দেশপ্রেমীঃ সীমান্তে সেনারা মারা যাচ্ছে আর তুমি দেশের জন্য একটু লাইনে দাঁড়াতে পারবেনা? নির্লজ্জ! জেএনইউ! দেশদ্রোহী! জেএনইউ ছাপ ২ঃ ভাই, দশ টাকা ধার হবে? চা খাবো। যাদবপুর ছাপঃ ভাই, দশ টাকা ধার হবে? চা খাবো। পোতিবাদ করে গলা শুকিয়ে গেছে। ... ...
গাঁজা গাছের ডগার কচি পাতাগুলোকেই সিদ্ধি পাতা বলে। সেই পাতা সরবত করার আগে বারবার খুব চটকে চটকে ধুয়ে নিতে হয়। সব কষ বেরিয়ে গেলে পাতা ধোয়া জল একেবারে স্বচ্ছ হয়ে যায়। তখন সেই পাতা বেটে সরবত বানানো হয়। পাতা বাটার সঙ্গে আরও কয়েকটা জিনিস বাটতে হয়, যেমন – গোলমরিচ, চারমগজ আর মৌরি। এই বাটাটা একেবারে চন্দনের মত মিহি করে বাটতে হয়, তারপর ছেঁকে নিতে হয়, যাতে কোনো দানা না থাকে। এখন মিক্সার গ্রাইন্ডারের যুগে মিহি করে বাটা খুব সহজ, তবে যে যুগের কথা বলছি, তখন তো যন্ত্রের ব্যাপার ছিল না। শিলনোড়ায় মেয়েদের হাতের জোরেই এসব কিছু করতে হত। এর সঙ্গে পরিমাণমত দুধ, চিনি আর জল মিশিয়ে পাতলা সরবত বানানো হত। এতে ওষধি গুণ আছে, ঘুম এসে যায়। দশমীতে এই সিদ্ধির সরবত বানানো খুব প্রাচীন প্রথা। কি জানি, আমার মনে হয়, .... ... ...
ভারি মুশকিল হল তো। অনেক বছর আগে একবার যেদিন সংসদে জঙ্গি হামলা হল, সেদিন সবাই মিলে ঘরে ঘরে, ল্যাবরেটরিতে আঁতিপাঁতি খুঁজে সব ছাত্রছাত্রীকে বাইরে বার করে বাড়ি পাঠিয়েছিলাম। ছেলেমেয়েগুলো অনেকেই রেলপথে দূর থেকে আসে। কখন কী ঘটে যায় আশঙ্কা ছিল। এখন তো সেসব কিছু হয়নি রে বাবা। দাঙ্গা-হাঙ্গামা দূর, মারপিটও হয়নি কোথাও। চারদিক শান্ত। অসুখের জন্য কলেজ বন্ধ হয় – এ কেমন অসুখ! আশ্চর্য তো। ... ...
লেখককে তো ইতিহাসসচেতন হতেই হয়। না হলে কীভাবে তিনি এই সভ্যতার, মানুষের মানুষ হয়ে ওঠার কথা লিখবেন। মানুষ কত দীর্ঘপথ পাড়ি দিল। কত ধর্মযুদ্ধের নামে অন্যায় যুদ্ধ, এখনও ডাইনির মাংসপোড়া গন্ধে উল্লাস শোনা যায়, কত সাম্রাজ্যের উত্থানপতন হল। এসব কিছু মন্থন করে জীবনের রহস্যময়তার কথা, কোনও এক সার সত্যের সন্ধান করে যান লেখক। পুরাণের নতুন পাঠ, মঙ্গলপাঠের নবনির্মাণ, যে পাশ্চাত্য লেখনরীতিকে মডেল করে একসময় আধুনিকতার সংজ্ঞা ঠিক করা হয়েছিল, তাকে অতিক্রম করে দেশজ পাঁচালি, ব্রতকথা, পুরাণ, মঙ্গলকাব্যের বিনির্মানের মধ্য দিয়ে,আমাদের লোককথা, উপকথাকে নতুন আঙ্গিকে লিখছেন অনেকেই। অন্যরকম শৈলীতে যারা লিখছেন, তাদের ভেতর রবিশঙ্কর বল, রামকুমার মুখোপাধ্যায়, গৌতম সেনগুপ্ত উল্লেখযোগ্য। ... ...
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বের ভুল হল, যখন পরিকল্পনা বহির্ভূত কিছু ঘটনা ঘটেই গেছে তখন জোরেসোরে তার সমর্থনে দাঁড়ানো উচিত ছিল। এভাবে তাঁরা অন্তর্ঘাতকে গিলে হজম করে নিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে সহসা তাঁরা কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গেলেন। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস সহসা অতিরিক্ত শঙ্কায় বদলে গেল। ... ...
সে ছেলে দাবি করেছিল, যে তারা নাকি পরিবেশপন্থী, খুব সন্তর্পণে সব কিছু বাছাই করে। খুব ভালো লাগল শুনে – অর্ডার করেছিলাম। কিন্তু যে ডিশ নামাল সামনে, তাই দেখে আমি সেই ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম – “এই তোমাদের পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা?” বাঁধাকপিগুলোকে বাড়তে দেয়নি পর্যন্ত! কুঁড়ি ছিঁড়ে নিয়ে প্লেটে সাজিয়ে দিয়েছে! আর সিদ্ধ বাঁধাকপি – সে কেমন খেতে? তা আর নাই বা বললাম! আমাদের কালো জার্সি গরুটা পর্যন্ত শেষ বয়েসে মুখ ঘুরিয়ে নিত এ জিনিস দেখে! ডিসক্লেমার: অনেকে আবার দাবি করেন, এগুলোকে বাঁধাকপির কুঁড়ি না, ব্রাসেলস্ স্প্রাউট বলে! চাষার ছেলে তো, অত কি আর বুঝি! ... ...
বড়দাদীর রান্নার স্বাদ এ পাড়ার সবার কাছেই অনন্য। আর বড়দাদী রাঁধেনও খুব যত্ন করে। সবার আগে উনুনে বসল একটা মাটির বড়মুখের হাঁড়ি। তাতে বড়দাদী ঢেলে দিল অনেকটা সর্ষের তেল। সেই তেলে ফোড়নে পড়ল তেজপাতা আর পাঁচফোড়ন। একটু নেড়েচেড়ে তাতে বড়দাদী মুঠো ভরে পেঁয়াজ কুচোনো দিয়ে দিল। এদেরকে লাল করে ভাজার ফাঁকে কতগুলো কাঁচামরিচও দিয়ে দিল বড়দাদী। পেঁয়াজের সাথে সাথে হাঁড়ির মরিচগুলোও রঙ বদলাতে শুরু করলো। বড়দাদী এবার আদা, রসুন বাটা দিয়ে দিল। একটু সময় পরেই তাতে পড়ল জিরাবাটা। সাথে লাল টকটকে শুকনো মরিচ বাটাও পড়ল খানিকটা। ... ...
১) সংরক্ষণ কি দারিদ্র্য রোগের সঠিক ওষুধ? ২) ভারত জোড়ো যাত্রা অনেক কিছু বদলে দিয়েছে ... ...
এই মিথ্যা প্রমাণের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন এই সত্য অনুধাবন করা যে, বরাক উপত্যকার মুখ্য ভাষা প্রথমাবধি (স্বাধীনতার অব্যবহিত আগে ও পরে) বাংলা। ১৮৭৪ সালে সিলেট ও গোয়ালপাড়া জেলাকে আসামের সঙ্গে বাংলা থেকে বিযুক্ত করে আসামের সঙ্গে সংযুক্ত করলেও স্বাভাবিক ভাবেই এতকালের বাংলাভাষী মানুষ রাতারাতি অসমীয়া হয়ে যেতে পারেনা। এদিকে বাংলাভাষীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আসামের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে। নিজেদের ভয়, অসমিয়া তৎকালীন নেতৃত্ব অসমিয়াদের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে। ... ...
উৎসাহী পর্যটক গোটা অঞ্চলটির গায়ে লেপে দেন একটিই নাম—দার্জিলিং। নস্টালজিয়ায় ভরপুর অনেক রোমান্টিক যাতায়াতের পরেও তাঁর নজরের বাইরেই থেকে যায় সেই পাহাড় জুড়ে নিজ নিজ ভাষা, সংস্কৃতি, বঞ্চনা, ক্ষোভ নিয়ে বেঁচে থাকা বিবিধ জনগোষ্ঠীর একদিন প্রতিদিনের বাস্তব। সেইসব মানুষের কথা। নেপালি ভাষায় লেখা উপন্যাস—ফাৎসুঙ্। লেখক ছুদেন কাবিমো। বাংলা তরজমায় পড়লেন বিমল লামা ... ...
সভ্যতার বহু অর্জনই দারিদ্রের দান। পরিমিত সম্বলকে বাঁচিয়ে গুছিয়ে কালকের দিনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মানুষ কালাতিপাত করেছে এযাবৎ ইতিহাস জুড়ে। আর তার মধ্যে দিয়েই বিকশিত হয়েছে তার সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারা। মানুষের ইতিহাসের সেরকমই এক উপাদান পান্তাভাত। উপনিষদের ঋষি ব্রহ্মের অন্নরূপে আরাধনার মন্ত্র দর্শন করেছিলেন, সূর্যের আহ্নিক গতির পর্যায় অতিক্রম করে ব্রহ্মের সেই তেজ বিচ্ছুরিত হয়েছে হাঁড়িতে তুলে রাখা পান্তায়, তার আমানি জলে। আধুনিক বিশ্বের দরবারে পান্তাকে পেশ করে সেই ইতিহাসের এক ঝাঁকি দর্শন করিয়েছেন মাস্টার শেফ কিশোয়ার চৌধুরী। এই পর্বে খানিক অবগাহন করা গেল পান্তার পাতিলে। ... ...
আব্দেল্লাতিফ লাবি। মরক্কোর প্রথম সারির কবি। লেখেন ফরাসি ভাষায়। বহু পুরস্কারে সম্মানিত। কিন্তু দীর্ঘকাল মরক্কোর শাসকশ্রেণির চক্ষুশূল। ফলত প্রথমে আট বছর কারাবাস ও পরে নির্বাসন। তিরিশ বছর দেশছাড়া হলেও মরক্কো তার কবিতার প্রতিটি শব্দে, প্রতিটি উচ্চারণে। লিখছেন পার্থপ্রতিম মণ্ডল ... ...
লোকায়ত প্রভাবের জন্য অথর্ব বেদে অসুর, প্রেত ইত্যাদির প্রাধান্য ছিল। এজন্য এসময় অব্দি প্রধানত ছিল আয়ুর্বেদ ছিল “দৈব ব্যাপাশ্রয় ভেষজ”। পরবর্তীতে বৌদ্ধধর্মের প্রভাবে এবং আরো অন্যান্য আনুষঙ্গিক কারণে আয়ুর্বেদে ধীরেধীরে ত্রি-দোষ তত্ত্ব এলো – বায়ু, পিত্ত ও শ্লেষ্মা। এ তত্ত্বে রোগের উদ্ভব দেহের অভ্যন্তরে বলে বিবেচিত হল, কোন ভূত-প্রেত বা অজানা শক্তির বাহ্যিক প্রভাবে নয়। উত্তরণ ঘটলো “যুক্তি ব্যাপাশ্রয় ভেষজ”-এ। এখানে বায়ু, পিত্ত ও শ্লেষ্মার প্রকোপ হ্রাস ও বৃদ্ধির সাথে খাদ্য ও অনুপানের নিবিড় সম্পর্ক চিকিৎসকেরা গভীরভাবে অনুধাবন করলেন। উদ্ভিদ জগতের প্রায় সমস্ত ভক্ষ্য বস্তুর মধ্যে এই শাকগুলোও ছিলো। (প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হবে, প্রাণীজ ঔষধির মধ্যে মোষ, গরু, বরাহ, ময়ূর, খরগোশ, বেজি ইত্যাদি সমস্ত প্রাণীর মাংস খাবার নির্দেশ রয়েছে চরক সংহিতায়, বিভিন্ন রোগ সারিয়ে তোলার জন্য।) লৌকিক বিশ্বাসে কিছু উদ্ভিজ খাদ্য দেহের উপকারের জন্য গৃহীত হল। পিতৃপুরুষের মঙ্গলকামনায় এবং খারাপ ভূতদের তাড়ানোর জন্য এরা প্রচলিত হল ১৪ শাক হিসেবে। ... ...
নতুন কী লিখবো বলুন তো! আমি আপনাকে স্টেজে দেখিনি, আপনার নাকতলার দেড়তলা বাড়ির আড্ডা, দীপক মজুমদারের ‘বিসর্জন’-এ রঘুপতি আপনি, বাউলের আপনি, স্যাক্সোফোনের আপনি- কোনোটাই আমার জানা-চেনা নেই। আপনার বানানো ডকুমেন্টারি, ‘সময়’, ‘নাগমতী’ও দেখিনি।এদিক-ওদিক থেকে কুড়িয়ে পেয়েছি ডিজিটাইজড কয়েকটুকরো মহীন, অ্যালবামের সঙ্গে বেরোনো বই, লাইভ শোয়ের রেকর্ডিং, আর চেনাশোনা লোকজনের কাছ থেকে মহীন-মিথের ভাষ্য, এতেই হাতড়ে হাতড়ে বোঝার চেষ্টা করি। বেসিক্যালি, আপনাকে নিয়ে, আপনাদের নিয়ে একটা লাইন লেখার জন্য আমি কোয়ালিফাই-ই করি না, অনেস্টলি। প্লাস, এগুলো নিয়ে এত এত কথা হয়ে গেছে... তবু, আপনাকেই মুরশিদ মানি, তাই, দু’হাজার সালের বইমেলায় ‘গৌতম’ বেরোনোর পাক্কা তেরো বছর পর আরেকটা বইমেলায়, কয়েকটা প্রশ্ন করি? উত্তর পাওয়ার জন্য ... ...
এইভাবে হাজার লেখালিখি ও ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং-উত্তর চক্রাকারে একই যুক্তির বারংবার সম্মুখীন হয়ে চলার হতাশাতেই অর্জুনপুত্র অভিমন্যু নিজের কুরুক্ষেত্র অ্যাকাউন্টটি ডিঅ্যাক্টিভেট করতে বাধ্য হয়। তার পর মনের দুঃখে সে অধুনা হরিয়ানার আমিন গ্রামের কাছে দুর্গ বানিয়ে একা একা থাকতে শুরু করে। আর কোনোদিন সে কোনো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রোফাইল খোলেনি। ... ...
‘কার আবেদনে আমি এখানে এসেছি জানেন? সুভাস চন্দ্র বসু। ১৯৩৮ সালে তিনি যখন কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন আবেদন করেছিলেন চিনের মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসক ভলান্টিয়ার চেয়ে। কলকাতায় আমাদের বিদায় নেওয়ার সময়ে হাত ধরে বলেছিলেন, আপনারা যাচ্ছেন এক পরাধীন দেশ থেকে আরেক পরাধীন দেশে। তাঁদের স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশ নিতে। তাঁদের জানাবেন এই মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যেক ভারতবাসী চীনাদের পাশে আছেন। আমাদের দেশও খুব তাড়াতাড়ি স্বাধীন হবে। তারপর স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এশিয়ার এই বিশাল দুটি দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন হবে।’ অন্য চারজন ভারতীয় চিকিৎসক দেশে ফিরে গেলেন। বিদায়ের সময় নতুন চীন সরকার তাঁদের বিপুল সংবর্ধনা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেন। ডাঃ কোটনিস থেকে গেলেন। তিনি যোগ দিলেন ডাঃ বেথুন আন্তর্জাতিক শান্তি হাসপাতালের প্রধান হিসাবে। ... ...