এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ২২ জুন ২০১৩ ২২:০৮613683
  • ওপরের লিং এর জন্য অক্ষদাকে ধন্যযোগ।
  • I | 24.99.12.71 | ২২ জুন ২০১৩ ২২:৪১613684
  • হুঁ, মাদার কমপ্লেক্স বলাটা আসলে ভুল। মাদার আর্কিটাইপ। এর সঙ্গে ইদিপাস কমপ্লেক্সের এক্কেবারে কোনো সম্পর্ক নেই। ইয়ুং-র তত্ব, একটু গোদা করে বললে- প্রত্যেক মানুষ জন্মানোর সময় অবচেতনে কিছু আর্কিটাইপ নিয়ে জন্মায়। এটি তার জেনেটিক ইমপ্রিন্ট, এ কোনো অধীত বিদ্যা নয়, একে অ্যাকোয়ার করা যায় না। এই আর্কিটাইপ মানবজাতি তার দীর্ঘ পথ চলার মাধ্যমে অর্জন করে এবং তা এই জাতির প্রতিটি সদস্যের অবচেতনে চারিয়ে যায় এবং প্রজন্মে-প্রজন্মে পুনরাবৃত্ত হয়। যেমন মানুষের সভ্যতা একসময় মাতৃতান্ত্রিক ছিল ,তার ফলে মানুষের মনের মধ্যে "মা' এই আর্কিটাইপটি অবিনশ্বরভাবে গেঁথে গেছে। এই হল কালেক্টিভ আনকন্সাস। ইয়ুং-এর বক্তব্য , এই প্রত্নপ্রতিমারা মানুষের অবচেতন থেকে বেরিয়ে এসে তার যাবতীয় সচেতন কর্মের মধ্যে-রাজনীতির মধ্যে, শিল্পের মধ্যে, সাহিত্যের মধ্যে ছাপ ফেলে যায়। ঋত্বিক এই বক্তব্যকে এনডর্স করেন। যেমন উনি বলতেন -গোটা সভ্যতা এখন এই প্রাইমর্ডিয়াল মাদার ফোর্সের মুখোমুখি পড়ে গেছে। সে মা হয় ধ্বংসের প্রতিরূপ চামুণ্ডা কালী ( সুবর্ণরেখা'র সেই খা খা রানওয়েতে সীতার হঠাৎ করে মা কালীর মুখোশ পড়া বহুরুপী-র মুখোমুখি হয়ে যাওয়ার কথা মনে করুন) , অথবা রক্ষয়িত্রী স্নেহময়ী মাতা ( সুবর্ণরেখাতেই অভি ভট্চাজ মাধবীকে বলছেন- হ্যাঁ রে, যে মা-কে তুই কখনো চোখেও দেখিস নি, কী করে তার মুখটা , তাকানোর ভঙ্গিটুকু পুরোপুরি পেলি?এবং মাধবী বলছে- আমি তো তোমার মা-ই ! কিংবা তিতাস-এ অনন্ত ফিরে ফিরে স্বপ্ন দেখে তার মা জগদ্ধাত্রীর বেশে সেজে এসে দাঁড়িয়েছে; তিতাস-এই বাসন্তীকে দিয়ে বলানো হচ্ছে-জগতে মা-ই সত্য)। এরকম আরো উদাহরণ দেওয়া যায়।

    এখন এই মাদার আর্কিটাইপ ঋত্বিকের ভাঙা বাংলার (জন্মভুমি জননী) জন্য আর্তির স্বপক্ষে একটি তাত্বিক কাঠামো যোগায় বলে , নাকি জন্মদাত্রী মায়ের প্রতি একধরণের অবুঝ অসম্ভব ভালবাসার কারণে ওঁর তত্ববিশ্বের সঙ্গে খাপে খাপ মিলে যায়, বলা মুশকিল।

    মা জাতীয়া লোকেদের প্রতি ঋত্বিকের অদ্ভুত আকুলতা ছিল। কোথায় পড়েছি মনে নেই আঙুরবালা ও আরো কয়েকজন গায়িকা -এঁরা সকলেই এককালে নগরনটী ছিলেন) একজায়গায় সমবেত হয়ে গান গাইছেন, আর ঋত্বিক তাঁদের পায়ের কাছে বসে হাপুস নয়নে কেঁদে যাচ্ছেন আর বলছেন-গান গাও মা, গান গাও ! প্রাণ ঠাণ্ডা হোক !
  • I | 24.99.12.71 | ২২ জুন ২০১৩ ২২:৪৫613685
  • *মুখোশ-পরা
  • I | 24.99.12.71 | ২২ জুন ২০১৩ ২৩:০৪613686
  • কাজু, অতদূর কেইসে হল? তেঘরিয়া থেকে লেকটাউন !
  • kb | 213.110.243.21 | ২২ জুন ২০১৩ ২৩:০৮613687
  • আজ মেঘে ঢাকা তারা দেখলাম। আমার খুব ভালো লেগেছে। আমার বয়সের অনেক ছেলে মেয়ে দেখতে গিয়েছিল । নন্দনের হল ২ এর বালকনী পুরো ভর্তি ছিল। সিনেমার কিছু কিছু দৃশ্য দারুন ভালো লেগেছে।

    শাশ্বতর অভিনয় খুব ভালো। তবে মাতালের ক্ষয়িষ্ণু চেহারাটা ধরা হয় নি । শাশ্বত একটু ওজন কমালে আরেকটু ভালো লাগত। রাজনীতি আর দর্শন বেশ জটিল লাগে তাই ওই ব্যাপারে no কমেন্টস..................... যা বলার ইন্দো দা বলবেন ।
  • kb | 213.110.243.21 | ২২ জুন ২০১৩ ২৩:১০613688
  • সিনেমা তা দেখে আমার মনে হয়েছে ঘটক বাবুর সিনেমাগুলো রেভিসে দিয়ে তবে আর একবার এই সিনেমাটা দেখতে হবে।
  • I | 24.99.12.71 | ২২ জুন ২০১৩ ২৩:১১613689
  • এই কথাটা বলব বলে অপিক্ষে করে ছিলেম। কেবি বলে দিলেন। শাশ্বত'র ইয়াব্বড় ভুঁড়ি খুব বেমানান লেগেছে।
  • kb | 213.110.243.21 | ২২ জুন ২০১৩ ২৩:১৩613690
  • *revise
  • + | 69.93.241.118 | ২২ জুন ২০১৩ ২৩:১৮613691
  • KB, ছড়ালে খোকা, নন্দন-১।

    নন্দন-২তে তো প্রেমযুদ্ধ চলছিল

    হুম্ম, এই সপ্তাহে সিনেমাগুলো রিভাইস করে আবার দেখতে হবে। অনেক কিছু মিস করেছি মনে হচ্ছে, একটা ঘোরের মধ্যে দেখে ফেল্লাম। জিজ্ঞাস্যও অনেক আছে, সেগুলো পরে জিগাব
  • kb | 213.110.243.21 | ২৩ জুন ২০১৩ ০০:০৭613693
  • sorry ছোট ভুল ।
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ২৩ জুন ২০১৩ ০০:২৪613694
  • ঠিক। শুভাশিস যদি ঋত্বিক হত, খুব খারাপ কি হত? যাগ্গে।
  • তাতিন | 122.79.37.229 | ২৩ জুন ২০১৩ ০০:৪০613695
  • মেঘে ঢাকা তারা

    অনেকগুলো টুকরো টুকরো সিন, যেগুলো দেখতে বেশ ভালো লাগে, একসঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে সিনেমাটা। শুধু একটা সময়ের পরে ট্রাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতন লাগে। কেন এগুলো হচ্ছে, আদৌ প্রয়োজন ছিল কিনা-- আর কতক্ষণে সিগন্যাল হয়ে গাড়ি ছাড়বে, এই দৃশ্য পরম্পরা শেষ হবে, সেই প্রশ্ন জাগে।
    যে ধাঁচে পরিচালক খেলেতে গেছেন, সেখানে দর্শককে সঙ্গে নেওয়ার জন্য একটা ছক দরকার। কিছু দৃশ্যকল্পের রহস্যে পাঠককে ধরা। কেন এই সিনটা, কী প্রসঙ্গে সেইটা ভাবার, ডেসিফার করবার। কিন্তু কমলেশ্বর বাবু অদ্ভুত, ধাঁধা বলার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর বলে দ্যান। স্বপ্নদৃশ্যে নীলকন্ঠ যখন হাঁটুর ওপর কাপড় আর মুখে রক্ত তুলে অজ্ঞান ফুলমণির দেহের ওপর দ্যাখেন আর্মি বেল্ট পড়ে, আর তার অব্যবহিত আগেই বলে দেওয়া হয় ফুলমণি, আদিবাসী রমণী, আর্মি অফিসার কর্তৃক ধর্ষিতা। এধরণের অতিকথন বহুবার এসেছে, দীর্ঘ হয়েছে ছবি। দীর্ঘ হয়েছে মেঘে ঢাকা তারা, সুবর্ণরেখা বা নাগরিকের পুনরাভিনয়ের জন্যও। আর পুনরাভিনয়ের গুণগত মাত্রা ততটাই ভালো, 'কোমল গান্ধার'কে কপিরাইট বা অন্য কোনও অজানা কারণে 'তৃতীয় সুর' লিখলে যতটুকু থাকে।
    মেলোড্রামা, কোইন্সিডেন্স, আর্কিটাইপ, ক্লিশে প্রয়োগের ঈশ্বরের নাম ঋত্ব্বিক ঘটক। কিন্তু, যে সে এইগুলো করলে শুধু ক্লিশে পার্টটুকুই পড়ে থাকে। এত বেশি যুদ্ধপ্রচেষ্টা না করলে হয়তো আরেকটু ভালো বায়োপিক হত। কিম্বা, ঋত্বিক ঘটককে বোঝার জন্য যে মেধা আর অনুশীলন লাগে, সেইখানে খামতি থাকার জন্যই যুদ্ধটা প্রচেষ্টা রূপে প্রতীত হয়।
    তবে কিছু সিন দেখতে ভালো, বড় পর্দায় গান-কবিতার অনুষঙ্গে কখনো কখনো ভালো লাগতেই পারে। দেখতে ভালো সিনও সকলে বানাতে পারেন না। তা স্বত্ত্বেও বলব ল্যাপটপ বা টিভিতে অন্য কাজের ফাঁকে ফাঁকে কখনও একটা দেখে নিলেই হয়।
  • kb | 213.110.243.21 | ২৩ জুন ২০১৩ ০৮:২৪613696
  • তবে আমার মনে হয় এই সিনেমা প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানানোর জন্য সিনেমাটা দেখা উচিত । হাজার ত্রুটি থাকলেও অন্য অনেক সমকালীন সিনেমার থেকে বহুগুন ভালো এবং সিনেমার পিছনে অনেক পড়াশুনা আছে ।
  • a x | 86.31.217.192 | ২৩ জুন ২০১৩ ১১:০৯613697
  • অল্প করে ইউটিউবে একটু এই কমলেশ, অনন্যা আর শাশ্বতর ইন্টারভিউ দেখতে বসেছিলাম কি কুক্ষণে!! অনন্যা এরকম অদ্ভূত অ্যাক্সেন্টে কথা বলেন কেন? আর শাশ্বত কীভাবে চরিত্রের জন্য নিজেকে তৈরি করেছেন এর উত্তরে বলল স্ক্রিপ্ট আর ম্যানারিজম হাঁটা চলা ইত্যাদির জন্য যুক্তি তক্ক গপ্প কেননা উনি (ঋত্বিক) তো একটা ছবিতেই অভিনয় করেছেন, আর বোধয় হয়ত একটা ডকুমেন্টারি কিছুতে করেছেন। প্রায় ভার্বাটিম লিখলাম, এতই হাঁ হয়ে গেছিলাম যে দুবার চালিয়ে শুনেছি ঐ জায়গাটা! ঋত্বিকের চরিত যে করছে এই তার স্ট্যান্ডার্ড? আর একজন পরিচালকের ফার্স্ট লাইন অফ অ্যাক্সেপ্টিবিলিটি আমার কাছে কাস্টের মধ্যে দিয়ে। সিরিয়াসলি? এই অনেক পড়াশোনা, পরিশ্রম করে বানানো ছবির মুখ?
  • a x | 86.31.217.192 | ২৩ জুন ২০১৩ ১২:০০613698
  • মনীন্দ্র কি সতীন্দ্র?
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ২৩ জুন ২০১৩ ১২:১৫613699
  • মনে হয় সিনেমাটা একবার দেখে নিলেই ভালো :-)
    না হয় ল্যাপটপে বা টিভিতে, কাজের ফাঁকে ফাঁকেই।
    ভালো খারাপ তো সম্পূর্ণ সাবজেক্টিভ। কাজেই সে নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই। আর আমার পড়া-শুনা-জানা-র বহর বেশ কম। কাজেই আমার ভালো লাগাটা বোধ হয় অনেকটাই ইমোশনাল দ্যান লজিকাল।
  • a x | 86.31.217.192 | ২৩ জুন ২০১৩ ১২:২৭613700
  • আরে পামু কনে যে দেখব!
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ২৩ জুন ২০১৩ ১২:৪০613701
  • আরে সে তো বটেই। কিন্তু তোমার ক'দিনের পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছিল একেবারেই দেখতে চাও না ( এটা আমার সা: নি: :-) ), তো সেটাই বলছিলাম, যে দেখে নিও, এমন কি আধ ঘন্টা পরে, বাজে লাগলে বন্ধ করেও দেওয়া যায়। তারপর তো ভিন্ন মত এর রাস্তা খোলাই থাকছে।
  • cb | 41.6.142.13 | ২৩ জুন ২০১৩ ১২:৫৫613702
  • ক্ষয়া চেহারা না দেখালে মাতাল বিপ্লবী ফোটে না, তাই না?

    আসলে মনে হচ্ছে , এই সিনেমায় বোধহয় খালি ঋত্বিক এর চেহারাটাই আমদের এক্সপেক্টশন, অন্য দিকগুলো ও আলোচনা হোক

    ডিঃ যেখানে থাকি সেখানে দেখার উপায় নেই, তাই দেখতে পাচ্ছি না। পেলেই দেখবো :)
  • a x | 86.31.217.192 | ২৩ জুন ২০১৩ ১৩:১১613704
  • না দেখতে তো চাইইনা। কেন ভালো লাগবেনা জানি অলরেডি ঃ-) দেখলেই প্রজ্জ্বলিত হবার সমূহ সম্ভাবনা।

    তবে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের রিভিউটা একটু আশ্চর্যের। ভদ্রলোক যুক্ত ছবির সাথে, সেক্ষেত্রে রিভিউ লেখা একটু কেমন কেমন।
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ২৩ জুন ২০১৩ ১৩:১৫613705
  • হে হে। শরীর টরির খারাপ করে দেখার চেয়ে না দেখাই ভালো :-)
  • I | 24.99.132.93 | ২৩ জুন ২০১৩ ১৪:০৪613706
  • আমি তাতিন ও অক্ষদার সঙ্গে একমত হয়েও এই ফিল্মটার পাশে দাঁড়াতে চাই। তার কারণ দিতে গেলে আমাকে শমীক বন্দ্যো আর ধরণী ঘোষের উদাহরণ দিতে হবে। ধরণী ঘোষ যেমন ভালো থিয়েটারকে ভালো এবং খারাপ থিয়েটারকে খারাপ বলতেন। কিন্তু শমীক পক্ষ নিতেন। সচেতনভাবে। কেন সেটা বোঝাতে গেলে একটু কোট করতে হয়- " আমার কাছে ভিশনটা হচ্ছে আমি থিয়েটারকে একটা সোশ্যাল চেঞ্জ -এর টুল হিসেবে দেখতে চাই। ... তার ফলে একটা নাটক কিংবা একটা থিয়েটারের দল, বা একটা মুভমেন্ট, বা একটা প্রোডাকশন, যদি কোথাও একটা rich cultural thinking, critical landscape কে ফিড করে, নট জাস্ট থিয়েটারকে, আমি সেটার পাশে গিয়ে দাঁড়াব। .... সেখানে হয়তো আমি এমনও করেছি যে, একটা নাটক যদি আমার খুব লিমিটেড মনে হয়, অনেকগুলো কারণে, কিন্তু যদি একটা কোনো পয়েন্টে ওটা ইম্পরটেন্ট মনে হয় তার নিজস্ব জায়গাটা থেকে, তাহলে অর্থাৎ ঐ কনটেক্সট-এ নেসেসারিলি আমি ব্যাড থিয়েটারকে ভালো বলব না- আবার এমন হয়েছে যে, তাদের টোট্যাল অ্যাক্টিভিটি আমি দেখেছি যার মধ্যে তিনটে নাটক দেখেছি যার কোনোটাকে আহামরি মনে হয়নি, কিন্তু কিছু একটা গ্রো করছে হয়তো-চার নম্বর কি পাঁচ নম্বর নাটকে হয়তো ঐ জায়গাটায় পৌঁছতে পারে, তখন ঐ তিনটে নাটককে আমি প্রশংসা করব না, আবার নিন্দেও করব না। ধরণী নিন্দে করবে...'' (শমীক বন্দোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার-"থিয়েটারের জলহাওয়ায়" বই থেকে নেওয়া।)

    মনে হয় এই মলশাসিত, 'মেয়েমানুষের লাশ'সজ্জিত মুষলপর্বের মত্ততার মধ্যে ঋত্বিক যদি পণ্য হয়েও আসেন, এমনকি হাফ-কুকড পণ্য হয়েও, তাহলেও সেই বেঘোরে পা-ফেলা মাতলামিকে স্বাগত।নতুন কিছু ছেলেমেয়ে এই মেছোহাটায় ঋত্বিক ঘটকের নাম শুনছে, কেউ কেউ হয়তো খুঁজে-পেতে লোকটার কিছু সিনেমাও দেখবে, যারা দেশভাগ দেখে নাই,দাঙ্গা দেখে নাই, দুর্ভিক্ষ দেখে নাই , মণ্বন্তর দেখে নাই, এমন কিছু গ্রীনহর্ণের দল নচিকেতার কথা পড়বে, ও কেউ হয়তো বলবে "নচিকেতা ওয়াজ নট আ ফুল"-এইটা আমার কাছে প্রাপ্তি মনে হয়। আমি শুধু শিল্পবিচার করে কমলেশ্বরের এই দুঃসাহস ও চেষ্টাকে খাটো করতে রাজী নই। নইলে তো সত্যি বলাই যায়-কী আর এমন ফিল্ম? সত্যি তো কত ভুলভাল।

    তবে একটা কথা। সাহস করেই বলি। ঋত্বিক ঘটক নামক ঈশ্বরের সবক'টি ফিল্মই কি একেবারে গান্ধর্ব ? নাগরিক না হয় বাদই দিলাম, প্রথম ছবি।কিন্তু মেঘে ঢাকা তারা ও অযান্ত্রিক বাদ দিয়ে অন্য যেক'টি ফিল্ম , তাতেও কি অনেক ভুলভাল, ইনকন্সিস্টেন্সি নেই? সাব্লাইমের পাশাপাশি রিডিকুলাসের আয়োজন নেই ? ঋত্বিকও কি সদাসর্বদা শিল্পের শর্ত মেনে চলেছেন? বা আদৌ চলতে চেয়েছেন? মৃণাল সেন যখন বলেন - মেঘে ঢাকা তারা'র ঐ বিখ্যাত দৃশ্যে অনিল চ্যাটার্জি একজন মোটা চামড়ার লোকের মত বলে-ছেলেটার এমন একটা প্রাণ হয়েছে না ! ঐ সংলাপটি পুরো আরোপিত মনে হয়-কথাটা খুব ভুল কি? কিন্তু তার ফলে পরমুহুর্তেই যে দৃশ্যের জন্ম হয়, তার অভিঘাত ভুলতে মানুষের একটা গোটা জীবন কেটে যাবে, এটাও অবশ্যই সত্যি। এই অভিঘাতের কথা মাথায় রেখেই আমার মত কেউ কেউ ঋত্বিকের ফিল্ম দেখতে বসি অনেকখানি সহানুভুতি নিয়ে, বেশ কিছু খামতিকে ( আমাদের মোটা মাথায় যা বুঝি) ইগনোর করি এবং দিনের শেষে ঠকি না।

    কমলেশ্বরের এই ফিল্মটার একটু সহানুভুতি প্রাপ্য।
  • I | 24.96.18.193 | ২৩ জুন ২০১৩ ১৯:৫৯613708
  • হ্যাঁ, শাশ্বতর অভিনয় আমার অনেক জায়গাতেই ভালো লাগে নি। হোমওয়ার্ক করেছে কিনা জানি না। তবে তেমন বুদ্ধিদীপ্ত লাগেনি চরিত্রটা। অবশ্য আমি জানিনা ব্যক্তি ঋত্বিক ঘটক কেমন ছিলেন।
    কিন্তু অনন্যা তো বেশ ঠিকঠাক! ইন ফ্যাক্ট অনন্যাই এই ফিল্মের সেরা অভিনেতা। বাদবাকিরা কেউই সেরকম ভালো অভিনয় করেন নি- বিদীপ্তা ও কিছুটা শান্তিলাল ( মানে যেটুকু স্কোপ পেয়েছেন আর কি) বাদে।

    এই ফিল্মের সেরা পারফরম্যান্স হল দেবজ্যোতি মিশ্রের । আহা, কী গান ! মোদের কোনো দেশ নাই, মোদের কোনো দিশা নাই। ঐরকম একটা গান দিয়ে শুরু আর ঐরকম একটা ওপেনিং দৃশ্য, সারি সারি পাঁচিলে ভাগ হওয়া ভূখণ্ডের মধ্যে দুটি বালক খুঁজে বেড়াচ্ছে তাদের ঘর, বাইরে এক খোলা প্রান্তর , আর সেই প্রান্তরের মধ্য থেকে হঠাৎ উঠে এসে ফোন ধরছেন একজন নার্স- এইসব দেখেশুনে কী বিরাট সম্ভাবনার কথা মনে হয় শুরুতে ! যদি ধরে রাখতে পারতেন গোটা সিনেমা জুড়ে !

    আর সমান ভালো পারফর্ম করেছেন সিনেমাটোগ্রাফার। দুরন্ত সব ওয়াইড অ্যাঙ্গল শট- বিশাল মাঠ পেরিয়ে ছুটে আসছে দা-বল্লম-কাটারি হাতে লড়াইয়ের মানুষরা, কিম্বা মশাল হাতে রাত্তিরে দলে দলে রাত-জাগাদের দল, এখানে-সেখানে দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে কাকতাড়ুয়ার অবয়ব; জল-মাটিতে ভাগাভাগি জমিনের ওপর দূরে নাচ হচ্ছে দানবদলনী ছৌ, দুটি মানুষ ক্যামেরা হাতে ফ্রেমবন্দী করে রেখে দিচ্ছে সেই দৃশ্য; বিশাল পর্দা জুড়ে স্নেহ-ঝিলমিল মহাবৃক্ষ, তার ডাল থেকে ঝুলে আছে টায়ারের দোলনা, সে দোল খাচ্ছে শূন্য , একা, সটান এসে বিঁধে যাচ্ছে দর্শক, আপনার বুকে। একটি উড়ন্ত কাটারি মুহূর্তে এসে গেঁথে গেল নীলকণ্ঠর পায়ের সামনের মাটিতে।

    ফিল্মটাতে সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু কোথা হইতে যে কী হইয়া গেল!
  • sinfaut | 122.79.37.220 | ২৩ জুন ২০১৩ ২০:৫৪613709
  • হে হে শমীক বন্দোপাধ্যায় ফিল্ম লাইনে পড়াশোনা করা সিরিয়্স লোকজনের কাছে কী লেভেলে গালাগাল খায় সেটা ইন্দোদাকে একবার শোনাতে হবে। ইন্দোদা একটা ফিল্মের ফোরাম জয়েন করবে ফেসবুকে?
  • I | 24.99.179.65 | ২৩ জুন ২০১৩ ২১:০০613710
  • সব কিছুই যদি ফিল্ম লাইনে পড়াশোনা করা সিরিয়াস লোকজনের জন্য করতে হয়, তাহলে আমার সেই সব কিছুর জন্য একটু ব্যথা আছে। তাঁরা খুব পুজ্য ও প্রণম্য, তাঁরা ফেসবুকের ফিল্ম ফোরামে মহারাজের মত বিরাজ করুন। বাইরে-টাইরে আসবেন না, পায়ে ধুলো লেগে গেল মুশকিল আছে। টনসিল ফুলে যাবে।
  • তাতিন | 122.79.36.26 | ২৩ জুন ২০১৩ ২১:১৯613711
  • ইন্দ্রদা,
    সিনেমাটার সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা মনে হয়েছিল যখন ঋত্বিককে পাগলখানায় এনে গল্প শুরু করা হচ্ছে। আশা করছিলাম, যাস্ট ফিকহনের মত ন্যারেটিভ তৈরি হবে, ঋত্বিক ও পাগলেরা এরকম কিছু জিনিস দাঁড়াবে। কিন্তু হায়, পাগল হয়ে বেরোলো লুকোনো নকশাল আর অজ্ঞাত কারণে অদ্ভুত হিন্দি বলা অনিন্দ্য ব্যানার্জি!
    আর, ঋত্বিকের রিডিকুলগুলো, ওই সুপ্রিয়ার চড়াসুর হোক কি সুবর্ণরেখার পতিতাগৃহে বোন-অণ্বেষণ হোক, রিডিকুল লাগেনা, ব্যাখ্যাত লাগে। ধাঁধার মতন আমাদের প্রশ্ন করে, উত্তর বার করিয়ে ন্যায়। সেইটা যে-সে করতে পারেন না।

    তোমার সম্ভাবনাটার পাশে আমার একটা নেগেটিভ সম্ভাবনার কথা বেশি মনে হয়, আমার ভাই বা ওর বয়সী কলেজে পড়া ছেলে মেয়ে সিনেমা দেখতে গিয়ে একটা ভুল অবস্কিওর আরবিট আঁতলামো প্রচেষ্টা দেখে জিনিসটা পুরো কাটিয়ে দেবে এই ভয় হয়। যেমন সৃজিতের হাংরি কবিকে দেখে এইগ্রুপের অনেককে দেখেছি হাংরি আন্দোলন মানে তুম্ল খোরাক- এই ধারণা তৈরি করে নিতে।
    সময়টাকে, মানুষগুলোকে, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলা আর বাম আন্দোলনের ইতিহাসকে ধরতে আমার মতে অনেক বেশি সাক্সেস্ফুল হয়েছিল রুদ্ধসঙ্গীত। প্রথম পর্বে এই তুলনাটা চলেই আসছিল।
  • তাতিন | 122.79.36.26 | ২৩ জুন ২০১৩ ২১:২৬613713
  • *ফিকশনের মত ন্যারেটিভ*
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ২৩ জুন ২০১৩ ২১:২৬613712
  • রুদ্ধ সঙ্গীত এর সাথে তুলনা এসেই যায়। যদিও উইঙ্কল বা ভাইরাস এম এর পাশে আমার রুদ্ধসঙ্গীত দুর্বল লেগেছে। অভিনয় স্থানে স্থানে বড্ড চড়া। দেবশঙ্কর অসাধারণ।
  • a x | 86.31.217.192 | ২৩ জুন ২০১৩ ২১:৪৯613715
  • ইন্দো, নাগরিকের কথা বলে একটু ভুরু কোঁচকালো। নাগরিক মোটামুটি ভারতীয় ধারার ফিল্মমেকিংএর সব কনভেন্শন ভেঙ্গেছিল। আর মনে রেখ নাগরিক অনেক আগে রিলিজ হবার কথা ছিল। পথের পাঁচালীর বহু আগে বানানো। ঋত্বিকের সিগনেচারের প্রায় সব ছাপই নাগরিকে।

    আর ঋত্বিক নিজে বলেছেন তিনি কোনোদিনও সিনেমার মাধ্যমে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না -কিন্তু এই যে ঋত্বিককে ঘিরে একজন মাতাল, স্ক্রিপ্ট নেই, ইম্পালসিভ, হাইলি ইমোশনাল, এবং ইমোশনে ভর দিয়ে সিনেমা বানান - এই ইমেজটা, এবং বেসিকালি এই ইমেজের জন্যই এই সিনেমা - এটা আমার পুরোপুরি ঠিক মনে হয়না। এর অনেকগুলোই সচেতন ভাবে করা। ন্যাশানিলিস্ট ছিলেন, প্যাশনেট ছিলেন এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু অত্যন্ত erudite এবং প্রচুর পড়াশোনা করা পরিচালক। ঋত্বিকের মত একটা পুরো প্রজন্ম ধরে অত্যন্ত উঁচুমানের পরিচালক তৈরি করা (কুমার সাহানী, মণি কউল, জন অ্যাব্রাহাম) এরকম আর কেউ করেছে বলে জানিনা - এইটা সিনেমাতে এসেছে?

    আর দেখ গুড ইন্টেন্শন থাকতেই পারে আর আমি একদম একমত যে যারা ঋত্বিক সম্বন্ধে কিছুই প্রায় জানতনা তাদের কাছে একটা প্রাইমের, ভুল প্রাইমার হলেও। কিন্তু ঋত্বিকই তো বলে গেছেন যে শেষ দায় দর্শকদের। ভালো সিনেমা চিনতে পারাও যেমন জরুরী, নট-সো-ভালো রিজেক্ট করাও।

    Now we can come to you, the spectators. you are the real support of the businessmen. the goat can fight only from the strength that it can draw from its support. you get what you like. you don't like the new kind of films. you like a complete work of art like Pather Panchali, the kind of work that appears only once in an age. otherwise you go for things that are not worth making. you could never accept Aparajito. the loss was more yours than the artist's.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন