সার্কাসে তুলসীদা খেলা দেখিয়েছে কী দেখায় নি, এই নিয়ে পাড়ায় বিবিধ মত ছিল। আমার বন্ধুরা জোর দিয়ে না বলেছিল, অথচ শিবুদা, কেষ্ট কাকা হলফ করে বলেছিল, তুলসীদাকে এক চাকা সাইকেল চালাতে দেখেছে, কাঁধের ওপর সাদা কাকাতুয়া; তুলসীদার বুকের ওপর টান টান করে সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। ... ...
জমে উঠেছে এই রেস ভিডিও গেমসের মত। বিচিত্র ব্যাপার, বাসগুলোতে এই কোন লোক নেই, আবার এই লোকে ভর্তি হয়ে গেছে। যেমন, এই মুহূর্তে বাংলামোটরের মোচড়ে যখন দাঁড়িয়ে, তখন কমে গেছে এদের কারো কারো জনবল আশংকাজনক হারে। সিগনালের জ্যাম অস্বাভাবিক দীর্ঘায়িত হচ্ছিল। পেছনে পড়ে থাকা বাসগুলোকে দেখে মনে হচ্ছিল অনন্তকাল ধরে এই স্থানেই বাস করবে। যখন বাঁয়ের বাসটির ভেতর থেকে গলা বাড়িয়ে ডেকে ডেকে লোক ভরা হচ্ছিল আর এক ফাঁকে হেল্পার নেমে পড়েছিল অদূরে জিহবা বেরিয়ে থাকা ডাস্টবিনটার কোনায়, ঐ মেয়ে দুজনের একজন অগ্নিমূর্তি ধারণ করল, আর নিজেদের বাস ড্রাইভারকেই হুংকার ছাড়ল, “এই ছ্যামড়া, সিগ্নাল দেখলেই কি তোর দাঁড়াইতে মন চায়”, পেছন থেকে উৎসাহ পেয়ে এক যুবক বয়সী বলে উঠে ‘হেল্পার হালায় একটা মাদারচোদ! থামলেই মুত আহে’। ... ...
আমাদের আজকের গপ্পো এক বাদামি কাঠবেড়ালির ছানাকে নিয়ে। সে এক ভারি দুষ্টু কাঠবেড়ালি। পাইন গাছের কোটরে থাকে মা বাবার সঙ্গে। দুপুরবেলায় যেই না মা একটু দুই চোখের পাতা এক করেছে ওমনি দুষ্টু কাঠবেড়ালি কোটর থেকে এক লাফে বেরিয়ে ভোঁকাট্টা। কোথায় পালায় কাঠবেড়ালি? কোথায় আবার! এই কাছেপিঠে হেথাহোথা। কখনও যায় এ পাশের কোটরে লুকনো বাদাম খেতে, কখনও ও পাশের গাছের ঢুলঢুলুনি প্যাঁচাকে জ্বালাতন করতে, কখনও আবার গাছের গোড়ার ঝোপে লুকনো খরগোশছানাদের ডেকে ডেকে ঘুম থেকে তোলে। ... ...
গপ্পো ... ...
পরী এসে দাঁড়ায় ছাদের কার্নিশে মাঝে মাঝে । আজকাল প্রায় রাতেই আসছে। দুধেল সাদা পোশাকটা অন্ধকারেও আলো ছড়াতে থাকে । পথভুলে এই শহরতলিতে তাদের বাড়ির ছাদে কেন যে নামে রাত্রিবেলা, যখন সে ছাদে থাকে বুঝতে পারেনা রিন্টু । তবে পরী এলে তার ভালই লাগে। আজকাল একটু একটু গল্পগাছাও হয় তাদের মধ্যে। এই তো গত পরশু এসেছিল। সেদিন দীপক দা মেয়ের বিয়ের জন্যে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দোকানে আসার পথে পড়ল ছিনতাইবাজের খপ্পরে। ... ...
সন্ধ্যায় কতগুলো লোক জোর করে বাড়িতে ঢুকলো । কেউ চেনা, কেউ অচেনা। ফ্রিজ থেকে মাংস বের করে লোকগুলো চিৎকার করে বললো, এগুলো গরুর মাংস। রান্নাঘরের দরজার আড়ালে ভয়ে তখন কাঁপছিল আঞ্জুমান। ... ...
রূপকথা, আজকের দিনের। মিতুলের অভিযান। অভি তারার আলো বুকে নিয়ে বিপদ থেকে উদ্ধার। আগে প্রকাশিত। এখানে তুলে আনলাম। ... ...
ওয়াই একজন তরুণ প্রফেসর; মাত্র কয়েকবছর আগে সে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে টেনিওর পেয়েছে। ব্রুকলিনের ক্যাম্পাসে তাকে যে অফিসটা দেওয়া হয়েছে, সেটা ছোটো হলেও তার পছন্দসই। সে প্রকৃতপক্ষে ক্যানেডিয়ান, তার কলেজজীবন কেটেছে টরন্টোতে। আন্ডারগ্র্যাডে সে জেডের ছাত্র ছিল। নিজের রিসার্চ কম্যুনিটিতে জেড একজন নামকরা গবেষক; যদিও তাদের আগ্রহ আলাদা আলাদা বিষয়ে বলে ওয়াই জেডের সাম্প্রতিক কাজগুলো সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ছিল না। গত তিনবছরে জেডের কোনো পেপার সে পড়েনি। ... ...
ভালবাসি, ভালবাসি! সবাই এই মুহূর্তে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে বিদেশকে। আর সবার ভালোবাসা-ভরা কথা নিষিক্ত করে চলেছে বিদেশকে। খুবই ভাল, ভাল সব কথা। শুনতে শুনতে বিদেশের নিজেরই নিজেকে কেমন অজানা অচেনা মনে হচ্ছে। বাব্বা এত গুণ তার ছিল তাই তো জানত না সে! ... ... ...
প্রথমে কিছু গগনবিদারি শ্লোগানে গা গরম করে নিয়ে মাইকটা এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ল জনপ্রিয় সুরে দল ও নেতার বন্দনাগীতিতে। ইতিমধ্যেই নেতাকর্মীদের ভীড়ে জায়গাটা ভরে গেছে। ওদিকে আরো কিছু মানুষ তাদের জন্য বরাদ্দ কোণাটিতে দাঁড়িয়ে গেছে; অবশ্য নিরাপত্তারক্ষীদের হুংকারে তাদের মাঝেমধ্যে কষ্টকর দিকবদল করতে হচ্ছে! সভার প্রবেশদ্বারটা প্রশস্ত হওয়ায় কোণাগুলি একটু বেশিই বেঁকে গেছে, না হলে সামান্য লম্ফ-ঝম্ফ - এ আর কী এমন কঠিন কাজ! ... ...
ফোনটা হঠাৎ জলে পড়ল। তারপর কীসব কাণ্ড হল! ... ...
পাশের টেবিলে তিনজন বসে গল্প করছিল। আমি আড়ি পেতে শুনছিলাম। আড়ি পেতে ঠিক নয়, কানে আসছিল। অসমবয়েসী তিনজন। একজন বছর পঁচিশেকের, একজন বছর পঁয়তিরিশের, আর অন্যজন আমার বয়েসী হবে। বছর পঞ্চাশেক। পানভোজনের মাঝারি মানের রেস্তোঁরা। আমি অনেকদিন থেকে এখানে আসি। পান আর আহার দুইই ভাল। অবশ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাম যেমন বদলেছে, আমার রুচিও। এদেরও দেখলাম রুচির তফাত। ছোটজন নিয়েছে বিয়ার। মেজোজন রেড ওয়াইন। বড়জন শুনলাম সিঙ্গল মল্ট হুইস্কি অর্ডার দিল। খাবারেও তিনজন ভিন্নপন্থী। ছোটজন অর্ডার করল ঝাল চিকেন উইংস। দ্বিতীয়জন চাইল নিউজিল্যান্ডের আমদানী ল্যাম্ব শ্যাংক। বুড়োজন নিল রেয়ার-মিডিয়াম ফিলে মিনিয়ন। আট আউন্সের। মানে খুবই ছোট। ... ...
তারপর এখানে আর ভালবাসা হবার নয, নয বলেই যেন ইনফিনিটিতে প্রাণ বল্লম গুটিয়ে ফিরছেন জাদুকর তার দীর্ঘ ছায়া পড়ছে মাঠে। ক্রমে গাছে গাছে কমে আসছে সালোক সংশ্লেষ, বাতাসে শ্বাস বাযু কমছে কি? সে বড় করে শ্বাস নেয় ,ঠিক বুঝতে পারে না। ... ...
ছোট গল্প ... ...
পথ চলতে গিয়ে যে সকল মানুষের সান্নিধ্যে এসেছি তেমন একজন কে মনে রেখে ... ...
আসলে এই সব কথা ওদের মনে বুড়বুড় করে সর্বক্ষণ - ঢাকা দেওয়া হাঁড়িতে ভাত ফোটার মত অনেকটা - তারপর একসময় কথা ফোটা বন্ধ হয়; সব কথারা ঠান্ডা হয়ে গিয়ে সর ফ্যালে আলটিমেটলি ; সেই জমাটবাঁধা থকথকে শাদা ফ্যান দিনের শেষে ড্রেনের মুখে নিজেরাই ঢেলে দেয় ওরা; জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলে, শলার ঝাঁটা দিয়ে বাড়তি জল কাচায়, তারপর শুতে যায় সেদিনের মত। ... ...