ভারতবর্ষে যদি রেলে যাতায়াতকে কেবল পরিবহন বলে কেউ ভাবেন তা হলে তিনি নির্ঘাত বিশাল একটা ভুল করে বসেন না জেনেই। ভারতে রেলে যাতায়াতের দার্শনিক নাম হল – রেলযাত্রা। যে কোন তীর্থ যাত্রার মত গুঁতো গুঁতি, না বেঁচে ফিরে আসার ভয়, সব খুইয়ে বসার আশঙ্কা এই সব সারক্যাষ্টিক জিনিস পত্র যদি বাদও দিই, তাহলে আমাদের রেলকে ‘যাত্রা’য় উন্নীত করতে যাদের অবদান অনৈস্বীকার্য তারা হল ট্রেনের ‘হকার’ এবং তাদের প্রতি আমাদের সমাজিক স্নেহ।
ভারত থেকে বিদেশে এসে যখন প্রথমদিকে কেউ কেউ ট্রেনে চাপেন তা হলে বিশাল একটা ঝটকা ... ...
প্রত্যেক বাঙালীর সাথেই কোন না কোন নষ্টালজিক তেলেভাজা ও এগরোলের দোকানের নাম লেগে থাকে। বাঙালীও যে ব্যবসা বোঝে (প্রফুল্ল রায় মহাশয় বেঁচে থাকলে কি খুশীই না হতেন) এই তথ্য যাচাই হত ওই সব এগরোলের দোকানগুলির প্লেসমেন্ট দেখে। বেশীরভাগ এগরোলের ঠ্যালাই স্টেশন বা বাসস্ট্যাণ্ডের পাশে খাড়াই থাকত। মেমারীতে এগরোল শিরোপার লড়াইটা সীমাবদ্ধ ছিল লক্ষ্মী ও গণেশের মধ্যে। লক্ষ্মী স্টেশন বাজার এবং গণেশ বাসস্ট্যাণ্ড। আমি নিজে লক্ষ্মীদার এগরোল খেয়েই মানুষ – তিনটাকা থেকে শুরু করে আজ ১৪ টাকায় এসে ঠেকেছে প্রায় কুড়ি বছরের ব্ ... ...
আমি ইংল্যাণ্ডে থাকাকালীন ওখানকার সরকার এক ক্যাম্পেন চালু করেছিল – Five Fruits a Day। ব্রিটিশ ছেলেছোকরাদের ক্রমশঃ খারাপ থেকে নিকৃষ্ট হয়ে যাওয়া রুখতেই সেই প্রচার। তবে যে দেশে দুই হাত অন্তর ফ্রাই, কেবাপশপ আর বার্গারের দোকান এবং যেখানে ফল কিনতে গেলে দুই মাইল দূর দূর সুপারমার্কেটে যেতে হয় সেখানে এই ক্যাম্পেন কতটা সার্থকতা লাভ করবে তা বোঝার জন্য পরিসংখ্যানবিদ হবার দরকার নেই। আমাদের ইউনিভার্সিটির ফুডকর্ণারগুলিতে ছবি লাগানো হল ফলের – আপেল, কলা, লেবু, আঙ্গুর ইত্যাদি। দোকানদার প্রায় সবুজ কলা কিনে ঝুড়িতে র ... ...
মহাশয়,
আমি বিগত কয়েক বছর যাবৎ আপনাদের এই গুরুচন্ডালি নামক ওয়েব সাইট যাতাযাত শুরু করেছি। বলাই বাহুল্য, ইন্টারনেটের প্রসারের সাথে সাথে আমার মত লেখকদের যে কি পরিমাণ উপকার হয়েছে সেই বিষয়ে আশা করি আপনাদের মত সম্পাদকরা সম্যক অবহিত আছেন। এমনকি আমার এমনতর সন্দেহও এককালে হয়েছিল যে, ইন্টারনেট শুধুমাত্র আমার মত লেখকদেরই সুবিধা করে দেয় নি, আপনাদের মত সম্পাদকদের দিকেও মুখ তুলে তাকিয়ে ছিল। যাই হোক আমি যখন নানাবিধ লেখার সৃষ্টি যন্ত্রনা নিয়ে ছটফট করছি এবং বিনা পয়সায় প্রসব করার স্থান উপযুক্ত স্থান খুঁ ... ...
অনেক বয়স হবার পর কোন এক কবির লেখায় যেন এমন কয়েকলাইন পড়েছিলাম – “ডাক্তার জানে না, আমার অসুখের নাম পিকনিক”। সেই কবি আবার অন্য এক কবির লেখা থেকে এই লাইন ধার করেছিলেন - সে এক কনফিউজিং ব্যাপার। যাই হোক, যে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে শতকরা ৬০ ভাগ লোক পেটের রোগের চিকিৎসা করাতে আসেন সে রাজ্যেরই এক কবি যে এমন কথা লিখবেন সে আর আশ্চর্য কি! তবে ডাক্তারের না জানার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, অন্ততঃ আমাদের দিকের ডাক্তাররা আমাদের অসুখের উৎপত্তি ও নিরাময় দুইই জানত বেশ ভালো করে। ... ...
এটা আজকাল প্রায় সবাই জানেন যে ইংল্যাণ্ডের ন্যাশেনাল ডিস্ কিন্তু ফিস্ এ্যাণ্ড চিপস্ নয়, ওটা হল চিকেন টিক্কা মশালা। ভারতীয় সভ্যতায় ইংরেজদের অবদান নিয়ে জাদুঘর ভর্তি বই আছে এবং ইদানিংকালের পণ্ডিতরা প্রায় সবাই একমত হয়েছেন যে, বৃটিশ সভ্যতায় আমাদের মূল অবদানই হল নানাবিধ ‘কারি’। যেটুকু দ্বিমত তা ওই টিক্কা মশালা নাকি চিকেন মাদ্রাস কোনটা ন্যাশেনাল ডিস্ হওয়া উচিত তা নিয়ে। আমি এত রকমের ‘কারি’র নামই শুনিনি ইংল্যাণ্ড আসার আগে – তবে ব্যাপার হল গিয়ে অন্য যে কোন বিষয়ের মতই এর ভিতরেও প্রচুর জল আছে। এমন সব খাব ... ...
লেখার ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি একটা ঘাতক ব্যাপার । সাধারণত দুই ধরনের লেখক চর্বিত চর্বণ করেন – এক যাঁরা প্রচুর লেখেন , ফলতঃ লেখার মশালার যোগান না দিতে পেরে পুরনো মাল আউরে দিনযাপন । দুই , যারা কম লেখেন - এরা আগেরবার কি লিখেছিলেন ভুলে গিয়ে একই জিনিস বিবিধ ভাবে চালান দেন ।আমার এই লেখাটা ফলে কোন দলভুক্ত হবে বুঝে উঠতে পারছি না । তবে এটা ঠিক যে আমার এই ঘটনাকাল ঘুলিয়ে ফেলা ও কালক্রম রক্ষা না করতে পারা কিন্তু বাই ডিজাইন নয় – নিছকই অ্যামেচার লেখকের নাবালকচারিতা । আগের ঘটনা পরে আর পরের ঘটনা আরও পরে রেখে কোনও স ... ...
ভাবছিলাম যে এই খাবারদাবার গল্পে ‘চুমু’ খাওয়াটাকে অন্তর্ভূক্ত করা উচিত হবে কিনা ! ‘চুমু’ বিষয়টাকে আলোচনায় নিয়ে এলে কোথায় থামতে হবে সেটাই একটা দার্শনিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। কারণ অন্য খাবারের মত ইহা পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছয় না, পাবলিকের মতে বুকের বাঁদিক ঘেঁষেই নাকি আটকে যায়। কোলষ্টেরলের মত এটাও নাকি হৃদয়ের দূর্বলতার কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে - ফারাকটা হল টাইম স্কেলের, চুমু যৌবনবেলার উপসর্গ হলে কোলষ্টেরল প্রৌঢ়ত্বের। তো যাই হোক, চুমু খাওয়া বিষয়ে আর একটু বিশদ এই বলার যে, উহা একটা ছোঁয়াছে রোগের মত। ... ...
আমার যাদুর ঝাঁপি, আমার জমানো পুঁজিপাটা
তাতে আর কিছু নেই, আছে শুধু মায়াবীমুকুর
আমার সে আর্শিটা চিরতরে তোমাকে দিলাম
এ্যালিস! এ্যালিস! তুমি বিম্বিত হয়ো জোছনাতে... ... ...
মাছ ধরার সাথে আমার সম্পর্ক মোটামুটি ডিকুরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ডিকুরি হল আমার বাড়ির পাশের পুকুর যার অন্য পাড়ে আমাদের যৌথ পরিবারের পুরানো বাড়ি। সেই অর্থে ডিকুরির একদিকে আমার বাল্যকাল আর অন্যদিকে কৈশোর সহ যৌবন। আমাদের নিমো গ্রামের অন্য পুকুর গুলি ছিল - পচাগেরে, বিশ্বেসদের ডোবা, হাজরাদের ডোবা, বামুনগেড়ে, বড় বামনা, ছোট বামনা, লালতেগড়ে, জুঙগিইতে, চেয়ো, ঠাকুরঝি এই সব। গাঁয়ের সীমানায় আছে পূবে গরাঙ্গে, পশ্চিমে বনধারা, উত্তরে ত্রিশূল ও দক্ষিণে পদ্দেরে। বলাই বাহুল্য এই সব পুকুরের নামকরণের ইতিহাস আমরা ক ... ...