ঠিকই বলেছেন আপনার শাশুড়ি, বলে ভূতসিদ্ধ। সম্ভবত ওই মেয়ের ভূতই ঢুকেছে আপনার স্ত্রীর শরীরে, আর খুড়িমা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন ওর আক্রমণ রুখতে। যাই হোক, বলতে থাকে ভূতসিদ্ধ, গত দশ দিনে ওকে – মানে ওই ভূতকে – আমি অনেকবার নামিয়ে আমার কাছে নিয়ে এসেছি। ওকে বুঝিয়েছি ও ভুল মানুষকে ধরেছে। তাকে ছেড়ে ওর চলে যেতেই হবে। ও রাজি নয়। অনেক ভয় দেখিয়েছি আমি, তবুও ছেড়ে যেতে ও রাজি নয়। এখন রাস্তা একটাই। ভূত তাড়াবার মহৌষধ একজন ভূতকে দিয়েই আমি তৈরি করিয়ে নেব। কিন্তু শুধু যে সময় লাগবে তাই-ই নয়, অনেক কষ্ট অনেক খরচ। পেরে উঠবেন আপনি? সময় ধৈর্য এবং খরচ, এ-চিকিৎসায় এই তিনটের কোনটাই কম হলে চলবে না। ... ...
বৃদ্ধা এক গাল হেসে, এক অদ্ভুত অকুন্ঠ এবং তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বললেন, আমার তখন ২ বছর বয়েস যখন আমার বাবা ওকে নিয়ে আসে এই বাড়িতে। আমি ওকে কোনোদিন পছন্দ করতাম না। ও আসার পর থেকেই বাড়িতে নানা অশান্তি শুরু হয়। ওর যখন ৬ বছর বয়েস তখন থেকেই ওকে আমার বাবা প্রায়ই ওপরের একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে সন্ধ্যে বেলা দরজা বন্ধ করে দিত। ও চিৎকার করলে ওর মুখ বেঁধে দিত। আমিও তখন ছোট। তেমন কিছু বুঝতাম না। কিন্তু ওর চিৎকার করলে আমার ভালো লাগতো। আমার যখন ৯ বছর বয়েস তখন আমার মা মারা যায়। বাবা আবার বিয়ে করে। সেই বছরই। আর সেই বছরই, ওর তখন নয় কি দশ হবে, ও আমাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।" একটা অদ্ভুত নিষ্ঠুর হাসির রেখা ফুটে ওঠে বৃদ্ধার মুখে, চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে। ... ...
ভাবতেই আশ্চর্য্য লাগে, অসহায় মানুষদের নির্বিচারে ঠান্ডা মাথায় খুন করে যারা, তাদের বাঁচানোর জন্য কত না আইনের মারপ্যাঁচ রয়েছে, নিত্যনতুন তৈরিও হচ্ছে, অথচ ইউক্রেনে ব্রোভারি'র চার বছরের বাচ্চা মেয়েটির উপর যে রুশ সৈন্যরা যৌন নিপীড়ন করল, তার বাবার সামনে বন্দুকের মুখে তার মাকে গণধর্ষণ করল, তাদের পৈশাচিক অপরাধের দায়ভার কে নেবে? অথবা বুচার ৬৯ বছর বয়সী পেনশনার ভ্যালেন্টিনা জেন--কী দোষ ছিল তাঁর? ২৫ মার্চ, ২০২২-এ রাশিয়ার দখলদার বাহিনী ভ্যালেন্টিনাকে তাঁরই বাড়ির উঠোনে গুলি করে হত্যা করে। ভ্যালেন্টিনার মৃতদেহটি সেখানেই পড়ে ছিল যতক্ষণ না ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী রাশিয়ানদের কবল থেকে ৩১ মার্চ বুচাকে আবার মুক্ত করে– এত বড়ো অন্যায়ের কি কোনো বিচার নেই? ... ...
দোকানপাটের চরিত্র বদলে গেছে। আগে শুধু থাকতো সব মিলিয়ে গোটা ১০-১৫ টি দোকান। বৈশিষ্ট্য গ্রামীণ। বারোয়ারিতলা তথা ওলাইচণ্ডী পূজার কাছে জিলিপি, জিভে গজা, গজা, কাঠিভাজা, এবং রসগোল্লার দোকান। পরপর দুটি। তারপর চপ বেগুনি পাঁপড়ভাজা। আর গোলামহলের দুপাশে মাঝেরপাড়া যাওয়ার রাস্তা ধরে বাচ্চাদের খেলনার দোকান। লাট্টু, কটকটি, তালপাতার সেপাই, বাঁদর লাঠি, ছোট ঢোল ইত্যাদি। থাকতো সংসারের জিনিস। খান দুই তিন দোকান। হাঁড়ি কুড়ি, অ্যালুমিনিয়াম ও লোহার কড়াই, তাওয়া, কাঠের বেলুনি, খুন্তি ইত্যাদি। আগে বেশিরভাগ থাকতো লোহার। মাটির হাঁড়ি কুড়ি, জালার দোকানও বসতো। আশির দশকে তার ঘন্টা বাজল। স্টিলের বাসনকোসন ঢুকল ১৯৮৫র পর। ... ...
জীবন চলমান। কাদামাটির রাস্তা গিয়ে মেশে পিচে অ্যাসফল্টে। প্রকৃতির হাওয়া কেড়ে নেয় বিদ্যুতি বাতাস। তার মাঝেই উঁকিঝুঁকি দেয় জোনাকিরা। হাতছানি দিয়ে ডাকে গ্রামীণ স্বপ্ন। আন্তরিকতা আর সৌজন্যের তফাৎ বুঝতেই কেটে যায় অনেকটা সময়। কাদামাটি আর ইটপাথরের সংশ্লেষময় সময়ের বৃত্তান্ত। ... ...
বাড়ি ফিরে আরেক প্রস্থ ঝামেলা। ফ্ল্যাটবাড়ির দরজায়ই বিজনবাবু। সব্য তখনও গাড়ি থেকে নামেনি, ভালো করে নাকি পার্ক করছে। সিঁড়ির ল্যান্ডিং এ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে শমিতা, তখনই বিজনবাবু। সিঁড়ি দিয়ে নামছেন। বয়স্ক মানুষ, ওদিকের ফ্ল্যাটে থাকেন। খুব যে দেখাসাক্ষাৎ, কথাবার্তা হয়, তা নয়। কিন্তু আজ শমিতাকে দেখে কীরকম আশ্বস্ত হন মনে হয়। - আপনি বাড়ি ছিলেননা না? শমিতা বলে, না, এই তো ফিরছি। - ও। আসলে আমি একটু গিয়েছিলাম। - কোথায়? - আপনাদের ফ্ল্যাটে। আপনারা কেউই ছিলেননা না? শমিতা একটু অবাক হয়ে বলে, এই সময় তো কোনোদিনই আমরা থাকিনা। - সে তো জানি। বিজনবাবু চিন্তিত গলায় বলেন। - আসলে ওদিকে একটা আওয়াজ পেলাম। ভাবলাম চোর-ডাকাত নাকি। একবার নক করে দেখি। যা দিনকাল। ... ...
আমার বাবার মুখে শ্রদ্ধেয় কয়েকজন নেতার নাম উচ্চারিত হতো। মুজফ্ফর আহমেদ, আবদুল হালিম, পি সুন্দরাইয়া, হরেকৃষ্ণ কোঙার এবং নাগি রেড্ডি। পি সুন্দরাইয়া ১৯৭৬-এ পার্টি সংশোধনবাদী হয়ে যাচ্ছে বলে চিঠি লিখে পার্টির সাধারণ সম্পাদক পদ ও পলিটব্যুরো সদস্যপদ ছেড়ে দেওয়ায় কষ্ট পান। জনসঙ্ঘের সঙ্গে হাত মেলানোয় ছিল মূল আপত্তি সুন্দরাইয়ার। বাবা অবশ্য ইন্দিরা জমানার অবসানে প্রাণপণ লড়ে যান। ... ...
প্রতিভা সরকার গল্প উপন্যাস লেখেন পাঠককে ভুলিয়েভালিয়ে মোহাবিষ্ট করে রাখতে নয়। চরিত্রগত ভাবে একজন পরিবেশ-কর্মী, মানবতাবাদী, নারীবাদী সংবেদনশীল লেখিকা হিসেবে পাঠককে ভাবিয়ে তোলাই প্রতিভার ‘হিডন এজেন্ডা’। সমাজের সমস্ত স্তরে জমাট বাঁধা অন্যায়ের বিরুদ্ধে পাঠক-সমাজকে মনে মনে আন্দোলনের ভাগীদার করে তোলাই প্রতিভার উদ্দেশ্য। ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসে প্রতিভা সে ব্যাপারে সফল। ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসটি দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করা হলে সমাজবিজ্ঞানের কিছু উপকার হতে পারত। জাত-পাতের রাজনীতির বিরুদ্ধে জন-জাগরণে মৃদু তরঙ্গ উঠলেও উঠতে পারত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ করবেন, প্রকাশ করবেন, বৃহত্তর আঙিনায় পাঠকের হাতে তুলে দেবেন – এমন প্রকাশনা সংস্থা কবে উদ্যোগ নেবে জানা নেই। এনবিটি বা সাহিত্য অকাদেমী কি এগিয়ে আসবে? ... ...
সে যাক, এ তো আমার দাদুর গল্প নয়, দেশভাগের কাহিনী, যার গায়ে লেগে আছে, আগুন, হত্যা, অসম্মান আর সব হারাবার টক টক গন্ধ। কিন্তু একথা তো ঠিক, দেশভাগ সম্বন্ধে আমার জ্ঞান পুঁথিগত হয়েও হতে পারেনি ঐ ড্রয়ার দুটির জন্য। আসলে আজকাল স্মৃতি নির্ভর অভিজ্ঞতা, গল্পকাহিনী, এগুলোও ইতিহাসের অঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পায়, তাই মনে পড়ল ঐ অবিনাশী ড্রয়ার দুটির কথা, যে দুটোতে এখনও রয়ে গেছে মা, ঠাম্মা, দিদা এমনকি প্রতিবেশীদেরও নিজস্ব অভিজ্ঞতা অথবা নিছকই শোনা কথা। টুকরো টুকরো আলাপ এবং প্রলাপ, যাদের জোড়া দিলে উঠে আসে এই উপমহাদেশের একটি বালিকার অকিঞ্চিৎকর শৈশব এবং সেই শৈশবের গায়ে লেগে থাকা এক ভয়ংকর অবিমৃষ্যকারিতার তীব্র গন্ধ। দেশভাগের অনেক পরে জন্ম বলে যে বালিকার পাওনা ছিল একটি নিরুপদ্রব মেয়েবেলা, যে ছিল এইসব ঘটনা থেকে অনেক দূরে, দেশভাগের গল্পকথার অভিঘাত তাকেও ছাড়েনি। চারপাশে মন পালটে দেওয়া, মনুবাদী করে তোলার সমস্ত মাল মশলাই তৈরি ছিল, কিন্তু তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে ঐ গল্প ভর্তি গোপন দুটি ড্রয়ার আর সাহিত্যপাঠ। ভাগ্যিস! ... ...
১৯১৮ সালে ঠাকুরদা যখন পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার লৌহজং গ্রাম থেকে এসে ভর্তি হলেন স্কটিশ চার্চ কলেজে ঠিক সে বছরেই সে কলেজ থেকেই গ্র্যাজুয়েট হলেন নেতাজী। যতটুকু শুনেছি ঢাকার স্কুলের ছেলেটি কলেজে নেতাজীকে বেশিদিন দেখবার সুযোগ পান নি। হয়ত সে কারণেই তাঁর প্রভাব ঠাকুরদার উপরে ততখানি পড়তে পারে নি। তিনি আজীবন গান্ধিবাদী কংগ্রেসী রয়ে গিয়েছিলেন। এমনকি বহু বছর পরে বিবাহিত জীবনে সন্তানদের জন্ম হলে ছোট পুত্রের ডাক নামেও তার পরিচয় লেগে ছিল। আমার বাবাকে সবাই ‘গান্ধী’ নামেই সম্বোধন করত। ১৯০৫ সালে ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে সরিয়ে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হলেও স্বাধীনতা লাভের সময় পর্যন্ত নাগরিক গুরুত্বে তা ছিল অবিভক্ত বাংলায় সর্বোচ্চ স্থানে। অতএব লেখাপড়া করাই হোক বা কেরিয়ার তৈরী করা- তখন তরুণদের ঢল থাকত কলকাতামুখী। ঠাকুরদা ১৯২০ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে গ্র্যাজুয়েট হন। ... ...
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর স্তরে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে মঞ্জু রায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগে গবেষণায় যোগ দিলেন প্রফেসর অমরনাথ ভাদুড়ির কাছে। তারপর গবেষণাই করেছেন সারাজীবন। গবেষণার বিষয় ছিল ক্যান্সারের ওষুধ আবিস্কার। ডঃ মঞ্জু রায় এবং তাঁর স্বামী ডঃ শুভঙ্কর রায় একসঙ্গে কাজ করে কর্কট রোগ বা ক্যান্সারের চিকিৎসায় মিথাইল গ্লাইওক্সাল নামক যৌগটির কার্যকারিতা প্রমাণ করেছিলেন এবং ক্যান্সারের ওষুধ হিসেবে এই যৌগটিকে সাধারণ মানুষের নাগালে আনতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কাজ করেছেন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স (IACS, যেখানে সি ভি রমনও কাজ করেছেন) এবং বসু বিজ্ঞান মন্দিরে; শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার সহ বহু পুরস্কার এবং সম্মানও পেয়েছেন সারাজীবনে। ... ...
অরুন্ধতী নির্লিপ্ত ভাবে সাজিয়েছেন দশটি গল্প। মেয়েদের গল্প বলব নাকি জীবনের গল্প বলব সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি এখনো। তবে সব কটি গল্পেই মেয়েরা তীব্র রকমের আছেন। খুব মোলায়েম ভাবে বলা, নিখুঁত ডিটেইলিং ওলা জীবন্ত দশটি গল্প। প্রতিটা গল্পেরই উপজীব্য জীবনের জটিল অন্ধকার এক একটা দিক । আর প্রায় প্রতিটা গল্প অব্যর্থসন্ধানী তীরন্দাজ। ... ...
তা এই বাড়ির কোনকিছুই ওর নিজস্ব মনে হয় না, হয়ও নি কোনোদিন। আর শুধু বাড়ির কেন, এই পৃথিবীতে কোথায়ও কি ওর নিজস্ব কিছু আছে আদৌ! চাকরিটা বাবার জন্য শুরু করতে হয়েছিল, বিয়ের পরেও ছাড়তে পারে নি রমেনের জন্য। দাদার জন্যই লাইব্রেরীর চাকরি করেও পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক সঙ্ঘের হয়ে গণসঙ্গীত গেয়ে নাটক করে বেড়াতে পেরেছে। সেইটুকুই ছিল ওর নিজের আনন্দে বাঁচা। বাবা মায়ের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াতো দাদা। সেই দাদাটাও অমন করে চলে গিয়ে পম্পাকে একেবারে শূন্য করে দিয়ে গেল। সেই যে ওর বুকের মধ্যে একটা আস্ত মরুভূমি ঢুকে গেল, সে কেবলই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে একটু একটু করে প্রাণরস শুষে নিয়ে ওকে এমন তব্দাধরা কাঠের পুতুল বানিয়ে দিল। ফুলশয্যার রাত থেকে রমেন হিসহিস করে বলত ‘দ্রৌপদী! দ্রৌপদী এসছে আমার ঘাড়ে!’ পম্পাকে ব্যবহার করত ঠিক বাথরুমের মত। ওই করেই দুই ছেলে হল দেড় বছরের তফাতে। ... ...
জলবায়ু পরিবর্তনকে এই বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি দায়ী করা যেতে পারে। পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের সম্মুখভাগের অর্ধগলিত অংশে হ্রদ তৈরি হয় প্রাকৃতিকভাবে। এই হ্রদের তিন পাশের দেওয়াল নির্মিত হয় হিমবাহ বাহিত মোরেন দ্বারা। মোরেন শব্দটির অর্থ হল যে পাথর ও পলি হিমবাহ পাহাড় ক্ষইয়ে ভেঙে বয়ে নিয়ে আসে। এই মোরেন-এর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বড় আকারের পাথর থাকে। সূক্ষ্ম দানার পলি খুবই কম। কারণ হিমবাহের গতি শ্লথ; ভেঙে আনলেও পাথর বেশিদূর বহন করে নিয়ে যায় না। ... ...
আমার জন্ম অবিভক্ত ভারতে। বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায়। গ্রামের নামটি নাগর পাড়া। বাবা শিক্ষকতা করতেন প্রথমে নাগর পাড়া, তারপর টাঙ্গাইলে। নাগর পাড়ায় ছিল পূর্বপুরুষদের স্থায়ী বাড়ি, তাই আয়তনেও বেশ বড়। জমি-জায়গা, গাছগাছালি প্রচুর ছিল। পাঁচটা বড় ঘর ছিল আমাদের। দক্ষিণমুখী বড় শয়ন ঘর – মেঝে ও দেওয়াল ইটের তৈরি, উপরে ত্রিভুজাকৃতি টিনের ছাদ। পূর্বদিক, পশ্চিমদিক আর দক্ষিণদিকে আরো তিনটি ঘর আর মাঝখানে বড় উঠান। পুবদিকের ঘরের পাশে বড় রান্নাঘর ছিল। আর ছিল কুয়ো পায়খানা। ... ...
তবে বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দানীর উৎসে পাশ্চাত্যের ঋণ থাকলেও এ কথা মানতেই হবে, পিতৃতান্ত্রিক অপরাধ-সাহিত্যপরিসরে গোয়েন্দা হিসেবে নারীদের উঠে আসা একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছিল। আর এই উত্থান যে ধূমকেতুর মতো সহসা দেখা দিয়েই মিলিয়ে যাওয়ার মতো নয়, সে কথাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তার পরবর্তী দুই দশকেই। তাই কৃষ্ণা-শিখার মতো অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় মাতোয়ারা সম্পন্ন তরুণী কিংবা বিন্দিপিসি-সদুঠাকুমার মতো ঘরোয়া বয়স্কা মহিলা নন, ক্রমশ এই দুনিয়ায় আসর জাঁকিয়ে বসতে শুরু করলেন সেই মেয়েরা, যাঁরা পেশাগতভাবেই গোয়েন্দাগিরি বা অন্য কোনও বৃত্তিকে অবলম্বন করেছেন। অজিতকৃষ্ণ বসুর ডিটেকটিভ নন্দিনী সোম সায়েন্স কলেজ থেকে এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজির স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানাধিকারিণী। ... ...
অসাম্য, হিংসা, জাতি-লিঙ্গ দ্বেষ রাষ্ট্রীয় বিচারব্যবস্থায় কম নেই। বস্তুত রাষ্ট্রীয় ন্যায় প্রতিষ্ঠাই করা হয় ‘পুলিশ’ নামক হিংসা সংগঠনটির মাধ্যমে। রাষ্ট্রের বিচার ব্যায়বহুল, নিম্নতর পুলিশ থেকে উচ্চতম প্রধান বিচারপতি সকল পেশাজীবীর জন্য রাষ্ট্র যা ব্যয় করে তা সাধারণ মানুষের কাছে অকল্পনীয়। প্রশান্ত ভূষণের এক টাকা জরিমানার পিছনে দেশের মানুষের কয়েক লক্ষটাকা নিশ্চিতভাবে খরচ হয়েছে আদালত-পদ্ধতিতে। ... ...
মাসিদোনিয়াতে তাঁরা জনসংখ্যার পঁচিশ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী স্রেভেনকোভস্কি বললেন জনশ্রুতি এই যে মাসিদোনিয়ান সরকার তাঁদের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছেন, আলবানিয়ান ভাষা শেখানো হয় না, ছেলে মেয়েদের আলবানিয়ান নাম দেওয়া নিষিদ্ধ, সরকারি দফতরে, আর্মিতে চাকরি জোটে না। ক্লিনটন সরকার এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কিন্তু আপনাদের জানাতে পারি এটি সম্পূর্ণ অসত্য। মুশকিল হলো প্রধানমন্ত্রী স্রেভেনকোভস্কি এমন সব রাজনৈতিক ইসু তুলে ধরলেন যার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানা ছিল না। ... ...