এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শোক ও শস্যের ওয়াগন/৫

    Siddhartha
    অন্যান্য | ২৮ মার্চ ২০১২ | ৩৬১৫৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • siki | 122.177.58.73 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:০০540562
  • যো-দিকে মনে পড়ে গেল। সেই বোরিয়ালিস অরোরা আর ছ্যানছ্যলকুমারের গপ্পো।

    গান্ধী, আরো হোক।
  • hu | 12.34.246.72 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:০১540564
  • আকাদা, ৮৫ না, ৪৫। ৪৫ ডিগ্রী অক্ষাংশ। তোমাদের হোমটাউন থেকে দেখা যাবে না। আমার এখান থেকেও না :-(
    মিশিগান, উইসকনসিন - এসব জায়গা থেকে দেখা যাবে মনে হয়।
  • ppn | 112.133.206.22 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:০১540565
  • মিশ্‌টেক মিশ্‌টেক।

    ঈস, কেন মিলওয়াকি থেকে চলে এলাম। :(
  • siki | 122.177.58.73 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:০২540566
  • মাধুরীকে আমারো পোষায় নি কোনওদিন।

    মহব্বতে দেখানোর জন্য এক বন্ধুকে আমিও ক্ষমা করি নি।
  • gandhi | 203.110.246.22 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪০540568
  • আমি লিখব ভাবতেই আর গুরু খুলছিল না :(
  • ttn | 117.197.68.226 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪০540567
  • সিলিকন প্রসথেসিস জিনিসটা মাধুরীর ব্যাপারেই প্রথম শুনেছিলাম, পামেলার গল্প পরে শুনি
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪২540569
  • এই অ্যাদ্দিন পরে হু আমার মনের কথাটা কয়ে দিয়েছে। মাধুরীর ড্রেস সেন্স ছিল একেবারে যা তা। একদম টিটাগড়ের মতন।
    হাসিটা সুন্দর ব্যস এটুকুই।
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৩540571
  • ইয়ে, ২০১৭ তে মিশিগান যাচ্ছি সূর্য্যগ্রহণ দেখতে। আগে থেকে প্ল্যান করে ওখানে একটা লাইভ ভাট নামালেই তো হয়।
  • ppn | 112.133.206.22 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৩540570
  • সুস।
  • tatin | 117.197.68.226 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৪540574
  • মাধুরী দীক্ষিতেরও আবার ড্রেস সেন্সের দরকার নাকি!
  • sda | 117.194.194.7 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৬540577
  • আমারো নব্বই মানে ৯১-৯২ থেকে শুরু। মানে ঐ সময় থেকেই মনে আছে আর কি।
    মেদিনীপুরে থাকতাম আমরা। মেদিনীপুর চার্চ স্কুল। স্কুলে রোজ কি একটা ইংলিশ প্রেয়ার হতো, মনে পড়ছেনা। চার্চের ফাদারের একটা বাঘা অ্যালশেসিয়ান ছিল , মাঝে মধ্যে ক্লাসে ক্লাসে রাউন্ড মেরে যেতেন কুকুর নিয়ে। ঐ স্কুলের স্মৃতি বলতে আর যা মনে আছে তা হলো টিফিন। টিফিন টাইমে সবাইকে দুটো করে বিস্কুট দিতো, বিশেষ বিশেষ দিনে একটা পান্তুয়া।
    বিকেলে পাড়ার সব ছেলেপুলে খেলতে যেত সার্কিট হাউসের মাঠে। মা আমাকে নিয়ে যেত, একা ছাড়তে ভরসা পেতো না বোধহয়। সন্ধ্যে হয়ে আসছি, মা এর হাত ধরে বাড়ি ফিরছি মাঠ থেকে, দূর থেকে দেখছি সাইকেল চালিয়ে বাবা ফিরছে অফিস থেকে - এই দৃশ্যটা এখনো মাঝে মাঝে ফিরে আসে স্বপ্নে।
    আমার বোন যখন হল আমার তখন বছর পাঁচেক বয়স। হঠাৎ কেমন যেন একা ফিল করতে শুরু করলাম। মা সারাদিন ব্যস্ত বোনকে নিয়ে। হিংসে হত। বিকেলে আমাকে মাঠে পৌছে দেওয়ার সময় হয়না মায়ের, আবার একা ও ছাড়বেনা। মহা মুস্কিল।
    এইরকম সময়ে একদিন শুনলাম যে আমরা আর মেদিনীপুরে থাকবো না। বাবার বদলী হয়েছে নবদ্বীপে, আমরাও সেখানে যাব।
    নবদ্বীপে এসেছিলাম বছরের মাঝামাঝি। কোনো স্কুল ভর্তি নেবেনা তখন। পাড়ার নেতাজী অবৈতনিক বিদ্যালয়ে মাস ছয়েকের জন্য ঢুকে গেলাম। সে এক চিড়িয়াখানা। মেঝেতে বসতে হত আসন পেতে (বাড়ি থেকে আনতো সবাই)। দুটি মাত্র ঘর কুল্লে, একটায় ক্লাশ ১-২, একটায় ক্লাশ ৩-৪ , এক সঙ্গেই হয়। সঙ্গে যারা পড়তো বেশীরভাগই খুব গরিব ঘরের, অনেকে তার দু এক বছরের মধ্যে লেখাপড়া ছেড়ে দেবে। কিন্তু ঐ বয়সে কে আর সেসব নিয়ে ভাবে। সবাই তখন বন্ধু।
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৬540576
  • আমিও একজনকে ক্ষমা করি নি, আমাকে টেনে নিয়ে গিয়ে ব্যারাকপুরের একটা জঘন্য হলে "দিল সে" দেখানোর জন্যে।

    সে কি জঘন্য নাচ রে বাবা!!! একটা কালো বস্তার মধ্যে শাহরুখ আর মনীষা দুজনে ঢুকে জাপটাজাপটি নাচ।
  • tatin | 117.197.68.226 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৬540575
  • সূর্যগ্রহণের আগে দাদু ১০০ টাকা ঘুষ দিল, গ্রহণ যাতে না দেখতে যাই সেইজন্য। ঘুষ নিয়েও গ্রহণ দেখেতে গেলাম, ফেরর পথে বারুইপুর লোকালে ঐ ১০০ টাকাই পকেটমার হলো!
  • hu | 12.34.246.72 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৭540578
  • রিমিদির গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল। ২০১৭ তে পৃথিবীটা থাকবে কিনা সেটা আগে দেখ। তার চেয়ে এবছরের শেষের দিকে মেক্সিকো এসো। কি যেন তারিখটা! পৃথিবী ধ্বংস হবে সেদিন।
  • Tim | 198.82.21.149 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৮540579
  • সদা, হেব্বি হচ্ছে। আরো হোক।
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৪৯540580
  • হাহাহাহা হু এইটা দারুণ দিলে :-))) সত্যি পৃথিবী থাকবে কি না ঠিক নেই, যা ভাটানোর ভাটিয়ে নিই বরং এখন।
    তবে এ বছরের শেষে মনে হচ্ছে ইন্ডিয়াতেই থাকব :-(
  • gandhi | 203.110.246.22 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৫০540581
  • আমার নব্বই নর্থ কলকাতার এক সরকারি কোয়ার্টার .. আমার নব্বই শুরু বোধয় ৯২-৯৩ থেকে... তার আগের কিছু তো মনেই নেই... সিংহভাগ জুড়ে শুধুই খেলা... ৯০ মানে খেলা-গান আর ২-১ খানা সিনেমা... আর প্রেম-প্রেম ভাব শুরু হওয়া... প্রথমে তাহলে খেলা... নাহ... প্রথমে গানই হোক...

    তখন ৯৩-৯৪ হবে হয়ত... আমার কি আর মনে আছে ??? কোয়ার্টারের পুজোয় সব সময় কুমার শানুর হিন্দী আর মহম্মদ আজিজের অদ্ভূত উচ্চারণের বাংলা .... তো একবার হঠাতই চলল "এই বেশ ভালো আছি.. " ( আজ অব্দি চেষ্টা করেও পুজোয় সুমন চালাতে পারিনি ... লোকে নাকি খাবেনা...) পাড়ার দাদারা হেব্বি উত্তেজিত.. কারণ আমাদের পাশের কোয়ার্টারের ছেলের ক্যাসেট... সে নাকি এমন গান করেছে যে গোটা বাংলা "ফেটে" গেছে.. তা সে যাই হোক... শুনতে বেশ ভালই লাগছিল... কেমন কথায় কথায় "শুয়োরের বাচ্ছা" বলছে... যে শব্দগুলো কেউ বললে বাড়িতে বলে "ঐ দাদার সাথে মিশবেনা " .. অথচ... সেই শব্দ-ওয়ালা গান মাইকে বাজছে... তার আগে বাবা সুমন চ্যাটার্জির গান-এর ক্যাসেট এনেছে বাড়িতে.... কিন্তু দু-একটা গানের বেশি ভালো লাগেনি... বসে-আঁকো , সূর্য বলল ইশ , পেটকাটি চাঁদিয়াল, ইচ্ছে হল এক ধরনের গঙ্গাফড়িং... এগুলো বেশ মজার... বাকি গানগুলো যেন কেমন কেমন.. মানেই বুঝিনা... বাবা আরো গান শুনতো হেমাঙ্গ বিশ্বাস-এর ... ক্যাসেটের কভারটা ছিল নীল রঙের .. মাঝে একটা গোল অংশ সেখানে একজনের মুখ...

    কিছুদিন গেল... একটু পাকলাম... একেই কোয়ার্টারে দাদার তো অভাব নেই.... মেয়েদের দিকে প্রেম প্রেম ভাবে তাকাতে শিখলাম.... দেখতে শিখলাম... নটার সাইরেনের পর নিবেদিতা স্কুলের বাস ... "লাল-ফিতে সাদা মোজা " পড়া মেয়েগুলো স্কুল বসে উঠে যাওয়া..আমাদের স্কুলবাসটা যখন কোনো মেয়েদের স্কুলের পাশ দিয়ে যেত... সবাই সেদিকের জানলে হুমড়ি খেয়ে পড়া শুরু... অঞ্জন দত্তর রঞ্জনা, মেরিয়াম, বেলা বোসদের নিজের প্রেমিকা মনে করে স্কুলে বেন্‌চ বাজিয়ে গান শুরু ... এক বন্ধু ২৪৪-১১৩৯ এ ফোনও করলো... হেব্বি দু:খ পেল, কেউ ধরলনা বা লাইন পেলনা .. কোনো এক কারণে... যে কোনো কারণেই অঞ্জনের গানের গায়ক হয়ে উঠলাম আমি... আর একটু পরের দিকে এসে সুমনের পাখা হয়ে গেলাম... বন্ধুরা প্রচুর আওয়াজ দিল... ওদের ফেবারিট গায়ক কুমার শানু, উদিত নারায়ন, সনু নিগম... আর আমার কিনা সুমন-অঞ্জন??? ( সব যে বুঝতাম না নয়... কিন্তু দেখ আম্মি সবার থেকে আলাদা.. এই জিনিসটা হেব্বি লাগতো) ছ্যা ছ্যা.... তখন ক্লাস 6-7 হবে... আমাদের আঁকার স্যার ছিল সঞ্জয়দা...সে তখন আর্ট কলেজের স্টুডেন্ট ... আমাদের বাড়িতে আঁকার ক্লাস... গান শুনতে শুনতে আঁকার ক্লাস চলত... সঞ্জয়দার ক্যাসেটেই প্রথম শোনা মহিন.. আর একদিন একটা অদ্ভূত শ্রুতিনাটক... প্রিয়-বন্ধু... সাথে ব্যান্ড... পরশপাথর..একদিন আবার সেই পরশপাথরের গান নিয়ে এলো....ক্যাসেটের ছবিটাও কেমন একটা ... খুব কালো ... এরকম ক্যাসেটের কভার আগে দেখিনি .... সেবারই বোধয় ... পুজোর সময় হঠাত দুপুরবেলা... চুপচাপ পাড়া ... হঠাত ... কি বিশাল চিত্‌কার .... কিছুক্ষণ বাদে দেখি মাইকে একজন চিল্লাল "ওরে পচা রে..." ... বেশ কিছুইখন পর বুঝলাম এটাও গান.... এর নাম ভূমি ......... ঐ একই বছরে মনে হয় চন্দ্রবিন্দু শোনা.... ফাঁকা-নাকি, এভাবেও ফিরে আসা যায়... প্রথম কলেজের দিনটা আমার পেটেন্ট গান হয়ে উঠলো... আর তারপর বন্ধু তোমায় ... সে গান শুনে মন কেমন করে ওঠা...

    কিন্তু হিন্দি গানগুলো একদম টানতনা কেন জানিনা... হয়ত হাজারবার শুনে শুনে বিরক্ত হয়ে গেছিলাম ... আমি একটু একটু শারুখ ফ্যান ছিলাম (দিদির চাপে পড়ে)... টুপি পড়ে একবার “য্যারা তসবির সে তু”– নাচতে গিয়ে মায়ের কাছে বকা খেলাম.... টুপি পড়ে হাওয়াইন গিটারটা নিয়েই “দো দিল” গাওয়ার চেষ্টা করতাম.... কিন্তু সেগুলো ঐ দু-একদিন... কখনই মন দিয়ে নয়...

    পাড়ায় রবীন্দ্র-জয়ন্তী (নাহ... শুধু রবীন্দ্র নয়... রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী... কিন্তু নজরুল চিরকাল উপেক্ষিতই রয়ে গেছিলেন আমাদের পাড়ায়) ... একবার, তখন খুব ছোট্ট... নাটক হবে... " কাবলিবেড়াল " ... আমি নাটক করবই... কান্না-কাটি করার পর... আমার জন্য রবি ঠাকুরে কলম চালিয়ে একটা ক্যারাক্টার ঢোকানো হলো... একজন (মানে আমি ) মাথায় মোট নিয়ে যাবে... তাকে কেউ জিগ্গেস করবে "জমিদার বাড়ি কোনদিকে ??" আমি বলব.. "ঐদিকে " ... হেব্বি আনন্দ.... কিন্তু যথারীতি নাটকের সময় ঐদিকে বলে হাতটা অন্যদিকে দেখিয়ে ফেললাম... নেহাত বাচ্ছা বলে কেউ পেটায়নি... খালি ডিরেক্টার বন্‌কুদা রাগী রাগী চোখে তাকিয়েছিল... তারপর থেকে নাটকে নিয়মিত হয়ে গেলাম... সাথে গিটারে একটা করে গান... কিন্তু নব্বই শেষ হওয়ার আগেই হঠাৎ কেন যেন রবীন্দ্র-জয়ন্তী বন্ধ হয়ে গেল... বছরভর অপেক্ষা করার দিন আর থাকলোনা ...
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৫৪540582
  • গান্ধীর নব্বই পড়ে বুঝলাম আশি আর নব্বই এর মধ্যে তেমন কোনো তফাৎ ছিল না ...
    কিন্তু নব্বই আর দশ কিম্বা কুড়িতে মনে হয় তফাৎ অনেকখানি হবে।

  • gandhi | 203.110.246.22 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৫৮540583
  • এবার খেলা...

    তখন ডিডি-১ এ কোনো খেলা দেখাত না... ( দেখালেও বোধহয় আমাকে সব-সময় দেখতে দেওয়া হতনা....) ইন্টারন্যাশানাল তো বাদই দিলাম... মোহন-ইস্টও নয় ... তাই বন্ধুদের বাড়ি মাঝে মাঝেই যেতাম বিদেশী খেলা দেখতে... প্লেয়ারদের ভালো করে চিনে উঠতে পারিনি... কিন্তু দেখতে ভালো লাগত... তারপর এলো ৯৪...

    বিশ্বকাপের আগে একটা কিসের থেকে বই দিয়েছিল... যাতে প্রতি টিমের প্লেয়ার লিস্ট ছিল... আপাতদৃষ্টিতে কাজের মানুষ আমার বাবা যে খেলা নিয়ে কতটা পাগল সেটা জেনেছিলাম... দেখেছিলাম ব্রাজিলের সাপোর্টার বাবার মারাদোনাকে নিয়ে পাগলামি, দেখেছিলাম পাড়ায় পাড়ায় হলুদ-সবুজ আর আকাশী-সাদা পতাকা (যা দেখতে পানি ৯২ এও.. বা দেখে থাকলে ও মনে নেই.. বা তাই নিয়ে পাগলামিও নেই ) ... রাত ১২টা নাগাদ হাফটাইমে বা দুখানা খেলার মাঝে বাবা আমাকে নিয়ে নিচে নামত.. আমাদের মাঠে তখন মেলার মত লোক... যদিও আমার কোনো বন্ধু নামত না... (তারা এতটা খেলা পাগল ছিল না তখন..) বাবা-কাকুরা বিশেষগ্ব-এর মত দিত আর আমি হা করে গিলতাম.... সেই প্রথম নাম শোনা ম্যাথেউস , ক্লিন্সম্যান, দুঙ্গা, রাই , রোমারিও, বেবেতো, ক্যানিজিয়া, স্তৈচকভ, বাজ্জিও, .... মারাদোনা তো আছেই... দেখতাম নাইজেরিয়ার খেলা হলেই বাবা আর কাকুদের একজন কাউকে খোজার চেষ্টা... এমেকা এজুগো .. রিজার্ভ বেঞ্চে বাবা বলতেন , "দ্যাখ ... এই হল আমাদের মোহনবাগানের প্লেয়ার .. আমার দলে খেলে গেছে.. " দেখতাম কিভাবে এক হয়ে যেত আমার ক্লাবের ফুটবলের সাথে অন্য এক দেশের ফুটবল... প্রথম শেখা কাকে বলে স্টপার, কাকে সাইড ব্যাক আর কাকে লিবেরো (ঠিক মনে নেই ... যতদুর মনে পড়ে ম্যাথেউস লিবেরো হিসেবে খেলেছিল কয়েকটা ম্যাচ ) ... প্রথম চিনলাম রোমারিও-কে ... ( বাড়িতে কেবিল টিভি না থাকার জন্য যার খেলা আর কোনদিন দেখতেও পেলাম না ) হঠাত মারাদোনার চলে যাওয়া.. বুঝিনি কি হয়েছে... শুধু দেখলাম... অনেকের কাছে বিশ্বকাপটাই যেন শেষ.. অনেকে বলল 'এ ব্রাজিলের লোকের কাজ.. ' কোথায় ব্রাজিল, কোথায় আর্জেন্টিনা জানিনা.. কিন্তু তাদের নিয়ে পাগলামি করতে শিখলাম... আর সেইসব কথা স্কুলে গিয়ে বলে স্কুলে হিরো হওয়ার শুরু... মনে মনে ঠিক করে নেওয়া যে বার হয়ে ফুটবলারই হাতে হবে... আমার প্রথম ভালবাসার শুরু ৯৪ এর মাঝরাতের বিশ্বকাপ... তারপর বন্ধুর বাড়িতে বসে দেখা ৯৬ এর ইউরো... জিদান, মালদিনি, গ্যাসকয়েনকে চেনা.... আর ফাইনালে অজ্ঞাতকুলশীল বিয়েড়ফের হিরো হওয়া... তারপর এলো ৯৮ এর বিশ্বকাপ... নতুন নাম রোনাল্ডো, কার্লোস, সুকের, নিজের ফেবারিট ব্রাজিলকে হারানো সত্বেও আমার দেখা সেরা ফুটবলার হয়ে উঠলো জিদান... যার ঘোর আর এ জীবনে কাটলোনা... আমি পেলেকে দেখিনি .... মারাদোনার ২-৩ টে খেলা ... আমার কাছে আমার সেরা জিদান .... যাকে প্রথম দেখি ৯৮এর শেষে..

    নব্বই-এর ফুটবলে অনেকটা জুরে কলকাতা.. খেলার দিন দুপুরে কলকাতা-ক আর কলকাতা-খ-এ খেলার কমেϾট্র.. মোহনবাগান সাপোর্ট করা ফ্যামিলির ছেলে ... আমি ও মোহনবাগানের ফ্যান... কিন্তু কিছুতেই বুঝতাম না... কেন বাবার ফেবারিট প্লেয়ার তখন ছিলেন কৃশানু দে ... আমার কাছে তো সে একজন বয়স্ক প্লেয়ার যে কিনা এফ.সি.আইতে খেলে... আমার প্লেয়ার ছিল চিমা-সত্যজিত-অমিত দাস ... খুব রাগ হয়েছিল যেদিন পিকেকে ইবে একটা ওপেল-এর গাড়ি দেয়... কেন আমাদের ক্লাব অমল দত্তকে দেবেনা ??? তারপর সেই ৯৬ সাল... অমল দত্তর ডায়মন্ড সিস্টেম... আমার দলে চিমা, দীপেন্দু .... কোয়ার্টারে এক বন্ধুর বাড়ি সবাই মিলে খেলা দেখতে বসা (যেখানে ইবে ছিল সংখ্যাগুরু ) ... তারপর ৪-১ এ হার... কেন জানিনা... আরো বেশি করে আমার দলের সাপোর্টার হয়ে পরা... আর কিকরে যেন আমি সেই দুর্দিনে অমল দত্তর পাখা হয়ে গেলাম... আমার দ্বিতীয় প্রেম ( সরি ... প্রথম প্রেমের একটা সাবসেট) মোহনবাগান নিজের করে পাওয়া এই ৯০ য়ে .... প্রথম সল্টলেকে খেলা দেখতে যাওয়া ... বাড়ির আপত্তি সত্বেও ক্লাস ৮ য়ে পিসতুতো দাদার সাথে খেলা দেখতে যাওয়া... ইবে ম্যাচ যাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা... সামান্য লীগের ম্যাচ.... প্রথম ম্যাচেই জয়... গোল দিয়েছিল তৌসিফ জামাল ( এরকম অনেক প্লেয়ারকেই ভুলে গেছি ... কিন্তু একে ভুলব না ... আমার কাছে তৌসিফ জামাল হিরো... আমার মোহনবাগানের স্মৃতি ) ...

    আমার নব্বই জুড়ে শুধুই খেলা... একটু-আধটু ভালো লাগত ক্রিকেট... কোনো ফিক্সড ভালো লাগার প্লেয়ার ছিলনা... প্রথমে লাগত মন্‌জারেকার ... মাঝে জাদেজা....... নেভি-ব্লু জার্সি পরা বুকে লেখা INDIA একটা প্লেয়ার বহুদূর থেকে ছুটে এসে সামনে লাফিয়ে একটা ক্যাচ ধরল... এইটা আমার ছোটবেলার ক্রিকেটের স্মৃতি... আর হিরো কাপ ফাইনালে ইডেনে সচিনের বল (এই প্লেয়ারটাকে ৯০যে একদম ই কেন যে কখনো সহ্য করতে পারিনি কে জানে ) ... ৯৬সেমিফাইনালে কামি্‌ব্‌লর কান্না.... তারপর এলো সৌরভ.. আর আমার পছন্দের দ্রাবিড়.... কোনদিন পাখা ছিলাম না... কিন্তু ভালো লাগত... বাবার সাথে, বন্ধুদের সাথে সৌরভ-দ্রাবিড় নিয়ে ঝগড়ায় সময় কাটানো আর খেলতে নেমে দ্রাবিড়ের মত ডিফেন্স করে বন্ধুদের খিস্তি খাওয়া... কিন্তু কোনদিনই খেলাটাকে মন থেকে ভালো বসতে পারলাম না... খুব কষ্ট পেয়েছিলাম জাদেজা বেটিং-এ ধরা পড়তে ... তারপর খেলাটা থেকে আসতে আসতে সরে যাওয়া...
  • gandhi | 203.110.246.22 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:০৩540585
  • রিমি দি/জেঠি :)

    ৮০-৯০এ ফারাক নিশ্চই ছিল... আমার গ্যানচক্ষু ঠিকঠাক খোলার আগেই ৯০ গন ...
  • Tim | 198.82.21.149 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:০৬540586
  • গান্ধিও ভালো লিখেছে। আমাদের কাছে আশির দশকের শুরুটা অনেকটা এরকম।
  • Siddhartha | 131.104.32.147 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:১২540587
  • এটুকুতে মন ভরল না
  • gandhi | 203.110.246.22 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:১৬540588
  • লাইফে প্রথম নাম্বার পাবো না জেনেও রচনা লিখলাম :(
  • rimi | 168.26.205.19 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:১৯540589
  • কে বলল নম্বর পাবে না? এই তো আমি নম্বর দিলাম: একশোয় একশো :-))
  • gandhi | 203.110.246.22 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:২০540592
  • বিক্রম-শমী
  • gandhi | 203.110.246.22 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:২০540591
  • ৯০-য়ের শুকতারা কেউ বলল না :( কভার পেজে কার্টূন থাকতো ।। কৌশিক না কি যেন ছিল গোয়েন্দার নাম।।। যার আবার একটা হাত লোহার ছিল
    বাবু-বুয়া-বিবি দের রহস্য গল্প :( যেখানে রহস্য খুঁজে পেতাম না ।।।
  • hu | 12.34.246.72 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:২০540590
  • হ্যাঁ হ্যাঁ আমিও একশো দিলাম। আরো হোক। সদা থেমে গেল কেন?
  • Nina | 12.149.39.84 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:২১540593
  • আম্মো দিলাম ১০০/১০০ লেখার জন্য আর +১০ extra মোহনবাগানের সাপোর্টার :-)

    লেখা আরও হোক--খুব ভাল লাগছে
  • rimi | 168.26.205.19 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:২৩540596
  • এই টিমও বলেছে আশি আর নব্বই একিরকম।

    কিন্তু দুহাজার দশ-কুড়ি মনে হয় একদম অন্যরকম হয়ে গেছে। এখন আমাদের পাড়ায় মাত্র একটা খেলার মাঠ। সেখানে বড় ছেলেরা মাঝে মাঝে খেলে। অধিকাংশ বিকেলে, আমি ডিসেম্বরে গিয়ে যতটুকু দেখলাম, সেই মাঠ ফাঁকা পড়ে থাকে।
    আমাদের সময় চার পাঁচটা মাঠ ছিল। আমি কলেজে ভর্তি হবার আগে পর্যন্ত কোনোদিন বিকেলে বাড়ি থাকি নি। হয় খেলতে যেতাম, নয় সাইকেল চালাতাম। এখন কাউকে সাইকেলে ঘুরতেও দেখি না। পরিচিত তিনটি ছেলে এবার মাধ্যমিক দিল। ওরা ক্লাস সেভেনের পর থেকে বিকেলে খেলে নি আর। বিকেলে নাকি টিউশন থাকত। এখন তারা কম্পিউটার আর টিভি নিয়ে ব্যস্ত থাকে অবসর সময়ে। আর বলা বাহুল্য, তিনজনেই বেজায় মোটা :-(
  • Nina | 12.149.39.84 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০০:২৩540594
  • সদা
    বন্দিশ খুব ভাল হয়েছে--এবার বিস্তার হোক---
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন