পড়লাম সিজনস অব বিট্রেয়াল গুরুচন্ডা৯'র বই দময়ন্তীর সিজনস অব বিট্রেয়াল। বইটার সঙ্গে যেন তীব্র সমানুভবে জড়িয়ে গেলাম। প্রাককথনে প্রথম বাক্যেই লেখক বলেছেন বাঙাল বাড়ির দ্বিতীয় প্রজন্মের মেয়ে হিসেবে পার্টিশন শব্দটির সঙ্গে পরিচিতি জন্মাবধি। দেশভাগ কেতাবি শব্দ আর বাটোয়ারা কথাটা জানলাম যথেষ্ট বড় হয়ে। আমারও ঠিক একই অভিজ্ঞতা। নিজের বাসভূমি, যাবতীয় অস্থাবর এবং ভূসম্পত্তির সঙ্গে পরিচয় এবং সম্মান সব হারিয়ে যারা কুটোর মতো ভাসতে ভাসতে পিতৃপুরুষের দেশ ছেড়ে অন্য ভূমিতে জীবন বাজি রেখে ... ...
তোমার সুরের ধারা ঝরে যেথায়...আসলে যে কোনও শিল্প উপভোগ করতে পারার একটা বিজ্ঞান আছে। কারণ যাবতীয় পারফর্মিং আর্টের প্রাসাদ পদার্থবিদ্যার সশক্ত স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। পদার্থবিদ্যার শর্তগুলি পূরণ হলেই তবে মনন ও অনুভূতির পর্যায় শুরু হয়। যেমন কণ্ঠ বা যন্ত্র যদি সঠিক কম্পাংকে না বাজে বা রঙের দুনিয়ায় পরস্পর পরিপূর্ত বর্ণিকাবিভঙ্গ বিষয়ে যদি আঁকিয়ের ধারণা না থাকে, তবে তো প্রথম বেড়াটিই পেরোনো যাবেনা। যে সব শিল্পীদের সিদ্ধিলাভ হয়ে গেছে, তাঁদের শিল্প পরিবেশন, পদার্থবিদ্যা কেন, মননেরও প্রাথমিক ... ...
দিলীপ ঘোষ। যখন স্কুলের গণ্ডি ছাড়াচ্ছি, সন্তোষ রাণা তখন বেশ শিহরণ জাগানাে নাম। গত ষাটের দশকের শেষার্ধ। সংবাদপত্র, সাময়িক পত্রিকা, রেডিও জুড়ে নকশালবাড়ির আন্দোলনের নানা নাম ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের মধ্যে। বুঝি না বুঝি, পকেটে রেড বুক নিয়ে ঘােরাঘুরি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়াচ্ছে সমবয়সীদের। কলকাতার বেশিরভাগ কলেজের বার্ষিক পত্রিকার মলাটে হালকা থেকে গাঢ় লাল লেনিন, স্টালিন, মাও সে তুং, হাে চি মিন, কারাের না কারাের ছবি শােভা পাবেই, চে গুয়েভারার ডায়েরি অনুবাদ করছেন সুভাষ মুখােপাধ্যায়, ... ...
(টিপ্পনি : দক্ষিণের কথ্যভাষার অনেক শব্দ রয়েছে। না বুঝতে পারলে বলে দেব।) দক্ষিণের কড়চা - এখানে মেঘ ও ভূমি সঙ্গমরত ক্রীড়াময়। এখন ভূমি অনাবৃত মহিষের মতো সহস্রবাসনা, জলধারাস্নানে। সামাদভেড়ির এই ভাগে চিরহরিৎ বৃক্ষরাজি নুনের দিকে চুপিসারে এগিয়ে এসেছে যেন অ্যাডভেঞ্চারের লোভে। দুঃখের দিকে শরীর যখন এগোয় দ্বিধাদ্বন্দ্বে, দীর্ণ কে বা হতে চায় পত্রহীনে, অপুষ্পক আঁধারে! জারুল, আম, মুচকুন্দ গাব নারকেল গাছগাছালির কুঞ্জে তাই এইক্ষণে বৃষ্টি সর্বাত্মক ঝেঁপে এসেছে। ... ...
পুরোনো কথার আবাদ বড্ড জড়িয়ে রাখে। যেন রাহুর প্রেমে - অবিরাম শুধু আমি ছাড়া আর কিছু না রহিবে মনে। মনে তো কতো কিছুই আছে। সময় এবং আরো কত অনিবার্যকে কাটাতে সেইসব মনে থাকা লেখার শুরু খামখেয়ালে, তাও পাঁচ বছর হতে চললো। মাঝে ছেড়ে দেওয়ার পর কিছু ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ ঝাঁকিয়ে তুললো ফর্টিসিক্সের স্মৃতি, ভাবলাম লিখে ফেলা যাক। তারই কিছু ঝাড়পোঁছ করে এখানে। ঝাড়পোঁছ হলো একটু, কিন্তু গোছানো গেলনা, গল্পের আঁকাবাঁকা রেখা গতিও সোজা হলো না। তা হোক, স্মৃতির খেয়ার আজগুবি চাল। ~হরিগঙ্গা বসাক রোড ... ...
ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সূর্য অস্ত যায় ১৯৪৭ এ। মূল ভারত ভূখন্ড ভেঙে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র গঠিত হয়। কিন্তু ভুখন্ডের ভাগবাঁটোয়ারা সংক্রান্ত আলোচনচক্র ওতটাও সরল ছিল না। মূল দুই ভূখণ্ড ছাড়াও তখন আরও ৫৬২ টি করদরাজ্য ছিল। এগুলোতে রাজতন্ত্র কায়েম ছিল। ব্রিটিশ শাসককে কর দিয়ে স্বায়ত্বশাসন উপভোগ করত তারা। এই স্বায়তশাসিত ভুখন্ড গুলি ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে, না পাকিস্তানের সঙ্গে সেটা নিয়ে দীর্ঘ বাদানুবাদের পালা চলে। সমস্যা সমাধানের জন্য তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্টবেটেন ... ...
ব্যক্তি আক্রমণ আর রেটোরিকাল ডিভাইস দুটো ভিন্ন জিনিস। এই দুটোর মধ্যে সম্পর্ক আছে, অনেক সময় রেটোরিকাল ডিভাইস দিয়ে ব্যক্তি আক্রমণ করা হয়। তারপরও বলব এই দুটো বিষয় আলাদা, দুটো ভিন্ন ভিন্ন শাখায় এগুলো নিয়ে স্টাডি করা হয়। ব্যক্তি আক্রমণ আমি এখানে আলোচনা করব লজিক বা যুক্তিবিদ্যার দিক থেকে, যুক্তিবিদ্যাই ব্যক্তি আক্রমণকে যৌক্তিক ফরমেটে সাজিয়ে একে বিশ্লেষণ করেছে। যুক্তি বিদ্যায় যে লজিকাল ফ্যালাসি বা কুযুক্তি বা হেত্বাভাসকে এড হোমিনেম বলা হয় তাকেই আমি বাংলায় ব্যক্তি আক্রমণ বুঝি। কেন আমি ... ...
মা যেদিন বেঘোরে মরে গেল তার পরদিনই আমি গোটা শহর এন্তার চষে বেড়াতে শুরু করলাম। যেন সেই দুই বেণী ঝুলছে কাঁধে, আগের মতো টই টই রাণী বলে প্যাক দিলে এখুনি রেগে যাব, ঝাঁকুনি দিয়ে চেঁচিয়ে উঠব, তোমার কী !তখন আমার ব্যবহার খারাপ ছিল খুব, বাবার ওপর প্রচন্ড রাগ। একটুতেই চেঁচাতাম আবার মেজাজ ভালো হলে উঠোনের বিরাট কুয়োর মধ্যে মুখ ঢুকিয়ে গাইতাম, আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি। বর্ষাকালে কালো জল উঠে আসতো ওপরে,হাতে ছুঁয়ে ফেলা যাবে যেন,কেমন গা ছমছম করতো অতো নিস্তরঙ্গ বোবা জলের দিক ... ...
সল্ট লেকে পূর্ত ভবনের পাশের রাস্তাটায় এমনিতেই আলো খুব কম। রাস্তাটাও খুব ছোট। তার মধ্যেই ব্যানার হাতে একটা মিছিল ভরাট আওয়াজে এ মোড় থেকে ও মোড় যাচ্ছে - আমাদের ন্যায্য দাবী মানতে হবে, প্রতিহিংসার ট্রান্সফার মানছি না, মানব না। এই শহরের উপকন্ঠে অভিনীত হয়ে যাচ্ছে প্রতিহিংসা এবং প্রতিরোধের এক কাহিনী, কিন্তু আমরা নাগরিকেরা আশ্চর্যভাবে কিছু না জেনেই সপ্তাহান্তে হস্তশিল্পমেলায় দৌড়চ্ছি, অথবা মাল্টিপ্লেক্সে। রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অনশনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের পাশে তেমনভাবে দাঁড়ায় ... ...
দুনিয়া বৈষম্যে ভরা – অনেক সময়েই বোঝা যায় না কি কারণে একটা জিনিস অন্যের থেকে বেশী ফুটেজ খেয়ে চলে যায়! এই দেখুন না, ভিয়েতনামের এককালীন চেয়ারম্যান হো চি মিন-কে নিয়ে পাবলিক যেভাবে হৈ চৈ করে, ভিয়েতনামের খাবার নিয়ে কেউ সে রকম উতুপতু করে না! এটা কি ভিয়েতনামের খাবার প্রতি একপ্রকারের অবমাননা নয়? কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেবার মত আবার যখন দেখা যায় প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের কুজিনের নাম হো চি ... ...
ক্রিকেট মানেই যুদ্ধু। আর যুদ্ধু বলতে মনে পড়ে ষাটের দশক। এদিকে চীন, ওদিকে পাকিস্তান। কিন্তু মন পড়ে ক্রিকেট মাঠে। ১৯৬৬ সাল হবে। পাকিস্তানের গোটা দুয়েক ব্যাটেলিয়ন একা কচুকাটা করে একই সঙ্গে দুটো পরমবীর চক্র পেয়ে কলকাতায় ফিরেছি। সে চক্রদুটো অবশ্য আর নেই। পাড়ার "জগন্নাথঅ ফ্র্যায়েড স্ন্যাক্স" নামক তেলেভাজার দোকানে বাঁধা দিয়ে পাক্কা দুটি বছর মুড়ি-তেলেভাজা পেঁদিয়েছি। সে যাক, সেবার তোদের মনসুর পতৌদি এল সকালবেলা। সবে এজমালি বাথ্রুম ফাঁকা পেয়ে একটা বিড়ি নিয়ে ঢুকেছি অমনি দরজায় দুম-দুম। পতৌদি এসেছে। ... ...
আচ্ছা লাবণ্য তুমি কি করো?আমি গম্ভীর গলায় জবাব দিলাম, আমি চিন্তা করি। :কি চিন্তা করো?-অনেক গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা করি। দেশের সব লেটেস্ট নিউজগুলো তো আমাকেই সবার আগে আগে ফেসবুকে আপডেট দিতে হয়! সেখান থেকে শেয়ার হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।সদ্য বিসিএস ক্যাডার হওয়া অনিক অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো।আমরা বসে আছি H20 রেস্টুরেন্টে। আজকাল নতুন একটা রীতি হয়েছে। কনে দেখাদেখি বাড়িতে না হয়ে রেস্টুরেন্টে হচ্ছে। আমার জন্য ভালো হয়েছে। মন খুলে আলাপ করা যাবে। ইদানিং আমার ... ...
২০১৭ সালের ১২-১৩ জুন রাতে শুরু হয় একের পর এক পাহাড় ধসের যজ্ঞ। এক সঙ্গে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পাহাড় ধসে ব্যপক হতাহতের খবর চমকে ওঠে দেশ। এরমধ্যে রাঙামাটিই সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বিপন্ন, লণ্ডভণ্ড হয় পার্বত্য জনপদ। সে সময় একজন পাহাড়ি বন্ধু ফেসবুকে মাটিচাপা পড়া দুটি নিস্পাপ শিশু ভাইবোনের কাদামাখা নিথর দেহের ছবি পোস্ট করেন। সঙ্গে সঙ্গে কেউ একজন মন্তব্য করেন এরকম, “ছবিটি কেউ সরাবেন প্লিজ? আমি আর নিতে পারছি না!“ ... ...
বারো-তেরো বছর বয়স হবে তখন। বাবার সঙ্গে শরৎকালে যাচ্ছিলুম আমাদের দ্যাশের বাড়ি। থার্টি আপ নামক ট্রেনটি, এখন যার নাম কুর্লা এক্সপ্রেস, টাটানগর থেকে হাওড়া যেতে সব স্টেশনে দাঁড়াতো।প্যাসেঞ্জারের অধম। তখনও গীতাঞ্জলিই শুরু হয়নি। জ্ঞানেশ্বরী, আজাদ হিন্দ, দুরন্ত সব তখন স্বপ্নে। বম্বে যেতে আসতে টোয়েন্টি নাইন ডাউন বা রাতে বম্বে মেল। আমরা দিনের বেলা খড়গপুর যেতে গেলে থার্টি আপ ধরতুম টাটানগর থেকে। সকালবেলা 'ভাতেভাত' খেয়ে সেই যাত্রা। খড়গপুরে নেমে ধরতে হতো গোমো প্যাসেঞ্জার। বিকেল বিকেল পৌঁছে দিতো আমাদের দ্যাশের ... ...
পোস্ট মডার্ণ বা উত্তর আধুনিককে বিদ্বজ্জনেরা সংক্ষেপে পোমো বলে থাকেন। অর্থাৎ পোমো কবিতা হল উত্তর আধুনিক কবিতা। সাহিত্যে, বিশেষতঃ বাংলা সাহিত্যে এই কবিতার এক অসামান্য অবদান রয়েছে – সেই নিয়েই আমাদের আজকের বিদগ্ধ আলোচনা। যারা বুদ্ধিজীবি নন বা এখনো সম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন নি – তারা এই আলোচনাকে এড়িয়ে যাবেন না – আপনাদের কিঞ্চিৎ জ্ঞানবৃদ্ধি না করতে পারলে আর এত বুদ্ধি নিয়ে করবটা কি বলুন – আজকাল আর কিডনিতেও ধরে না যে। অনেকে ভাবেন যেমন তেমন অর্থহীন কিছু পংক্তি লিখে গেলেই বোধ হয় পোমো কবিতা হয়ে যায় ... ...
'এই দুর্ভাগা দেশকে আপনার কণ্ঠমাধুরী ও কলাসিদ্ধির দ্বারা আনন্দিত করুন, সুস্থ করুন। বিশেষত যখন রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি শ্যামার কথা ভাবি তখন আমি অভিভূত হয়ে যাই। এই সূক্ষ্ম জটিল নানা বিপরীত অনুভূতির টানাপোড়েনে ক্ষতবিক্ষত নারীকে আপনি ছাড়া আর কে এমন সার্থক রূপ দিতে পারত? এই পাপিষ্ঠাকে রবীন্দ্রনাথ আশ্চর্জ ট্রাজিক মহিমা দান করেছেন। কিন্তু আমাদের ও কবির মাঝখানে একজন interpreter আবশ্যক ছ্ল। সেই সুযোগ্য interpreter কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপনার কাছ থেকে আমরা অনেক পেয়েছি।' ... ...
চুয়াত্তর বার তাকে গুলি করা হয়েছিল। পেলেটের আঘাতে চোখদুটোও গেল শেষমেশ। বর্শার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করা হলো,রেহাই পায়নি তার বুক আঁকড়ে থাকা বাচ্চাটাও। কিন্তু কোথায়ই বা যেতে পারতো সে ! বনের পর বন উজাড় হয়ে গেছে,এক ফোঁটা খাবার নেই কোথাও। অন্যের ক্ষেত থেকে খাবার চুরি করবার অপরাধে এক রাতে তার কোলের বাচ্চাটাকে কেড়ে নেওয়া হয়। অন্ধেরও তো চোখের জল বাড়ন্ত হয়না। তাই খুব কাঁদলো সে,বোবা কান্না। কেউ শুনলো না,শুনলেও খুশি হতো,এতো কষ্টের ফসল তো আর অনাহুতদের জন্য নয়। বাচ্চাটাকে বিক্রি করবার জন্য একটা খুব ছোট ব ... ...
আমরা ষড়যন্ত্র ত্বতে খুব সহজে বিশ্বাস আনি। দীর্ঘ পরাধীনতা থেকেই সম্ভবত এই বিশেষ গুণ আমাদের জিনে বাসা করেছে। হোক না হোক আপনি একটা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বাজারে ছাড়ুন বিশ্বাস করার লোকের অভাব হবে না। একই সাথে সব কিছুতেই সন্দেহ এবং সহজে বিশ্বাস আনা সম্ভবত এই দুনিয়ায় আমরাই পারি। এই রোগ আমাদের গভীরে প্রোথিত হয়ে গেছে, এর আর নড়নচড়ন নাই। আমরা বিশ্বাস করি আমরা বাদে বাকি দুনিয়া আমাদের কে ধ্বংস করার জন্য সকালে উঠে নাস্তা না করেই, চোখে মুখে পানি দিয়েই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা শুরু করে। ষড়যন্ত্র করেই ... ...
স্বর্গ সারথি কলেজ স্ট্রীট ক্রশিঙে বিচ্ছিরি জ্যামে ফেঁসে গেলো। সামনে বাসের পর বাস কাতার দিয়ে দাঁড়িয়ে, যেন সৈন্যদল। অঘোরবাবু খিস্তি করলেন। তার খিস্তি কেউ শুনতে পেলো না। স্বাভাবিক। স্বর্গ সারথির ভেতরে যারা শুয়ে থাকে, তাদের আর্তনাদ বা উল্লাস করার দিন ফুরিয়েছে বলেই ধরে নেওয়া হয়। অঘোরবাবু এই রুটেই যাতায়াত করেছেন অটোয় চেপে, বাসে চেপে। খিস্তিটা তাই অভ্যাস বশত চলে এলো। বিড়ি খাবেন বলে হাতড়ালেন প্যান্টের পকেট। বিড়ি নেই। প্যান্টই নেই, তার জায়গায় খড়খড়ে একটা ধুতি। আর কিছুক্ষন পরে তিনি নিজেই বিড়ির মতো ... ...
আজ মঙ্গলবার। ভাব সম্প্রসারণের দিন। খগেনবাবু দ্রুত রোলকল সারিয়া, গলা খাঁকারিকরত, ছাত্রদের ভাব সম্প্রসারণ করিতে দিলেন। বলিলেন: 'ল্যাখো'। খগেনবাবুর উচ্চারণের বিশেষত্ব আছে। তিনি হেমন্তকে হ্যামন্ত বলেন, অথচ, লজ্জাকে, লোজ্জা উচ্চারণ করিতেই তিনি অভ্যস্ত। অতঃপর খগেনকন্ঠে উচ্চারিত হইল: "কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে, দুঃখ বিনা সুখলাভ হয় কি মহীতে?" ... ...