বিভা চৌধুরীকে নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক দিনের। আগ্রহের সুচনা কেন্দ্র অবশ্যই তাঁর বিজ্ঞানচর্চা । বৈজ্ঞানিককে তার বিজ্ঞান ছাড়া ধরা যায় না। তবে তিনি যখন বিজ্ঞান সাধনায় নামেন , তখন সে জগত এক অবিচ্ছিন্ন জ্ঞানের জগত, আমার বিজ্ঞানের যে সীমিত জ্ঞান তাই দিয়ে তাঁকে আবছা বোঝা গেলেও , পুরোটা ধরা মুশকিল-ই।আগ্রহের শুরুটা একটু অদ্ভুত ভাবে। ফেমিনিজম নিয়ে পড়াশুনা করছিলাম। দেখলাম কট্টর নারীবাদীরা বলেন যে ক্লাসিক্যাল ফিজিক্স যেভাবে গোটা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডকে objectifiable আর knowable বলে সেটাই নাকি গণ্ডগোলের। ... ...
ছেলেটাকে আমি ছোটবেলা থেকে ভালোবাসতাম। কখনো তাকে মনের কথা বলিনি। কারণ জানতাম রাজি হবে না। কি করে যেন বুঝে গিয়েছিলাম সে রাজি হবে না। সুতরাং বলে অপমানিত হওয়ার কোন অর্থ নাই ভেবে বলিনি। দেখা হলে ভাইয়া ডেকে কথা বলি। কিন্তু রাতে তার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঘুমাতে পারি না,পড়তে বসে ডায়েরি জুড়ে তার নাম লিখি,তার ছবি দেখে চোখের পানি ফেলি। ... ...
ইদানিং বাসা থেকে বের হতে ভয় লাগে। ভয় লাগার কারণ আছে। সামনের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। তাদের মধ্যে একজন বয়স্ক মানুষ আছেন যিনি সারাদিন ঐ বাসার বারান্দায় বসে থাকেন আর যাকেই দেখতে পান ডেকে নিয়ে বলেন,"বলোতো দেশের কি হাল?" ওনার সামনে বসলে মিনিমাম দুই ঘন্টা দেশের হাল সম্পর্কে না চাইলেও শুনতে হবে। প্রতিটা মানুষকে দেশের সম্পর্কে জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে একজন পরিপূর্ণ আদর্শ নাগরিক বানানোর মিশনে নেমেছেন উনি। ইদানিং আমার আবার পরীক্ষাও চলছে। ও বলা হয়নি, আমি পলিটিক্সের ছাত্রী। আমার ... ...
*এ কেমন রঙ্গযাদু?*ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্ক শপিং মলের আন্ডারগাউন্ডে গিজগিজে মানুষ। ইন্ডিয়ার ভিসা প্রার্থীদের দীর্ঘতর লাইন। হাতে হাতে সবুজ পাসপোর্ট। লাইনে নানা বয়সী পুরুষেরাই শুধু। মেয়েরা এখানে সংখ্যালঘু, তাদের লাইন নাই। মেডিকেল ভিসা প্রার্থীদের আবার আলাদা খাতির। মোডে মোডে ওয়াকিটকি হাতে নিরাপত্তা রক্ষী। ব্যাগ ভেতরে যাবে না, ব্যাগ জমা দিয়ে টোকেন নিন – নির্দেশ তাদের। বিশাল হল রুমে গোটা চল্লিশেক ডেস্ক। ওপাশে পেশাদার তরুণ-তরুণী। ভিসার ধরণ বুঝে টোকেন নিয়ে পাসপোর্ট জমা। স্লিপ হাতে নিতে না নিত ... ...
উপন্যাস ছাড়া নাকি প্রোলোগ লেখার নিয়ম নেই - তাই বুজুরগলোগ মাপ করবেন - এই উপন্যাসোপম আখ্যানে এই আদিপর্বটা প্রতিবারেই ঘাপলা হয়ে যায়, তাই এবারে এটা দিতেই হল। কারণ না দিলে মিস। বইমেলার লটারি এক জব্বর বস্তু - সে অভিজ্ঞতা না কহিলেই নহে। অতএব গিল্ড লটারির কথা অমৃতসমান - পূণ্যবানেরা আসুন আসুন - পিঁড়ে পেতে বসে পড়ুন। গিল্ড ফ্রী তে চা খাওয়ায়, এমন কি টপ বিস্কুটও খাওয়ায়, হাতে হাতে নিয়ে নিন বাবাসকল, মা সকল। কৃতাঞ্জলিপুটে বসে পড়ুন।ঘোষিত সময় দুপুর বারোটা। জনতা সাড়ে এগারোটা ... ...
বেশ করেছে। হ্যাঁ মশাই, বেশ করেছে। ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে কিছু তথাকথিত বিজ্ঞানী এসে বলেছেন, প্রাচীন যুগে শ্রীলঙ্কায় এয়ারপোর্ট ছিল। কৌরবদের শতভাই আদি যুগেই স্টেম সেল থেরাপির প্রকৃষ্ট প্রমাণ। আর নিউটন আইনস্টাইন এঁরা সব ভুল -- ফক্কা । অতি শীঘ্রই গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ আর লেন্সিং ইফেক্ট-এর নাম সংশোধন করে নাকি বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক বহির্ভূত কোনো কোনো ব্যক্তির নামে হয়ে যাবে। তা মশাই, বেশ করেছে বলেছে । এরকম আকছারই তো শোনা যায় আজকাল। আগের সায়েন্স কংগ্রেসেও তো শোনা গেছিল আদি যুগে বিমান ব্যবহারের ... ...
আমি আজ দেখলাম অশোক ধাওলেকে। অনেকক্ষণ তাঁর কথা শুনলাম, কি ক'রে নাসিক থেকে মুম্বাই অব্দি পদযাত্রায় রক্তমাখা ক্ষতবিক্ষত পা দুটোকে চলন্ত টেম্পোতে উঠে বিশ্রাম দেবার কথায় গর্জে উঠেছিলেন আদিবাসী কৃষক-নারী, বলেছিলেন, - নাসিক থেকে এতোদূর হেঁটে এলাম, সে কি গন্তব্যে পৌঁছবার আগেই বিশ্রাম নেব বলে ! - কেন এতো কষ্ট করছেন - এই দীর্ঘ পথ হাঁটা ? সহযাত্রীদের এই প্রশ্নের জবাবে তার উত্তর, --আমার সন্তানসন্ততিকে যাতে এতো দীর্ঘ হাঁটতে না হয় আর কোনদিন, সে কারণেই আমার এই কষ্ট কর ... ...
রোজকার মতোই আজকেও একটা প্রচন্ড মন খারাপ চুপচাপ বসে আছে। ঠিক গায়ে সাঁটা ব্রায়ের হুক এর মত। বাকি সবটাই বয়ে যায়। বয়ে যাওয়া সব কালেই ছিল। এখনো রয়েছে। গতি টা বেড়েছে কেবল। আরো বাড়বে বলেই বোধ হয়। বোধ? বোধ কি আর হয় আজকাল?! যাকগে!! বলছিলাম মন খারাপের কথা। বরের সাথে ঝগড়া থেকে বোনের সঙ্গে মন কষাকষি, ধুন্ধুমার চলতে থাকা মব লিঞ্চিং বা সামান্য একটু অন্য কথায় হাজার চোখের লাল টুকটুকে টমেটো হয়ে ওঠা এসব আগে জ্বালা ধরাত। মাথা তরতরিয়ে ভাবতো হ্যান করেঙ্গা ... ...
হিরোশিমা বিস্ফোরণের থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তামিকি হারা, তখন তাঁর প্রায় চল্লিশ বছর বয়স। তামিকি কি ভাগ্যবান ছিলেন নিজের কাছে বা আমাদের মতে? জানি না – তবে এটা জানি ভাগ্যবানের তকমা গায়ে বেশীদিন লাগিয়ে না রেখে ১৯৫১ সালে আত্মহত্যা করেন তিনি। ... ...
১।আর একটু পর উড়ে যাবভয় করেকথা ছিল কফি খাবফেরার গল্প নিয়েকত সহজেই না-ফিরেফুল হয়ে থাকা যায়যারা ফেরে নি উড়ার শেষেতাদের পাশ দিয়ে যাই ... ...
একাদশ শতকের প্রথমদিকে অতীশ দীপঙ্কর বৌদ্ধধর্ম ও সংশ্লিষ্ট জ্ঞানভাণ্ডার নিয়ে বাংলা থেকে তিব্বতে গিয়েছিলেন সেখানকার রাজার বিশেষ অনুরোধে। অতীশ তিব্বত এবং সুমাত্রা (বর্তমান ইন্দোনেশিয়া) সহ পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃর্ণ ভূভাগে বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শনের বিস্তারে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন এবং এক মহামানবে পরিণত হন। তাঁকে বিশেষভাবে জানাবোঝার এক আগ্রহ তৈরি হয় সেখানকার বিদ্বৎসমাজে। তাঁদের কেউ কেউ চলে আসেন অতীশের দেশে, যে দেশ তাঁদের পরম পুজ্য গৌতম বুদ্ধেরও। অতীশের তিব্বত যাত্রার দুশো বছর পরে অতীশকে নিবিড় ... ...
এই উপন্যাসের শুরু জানতে গেলে সময়ের স্রোতকে বলতে হবে একটু উল্টোবাগে চলো। আইন করে নীল চাষ বন্ধ হয়েছে সদ্য সদ্য। তার কিছু আগের থেকে এ উপন্যাসের কুশীলবদের পথচলা শুরু। সুন্দরবন লাগোয়া ভবানীপুর গ্রামে রামতনু মুখার্জ্জীর পারবারিক প্রথা পুত্রবধূর প্রথম রজঃপাত হবে শ্বশুরের ভিটেতে। কিন্তু রামতনুর পুত্র শেখরের স্ত্রী আন্নার বেলায় এ নিয়ম ব্যর্থ হয়। আন্নার ঠাকুরদা যদুপতি তিতুমীরের সাথে লড়াইয়ে শহীদ হয়েছিল। রামতনুর পরিবার শেখরকে ... ...
অন্তরীক্ষে এই ঊষাকালে অতসী পুষ্পদলের রঙ ফুটি ফুটি করিতেছে। অংশুসকল ঘুমঘোরে স্থিত মেঘমালায় মাখামাখি হইয়া প্রভাতের জন্মমুহূর্তে বিহ্বল শিশুর ন্যায় আধোমুখর। নদীতীরবর্তী কাশপুষ্পগুচ্ছে লবণপৃক্ত বাতাস রহিয়া রহিয়া জড়াইতে চাহে যেন, বালবিধবার কুঞ্জে কিশোর রাখালিয়া। থাকিয়া থাকিয়া এমন শরতের নদী, বাতাস তাহার অববাহিকায় অস্ফুট জড়িমা, আমাকে যদি চাহ তবে মুখ ফুটিয়া কহো, দাও, নচেৎ পাপড়ি ছিঁড়িয়া করতলে পিষ্ট করিয়া শুঁকিয়া দেখ, শুঁটকি মাছের ঘ্রাণের ন্যায় সামুদ্রিক নির্বিকল্প। ... ...
জানলার কাছে বসন্তের নরম রোদে সার দিয়ে সাজানো আছে কাঁচের বড় বড় বয়াম। মুখ গুলো ঢাকা আছে পরিষ্কার সাদা কাপড়ের ফেট্টিতে। বয়াম গুলোকে বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায় না তার মধ্যে কি রসদ লুকিয়ে আছে। কিন্তু যারা এই বাড়িতে রোজ ভাত খেতে আসে তারা ঠিক জানে। ভাতের পাতে লেবু, নু্ন, লঙ্কা দেওয়ার পাশাপাশি উড়ে বামুন ধনঞ্জয় একটু করে শালপাতায় ছুঁয়ে দিয়ে যায় বয়ামের সেই লুকোনো সম্পদ। কামরাঙা, কতবেল, জলপাই কিম্বা কোনদিন পাকা তেঁতুলের আচার। নতুন কাস্টমাররা অবাক হয়ে যায়। আর পুরোনো লোকেরা ভাবে আজ ... ...
দক্ষিণের কড়চা - যদি ভাবো জবালা মেঘ সঞ্চরমান, তবে চোখ মুছে ফ্যালো ঘাসে, নদীঘাটের শরবনে। যদি ভাবো জবালার কোলে জল, তবে চোখ মেলে দ্যাখো এই পূর্বাশা অন্তরীপ। এখন ঘন আলকাতরায় লেপে গেছে আকাশের মনস্তাপ। মনস্তাপই তো। সাড়ে তেরো মাইল দূরে শেষ বাস এসে থেমে যায় তেলোর চকে। তারপর পায়ে হেঁটে রোজ জবা কাঁকড়ার ঝোড়া নিয়ে বাড়ি ফেরে, ফিরতে ফিরতে যেদিন তার ঋতুঃক্ষরণ হয়, মাতুয়া খালের জলে থাই ধুয়ে ছেঁড়া ন্যাকড়া পরে নেয়। কোমরের ঘুনসিতে মাদুলির মধ্যে হাড়গিলের হাড় নড়ে ওঠে। ... ...
ধর্ষণের মামলায় ফরেন্সিক ডিপার্টমেন্টের মুখ বন্ধ খাম পেশ করা হল আদালতে। একটা বেশ বড় খাম। তাতে থাকার কথা চারটে ছোট ছোট খামে খুন হয়ে যাওয়া মেয়েটির চুলের নমুনা। ঘটনাস্থল থেকে সিট ওই নমুনাগুলো সংগ্রহ করেছিল। সেগুলোর ডি এন এ পরীক্ষাও করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কোর্টে পেশ করার পর খাম খুলে দেখা গেল সব ফক্কা। ... ...
সত্তরের শেষে বা আশির দশকের প্রথম দিকে , যখন-ও পর্যন্ত আনন্দবাজারের কভার পেজে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের ময়দানি গুঁতোগুঁতি আর ব্যাকপেজে আর্জেন্টিনা বা ইতালির বিশ্বকাপ জয় ছাপা হতো , প্রণয় রায়ের 'ওয়ার্ল্ড দিস উইক' চায়ের দোকানের মাতব্বর খোকন-দা কে পেরেস্ত্রৈকার বোদ্ধা করে তোলে নি তখন-ও পর্যন্ত, সেই সময় আমার মতো একনিষ্ঠ খুদে বাঙালের ইস্টবেঙ্গলের উয়াড়ির কাছে এক গোলে হেরে যাওয়া কে শ্মশানে-র হাহাকার মনে হতো। সেটাকেই বলে সমর্থন ... ...
আমার বন্ধু উমা কথাবার্তায় খুব চৌকশ, দেখতে সুন্দর, আর খুব হাসিখুশী। ও একটা লিটল ম্যাগাজিন চালাতো। সেই সুবাদে পরিচয়। একদিন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দূর্গা পূজার মেলায় উমাকে দেখি এক যুবকের হাত ধরে ঘুরতে। ও আমাকে দেখে ডেকে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দেয়। বলেন, আমার বন্ধু, পেশায় লেখক। আমি ভাবলাম, দুজনেরই যখন লেখালেখির প্রতি এতো ঝোঁক, তাহলে ওদের মানাবে ভালই। উমার লেখক বন্ধু চাপ দাড়িতে সুদর্শন। ... ...
পঞ্চাশের দশকে এক ব্রাজিলিয়ান এন্টমোলজিস্ট (পোকামাকড় নিয়ে গবেষণা করে যারা তাদেরকে এন্টমোলজিস্ট বলে) একটা কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে বসেন। তিনি ভাবছিলেন, কিভাবে হানি বি বা মৌমাছিদের তৈরি মধুর স্বাদ আরও বেশি বাড়ানো যায়। নরমাল টেস্টে মন ভরছিল না আরকি... তাই তিনি একটা কাজ করে বসলেন। তিনি ইউরোপিয়ান হানি বি এর এর বিভিন্ন প্রজাতির সাথে আফ্রিকান হানি বি এর ক্রস করে হাইব্রিড জাত তৈরি করেন। কিন্তু এর ... ...
গতকাল শুক্রবার ৮ই জুন, ২০১৮ তারিখে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বাংলা নিউজ পোর্টাল আই ই বাংলায় আমার একটা লেখা প্রকাশিত হয়। সেই সংক্রান্ত ফেবুতে নিজের দেওয়ালে ও গুরুর ফেবু গ্রুপে কিছু আলোচনাও শুরু হয়েছে ও চলছে। খানিক সেইগুলো এক জাযগায় রাখার জন্যে আর খানিকটা এখানেও আলোচনা শুরু করার জন্য ও বিশেষত আলোচনার বাইরে কাজ করার ব্যাপারেও যদি সবাই মিলে কিছু একটা সলতে পাকানো যায় সেসবের জন্যে এখানে রাখলাম সেগুলো। ... ...