টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই ( Geographical Indications ) পাওয়া নিয়ে দুইটা ভিন্ন যুক্তি শোনা যাচ্ছে। দুইটাই সঠিক কিন্তু প্রসঙ্গ ভিন্ন। একটা ভারত থেকে জোর গলায় প্রচার হচ্ছে, তা হচ্ছে টাঙ্গাইল থেকে বসাক গোষ্ঠী, যারা মূলত শাড়ি বানাত তারা ভারত চলে গিয়ে সেখান থেকেই শাড়ি বানাচ্ছে, প্রচুর বিক্রি হচ্ছে, একজন বসাককে ভারত সরকার পদ্মশ্রী পুরস্কারও দিয়েছে। দেশের সংখ্যালঘু অত্যাচার, হিন্দুদের বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া এগুলা দিয়ে বলা হচ্ছে তোমরা তাড়িয়ে দিয়েছে এখন আর তাঁদের শৈল্পিক কৃতিত্বের ভাগ চাও কেন? আর দ্বিতীয় কথাটা হচ্ছে বাংলাদেশের নারীরা শাড়ি পরা কমিয়ে দিয়েছে! এইটাও সত্য, আমার চোখের সামনে শাড়ি পরা নারীর সংখ্যা কমতে দেখছি। বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া শাড়ি পড়ে না এখন অনেকেই, যারা এক সময় শাড়ি ছাড়া আর কিছুই বুঝত না। ... ...
পুজো বয়সের সঙ্গে কেন যে হারিয়ে যায় ... ...
কিন্তু চকোলেটের ‘আধুনিক’ যুগের সূচনা বলতে গেলে ১৮২৮ সালের পর। যখন কর্মাশিয়াল ভাবে চকোলেটের আরো বেশী করে উৎপাদন শুরু হল। এর এইখানেই ডাচ্-দের অবদান। কোয়েনার্ড ভ্যান হুটেন নামে এক ডাচ্ কেমিষ্ট উদভাবন করে ফেলল কোকো জগতে যুগান্ত কারী এক জিনিস। তিনি উদভাবন করলেন এক হাইড্রোলিক প্রেস যার মাধ্যমে প্রসেস করা কোকো বিনস্ থেকে কোকো বাটার-কে আলাদা করে ফেলা গেল খুব সহজে, আর পরে রইল চকোলেটের/কোকো-র গুঁড়ো। ব্যাস আর পায় কে! কিন্তু ভ্যান হুটেন এতেই থামলেন না, তিনি আরো গবেষণা করে সেই চকোলেটের পাওডারের সাথে ক্ষারক জাতীয় লবণ (অ্যালকালাইন সল্ট) মিশিয়ে এই পাওডার-কে এমন করে তুললেন যে সেই পাওডার এবার খুব সহজেই কোন তরলে মিশে যায়। এই প্রসেসটা তিনি পেটেন্ট করেছিলেন এবং তা কালক্রেমে পরিচিত হয় ‘ডাচিং’ পদ্ধতি নামে। বলতে গেলে এই ডাচিং প্রসেস ছাড়া হয়ত আজকের এই চকোলেট বিপ্লব সম্ভব হত না। ... ...
১৯৬০ এর পর থেকেই লাতিন আমেরিকা জুড়ে চালু হয়েছে, জনপ্রিয় হয়েছে একটা শব্দ –গেভারাইজম। গত পঞ্চাশ বছর জুড়ে,এমনকী এই একুশ শতকেও লাতিন আমেরিকায় এমন কোন বিপ্লবী বা প্রগতিশীল আন্দোলন হয় নি যা এই আর্জেন্টিনিয়-কিউবান চিকিৎসক-বিপ্লবীর দ্বারা অনুপ্রাণিত নয়। মার্কসবাদ বা লেনিনবাদ বা মাও চিন্তাধারার মত গেভারা বাদ/চিন্তাধারা-র মত শব্দ আমাদের এখানে খুব বেশি শোনা না গেলেও লাতিন আমেরিকার নিজস্ব বাস্তবতার কারণেই তা ওখানে বহু উচ্চারিত। জাপাতিস্তা আন্দোলন ‘গেভারিয়ান’ হিসেবে নিজেদের চিহ্নিত করেছিল। কলম্বিয়ায় ‘ই এল এম’ গেভারীয় আদর্শে এখনো গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য শুধু গেরিলা যুদ্ধের দিক থেকেই নয়, ভূমিহীন কৃষক সহ সমাজের সব নিপীড়িত শাসিত শোষিতদের লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনেও চে প্রাসঙ্গিক ও অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন। ... ...
প্রায় মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রফেশ্যনাল ম্যাসাজের বলতে আমার দৌড় ছিল ওই সিধু জ্যাঠা অবদিই। বাড়ির উঠোনে সেই সকাল থেকে বাড়ি শুদ্ধু পাবলিকের দাড়ি, চুল কাটা চলছে। প্রথমেই বাবার দিয়ে শুরু, বাবা দাড়ি কেটে নিমো ফটকগোড়ায় নারানের চায়ের দোকানে রোজকার প্রাতঃকালীন আড্ডায় চলে গেল। কাকা রবিবার ছূটির দিনে দাড়ি ইত্যাদি কেটে একবার গেল চাষের জমিতে রাউন্ড মারতে, সে রাউন্ড মারা অবশ্য সিম্বলিকই ছিল। কাজের কাজ বলতে কাকা মাঝে মাঝে জমি থেকে গোটা কতক মূলো তুলে এনে বলত, মূলো গুলো খাবার মত হয়ে গ্যাছে, মুড়ি দিয়ে খাব বলে নিয়ে এলা ... ...
ভূমিকাবেশ ক'বছর আগে চেষ্টা করছিলাম উপন্যাস নিয়ে একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে। একটি শারদীয়ায় প্রকাশিত হয়েছিল তখন। বই করার কথা ছিল তাঁদের। সে সামর্থ্য নানা কারণে তাঁদের না থাকায় বই-এর চেহারা আর পায়নি। গুরুর তৃতীয় তরঙ্গ দেখে মনে হল একবার ঝালিয়ে নিই স্মৃতি। সুধীদের মতামতে সমৃদ্ধ হই। পূজো আবার আসছে। এখানের বন্ধুদের পড়া নয় সে জানি। তাই ভরসা করে দিয়ে দিলাম। অন্তত পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটছি বলে গাল খাবো না। ধারাবাহিক করেই দিচ্ছি। ... ...
তারার আলো নাকি স্নিগ্ধ হয়, কাল তাহলে কেন জ্বলে মরল বারো, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আরো সত্তর জন! তবু মৃত্যু মিছিল অব্যাহত। আজও রাস্তায় পড়ে এক স্বাস্থ্যবান শ্যামলা যুবক, শেষবারের মতো ডানহাতটা একটু নড়ল। কিছু বলতে চাইল কি ? চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা সশস্ত্র পুলিশের মধ্য থেকে কেউ বলে উঠল, যা ওঠ। আর নাটক করিস না।এই ভিডিও ভাইরাল। ভাইরাল ওটাও, যেখানে মস্ত গাড়ির ছাদের ওপর শুয়ে পুলিশ এসল্ট রাইফেল তাক করছে নিরস্ত্র জনতার ওপর। পেছন থেকে নির্দেশ ভেসে এল, অন্তত একটাকে মারতে হবেই।কল্যাণকাম ... ...
♦ রমজান নিয়ে - ১ ♦সেহেরীর সেকাল---------------------------------------------------------------সেহেরী শব্দটির নিয়ে আমার ভুল ধারণা ছিলো ছোটবেলায়। আমি ভাবতাম শব্দটি বোধহয় ‘শ্রীহরি’। বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়েই শ্রীহরি ভাবতাম। সত্যি বলতে সেহেরী শব্দটি ক্যালেন্ডারসুলভ রমজানের তালিকায় প্রথম যেবার পড়লাম শ্রীহরিটা শুধরে ‘সেহেরী’ হয়ে গেলো। সেদিন খুব বোকা লেগেছিলো নিজেকে।রোজার সময় হাওড়ার গ্রামের বাড়িতে ভোর ভোর উঠে পড়ার ব্যাপার ছিলো। কনকনে শীত হোক বা গরমের দিন মসজিদের মাইকে জালাল চ ... ...
উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে শ্রমিকরা আটকে পড়ে আছেন। জীবনসঙ্কট তাঁদের। নিদ্রাহীন তাঁদের পরিবারগুলো। ... ...
৩.--‘হ্যালো’?--‘হ্যালো। পুঁটিরাম নার্সারী?’ওপ্রান্ত থেকে এমন একটা অদ্ভুত নাম শুনে ব্যায়ামবীর রাবন, তথা বাবন ঘাবড়ে গেল। পুঁটিরাম নার্সারী! এমন নামের কোনও নার্সারী আছে নাকি! সে আমতা আমতা করে বলে—‘না...এটা তো নার্সারী নয়। আপনার বোধহয় ভুল হচ্ছে’।--‘সে কি!’ ওপ্রান্ত থেকে ব্যথিত স্বর ভেসে আসে—‘এমন বলতে পারলেন আপনি? আমার ভুল হচ্ছে না! আপনারই ভুল হচ্ছে’।তার চোখ প্রায় চড়াৎ করে চাঁদিতে উঠে পড়েছে। অনেকটা চোখওয়ালা নারকোলগুলো যেমন হয়, তেমনই চাঁদি ছুঁয়ে পিট্পিট্ করে তাকিয়ে থেকে সে ক ... ...
ঘটি-বাঙাল, মাচা-লোটা, চিঙড়ি-ইলিশ। আজকের বিশ্বায়িত ভুবন-ডাঙায় এই বাইনারি অপোজিসন ঠিক কতোটা প্রাসঙ্গিক তা জানা নেই। বাইনারি শব্দটি মনে এলেই কেমন যেন মনে হয় ‘নারী কর্তৃক’। মানে ‘BY নারী’। সে যাই হোক, না হেঁজিয়ে মূল কথায় আসি। ওই তিনটি বাইনারি অপোজিসন বছরের বাকি দিনগুলোতে কতোটা প্রাসঙ্গিক তা জানা নেই। তবে বছরের তিন চারটে দিন এবং তার আশেপাশের দিনগুলিতে ওই শব্দগুলোই হয়ে ওঠে বাঙালির প্রধান পরিচিতি। ঠিকই ধরেছেন। ফুটবল ডার্বি ম্যাচ কিংবা বড় ম্যাচের দিনগুলোর কথাই বলছি। ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ম্যাচ মান ... ...
ব্রুনাই-এর মত এত বেশী ভূতের আশে পাশে আমি অন্য কোন দেশে থাকি নি। দেশটা ছোট বা চারিদিকে ঘন বন ইত্যাদি আছে কিনা বলতে পারব না, তবে ব্রুনাই-য়ে ভূতের ঘনত্ব অন্যদেশের থেকে অনেক বেশী। নিমো গ্রাম ছাড়ার পর দীর্ঘদিন দেশের বা বিদেশের বড় বড় শহরে বাস করেছি, তেমন ভাবে ভূত নিয়ে ভাবিত হই নি। >ব্রুনাই-য়ে এসে আবার অনেক দিন পরে ভূতেদের সাথে মেলামেশা শুরু করলাম। এদিকে ঠাকুমার শেখানো বাংলা ভূত তাড়ানো মন্ত্র সব ভুলে গেছি ... ...
ওরা বিমানবন্দরে নেমেই একটা গাড়ি ভাড়া করে ফেলল তিনদিনের জন্য। আর জার্মানি থাকতেই ওরা এয়ারবিএনবির মাধ্যমে একটা বাড়ি ভাড়া করে ছিল। গাড়ি নিয়ে সোজা বাড়িতে গিয়ে উঠলাম। এগুলা সবই আমার জন্য নতুন। ছোট্ট একটা বাড়ি, ঘরের ভিতরে প্যাঁচানো সিঁড়ি। নিচে বসার ঘর, রান্নাঘর আর বাথরুম। উপরে শোয়ার ঘর। ছোট্ট জায়গায় এমন কায়দা করে বাড়ি বানিয়েছে যে সব সুন্দর করে সুন্দর হয়ে গেছে। বাসা বুঝে নিয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলাম। এবং আমি পড়লাম বিপদে! ... ...
এই বোরখা হিজাব নিয়ে নতুন তাণ্ডব ঠিক এখনই কেন? ... ...
পর্ব ১-------( লালগড় সম্প্রতি ফের খবরের শিরোনামে। শবর সম্প্রদায়ের সাতজন মানুষ সেখানে মারা গেছেন। মৃত্যু অনাহারে না রোগে, অপুষ্টিতে না মদের নেশায়, সেসব নিয়ে চাপান-উতোর অব্যাহত। কিন্তু একটি বিষয় নিয়ে বোধ হয় বিতর্কের অবকাশ নেই, প্রান্তিকেরও প্রান্তিক এইসব মানুষজনের বেঁচে-থাকার কিস্যা, খেতে পাওয়া- না পাওয়া, রোগ হওয়া-না হওয়া, রোগ হলে ওষুধ পাওয়া-না পাওয়া,নেশা করা-না করার কাহিনীতে আমাদের, মূলস্রোতের নগরবাসীদের তেমন কিছু এসে যায় না ; আমরা, নাগরিকেরা, প্রান্তের প্রতি,লালগড়-আমলাশোলের প্রতি ঠিক ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২১. বুকটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে। আহা রে - মরে গেছে নাকি! তার শুয়ে থাকার ভঙ্গি - পিছনে ঘুরঘুর করা কুকুর দেখে আচমকা মনে পড়ে যায় সুদানের দুর্ভিক্ষের ওপর তোলা, দক্ষিণ আফ্রিকার ফটো-জার্নালিস্ট কেভিনের ছবিটির কথা - The Struggling Girl. ছবিটি ১৯৯৪ সালের মার্চে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিল। কেভিনের জন্ম আমার দশদিন আগে কিন্তু আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে সে স্বেচ্ছায় চলে গেছে এই ধরাধাম ছেড়ে। পুরস্কৃত হওয়ার চারমাস পরেই সে আত্মহত্যা করে। ব্যক্তিগত দারিদ্র্যর সাথে সুদানের মর্মান্তিক দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ্য করার মর্মপীড়া হয়তো তাকে ঠেলে দিয়েছিল জীবনের কিনারায়। ছবিটি দেখলে আমার একটাই ক্যাপশন মাথায় আসে - The waiting vulture. তবে কেভিনের ছবিটির মতো ধৈর্য্যসহকারে অপেক্ষারত মরা মাসখেকো হুডেড ভালচার নয় - সমাজে চতুর্দিকে ছড়িয়ে আছে নানা পোষাক পরা শকুন, তাদের তীক্ষ্ম নির্মম ঠোঁটে বহুকিছু ছিঁড়ে খেতে - জীবিকা - জীবন - সম্মান। তাদের কেউ কেউ দৃশ্য - অনেকেই অদৃশ্য ... ...
বর্ধমানের বাইরে ‘সরুচাকলি’ জিনিসটা কতটা পরিচিত আমার জানা নেই। কিন্তু বড়ই উপাদেয় সেই জিনিস, বিশেষ করে শীতের দিনে। গরম তাওয়ায় তেল বুলিয়ে তাতে বাঁটা চাল আর বাঁটা কলাই একসঙ্গে গুলে তালপাতার টুকরো দিয়ে গোলাকার করে দিতে হয়। তারপর একদিকটা রান্না হয়ে গেলে, খুন্তি করে উলটে দেওয়া। আমরা শীতের দিনে খেজুর গুড়ের সাথে খেতাম এই জিনিস – বিশেষ করে ছোটরা। আর বড়রা দেখেছি সরুচাকলি-র সাথে বাঁধাকপির তরকারির কম্বিনেশন দিয়ে রাতের খাবার বলে চালিয়ে দেয় শীতের সিজনে। ... ...
হরিদাস পাল নামক পাতাটি কি?এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। ... ...