এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ভাগাড়পাড়া স্কুল থেকে বলছি


    অন্যান্য | ২৫ নভেম্বর ২০১২ | ৮০৩২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • de | 190.149.51.69 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৬:০১576225
  • ঠিক! নাইলে একখান টই খোলেন -- "দমুর লেখা কি আঁতেল না বুদ্ধিদীপ্ত?" -- এই নামে--

    এটা স্কুলের গপ্পো বলার টই!
  • 4z | 209.119.232.208 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৭:০২576236
  • পড়ছি, সঙ্গে আছি।
  • SG | 134.124.204.10 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৭:৩৩576247
  • এখন কিন্তু ওই জায়গায় পাকা রাস্তা হয়ে গাছে, গন্ধ এখনো pawa যাই মাঝে মাঝে গেলে
  • | 24.99.85.7 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৮:০২576258
  • বাঃ তাই নাকি?
    কোন রাস্তাটা? মনসাতলা থেকে ভাগাড় আর ভাগাড় থেকে বাঁয়ে বেঁকে রাস্তাটা, সামনের সোজাটাও কিন্তু পাকা ছিল, মানে আমি যবে থেকে দেখেছি। কিন্তু স্কুলে ঢোকার সরু রাস্তাটা কাঁচা ছিল। ঐটা পাকা করেছে?
  • সুকি | 212.160.16.30 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৮:২৩576269
  • বাঃ, দারুণ লেখা। আরো পড়ার আশায়।
  • h | 213.132.214.156 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৮:২৯576280
  • ঃ-)

    প্রশ্নটা অবাঞ্ছিত, কিন্তু করতে বাধা নেই, সেটা হল, যখন কোন লোকের লেখাকে কে আমরা সরল বলি, তখন লেখাটার বা লেখকের বুদ্ধি তথা দীপ্তি কে কে আমরা সম্মান করি কিনা বা সরল দীপ্ত কেন বলি না এই সব। সারল্য জিনিস টা কে আমরা আদৌ সম্মান করি কিনা ইত্যাদি, আমরা জানি যে আমরা করি না, করলে তো কথা ছিল না।
    কাউকে সমবেদনা জানানোর সময়ে, তোর না ভাই বেশি বুদ্ধি নেই, কিন্তু তোর প্রতি আমি সমব্যথী এটা একটু বলে দেখবেন ঃ-))

    এটা যদি দমুর আত্মজীবনী না হয়ে আকাদেমিক বিষয়ের পেপার হত, আমরা বলতাম কি আহা কি সরল , ঠিক যেন কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান বা ছোটোদের বুক অফ নলেজ? অনেকটা চারু র লেখা সম্পর্কে অমলের বা লেখকের বা আমাদের অনেকের ইভ্যালুএশনের মত, সরল, গতিময়, আবেগপূর্ণ ইত্যাদি, কিন্তু আঁতেল বা বুদ্ধিদীপ্ত না। ইত্যাদি।

    পাতি কথা আমার ম্যাক্সিমিন দির কমেন্ট টা পোসায় নি, বলেছি, ম্যাক্সিমিন দি ক্ল্যারিফাই করে দিয়েছেন। বাকিরা আলটপকা বকেছেন, আমি ও বকে গেলাম, তর্ক টা আমি শুরু করেছিলাম ধরে নিয়ে, থেমে গেলাম।

    তবে আপনারা চালালে, আম্মো লড়ে যাবো, কাজ কম তাই।
  • siki | 24.140.82.133 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৯:২৬576291
  • উল্টোদিকে সাত জার্মান :)
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.205.233 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৯:২৯576302
  • বোধি, প্রশ্নটা অবাঞ্ছিত নয়। শুধু 'ভাল লাগল' বলে ছেড়ে দিতে চাইনি, বলতে চেয়েছিলাম লেখাটা পড়ে ক্লান্ত হলাম না, কিন্তু কেন যে ক্লান্ত হইনি, কেন এত ভালো লেগেছে সেটা বুঝিয়ে বলা খুব সহজ ছিল না। তো, যা লিখলাম তাতে মনে হল যে লেখাটাকে আমি সম্মান করলাম না।

    প্রথম পর্বে যেটকু পড়েছি তাতে ডিস্টার্বড হয়েছি আবার সেইসঙ্গে এনরিচডও হয়েছি। দুটোর মধ্যে বিরোধ দেখিনা, বরং বাস্তবধর্মী ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা পড়লে একসঙ্গে দুটো-ই হওয়ার কথা।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.205.233 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৯:৩৩576313
  • লেখাটা মোটেই সরলরৈখিক নয়।
  • ekak | 69.99.230.125 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ১৯:৪৬576325
  • পড়েছি । ছুঁয়ে গেছে । কিছু চাপা ইতিহাসের সঙ্গে আইদেন্তিফাই কত্তে পাল্লুম । লিখে যান :)

    @h

    সারল্য বলতে বোকামি বোঝায় নাকি ? অবস্য অনেকে তাই বোঝেন এবং সেভাবেই ইন্টারপ্রেট করেন ।আপনি হয়ত সেই ক্লাস তাকে ধরতে চেয়েছেন । তাই না ?
  • sosen | 125.184.73.61 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ২০:৩১576336
  • ডিডিদার " সরোল গোলগাল" কথাটা পড়লেই আমার বেশ আয়নায় নিজের মুখের কথা মনে পড়ে ;~P
    বুদ্ধিদীপ্ত কেন নয় এ লেখা তা আম্মো বুঝতে পারিনি- সরোল গোলগাল বলেই কি?

    যাই হোক, ইস্কুলের গল্প হোক। দমুদিকে তারপর একপাতা চকোলেট দেব।
  • | 24.96.148.134 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ২১:১৭576347
  • প্রাইমারি সেকশানের ক্লাস হয় মূল বিল্ডিঙের পেছনের রাস্তা পেরিয়ে পুকুরের পাশের ঘরগুলোতে; প্রথম পাঁচ ছয়টা ঘর পাকা হলেও শেষের দুটো টালির চাল আর মাটির মেঝে; তারই একটায় তৃতীয় শ্রেণী| এই প্রাইমারি সেকশানে আবার ছেলেদের আর মেয়েদের আলাদা আলাদা বিভাগ| প্রথম আর দ্বিতীয় শ্রেণী ছেলে-মেয়ে একসাথে, তৃতীয় থেকে পঞ্চম অবধি আলাদা| ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠে ছেলেরা চলে যায় রাজেন্দ্র স্মৃতি- দুপুরের স্কুলে, মেয়েরা যায় 'বালিকা শিক্ষা সদন - জুনিয়ার হাই'তে| এদিকে আবার 'বালিকা শিক্ষা সদন' গার্লস হাই স্কুলও একটা ছিল, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী -- ঐ সকালেই ক্লাস হত| পঞ্চম শ্রেণীতে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হত মেয়েরা আর জুনিয়র হাইয়ের মেয়েরা নবম শ্রেণীতে উঠলে হাইস্কুলে যেত| এত জটিল আর শাখা প্রশাখাযুক্ত স্কুল বানিয়েছিলেন কল্যাণ পরিষদের সদস্যরা, কারণ তাহলে একে তো অনেক সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী পড়ার সুযোগ পাবে, দ্বিতীয়তঃ তাদের পড়ানোর জন্য ভাল সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষিকারও দরকার হবে| ১৯৫০-৫২ সালে কোন্নগরে পূর্ব্ববঙ্গ থেকে আসা মানুষদের প্রতি যথেষ্ঠ বিরূপ মনোভাব ছিল, থাকার কথাও, একটা ছোট্ট জনপদ হঠাৎ অতিরিক্ত জনস্রোতে হাঁসফাঁস অবস্থা হলে ভূমিপুত্রদের বিরক্তি ও অসন্তোষ খুব অস্বাভাবিক নয়, অন্যায্যও নয়| স্কুল, কলেজ, জীবিকার উপায় সবকিছুর উপরেই তখন অতিরিক্ত চাপ| তাই কল্যান পরিষদের সদস্যরা গড়ে তোলেন এতগুলি স্কুল| এছাড়াও আরো দু একটি স্কুল তাঁরা গড়েছিলেন এবং সবকটিই মোটামুটি সরকারী অনুদানও পেয়ে যায় তিন চার বছরের মধ্যেই| সবগুলি স্কুলই গভর্নমেন্ট এইডেড স্কুল অর্থাৎ কিনা শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন সরকার দেবে| আমার দাদুও এই পরিষদের সদস্য, সেইজন্য বছরের মাঝখানে নাতনীকে ভর্তি করাতে কোনোই অসুবিধে হয় নি| পরিষদের সদস্যরা সকলেই শিক্ষক বা অধ্যাপক, কেউ কেউ তখন আর কোন্নগরে থাকেন না কিন্তু বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা বা পুরস্কার বিতরণীর দিন দেখা যেত খদ্দরের ধুতি পাঞ্জাবী পরা পাকাচুলো এইসব গোঁয়ার বাঙালদের|

    শেষের দুটো ঘরের একটা তো মেয়েদের তৃতীয় শ্রেণী, অন্যটা কিন্তু ছেলেদের পঞ্চম শ্রেণী| মেয়েদের পঞ্চম আবার একদম অন্যপ্রান্তে লাইনের শুরুর পাকা ঘরটা| ফাইভে উঠে শুনেছিলাম ছেলে আর মেয়েদের ক্লাস ফাইভ যাতে কোনওভাবেই কাছাকাছি না হয়, তাই এরকম শ্রেণীবিন্যাস| ততদিনে জেনে গেছি 'ছেলেদের সাথে মিশতে নেই' তাই অবাক লাগে নি, থ্রী'তে জানলে হয়ত লাগত| কিন্তু ঐ একটেরে মাটির ঘর দুটোতে একটা মেয়েদের থ্রী কেন রাখা হল? ছেলেদের থ্রী বা ফোর তো রাখা যেতে পারত| নাঃ পারত না, তাহলে তো পক্ষপাতিত্ব হয়ে যাবে, মেয়েরা সবসময়ই পাকাঘর পাবে, তাই এই ব্যবস্থা যাতে প্রাইমারী সেকশানের সব ছেলেমেয়েই একবার অন্তত মাটির ঘরে ক্লাস করে| ওয়ান কিম্বা ট্যু দেওয়া যাবে না, কারণ বর্ষাকালে ছোটবড় সাপ পুকুর থেকে আশ্রয়ের খোঁজে এই ঘরগুলোতে এসে গর্ত বানায়| স্কুল কর্তৃপক্ষের সবদিকেই নজর| ক্লাস থ্রীতেই প্রথম পরিচয় হল কালো কালো কাঠের বেঞ্চির সাথে, যা বাকী শিক্ষাজীবনে সর্বত্র পেয়েছি| কলকাতার স্কুলে রং বেরঙের চেয়ারে বসে ছোট ছোট টেবিলে রেখে লিখতাম আমরা, এক এক টেবিলে চারজন করে| এখানে ক্লাসের বাইরে স্যুটকেস, জলের বোতল রাখার কোনও র‍্যাক নেই, ওগুলোকে পায়ের কাছে নামিয়ে রাখতে হল| ক্লাসের সবাই আমাকে দেখে ফিকফিক করে হাসতে লাগল, ওদের বেশীরভাগেরই তো বইখাতা হাইবেঞ্চে রাখা, ব্যাগ স্যুটকেস কিচ্ছুটি নেই ধারেকাছে| ক্লাস টিচার অনুরেখাদি আমার নাম আরো কিসব যেন জিগ্যেস করে বাংলা পড়াতে শুরু করলেন| আস্তে আস্তে শিপ্রা, রিমা, রীতাদের সাথে একটু একটু আলাপ হল| ক্লাসের বাইরে একটা গরু মনের আনন্দে ঘাস খেয়ে যাচ্ছে, ডানদিকে মস্ত জানলা, তার কাঠের পাল্লা কেমন ব্যাঁকামত, পুকুরের ঐধারে কারাসব চান করছে, কিন্তু তাকালেই অনুরেখাদি ধমক দিচ্ছেন| একটা একটা করে ছয়টা ক্লাস শেষ হল, হোম ওয়ার্ক কেউ কিছু দিলেন না তো! শিপ্রা বলল যা পড়ানো হয়েছে ঐটা কাল বাড়ী থেকে মুখস্থ করে আসতে হবে| মুখস্থ! সে তো শুধু বাংলা কবিতা, না না সব পড়াই নাকি মুখস্থ করতে হবে, কদিন পরেই গরমের ছুটি পড়বে, খুললেই 'হাপিয়ার্লি' পরীক্ষা| সাড়ে দশটায় ছুটি হতে মূল বিল্ডিঙের সামনে এসে দেখলাম দাদু দাঁড়িয়ে আছে, মস্ত কালো ছাতা মাথায় দিয়ে| এখানে কি বড় একটা পেতলের ঘন্টা আছে আর কি গম্ভীর তার আওয়াজ|

    দাদু রাস্তায় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিগ্যেস করল কে কী পড়িয়েছেন| সেই একই রাস্তা, রোদ্দুর একেবারে গনগন করছে, সূর্য্য সেন স্ট্রীটের পুকুরটায় কি ভীড় কি ভীড় -- একদিকে থিকথিকে শ্যাওলা, আঁশটে গন্ধ, সামনে কয়েকটা কচুগাছ প্রায় রাস্তার উপরেই| একটা কচুগাছের তলায় হলুউদ ছোলার ডালের মত গু, কোনও বাচ্চা অল্প কিছু আগেই করে গেছে| চ্যাটার্জী কলোনীর মধ্যে মেটেপুকুর আবার খুব পরিস্কার আর গভীর, পাড়ও খুব পরিস্কার, লোকে চান করছে, কাপড়ও কাচছে, কিন্তু তাও বেশ পরিস্কার| মামাবাড়ীর কুয়োর জল কি ঠান্ডা, কিন্তু আমাকে কুয়োয় চান করতে দেওয়া হয় না, হলও না, সেই চৌবাচ্চার জলে করতে হল| কাল আব্বার ঐ বিচ্ছিরিমত স্কুলটায় যেতে হবে! ইশশশ
  • Blank | 69.93.200.211 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ২২:৫৯576358
  • দম দি, পড়তে খুব ভাল লাগছে। কিন্তু কেমন মন ভারি হয়ে যাচ্ছে।
    অনেকদিন বাদে এমনি লেখা লিখলে।
  • | 60.82.180.165 | ২৬ নভেম্বর ২০১২ ২৩:৪৫576369
  • ভালো লাগছে।
    বৃষ্টির দিনের কথা লিখো কিন্তু।
  • rivu | 78.232.113.69 | ২৭ নভেম্বর ২০১২ ০৩:৫৩576380
  • আহা লেখাটা পড়ে মনটা ভারী হয়ে গেলো। ওই যে কবি বলেছেন পরমাত্মা সর্দি পাওয়ার মতন।

    এখানে নরেন্দরপুরের কথা কেউ লেখেনা কেন? ইস্কুলের কথা বড় মনে পড়ে। অবশ্যি ছেলেদের এমন লীলা মজুমদারের মত লেখার খ্যামতা নাই।
  • | 24.99.29.221 | ২৭ নভেম্বর ২০১২ ১০:২০576391
  • আহা ডিটেলের প্রতি মিঠুর এই নিষ্ঠা .......
    :-))
  • dd | 120.234.159.216 | ২৭ নভেম্বর ২০১২ ১০:৪২576394
  • হ্যা;। গোলগাল সরল আর বুদ্ধিদীপ্তর তফাৎ বোঝে না এঁয়ারা। আরে ,মশাই টেগোর বাবু পড়ুন।

    কি বলেছিলেন টেগোর বাবু? সেই বিদ্যাপতি আর চন্ডীদাস নিয়ে। অনুধাবন করুন। উনি বলেছিলেন "বিদ্যাপতি....' অ্যাকচুয়ালি ঠিক মনে নেই এক্ষাক্টলি কি লিখেছিলেন। তবে মোদ্দা কথা হচ্ছে বিদ্যাপতির লেখা আমাদেরকে বমকে দেয়, ঝকমক করে ইঃ আর তুলনায় চন্ডীদাস " সায়ংকালে..." কি জানি একটা। না কি একটা দীর্ঘশ্বাস মর্মকথা ,এইসব লিখেছিলেন। মোটকথা একেবারে সোজা সাপ্টা নিরাবরণ কথায় আমাদের বুক তো বুক,পেটের ভিতরটা পর্যন্ত্য ছুঁয়ে থাকে। সেই যে "সই কেমনে রাখিবো হিয়া,আমারই বঁধুয়া আন বাড়ী যায় আমারই আঙিনা দিয়া" বা "কে বা শুনাইলো শ্যাম নাম। কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিলো গো আকুল করিল মোর প্রাণ"। একে বারে হৃদয়ে হৈচৈ তুল্লো কিন্তু কোনো বুদ্ধিদীপ্ত সালংকরা শব্দ ক্যালোরব্যালোর করলো না।

    অর্থাৎ বুদ্ধিদীপ্ত বিদ্যাপতি লাইক করলেও সঃ ও গোঃ চন্ডীবাবু সুপার লাইক।

    এর মধ্যে শিশি বোতোল কোথায় আছে?
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ২৭ নভেম্বর ২০১২ ১১:১৬576395
  • তারপরে?
  • dd | 120.234.159.216 | ২৭ নভেম্বর ২০১২ ১১:২৪576396
  • তারপরে?

    টেগোর বাবু তারপরে বিদ্যাসগর আর রামমোহনের তুলনামুলক একটা টেবিল খাড়া করেছিলেন। কে জানি বাংলা গদ্যের জনক - এইসব।

    তা এই টইতে এতো লিখে কি হবে?
  • hu | 12.135.57.46 | ২৭ নভেম্বর ২০১২ ২১:০৩576398
  • দমদির সিগনেচার লেখা। খুব ভালো লাগছে পড়তে।
  • h | 213.99.212.53 | ২৮ নভেম্বর ২০১২ ০৯:৪৭576399
  • ঃ-)) টেগোর বাবু যেটা লেখেন নি, সেটা হল বিদ্যাপতির ভাষাতে চন্ডীদাসের কথা যদি কেউ লেখেন, টেগোর বাবু নিজেই তাই করেছেন (মানসী, বলাকা, ভানুসিংহের পদাবলী), উল্টো টাও নিজেই করেছেন প্রচুর (পুনশ্চ,খেয়া, ছোটো গল্প), আর যদি মিলিয়ে মিশিয়ে করে থাকেন, তাইলে মানুষের হাতে শিশি বোতল ছাড়া কিছু থাকে কিনা।

    এই লেখা প্রসংগে নয়, জেনেরালি সাহিত্য রচনা ও পাঠের প্রেক্ষিতে, স্বশিক্ষিত বা অশিক্ষিত মানুষকে সরল ভাবা, আর আর্বান মানুষ মাত্রেই ভীষণ বলিয়ে কইয়ে বুদ্ধিদীপ্ত ভাবা, ছেলে লেখক মানে সেরিব্রাল ও সেক্ষ মূলক এক্সপেরিমেন্টের শেষে এবং অবশেষে একটি ঘরেলু হৃদয় বিনিময় সম্ভাবনা, মেয়ে লেখক মানে হিদয় ও না পাওয়া সেক্ষ তথা অতি পাওয়া একাকীত্ত্ব ইত্যাদি, স্মৃতিকথা মানেই আহা সারল্য, আর কন্টেম্পোরারি মানেই, জটিল ও তীক্ষ্ণ, এই সব বোগাস ধরণা ও লেখার ফর্মুলা যদি এত দিনেও না পাল্টায় আর কবে পাল্টাবে? পোসায় না। হেজে গেলাম। অথচ মাথায় শিশি বোতল ছাড়া কিসু আসে না।
  • dd | 120.234.159.216 | ২৮ নভেম্বর ২০১২ ১০:৩০576400
  • হ্যাঁ। হানুর এই ফর্মুলাটা খুব ভালো। একেবারে খাপে খাপ।

    মহিলা হলে পিসীমা টাইপের হেঁসেল মাখা গোলগাল আর পুরুষ হলে সেক্ষ মাখা জটিল কুটিল একটা ভ্যাবাচাকা গোছের। এটা একটা ট্র্যাডিশন। পারোমিতার একদিন বড়ো বদহজমী লাগে।

    হক কথা।

    তবে হেথায় তো কথা হচ্ছিলো লেখার ইস্টাইল নিয়ে। যেখানে শব্দের কারসাজি নেই। খুব আন্তরিক সোজা সাপটা ভাষা। আত্মজীবনী আবার কি ? একট তো ক্ষুদে মেয়ের ইশ্কুলের গল্পো।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.240.114 | ২৮ নভেম্বর ২০১২ ১৭:১০576401
  • 'চণ্ডিদাস ও বিদ্যাপতি' টেগোর বাবুর খুব অল্পবয়েসের লেখা।
  • san | 113.21.186.230 | ২৮ নভেম্বর ২০১২ ১৭:৫৯576402
  • পড়তেও মন খারাপ হয় , ছাড়তেও পারি না ঃ-(
  • Binary | 208.169.6.50 | ২৯ নভেম্বর ২০১২ ০০:৩৭576403
  • একদম, স্যান -কে ডিট্টো। সুধু এইটাতে নয়, দ-এর সব লেখাতেই।
  • ranjan roy | 24.96.61.187 | ৩০ নভেম্বর ২০১২ ০১:১৮576404
  • আজ দমুর সাথে দেখা, চলে যাবে পুণে, সহজে ফিরবে না। মনটা খারাপ হয়ে গেল। কারণ ও আমার গুরুচন্ডালির আদ্যিকালের দিনের গুরুঠাকুর, তায় ময়মনসিংহ এবং জঙ্গলবাড়ির কারকুন পরিবারের দৌহিত্রবংশ, হয়ত লতায়-পাতায় আমার আত্মীয়।
    বলল,-- ভাগাড়পাড়ার স্কুল নিয়ে লেখাটা পড়ুন।
    পড়লাম।
    এই সেদিন কোন্নগর ঘুরে এলাম জিটি রোড দিয়ে ঢুকে, তাই ওই স্কুলটা দেখতে পাইনি। কিন্তু খানিক খানিক বুঝতে পারছি।
    কোলকাতায় সার্কাস মার্কেট প্লেসে ছোটবেলায় থাকতাম। কেউ জিগ্যেস করলে সত্যি কথাই বলতাম -- পার্কসার্কাস মার্কেটের সামনে থাকি।
    বদলে শুনতে হত,-- ওহো, ধাঙড়বাজার? তাই বল।
    যারা দমুর লেখা নিয়ে বলছেন তাঁরা ওর গুরুতে " সেই মেয়েটা ভেলভেলেটা" বা বাংলাদেশের "সচলায়তন" এ কিছু লেখা পড়ুন।
    দমু, URL দাও, প্লীজ।
  • | 24.99.228.181 | ৩০ নভেম্বর ২০১২ ১৯:৪৯576406
  • ৩)
    হাফ ইয়ার্লিতে আমি কয়েকটা বিষয়ে কান ঘেঁষে পাশ করায় বাড়ীতে পড়ার সময় বাড়ানোর আদেশ জারি হল| এদিকে রিপোর্ট কার্ড দেখে তো দাদু চটে গেল; 'উপস্থিতি', 'ব্যবহার' ইত্যাদি ঘরগুলো ফাঁকা| কালো কালির কলম দিয়ে সবগুলোতে 'ভাল' লিখে ফেরত পাঠাল, সেই দেখে আবার সাধনাদি গেলেন ক্ষেপে| তারপর কয়েকদিন দিদিমণিরা আমার সাথে একটু কেমন কেমন করে যেন কথা বললেন; একটু কেমন ঠেলা মেরে মেরে| জীবন তখন এত দ্রুত বহমান যে ওসব কিছুই তেমন রেখাপাত করতে পারল না| দাদুর বাড়ীটা দোতলা, প্রত্যেক তলায় তিনটে বড় বড় ঘর আর সামনে একটা পেছনে একটা করে বারান্দা| ঘরগুলো আর সামনের বারান্দাগুলো লাল সিমেন্টের, প্রায় বছর ১৫-২০ ধরে নিয়মিত মোছায় ঝকঝকে লাল, মুখ দেখা যায় এত মসৃণ| পেছনের বারান্দাগুলো সাদা সিমেন্ট, সেও তেমনি মসৃণ| নীচের তলায় বারান্দার বাঁ দিকের শেষপ্রান্তে একধাপ নেমে রান্নাঘর আর খাবার দালান; দালান থেকে দুই ধাপ নেমে বাথরুম, একটা বড়সড় কাঠের দরজায় মাঝামাঝি একটা ছোট্ট শেকল দিয়ে দরজাটা বন্ধ থাকে খাওয়ার সময়| দালানে শীতের দিনে চটের ডোরাকাটা আসন আর গরমে চাটাইয়ের আসনে বসার ব্যবস্থা| একতলার বাঁ আর ডানদিকের শোবার ঘরের সাথে লাগোয়া একটা করে ছোট্ট ভাঁড়ার ঘর আছে| ডানদিকের ঘর, ভাঁড়ার আর সাথে বারান্দার কোণায় ছোট্ট একটা রান্নাঘর নিয়ে রাজারা থাকে| ওদের উঠে যেতে বলা হয়েছে কারণ আমরা থাকব ওখানে, একেবারে সম্পূর্ণ আলাদা থাকবে এই শর্তে মা নাকি এসেছে যাতে কেউ বাপের বাড়ীর আশ্রিত এই কথা কেউ বলতে না পারে| এদি 'আশ্রিত' আর 'বিধবা' শব্দদুটো আমি নতুন শিখেছি, দাদুর আলমারী থেকে অভিধান নিয়ে| রাজারা অন্য বাড়ীতে যাবে আরো একমাস পরে, তাই আমি শুই দিদার সাথে চৌকীতে আর মা মেঝেতে ভাইকে নিয়ে| দিদা হিসহিসিয়ে আমাকে বলে জিজি মা'কে এই ক'মাস সিদ্ধ চালের ভাত খাইয়ে খুব পাপ করেছে --- আতপের থেকে সিদ্ধর দাম কম তাই খাইয়েছে --- বড়মামীমা বলে রায়বাঘিনী ননদিনী চায়ই তো যাতে সামনের জন্মেও ভাইবৌ বিধবাই হয় তাই জেনেশুনে পাপ করায় ---- জিজি মাসে অন্তত দুটো শনিবার আমাদের দেখতে আসে --- ছোটখাট পুতুল, বই, মিষ্টি, কেক নিয়ে আসে| নিজের স্কুলের গল্প বলে আর মা'কে বলে স্কুলটা দাঁড়িয়ে গেলে আর একটু রোজগার বাড়বে তখন মা আমাদের নিয়ে জিজির কাছে চলে যেতে পারবে --- মা কিছু বলে না, হাসেও না -- মা'রও কি মাথার মধ্যে আমার মতন ধোঁয়া ধোঁয়া হয়ে যাচ্ছে? কি জানি!

    বর্ষাকালে ক্লাসের পাশের পুকুরটার চারদিকে কতরকমের গাছ লকলকিয়ে বেড়ে ওঠে, একসময় জল বাড়তে বাড়তে প্রায় রাস্তা ছুঁইছুঁই| কচুর পাতা একেকটা এত্ত বড় যে আমরা একেকজন তাতে দিব্বি ঢেকে যাই| কচুপাতায় নিজেদের লুকিয়ে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে আমাদের লুকোচুরি খেলা চলে, যে 'চোর' হয় তাকে স্রেফ পা দেখে চিনতে হয় কোনটা কে, জুতো দেখে তো দিব্বি বোঝা যায় কোনটা কে তাই আমরা জুতোও খুলে ফেলি খেলার সময়| ক্লাসে দিদিমণি এলে অমনি জুতোর মধ্যে পা ঢুকিয়ে বসে থাকি| ছুটির সময় মেন বিল্ডিঙের কোণায় বাঁদিকের 'টিউকল-ঘর' এ গিয়ে পা ধুয়ে তবে জুতো পরে বাড়ী যাই, এদিকে যারা হাওয়াই চটি পরে আসে তাদের কি মজা, কেমন চটি সুদ্ধই জলে ধুয়ে নেয় আর ওদিকে রোজ জুতোর ভেতর নোংরা করার জন্য বাড়ীতে বকা খাই আমি| হাওয়াই চটি কিনে দিতে বললেও বকা খাই, ওসব নাকি কেউ পরে না; বড়রা এত বোপ্কা কেন হয় কী জানে, গোধুলি, শিবানী, কল্পনা সবাই কেমন হাওয়াই চটি পরে আসে আর নিশ্চিন্তে খেলে| আমার রাগ হতে থাকে| রাগ আরো বেড়ে যায় ভাত খেতে বসে| কি ছোট ছোট মাছ আর কি কাঁটা তাতে, আমি কিছুতেই ঠিক করে বাছতে পারি না, ভাই কিছুতেই খেতে চায় না, ভাত মুখে নিয়ে চুপ করে বসে থাএ, মা অনেক গল্প ব্লে ভুলিয়ে ভালিয়ে খাওয়াবার চেষ্টা করে, আমাকে আর কে বেছে দেবে কাঁটাগুলো ---- আমি কোনওমতে খাবলে খুবলে খানিকটা মাছ বের করে নিই --- থালায় আঙুল দিয়ে লিখি 'মারব' -- কাকে মারব বুঝি না --- কিন্তু খুব মনে হয় কাউকে একটা মারা দরকার্|
  • sosen | 125.242.250.254 | ৩০ নভেম্বর ২০১২ ১৯:৫৫576407
  • তারপর ?
  • | 24.99.228.181 | ৩০ নভেম্বর ২০১২ ২১:২৩576409
  • বড়মামীমা ওদের রান্নাঘরের ভেতর থেকে ডেকে বলে 'অ্যাই ভাতের থালায় লিখতে নেই, অকল্যাণ হয়| কী লিখেছিস শুনি?' আমি তাড়াতাড়ি আঙুল চালিয়ে ব'এর পাশে আ-কার আর ডয়ে শূন্য র'য়ে দীর্ঘ ঈ দিয়ে বলি 'মা'র বাড়ী'} সবাই ফিক ফিক করে হাসে| যাক! ফাঁড়া কেটে গেল, এটা নিয়ে অন্তত আর বকা খেতে হল না| আমরা খেয়ে উঠলে মা ভাইকে ঘুম পাড়িয়ে তবে স্নান করে খেতে আসে| দিদা, বড়মামীমা, মা আর বুড়ির মা-মাসি একসাথে খেতে বসে| বুড়ির মা-মাসি একেবারে বাসন মেজে বাড়ী চলে যাবে, বিকেলে তিনটের সময় বুড়ি এসে ঠাকুরের বাসন মেজে, মোড়ের টিউবওয়েল থেকে জল এনে ঘর ঝাঁট দিয়ে যাবে, বুড়ির মা-মাসি সেই সন্ধ্যে হয় হয় সময় এসে লালিকে দুইয়ে লালি আর আকাইম্যাকে জাবনা দিয়ে গোয়ালে ধুনো জ্বেলে দিয়ে যাবে| লালির বাছুর দাম্বে খালি দুধ খায় এখনও| দাদু যায় লালিকে দোয়ানোর সময় দাম্বেকে ধরে রাখতে| দোয়ানো দুধে কেমন বুগ বুগ করে ফেনা উঠতে থাকে| দুপুরে অঙ্ক করে রাখলে রাত্রে খাওয়ার আগেই ঘুমিয়ে পড়লেও কেউ বকে না, আর এমনিতেও দাদু তো রাত্রে বইখাতায় কিছু দেখতে পায় না, তাই দুপুরেই অঙ্কগুলো বুঝে নিতে হয়| দাদু ভারী সহজ করে বুঝিয়ে দেয় 'ল সা গু', 'গ সা গু', সরল অঙ্ক; আমার পেন্সিলবক্সটা কেমন যেন রঙচটা হয়ে যাচ্ছে, গতবছরের তো, এবারে আর কেনা হয় নি| কিন্তু ইস্কুলে পেন্সিলবক্স, জলের বোতল নিতে কেমন লজ্জা লজ্জা করে আজকাল| আর কেউ আনে না, আমিই খালি নিয়ে যাই আর শিপ্রারা হাসে| রীমা অবশ্য একটা টিনের মত বাক্সে করে আনে কলম, পেন্সিল আর রবার, ও বলে রবাট| নীচেটা সোনালী মত, লাল আর নীল ঢাকনি তাতে আবার ইংরিজিতে লেখা NATARAJ ওটা নাকি ওর দিদির জ্যামিতিবাক্স, পেন্সিলবাক্স নয়| আমাদের অঙ্ক করাতেন প্রতিমাদি, সাদা শাড়ী পরা মোটাসোটা হাসিখুশী মানুষ, কিন্তু অঙ্ক না পারলে বড্ড রেগে যান| বেশ সুন্দর করেই বোঝান, অনেকটা দাদুর মতই, কিন্তু গোধুলি আর শিবানী কিছুতেই পারে না| শিপ্রা একদিন চুপিচুপি বলে শিবানীর মা নাকি লোকের বাড়ী ঘর মোছে, বাসন মাজে, কাপড় কাচে আর ওর বাবা সেই উঁচু উঁচু ভারায় চড়ে চড়ে বাড়ীর দেওয়াল বানায়, প্লাস্টার করে|

    কিন্তু এই সরু সরু কাঁটাওয়ালা ছোটমাছগুলো আমাকে ছাড়ে না, ক্লাসের পাশের পুকুরটায় যারা চিকমিকে হয়ে খেলে বেড়ায় তারাই কেমন ভাতের থালায় এসে খালি আঙুলে আর মুখের ভেতরে ধারালো ডগা বিঁধিয়ে দেয়! আর ঐ ড্যাবা ড্যাবা গোল গোল চোখওয়ালা তিনকোণা মাথা দেখলেই আমার ওয়াক উঠে আসে| অথচ দিদা বলেছে মাথাশুদ্ধ ছোটমাছ খেলে নাকি চোখ ভাল হয়, তাই আমাদের ওটা খেতেই হবে| আমি পারি না, পারি না, কিছুতেই পারি না খেতে| মাছের শিরদাঁড়ার দুপাশ থেকে খানিকটা মাছ ঘেঁটে নিয়ে বাকীটা ঠেলে থালা থেকে ফেলে দিই, মা খেয়াল করে না আমি মুখ ধুয়ে দাদুর কাছে গিয়ে অঙ্ক নিয়ে বসে পড়ি| দিদা কিন্তু ঠিক দেখেছে আর মা'র কাছে নালিশও করেছে| মা'ও বোধহয় বোঝে আমি এগুলো খেতে পারব না, তাই বেশী বকে না, অল্প অল্প বকে| কিন্তু বিকেলবেলা দিদার কাছে বসতে হয়, দিদা চুলে নারকেল তেল দিয়ে টাইট করে গোড়া বেঁধে বেড়াবিনুনী করে দেয়, তখন জোরে জোরে আঁচড়ায় আর বকতে থাকে, মা'ও এবারে বকতে থাকে, এত মাছ নষ্ট করা -- পয়সা কোত্থেকে আসে? আমি মাথাটা ছাড়িয়ে নিয়ে চাঁদির ওপরে ফুলটা বাঁধতে বাঁধতে বাইরে পোস্তায় এসে দাঁড়াই| দিদা জোরে জোরে বলে 'কামে অ্যারা, ভোzনে দ্যাড়া, বচনে মারে পুইর‍্যা'| আমার কিরকম একটা কেন্নো পিষে ফেলতে ইচ্ছে হয় --- দাঁতে কামড়ে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে নরম কিছু একটা --- চীৎকার করে বলি 'মা খবরদার আমাকে ঐ বিশ্রী মাছগুলো খেতে দেবে না --- কাল থেকে আমাকে মাছই দেবে না| দিদা আরও রেগে বলে 'ক্যান তুমি কুথাকার নবাবজাদী আইস?' আমি তো দিদাকে উত্তরই দেব না, দেবই না -- মা'কে বলি 'নিজে খেতে থাক ঐ কাঁটাওয়ালা মাছ'| এইবারে মা ভেতর থেকে দৌড়ে আসে, ছোটদিও আমাকে হাত ধরে টেনে ঘরের মধ্যে নিয়ে আসে| মা লাল টকটকে মুখ করে আমার দুই গাল দুহাতে শক্ত করে টিপে ধরে -- 'কী বলছিস কী? আমি মাছ খাই? হ্যাঁ আমি মাছ খাই? এই অম্বুবাচীর মধ্যে তুই বাইরে দাঁড়িয়ে চীৎকার করে বলছিস ----- পাড়ার লোকে খুব ভাল বলবেখনে -- অসভ্য বেয়াদপ মেয়ে'| তারপর সবাই আমাকে খুব ছি ছি করে-- কিন্তু আমি, আমি যা শুনি তা কিছুতেই ঠিক করে বুঝতে পারি না --- মা নাকি আর মাছ খায় না, খেতে নেই, এখন নাকি মা চারদিন শুধু কিছু ফল আর দুধ খেয়ে থাকবে ------ বছরে চারদিন, যাকে 'অম্বুবাচী' বলে, তাতে অমনি করতে হয় ----- আবছা মনে হয় তাইজন্য জিজি গত শনিবারে তিনকিলো আম নিয়ে এসেছিল --- আস্তে আস্তে বলছিল 'তোর মা কিছুতেই শুনছে না, এইসব একেবারে অর্থহীন, তোর বাবা দেখে কষ্টই পাচ্ছে শুধুশুধু'| কিন্তু মা যে মাছ খেতে খুব ভালবাসত, মাংস প্রায় খেতেই চাইত না, কেন ওরা মা'কে মাছ খেতে দিচ্ছে না? আমাদের এখন খুব বুঝেশুনে খরচ করতে হয়, মা বলেছে, তাইজন্য বুঝি? কেউ যদি একটু বুঝিয়ে দিত ---আমার মাথার ভেতরে আবার সাত সকালের সব ধোঁয়া ঢুকে যেতে থাকে, আমি দাদুর খাটে শুয়ে ঐ মাঝ বিকেলে অঘোরে ঘুমিয়ে পড়ি --- মেরুদন্ড সোজা করে বসে থাকা আমার দাদু --- এত গন্ডগোলেও একটা কথাও না বলা দাদু, একইভাবে বসে আস্তে করে ফ্রকটা পায়ের ওপরে টেনে দিয়ে হাতপাখা দিয়ে আমাকে হাওয়া করতে থাকে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন