আমাদের রক্তের দাম এখন সস্তা মনে হয় অনেকের কাছে। অবলীলায় স্বাধীনতা, শহীদের সম্পর্কে হাস্যকর নানা কথা বলি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এখন কিছু বললেই কারো গায়ে ফোস্কা পরে যায়। চেতনা ব্যবসায়ী বলে তেড়ে আসে একদল। রক্ত কত সস্তা এই দেশে যে এমন কাণ্ড ঘটে এই দেশে? লন্ডন টাইমস লিখেছিল - “If blood is the price of independence then Bangladesh has paid the highest price in history" দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ফরাসী লেখক - দার্শনিক আন্দ্রে মালরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বলেছিলেন, "আমি সম্ভবত এমন এক প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি যেখানে মৃতের সংখ্যা জীবিতদের থেকে বেশি!!" এমন আর কোথাও নাই, এমন আর কোথাও হয়নি! আহা! এর মূল্য যদি বুঝত সবাই! এত এত শহীদ, এত এত স্বজন হারার হাহাকার, সব কিচ্ছু না? আমরা কেমনে পারি? ... ...
কলকাতার কলেজ ষ্ট্রীটে বাংলাদেশ বই মেলা চলছে। আগামীকাল শেষ হবে দশদিন ব্যাপী এই বই মেলা। বাংলাদেশের বই কলকাতায় মেলা করে বিক্রি হচ্ছে এইটা দারুণ একটা ব্যাপার। উদ্বোধনের দিন প্রধান অতিথি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, "বইয়ের চাহিদা চিরন্তন। সেই চাহিদা চিরদিন জেগে থাকবে আমাদের হৃদয়ে। আর এই বইতো আমাদের দুদেশের মধ্যে এক নতুন সেতু গড়ে তুলেছে।" কোন সন্দেহ নাই, সেতু তৈরি করে দিচ্ছে। মুশকিল হচ্ছে সব হচ্ছে এক তরফা! বাংলাদেশের বই কলকাতায় মেলা করে, আয়োজন করে বিক্রি করছেন অথচ ভারতীয় বই এখানে আসতে দিচ্ছেন না। একুশে বই মেলায় ভারতীয় বই প্রবেশ নিষেধ। বেশ, ভাল, একুশে বই মেলাকে যদি শুধু মাত্র বাংলাদেশি প্রকাশকদের জন্য নির্ধারিত বই মেলা করে রাখতে চাই আমরা তাতে কোন সমস্যা নাই। তাহলে অন্য সময় ভারতীয় বইয়ের জন্য আলাদা করে বই মেলার আয়োজন করা হোক। এখন যেমন কলকাতায় বাংলাদেশ বই মেলা হচ্ছে তেমন করে, এতে সমস্যাটা কই? ... ...
যন্ত্রসভ্যতার চরম সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে কিছু মানুষ ভুতের বেগার খেটে চলেছেন দিবারাত্র। তাদেরই সূত্রে আপনার সামাজিক মাধ্যম, তাদেরই হাত ধরে আমরা যন্ত্রের অসাধারণ ম্যাজিকে বিভোর হই, অথচ তাঁরা থেকে যান "বিজ্ঞানে উপেক্ষিত"। আসুন, এই অদ্ভুত দুনিয়াটাকে দেখি। ... ...
সময় গেলে সব সহজ হয়ে যাওয়ার কথা। মন্ত্রীরা অভিজ্ঞ হবে, কাজকর্ম আরও সুচারু হবে, সুন্দর হবে। অথচ বর্তমান সরকারের কাজকাম দেখলে মনে হয় যে নবিস দিয়ে মন্ত্রণালয় চালাচ্ছে সব। দুই একজন বাদে সবাই কী করতেছে কেন করতেছে তা নিজেরাও জানে কি না সন্দেহ। অর্থনীতির বারোটা বেজে তেরোটার ঘণ্টা বাজতে চলছে অথচ আমাদের অর্থ মন্ত্রী কই ঘুমায় আছে কেউ জানে না! কে চালাচ্ছে মন্ত্রণালয় কে জানে। ঘটা করে নতুন এক শিক্ষা নীতি নিয়া আসল। এবং নতুন শিক্ষানীতির জন্য সরকার শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমিয়ে দিল! চলতি অর্থবছরে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ হচ্ছে জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। থাকার কথা জিডিপির ৬ শতাংশ! কোন পরামর্শ না, শিক্ষকদের প্রস্তুত করা নাই, দুম করে বলা হল এইটাই সেরা কলা, বিসমিল্লাহ বলে খেয়ে ফেল! সবাই কলা খেতে থাকল, যে প্রশ্ন করল তাঁকে প্রশ্ন করা হল দেশপ্রেম নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে, উন্নত বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে! ফলাফল এখন পর্যন্ত এর সমাধান হল না, পক্ষ বিপক্ষ তুমুল বিতর্ক করে যাচ্ছে। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে, শিক্ষকদের ভাল বেতন দিলে, ভাল যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের সময়ের বা তার আগের শিক্ষা পদ্ধতি দিয়েও ভাল কিছু করা সম্ভব। কিন্তু আমাদের মন্ত্রীরা শুধু চমক দেখাতে চায়! তাকালেই যেন ঝকমক করে সব! তা এর মান যেমনই হোক! ... ...
বছর কয়েক আগে এমনই এক শীতের মরসুমে পুরুলিয়ার গড় পঞ্চকোট থেকে ফিরে এসে উপলব্ধি করেছিলাম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত কেন লিখেছিলেন, "মণিহারা ফণি তুমি রয়েছ আঁধারে।" দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এক দশকও হয়নি। টেলিফোন, ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়ার এই তাৎক্ষণিক দুনিয়ায় বসে কল্পনা করাও কঠিন সে সময়ের পরিস্থিতি। পরিবেশ এবং হেরিটেজ-সংরক্ষণ, জনজাতির জীবিকা ও ঐতিহ্য রক্ষার মতো বিষয়গুলি জনপরিসরের চর্চায় তখন উঠে আসেনি। সংবাদমাধ্যমের এই নজরদারিও তখন ছিল না। সেই কারণেই উত্তরকাশী জেলায় চারধাম মহাসড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গ ধস বা তারও আগের বছরগুলিতে উত্তরাখন্ডে ক্রমাগত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে যে আশঙ্কা ও শোরগোল তৈরি হয়েছে তার ছিঁটেফোঁটাও ছিল না যখন এই তথাকথিত উন্নয়নের দাপটেই আমাদের এই বাংলার পুরুলিয়াতেই কার্যত নিশ্চিহ্ণ হয়ে গেল এক প্রাচীন সভ্যতার ঐতিহাসিক সব নিদর্শন। উন্নয়নের অজুহাতে আধুনিক ভারত তার পুরাতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় সম্পদ যে ভাবে ধ্বংস করেছে বিশ্বের ইতিহাসে সম্ভবত তেমন নজির নেই। পাঞ্চেত বাঁধ দেখলে তার সীমাহীন মাসুলের কাহিনীও যেন আমাদের মনে পড়ে। পাঞ্চেতের ঘটনা যে দেশের রাজনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকদের মোটেই লজ্জিত করেনি তার প্রমাণ পাওয়া যায় আরও একটি বাঁধ নির্মাণে। দামোদরের পরে সুবর্ণরেখা। পাঞ্চেতের ৫০ বছরের মধ্যেই তৈরি হল চান্ডিল বাঁধ। সেক্ষেত্রে অধুনা ঝাড়খন্ডের পাতকুমেও আরও বহু জনপদ এবং জৈন মন্দির ঠিক একই ভাবে জলের তলায় চলে গেছে। লক্ষণীয় ব্যাপার হল, স্বাধীনতার পর থেকে প্রকৃতির বিরুদ্ধে, পরিবেশের বিরুদ্ধে তথাকথিত উন্নয়নযজ্ঞের এই ধ্বংসলীলা কিন্তু একই ভাবে অব্যাহত রয়েছে। ... ...
নোম চমস্কির ৯৫-তম জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালাম। ... ...
ছয় ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে কিছু ব্যক্তিগত কথা। ... ...
মোদীর "হ্যাটট্রিক" প্রোপাগাণ্ডা রাজনীতির মনস্তাত্ত্বিক চেহারাটা সবার কাছে তুলে ধরা এখনই খুব দরকার। ... ...
মানুষের জীবন, সম্মান, বাঁচার অধিকার, কথা বলার অধিকার আদৌ আর ভারতে থাকবে কিনা, আজ আমরা সেই প্রশ্নের সম্মুখীন। ... ...
হেনরি কিসিঞ্জারের মতো যুদ্ধাপরাধী গণহত্যাকারীকে মার্কিন মিডিয়া "বিতর্কিত এক মহানায়ক" বলে অবিচুয়ারি সাজিয়েছে। ... ...
উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে শ্রমিকরা আটকে পড়ে আছেন। জীবনসঙ্কট তাঁদের। নিদ্রাহীন তাঁদের পরিবারগুলো। ... ...
জানি অস্ট্রেলিয়ার সমর্থক গুটি কয়েক। কিন্তু আমি সরলীকরণের কারণে এইটা বললাম। আমাদের এখানে ভারত বিরোধিতা কই থেকে আসে এইটা পাগল আর শিশু ছাড়া বাকি সবাই জানে। এত পুরনো ইতিহাস যে বাংলাদেশি না এমন কাওকে বুঝানো মুশকিল যে এখানে আসলে কী চলে! প্রতিনিয়ত বেশ বড় একটা দল বা একটা গোষ্ঠী ইচ্ছামত ভারত বিরোধী কার্ড খেলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ, সহজ সরল মানুষ যারা অত প্যাঁচ বুঝে না তারা নিয়ম করে এই ফাঁদে পরে! বুঝে না বুঝে ভারত সব শেষ করে দিল বলে বসে থাকে। পরাষ্ট্রনীতির প- ও জানি না, কিন্তু মন্তব্য করতেছি বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে। এই দেশের রাজনীতিতে ভারতের সমর্থন আর ভারত বিরোধিতা দুইটা বড় একটা অস্ত্র। ভারতের যারা ভারত বিরোধিতা দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছে তারা বিষয়টা গভীর করে ভাবছে না। এই দেশে সামনে নির্বাচন, এই সময় যে ভারত বিরোধিতা বাড়বে বা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে এইটা খুব সহজ হিসাব। কিন্তু ওই যে বললাম যারা বাংলাদেশি না তাঁদের পক্ষে এইটা বুঝা মুশকিল। তবে তাঁদেরও আসলে কষ্ট পাওয়ার কিছু নাই, কারণ আমাদের ভারত বিরোধিতাও ওই মুখে মুখেই। পেট মোচড় দিলেও চিকিৎসার জন্য ভারত যায় এই দেশের বহু লোক। ... ...
একটি বাংলা টিভি চ্যানেল প্রোগ্রাম করেছে "ভারতবিদ্বেষী" বাংলাদেশের ক্রিকেট টীমকে আইপিএল'এ নিষিদ্ধ করা হোক। ... ...
এই ক্রিকেটের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টরা একটা জঙ্গী, উগ্র দেশপ্রেম তৈরী করেছে, যার সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনের কোনো সম্পর্কই নেই। ... ...
নরেন্দ্র মোদী স্মৃতি স্টেডিয়ামে আজ শুধুই চোখের জল। ... ...
ডোপামিন নামক হরমোন। উগ্র দেশপ্রেম। ক্রিকেট, বলিউড, হিন্দুত্ব, রামমন্দির। শাসকশ্রেণীর উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে কীভাবে তার দৈনন্দিন, বাস্তব, জ্বলন্ত সমস্যা থেকে যত বেশি পারা যায়, ভুলিয়ে রাখা। ... ...
ক্রিকেট নামক মগজধোলাই মেশিন, এবং গ্ল্যাডিয়েটরদের মাথা কেটে নেওয়ার উন্মাদনা। ... ...
একজন ১৮৬৮ থেকে ১৯০৪। অন্যজন ১৯৮০ থেকে ২০১৬। প্রথমজন পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ প্রভুদের অধীনে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। দ্বিতীয়জন স্বাধীনতার তিন দশক অতিক্রান্ত হওয়ার পরের পর্বের আই এ এস। দুজনেই প্রশাসনিক কাজে যুক্ত ছিলেন ৩৬ বছর ধরে। বিচক্ষণতা, দক্ষতা এবং দরদী ও অনুভূতিসম্পন্ন অন্তরের স্নিগ্ধতায় পেয়েছেন সাধারণ মানুষের উজাড় করা ভালোবাসা। কায়েমী স্বার্থের সংঘাত অগ্রাহ্য করে বিবাদ-বিসম্বাদ মেটানো থেকে শুরু করে দুর্নীতি রোধ, উন্নয়ন সহ বিবিধ কর্মকান্ডের জটিল দায়িত্বের প্রাত্যহিকতা সামলে দুজনেই সৃজনশীল সাহিত্যসেবী। দুজনেই কবিতা ও গদ্যে সমান স্বচ্ছন্দ। দুজনেই প্রকৃতিপ্রেমী বঙ্গসন্তান। প্রথমজন মাইকেল মধুসূদনের থেকে ২৩ বছরের এবং তাঁরই সমসাময়িক আর এক কবি ও হাকিম রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিক ২০ বছরের কনিষ্ঠ নবীনচন্দ্র সেন। 'রৈবতক', 'কুরুক্ষেত্র', 'পলাশীর যুদ্ধ', 'রঙ্গমতী' রচনা করে যিনি জনপ্রিয় এবং ইংরেজ আমলে বাঙালি কবিদের মধ্যে যিনি সর্বপ্রথম গদ্যে লেখেন আত্মজীবনী, 'আমার জীবন'। প্রথমজনের সঙ্গে দ্বিতীয়জনের ব্যবধান শতাধিক বছরের। দ্বিতীয়জন একালের সুপরিচিত লেখিকা অনিতা অগ্নিহোত্রী যাঁর প্রশাসনিক জীবনে "মানুষের আঙিনায় বসে দেখা রাষ্ট্রের রূপ" প্রকাশ পেয়েছে 'রোদ বাতাসের পথ' বইটিতে। এই দুটি বই পাশাপাশি পড়লে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়। স্থান-কালের ব্যবধান যাই থাকুক না কেন, দেশ পরাধীন বা স্বাধীন যাই হোক না কেন, দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে কিছু বিষয় তেমন বদলায়নি। ... ...
ইনফোসিসের নারায়ণ মূর্তি বলেছেন, সপ্তাহে সত্তর ঘন্টা কাজ ভারতের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের করতে হবে। তাকে তিনি সোৎসাহ সমর্থন জানাচ্ছেন। ... ...