বাদ। তিনি শুধু শুধু লুচিই খেয়ে নিলেন কয়েক কামড়। তারপরে
    মাংসের ঝোলের ঢাকনা খুলে খাবেন কি! সুগন্ধেই তো তিনি প্রায় বিবশ। তারপরে ধাতস্থ হয়ে লুচির খন্ড দিয়ে মুড়ে খানিকটা ঝোল আর মাংস খেলেন।একবার খেয়ে আবার খেলেন,আবার খেলেন।তারপর মুখ টুখ মুছে বলনে,"হ্যাঁ,এই হলো প্রকৃত ভালো রান্না। রাজকীয় রান্না।বাবা ইরাবান,ছোটো বৌমার যদি এই রান্না হয়ে থাকে,তবে সত্যিই এর তুল্য আমি আর দেখিনি আমার সারা জীবনে।কত সময় কত দেশে গিয়েছি নিমন্ত্রণে আমন্ত্রনে উৎসবে অনুষ্ঠানে।খেয়েছি কতরকমের ভালো ভালো রান্না।কিন্তু এর তুল্য স্বাদ আমি আর কোথাও পাই নি আগে। শুধু একবার যাদুসম্রাটের দেশের উৎসবে
    নিমন্ত্রিত হয়ে প্রায় এইরকম জিনিস খেয়েছিলাম। ছোটো বৌমাই যদি এ জিনিস বানিয়ে থাকে সে দশে দশ পাবারই যোগ্য।বরং কয়েক নম্বর বোনাস পাবে,এক্সট্রা ক্রেডিট।"

  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:০৪389415
  • ইরাবান মাথা নীচু করেই দাঁড়িয়ে ছিল।তাই সে দেখতে পায় নি দাদারা তার দিকে কেমন হিংসুটে চোখে চেয়ে চেয়ে দেখছে।রাজা হাত নেড়ে বড়ো দুই ছেলেকে চলে যেতে বললেন।
    তারপরে ছোটো ছেলেকে কাছে ডেকে বললেন,"খোকা, সেদিন তোকে নিয়ে সবাই অনেক ঠাট্টা ইয়ার্কি করেছিল।আমিও তো কোনো বাধা দিই নি ওদের।আমারও দোষ আছে। জানি তুই খুব কষ্ট পেয়েছিস।আজ তোকে
    আর তোর বৌকে ভালো ভালো উপহার দেবো।আর কষ্ট পাসনা,কেমন?"
    ছোটো রাজপুত্তুরের চোখে জল আসছিল। কিন্তু সে কোনোক্রমে সামলে
    নিয়ে বললো,"না না,ঠিক আছে।সবই আমার কপাল।তোমার দোষ কেন হবে?তোমার কোনো ত্রুটি নেই।উপহার দিতে হবে না।আমার ব্যাঙ বৌ কি করবে উপহার নিয়ে? সে তো আর মানুষ নয়,ব্যাঙ মাত্র।আর আমারও কিছু চাই নে,এমনিই আমার অনেক আছে।"
    রাজা তার অভিমানী ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে ওর মাথার চুল ঘেঁটে দেন।জোর করে ওকে অনেক উপহার দেন। সোনার
    কুন্ডল, স্বর্ণহার, রেশমী কাপড়, ধাতুর তীর ও তূণ, কারুকাজ করা তীক্ষ্ণ তলোয়ার। ছোটো বৌমার জন্যও দেন স্বর্ণালংকার, রেশমবস্ত্র ইত্যাদি।ইরাবান সেসব নিয়ে হরষে বিষাদে ঘরে ফিরে যায়।

  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:০৯389416
  • আরো কেটে গেছে বেশ কিছুকাল। রাজার আবার খেয়াল চাপলো বৌমাদের পরীক্ষা নেবেন।এবারে কি পরীক্ষা? এবারে নেবেন বৌমাদের শিল্পদক্ষতার পরীক্ষা। তিনি নির্দেশ দিলেন এক সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেক পুত্রবধূকে তৈরী করে দিতে হবে সুন্দর রাজপোশাক। নির্দিষ্ট দিনে(এক সপ্তাহ পরে)তিনি তা পরে পরে দেখবেন ও নম্বর দেবেন।
    শুনে তো ইরাবানের মাথায় হাত। কি করে তার বেচারা ব্যাঙ বৌ বানাবে রাজপোশাক?
    দুই দাদা হাসতে হাসতে চলে গেল, যাবার সময় তাকে ছোট্টো করে একটু টিটকিরি দিতেও ভুললো না।
    ইরাবান কোনোরকমে টলতে টলতে, হোঁচোট খেতে খেতে নিজের ঘরে এলো। এসে সে বসেই আছে,আলো জ্বালে নি,কিচ্ছুনা, বসে বসে আকাশ পাতাল ভাবছে। মুখ তার রীতিমতো কালো হয়ে গেছে।
    ব্যাঙ তখন ঘরে ছিল না,ইরাবানের মহলের বাগানে ঘুরছিল।
    ঘরে ফিরে ইরাবানকে অন্ধকার ঘরে মাথা টিপে ধরে বসে থাকতে দেখে চমকে গিয়ে থপ থপ করে কাছে এলো।বললো," প্রিয় রাজপুত্র, কি হয়েছে? কেন তোমার মুখ শুকনো? চোখ বসে গেছে?কি হয়েছে আমায় বলো।"
    ইরাবান তার ব্যাঙ বৌকে হাতে তুলে নিয়ে আস্তে আস্তে বলে,"কি হবে তোমায় বলে? শুধু শুধু দু:খ বাড়বে।বাবা আবার পরীক্ষা নিতে চান।এবার সব বৌমাকে বানাতে হবে রাজপোশাক। এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন।তারপরে তিনি পোশাক পরে দেখবেন আর নম্বর দেবেন।" এই পর্যন্ত বলে দু:খে বেচারার গলা বুজে যায়। ব্যাঙ বৌ হেসে ওঠে। বলে,"এই কথা? এই জন্য তুমি এতো ভাবছো রাজপুত্তুর? মুখে হাসি নেই,ঘরে আলো নেই? ভেবো না রাজপুত্তুর।ভেবো না।নিশ্চিন্তে ঘুম যাও রাতে।দেখবে সকালে সব ঠিক হয়ে গেছে। জানোনা রাত পোহালে বুদ্ধি বাড়ে?"
    ইরাবান তার ব্যাঙ বৌয়ের দিকে চেয়ে দেখে।আগেরবারের অবাক ব্যাপার স্মরণ করে তার মনে হয়,হয়তোবা হতেও পারে।ভাবে রাত জেগে জেগে বসে বসে ভাবলে কি আর সমস্যা সমাধান হবে? তার চেয়ে ঘুমোনোই ভালো।

  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:১২389417
  • এই ভেবে সে তার ব্যাঙ বৌকে পাশে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সে ঘুমোলেই ব্যাঙের ছদ্মবেশ খসিয়ে উঠে বসে যাদুকর সম্রাটের কন্যা,অপরূপা যাদুকরী বিশ্ববিমোহিনী ভানুমতী।তার রূপের ছটায় ইরাবানের ঘর দুলে ওঠে।
    সে নবনীতকোমল দুগ্‌ধফেননীভ শয্যা ছেড়ে বাতায়নের
    কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।মন্ত্র পড়ে ডাক দেয় তার যাদু সহকারিনীদের।রাতের আকাশে উড়ে উড়ে এসে পড়ে তারা।তখন ভানুমতী বলে,"সখীরা, তোমারা তৈরী করো সেরা রেশমের সেরা রাজপোশাক, ঠিক যেমনটি আমার বাবা উৎসবের দিনে পরতে ভালোবাসতেন। তাতে গেঁথে গেঁথে দিও মণি মুক্তা হীরা জহরৎ। সঙ্গে আরো তৈরী করো সেরা
    উষ্ণীষ, তাতে গাঁথা থাকবে মস্তো বড়ো আলো ঝলকানো হীরে।"
    যাদুকরী রাজকুমারীর সহকারিনীরা সঙ্গে সঙ্গে কাজে লেগে যায়।প্রথম রাতে তৈরী হয় পোশাকের এক সপ্তমাংশ, তারপরে তারা উড়ে চলে যায়। রাজকুমারী আবার ব্যাঙের ছদ্মবেশ ধরে রাজপুত্র ইরাবানের পাশে শুয়ে পড়ে।
    এইভাবে প্রতি রাত্রে তৈরী হতে থাকে রাজপোশাক।ইরাবান এর কিছুই জানতে পারেনা।সে তখন থাকে ঘোর নিদ্রায় অভিভূত।
    সাত রাত কাজ হবার পরে রাজপোশাক ও উষ্ণীষ তৈরী
    শেষ হয়। সবকিছু গুছিয়ে ভাঁজ করে রেশমী ঢাকনায় ঢেকে
    এতদিন পরে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যায় যাদুকরী ভানুমতী।
  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:১৫389418
  • পরদিন সকালে উঠে ইরাবান তো পোশাক দেখে একেবারে চমকে মেঝেতে পড়ে যায় আরকি।এত সুন্দর সূক্ষ্ম কারুকার্য করা মহার্ঘ্য পোশাক তো সে জীবনেও দেখেনি। এত হীরা মণিমুক্তা জহরৎ পান্না চুনী পোশাকে!আলো ঠিকরে যাচ্ছে রত্নগুলি থেকে।
    সদ্য ঘুমভাঙা চোখ একবার কচলিয়ে নিয়ে আবার ভালো করে দেখে ইরাবান। সত্যি এসব তৈরী করেছে তার ব্যাঙ বৌ? এ তো সামান্য ব্যাঙ নয়!নিশ্চয় এ ব্যাঙের ছদ্মবেশে অন্য কেউ।
    সে তার ব্যাঙ বৌকে চেপে ধরে,"বলো তুমি কে? বলতেই হবে।নিশ্চয় তুমি ছদ্মবেশিনী।বলো তুমি কে।"
    ব্যাঙ বলে,"আজকে নয় রাজপুত্র,দোহাই তোমার।আজকে আমাকে ছেড়ে দাও।সময় হলে আমি নিজেই তোমাকে বলবো আমার সব কাহিনি।দয়া করে আজকে আমাকে ছেড়ে দাও, জোর কোরো না, তাতে খুব ক্ষতি হবে। কটা দিন ধৈর্য ধরো।দোহাই তোমার।"
    ব্যাঙের গলা এত কাতর শোনালো যে ইরাবান তাড়াতাড়ি তার মুঠো আলগা করে ফেললো।অত্যন্ত অনুতপ্ত গলায় বললো,"আমি বুঝতে পারিনি।তোমায় আমি কক্ষণো জোর করবো না।তোমার যখন ইচ্ছে হবে তখনই বোলো।"
  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:২২389419
  • রাজার কাছে তিন রাজপুত্রই এসে পৌঁছলো প্রায় একই সময়ে। সঙ্গে রেশমী পেটিকায় তাদের বৌদের বানানো রাজপোশাক।
    প্রথমে রাজা বড়ো ছেলের হাত থেকে নিলেন পেটিকা। পোশাক বার করে ঝেড়ে খুললেন তার ভাঁজ।নিতান্ত সাদামাঠা পোশাক। রাজা অবহেলায় নিজের গায়ের উপরে ফেলে দেখে বললেন, "পোশাক হয়েছে বটে।তবে রাজার উপযুক্ত নয়।চাষীদের গায়ে মানাবে ভালোই।মেরেকেটে এ পাবে দশে তিন।" শুনে বড়ো রাজপুত্রের মুখ ধূসর হয়ে গেল।
    এরপরে মেজো ছেলের হাত থেকে পেটিকা নিয়ে পোশাক বার করলেন।কিন্তু যেই না ভাঁজ খুলতে গেলেন,অমনি বেকায়দার টানে সেলাই খুলে এলো।ফরফর করে উড়তে লাগলো পোশাকের রেশম কাপড়।পট পট করে খুলে পড়লো কয়েকটা সোনার বোতাম। রাজা তো রেগে মেগে
    একাকার।বললেন,"আমার সঙ্গে ঠাট্টা হচ্ছে? হ্যাঁ? এসব কি? এত সোনারূপো মণিমুক্তো সাঁটতে গেছে,অথচ সেলাইটুকু শক্ত করে করতে পারেনি? যাও,এ পাবে দশে আড়াই।"
    এরপরে তিনি ইরাবানের হাতের পেটিকা খুললেন।খুলেই তার মুখ আলো হয়ে গেল।ঝলমলে সেই রাজপোশাক সতর্ক যত্নের সঙ্গে বার করলেন পেটিকা থেকে।নিজের পোশাকের উপরেই গলিয়ে নিলেন সেটি।উঁচুদরের সূক্ষ্ম সূচীকর্ম করা সেই পোশাক রাজ-অঙ্গে সগৌরবে শোভা পেতে লাগলো।অজস্র রত্ন থেকে আলো ঝলকিত হয়ে সকলের চোখ ধাঁধিয়ে
    দিচ্ছিল।এরপরে পেটিকায় আবার উষ্ণীষও আছে দেখে তো রাজা একেবারে আহ্লাদে আটখানা।রাজমুকুট খুলে রেখে তিনি সেই উষ্ণীষ মস্তকে ধারণ করলেন।
    রাজার মুখে হাসি তো আর ধরে না। বললেন,"হ্যাঁ,এই হলো প্রকৃত রাজপোশাক।এ তার থেকেও উঁচুদরের। এ সম্রাটের উপযুক্ত পোশাক।সত্যি করে বলো পুত্র ইরাবান,এ কি সত্যি তোমার ব্যাঙ বৌয়ের তৈরী করা?"
    ইরাবান মাথা নীচু করে আস্তে আস্তে বলে,"হ্যাঁ। তারই করা। আমার এর বেশী কিছু জানা নেই পিতা।"
    তার দুই দাদা তার দিকে জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে ছিল।তারা এবার
    দুজনেই রাজাকে বললো,"পিতা,আমাদের অনুরোধ,আপনি একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আপনার সব বৌমাদের তাতে নিমন্ত্রণ করুন।সকলে আসবে তাদের সেরা পোশাকে সেজে,সেই সভায় হবে তাদের রাজকীয় আদবকায়দার পরীক্ষা।এটা কি ভালো প্রস্তাব নয়?"এই বলে তারা একবার নিজেদের মধ্যে চোখাচোখি করে হেসে নিল।
    ইরাবান মনে মনে ঠাকুরকে ডাকছিল, যেন রাজা কিছুতে রাজী না হন।রাজী হয়ে গেলে যে একেবারে সাড়ে সব্বোনাশ। কিকরে তার বৌ সভায় এসে রাজকীয় আদবকায়দার পরীক্ষা দেবে?সে যে মানুষই নয়,ব্যাঙ!
  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:২৬389420
  • কিন্তু যেখানে বাঘের ভয়,সেখানে সন্ধে হয়।জানাই তো আছে। রাজার শুনে খুবই পছন্দ হয়ে গেল প্রস্তাবটি।তিনি মহা উৎসাহে রাজী হয়ে গেলেন।
    বললেন "ঠিক আছে,তাই হবে। আগামী শুক্লপক্ষের পঞ্চমী
    তিথিতে সব বৌমা আসবেন আমার সভাগৃহে,সেখানে তাদের নিমন্ত্রণ।"
    শুনে ইরাবানের মুখ সাদা হয়ে গেল ভয়ে।কিকরে এই পরীক্ষায় পাশ করবে তার বেচারা ব্যাঙ বৌ?

    দাদারা হাসতে হাসতে নিজের মহলে যাবার সময় বলে গেল,"ইরাবান, তোর বৌকে সাজিয়ে গুছিয়ে আনিস কিন্তু। পিছলিয়ে না পড়ে ওকে। ব্যাঙের গা যা পেছল,বেকায়দায় কারু পা পড়লে আর দেখতে হবে না। সাবধানে, ইরাবান। ভগবান না করুন,বাবাই যদি পিছলে যান!"

    ইরাবানের চোখে সত্যি সত্যি এবার জল আসছিল।কি অসহায় সে,কি নিরুপায়! কি করবে এবার? দু দুবার পাশ করে গেছে বৌ,কিন্তু এবার?

    শুকনো মুখে ঠোক্কর খেতে খেতে নিজের মহলে ফিরল ইরাবান। সে সত্যিই সব অন্ধকার দেখছিল এবার। এসে সে বসেই আছে মাথা নীচু করে,মুখে কোনো কথা নেই।

    দেখে ব্যাঙ থপথপিয়ে কাছে এলো। বললো,"কি হয়েছে রাজপুত্তুর? কি হয়েছে তোমার?আমাকে বলবে না?"
    ইরাবান তার ব্যাঙ বৌকে হাতে তুলে নিয়ে আস্তে আস্তে ওর পিছলে গায়ে আঙুল বোলাতে লাগলো, কিন্তু কিছুতেই বললো না কি হয়েছে। ব্যাঙ বহু অনুনয় করলো,বহু কাকুতিমনতি করলো, কিন্তু ইরাবানের মুখে রা নেই। সে কিছুতেই বলবে না।

    শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে ব্যাঙ বললো, "ঠিক আছে বলবে না তো বলবে না। বয়ে গেল।কিন্তু এভাবে বসে বসে রাত কাটিয়ে দেবে নাকি? চলো ঘুমোতে চলো।"

    ইরাবান এত ক্লান্ত ছিল যে এই কথা ঠেলতে পারলো না।কোনোরকমে খাটের কছে এসে বিছানায় গা ঢেলে দিলো। ভাবলো, আ:, এবার ঘুমোতে হবে।
  • goppee | 131.95.121.132 | ১২ আগস্ট ২০০৭ ০৫:৩১389422
  • কিন্তু ঘুমোতে সে পারলো না।বিছানায় শুয়ে ছটফট করতে লাগলো।এদিকে সে না ঘুমোলে তো ভানুমতীও ব্যাঙের ছদ্মবেশ ছাড়তে পারছে না! মহা মুশকিল।

    রাজপুত্র একবার এপাশ একবার ওপাশ করে।কিছুতেই ওর চোখে ঘুম আসে না।ব্যাঙরূপী যাদুকরী রাজকন্যা চীনাংশুকের বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে মিটমিট করে দেখে,কখন ঘুমে চোখ বুজে আসে
    ইরাবানের।

    মাঝরাত প্রায় নিঘুমে পার হয় দেখে শেষে ভানুমতী নিদ্রা-যাদু প্রয়োগ করে। এবার আর কি করে না ঘুমিয়ে পড়ে জেগে থাকবে ইরাবান?
    ও ঘুমোলেই ছদ্মরূপ ছেড়ে ভানুমতী নিজের রূপ ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।

    এইভাবে দিন যায়,রাত কাটে।চাঁদ ক্ষয় হতে হতে একদিন মিলিয়ে যায়, অমাবস্যার আকাশে তারা ফুটফুট করে। যাদুতে ঘুমে অচেতন ইরাবানের পাশে জেগে বসে থাকে যাদুকরী। জানালা দিয়ে আকাশের ছায়াপথের দিকে চেয়ে চেয়ে তার চোখ জলে ভরে যায়। কতকাল সে নিজের মাকে বাবাকে দেখতে পায় নি!সেই যাদুরাজ্যের রাজপ্রাসাদ, সখাসখীরা, শোভন-উদ্যান,সভাগৃহ-স্বপ্নের মতো মনে পড়ে তার।

    আসে শুক্লপক্ষ। রাজপুত্তুরের ছট-ফটানি বাড়ে। এখন যাদুপ্রয়োগেও ওকে ঘুমপাড়াতে বেশ কষ্ট হয় ভানুর।

    চতুর্থীর রাতে সম্পূর্ন ভেঙে পড়ে ইরাবান। পরদিন যে তার ব্যাঙ বৌকে রাজসভায় গিয়ে আদবকায়দায় পরীক্ষা দিতে হবে!

    এদিন আর না বলে পারলো না ইরাবান। কিন্তু শেষে বললো,"যদি ওরা তোমায় অপমান করে বৌ, তাহলে আমি তক্ষুণি তোমায় নিয়ে এই রাজ্য ছেড়ে চলে যাবো।"

    ব্যাঙ ওকে বলে,"তুমি চিন্তা কোরো না রাজপুত্র। সেসব কিছু হবে না।তুমি রাজপুত্র, তুমি সেজেগুজে আগে একা যাবে। ওরা জিজ্ঞেস করলে বলবে, বৌ পরে আসবে। জানেই সবাই যে মেয়েদের সাজতেগুজতে একটু বেশী সময় লাগে। পরে যখন কড় কাড়াৎ করে শব্দ হবে খুব জোরে, সবাই ভয় পেয়ে যাবে, তখব বোলো,"ও কিছু নয়, আমার ব্যাঙ বৌ এলো কৌটোয় চড়ে।" পারবে তো বলতে?
    রাজপুত্তুর ঘাড় হেলিয়ে বলে, "হ্যাঁ, পারবো।"
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন