সত্যজিতের অপু ট্রিলজি যদি গ্রাম বাংলার ছবি এঁকে থাকে, মৃণাল ছবি এঁকেছেন শহর কলকাতার এবং তার মার খেয়েও মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো মানুষগুলোর। তাঁর আকাশ কুসুম, তাঁর পুনশ্চ, তাঁর নীল আকাশের নীচে। যেখানে সর্বজয়া নেই, কিন্তু আছে বাসন্তী, মণিকা। বাসন্তী বোধহয় আধুনিক বাংলা সিনেমার প্রথম নায়িকা, যে ছবির প্রধানতম চরিত্র। অর্থাৎ, বাসন্তীই সে ছবির কেন্দ্রবিন্দু। নায়ক নয়, নায়িকাই এ ছবির আসল কথা। তার লড়াইয়ের গল্প। নায়ক পার্শ্বচরিত্র। হিন্দু ও মুসলমান রক্ষণশীলরা এ গল্প শুনতে চায়না। তারা চায়না আমরা লড়াই করি, মাথা উঁচু করে বাঁচি। তারা চায়না, মেয়েরা সমাজের কেন্দ্রবিন্দু হোক। তারা চায়, সমাজ যেন চরম রক্ষণশীল, পুরুষতান্ত্রিক থাকে। ... ...
যে কোনো বড় ঘটনার পর বিগ মিডিয়ার রাজনীতিটা বোঝা এবং বিশ্লেষণ করা খুব জরুরি। ... ...
নতুন এ রচনা। গন্ধ নিয়ে। গন্ধ মানে সৌরভ, গন্ধ মানে পারিফিউম, গন্ধ মানে কলকাতায় দিনমানে চলা কর্পোরেশনের জঞ্জাল ফেলার গাড়ি, গন্ধ মানে শেষযাত্রার অগুরু, গন্ধ মানে ধুপ-ধূনো, গন্ধ মানে মায়ের খোলা চুল। এমন কতো কিছুই। আপনাদের উৎসাহ পেলে ভরসা বাড়বে। ... ...
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে হিন্দুত্ববাদী আরএসএস, বিজেপি ও তাদের নেতানেত্রীরা গাগা করছেন। আমার "দানবের পেটে দু দশক" বইতে আমি যেমন লিখেছি, আরএসএস, বিজেপির রবীন্দ্রনাথ-প্রীতি একেবারেই ভানু ব্যানার্জী কিংবা তুলসী চক্রবর্তীর হাস্যকৌতুক। বাকীটা পড়ে ফেলুন। অবশ্য ইসলামী জঙ্গীরাও চরম রবীন্দ্রবিদ্বেষী। যা হবার কথা, ঠিক তাই হচ্ছে। ... ...
অনেকেই ভাল কোম্পানি পেয়েছে। ভাল আছে তারা। কিন্তু আমি যা দেখছি তাই বললাম। এখন আমি একটা ওষুধ কোম্পানিতে আছি। এই কোম্পানির মাথায় আছে ইরাক, সিরিয়ার কিছু মানুষ। যারা এত বছরেও ইউরোপিয়ান হয়ে উঠতে পারে নাই। অথচ তাদের কোম্পানিতে কাজ করা রোমানিয়ানরা আমাদেরকে বুকে টেনে নিয়েছে আপন করে! এদের জন্যই ভাল আছি। উপরের লোকজনের সাথে কথাবার্তা হয় সামান্য। যাদের সাথে কাজ করি, কাজ করাই তারা অসম্ভব ভাল, এইটাই এখন পর্যন্ত ভাল কিছু ঘটেছে আমার রোমানিয়া আগমনের পরে। ... ...
জন্মদিনের সকাল যেমন হয়, এ লেখাও তেমন। যার পরতে পরতে মায়া, প্রেম, আলোহাওয়া এবং সদ্য ফেলে আসা স্মৃতি খেলা করে। ... ...
নতুন এ রচনা। গন্ধ নিয়ে। গন্ধ মানে সৌরভ, গন্ধ মানে পারিফিউম, গন্ধ মানে কলকাতায় দিনমানে চলা কর্পোরেশনের জঞ্জাল ফেলার গাড়ি, গন্ধ মানে শেষযাত্রার অগুরু, গন্ধ মানে ধুপ-ধূনো, গন্ধ মানে মায়ের খোলা চুল। এমন কতো কিছুই। আপনাদের উৎসাহ পেলে ভরসা বাড়বে। ... ...
নতুন এ রচনা। গন্ধ নিয়ে। গন্ধ মানে সৌরভ, গন্ধ মানে পারিফিউম, গন্ধ মানে কলকাতায় দিনমানে চলা কর্পোরেশনের জঞ্জাল ফেলার গাড়ি, গন্ধ মানে শেষযাত্রার অগুরু, গন্ধ মানে ধুপ-ধূনো, গন্ধ মানে মায়ের খোলা চুল। এমন কতো কিছুই। আপনাদের উৎসাহ পেলে ভরসা বাড়বে। ... ...
এই ঘটনা শুরু আরও কয়েকদিন আগে থেকে। বাংলাদেশ থেকে নতুন দুইজন এসেছেন আমাদের কোম্পানিতে। তারা যে এজেন্টের মাধ্যমে এসেছেন আমি সেই একই এজেন্টের মাধ্যমে এসেছি। আমাকে বলা হল আমি যেন এই দুইজনকে আমাদের সাথে রাখি, খাওয়া দাওয়া আমাদের সাথে করাই। আমার সঙ্গী রাজি ছিল না। আমার মনে হল আমরা যখন প্রথম আসছিলাম তখন আমরা নানাজনকে বলছিলাম যে তাদের সাথে যেন আমাদের রাখে, এক সাথে খাওয়া দাওয়া রান্নাবান্না করে খাব। কেউ রাজি হয়নি। তখন আমার খুব খারাপ লেগেছিল। আমি সেই কথা চিন্তা করে বললাম, ঠিক আছে, উনারা থাকুক আমাদের সাথেই। ... ...
আমাদের প্রথম চিন্তাই, আরে ওরা বাংলা বলবে? কী আশ্চর্য! 'আমনে আমাত্তে বেশি বুঝেন' আমাকে বুঝাল আরে আমরা হিন্দি পারি, এইটা আমদের একটা কৃতিত্ব না? ওরা একটা ভাষা জানে বা ইংরেজি সহ দুইটা জানে, আমরা ইংরেজি সহ তিনটা জানি, এইটা ভাল না? অবশ্যই ভাল! এর চেয়ে ভাল উত্তর আর কী হতে পারে? ... ...
নতুন এ রচনা। গন্ধ নিয়ে। গন্ধ মানে সৌরভ, গন্ধ মানে পারিফিউম, গন্ধ মানে কলকাতায় দিনমানে চলা কর্পোরেশনের জঞ্জাল ফেলার গাড়ি, গন্ধ মানে শেষযাত্রার অগুরু, গন্ধ মানে ধুপ-ধূনো, গন্ধ মানে মায়ের খোলা চুল। এমন কতো কিছুই। আপনাদের উৎসাহ পেলে ভরসা বাড়বে। ... ...
কিছু মানুষ আছে তাদের কাছে গেলে শুনতে হয়, বুজ্জেন্নি ভাই, মালয়শিয়া থাকতে…! কেউ কথায় কথায় আরবি, মালয় শব্দ যোগ করে! প্রমাণ করার চেষ্টা তিনি বিদেশ করে এসেছেন। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাস করি, এইটা কী কইলেন ভাই? খুব খুশি হয়ে তখন এর অর্থ, সমার্থক শব্দ, বিপরীতার্থ শব্দ সব ব্যাখ্যা করে। আমি খুব খারাপ ছাত্র, সব ভুলে যাই কিংবা আসলে কী বলে তা শুনিই না। ... ...
প্রতিটা জায়গায় বিভিন্ন তথ্য রোমানিয়ান, ইংরেজি আর হিব্রু ভাষায় দেওয়া আছে। একটা বিষয় আমার কাছে খুব ভাল লাগল যে রোমানিয়ানরা গণহত্যার জন্য কোন দলকে, মতাদর্শকে দায়ী করেনি। স্পট লেখা আছে, সারা ইউরোপ জুড়ে যখন ইহুদি নিধন শুরু হয় তখন রোমানিয়ান সরকারও ইহুদি নিধনে যোগ দেয়। ওরা ইচ্ছা করলে নাৎসিদের উপরে কিংবা কোন দলের কথা লিখতে পারত। আমরা জানি সে সময়ের সরকার নাৎসি সমর্থক ধরণের কিছু ছিল বলেই এমন একটা কাজে উৎসাহী হয়েছিল। কিন্তু তা না লিখে সরাসরি লেখটা আমাকে অবাক করেছে এবং মুগ্ধও করেছে। সত্যকে আড়াল করে লাভ নাই। ওরা এভাবে লিখেছে এবং পরবর্তী প্রজন্ম যেন জানে সে কথাও লিখেছে। অন্যদিকে পাকিস্তান আজ পর্যন্ত সত্যটা লিখতে পারেনি। পাঠ্যবইয়ে লেখা ভারত ষড়যন্ত্র করে দুই পাকিস্তান আলদা করেছে! আর পশ্চিম পাকিস্তান দুধে ধোয়া তুলসী পাতা! ... ...
ইউরোপ এদেরকে খুব বেশি বেতন দিবে এমনও না। ভাল বেতন পাওয়ার যে উপায় এরা প্রত্যেকেই তার থেকে শত শত মাইল দূর দিয়ে হাঁটছে। কেন কিসের টানে, কিসের নেশায় পঙ্গপালের মত সবাই রোমানিয়া আসছে তা আসলেই রহস্য আমার কাছে। বুঝার চেষ্টা করছি, যা বুঝছি তা এক ভয়ংকর সত্য। সবাই জায়গা চায় এখানে। ইউরোপ কাওকে ফেরায় না, কষ্ট করলে, কেউ যদি রাষ্ট্র ভেদে চার পাঁচ ছয় আট বছর কাটায় তাহলে এখানকার নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে, সত্য মিথ্যা জানি না, তবে সবাই তাই বিশ্বাস করে। ইউরোপ সবাইকে আশ্রয় দেয়! এখানে থাকলে এক সময় নাগরিকত্ব পাওয়া যায়, এখানকার একটা পাসপোর্ট কোটি টাকার চেয়েও দামি বলে মনে করে অনেকে। তো? সব যুক্তিতর্ক শেষ! এরা সবাই ইউরোপ নিবাসি হয়ে যাবে। ১৭ বছর যে সৌদি থেকে এসেছে সে জানে আরও ১৭ বছর থাকলেও কোনদিন সৌদি সরকার তাকে নাগরিকত্ব দিবে না। মালয়েশিয়া দিবে না, সিংগাপুর দিবে না, কাতার দিবে না, কুয়েত দিবে না, কেউ দিবে না। দিবে ইউরোপ। আর এই কারণেই হুমড়ি খেয়ে হাজির সবাই। যেহেতু মূল ইউরোপে ঢোকা কষ্টকর, প্রায় অসম্ভব তাই সহজে ইউরোপের রাস্তা হিসেবে রোমানিয়া ব্যবহৃত হচ্ছে। ... ...
দূতাবাস আমাদেরকে খুব দারুণ করে সমাদর করল। মেহেদি হাসান নামে একজন সচিব বেশ মনোযোগ দিয়ে আমাদের সমস্ত অভিযোগ শুনলেন। এরপরে অভিযোগ গুলো নিয়ে আমাদের ভিতর থেকে কয়েকজনকে নিয়ে গেলেন রাষ্ট্রদূতের সাথে কথা বলার জন্য। আমরা বাকিরা নিচে বসে রইলাম, ছবি তুললাম। রাষ্ট্রদূত দ্রুত অ্যাকশন নিলেন। ফোন দিয়ে গরম করে ফেললেন মুহূর্তে। যারা কথা বলে আসলেন তাদের পরে আমি কথা বলার জন্য গেলাম। আমি যখন উনার রুমে ঢুকি তখন তিনি মোবাইলে আমাদের কোম্পানির কর্তা কোন ব্যক্তির সাথে লাউড স্পিকারে কথা বলছেন। বাকিটা আমার গর্বের হয়ে রইল। ওই পাশ থেকে একজন খুব কর্কশ স্বরে কথা বলছিলেন। আমাদের রাষ্ট্রদূত ( নামটা দেখেছি কিন্তু ভুলে গেছি, কি জানি হুদা!) উনাকে ফোনে থামিয়ে দিয়ে বললেন, “আপনি জানেন কার সাথে কথা বলছেন? আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলছি, আপনে এমন শব্দ ব্যবহার করতে পারেন না আমার সাথে কথা বলার সময়। এরা আসছে নির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে। আপনারা কোন আইনে, কোন অধিকারে আমার দেশের লোকজনের পাসপোর্ট নিয়েছেন?” ওই পাশে নীরব হয়ে গেল কিছুক্ষণের জন্য। বলল ওরা আসলেই সবাইকে পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়া হবে, আজকে এখনই দিয়ে দেওয়া হবে। ... ...
মসজিদের বাহিরে গিয়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এরা মসজিদকে আমাদের মত পেট মোটা হুজুর পাঁচবার নামাজ পড়াবে আর বাকি সময় মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনে ব্যয় করবে এমন করে রাখে নাই। সুন্দর সবুজ ঘাসের একটা ছোট্ট উদ্যান। শিশুদের জন্য দোলনা, বাস্কেটবল কোর্ট, সবার বসার জন্য সুন্দর করে সাজানো চেয়ার টেবিল! এক পলকেই পুরো ধারনাটা আমার খুব পছন্দ হয়ে গেল! ... ...
এইমাত্র এক বাল্যবন্ধুকে দেখলাম, আরেক পরিচিতের পোস্টে গিয়ে কমেন্ট করতে, যে, গুরু(চণ্ডা৯) 'ছুপা' তৃণমূল, অনেকদিন ধরেই। তার নীচে আবার একজন গম্ভীর সমর্থন জানিয়ে লিখেছে, গুরুতে নাকি সব তৃণমূল আইটি সেলের লোফার, আর ওখানে নাকি ডিএ-আন্দোলনকারীদের খুব গালি দেওয়া হয়... ... ...
বিমানে উঠার পরেই শুরু হল শ্রমিক জীবন! আমি মুহাম্মদ সাদেকুজ্জামান, নিজেকে একটু উন্নত প্রাণী বলে মনে করি, আমি বইপত্র পড়ি, সিনেমা সিরিজ নিয়ম করি দেখি, মতামত দেই, অস্কারের ভাল মন্দ নিয়ে জ্ঞান দেই, দেশের নারী অধিকার নিয়ে আমার কথা না বললে চলেই না, খুব আগ্রহ নিয়ে সংখ্যালঘুদের কথা বলি, নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আমার বোন, যার ভেরিফাইড পেজটা খুলছি এবং এখনও অন্যতম এডমিন আমি, এমন শতশত বিষয় যা আমাকে একটু আলাদা করে রেখেছিল, বিমানে উঠা মাত্র সব শেষ! আমি শ্রেফ শ্রমিক! আমার জন্য কাটা হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তা টিকেট। ঢাকা থেকে বুখারেস্ট, মাঝে দুবাইয়ে থাকতে হবে ছয় ঘণ্টা, সব মিলিয়ে ১৮ ঘণ্টার ভ্রমণ। এই লম্বা ভ্রমণে কোন খাবারের ব্যবস্থা নাই! বিমানে খাওয়া নাই! শ্রমিকদের এগুলা থাকতে হয় না, মানে বিদেশ ভ্রমণে ক্ষুধা পিপাসা আবার কী! যেন বিমানের শব্দের মাঝে শুনতে পেলাম কোন গায়েবি আওয়াজ, শ্রমিক জীবনে স্বাগতম শরীফ! ... ...
নিজের ঢাক নিজেই পেটাতে হয় । অন্য কাউকে দিলে সে ভেঙে ফেলবে । ... ...