বাবা কুঞ্জন আর মা থাইথারা মানি সাধ করে নয়, জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবেই আদরের ছোটো মেয়েটির জন্মের পর নাম রেখেছিলেন দাক্ষায়ণী অর্থাৎ দক্ষের কন্যা দুর্গা। এই শ্রুতিমধুর নামটি যুগ যুগ ধরে কোচিন-ত্রিবাঙ্কুরের জাতে-বর্ণে শতধা বিভক্ত সমাজে কেবল উঁচু বর্ণের সম্পত্তি হয়েই রয়ে গেছিল! উচ্চবর্ণের জন্য নির্দিষ্ট নাম নিজের সন্তানকে দেওয়ার সাহসই পুলায়াদের হয়নি কখনো। প্রতিবাদী নামটিকে আক্ষরিক অর্থে সার্থক করে তোলার জন্যই যেন জন্ম হয়েছিল দাক্ষায়ণীর। ... ...
করোনার দুই ঢেউএর অন্তর্বর্তী সময়। মালবিকা আর ত্রিদিবের জীবন.... ... ...
অদিতি ঘুরে ফিরে আসে চেতনায়। দেবরূপ আমেলিয়ার কাছে গিয়ে বসে। ল্যাবে যায়। অথচ অবশ হয়ে থাকে তার স্নায়ু। কোভিডের ভ্যারিয়ান্টস নিয়ে তার কাজ। ... ...
এই জীবনের আসা যাওয়ার পথের ধারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে খ্যাতনামা কিছু মানুষের সঙ্গে সামান্য সময়ের জন্য সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে । তাঁদের কাউকে চিনেছি কেবল কাজের সূত্রে , ঘটনাচক্রে হয়েছি সম্মুখীন। কোন ভালোলাগার মানুষকে পেয়েছি মুখোমুখি, নিতান্ত কপালগুণে । তাঁদের কথা নিয়েই শুরু করছি ' কিছুক্ষণ' পর্যায়ের কিছু লেখা । দেব আনন্দের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ঝরিয়া ( সে আমলে বিহার,আজকের ঝাড়খণ্ড)শহরের বিহার টকিজ সিনেমায় ; তৎকালীন বিহার প্রদেশের একমাত্র শীততাপ নিয়ন্ত্রিত চিত্রগৃহ। ছবির নাম সি আই ডি। একা সিনেমা দেখার স্বাধীনতা পেতে অনেক দেরি কিন্তু হোলি হ্যায় এই আওয়াজ তুলে পাড়ার বড়োদের সঙ্গে কিছু বালকের দলে আমিও ভিড়ে গেছি; টিকিটের লাইন হলের পেছন দিকে একটা লম্বা খাঁচায় , সেখানে গরমে ঘামে জামা ভিজে যায় । সে যাবত বাবা মায়ের সঙ্গে একটি মাত্র হিন্দি সিনেমা দেখে জেনেছি রাজ কাপুর নামক ভদ্রলোক জাপানি জুতো এবং ইংরিজি প্যান্ট পরেন – ছবির নাম শ্রী ৪২০। এবার রুপোলী পরদায় আমার সামনে আবির্ভূত হলেন দেব আনন্দ - ‘আঁখো হি আঁখো মে ইশারা হো গয়া ‘ সে ইশারা তিনি অভিনেত্রী শাকিলাকে করছিলেন কিন্তু সেই সঙ্গে আমার মন জয় করে নিলেন। ... ...
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। কাজ ছাড়া 'কাজের মেয়ে'। ... ...
হ্যারি বেলাফন্টেদের কাছে সময় হার মানে...সবসময়!! ..আর জিতে যায় ক্লান্ত ক্লান্তিহীন মানুষের নিয়ত ভেসে চলার গান!! ... ...
নতুন এ রচনা। গন্ধ নিয়ে। গন্ধ মানে সৌরভ, গন্ধ মানে পারিফিউম, গন্ধ মানে কলকাতায় দিনমানে চলা কর্পোরেশনের জঞ্জাল ফেলার গাড়ি, গন্ধ মানে শেষযাত্রার অগুরু, গন্ধ মানে ধুপ-ধূনো, গন্ধ মানে মায়ের খোলা চুল। এমন কতো কিছুই। আপনাদের উৎসাহ পেলে ভরসা বাড়বে। ... ...
আমরা সবাই – মানে ছ’জনই - তো পরীক্ষা আর রেজাল্টের মাঝখানে ঝুলে আছি। আমাদেরই এক জন যে আরও একটা ব্যাপারে দিল্লি আর কলকাতার মাঝে ঝুলে আছে তা আর কে জানত। আর সেই ঝুলে থাকা মানে টেনিদার ভাষায় ‘পুঁদিচ্চেরি’ – মানে ব্যাপার অত্যন্ত সাংঘাতিক । অফিসের একজন বলেই ফেললেন যে এটা একেবারেই ‘অবিশ্বাস্য’। একেবারে জীবন আর মৃত্যুর ব্যাপার, ‘লাভ’ আর লোকসানের ব্যাপার। ... ...
এই ঘটনা শুরু আরও কয়েকদিন আগে থেকে। বাংলাদেশ থেকে নতুন দুইজন এসেছেন আমাদের কোম্পানিতে। তারা যে এজেন্টের মাধ্যমে এসেছেন আমি সেই একই এজেন্টের মাধ্যমে এসেছি। আমাকে বলা হল আমি যেন এই দুইজনকে আমাদের সাথে রাখি, খাওয়া দাওয়া আমাদের সাথে করাই। আমার সঙ্গী রাজি ছিল না। আমার মনে হল আমরা যখন প্রথম আসছিলাম তখন আমরা নানাজনকে বলছিলাম যে তাদের সাথে যেন আমাদের রাখে, এক সাথে খাওয়া দাওয়া রান্নাবান্না করে খাব। কেউ রাজি হয়নি। তখন আমার খুব খারাপ লেগেছিল। আমি সেই কথা চিন্তা করে বললাম, ঠিক আছে, উনারা থাকুক আমাদের সাথেই। ... ...
ভালো লাগবে না এরকম কবিতা সবাই লিখতে পারে না ... ...
দেবরূপ দিল্লিতে। কৃষক আন্দোলন ও কোভিডকালে। ... ...
বিদেশের প্রভাব ! অ্যাঁ ! ... ...
যুদ্ধ বা সামাজিক পরিবর্তন কি শিল্পকে পালটায়, না শিল্পীকে পালটায়? নাকি কোনো কিছুই পালটায় না, সবই সাময়িক? ... ...
আমাদের প্রথম চিন্তাই, আরে ওরা বাংলা বলবে? কী আশ্চর্য! 'আমনে আমাত্তে বেশি বুঝেন' আমাকে বুঝাল আরে আমরা হিন্দি পারি, এইটা আমদের একটা কৃতিত্ব না? ওরা একটা ভাষা জানে বা ইংরেজি সহ দুইটা জানে, আমরা ইংরেজি সহ তিনটা জানি, এইটা ভাল না? অবশ্যই ভাল! এর চেয়ে ভাল উত্তর আর কী হতে পারে? ... ...
"অমরত্বের প্রত্যাশা নেই , নেই কোনো দাবী-দাওয়া , এই নশ্বর জীবনের মানে শুধু তোমাকেই চাওয়া..." রাস্তায় চলতে চলতে অবচেতনে মনে আসছিল ভ্যান গঘের জীবন, জানি না কেন 'জাতিস্মর' গানটাই ভেসে উঠছিল তার সঙ্গে। ১৮৫৩ থেকে ১৮৯০ - একটা লোকের মাত্র ৩৭ বছরের জীবন,যে হঠাৎ তার ২৭ বছর বয়সে আবিষ্কার করে ফেললো যে সে শিল্পী হতে চায়, চিত্রশিল্পী; আর ঠিক পরের দশটা বছর সেই চিত্রশিল্পই তার নশ্বর জীবনকে এনে দিল অমরত্ব! মিউজিয়ামের চারতলায় ধাপে ধাপে হলঘরের মত স্টুডিও-তে যত্ন করে সাজিয়ে রাখা ছবির সম্ভার, অধিকাংশ-ই ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের, তবে বেশ কিছু ছবি আছে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত মুহুর্তের আর মানুষের যেমন পল গগ্যাঁ, বার্নার্ড, কোনিং প্রমুখের। ... ...
খাবার আসতে দেরী আছে বলে উইলিয়ামকে গণার চপের গল্প শোনানো গেল। মেমারী স্টেশন বাজারে পুরানো দিনে নীরেন ময়রার দোকানের পাশে বিকেলে গণা এক ট্রে ভেজিটেবল চপ বিক্রী করত। সেই ট্রে খালি হতে আধ ঘন্টা আর প্রচুর খদ্দের ফিরেও যেত। কিন্তু গণা কোনদিন এক ট্রের বেশী চপ বানালো না! যত সহজে লিখলাম উইলিয়ামকে ভেজিটেবল চপ বোঝানো তত সহজ ছিল না। চপের ইংরাজি কি?? সে বোঝাতে গিয়ে যা সময় লাগল তাতে ধাড়ি ছাগলের মাংস কড়াইয়ে সিদ্ধ হয়ে যাবে! এবং সেই ততক্ষণ বাদেই সেই মেয়ে এই কারী এনে দিল! এক চামচ খেয়ে উইলিয়ামকে বললাম, নারকেলের দুধ আর কাজু মেশালেই কি আর থাই রান্না হয়! এর থেকে নিমোর তাপস, লাল্টু বা মুকুল অনেক ভালো রান্না করে! উইলিয়াম জানতে চাইল মুকুল কি কোন বড় শেফ? তাকে জানালাম মুকুলের গল্প করতে গেলে রাত কাবার হয়ে যাবে, এখন খিদের মুখে সেসব হবে না। তবে এটা জেনে যাও মদের চাট বানাতে মুকুলের ধারেপাশে কেউ আসবে নে! ... ...
উত্তম পুরুষে উপস্থিত করা নিচের বিবরণটা ২০০১ সালের মে মাসে হিমালয় পর্বতমালা'র বহু উঁচুতে এক তীর্থকেন্দ্রে যাওয়ার অভিজ্ঞতাকে ঘিরে। ছোট বোন মালবিকা'র (সেনগুপ্ত) এই অভিজ্ঞতার কাহিনী তার মুখে শুনে তারই নিজের জবানীতে এই বিবরণী প্রস্তুত করে উপস্থিত করছি আমি, তার বড় ভাই সুভাষ চন্দ্র গাঙ্গুলী। সুদূর অতীত থেকে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তীর্থযাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার কাজে স্ব-নিয়োজিত শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর এক জনের জীবনদায়ী দরদের এই কাহিনী অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার উপযুক্ত বলে মনে হয়েছে, যদিও এমন এক নাড়িয়ে দেওয়া অভিজ্ঞতাকে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে ভাষার সীমাবদ্ধতা পুরোপুরি এড়ান সম্ভব নয়। এমন কারও কারও মনে হতেই পারে যে এই গোত্রের কাহিনী প্রায়ই ভুলে যাওয়া এমন এক বার্তা/বাণী বহন করছে যা উচ্চনিনাদে স্ব-ঘোষিত ভাবে জনতার মঙ্গলের জন্য নিবেদিত দল /সংগঠন ইত্যাদির মধ্যকার চালু পারস্পরিক বিতর্ক-তথা-বিবাদ-বিসম্বাদের আওতার বাইরে। ... ...