এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর  জীবনানন্দ

  • জীবনানন্দ ও সঞ্জয় ভট্টাচার্য: ভূমেন্দ্র গুহ

    I
    বইপত্তর | ২৬ ডিসেম্বর ২০০৮ | ৫৪৩৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Blank | 59.93.244.218 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ০০:১০403936
  • ডাগদার দাদা দু:খু পেও নি। সিঁফোর কমেন্টো দেখে নিও ভাটে, তাতে সব্বাই ডিটো দিয়েচে।
    (এমুন কি তোমার উপর রেগে থেকেও আমি ডিটো দিয়েচি, বল্লে হবে)
  • kanti | 125.20.11.34 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ০৮:০৮403937
  • আমরাও খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি। ডাক্তারী করেও আপনার কবিতার প্রতি এই ভালোবাসা আপনার প্রতি আমাদের ভালোবাসা বাড়িয়ে দিচ্ছে। চালিয়ে যান।
    কান্তি
  • Tim | 117.194.227.57 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ০৯:৩২403938
  • কমেন্ট কল্লে ইন্দোদা লেখা থামিয়ে দেয় তো!
    যাগ্গে, লেখো লেখো। গোগ্রাসে পচ্ছি।
  • shrabani | 124.30.233.102 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ০৯:৩৪403939
  • কেয়াবাত, বহুত খুব! এটা যে এখন টপ টই সেটা কি বলার অপেক্ষা আছে নাকি!
  • r | 198.96.180.245 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ১৬:০৭403940
  • লেখ না। লেখ না। লোকের দিকে তাকাস কেন?
  • I | 59.93.223.234 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ২১:১৩403941
  • লোকের দিকে তাকাব না কেন? এটা কি সেমিনার হল? বক্কা দিতে এসেছি? অবশ্যই লোকের দিকে তাকাব, লোকের কথা শুনব, খিল্লি এবং খিস্তি ইত্যাদিও। আড্ডাখানা বলে কথা।
  • I | 59.93.223.234 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ২১:৪০403942
  • জীবনানন্দ যেন মায়ের আঁচল-ধরা বাচ্চা ছেলে এক, বর্মচর্মহীন ন্যাংটো মানুষ একজন,বল্কলবিহীন, শীতে হি হি করে কাঁপলে অথবা সাংসারিকতা নামের যুদ্ধে ঘাড় ধরে নামিয়ে দেয়া হাড়-হাভাতে পদাতিকের মত হতমান হলে, কষ বেয়ে রক্ত গড়ালে অন্ধ হাতড়ানিতে খুঁজে বেড়ান মা-কে , এই সংসারজঙ্গলে। সঞ্জয় ভট্টাচার্যের মধ্যে তিনি তাঁর নোঙ্গর খুঁজে পেয়েছিলেন একথা বললে বাড়াবাড়ি হবে, নোঙ্গর কি তিনি সত্যি মনেপ্রাণে চেয়েওছেন কখনো,যে তিনি জলে ভাসা পানার মত ঘুর্ণিতে ঘুর্ণিতে এগিয়ে চলেছেন মহানিয়তির খোঁদলে, আঁকড়ে ধরতে চাইছেন আশপাশের ভাঙ্গা কাঠ ও ছিন্ন ফুলদল, আবার একই সঙ্গে তীব্র, তীব্র অহঙ্কারে ছেড়েও দিচ্ছেন সকল গৃহ, সকল সফলতা, বন্ধুদল,সমাজরজ্জু-রক্ষক ও বন্ধনকারী।

    হ্যা, এই তো সেই বৈপরীত্য, যা ছিল জীবনানন্দ দাশ নামের একজন মানুষ ও কবির সনাক্তকরণ চিণ্‌হ।

    তবু, এরই মধ্যে বেঁচে থাকার টান প্রবল হয়ে উঠলে তিনি যাঁদের ওপর নির্ভর করতে চাইতেন, অসহায় , মায়ের আঁচল-ধরা শিশুর মত, সঞ্জয় ভট্টাচার্য তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য।
  • I | 59.93.223.234 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:০৩403943
  • আবার ভূমেন্দ্র গুহর দিকে হাত বাড়াতে হয় তাহলে :

    " আর একবার জীবনানন্দকে সঞ্জয়বাবুর ঘরে আসতে দেখেছিলুম। ট্রামের নীচে পড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হওয়ার কয়েকদিন আগে। সেদিন তিনি এসেছেন হুটহাট করে, দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়েই কথা বলেছেন, বসেন নি, আর বেরিয়েও গিয়েছেন তেমনই তাড়াতাড়ি।
    ঢুকে পড়েই কোন ভূমিকা ছাড়াই সোজাসুজি কথাটা পাড়লেন, চতুরঙ্গ অফিসে গিয়েছিলুম। শুনেছিলুম, কবির সাহেব আছেন। না, নেই। আতোয়ারও নেই। দেখা হল না।
    জীবনানন্দর হঠাৎ আগমনে ব্যস্ত-সন্ত্রস্ত হয়ে উঠে সঞ্জয়বাবু বলেছিলেন, আহা, বসুন তো আগে, তারপর শুনব কী এমন ঘটল যে, কবির সাহেবের কাছে এই সকালবেলা ছুতে আসতে হল।
    না, আমাকে যেতে হবে তাড়াতাড়ি। বসব না। ভাড়াটে মহিলাটি এই সাত-সকালেই যেরকম কুরুক্ষেত্র বাধিয়ে তুলেছেন, আর তো পারা যায় না, ওঁকে তুলে দিতে না পারলে তো আমাকেই রাস্তায় দাঁড়াতে হবে!
    বোঝা গেল, জীবনানন্দর এত দিনে বিখ্যাত হয়ে ওঠা সন্দেহজনক স্বভাবচরিত্তিরের ভাড়াতে মহিলাটি আজ সকালবেলাতেই একটু বাড়াবাড়ি রকমের ঝঞ্ঝাট পাকিয়ে তুলেছেন, তিষ্ঠোতে না পেরে জীবনানন্দ ঝটিতি-সমাধানের আশায় চলে এসেছেন হুমায়ুন কবির সাহেবের কাছে।
    সঞ্জয়বাবু হেসে বললেন, আপনি যেমন বললেন, তেমনভাবে চাইলেই কি আর সঙ্গে সঙ্গে কোন ভাড়াটে তুলে দেওয়া যায় না কি? কেউ পারে?
    কেন, কবির সাহেবের তো রাজনৈতিক ক্ষমতা অনেক। তিনি পারেন না? তারাশঙ্কর পারেন না? আপনাকে কত বার যে ওঁদের বলবার জন্য লিখলুম !
    সঞ্জয়বাবু বললেন, তা লিখেছেন। ওঁদের কি আপনার-আমার এই রকম সব পেটি সমস্যা নিয়ে মাথা ব্যথা করার সময় আছে ! কত সব বড়ো বড়ো কাজ হাতে থাকে ওঁদের!
    তা-ই? তাহলে বলেন নি? বলেন নি যখন, আর এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কী হবে?

    বলেই জীবনানন্দ রাগে, না হতাশায়, না যাঁকে বন্ধু বলে জানা আছে , তাঁর সাক্ষাৎ-স্বীকৃত অবহেলায় মর্মাহত হয়ে, কে বলবে, দ্রুত বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে।'
  • I | 59.93.223.234 | ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:৩৭403944
  • "সঞ্জয়বাবু আগে থেকেই কোনো কারণে রেগে ছিলেন, আঁচটা তখনও তেমন পড়ে নি। আমি একতলা থেকে গ্যালি প্রুফ কুড়িয়ে এনে বসতে যাব, হঠাৎ বললেন, কী গো, তোমার লেখাটেখা কই। তুমি কি প্রুফ দেখতেই আস শুধু এখানে, তা হলে এস না আর। জখন তুমি আসতে না, তখনও প্রুফ দেখা হত, পূর্বাশা বেরোত-
    এই সহসা বিপৎপাতে আমি খুবই ঘাবড়ে গেলুম। কী যে বলব ভাবতে ভাবতে ক্লাশের পড়াশোনার চাপের কথাটা বলাই সমীচীন হবে বোধ করে বললুম, ক্লাশের পড়াশোনার এত চাপ, সময় করাই শক্ত-
    উনি ঠাট্টার মতো করে বললেন, ডিম না ফুটতেই এত, ফুটলে কী হবে !
    আমি নির্বাক থাকাটাই যুক্তিযুক্ত বিবেচনা করেছিলুম।
    আমার উপর যতটা কর্কশ হতে পারা যায়, তা হওয়ার চেষ্টা করে তিনি বললেন, তোমাকে আমার আগেই সাবধান করে দেওয়া উচিত ছিল যে, ডাক্তারি করা অথবা পড়া আর কবিতা নিয়ে থাকাটা তেল-জলের মত, মেলানো যায় না। যে কোনো একটা ছাড়ো।
    আমি নিজেকে সাহস দেবার মত করে বলেছিলুম, কেন, দুটৈ বা এক সঙ্গে হবে না কেন, কেউ যদি চায়, সেরকম ভাবে তৈরী হয় ?
    তিনি খটখটে শুকনো গলায় বললেন, সোজা উত্তরটা হল, ডাক্তারিতে সহজ সিদ্ধি, টাকাকড়ি খ্যাতি সচ্ছলতা; চাইবারও দরকার হয় না, ভোগ সুখ সরল জীবনযাত্রা; তোমাদের মাস্টারমশাই উমেশ চক্রবর্তীকে দ্যাখো, এখনও তো বন্ধু আমার , কী ছিল কী হয়েছে, টাকা-কড়ি একটা প্রধান ব্যাপার; আর কবিতা নিয়ে থাকাটার মানে কী, জীবনানন্দকে দেখেই বুঝতে পারছ!
    আমি প্রায় মরিয়ার মত বললুম, যখন বঙ্গবাসীতে পড়তুম, তখন কিন্তু জগদীশ ভট্টাচার্য আমাকে বলেছিলেন, তুই কি বনফুল হবি না-কি, বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছিস, আবার এখানে-সেখানে কবিতা লিখছিস!
    যেন আগুনে ঘি পড়ল। সঞ্জয়বাবুর চোখ ধক করে জ্বলে উঠল। তিনি তাঁর তক্তপোষের উপর বসে থেকে ঘষে ঘষে এগিয়ে এলেন একেবারে বিছানার কিনারে, সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে সোজাসুজি আমার চোখের ডিমদুটির একেবারে মর্মস্থানে প্রখর তাকিয়ে থেকে কেটে-কেটে বললেন, তুমি খুব আ-হ্লা-দি-ত বোধ করেছিলে, আশা করি !
    এর চেয়ে কঠিন গঞ্জনার ভাষা আর হয় না। তাঁর সত্য ভাষণটা তিনি যথেষ্ট গুরুভারে বলে দিতে পেরেছেন অনুভব করে তৃপ্ত হলেন হয়তো। যেমন ঘষে ঘষে সামনে এগিয়ে এসেছিলেন, তেমনই ঘষে ঘষে আবার পেছিয়ে গিয়ে যথাস্থানে আসীন হলেন তিনি। তাঁর চোখ আমাকে গেঁথে রাখল সর্ব ক্ষণ।
    আমারও কেমন একটা অক্ষমের রাগ চাগিয়ে উঠল। হঠাৎ উঠে পড়ে প্রুফগুলি গোছাতে লেগে গেলুম। তার পর টেবিলে সেগুলি যত্ন করে কাগজ-চাপা দিয়ে সাজিয়ে রাখলুম। তার পর বললুম, আমি তা হলে আসি।
    উনি নির্বিকার বললেন, এসো ।'
  • Ishan | 12.217.27.213 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ০৮:২৭403946
  • একটা ছোটো ফুট কাটি।লেখা নিয়ে নয়, লেখাটা হেবি হচ্ছে, ইন্দোর লেখা যেমন হয়। ফুট কাটা টা ভূমেন্দ্র গুহর লেখা নিয়ে।

    ভূমেন্দ্র গুহর বইটা আমি পড়িনি। শুধু ইন্দোর এই কটা উদ্ধৃতি বাদ দিলে। শুধু এইটুকুর ভিত্তিতে এই কথাটা বলা যায় কিনা জানিনা, তবে, ওনার এই শেষদুটু উদ্ধৃতি পড়ে মনে হচ্ছেন, ঠিক যেন শঙ্খ ঘোষ লিখছেন।

    অন্য কারো কি মনে হচ্ছে?
  • nyara | 64.105.168.210 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ০৮:৪৩403947
  • একেবারেই নয়। শঙ্খবাবু বোধহয় 'এই সহসা বিপৎপাতে আমি খুবই ঘাবড়ে গেলাম' বা 'আমি প্রায় মরিয়ার মতন বললুম' ধরণের কলোকিয়াল বাংলা খুব ব্যক্তিগত প্রবন্ধেও লিখবেন বলে মনে হয় না। বিশেষত: 'ঘাবড়ে' বা 'মরিয়া'র মতন শব্দ।
  • Ishan | 12.217.27.213 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ০৯:২৩403948
  • ঐ গুলো না। এই লাইনগুলো:

    ""বলেই জীবনানন্দ রাগে, না হতাশায়, না যাঁকে বন্ধু বলে জানা আছে, তাঁর সাক্ষাৎ-স্বীকৃত অবহেলায় মর্মাহত হয়ে, কে বলবে, দ্রুত বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে।''

    বা এইটা: "তাঁর চোখ আমাকে গেঁথে রাখল সর্বক্ষণ'।
  • AB | 24.17.90.79 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ১১:১১403949
  • অনেকদিন ধরে একটা প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে...

    এই ইন্দ্র-ই কি "নিহত অশ্বের...' লেখক?

    উটকো প্রশ্নের জন্য আগাম মাপ চেয়ে রাখলাম... দরকার মনে হলে ignore করবেন ...
  • d | 203.143.184.11 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ১১:২৩403950
  • হ্যাঁ। এই সেই শক্তিশালী লেখক, যে এখন কলমের বদলে ইঞ্জেকশান নিয়ে বেশী সময় কাটায়।

    আপনি গুরু-৬ ও গুরু-৮ এ ইন্ডো'র আরো দুখানা লেখা পড়ে দেখতে পারেন।
  • Arijit | 61.95.144.123 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ১১:২৯403951
  • রোগীর শরীলে ইঞ্জেকশন দিয়া ল্যাখে। কি অধ:পতন।
  • siki | 122.160.41.29 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ১৫:৫৩403952
  • ইন্দোদাদাই কি তাহলে ইঞ্জেকশন দিয়ে আমীর খানের শরীলে ...??
  • AB | 135.214.150.104 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ ২১:৫৬403953
  • ধন্যবাদ d. হ্যাঁ গুরু-৬ এর লেখাটা পড়েই চিন্তাটা প্রথম এসেছিল, আর ৮-এর লেখাটা আজই পড়ব

    ইন্দ্র - কি আর বলব... আপনার জয় হক
  • I | 59.93.195.242 | ১৬ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:৩৫403954
  • জীবনানন্দের ছোট বোন সুচরিতা দাশের বেশ আপনজন ছিলেন ভূমেন্দ্র গুহ,ভূমেন্দ্র সুচরিতাকে "দিদি' বলে ডাকতেন । সেই গোলমেলে দিনে পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী আড্ডায় বসার কথা ছিল দুজনের। কিন্তু ভূমেন্দ্রর মুখেচোখে আর যা-ই হোক, আড্ডার মেজাজ দেখতে না পেয়ে সুচরিতা চেপে ধরলেন; ভূমেন্দ্র একরকম বাধ্য হয়েই সব খুলে বললেন।
    এর পরের দৃশ্যে দিদির পেছন পেছন ভূমেন্দ্র গুহ গিয়ে হাজির হচ্ছেন জীবনানন্দের বাড়িতে, গন্তব্য ছিল যদিও গড়িয়াহাটের শাড়ির এবং খাওয়াদাওয়া-র দোকান, যথাক্রমে। বাকিটা ভূমেনবাবুর কাছ থেকে শুনুন :

    "জীবনানন্দ দিদিকে দেখে একটু অবাক হলেন মনে হল, বললেন, কী হল আবার, হঠাৎ যে চলে এলি?
    দিদি বললেন, না, এমনিই-
    জীবনানন্দ দেয়ালে ঝোলানো গোল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরিপাটি করে চুল আঁচড়াতে লাগলেন। জীবনানন্দর চুল আঁচড়ানো নিয়ে একটা ছোট্ট বাতিক আছে; তালুর পিছনের দিকের চুল পাতলা হয়ে গিয়ে ছোট টাক দেখা দেবে-দেবে করছে তাঁর, আর জীবনানন্দ সেটিকে প্রতিরোধ করবার জন্য নানারকম কবিরাজি তেল-টেল তো লাগাচ্ছেনই, তদুপরি চুল আঁচড়ে সামনের চুল পিছন দিকে এমনভাবে ঠেলে দেবার প্রক্রিয়াপ্রকরণ আয়ত্ত করার চেষ্টা করছেন, যাতে শিশু টাকটিকে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য করা যায়। আমাকে এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সহসা আবিষ্কার করতে পেরে তিনি যেন প্রায় বর্তে গেলেন, চুলটুল আঁচড়ানো শেষ করে বললেন আমাকে, দ্যাখো তো , ভূমেন, পিছনে দাঁড়িয়ে দ্যাখো, সব ঠিক আছে তো -
    আমি একটুখানি এগিয়ে গেলুম; যত্ন করে যে দেখছি, তা তাঁকে জানতে দিলুম; বললুম,ঠিকই তো আছে-
    দিদি হঠাৎ বলে বসলেন, আচ্ছা দাদা, ভূমেনের লেখাটেখা তো তুমি দেখেছ, ও ভালো লিখবে না?
    জীবনানন্দ দিদির এই পারম্পর্যহীন কথাটায় কেমন ভড়কে গেলেন যেন। আমিও। আমি ভয় পেলুম, দিদি একটা ঘোরালো অবস্থা ঘনিয়ে তুলছেন যেন।
    জীবনানন্দ বললেন, কেন, ও-কথা উঠছে কেন?
    দিদি বেশ তীক্ষ্ণ কণ্ঠেই বললেন, সঞ্জয়বাবু আজ ওকে যা-নয়-তাই বলে খুব গালমন্দ করেছেন। বলেছেন, ডাক্তারি পড়া অথবা কবিতা লেখা-যে-কোনো একটা কাজ ও করুক। কেন, ডাক্তারি পড়লে ভালো কবিতা লেখা যাবে না কেন?
    জীবনানন্দ দিদিকে সান্তনা দেবার মত করে বললেন, না, না, তা কেন, যে যার মত করে কাজকর্ম করবে, আবার কবিতাও লিখবে, যদি লিখতে পারে। প্রেমেন তো সিনেমাও করেছে আবার কত বিখ্যাত কবিতাও লিখেছে; লিখছে না?
    প্রেমেন-এর কথা তুললেন বলেই হয়তো দিদি জীবনানন্দর মতামতটা নির্ভেজাল বলে ধরতে পারলেন না। বললেন, না, তুমি কিন্তু বানিয়ে বলছো, ঠিক মনের কথা বলছো না-
    আমি তো মহা জাঁতাকলের মধ্যে পড়ে গেলুম দেখছি। দিদিকে পিছন থেকে হাত ধরে টেনে বললুম, তুমি কিন্তু ওঁর দেরি করিয়ে দিচ্ছ, ওঁকে বেরোতে হবে না? তোমারও তো দেরি হচ্ছে, কোথায় যাবে বলেছিলে-
    দিদি আমার এই মোটা দাগের ইঙ্গিতটা পাত্তাই দিলেন না। হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললেন, নতুন লিখছে, কত টানাপোড়েনে মানুষ হচ্ছে, ওকে কি এইরকম নিরুৎসাহিত করা ঠিক, না উচিত, বিশেষ করে সঞ্জয়বাবুর মত এত বড়ো একজন লেখকের পক্ষে; ভূমেন ওঁকে কী রকম শ্রদ্ধা-ভক্তি করে, জানি তো ! ডাক্তারি করলে টাকা-পয়সা হয়, ভোগ-সুখ-সচ্ছলতা এসে পড়ে, এইসব জিনিষ কাব্যচর্চার অনুকূল নয়, এসব কি তুমি ঠিক বলে ভাবো-
    জীবনানন্দর সাজপোশাক হয়ে গিয়েছিল। হয়তো তিনি সুবোধবাবুর জন্য আর একটু সময় অপেক্ষা করতেন, কিন্তু দিদির এই সব উটকো কথাবার্তার পাল্লায় পড়ে গিয়ে তা আর করলেন না তিনি,বেরিয়ে যেতে গিয়ে দাঁড়ালেন এক বার দিদির পাশ কাটিয়ে গিয়ে দরজার কাছে, বললেন, দ্যাখ খুকী, ভূমেন ছেলেমানুষ, ওর মুখের ওপর একথা বলাতে তুই আমাকে বাধ্য করাস নি যে, ভালো লিখতে হলে, অন্তত এখন পর্যন্ত এ-দেশে, বেঁচে থাকবার সহজ সাফল্যগুলো সব ছাড়তে শিখতে হয়, অনেকটা কাপালিকের মত হয়ে যেতে হয় প্রায়। সামনে কিছু নেই, কিছু থাকবার আশাও নেই, কিন্তু তুই তবু থেকে যাচ্ছিস অথবা থাকবার জন্য আপ্রাণ করছিস।

    জীবনানন্দ আর দাঁড়ালেন না। এমনিতেই দ্রুত পদক্ষেপে হাঁটেন তিনি, হন-হন করে বেরিয়ে গেলেন বাড়ি থেকে।'

  • Ishan | 12.163.39.254 | ১৬ জানুয়ারি ২০০৯ ২৩:১৬403955
  • গপ্পোটাতে কি আরও ক্লাইম্যাক্স বাকি আছে? থাকলে তাড়াতাড়ি লেখ। :)
  • I | 59.93.213.247 | ১৭ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:১১403957
  • আপাতত: এখানেই শেষ। পরের পর্ব পরে।
  • I | 59.93.207.121 | ২৫ জানুয়ারি ২০০৯ ১৪:৪৮403958
  • পর্বান্তর
    --------

    "সারাদিন মাল্যবানের মনেও ছিল না; কিন্তু রাতের বেলা বিছানায় শুয়ে অনেক কথার মধ্যে মনে হল বেয়াল্লিশ বছর আগে ঠিক এইদিন সে জন্মেছিল-বিশে অঘ্রান আজ।'

    মাল্যবান উপন্যাসের প্রথম লাইন। কিন্তু এটা কি কোনো ডায়েরির পাতার প্রথম এϾট্র হতে পারে না- অনেক রাস্তা ঘুরে এসে, অনেক চাকরির উমেদারি করে , গ্যাসলাইটের আলোয় ব্রায়ার পাইপ পরিষ্কার -করা লোল নিগ্রোর মুখ দেখে হঠকারিতায় বাড়ি ফেরা একজন মানুষ কি এভাবে লিখে উঠতে পারেন না ডায়েরির প্রথম পাতায়-"সারাদিন আমার মনেও ছিল না; কিন্তু রাতের বেলা বিছানায় শুয়ে অনেক কথার মধ্যে মনে হল উনপঞ্চাশ বছর আগে ঠিক এইদিন আমি জন্মেছিলাম-৬ই ফাল্গুন আজ ।'

    ডায়েরি। উপন্যাস। জীবনানন্দের ক্ষেত্রে এই দুই আলাদা আলাদা এনটিটি কখনো কখনো- কিম্বা কখনো কখনো-ই বা কেন-সবক্ষেত্রেই কি বিপজ্জনকভাবে এসে মিলে যায় না এক কলকাতার গলি, এক বরিশালের কালিজিরা- ধানশালি- রূপশালি খেতে? আমরা যারা জীবনানন্দের গদ্য-উপন্যাস পড়েছি, এবং কবিতা তো বটেই-তাদের প্রায়শই কি মনে হয় না একথা?

    অন্যে পরে কি কথা আর, জীবনানন্দর গদ্য সমগ্রের সম্পাদক (প্রতিক্ষণ প্রকাশন) দেবেশ রায়ের ভাবখানা কিরকম হয়েছিল "কারুবাসনা' সম্পাদনা করতে বসে, দেখুন : জীবনানন্দ নিজেই এ রচনাকে নভেল বলে চিণ্‌হিত করে না গেলে মনে হতে পারত যে তিনি সব আগল ভেঙেই নিজের জীবনের কোনো একসময়ের ডায়েরি রেখে গেছেন।' এবং এই ডায়েরিধর্মই জীবনানন্দের নভেলসমূহের ফর্ম, জলপাইহাটি বাদে।
  • I | 59.93.200.208 | ২৫ জানুয়ারি ২০০৯ ১৮:০৪403959
  • কিন্তু জীবনানন্দের ডায়েরি? কোথায় সে? তাকে কি আমরা পড়েছি কখনো? দেখেছি তার মুখ সূর্যের আলোয়, মাটি-শীত-সরীসৃপের মমতা-ঘৃণায় লেখা সেসব দিনমালা?

    না; প্রকাশিত হয়নি কোথাও জীবনানন্দের ডায়েরি। জীবনানন্দ দাশের যাবতীয় অপ্রকাশিত পান্ডুলিপির একমাত্র আইনি সত্বাধিকারী প্রতিক্ষণ-এর প্রকাশক জানাচ্ছেন:
    "জীবনানন্দের দিনপঞ্জি এই প্রকাশের আওতার বাইরে থাকবে। কারণ, তাঁর ভ্রাতা ও ভ্রাতৃবধূ এবং তাঁর কন্যা আমাদের সেইরকম অনুরোধই করেছিলেন।'

    তাহলে? কোথায় পেলাম আমরা জীবনানন্দের ঝুল-কালিমাখা ভাঁড়ারের, অন্দরের চাবি, যে বলতে পারি-বিপজ্জনক সাহসেই- জীবনানন্দের ডায়েরি আর জীবনানন্দের গল্প/উপন্যাস আসলে ভিন্ন বহিরঙ্গের দুই যমজ, জন্ম যাদের একই অন্ধকার জরায়ুতে! এ কি কেবলি আমাদের উইশফুল থিংকিং, জীবনানন্দ উচ্চারিত হতেই আমরা যেহেতু মগজে ভরে তুলি এক জীবন মেলানকোলিয়া, ক্লান্তি আর ডেথ উইশ!

    আর দেবেশ রায়, সেই দেবেশ রায় এবার বলেন : "... ইতিমধ্যেই দেখছি, তাঁর গল্প-উপন্যাসগুলি থেকে দীর্ঘ উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁর জীবনের তথ্যের অভাব পূরণ করে নেয়া শুরু হয়েছে। এ লক্ষণ খুব বিপজ্জনক।'
    তাহলে, হায়, বিপন্ন পাঠক আমরা কোথায় যাই !

    আবার একটু ভূমেন্দ্র-চর্চা করা যাক : "তিনি তাঁর জীবনের উপান্তে পৌঁছে অনেককে,অন্ততপক্ষে সঞ্জয় ভট্টাচার্যকে বলেছেন, একটু সুযোগ-সুবিধে যোগাড় করে তুলতে পারলেই,শরীর-স্বাস্থ্য-পরিবেশ আর একটু জুতসই হলেই তিনি আত্মজীবনী লিখবেন; যেন তাঁর কবিতায়-গল্পে-উপন্যাসে লিখতে আর বাকি রেখেছেন কিছু! আত্মজীবনী নয়, কিন্তু আত্মজৈবনিক তো তাঁর সমগ্র সাহিত্য।'

    এতক্ষণে একটু যেন ধাতস্থ হই আমরা, গোলা পাঠকেরা।
  • I | 59.93.246.230 | ২৫ জানুয়ারি ২০০৯ ১৯:০০403960
  • তা-ও খুঁতখুঁতুনি থেকে যায়।
    কি ছিল জীবনানন্দের সেই দিনপঞ্জিতে, কি এমন বিস্ফোরক কথামালা, যে জীবনানন্দের ভাই-ভ্রাতৃবধূ-মেয়েকে অনুরোধ করতে হয় তাদের অপ্রকাশিত রাখতে ! প্রকাশ হলে হয়তো জীবনানন্দ -চর্চার সম্পূর্ণ আলাদা দিক খুলে যেত, নতুন আলোয় (? আঁধারে) খুঁজে পেতাম আমরা বাংলাভাষার সবচেয়ে দুরধিগম্য কবিকে।
    হয়তো অন্য কিছুও হতে পারত। একান্ত ব্যক্তিগত কিছু এϾট্র, তাদের খুঁড়ে তুললেই বেরিয়ে আসতে পারত প্যান্ডোরার বাক্সের ঢাকনা-খোলা রসাতলবাসিনী নাগিনীকন্যারা, তাদের বিষনি:শ্বাসে বিপর্যস্ত হয়ে যেতেন জীবনানন্দের বংশধরেরাই শুধু নয়, তাঁর সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যের দিগগজেরা; ম্লান হয়ে উঠতেন জীবনানন্দ স্বয়ং।

    কিন্তু একেবারেই অপ্রকাশিত কি সেইসব দিনলিপি? জীবনানন্দের জীবনচরিত-লেখক প্রভাত কুমার দাস তো উদ্ধার করেছেন কিছু এϾট্র। আর আমাদের আড্ডা যে বইকে ঘিরে, ভূমেন্দ্র গুহ-র সেই বইতেই রয়েছে বেশ কিছু এϾট্র; একথা ভুললে চলবে না, জীবনানন্দ পরিবারের বাইরে একমাত্র ভূমেন্দ্রবাবুরই সুযোগ হয়েছিল সেই ডায়েরি নাড়াচাড়া করবার, এছাড়াও জীবনানন্দের জীবনের শেষ কয়েক বছর তাঁকে কাছে থেকে দেখেছিলেন তিনি, জেনেছিলেন তাঁর সৃষ্টিপ্রণালীর, তাঁর জীবনযাপনের সুলুকসন্ধান। অতএব, সেসব এϾট্রর তথ্যগত সত্যতা যাচাই করার সুযোগ তাঁর ছিলই, নিরপেক্ষভাবে ছিল, যদি অবশ্য তিনি নিরপেক্ষ থেকে থাকতে পারেন, থাকা সম্ভব হয়।

    আর, বিস্ফোরণ কি কম ঘটিয়েছেন তিনি? তথ্যে ও তত্বে-এই বইয়ে কিম্বা "সফলতা-নিষ্ফলতা' নামের উপন্যাসের সম্পাদনাকালে-ছোট বড়ো বেশ কিছু শব্দবাজি আমাদের উপহার দিয়েছেন তিনি, ভূমেন্দ্র গুহ। কখনো কখনো পার্টিজান লাগতে পারে তাঁর কিছু মন্তব্য-জীবনানন্দ-জায়া লাবণ্য দাশ সম্বন্ধে, কন্যা মঞ্জুশ্রী অথবা পুত্র সমরানন্দ সম্বন্ধে। সফলতা-নিষ্ফলতা সম্বন্ধে পরে আসছি।
  • I | 59.93.246.230 | ২৫ জানুয়ারি ২০০৯ ২০:১৫403961
  • কেমন ছিল সেই ডায়েরি? কেমন ছিলেন মানুষ জীবনানন্দ? একলা ঘরের আলোয়-ছায়ায় একলা নিজের কাছে ভাঙা আয়নায়-অভ্রে কি বলতেন তিনি?

    আমরা অনেকেই তো শুনেছি, পড়েছি - জীবনানন্দ দাশ একজন অত্যন্ত লাজুক, ই®¾ট্রাভার্ট, সেনসিটিভ মানুষের নাম। আবার এর বিপরীত সাক্ষ্যও আছে; আত্মীয় -বন্ধুরা বলেছেন তিনি ছিলেন "হাস্যমুখর,আন্তরিক ও সরস।...তাঁর হাওড়া কলেজের সহকর্মীরাও প্রসন্ন সদালাপী সুজন ও নিরহংকার বলে তাঁকে মনে করেছেন।'(ক্ষেত্র গুপ্ত, জীবনানন্দ দাশের কাব্যসমগ্র-র ভূমিকা )

    মানুষ যেরকম হয়। আকাটা পাথরখন্ড যেরকম, নানান কোণে ও ফ্যাসেটে আলো পড়লে নানান রং-বর্ণালী ঝিকিয়ে ওঠে।
    অথবা ওঠে না। আণবিক বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া, উল্কায় ধসে যাওয়া গর্ত যেমন। লুনার গহ্বর যেমন, মর্ত্যমাটি থেকে চরকা-কাটা বুড়ীর রোম্যান্টিসিজম;কাছে গেলেই নিষ্করুণ অন্ধকার।
  • I | 59.93.246.230 | ২৫ জানুয়ারি ২০০৯ ২০:৪৬403962
  • এই লেখা শুরুর দিকে যেমন বলা হয়েছে,- সামাজিকতায় অরাজী, নিজের কোণে গুটিয়ে থাকা নিভৃত মানুষ, ক্লিন্টন সীলি-র ভাষায় painfully private person-তেমনিই হয়তো মোটের ওপর ছিলেন জীবনানন্দ। আমরা গোদাভাবে যেরকম জানি।
    বুদ্ধদেব বসুর সাক্ষ্য নেওয়া যাক :

    "কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোনো ব্যক্তিগত সম্বন্ধ আমি স্থাপন করতে পারিনি, অন্য কেউ পেরেছিলেন বলেও জানিনা।শুধু তাই নয়, কোনো সাহিত্যিক আলোচনার মধ্যেও তাঁকে টানতে পারিনি আমরা, "কল্লোলে'র, "পরিচয়ে'র, "কবিতা'র আড্ডা তিনি সযত্নে এড়িয়ে চলেছেন। এবং তাঁর সঙ্গে..... আমার দেখাশোনাও হয়েছে অবচ্ছিন্নভাবে, অনেক মাস বা দু-এক বছর বাদ দিয়ে-দিয়ে , খুব অল্প সময়ের জন্য। চিঠি লিখতেন সংক্ষেপে, শুধু কাজের কথা। যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে, সম্পূর্ণভাবে নিজের মধ্যে গুটোনো, তাঁর ভাষায় বলতে গেলে তাঁর পুরোটাই যেন "স্বাভাবিক', "সামাজিক' প্রায় কিছুই নেই-যেন কবিতা ছাড়া অন্য সব প্রকাশের দরজায় তিনি স্থায়ীভাবে খিল এঁটে রেখেছেন, যাতে তাঁর কবিতা আরো গাঢ় হতে পারে....যতদূর মনে পড়ে, কল্লোলের সময় আমি দু-বার মাত্র তাঁকে দেখেছিলাম তাঁকে- তার বেশী না। এক বিকেলে অচিন্ত্য আর আমি উৎসাহের ঝোঁকে হানা দিয়েছিলাম তাঁর প্রেসিডেন্সি বোর্ডিঙের তেতলা বা চারতলায়-তিনি ঘরে ছিলেন, আমরা চেয়েছিলাম তাঁকে নিয়ে কোথাও বেরোবো, কিন্তু সেই ইচ্ছেটি পূরণ হয়নি আমাদের। আর একদিন- অনেকে মিলে যাচ্ছি, কল্লোল দলের প্রিয় রেস্তোরাঁ বৌবাজারের মোড়ে ইন্দো-বর্মায়, আমাদের সামনে দেখা গেলো জীবনানন্দকে-আমরা, তাঁকে চমকে দিয়ে এবং সম্ভবত: বিব্রত করে , তাঁকে পিছন থেকে ধরে ফেলেছিলাম। তাঁরও গন্তব্য ছিল ইন্দো-বর্মা, কিন্তু তিনি বসলেন আলাদা টেবিলে, আহারের পরেই অন্তর্‌হিত হলেন'।
  • I | 59.93.218.217 | ২৭ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:৩৭403963
  • ডায়েরি
    -------
    ডায়েরিগুলি সবই লেখা এক্সারসাইজ খাতায়, দু-একটা শুধু বোর্ডবাঁধাই, বাদবাকি সবই রোগাপটকা, ল্যাগবেগে রুলটানা, যখন যা হাতের কাছে পেতেন ( যেরকম রুগ্ন এক্সারসাইজ খাতায় আমরাও লিখতাম ছোটবেলায়, বঙ্গলিপি নাম ছিল, এখন আর পাওয়া যায় কি?)
    ডায়েরির মোট সংখ্যা ৫৬, তাদের ভাষা মূলত: ইংরেজি। মাঝে মাঝে কখনো বাংলায় লিখেছেন বটে, কখনো আবার দুর্বোধ্য বরিশাইল্যা বাংলায়, কিন্তু সে কেবল ব্যতিক্রম। "লিটারারি নোটস' নাম দিয়েছিলেন তাদের , জীবনানন্দ।

    এই অবধি পড়েই বেশ লোভ জাগতে পারে, সম্ভাবনায় গর্ভবতী হয়ে ওঠে সময়। কিন্তু সে আশায় জল ঢেলে ভূমেন্দ্র গুহ জানাচ্ছেন,লিটারারি নোটস নাম দিলেও সে নামের প্রতি সুবিচার করেন নি জীবনানন্দ; শুরুর দিকে যদিও সাহিত্যপাঠ-পঠনের ক্রিয়ার কথা আছে, কী কবিতা আর কী নয়, তা নিয়ে আলোচনা আছে, বড়ো লেখক কিভাবে হয়ে উঠতে হয়, সেসব কথা আছে। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে, সময় যত ক্রমেই ইতর হয়ে এসেছে, জীবনানন্দের ডায়েরিও ততই লিটারারি হওয়ার দায় ঝেড়ে ফেলে তেল-নুন-লকড়ির হিসেবখাতায় বদলে গেছে। লিটারারি নোটসে ঢুকেছে দিনের কাজকর্মের রুটিন, মাসিক আয়ব্যয়ের হিসেব, ক্ষমতাধর বড়লোকদের (সম্ভাব্য চাকরিদাতা) নাম-ঠিকানা, চাকরির দরখাস্তের ড্রাফট, চাকরির বিজ্ঞাপনের ক্লিপিং, খবরের কাগজ থেকে কেটে রাখা; আর এসবের মাঝে অকস্মাৎ এসে উঁকি দিয়ে গেছে পাঁচিলের ফোকড়ে চারাবটের মত, ভোজবাড়িতে রবাহুত হাভাতে কাঙালীর ছা'র মত কয়েকটা কবিতার লাইন। কখনো বা প্রবন্ধের খসড়া,প্রবন্ধ লিখলে কয়েকটা টাকা হাতে আসে।
  • I | 59.93.218.217 | ২৭ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:৪৯403964
  • আবার একটু ভূমেন্দ্র গুহ তুলে দেওয়া যাক, এটাই বেশ সহজ কাজ মনে হচ্ছে :
    "যত দিন গেছে, জীবনযাপনপ্রক্রিয়া যত জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে, দীর্ঘস্থায়ী কর্মহীনতার কারণে সপরিবার দিনাতিপাত যত পরমুখাপেক্ষী হয়ে উঠেছে, সমানুপাতিকভাবে প্রেমের ও বিবাহের জীবন হয়ে উঠেছে অসমঞ্জস ও পরিণতিবিহীন, সাহিত্‌য়্‌সাধনার ক্ষেত্রে যতই হয়ে পড়েছেন মোটামুটিভাবে অগৃহীত অস্বীকৃত ও বিদ্রূপতাড়িত, ততই তিনি তাঁর ডায়েরিতে তাঁর কোরা অপরিমার্জিত দিনাতিপাতের ঘটনাগুলি-অভিজ্ঞতাগুলি-তুলে রেখেছেন কড়া সাদা-কালো রঙে, প্রায়শই তার বেশি কিছু নয়, প্রতিটি দিনের প্রতিটি রাতের, ঈর্ষণীয় খুঁটিনাটিসমেত। নিজেকে বিচারকের নৈর্ব্যক্তিকতায় সমালোচনা করতে ছাড়েন নি, পত্নীকে না, প্রেমিকাকে না, পিতামাতাকে না, ভ্রাতাকে না, ভগ্নীকে না, পরিবারের লোকজনদের না, কর্মক্ষেত্রের সহকর্মীদের না;....'
  • I | 59.93.217.134 | ২৮ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:০১403965
  • (ভূমেন্দ্র গুহ চলছে)
    ".... টিউশনি তো করেছেন সারা জীবনভর প্রায়, দরখাস্ত করে, ইন্টারভিউ দিয়ে, ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের শংসাপত্র হাতে নিয়ে; নিজের ছাত্র-পড়ানোর যোগ্যতা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দু-চারটে অসত্য কথাও কী বলেন নি চাকরিতে মনোনীত হতে? এম. সেন-এর কোম্পানিতে ছাত্রপাঠ্য মানে-বই লিখেছেন রাতের পর রাত জেগে নির্মীয়মাণ উপন্যাসটিকে পাশে সরিয়ে রেখে; বড়োলোকের প্রাইভেট সেক্রেটারি'র চাকরিতে মনোনীত হবার জন্য চেষ্টার কসুর করেন নি, ইংরেজীর ছাত্র হলেও যে অর্থনীতি বিষয়টা কম জানেন না, বোঝাতে চেয়েছেন; কর্পোরেশনের বাড়িতে ঘুরে বেড়িয়েছেন যদি একটা ভেকান্সির সন্ধান পান সুভাষ বোসকে গিয়ে বলবেন, সেই ফাঁকটায় যদি তাঁকে গলিয়ে দিতে পারেন; কালীঘাট-পলতা লাইট রেলওয়ের টিকিটচেকার অথবা গার্ড'এর চাকরির ধান্দা করেছেন; ফজলুল হকের পেছন পেছন ঘোরাঘুরি করেছেন যদি কোনও একটা কাজ তিনি জুটিয়ে দিতে পারেন, তাঁরই তো সরকার আর তিনি তো বরিশালেরই মানুষ; থিয়েটার-পাড়ায় ঘোরাঘুরি করেছেন পিতার সঙ্গে স্বল্পপরিচিত কোনো কর্মকর্তার ভরসায় যদি স্টেজের কোনো একটা কাজ ভাগ্যক্রমে জোটে; ছাতার বাঁট তৈরী হয় যে মোটা ভারি বেতে, আসাম থেকে তা আমদানির ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার কথা ভেবেছেন; ইনসিওরেন্সের দালালির কাজ করেছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সামলে উঠতে পারেন নি; খবরের কাগজের রিপোর্টারের চাকরির জন্য স্টেটসম্যান কাগজে ধর্না দিয়েছেন, সবিস্ময়ে আবিষ্কার করেছেন যে, তাঁর ইন্টারভিউয়ের আগেই বিজ্ঞাপিত শূন্যপদ ভরাট হয়ে গিয়েছে; স্টেনোটাইপিস্টের চাকরিই বা এমন কী মন্দ, এমন কী খবরের কাগজের ফেরীওয়ালার কাজও কাম্য মনে হয়েছে; চাকরি যখন জুটবেই না, ব্যবসা ছাড়া নান্য পন্থা:, তখন জ্ঞানবাবুর চায়ের দোকানের মত একটা চায়ের দোকানের অথবা কুষ্ঠরোগিণীর পানের-দোকানের মত একতা পানের দোকান করতে পারলে হত, তাতে বেশ লাভ হত ও ঝাড়া হাত-পা হওয়া যেত, সে সম্ভাবনা বাস্তবায়িত করার চেষ্টাও করেছেন, শৈলজানন্দকে গুরু মেনে। '

  • I | 59.93.217.134 | ২৮ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:৩৭403966
  • কিন্তু সবসময়েই চেয়েছেন , নিটোল মধ্যবিত্তের মত, একটি মর্যাদার চাকরি; আর কিসেই বা মর্যাদা, ইংরেজী সাহিত্যের অধ্যাপনা ছাড়া? তবে, এইরকম একটা চাকরি তো আর গাছে ফলত না তিরিশের সেই মহামন্দার বাজারে,এছাড়া পেলেও তা তিনি ধরে রাখতে পারতেন কই ! ১৯২৮ সালে সিটি কলেজে সেই চাকরি থেকে ছাঁটাই হয়েছিলেন তিনি, শোনা যায় ছাত্রদের সরস্বতী পূজাকে কেন্দ্র করে ডামাডোল, তিনি পূজা করাকে সমর্থন করেছিলেন, গোঁড়া ব্রাহ্ম সিটি কলেজের পরিচালকমণ্ডলী তা সুনজরে দেখেন নি মোটেও; কেউ আবার বলেন , মন্দার বাজারে আর্থিক দুরবস্থা কাটাতেই পরিচালকদের এই পদক্ষেপ, কাউকে ছাঁটাই করা দরকার, আর সবথেকে জুনিয়র অধ্যাপক হিসেবে সবথেকে ডিসপেন্সেবল ছিলেন তিনি-ই। ভূমেন্দ্র গুহ অবশ্য প্রথম মতে বিশ্বাসী, তিনি মন্তব্য করেছেন হিন্দু ছাত্রদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে সেই যে তাঁর (বদ)নাম রটল বাজারে, তার থেকে আর অব্যহতি পাওয়া গেল না, ব্রাহ্ম এডুকেশন সোসাইটি পরিচালিত কোনো কলেজে ঠাঁই হল না তাঁর।
    এছাড়াও অনৈতিক, অশ্লীল কবিতা লেখার সেই অভিযোগের গল্প তো জানেন সকলেই-"ক্যাম্পে' কবিতার সেই ঘাইহরিণী-পর্ব !
    বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন একবার, দিল্লির রামযশ কলেজে চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু টিকতে পারেন নি বেশীদিন, অল্পেতেই তাঁর আঁতে ঘা লাগত, রামযশ কলেজের সহকর্মীদের প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষ র‌্যাগিং সহ্য হয়নি। সেখানে লোকে প্রকাশ্যেই বলাবলি করত,বাঙালীরা দুর্ভিক্ষপীড়িত জাত, নিজেদের দেশে খেতে পায় না বলে বিদেশ-বিভুঁইয়ে এসে ভীড় করে। উৎপীড়িত হয়েছেন সেখানকার ছাত্রদের হাতে, বাড়ি বানানোর কনট্রাক্টরের হাতে।
    কাঠবেকার মানুষটি অগত্যা নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করেছেন : What to do? Tea shop? Sweet shop? Bakery? Poultry? Fish farming? Opium selling? Wine shop? Shoe making? Plaster from roof fell on my head early morning...(04/08/33)
    অধ্যাপনার চাকরির জন্য , হায়ারার্কির জন্য এইরকম টানের আর একটা পরিচয় দিয়েছেন প্রভাত কুমার দাস : "তাঁর প্রাক্তন ছাত্র নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় তখন সিটি কলেজে আছেন, তাঁকে সিটি কলেজে একটা চাকরি করে দেওয়ার অনুনয় জানিয়েও আত্মসম্মানের প্রশ্নে এ-কথাও বলতে সংকোচ করেন নি, ছাত্র নারায়ণের চেয়ে যেন অন্তত: পাঁচ টাকা বেশী বেতন হয় তাঁর।'
  • I | 59.93.217.134 | ২৮ জানুয়ারি ২০০৯ ২২:৪৮403968
  • ছোট একটা কথা-
    এই লেখা ইতিমধ্যেই তার বিষয়ের পরিসর (অর্থাৎ ভূমেন্দ্র গুহ-র বইটি) খানিকটা ছাপিয়ে গেছে, ভবিষ্যতে হয়তো আরো যাবে,তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আসলে আমার উদ্দেশ্য ছিল জীবনানন্দ সম্বন্ধে দু-চার কথা যা আমি এখানে-সেখানে পড়েছি, তা বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করা এবং এই প্রক্রিয়ায় তাদের কাছ থেকেও শিক্ষিত হওয়া (এইজন্যেই চাইছিলাম, অন্যরা বলুন,অনেক কিছু বলুন)। তো, এর জন্য কোথাও তো একটা ধরতাই চাই , এই বইটাই নয় সেই ধরতাই-এর কাজ করল !
    এটাকে কেউ যদি চালু অর্থে বুক রিভিউ-র মত করে পড়তে যান, তাহলে তাঁকে হতাশ হতে হবে-মোদ্দা কথা এটাই আমার কৈফিয়ৎ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন