সাগর এর আগে একদিন রাত্রির পাশাপাশি হেঁটেছিল। সেই তাদের প্রথম সাক্ষাতের দিন। পটলের দোকান থেকে রূপবাণীর মোড় পর্যন্ত। মনে হচ্ছিল রূপবাণীর মোড় যেন দূরে সরে সরে যায়। বেশ লাগছিল চারপাশের লোকজন, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বাস ট্রাম। সবকিছুর ওপর একটা সোনালী আলো এসে পড়ছিল আকাশ থেকে এসে। তবে মনে কোন ভার ছিল না। একটু নাটুকে ভাষায় বললে আকাশ বাতাস ... ...
যেখানেই থাকো তুমি, আশেপাশে নানা রকম প্রতিবেশী থাকবেই। তাদের সঙ্গে তোমাকে মানিয়ে চলতে হবে। সে তো সত্যি, তবে অনেক জায়গায় অনেক রকম প্রতিবেশী পেয়েছি। সেই বৈচিত্র আমার অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে ভরপুর করে তুলেছে এবং করেই চলেছে। প্রতিবেশীদের নিয়ে যত রকম অভিজ্ঞতা আছে সব বলতে গেলে আমার বাকি জীবনটাও যথেষ্ট নয়। তাই কিছু অভিজ্ঞতার উল্লেখ করছি। এখন তো পাইকপাড়ায় থাকি। এখানে থিতু হওয়ার ... ...
একটি গাছ, একটি পাখি, একটি যন্ত্রণা, একটি রুমাল, একটি ছবি, একটি ঘড়ি, একটি চিঠি, একটি চিত্রলিপি, একটি সম্পর্ক এবং একটি ঘুমপুতুল। এই হল সাদিয়া সুলতানার কতকগুলি জিয়নকাঠি। দেশভাগ, দাঙ্গা, মুক্তিযুদ্ধের যন্ত্রনাকাতর ক্যালাইডোস্কোপ। এই দিয়েই হয়েছে ‘উজানজল’-এর নির্মাণ। সাদিয়া সুলতানার মুন্সিয়ানা ঠিক কোথায়? কতকগুলি চিহ্ন, কতকগুলি আখর, কতকগুলি ইঙ্গিতের
ঘরের কোণে জমে থাকা ঝুলব্যাগের মধ্যে জমে থাকা টিকিটআরো কত কিছুর এদিক সেদিক বিলতবুওহেঁটে আসা পথ পুনরায় হেঁটে যেতে হয় এইরকম আরও কত কিছু ফেলে এসেও কিফেলে দেওয়া যায়!টুকরো টুকরো মুহূর্তকুঁচি কুঁচি করে ছিঁড়েফেলে দেওয়া যায় না এখনোএই ফাইভ জী যুগে!
মানুষের রসবোধ ব্যাপারটা আমাকে বরাবরই খুব টানে। এখানে আজ এমন কতকগুলো কথার উল্লেখ করব যেগুলো দোকানবাজারে ও রাস্তায় শোনা। প্রাত্যহিক জীবন থেকে পাওয়া। বেশ বুদ্ধিদীপ্ত মজার কথা সেগুলো।বাজার মানেই টাকাপয়সার শুকনো লেনদেন আর রসকষহীন বিকিকিনি, এমন মোটেই নয়। বাজারে কান পাতলে নানা রকম কৌতুককর কথাবার্তা কানে আসে যা শুনতে বেশ ভালোই লাগে। প্রথমে বাজারি রসের কথাই বলি। এক দিন আমাদের চুনীবাবুর বাজারে এক ভদ্রমহিলা কাঁচা পাতিলেবু কিনছিলেন। ছোট্ট তাজা সবুজ লেবু পছন্দ করে বললেন - " রস হবে তো?" সব্জি বিক্রেতা বলল - "দিদি, রস চাইলে আপনাকে বয়স্ক, পাকা লেবু নিতে হবে।" সন্দেহ নেই, দীর্ঘ দিন বেচাকেনা করতে করতে লেবুর ... ...
১৯৫০ সালে আমাদের পরিবার কিশোরগঞ্জ ত্যাগ করে ।তার আগেই আমার মা ময়মনসিংহের বাড়ি থেকে আমাদের ভাই বোনদের নিয়ে কলকাতা বেহালা অঞ্চলে চলে আসে । আমাদের সব আত্মীয় স্বজন পূর্ববঙ্গ ত্যাগ করে । কলকাতা শহরের বিভিন্ন স্থানে এবং রানাঘাট কৃষ্ণনগর অঞ্চলে বসবাস শুরু করে। আর সেই সময় থেকে বহু আত্মীয়-স্বজন অনেক ময়মনসিংহের পরিচিত লোক আমাদের বাড়িতে আসত ।দেশ ভাগ, দাঙ্গা ইত্যাদির সম্বন্ধে আলোচনা ... ...
বেশি না মোটে ৩৪ পাতার ফর্ম ভরতে হবে। ভারতের পোস্ট অফিস ব্যাঙ্ক বীমা কোথায় কত টাকা আছে? কত জমি বাড়ি ফ্ল্যাট আছে সব জানিয়ে বলতে হবে, দেশের নাগরিক নই। বিদেশের লোক। নাগরিকত্ব দেওয়া না সম্পত্তি কাড়া? ক্যা নয় ক্যাঁক!!!
সুগন্ধ শুভশ্রী রায় এই কাহিনী খুশবু নামে একটি প্রান্তিক মেয়ের। এই লেখায় তার নাম পাল্টে দিয়েছি। খুশবু আমাদের আবাসনে পরিচারিকার কাজ করত এক সময়। সেই সূত্রে আমাদের সঙ্গে তার পরিচয়। মেয়েটি দেখতে ভালো, অসম্ভব সুন্দর বড় বড় চোখ, ছিপছিপে গড়ন। আমাদের আবাসনের কাছে পাইকপাড়াতেই
বাজারে এখন ছোট রেডিওর খুব চল হয়েছে। ট্রানজিস্টর না কি বলে যেন। মাঝারি সাইজের সুটকেসের মতো মারফি কোম্পানির রেডিওর মতো ঘরের বাইরে এরিয়াল তার টার কিছু টানাতে হয় না। একটু বড় মাপের পান জর্দার কৌটোর মতো একটা যন্তর। ওটার পিছন দিকটা খুলে দুটো নস্যির ডিবের সাইজের ব্যাটারি লাগিয়ে নিলেই হল। নিতাইবাবু শখ করে কিছুদিন আগে একটা কিনেছেন ওই ট্রানজিস্টর। সন্ধেবেলায় ... ...
বালখে প্রচুর ক্ষয় ক্ষতি স্বীকার করে আসার পর, মন ভালো করতে শাজাহান দিল্লীকে নতুন ঝাঁকজমক পূর্ণ চেহারা দিতে পাশেই নতুন শহর শাহজাহানাবাদ তৈরির পুরনো প্রকল্পে মেতে গেলেন। কান্দাহারে মার খেয়ে আসার পর একাজের গতি একটু কমেই ছিল। বিশেষ করে দ্বিতীয় আর সেটাও সফল না হওয়ায় তৃতীয় কান্দাহার আভিযানের প্রস্তুতির বছর ষোলশো উনপঞ্চাশ থেকে তিপান্নয়। শহর কেল্লা আর নানা স্থাপত্যের ... ...
---অশোক এর বিবেক দংশন--- রক্তবর্ণ নদীতীরে ঘটনায় সান্ধ্য ছায়া, স্নিগ্ধ চাঁদের আলোয় স্নাত মৃত্যুপুরীর কায়া। যত্রতত্র রক্ত-মাংস-লসিকার হোলিখেলা বিজয় দর্পে হয় আভরণ,সাজে এ হরষ বেলা। মৃত সোপানের এ শ্মশানপুরীতে শোণিত
আমার কৃতিত্ব এটাই আমার বাড়িতে মার্বেল! পঞ্চাশ বছর আগের সেই পূবের স্বপ্ন... তারপর, হানিমুনে মার্বেল প্যালেস থেকে আজকের দিন! হাওয়া মোরগের তীরটাই শুধু পশ্চিমে ঢলে পড়েছে!!
একদমই সাদামাটা দেখতে মেয়ে বলে মল্লিকার বিয়েই হলনা। না! কোনো রূপের ঝলক নেই। নেই তার দেহ সৌষ্ঠবে কোনো উষ্ণতা। এমন নিস্তরঙ্গ মেয়েকে সম্বন্ধ করে কেই বা ঘরের বৌ করে নিয়ে যাবে? কোনো পুরুষ তার প্রেমেও কখনও পড়েনি। মল্লিকার যখন উনিশ বছর বয়স তখন থেকেই আত্মীয়স্বজনদের বলাবলি করে কিছু সম্বন্ধ এসেছিল। কিন্তু একবার দেখে গিয়ে আর দ্বিতীয়বার কেউই কথা বাড়ায়নি। মামাতো এক দাদার বাড়ি বীরভূমে ... ...
অববাহিকার ছোট ছোট জলধারা একে অপরের সাথে মেশে, ঠিক যে ভাবে মেশে এক ভাষা আরেক ভাষার সাথে। বড় বড় ভাষার বা নদীর নাম আমরা জানলেও, ছোট-ছোট ভাষা ছোট-ছোট নদীরা অপরিচয়ের অন্ধকারে হাতড়ে মরে। গঙ্গা, তিস্তা, সুবর্ণরেখা - কেবলতো আর নদী নয়। নদীর বহমান স্রোতের ধারায় ধরা থাকে অববাহিকার ইতিবৃত্ত। অববাহিকা জোড়া জীবনের চালচিত্রে গঙ্গা, তিস্তা, সুবর্ণরেখারা তাই নিত্য নৈমিত্তিক রীতি রেওয়াজের অংশ ... ...
অনেকভাবে মানুষকে ঠকানো যায়। এই লেখায় আমি জিনিসপত্র কেনাকিনি সংক্রান্ত ঠকানো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব। বাবা একটা ঘটনা নিজের চোখে দেখেছিল। এরকম নাকি শেয়ালদা স্টেশনে হামেশাই হ'ত। যাই হোক, বাবা যা দেখেছিল- একটা লোকাল ট্রেন ইন করল। শত শত যাত্রী নামল। তাদের মধ্যে কয়েকজন প্ল্যাটফর্ম থেকে না বেরিয়ে এটা ওটা দেখছিল। একজন যাত্রী ব্যাগবিক্রেতা এক হকারের সামনে ... ...
গাছের সঙ্গে ইট বেঁধে মানত করতে দেখেছি ইটের মধ্যে কি আছে ভাঙতে ভাঙতে ভাঙতে ধুলোয় এসে থেমেছি বুকের মধ্যে পাহাড় আছে সেই কবে মানত করেছি ভাঙতে ভাঙতে ভাঙতে নদীর কাছে এসেছি নদী বলেছে সাগরে যাও সাগর দেখিয়েছে আকাশ
মাঝে মাঝে মনের মধ্যে কেমন যেন লাগে আগুন মাঝে মাঝে মনের মধ্যে কেমন যেন লাগে ফাগুন মাঝে মাঝে মনের মধ্যে কেমন যেন, দস্যি দামাল
কালীবাবুর অবশ্য ঘটনাক্রমে এরকম একটা অস্বস্তিকর ঝক্কি নেবার দরকার হল না শেষ পর্যন্ত। সাগর সন্ধেবেলা সেদিন সাইকেল চালিয়ে কর্ণওয়ালিস স্ট্রিট দিয়ে শ্যামবাজারের দিকে যাচ্ছিল। হাতিবাগানে নেমে একবার বাজারে ঢুকল সাইকেল নিয়েই। একটু দূর থেকে নিজেকে আড়াল করে নজর রাখল মনোরমা ভান্ডারের দিকে। না, ওখানে দোকানের সামনে টুল চেয়ার ... ...
গান্ধীজী সবে তাঁর সান্ধ্য ভজন সেরে, আশ্রমের বারান্দায় বসে চরকা চালাচ্ছেন। বারান্দায় একটা সুদৃশ্য সেজ বাতি ঝুলছে। এটি এনে দিয়েছেন ঘনশ্যাম দাস। এটা তাঁর ডাক নাম। দেশের বড় শিল্পপতি। বিড়লা সাম্রাজ্য তাঁরই উদ্যোগে আজ দেশে প্রভুত বিস্তার লাভ করেছে। তবে, তাঁর ঘনিষ্ট মহলে তিনি সংক্ষেপে জি.ডি. বিড়লা নামেই অধিক পরিচিত। মূলত, মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের হলেও, তাঁর তুখোড় ... ...
যশপাল নামে এক কেরানি সরকারি টাইপ রাইটার ব্যবহার করে একটা চিঠি লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হয়ে। তার জন্য ইন্দিরা গান্ধীর প্রধানমন্ত্রী পদ বাতিল করেছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আর আজ দীঘা থেকে ট্রেন চলে আসছে বারাসত। সরকারি অর্থ ও ক্ষমতার অপব্যবহার নয়???