বাবরি মসজিদ আপনাআপনি ভেঙে পড়েছে। কেউ পরিকল্পিত ভাবে ভাঙেনি। ঠিক যেমন মনীষা বাল্মীকিকে হয়তো কেউ ধর্ষণ করেনি। বা ধর্ষণ করেছে। মনীষা এবং বিচারব্যবস্থাকে। ... ...
এই যে ব্যক্তিমানুষটির যাপন বা আদর্শকে এড়িয়ে গিয়ে তাঁর লার্জার-দ্যান-লাইফ ইমেজটির অনুষঙ্গ ব্যবহার করে কিঞ্চিৎ গৌরব অর্জন, ব্যাপারটা শুধু নির্দোষ ব্যক্তিগত সংগ্রহের আত্মপ্রসাদ লাভে সীমাবদ্ধ থাকলে অতোখানি সমস্যা হত না। কিন্তু, ইদানীং ইমেজের সদব্যবহার বা অপব্যবহার করে নিজেদের অ্যাজেন্ডা গুছিয়ে নেওয়ার ধারাটি পুরোদমে চালু হয়ে গিয়েছে - আর পুরো পরিস্থিতির পাঠটাই খুব সহজেই কেমন গুলিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। যেমন দেখুন... একদিকে গান্ধীজির হত্যাকারীর নামে মন্দির তৈরী হচ্ছে এবং আরেকদিকে গান্ধীহত্যার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সংগঠনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে গৌরবান্বিত প্রধানমন্ত্রী গান্ধীজির স্মৃতিসৌধে মালা দিয়ে থাকেন। গান্ধীজির প্রতিস্পর্ধী হিসেবে সর্দার প্যাটেলকে খাড়া করে ফুটেজ খাওয়ার ব্যবস্থা হয় এবং মোদি-শাহ জুটিকে প্রায় বল্লভভাই প্যাটেলের উত্তরসূরী হিসেবে প্রোজেক্ট করা হয়, যদিও প্যাটেল স্বয়ং আরএসএস-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এবং সাভারকারকে জেলে ঢোকানোর ব্যাপারে বদ্ধপরিকর ছিলেন, যা থেকে তাঁকে নিরস্ত করতে বিস্তর চিঠিচাপাটি লেখেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ... ...
এক গলা জলে দাঁড়িয়ে দুটি ছেলেমেয়ে দেখছে, এক কোমর জলে দাঁড়ানো স্কুলশিক্ষক জাতীয় পতাকা ওড়াচ্ছেন - আমার কাছে ওই বাচ্চাদুটি আমার দেশ - আর মাথার ওপরে পতপত করা ওই পতাকাটা রাষ্ট্র। মাটির থেকে দূরে, নিজ গর্বে উড্ডীয়মান, নীচের দেশটিই তাকে তুলে ধরেছে কিন্তু তার সঙ্গে সম্পর্ক বিরহিত। তাকে "ভালবেসে" কিছু করা যায় না কারণ তাকে ভালবাসা যায় না। ... ...
এই যে দুই দুইটা সম্প্রদায় প্রবল ভাবে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেল। একজনের রক্তে আরেকজনের হাত রঞ্জিত হল, এত কিছুর পড়েও তো আমরা একদিন বুঝতে পারলাম আমরা আসলে এক। আমাদের জাতি পরিচয় এক। ৪৭ সনের দুঃখ ভুলতে আমাদের বেশি সময় কিন্তু লাগেনি। সময় আমাদের আবার একটা সুযোগ দিয়েছিল। দুই সম্প্রদায় সমস্ত নীচতা, সমস্ত কালিমা ভুলে গিয়ে ১৯৭১ সালে মিশে গিয়েছিল। গোলাম মুর্শিদ তাঁর হাজার বছরের বাংলা সংস্কৃতি বইয়ে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনায় লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতার কথা। সেবার দুর্গা পূজায় পূজা মণ্ডবে দুর্গা প্রতিমার সাথে বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখা হয়েছিল! উনাকে অমিতাভ চৌধুরীর স্ত্রী সুনন্দা চৌধুরী তাঁর একমাত্র ভাইয়ের সাথে একত্রে বসয়ে দিয়েছিলেন ভাই ফোঁটা! ভাই ফোঁটা দিয়ে ভাই হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন তাকে। এমন অজস্র উদাহরণ তৈরি হল সে সময়। এর আগের সমস্ত কালিমা নিমিষে দূর হয়ে গেল। হাওয়ায় উড়ে গেল যেন ধর্ম বর্ণ, ঘটি বাঙালি সহ যত বাধা ব্যবধান! ... ...
এই ব্লগটি ডিলিট করা হয়েছে ... ...
এই উপন্যাসের শুরু জানতে গেলে সময়ের স্রোতকে বলতে হবে একটু উল্টোবাগে চলো। আইন করে নীল চাষ বন্ধ হয়েছে সদ্য সদ্য। তার কিছু আগের থেকে এ উপন্যাসের কুশীলবদের পথচলা শুরু। সুন্দরবন লাগোয়া ভবানীপুর গ্রামে রামতনু মুখার্জ্জীর পারবারিক প্রথা পুত্রবধূর প্রথম রজঃপাত হবে শ্বশুরের ভিটেতে। কিন্তু রামতনুর পুত্র শেখরের স্ত্রী আন্নার বেলায় এ নিয়ম ব্যর্থ হয়। আন্নার ঠাকুরদা যদুপতি তিতুমীরের সাথে লড়াইয়ে শহীদ হয়েছিল। রামতনুর পরিবার শেখরকে ... ...