খিচুড়ির পূর্বজ কৃসর-র খোঁজে ভরতমুনির রুদ্ধশ্বাস নাট্যশাস্ত্র পার করে এবার পার করতে হবে মনুর ধর্মশাস্ত্র—মনুষ্য রসনাকে একদিকে ভয় অন্যদিকে লোভ দেখিয়ে শৃঙ্খল-বদ্ধ করার সে রোমহর্ষক প্রয়াস। খাবার রইল না কেবলই পেট-ভরানোর বস্তু, তা হয়ে গেল একটা বিশেষ আর্থসামাজিক ব্যবস্থা কায়েম রাখার অন্যতম হাতিয়ার। সেই খাদ্যাস্ত্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে কৃসর। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
আজকের গল্প ভিয়েতনামের সেই লাঙ-কো টাউ এলাকার ফ্লোটিং রেস্টুরান্টে খেতে গিয়ে। বড়ই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জায়গা – ভৌগোলিক ভাবে দেখতে গেলে এই জায়গাটা হচ্ছে মধ্য-ভিয়েতনামের একদম পূর্বদিকে, লাপ-আন লাগুন এবং ভিয়েতনাম-সি এর মাঝখানে। এই গোটা এলাকাটাই সি-ফুড এর জন্য বিখ্যাত। আপনি ওই ফ্লোটিং রেস্টুরান্টে খেতে গিয়ে অবশ্যই যা ইচ্ছে খেতে পারেন সি-ফুড ছাড়াও – কিন্তু সি-ফুড না খেলে জার্নি অসম্পূর্ণ থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস। কত সিম্পল ভাবে রান্না করে সি-ফুডে স্বর্গীয় স্বাদ আনা যায়, তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া না এলে ঠিক বোঝা যায় না। এখানে বেশ কিছু ফ্লোটিং রেস্টুরান্ট আছে – তবে লাঙ-কো কিন্তু বিখ্যাত তার সেই বিস্তৃত সাদা বালির বিচের জন্যও। তা দেখতে অপরূপ – গোটা জায়গাটা আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে ছোট ছোট পাহাড়ের মতো থাকায়। এখানেই কিছু দূরে আছে বাখ-মা্ ন্যাশনাল পার্ক – পাহাড়ের আশেপাশে কিছু উঁচুতে উঠলে আপনি পেয়ে যাবেন প্যানোরামিক ভিউ! দেখে চক্ষু জুড়িয়ে নিতে পারেন খাওয়া দাওয়ার পরে – ... ...
মালয়েশিয়ার সমুদ্র তীরবর্তী সব শহরেরই সমুদ্রের ধারে পেয়ে যাবেন আপনি স্ট্রিট-ফুড বা হকার-ফুড, যা সত্যিকারের প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সন্ধ্যে নামার পর। প্রায় সারি দিয়ে বিচের ধার ঘেঁসে আপনি অসংখ্য ফুড-স্টল পেয়ে যাবেন। অনেকে লাইভ বারবিকিউ করছে দেখতে পাবেন। খুবই সিম্পল ব্যাপার – সাধারণ টেবিল একদম সার দিয়ে বসানো, তাতে প্লাস্টিকের টেবিল ক্লথ দেওয়া। যাতে তাড়াতাড়ি টেবিলের টার্ন-ওভার হয় – আপনার খাওয়া শেষ হল, টেবিল ক্লথ পাল্টাবার কোন চাপ নেই। কেউ এসে প্লেট উঠিয়ে নিয়ে ঝটপট করে মুছে দিল টেবিল – আপনি বসে পড়লেন। প্লেট-ও খুব সিম্পল। আপনাকে একটা প্লেট দিয়ে যাবে – বেশির ভাগ সময়েই এগুলো প্লাস্টিকের – আর সাথে দেবে ন্যাপকিনে জড়ানো একটা চামচ এবং কাঁটাচামচ। ... ...
কনফারেন্সে এমন জবরদস্ত লাঞ্চ হলে, তার নেগেটিভ দিক হচ্ছে, লাঞ্চের পরের টকগুলোতে খুব কম লোক হাজির হবে। যারা হাজির হবে, তারাও অনেকে ঢুলবে! আমাকে দু’একবার কোন কোন সেশনের চেয়ারম্যান হতে হয়েছিল, তাই স্টেজ থেকে একদম সামনা-সামনি দেখি অডিয়েন্স কেমন ঢুলছে! আর যদি কোনো সরকারি কোম্পানির বড় কর্তা টক দেয়, তো রুম ভরে যাবে – সেই ভরা রুমে লোকে ঢেকুর তুলছে, কেউ নিঃশব্দে বাতকর্ম করে দিল ধরুন – মাটন রোগান জুসের ঢেকুর বা পাদের গন্ধ কি আর রুম ফ্রেশনার দিয়ে আটকানো যায়! ... ...
আচ্ছা এটা মনে রাখবেন, যে হট পটের সাথে ওই ফন্ডু বলে যে জিনিসটা আছে – তার একটা বেসিক পার্থক্য আছে। হট পটে আপনি খাবার বানাবেন বা ফোটাবেন একটা জলীয় স্যুপে – আর ফন্ডুতে রান্নার তেল ব্যবহার করা হয়। হট পটের স্ট্যান্ডার্ড রান্নার উপাদানগুলি হল – খুব পাতলা করে কাটা মাংসের টুকরো, সবুজ পাতার সবজি, মাশরুম, নানা প্রকারের ন্যুডল্স্, কাটা আলু, টফু, নানাবিধ বিনস্, মাছ বা সি-ফুড। এই সব উপাদানই সরু সরু করে কাটা থাকে – তা না হলে ওই মৃদু আঁচে ফুটতে থাকা স্যুপে সিদ্ধ হয়ে খাওয়ার মত হতে রাত হয়ে যাবে! তা ছাড়া এক্সট্রা সস রাখা থাকে পাশে – আপনি নিজের ইচ্ছেমতন খাবার স্পাইসি বানিয়ে নিতে পারবেন সিদ্ধ হয়ে যাবার পর। ... ...
ঠাকুমা কলতলা থেকে এসেই স্টোভের আঁচ বাড়িয়ে দিল। পুঁইয়ের কচি ডগাগুলো হাত দিয়ে ভেঙে নেয় ঠাকুমা। লোহার কড়াইয়ে সেই পুঁইয়ের পাতাডগা, হলুদ, লবণ আর কাঁচামরিচ ফেলে ঠাকুমা তাতে ঢেলে দিল অনেকটা সর্ষের তেল। আলতো নয়, বেশ জোর দিয়েই ঠাকুমা তা মাখাতেই পুঁইয়ের পাতাডগা সব এলিয়ে পড়ল। ঠাকুমা এবার তার উপরে শুইয়ে দিল কতগুলো ইলিশমাছের চাকা। হাত-ধোয়া জল জড়িয়ে গেল মাছগুলোর গায়ে। ... ...
সভ্যতার বহু অর্জনই দারিদ্রের দান। পরিমিত সম্বলকে বাঁচিয়ে গুছিয়ে কালকের দিনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মানুষ কালাতিপাত করেছে এযাবৎ ইতিহাস জুড়ে। আর তার মধ্যে দিয়েই বিকশিত হয়েছে তার সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারা। মানুষের ইতিহাসের সেরকমই এক উপাদান পান্তাভাত। উপনিষদের ঋষি ব্রহ্মের অন্নরূপে আরাধনার মন্ত্র দর্শন করেছিলেন, সূর্যের আহ্নিক গতির পর্যায় অতিক্রম করে ব্রহ্মের সেই তেজ বিচ্ছুরিত হয়েছে হাঁড়িতে তুলে রাখা পান্তায়, তার আমানি জলে। আধুনিক বিশ্বের দরবারে পান্তাকে পেশ করে সেই ইতিহাসের এক ঝাঁকি দর্শন করিয়েছেন মাস্টার শেফ কিশোয়ার চৌধুরী। এই পর্বে খানিক অবগাহন করা গেল পান্তার পাতিলে। ... ...
বাংলার মঙ্গলকাব্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন যুগের সাহিত্য, লোকাচার, প্রবাদ-প্রবচনে নানা ভাবে আমরা পান্তাভাতের উল্লেখ পাই। সাহিত্য ছাড়াও সপ্তদশ শতকের নথিপত্রেও এর হদিস রয়েছে। আর তা থেকে সমসাময়িক আর্থ-সামাজিক চিত্রটি আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ প্রচলিত প্রবাদে আমরা এটাকে গরিবের খাবার বলেই জানি। কিন্তু পান্তাভাত যে কেবল সর্বহারা শ্রেণীর বেঁচে থাকার রসদ তা নয়। মুঘল আমলে সম্রাটের প্রাসাদের মুক্তাঙ্গনে যে গান বাজনার আসর বসত, তাতে হাজির থাকতেন অভিজাত শ্রেণীর নাগরিকেরা। তাঁদের আপ্যায়নের জন্যে ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে বিশেষ করে থাকত পান্তাভাত। ... ...
আমার পাশে যে বসে ছিল তাকে বললাম, “এ তো গামা গাছের ডগাগুলো কেটে দিয়ে গেছে মনে হচ্ছে! সাদা প্লেটে চিজ ছড়িয়ে দিলেই কি গরুর খাবার মানুষের হয়ে যায় নাকি!” পাশের জন বলল “হোয়াট ইজ গামা?” তাকে অনেক কষ্টে আমার বিখ্যাত ইংরাজিতে বোঝালাম, যে এর সাথে ভাস্কো-দা-গামা-র কোন সম্পর্ক নেই। বাড়ির গরুতে খাওয়ার জন্য আমরা জমিতে গামা (বাংলায় অনেক জায়গায় একে গমা বা গ্যামা বলা হয়) চাষ করতাম। এমনি সবুজ লকলকে ডাঁটির মত গাছ জমি থেকে কেটে এনে বাড়িতে খড় কাটার বঁটিতে ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ করে কুচাও। আমাকে বলা হল এগুলোকে নাকি ‘অ্যাসপারাগস’ বলে! গামা গাছের ডাঁটির বিজ্ঞান সম্মত নাম যে অ্যাসপারাগস, সেটা কে আর জানত! ... ...
আজকে 'সাম' নামে এক সিরিয়ান রেষ্টুরান্টের খাবারের কথা, এও সেই আমষ্টারডাম শহরে। সাম হল গিয়ে সিরিয়ার রাজধানী দামাসকাস শহরের ডাক নাম। তো সেই থেকেই এরা খুলে বসেছে পুরানো স্মৃতি ভরা নাম নিয়ে রেষ্টুরান্টে। কালে কালে এরা এত বেশী নাম করে ফেলে যে তিনটি ব্রাঞ্চ খুলে ফেলে এদিক ওদিক। আগে থেকে বুক না করে গেলে টেবিল পাবার চান্স প্রায় নেই। আমি এখানে অনেকবার একা একা খেতে গেছি - বলেছে টেবিল নেই, আমি নেগোশিয়েট করেছি - আপনাদের পরের রিজার্ভেশন কটায়? রাত আটটার রিজার্ভেশনের ওরা আসার আগেই আমি খেয়ে হাওয়া হয়ে যাব এখান থেকে। দয়া করা আমাকে কোনের দিকে টেবিলে অ্যাডজাষ্ট করে দিয়েছে অনেক বার। ... ...
আমি আগে বাঙাল, পরে বাঙালি। আজীবন ইস্টব্যাংগল, আমরণ লালহলুদ। শবাসনে ক্যান্ডিক্রাশ খেলতে খেলতে বাঙালদের জেদ, পরিশ্রম, স্ট্রাগলের গৌরবের আঁচ পোহাই।... ইলিশ না ভালোবেসে যতখানি বাঙাল হওয়া সম্ভব। আশৈশব পান্তা না ছুঁয়ে বড় হলে যতখানি বাঙাল হওয়া সম্ভব। আমি শুঁটকির ওমে বেড়ে উঠেছি, কচুর কন্দ, ডাঁটা, লতি, পাতার পাহাড়ে চাপা পড়ে গেছি, জেনেছি যে পৃথিবীতে একমাত্র বিষাক্ত না হলে সমস্ত ঘাসপাতা বেটে খাওয়া যায় - খালি পান্তা আমার সিলেবাস থেকে বাদ পড়ে গেছে। অথচ পড়ার কথা ছিল না। পড়তে থাকুন... ... ...
আমাদের বাঙলার রাজা লক্ষণ সেনের (শুনেছি বখতিয়ার খিলজি যখন বাঙলা আক্রমণ করেন, তখন লক্ষণ সেন নাকি বসে ভাত খাচ্ছিলেন – আক্রমণের খবর শুনে হাত না আঁচিয়েই ঘোড়ায় চড়ে পিছনের দরজা দিয়ে হাওয়া!) মত এই খেমাই রাজাদেরও প্রধান এবং প্রিয় খাদ্য ছিল ভাত – সাথে মেকং এবং টোনলে-স্যাপ নদীর মাছ, গেঁড়ি-গুগলি-শামুক-ঝিনুক, একদম টাটকা ধরা। ট্রাডিশ্যানাল খেমাই ক্যুজিনের প্রধান ডিশগুলি ছিল – স্যুপ, স্যালাড, একটা মাছের কোর্স, একটা মাংসের ডিশ, শাকসবজি এবং ভাত। মুখে জল আনা নানা রকমের সস বানাতে ছিল এরা প্রসিদ্ধ – আর খাবারে নানাবিধ মশলা এবং সুগন্ধি ইনফিউজ করার চেষ্টা করত। আর একটা কথা, কাম্বোডিয়ার রান্না বান্নায় রসুন কিন্তু বেশ দিল খুলে ব্যবহার করা হয়। শেষ পাতের মিষ্টি বলতে তা ছিল ফলমূল এবং নারকেল থেকে বানানো। সব মিলিয়ে বেশ জমকালো ব্যাপার। ... ...
আজকাল আমি পারতপক্ষে ব্যুফে (বা বাফে, যেমন বলবেন)–তে খাওয়া দাওয়া এড়িয়ে চলি। এর প্রধান কারণ নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারা। ভাবুন একবার, কেউ বলল - যাই খাও বা যতটা পরিমাণেই খাও না কেন, বিলের পরিমাণ একই! এই প্রলোভন জয় করা – আমি তো ক্ষুদ্র মনুষ্য, বড় বড় মহাপুরুষের মানসিক জোরে কুলায় না। বহু সচেতন পাবলিক দেখেছি, যারা, এমনিতে যাকে বলে পুষ্টি এবং ক্যালোরি, হিসেব করে খায় – কিন্তু ব্যুফে-তে গিয়ে অন্য মানুষ হয়ে ওঠে। আমারও প্রায় অনুরূপ অবস্থা, ভিতর থেকে একটা কম্পিটিটেটিভ মনোভাব চাড়া দিয়ে ওঠে। ও খাচ্ছে আর আমি পারব না! বা পয়সা যখন দিয়েছি, তখন খেয়ে শোধ তুলতে হবে – এই চক্করে পড়ে মাঝে মাঝে এত খেয়ে ফেলেছি যে শেষে টেবিল থেকে ওঠার অবস্থা থাকে না! ... ...
তবে আর কী। হাতে নিন হাতা-খুন্তি। আর নিজেই করে ফেলুন খানা তৈয়ার। দুই কিসিমের রেসিপি এবার। যারে কয় হাঁসজারু, থুড়ি ফিউশন খাবার—নাম? ফুলকপির হাইকু! আহা খানা নয়, যেন পঙ্ক্তি কবিতার! সঙ্গে তার খানা গুরুবাদী, থুড়ি খানা অথেন্টিক, আগমার্কা খাঁটি— বাদশাহি বিন্স। চেবাতেই মেজাজখানা ঠিক যেন রাজা-রাজড়ার। ভয় নেই, মশলার ভুলে পড়বে না ঢি ঢি! বলে দিতে রান্নার নানা প্যাঁচপয়জার হাজির যে ডিডি। ... ...
আপ রুচি খানা? কে বলে মশাই? সব্বার আগে দরকার ভাই এটিকেট জানা। বিলেতে খানা খেতে খেতে কদাচ যেন না ওঠে বিশ্রী ঢেকুর। নাইজেরিয়ায় আবার খাবার নিমন্ত্রনে ব্যাঘ্র গর্জনে ঢেকুরই দস্তুর। বিলেতে চা বা স্যুপ পানে, সুড়ুৎ শব্দটুকু হওয়া মানে মহাসব্বোনাস। ওদিকে জাপানে, যাবতীয় পানে শোনা যাবে এমন হুসহাস, যেন শত অ্যানাকোন্ডায় ফেলছে নিশ্বাস। ইত্যাকার এটিকেট জেনে পাও গুড ম্যানার্স সার্টিফিকেট। দুনিয়ার কোনও দেশে নিমন্ত্রনে খেতে বসে পড়বে না ঢিঢি। শিক্ষা দিতে ইত্যাকার আচার, যথারীতি হেঁশেলে হুঁশিয়ার রয়েছেন ডিডি ... ...
খাই খাই কর কেন? এসো বোসো আহারে। দুই শো বছর পরে খাবে যা-যা বাহারে, এসো ভায়া ট্রাই করো, আজই খাও তাহারে। আরশোলা-চচ্চড়ি, গুবরের কালিয়া, মশক-পুডিং খেও সেলফি-টি তুলিয়া। আরও দু-শতক পরে, জেনে রেখো নির্ভুল, খানা মানে খাবে শুধু ক্ষুধাহরা ক্যাপসুল! কী হবে রেসিপি তার, ভারী শখ জানবার? এখানে লিখলে যদি ‘গুল’ বলে পড়ে ঢিঢি? দক্ষিণে পাড়ি দাও, কানে কানে জেনে নাও, হেঁশেলেতে যথারীতি হুঁশিয়ার আছেন ডিডি ... ...
খানা-সংস্কৃতি ভাই! ইদানীং ফ্যাশন ওইটাই! শুধু খেলে হাঁসফাঁস করে হবেনি কো, জানতে হবে ইতিহাস, ঝাড়তে হবে দেরিদা-ফুকো! কিন্তু যদি উলতো গাই? এ বাজারে এট্টু অপোসংস্কিতি ফলাই! রাখুন ও সব লবচবানি, রাঁধুন মাটন কেওরামি! কে বলে তাতে পড়বে ঢিঢি? রেসিপি দাতা স্বয়ং ডিডি ... ...
অনেক হয়েছে ভায়া ন্যাকা-নস্টালজিয়া। ‘মায়ের রান্না’, মনে পড়তেই সে কী কান্না। আহা পিসির হাতের সেই চ্যবনপ্রাশ-ভাতে! তার চেয়ে বরং ছেড়ে সব ঢং রেঁধেই ফেলুন তুখোড় ‘পটাটাস মাতাদোর’। কিংবা ছেড়ে আজেবাজে কথা, রাঁধুন ‘চিকেন বনলতা’। ভয় নেই, বলেছি তো সেই কবেই, পড়বে না মোটে ঢিঢি—মিছে ঘাবড়াচ্ছেন, রেসিপি বাতলাচ্ছেন স্বয়ং ডিডি ... ...
শরৎ চাটুজ্জের শ্রীকান্ত রেঙ্গুনের রাস্তায়, খুঁজছেন, বাঙালি কিধার হ্যায়? দেখে শেষে ল্যাজ খান, বাঙালিকে চিনে যান। বাঙালির নয়, ছি-ছি, মৎসের ল্যাজা সেটি, হাতে থলি বাজারের, তাতেই প্রমাণ ঢের—বাঙালিকে দুনিয়ায়, মাছ দিয়ে চেনা যায়। এইবার যদি চাও, চিংড়ি-পুলাও তাও রেঁধে ফেল, ভয় কী?, এই নাও রেসিপি, পড়বে না আর ঢিঢি, হেঁশেলে যে হুঁশিয়ার স্বয়ং হাজির ডিডি ... ...
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে সাম্প্রতিক কালে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এমনই এক আয়োজন, 'মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া সিজ়ন ১৩'। আমাদের ভারতবর্ষের মতোই এখানেও অনুষ্ঠানটির মোটামুটি ভাবে একই ফরম্যাট - শেফের ডিগ্রী বা 'স্কিল সেট' না থাকা সাধারণ ঘরোয়া রাঁধুনেরা তাঁদের রন্ধন প্রতিভা দেখাতেই মূলতঃ উপস্থিত হন এখানে। প্রায় ছয়মাস ধরে চলা এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববরেণ্য শেফেদের কাছ থেকে এরপর নানা কসরত শিখে এবং তাঁদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের প্রতিভায় শান দিতে দিতে একসময় এঁদের মধ্যে কেবলমাত্র একজন বিচারকদের বিচারে শ্রেষ্ঠ হয়ে 'মাস্টারশেফ' শিরোপা ও দু লাখ পঞ্চাশ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার নিয়ে বাড়ি ফেরেন। ... ...