এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • লটনের ছাগল

    Abhyu
    অন্যান্য | ১৮ আগস্ট ২০১৪ | ১৪৩৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • byaang | 132.167.80.154 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৯:২৯649299
  • লিখব, কিন্তু আপাতত সময় নেই। প্রচুর কাজ জমে আছে। একটু এগিয়ে নিই, তারপর।
  • kumu | 52.104.34.125 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৯:৫৭649300
  • তুলে দিলাম।
  • অন্য গল্প | 85.137.10.215 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৯:২৫649301
  • name: byaang mail: country:

    IP Address : 132.166.88.192 (*) Date:26 Sep 2014 -- 10:31 AM

    আরে গল্প তেমন কিছু না! মানে আমার প্রেমের ধরণ দেখে নন্দনের ঐ গড়ানে মতন জায়গাটা, যেটা ঐ পুকুরটার এক্সটেনশন, সেখানে বসে যত লোকজন প্রেম করছিল, তারা বেজায় খচে গিয়ে "এ কী অসভ্যতা" জাতীয় গালাগালি দিচ্ছিল।

    গল্পের শুরুতে যাদবপুরের বাস্কেটবল কোর্টে বসে আমরা প্রেম করছিলাম। তৎকালীন প্রেমিক যাদবপুরে পড়তেন সেকেন্ড ইয়ার আর আমি স্কটিশ ফার্স্ট ইয়ার। এগারোটা নাগাদ ইন্ডোরে একটা কুইজ ছিল। তৎকালীন প্রেমিকের জালিবাজিতে সেই কুইজটায় হেরে গিয়ে আমার হেব্বি মেজাজ খারাপ ছিল। তো বেরিয়ে এসে বাস্কেটবল কোর্টে বসে প্রেমিক আমার মান ভাঙাচ্ছিল। সবে আমার হাতটা ধরে "বলছি তো আমি সরি। আরে বুঝতে পারি নি, তুই এত খচে যাবি। তাহলে করতাম না" বলেছে, এমন সময় আপনাদের সবার প্রিয় শ্রদ্ধেয় পিমিত্তির এসে "পাঁচটাকা দে, বিড়ি খাব" বলে তোলাবাজি করে আমাদের বাস্কেটবল থেকে তুলে দিল।
    (দেখে নিন সেই যুগেও বহিরাগতদের কেমন অত্যাচারিত হতে হত ইনসাইডারদের হাতে।)

    অতিষ্ঠ হয়ে বেরিয়ে এসে এইটবি থেকে কী একটা বাস ধরে নন্দনে যাওয়া হল কী একটা ইংরিজি সিনেমা দেখতে। তো তখন নন্দনের এসিটা এত শোঁ শোঁ করে চলত যে আমার কাঁপুনি এসে যেত, মাথা ধরে যেত। এদিকে সিনেমাটায় এত খটমটে ইংরিজি ছিল, যে আমি ডায়লগগুলোর বিন্দুবিসর্গ বুঝি নি। এদিকে ইংরিজিসিনেমাগুলো এমনিতেই ছোট হয় , তার উপর নন্দন কর্তৃপক্ষ আবার কেটেছেঁটে দেখাতেন বলে দুই ঘন্টার মধ্যেই সিনেমা গুটিয়ে গেল। আর আমার পয়সা উশুল হল না বলে আমার খিঁচড়ে থাকা মেজাজটা আরো খিঁচড়ে ছিল। হল থেকে বেরোনোর আগে অবশ্য আমার প্রেমিক আমার মানসিক অবস্থা আন্দাজ করে এবং তারপরে কী হতে যাচ্ছে অ্যান্টিসিপেট করে পিঠে একটা আলতো চাপড় মেরে বলেছিল "আরে ভুলে যা না বাপ! যা হয়েছে, হয়ে গেছে । এখন ফালতু ফালতু ক্যাচালটা টেনে বাড়াচ্ছিস কেন?" কিন্তু আমি প্রেমিকের এরকম বাণীতে তার মধ্যে অন্তর্নিহিত সাহস, অপ্টিমিজম, পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গী কোনো কিছু না দেখেই, তার উপর আরো খচে গেছিলাম। ফলে সিনেমা দেখে বেরোনোর সময়ে যেকোনো মুহুর্তে তান্ডব করে ফেলতে পারি এরকম মেজাজ নিয়ে বেরোলাম হল থেকে। বেরিয়ে দেখি বিকেলের আলো দিব্যি ক্যাটক্যাট করছে, বেজায় গরম, কিন্তু পুকুরের দিক থেকে ফুরফুরে হাওয়া আসছে।

    প্রেমিক বলল "বসবি?" আমার মুখে খারাপ গালাগালি আসছিল, কিন্তু কোনোরকমে রাগ সামলিয়ে চুপ করে থাকলাম। প্রেমিক মৌনং ইত্যাদি ভেবে নিয়ে ঐ গড়ানে জায়গাটায় গিয়ে বসে আমাকে বসতে ডাকল, "ওরে মা আমার! আর বাওয়াল না করে এসে বস এবার।"

    বসলাম। প্রেমিক ভাবল, তাহলে বোধ হয় আমার মাথা ঠান্ডা হচ্ছে, সে একটু উৎসাহিত বোধ করে খুশি গলায় বলল "উফ্ফ পারিসও মাইরি ! আচ্ছা আমি কী করলে তোর মন ভালো হবে বল, আমি করছি।"

    বললাম। বললাম, "তুই গুণে গুণে তিনটে ফ্রন্ট রোল আর তিনটে ব্যাক রোল খা এখানে। তাহলে মন ভালো হবে।" (এখানে বলে রাখা ভালো, আমি মোটেই এটা ভালো মনে বলি নি। প্রেমিকপ্রবর বেশ গুবলুগাবলু ছিলেন বলে, তিনি সহজে ডিগবাজি খেতে পারবেন না ভেবে, তাকে খিল্লিত করার ইচ্ছে নিয়ে কথাটা বলেছিলাম)

    তা সেই প্রেমিকের হিউমার সেন্সটা ভালো ছিল বলে, সে তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে গিয়ে ফটাফট দুটো ফ্রন্ট রোল আর ব্যাক রোল খেয়ে ফেলল। আশপাশে যারা বসে প্রেম করছিল, তারা নিজেদের প্রেম মাথায় তুলে আমাদের প্রেম দেখছিল হাঁ করে। আর আমি হ্যা হ্যা করে হাসছিলাম। আর প্রেমিকও আমাকে হাসাতে পেরে খুশি হয়ে আরো একটা ফ্রন্ট রোল খেল। যেই না পাল্টা ব্যাক রোলটা খাবে এমন সময়ে আমার লম্বা বেণী ধরে "হতচ্ছাড়া বাঁদর! ভালো ছেলেটাকে নিয়ে এইভাবে ইয়ার্কি দিচ্ছিস!" বলে একটা হ্যাঁচকা টান। না না বাবা, বড়মামা, কলেজের স্যার, পাশের বাড়ির জেঠু কেউ না। আমার কলেজের লাল্টুদা। অ্যাকাডেমিতে নিজের প্রেমিকার সঙ্গে প্রেম করতে এসে নন্দন চত্তর দিয়ে শর্টকাট করে গগনেন্দ্র প্রদর্শনশালার গেট দিয়ে বেরিয়ে এক্সাইড মোড়ের দিকে যাচ্ছিল, এমন সময়ে লাল্টুদার প্রেমিকা নাকি লাল্টুদাকে দেখায় "ঐ দ্যাখ পাগলিটার বজ্জাতি" বলে। লাল্টুদা তাতেই খচে গিয়ে এসে আমার চুল ধরে টান দেয়, ঝাড় দেয়, আমার প্রেমিককে মানা করে দেয় আমার মত বদের ধাড়ির সঙ্গে প্রেম করতে। এদিকে ততক্ষণে আশপাশ থেকে সরু গলায় "কী অসভ্য মেয়ে বাবা!" ভাঙ্গা মোটা গলায় "ডেন্জার পীস একখানা" টাইপের কমেন্ট ভেসে আসছে। লাল্টুদা তখন ঘোষণা করল "তোদের এখান থেকে বার না করে, আমি এখান থেকে বেরোব ন।"

    আমরা দুইজন কী আর করি, বেরিয়ে গিয়ে ভিক্টোরিয়ায় লোকে কেমন করে প্রেম করে সে দেখতে গেলাম। আমার বেজায় খিদে পেয়েছিল বলে ঝালমুড়ি কিনলাম দুই ঠোঙা। তারপরে "বাবা গো ঝালমুড়িটা কী ঝাল!" বলে চারদিকে ঘাসের উপর ছড়িয়ে ছড়িয়ে ফেলতে লাগলাম ঝালমুড়ি। (আগেও একবার অনেক বন্ধুরা মিলে এসে এই কান্ডটা করেছিলাম ভিক্টোরিয়ায়। এবারেও সেবারের মতই একই রেজাল্ট হল) বিকেলে যত কাক কুলায় ফিরেছিল, তারা সবাই কা কা করতে করতে ভিক্টোরিয়ার গাছগুলোর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে এসে ঘাসে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঝালমুড়ি খেতে লাগল। তখন কাকের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে সেখানে বসে যারা প্রেম করছিল, তারা আমাকে অভিশাপ দিতে দিতে উঠে বেরিয়ে গেল ভিক্টোরিয়া থেকে। আমরাও হ্যা হ্যা করতে বেরিয়ে এসে মেট্রো স্টেশনের দিকে হাঁটা দিলাম।

    সেই পাপেই বোধ্হয় আমার সেই প্রেমটা টিঁকল না। বছর দেড়েক নাকি দুয়েক বাদে কেটে গেল। কোলকাতায় প্রেম করার জায়গার সত্যিই খুব অভাব।
  • pi | 24.139.221.129 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৯:৩৮649302
  • ঃ)

    আজকের দিনে হলে এই আগু পিছু রোল ভাইরাল ভিডিও হয়ে ছড়িয়ে পড়তো ঃ)
  • T | 24.139.128.15 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:১৬649303
  • হা হা হা হা...
  • byaang | 132.172.206.80 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:২২649304
  • কার কীর্তি এটা?
    কে তুলল এটা টইয়ে? নির্ঘাত অভ্যু। কোনো মানে হয়? ভাটের গল্প ভাটেই তলিয়ে যেত, বেশ হত। তা না, যত্তোসব!
  • T | 24.139.128.15 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:২৫649305
  • অ্যাই, কে করেছো, সরি চাও।
  • byaang | 132.172.206.80 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৩২649306
  • এই যে আপনারা আমার দাদুভাইয়ের মামারবাড়ির গল্প , তাদের পোষা ছাগল স্বর্গীয় নন্দগোপালের গল্প শুনতে পেলেন না, তার জন্য দায়ী থাকল এই ক্যাপিটাল টি।
  • অন্য গল্প | 85.137.10.215 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৩৬649309
  • না না আপনি লিখুন। আমার গুস্তাখি পার্ডন করুন। আনকণ্ডিশনালি সরি চাইছি।
  • T | 24.139.128.15 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৩৬649307
  • এই না না...আচ্ছা সরি (না না ...অ্যাল...) ক্ষমা চাইছি। (এইটা ঠিক বাংলা)...নন্দগোপালের গপ্পো শুনি।
  • | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৩৭649310
  • অভ্যু ছাড়া আবার কে?
    কিন্তু এই অভ্যুটার ডকুমেন্টেশান সম্বন্ধে এত্ত খারাপ ধারণা!! এই টইতে এনে গুঁজে দিয়েছে। এইটা বরং টিউশানির টইতে গেলে সেই টইটাও উঠে আসত আর কিছুটা কাছাকাছিও হত গপ্পটা।
  • byaang | 132.172.206.80 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৩৯649311
  • ঐ এলেন আরেকজন। বলি টিউশনির গপ্পের টইয়ের সঙ্গে প্রেমের গল্পের কাছাকাছি সম্পর্ক কী করে হয়?
  • | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৪১649312
  • টিউশানি করতে গিয়ে কিম্বা টিউশানির প্রারালেলি কি আর তুমি কোনও প্রেম কর নি? কিম্বা অন্যের প্রেমে ব্যগড়া দাও নি? নিদেনপক্ষে টিউশানি পর্ব শেষ হলে?
  • | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৪২649313
  • প্যারালেলি
  • byaang | 132.172.206.80 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৪৬649314
  • না না। কী মুশকিল! প্রেমে ব্যাগড়া ঠিক দিই নি, তবে স্যারের প্রেমিকাকে থাবড়ে গাল লাল করে দেওয়ার উপদেশ দিয়ে ফেলেছিলাম স্যারকে। বেজায় খচে গিয়ে রাগে কথা বলতে পারছিলেন না। কিন্তু সে গল্প লেখা যাবে না।
  • কিন্তু কিন্তু | 85.137.10.215 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:৫৫649315
  • সেই স্যার যদি বিভীষণ হন?
  • byaang | 132.178.198.142 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২১:০২649316
  • ধুস। বিভীষণ আমার স্যার হতে যাবে কেন?
  • kiki | 125.124.41.34 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২১:০৪649317
  • ই বাবা! কি কেলো! কেন কেন? শিগ্গিরি বলো, শেষতক স্যরের প্রেমিকা?
  • yaang | 132.178.195.49 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২১:৩৭649318
  • কিকি অন্য টই দেখো।
  • Abhyu | 85.137.10.215 | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২২:৫৬649320
  • স্বর্গীয় নন্দগোপালের গল্পটা হোক?
  • - | 109.133.152.163 | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৬:৫৫649321
  • কেটে খেয়ে নেওয়া হলে কি নরম্যাল "স্বর্গীয়" হয় নাকি "নিহত" বলে ধরা হয়?
  • jhiki | 121.94.79.193 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৭:১৪649322
  • এটার একটা টাইম ফ্রেম আছে। যখন কেটে খাওয়া হয়েছিল তখন নিহতই ছিল, কালক্রমে স্বর্গীয় হয়েছে ঃ)
  • - | 109.133.152.163 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৭:৩৮649323
  • মনে করুন খাবার সময়ও স্বাদে স্বর্গীয়ই ছিলো, তাইলে? ঃ-)
  • jhiki | 121.94.79.193 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৮:০৪649324
  • তাতেও সে সদ্য নিহতই ছিল.... স্বর্গ কি অত কাছে নাকি?
  • - | 109.133.152.163 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৯:২১649325
  • ব্যাং কখন এসে স্বর্গীয় বেপার্টায় আলোকপাত করবেন কে জানে!
  • byaang | 233.227.28.202 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৬:৫৪649326
  • অ্যাই কেরে ? কে রে?
    নন্দগোপালকে কেটে খাওয়ার কথা কে বলল? দাদুর মেজোমামা নিশ্চয়ই স্বর্গ থেকে সব দেখেশুনে রাখছেন এবং অভিশাপ দিচ্ছেন তাকে।
  • byaang | 233.227.28.202 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৭:৩৪649327
  • আমার দাদুভাইয়ের যে একটা মামারবাড়ি ছিল, সেই বাড়ি ভর্তি করে দাদুভাইয়ের মামা-মামি এবং তাদের ছেলে-ছেলের বৌরা ছিল, একথা দাদুভাই আমাকে সেই বাড়িতে না নিয়ে গেলে আমি জানতেই পারতাম না। ছোটো থেকে তো শুধু দিদার বাপেরবাড়ির, দিদার মামারবাড়ির লোকজনদেরই দেখে আসছি। দাদুভাইয়ের বোন মানে আমার মায়ের পিসি আর তাঁর ছেলেমেয়েদেরও অবিশ্যি খুব দেখেছি আর আদরও পেয়েছি। দাদুভাইয়ের মা-বাবার থেকেও কম আদর পাই নি। কিন্তু দাদুভাইয়ের যে একটা মামারবাড়ি ছিল, এমন কথা আমাকে কেউ বলে নি।

    সেই কবে থেকে দেখেছি, দাদুভাইয়ের সঙ্গে সব অদ্ভুত অদ্ভুত লোকজনদের জানাশোনা আর ভালোমাসি কোলকাতায় এলেই অদ্ভুত অদ্ভুত সব জায়্গায় আমরা কেমন করে যেন পৌঁছে যাই।

    সেই যে এর আগেরবারে যখন ভালোমাসি কোলকাতায় এসেছিল, আমরা বেহালা যেতে গিয়ে কোথায় একটা অন্ধকার অন্ধকারমতন জায়্গায় পৌঁছে গেলাম, আর মা বাবাকে এত বকা বকছিল যে বাবা দৌড়ে গিয়ে একটা ঘোড়ার গাড়ি থামিয়ে তাতে আমাদেরকে চাপিয়ে দিয়ে নিজেও উঠে বসল, আর আমার ভয়ের আনন্দে গায়ে কাঁটা দিতে লাগল, বুক দুরুদুরু করতে লাগল আর সবকিছু ভালো লাগতে লাগল, সেইরকমই হল দাদুভাইয়ের মামারবাড়ি যাওয়ার সময়ে। কিন্তু এবার তো আমাদের সঙ্গে বাবা ছিল না, দাদুভাই ছিল, কিন্তু দাদুভাইকেও মা এত বকা বকল যে ভালোমাসি শুদ্ধু বলল যে "চুপ কর দিদি, এবার তোর কিছু একটা হয়ে যাবে, এত রাগিস না।" আর দাদুভাই খুব রেগে গম্ভীর হয়ে আরো জোরে জোরে হাঁটতে লাগল। ভাগ্যিস আমি দৌড়ে গিয়ে দাদুভাইয়ের হাত ধরে হেঁটেছিলাম, তাই তো মা আর ভালোমাসির পৌঁছানোর দশ মিনিট আগেই পৌঁছে গেলাম সেই গল্পের বইয়ের বাড়ির মতন বাড়িটায়।
  • iye | 118.36.241.24 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৭:৪৪649328
  • ইসে, হয়েচে কি, গপ্পোটা তো ভালই গড়াচ্ছে। কেবল, আরেট্টু কম লীলাজির মত, আরেট্টু বেশি ব্যাঙজির মত হলে আট্টু ভাল লাগে।
    ডিস.:ইহা ব্যক্তিগত মত।
  • Abhyu | 85.137.10.215 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৮:০৩649329
  • না, ব্যাঙদি যদি চেষ্টা করে লীলা মজুমদারের মত লিখছে তো আলাদা কথা, নইলে লেখাটা তো মনে হচ্ছে বেশ ন্যাচার‌্যালি আসছে, সেক্ষেত্রে স্টাইল চেঞ্জ না করাই ভালো। (মত ব্যক্তিগত)
  • byaang | 233.227.28.202 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৮:৪৮649331
  • আরো ডিটেলে বলব? তাহলে শুনুন, আমাকে ছোট্টটি নিয়ে আমার মাবাবা একসময়ে বেহালা বলে এক আশ্চর্য্য জায়গায় থাকত। সেই জায়গায় আমরা যে বাড়িটায় থাকতাম তার চারপাশে ছিল তখন খোলা মাঠ , কচুরিপানাভর্তি পুকুর, পেঁপে গাছ আর টগর গাছের জঙ্গল, আর কতরকমের পাখি ।

    সেই পাড়ায় থাকত আমার জীবনের প্রথম বন্ধু মুন্না। আমরা যে বাড়িটায় থাকতাম সেই বাড়িটাতেও থাকত একগাদা ছেলেপুলে, কিন্তু ওদের আমার ভালো লাগত না, ওরা বড় দুর্দান্তপনা করত। সেই যে বাবু আমার নাকে একটা আধলা বসিয়ে নাক ফাটিয়ে দিয়েছিল আর আমি আমার রক্ত খেতে খেতে সিঁড়ি দিয়ে উঠে আমাদের ঘরে গিয়ে দেখি সিউড়ি থেকে বড়মামা এসেছে স্কুল শেষ হয়ে যাওয়ার পরীক্ষা দিয়ে, তারপর থেকে আমি আর কক্ষনো ওদের সঙ্গে খেলি নি। জানলায় বসে কচুরিপানার ফুল দেখতাম আর মুন্নার কাকুকে দেখলে বলতাম "আমাকে তোমাদের বাড়ি নিয়ে যাবে? মুন্নার সঙ্গে খেলব।"

    একবার মুন্না আর আমি ঐ খোলা মাঠটায় খেলতে খেলতে মুন্নার খুব হিসু পেয়ে গেল, মুন্না যেই কচুরিপানাভর্তি পুকুরটার ধারে হিসু করতে বসল, অম্নি একটা কাক এসে মুন্নার নেড়ুমুন্ডিটায় ঠুকরে দিয়ে গেল। আমি ভাবলাম মুন্না তো ভায়োলেট কালারের সোয়েটার পরে সবুজ ঘাসের উপর বসে হিসু করছিল, কাকটা বোধহয় ওকে কচুরিপানার ফুল ভেবে ভুল করে কচুরিপানার ফুলের মধু খেতে এসেছিল। মুন্না এত ভয় পেয়ে গেছিল যে মুন্না একটুও কাঁদে নি। এমনকি নিজের নেড়ামুন্ডিতে হাতও বোলায় নি। শুধু দৌড়ে গিয়ে ওর কাকুর কোলে উঠে পড়ল আর আমি ওর কাকুর হাত ধরলাম, তারপরে আমরা তিনজন ওদের বাড়ি গেলাম। কিন্তু ওর কাকুর থেকে সব শুনে ওদের বাড়ির সবাই খুব হাসল, আমি ওদের কত বললাম যে মুন্নার সোয়েটার দেখে কাকটা ওকে কচুরিপানার ফুল ভেবেছে, সেই শুনে সব্বাই আরো বেশি করে হাসল। এমনকি মুন্নার মা-ও মুন্নার মাথায় একটা লাল ওষুধ মাখাতে মাখাতে খুব হাসছিল।

    তার পরে তো আমরা বেহালার বাড়িটা থেকে এখনকার বাড়িটায় চলে এলাম, এসে দেখি, কী আশ্চর্য্য! সেই কচুরিপানাভর্তি পুকুরটাও আমাদের সঙ্গে সঙ্গে বেহালা থেকে কাঁকুড়গাছি এসে গেছে! কিন্তু মুন্নারা আসে নি।

    তারপর থেকে আমরা মাঝে মাঝেই বেহালায় বেড়াতে যেতাম রবিমামাদের বাড়ি। মানে আমাদের বাড়ি। মানে আমরা তো আগে রবিমামাদের বাড়িতেই থাকতাম, বলতে ভুলে গেছিলাম। রবিমামার জন্য আমার খুব কষ্ট হত, রবিমামার বাবা ছিল না যে। রবিমামার বাবাকে একটা বাঁদর কামড়ে দিয়েছিল বসিরহাট না কোথায় একটা। তারপরে রবিমামার বাবা হাসপাতালে মরে গেছিল। রবিমামা সবসময় পড়া করত আর রবিমামার মা একতলার বারান্দায় বসে রান্না করত। আর আমার মা দোতলার সিড়ির কোনায় রান্না করত। রবিমামার মা নীচের বারান্দা থেকে বলে যেত এরপরে কী করতে হবে আর সেই শুনে শুনে মা রান্না করত। আমি দোতলার সিঁড়ি দিয়ে উঠতাম আর নামতাম, সিঁড়ির দেওয়ালের ইঁটগুলোয় লেখা ইংরাজি নামগুলোয় আঙুল বোলাতে বোলাতে। বেহালাটা এমন আশ্চর্য্য জায়গা ছিল যে
    বাড়ির ইঁটে শুদ্ধু যাদের বাড়ি তাদের নাম লেখা থাকত। রবিমামাদের বাড়ির ইঁটে লেখা ছিল "RABI"। আঙুল বোলাতে বোলাতে একবার নীচের বারান্দার দিকে তাকিয়ে দেখতাম রবিমামার মায়ের কড়াইয়ের এঁচোড়ের টুকরোগুলোর কেমন রং এখন, আবার দৌড়ে গিয়ে উপরে মায়ের কড়াইয়ে দেখতাম এঁচোড়ের টুকরোগুলির এক রং। একই সঙ্গে উপরে আর নীচে একই রান্না শেষ হত।

    আমরা কাঁকুড়গাছির বাড়িতে চলে আসার অনেকদিন পরে যখন ভালোমাসিও ওর স্কুল শেষ হওয়ার পরীক্ষাটা দিয়ে আমাদের বাড়ি এল, আর আমরা রবীন্দ্রসদন না কোথায় যেন গ্যালিলিও নাটকটা দেখার পর বেহালার রবিমামাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য একটা কত নম্বর বাসে যেন উঠলাম, তারপরেই তো সেই অদ্ভুত ঘটনাটা ঘটল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন