এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মাৎস্যন্যায়! 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৪ আগস্ট ২০২৪ | ৫৪৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • গত লেখায় লিখিছিলাম প্রশাসনিক দুর্বলতা বন্যার ক্ষয় ক্ষতির অন্যতম বড় কারণ। তখন মাথায় যা এসেছিল তাই লিখেছিলাম, ওইটার পিছনে অত যুক্তি, বুদ্ধি ছিল না। কিন্তু এখন, যখন আরও লম্বা সময় পার হয়ে গেছে, চরম অব্যবস্থাপনার তুঙ্গে সমস্ত আয়োজন তখন আমি নিশ্চিত যে প্রশাসনিক দুর্বলতা এই অবস্থার জন্য বেশ বড় একটা কারণ। 

    দোষ ধরার জন্য না। প্রশাসন তো দুর্বল এখন এইটা জানা কথাই। সেই দুর্বলতাকে আরও দুর্বল করা হচ্ছে, হয়েছে দুশ্চিন্তা সেটা নিয়েই। এবং যেটা মেনে নেওয়া কষ্টকর তা হচ্ছে এই ব্যর্থতা ঢাকার জন্য অনবরত ভারতকে দোষ দিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সব দোষ ভারতের, কেন বাঁধ খুলে দিল, কেন জানালো না, কেন বাঁধ দিল! এগুলা যৌক্তিক হয়ত কিন্তু এই সময়ে না। এইটা কে কাকে বুঝাবে? এখন এই সব দোষ আরেকজনের ঘাড়ে দেওয়ার সময় না। এখন কাজের সময়। লাখ লাখ মানুষ পানির নিচে। ত্রাণ তৎপরতা নেই বললেই চলে। মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এইটা বাংলাদেশের মানুষ সব সময়ই করে। এমন বিপদে এক সাথে বিপদ মোকাবেলা করে। এর আগে যতগুলা এমন পরিস্থিতি দেখেছি সব প্রতিবারই মুগ্ধ হয়েছি। কিন্তু এইটা তো সমাধান না। সরকারি তৎপরতা কই? তীব্র স্রোতে সাধারণ নৌকা নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না মানুষ উদ্ধারের কাজে, স্পিডবোট দরকার, নৌ বাহিনীর জাহাজ দরকার। কেন দুইদিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও মানুষ পানির নিচে বাস করছে? উত্তর নাই, সমন্বয়কদের দেখছি নতুন গাড়ির শোরুমে ছবি তোলায় ব্যস্ত! 

    এমন পরিস্থিতিতে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে সাহায্য করার জন্য। আজকে টিএসসিতে লম্বা মানুষের লাইন হয়েছে সাহায্য দেওয়ার জন্য। অভাবনীয় দৃশ্য, কোন সন্দেহ নাই। আবার এইটাও সত্য যে এমন সময়েই কেউ কেউ ঝোপ বুঝে কোপ মারে। ফেনি থেকে একজন লিখেছে যে সারাদিনে অন্তত এক হাজার বোট আসছে, যে নৌকার ধারণ ক্ষমতা বিশজনের সেখানে স্বেচ্ছাসেবক আসছে ১৮ জন! এরা কেন আসছে? যিনি লিখেছেন তিনি বলছেন কড়া মেকআপ দেওয়া আপুরা আছেন, সানগ্লাস পরা ভাইয়ারা আছেন! তামশার নতুন জায়গা ফেনি কুমিল্লা এখন! এদের থেকে রক্ষা করবে কে? 

    এমন না যে কাজ হচ্ছে না। নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী, সেনা বাহিনী কাজ করছে। হেলিকপ্টারে করে লোকজন উদ্ধার করছে। আমার এক বন্ধু থাকে ফেনি, ওকে ফোন দিলাম, ও কুমিল্লা আছে। বলল ওদের বাড়ি পুরোটা পানির নিচে। ওদের বাড়ির লোকজন ফেনিতে অল্প যেটুকু জায়গা পানিতে নাক উঁচিয়ে বেঁচে আছে, সেখানে আছে। আর ও কুমিল্লায় ঠিক আছে, পানি ওদের এখানে উঠেনি। ওর কথা শুনতে শুনতে গা শিউরে উঠল। আমি ভাবলাম আমার বাড়িতে এমন পানি উঠেছে! কই যাব? কোথায় গিয়ে উঠব? সাথে কী নিব? বই গুলার কী হবে? এমন ভাবনা নিশ্চয়ই ওইখানের মানুষেরও এসেছে। অথচ কিচ্ছু করার নাই, সব রেখে চলে যেতে হয়েছে।
     
    এই পরিস্থিতির মতো গল্প শুনলাম আজকে আরেকটা। কয়েকদিন আগের ঘটনা। সেই কুৎসিত রাতের গল্প। যখন সমস্ত বাংলাদেশ এক সাথে কালি গোলা অন্ধকারে ডুবে গেছিল। তিনি নিজের মা বোনকে অন্য বাড়িতে পাঠিয়ে নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। এলাকার বিএনপির নেতারা এসে অভয় দিচ্ছেন, কে কইছে আগুন দিব তোমাদের বাড়িতে? ডরাইতেছ কেন? যত এগুলা বলে তত ভয় আরও বাড়ে! কী অদ্ভুত সময়! এদিকে উনাদের নিচ তালায় ভাড়াটিয়া থাকে, তারা এসে জিজ্ঞাস করছে, এখন কী করব? আমরা বের হয়ে যাব? কই যাব? কী উত্তর দিবেন তিনি? উনি আমাকে বললেন, একটা শব্দও মুখ দিয়ে বের হল না। আমি হেঁটে হেঁটে চলে গেলাম ওইখান থেকে। ঘরে ঢুকলেন। আমার মতোই তিনিও ভাবলেন বই গুলার কথা। একটা একটা করে বই স্পর্শ করছেন আর ভাবছেন এইটা সরায় রাখব? এইটা নিয়ে রাখব? বইয়ের মাঝে টাকা রাখছেন কি মনে করে কে জানে। ওগুলা হাতে নিলেন। টাকা পকেটে রাখব? বই পুড়লে, বাড়ি পুড়লে এই টাকার কথা ভেবে লাভ আছে? অল্প কিছু টাকা, ওইটা আবার রেখে দিলেন বইয়ের মধ্যেই। জিনিসপত্র দেখলেন, হাতালেন। কী করবেন তখন? অথচ একটা হিড়িক উঠলেই এই বাড়ি যে পুড়া হবে তা নিশ্চিত! কী করার আছে একজনের এই সময়ে? উনার পরিচিত যে কয়জন আছে তারা সাথে আসলেন। কিন্তু তাদের চোখ মুখও শুকিয়ে গেছে। সাহস দেওয়ার সাহসও নাই কারও। এর মধ্যে উনার বাবা বাসায় আসলেন। তিনি তার বাবাকে বললেন, তুমি ওদের সাথে চলে যাইতা? উনার বাবা বললেন, না, আমি বাড়িতেই থাকব, যদি আগুন দেয় তাইলে এইখানেই মরমু! বলে কোরান শরিফ নিয়ে পড়তে লাগলেন! টানা ছয় সাতদিন তাদের এমন করেই গেছে। ঘুম নাই, রাতের পর রাত জেগে জেগে পাহারা দিয়ে পার করেছেন তারা। অথচ এরা রাজনৈতিক পরিবারের কেউ না। শহরের মধ্যে অর্থ সম্পদ আছে, সচ্ছল একটা পরিবার। এবং এইটাই বড় অপরাধ! 

    বিশৃঙ্খলা এখন পর্যন্ত বিদ্ধমান। যার যা ইচ্ছা তাই করে চলছে। অরাজকতার চরম সীমায় পৌঁছেছে সব। এর মধ্যে এই বন্যা। আর সাথে হচ্ছে গড় থেকেও কম আইকিউ সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জনগণ! এরা ফেসবুকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে ভারত যতগুলা নদিতে বাঁধ দিয়েছে সব গুলায় বাংলাদেশ পাশে আবার বাঁধ দিবে! প্রথম প্রথম ভাবছি মজা নিচ্ছে কেউ। কিন্তু ধীরে ধীরে এই বিলো এভারেজ জনগণের কাণ্ড কারখানা দেখে দেখে তব্দা মেরে গেলাম। টাকা তোলা শুরু করে দিচ্ছে, কেউ কামলা খেটে দিবে, তবু বাঁধ দিবেই! ভাটিতে বাঁধ দিয়ে যে কোন উপকার হবে না এইটা কে বুঝাবে এদের? মূল সমস্যা থেকে নজর সরিয়ে কই নিয়ে যাচ্ছে তা কেউ একবার ভাবছে না, সবাই মেতে আছে বাঁধ দিয়েই জবাব দিবে ভারতকে! ইমতিয়াজ মাহমুদ কবি মানুষ, কিন্তু তিনি মাঝে মধ্যে দুইচারটা দুর্দান্ত কথা লিখেন ফেসবুকে যা বাধাই করে রাখার মতো। এই প্রসঙ্গে তিনি একদিন লিখলেন যারা মিছিল করে সচিবালয় ঘেরাও করে এইচএসসির অটো পাস দাবি আদায় করল তাদের অর্ধেক আজকে নদী বিশেষজ্ঞ! আরকটা লিখেছেন গতকাল, নদিতে বাঁধের বদলে যদি হিমালয় পর্বত তোলা যায় তাহলে তা অনেকটা সাইন্টিফিক হবে! কিন্তু এগুলা নিরেট মাথায় ঢুকলে তো! 

    ভারত বিদ্বেষ এখন ইতিহাসের চরম সীমায়। কুরী বিন্দু স্পর্শ করেছে বলা চলে। বাঁধ নির্মাণ আজগুবি হলেও ক্ষতিকর না কারও জন্য। কয়দিন পরে ঝিমিয়ে যাবে। কেউ টাকা পয়সা তুললে তা লোপাট হবে, পরে হায়হুতাশ হবে, এগুলা বুঝা যায়। মুশকিল হচ্ছে আরেক পক্ষকে নিয়ে। এরা সেভেন সিস্টার্সকে পারলে আজকেই স্বাধীন করে দেয়। তারা এখন স্বাধীনতা চায় কি না তাও দেখার প্রয়োজন নাই। পারলে কব্জাই করে নিবে এমন অবস্থা। হাজার হাজার পোস্ট হচ্ছে এই সংক্রান্ত। চিকেন নেক কি এইটা এখন টক অফ দা কান্ট্রি! চিকেন নেকে কামড় দিলেই ভারত শেষ! কত সোজা। এই ব্যাপারে আরেক পক্ষ এক নায়কও পেয়ে গেছে। তিনি হচ্ছেন বিএনপির সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুতফর জামান বাবর। বাবর না কি নায়ক। আওয়ামীলীগ ভারতের সাথে ষড়যন্ত্র করে এমন এক বীরকে জেলে পুরে রেখেছে। যথারীতি আমাকে একজন জিজ্ঞাস করল এই লোক কে? বাবর কী করছিল? বললাম যাই করুক তিনি যে অন্তত নায়ক ছিলেন না এইটা সত্য। তিনি ক্রিমিনাল ছিলেন। যারা ভাবছেন দশ ট্রাক অস্ত্র তিনিই উলফাদের হাতে দিচ্ছিলেন তারা কিছুই জানেন না। তিনি স্রেফ দালালের কাজ করেছে। আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অস্ত্রগুলা ভারতে ঢুকছিল, তিনি মধ্য থেকে টাকা খেয়ে এগুলা না দেখার সিদ্ধান্ত নেন। আর কিছু না। সেভেন সিস্টার্স স্বাধীন হবে, এই মহান আদর্শ নিয়ে তিনি অস্ত্র যেতে দিচ্ছিলেন এমন ভাবার কোন কারণ নাই। 

    আমি একজনকে বললাম সরকারে উচ্চ পর্যায় থেকে যে এইভাবে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে খুল্লামখুল্লা কথা বলছে এইটা কী ভালো কিছু হচ্ছে? একটা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কেউ এমন কথা বলতে পারে? আমরা জাতিগত ভাবে কি নিশ্চিত আমরা আমাদের পূর্ব পাশে সেভেন সিস্টার্সের মতো কোন রাষ্ট্র চাই? যদি এমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে তার পরবর্তী যে ধাপ গুলো তা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা আছে আমাদের? চিন বলেছে আমাদের যে তোমরা সেভেন সিস্টার্স আলদা করে দেও, আমরা তোমাদেরকে সাহায্য করব? মানে কোথাও কোন আলোচনা হয়েছে? পাগল জনগণ কথা বলা এক জিনিস আর সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বলা আরেক জিনিস। সামাল দিতে পারবেন? কোন লেবেলের গাঞ্জা খেলে ভারতের সাথে যুদ্ধাবস্থা চাইবে কেউ? সেভেন সিস্টার্স এখন বলছে তারা স্বাধীন হতে চায়? উলফাদের আগের দিন আছে? ত্রিপুরা, মনিপুর স্বাধীন হতে চায়? বিশ বছর আগের পরিস্থিতি আছে? অনুপ চেটিয়া ধরা পড়ছে কবে?মুক্তি পেয়ে কই আছে? এরপরে কোথাকার পানি কোথায়, কতদূর গড়িয়েছে আমরা জানি? কে এই সব উস্কে দিচ্ছে? আরেক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে এমন করে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করা কতখানি বুদ্ধিমানের কাজ? এই চলছে এখন দেশে। চায়ের দোকানের সবার পছন্দের আলাপ হচ্ছে সাত বোন আর মুরগির গলা! কত সহস্র গুজব চালু আছে দেশে তার কোন হিসাব নাই। এগুলা কেন কেউ দেখছে না? 

    দেখছে না কারণ এতে উপকারই হচ্ছে, নজর সরে থাকছে অন্য দিকে। জরুরি সমস্যা এখন আর সমস্যা না। কেউ প্রশ্ন তুলছে না, কেউ যোগ্যতা নিয়ে জিজ্ঞাস করছে না। এইটা ভালো না? 
    লোকজন নিয়ে একটা হট্টগোল করতে পারলেই যে যে কোন দাবি আদায় করা সম্ভব তার একটা দুর্দান্ত উদাহরণ গতকালই শুনলাম। কিছুদিন আগে ভিকারুন্নেসা স্কুলের ভর্তি নিয়ে লিখেছিলাম। তখন আদালত ভর্তি বাতিল করে একটা রায় দিয়েছিল। মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডকে এই ব্যাপারটাকে নিষ্পত্তি করতে বলেছিল আদালত। মাউশি ভর্তি বাতিল করে সমাধান করেছিল। এখন তো দিন পাল্টে গেছে। যাদের বাচ্চাদের ভর্তি বাতিল হয়েছিল তারা এই অরাজক সময়ের সুযোগ নিয়েছে। সব স্কুলের মতো ভিকারুন্নেসার প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। এই অভিভাবকরা প্রথমে স্কুলের সামনে মানব বন্ধন করেছেন। এরপরে গেছেন ইউনুস সাহেবের বর্তমান সরকারি বাস ভবনের সামনে। সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে স্মরকলিপি দিয়ে এসেছেন। এরপরে সারজিস আলমের সাথে দেখা করেছেন। তাকে দিয়ে নতুন প্রধান শিক্ষকে ফোন করিয়েছেন। এরপরে তারা শেষ চাল দিয়েছেন। মাউশির অফিসে গেছেন সবাই মিলে। সবাই মিলে স্লোগান দিয়ে বাধ্য করেছেন তাদের বাচ্চাদের ভর্তি বাতিল অর্ডার বাতিল করতে। আমি জিজ্ঞাস করেছিলাম এই ক্ষেত্রে স্লোগান কী দিয়েছ তোমরা? আমার বন্ধু এইটার অন্যতম কারিগর। ও বলল ভার্সিটিতে থাকতে ছাত্রলীগের সাথে থেকে থেকে স্লোগান দিতে হইছে, ওগুলাই দিছি! কী স্লোগান? দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত! 
    রক্ত দিয়ে দিচ্ছে বাচ্চার ভর্তির জন্য, আদেশ না দিয়ে উপায় আছে? 

    ও বলল আরেক মজার গল্প। আরও অনেকে মাউশির প্রধানকে ধরতে সেখানে উপস্থিত ছিল। তারা চাচ্ছিল তাকে অফিস থেকে বের করে বাহিরে আনবে আর এরা মানে ভর্তির পক্ষের লোকেরা চাচ্ছিল তাকে অফিসেই আটকে রাখতে। কারণ আদেশটা অফিস থেকেই নিতে হবে। এইটা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি! পরে ভর্তি পার্টির সাথে ওরা পারে নাই। এরা দাবি আদায় করে চলে আসছে। তারা কোন দাবি নিয়ে এসেছিল? তারা হচ্ছে গত সরকার বিভিন্ন সময়ে অনেক চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল। এতদিন তাদেরকে বলা হয়েছিল তাদেরকে স্থায়ী করে সরকারি শিক্ষক করে নিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু এত বছরেও এই কাজ হয় নাই। তারা এবার সুযোগ পেয়েছে। সবাই এসে হাজির। মাউশির অফিসের সামনে গাছের মধ্যে মাইক বেঁধে চলছে তাদের আন্দোলন! 
    হাসব? উচিত হবে? 

    সবাই আন্দোলন করতে চাচ্ছে। আনসাররাও শাহবাগ অবরোধ করে বসে ছিল। তাদের কথা হচ্ছে যখন আইন শৃঙ্খলা বলতে কিছু ছিল না। তখন আনসারদের নানা কাজে লাগানো হয়েছে। অতীতেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে। অথচ তাদের চাকরি জাতীয়করণ করা হয় নাই। এবার জাতীয়করণ করতে হবে না হলে চলবে আন্দোলন! আনসাররা হচ্ছে একটা আধা সরকারি বাহিনী। যারা পুলিশের কাজে বয়া সরকারি কোন কাজে সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে। এদের নিয়ে সমস্যা অনেক পুরাতন সমস্যা। সমাধান দিবে এবার কেউ? 

    খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পরিচিত শিক্ষক আছে দুইজন। তাদেরক গতকাল ফোন দিয়েছিলাম। খুলনায় বন্যার পানি ঢুকছে এইটা নিয়ে তারা আতঙ্কিত। একজনকে জিজ্ঞাস করলাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা কী? উনি বুঝলেন আমি কী শুনতে চাচ্ছি। মজার সব গল্প শোনালেন। আমি জিজ্ঞাস করছিলাম ভিসি পদত্যাগ করল কেন? খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তো দেখলাম তিনি যেন পদত্যাগ না করেন তার জন্য আন্দোলন করছে। তাহলে? তিনি উত্তর দিলেন, দেখো ছাত্রদের চাওয়াই শেষ না। তাকে নানা জায়গা থেকে সরে যেতে বলছে। সরে না গেলে তাদের মন মতো কাজ করতে দিতে হবে! এইটা এই ভিসি কোনমতেই করতে দিবে না। আমি জিজ্ঞাস করলাম কী করতে চায়? বলল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে বিশাল বঙ্গবন্ধুর মুরাল দেখছিলা না? আমি বললাম হ্যাঁ, শুধু দেখা! আমি ওইটার শিল্পিকেও চিনি, পরিচয় আছে এই জন্য ওইটাকে শুধু দেখি নাই, হা করে গিলছি, ছবি তুলছি।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষক কনকদার অসাধারণ একটা কাজ এই মুরালটা। আমার প্রয়াত বন্ধু রনি রাজশাহী চারুকলার ছাত্র ছিল, সেই সূত্রে কনকদার সাথে আমার পরিচয়। তার এমন একটা কাজ খুলনায় দেখে আমি অভিভূত হয়ে গেছিলাম। যাই হোক, উনি বললেন এইটা ভেঙ্গে ফেলবে! এইটা শুনে ভিসি বলেছেন তিনি থাকতে এইটা হবে না। এমন আরও কিছু কারণেই তিনি তার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে এক সাথে ষাট জনের উপরে পদত্যাগ করেছেন! 

    প্রসঙ্গত বলে রাখি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে কোন পুলিশই কার্যক্রম ছিল না। এই ভিসি বলেছিলেন তিনি থাকতে ক্যাম্পাসে কোন পুলিশ ঢুকতে পারেব না। পারেও নাই। ছাত্ররা তাই তাকে থাকতে বলছিল। কিন্তু উনার যে ব্যক্তিত্ব তাতে এমন করে যে তিনি থাকবেন না এইটা সহজেই অনুমেয়। আমি আবার জিজ্ঞাস করলাম দাদা, আপনাদের কী অবস্থা? বলল আমরা আছি, ছাত্ররা যা বলে তাই করি আমরা! বললাম কেমন? বললেন ২৫ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। ছাত্ররা এসে বলল আমরা ১ তারিখ থেকে ক্লাস করব! আমরা বললাম অবশ্যই, কোন সমস্যা নাই! আমি জিজ্ঞাস করলাম এতদিন ধরে ক্লাস বন্ধ, আরও পিছাচ্ছে, এইটা সমস্যা হবে না? তিনি বললেন অবশ্যই হবে, কিন্তু এইটা ওদেরকে বলবে কে? ধর আমি বললাম যে ক্লাস পিছালে সামনে তোমরাই বিপদে পড়বা, জবাবে ওরা যদি বলে বসে আপনে কোন বাল জানেন! তখন আমার কেমন লাগবে? কাজেই জি, তোমরাই ঠিক বলছ, ক্লাস ১ তারিখ থেকেই হবে! 

    বাংলার ইতিহাসে রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পর থেকে গোপাল রাজবংশের অভ্যুদয়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়কালকে মাৎস্যন্যায় বলা হয়। আমরা কী আবার মাৎস্যন্যায় পার করছি না? শিক্ষককে গাছের সাথে বেঁধে ছাত্ররা পেটাচ্ছে, এইটা যদি মাৎস্যন্যায় না হয় আর কী তাহলে?  হিড়িক মেরে অপদস্থ করছে যাকে ইচ্ছা তাকে, এইটা যদি মাৎস্যন্যায় না হয় আর কাকে মাৎস্যন্যায় বলব? আগুন দিতে হবে না, সাহস করে ফোন দিয়ে বলবেন শুধু, এই যে আমার মোবাইল ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার, এখানে এত টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে, না হলে আগুন দিব বাড়িতে। ব্যাস, কাজ শেষ। টাকা এসে গেছে আপনার মোবাইলে। মাৎস্যন্যায় কাকে বলে? সংজ্ঞা কী? 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৪ আগস্ট ২০২৪ | ৫৪৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৩:৩২536789
  • ভীষণ অন্ধকার দিন। পড়ি আর দীর্ঘশ্বাস ফেলি। যত তাড়াতাড়ি সব আবার স্বাভাবিক হয় তত ভালো। কিন্তু কবে হবে আর কি হবে সেটাই সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন। আপাতত আপনি সাবধানে থাকুন। আর কি বলব।
  • NRO | 165.124.84.35 | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৫:২৭536790
  • YouTube এ যদি খোঁজেন অনেক ভিডিও পাবেন পূর্বতন পশ্চিম পাকিস্তানী অফিসারদের যারা মুক্তিযুদ্ধের আগে বা সময়ে পূর্ব পাকিস্তানিদের (অদুনা বাংলাদেশী ) সঙ্গে নানা  ধরণের কাজ করেছেন। প্রায় সকলেই পূর্ব পাকিস্তানিদের ব্যাপারে বেশ নিচু ধারণা প্রকাশ করেছেন। এদের অনেকেই হয়তো biased কিন্তু সবাই নন। কে জানে হয়তো ওনাদের যুক্তিতে কোন সত্যতা আছে কি না। 
  • র২হ | 2607:fb90:e3b8:647b:d0ed:cdf1:851b:1185 | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৫:৫৮536791
  • মানব 'সভ্যতা'র ইতিহাসে অনেকবার একটি জনগোষ্ঠী আরেকটি জনগোষ্ঠী সম্পর্কে নিচু ধারনা পোষন ও প্রকাশ করেছে। 
    অনেকে সেসবকে জাস্টিফাইও করেছে।
     
     
    কোনটাই নতুন না :) 
  • প্যালারাম | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৭:২৫536792
  • @র২হ:
    হ্যারিয়েট টাবম্যান-এর জীবন নিয়ে একখানা সিনেমা দেখলাম ক'দিন আগে। তার শুরুতে, এক জন্মদাসীর প্রভু তাকে শুয়োরের সঙ্গে তুলনা করে বলছে, "কালোরা আসলে শুয়োরেরই মত, ওদের ভালোবাসতে পারো, নামও দিতে পারো, কিন্তু কবে যে কেটে খেতে হবে জানো না, আর একবার খেয়ে ফেললে, নামটাও ভুলে যাবে।"
    অন্য মানুষকে 'একটু কম মানুষ' ভাবতে শুরু না করলে এই পরিণতিতে পৌঁছনো যায় না। গোটা জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে সন্দেহের আবডালে অন্য একরকম ধারণা আসলে জারিত হয়। ভাটে কোথায় যেন দেখলাম, 'তৃতীয় বিশ্ব কবে যে বুঝবে, যে প্রথম বিশ্ব আসলে এফিশিয়েন্ট' এই মর্মে একখানা কমেন্ট। তৃতীয় বিশ্ব যে একখানা গোটা এন্টিটি, আর একখানা মনোলিথ—এ ধারণা আসলে ওই আফ্রিকানরা মানুষই নয় ধারণার এ শতাব্দীর সংস্করণ। এ সব থাকবে, শুধু দাবড়ে থামিয়ে দিতে হবে সুযোগ পেলেই। 
  • | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৭:৪১536793
  • NROর মগজখানা দেখি  একেবারে মুক্ত ভাগাড়। ভ্যাড়ভ্যাড়ে উৎকট দুর্গন্ধ থিকথিক করছে পোকা পুঁজ রক্ত। ওয়ায়াক্ক! 
     
    কিংবসন্তী,  আপনি চেষ্টা কইরেন সাবধানে থাকতে। আর কি বলব!  আপনার, আরো সব বন্ধুদের জন্য বড় চিন্তা হয়। 
  • &/ | 151.141.85.8 | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৭:৪৩536794
  • তথাকথিত 'তৃতীয় বিশ্ব' জোর দেখাতে শুরু করতে পারলে (অর্থনৈতিক ও অন্যান্য) তখন ওই তথাকথিত 'প্রথম বিশ্ব' ( ছোটো থেকেই দ্বিতীয় বিশ্ব নিয়ে আমার একটা খটকা রয়ে গেছে। প্রথম আর তৃতীয় শুনি, ২ গেল কোথায়? ) ই বলবে, 'আসুন দাদা আসুন দাদা, বসুন দাদা, কী আনাবো বলুন দাদা'।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:40f9:7022:b358:d05e | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৭:৫৩536795
  • ইয়ে, NRO কিন্তু ইচ্ছে করেই এগুলো লেখে। বিভিন্ন নিকে যিনি লেখেন, যার মধ্যে NRO একটা নিক, তিনি অ্যাটেনশান সিকার। একটা নিক থেকে বাংলাদেশ সম্বন্ধে নানান প্রশ্ন করেন আবার অন্য নিক থেকে নানান কটুক্তি করেন। 
  • | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৯536796
  • হুঁ।
    বিভিন্ন নিক থেকে বিপরীত লেখাই তো একটা অসুস্থ কুৎসিৎ মানসিকতা। তারসাথে অ্যাটেনশান সিকিঙের লেউ লেউ ভিখিরিপনা। 
     
    ট্যানের ২য় বিশ্ব সম্পর্কে আমি যদ্দুর জানি রাশিয়া আর পূর্ব ইয়্রোপ ছিল ২য় বিশ্ব। যেটা বেমালুম উবে গেছে।
  • ভয় | 97.81.101.181 | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ০৯:৪৩536797
  • বড্ড খারাপ লাগল। বিশ্বাস করা যায় না এমন অবস্থা। গল্পগুলো ছোটোবেলায় চুটকি হিসেবে শুনলে হাসি পেত, এখন ভয় লাগে।
  • কিংবদন্তি | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০১:১৫536821
  • আমি নিরাপদেই আছি। আমি তো আর তেমন পরিচিত মানুষ না। অনলাইনে যারা চিনে তারা বাস্তবে আমাকে চিনে না। তবে তবুও ভয় আছে, কেউ যদি মার্ক করে রাখে তাহলে বিপদ। ওইটার সম্ভাবনা যে নাই তাও না। তাই সতর্ক থাকতেই হচ্ছে। 
     
    NRO, পাকিস্তানিরা না, নেহেরুও পূর্ব বাংলা সম্পর্কে খুব একটা উঁচু ধারণা রাখত না। এই কথাটার রেফারেন্স সরাসরি আমার জানা নাই। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের একটা ডকুমেন্টারি আছে ইউটিউবে। ওইখানে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বলছে এই কথাটা যে নেহেরু পূর্ব বাংলাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছে। পূর্ব বাংলা নিয়ে তার কোন আগ্রহ ছিল না এই কারণেই। কিন্তু তাহলেই কী হয়ে গেল? এই সময়ে দাঁড়িয়ে আসলেই কী মনে করেন পূর্ব বাংলা বা বাংলাদেশের মানুষজন সব নিচু মানের মানুষ? এমন ধারণা সুস্থ মানুষের থাকতে পারে না। এক সময় কালোদের সম্পর্কে এমন বলত মানুষ, তখন অনেক বিজ্ঞানীও বের হয়েছিল যারা গবেষণা করে প্রমাণ করে দিচ্ছিল যে কালো ঠিক মানুষের কাতারে পরে না! ওইটাও অসুস্থ চিন্তাই। 
     
    প্রায় সময়েই ভাবছি আর লিখব না। কিন্তু দুই একদিন গেলেই এত কিছু হচ্ছে যে মনে হয় না লিখে রাখলে এগুলা একসময় আমিই ভুলে যাব হয়ত। একটা দাগ রেখে দিতে চাচ্ছি, যেন কালের গর্ভে সব হারিয়ে না যায়। বলা চলে আসলে আমার জন্যই আমি লিখছি। আপনারা পড়ছেন, পড়ে কতখানি কী বুঝছেন আমি জানি না। আমি লিখছি মূলত আমার জন্যই। ২০১৩ সালে শাহবাগে দিন রাত করে পার করেছি আমি। কিন্তু তখন লেখার অভ্যাস ছিল না, তাই অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে। দুই একটা বড় ঘটনা ছাড়া মনে নাই অনেক কিছুই। কিন্তু ওইটা তো ইতিহাসের মোচড় দেওয়ার মতো একটা সময়। আমি কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও ওই সময়টাকে ধরতে পারিনি, ধরে রাখতে পারিনি। এখন এর জন্য অনেক আফসোস হয়। দলিলটা রেখে দিতে চাচ্ছি তাই। এই কারণেই চেষ্টা করছি সৎ থাকার। যেন আজগুবি কিছু ঢুকে না যায় লেখায় এইটার প্রতি সতর্ক থাকছি আমি। যেটা আমি দেখছি, প্রত্যক্ষদর্শীর কাছে শুনেছি তাই লিখছি। মতামত আর তথ্য এক জিনিস না। মতামত ভুল শুদ্ধ হতে পারে আমার। কিন্তু তথ্য যা দিয়েছি তা একশ ভাগ সত্যই দিয়েছি। 
     
    যেহেতু এই কথাগুলো ফেসবুকেও দেওয়া যাচ্ছে না, তাই আপাতত গুরুই ভরসা আমার। যতটুকু লিখেছি তার অর্ধেক ফেসবুকে দিলে আমাকে বাড়ি ছাড়তে হত এইটা নিশ্চিত। বাক স্বাধীনতা মানে হচ্ছে নিজের পছন্দের কথা বলার অধিকার। এইটা আগেও এমন ছিল নোবেল বিজয়ীর আমলেও তাই আছে! ফেসবুকে লিখতে না পেরে যে খুব খারাপ লাগছে তাও না। বরং এখন মনে হচ্ছে ফেসবুক আমার প্রচুর সময় নষ্ট করেছে এতদিন। এখন অনেক সময় পাওয়া যায়। ভাবা যায়, চিন্তা করা যায়। নিজের একটা ব্লগ চালু করতে চাচ্ছিলাম অনেকদিন ধরে, কিন্তু হয়ে উঠছে না। একটা নিউজ পোর্টালের ডোমেইন কিনে রাখছি, ওইটাও শুরু করতে পারি নাই। কিন্তু এখন মনে হয় সময় হয়েছে এমন একটা কিছু দাঁড় করানোর। সমমনাদের কথা বলার জায়গা দিতে হবে। অনেকেই হাঁসফাঁস করছে। 
     
    নিজেকে সব সময় কম নাম্বার দেওয়া আমি এই সময়ে এসে দারুণ একটা অনুভূতির সামনাসামনি হতে হল। মনে হয় লেখাটা চালিয়ে যাওয়া জরুরি। অনেকেই ফেসবুকে আমাকে না লিখতে দেখে ইনবক্সে যোগাযোগ করেছে, হোয়াটসঅ্যাপে, ফোনে যোগাযোগ করেছে। বলছে বস্তাপচা গঁদ বাধা লেখা, তেল মারা লেখা পড়তে পড়তে ক্লান্ত। একটু অন্য কিছুর জন্য খুঁজছে আমাকে। আমি যাদেরকে চিনি, বিশ্বাস আছে তাদেরকে সমানে গুরুর লিংক দিচ্ছি! কানাডা থেকে আমার পরিচিত এক ছোট ভাই, খুব যে ওর সাথে আমার খাতির ছিল তাও না। ফোন দিয়া কান্নাকাটি শুরু করছে। আমি প্রথমে বুঝিই নাই। ভাবলাম ওর আবার কী হল! পরে বলছে আমাকে ফেসবুকে না দেখে ও ভাবছে আমি শেষ! ওর কথা হচ্ছে লেখার দরকার নাই, তবুও বেঁচে থাকেন! ওকে বললাম না লিখলেই বরং আমি মারা যাব! জড় পদার্থের মতো বেঁচে থাকলেই লাভ কী? এগুলাই মনে হয় অর্জন। মনে হয় কিছু একটা করে যেতে পারছি। অল্প হলেও কেউ আমার না থাকার শূন্যতা অনুভব করবে, করছে। এইটাই পাওয়া। দেখা যাক কতদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। 
     
    সবাইকে ধন্যবাদ। আমার জন্য আপনারা ভাবছেন এইটা আমার জন্য অনেক কিছু। অশেষ ধন্যবাদ।  
  • . | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০৫:১৩536825
  • সাবধানের মার নেই।
    বেঁচে থাকলে আরও অনেক লিখতে পারবি।
    ঝুঁকি নিস না।
    অনুরোধ।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:793a:d8f5:c72f:c18d | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০৭:২৯536826
  • কি যে বলি । সাবধানে থাক, শরিফ। তোমার লেখা গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
    এই কালরাত্রি ও শেষ হবে একদিন।  'একটু অন্য কিছুর জন্য খুঁজছে আমাকে' - এর মানে, এখনও কিছু মানুষ আছে, থাকবে, যারা তোমার মত ভাবনা চিন্তা করে, যারা চায় না বাংলাদেশ বাংলাস্তান হয়ে যাক
    জাফর ইকবাল -এর 'কপোট্রনিক সুখদুঃখ ' - ও কি পোড়ানো হচ্ছে? ওটা ক্লাসিক, বাংলা কল্পবিজ্ঞানের জগতে 
    বেঁচে থাক ভাই, তোমার মত ছেলে মেয়েদের খুবই দরকার, আজকের বাংলাদেশে 
  • r2h | 208.127.183.209 | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০৮:০১536828
  • অরণ্যদার কি মনে হয় বই পুড়িয়েরা ক্যাটালগ বানিয়েছে, মিলিয়ে মিলিয়ে পোড়াচ্ছে? :D

    স্যরি, হাসির কথা না আদৌ...
  • aranya | 2601:84:4600:5410:401f:80ea:8b3b:a6d8 | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৪536829
  • আমি চাই, 'কপোট্রনিক সুখদুঃখ ' টা যেন রক্ষা পায় , বড় প্রিয় বই ওটা :-)
  • r2h | 208.127.183.209 | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৮536830
  • আর পোড়ালেই বা কী, প্রিন্টআউট নিয়ে নেওয়া যাবেঃ)
    উনি নিজে সপরিবারে নিরাপদ থাকলেই হল।  
     
  • aranya | 2601:84:4600:5410:401f:80ea:8b3b:a6d8 | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০৯:০০536831
  • নাঃ, ছাপা বই একটা আলাদা ব্যাপার, প্রিন্ট আউট তুলনাতেই আসে না
     'উনি নিজে সপরিবারে নিরাপদ থাকলেই হল' - সে তো ঠিকই, আবার চাপাতির কোপ যেন না পড়ে। তবে বই পোড়ানো ও কোন ভাল ব্যাপার না 
  • কিংবদন্তি | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ১১:২১536832
  • অরণ্য দা, হুজুগে বাঙালের হুজুগ চলছে। এরাই একদিন আবার জাফর ইকবালকে খুঁজবে, দেখে নিয়েন। বই পোড়ার কর্মসুচি যারা নিয়েছে তারা সব বই পুড়িয়ে দিবে এমন তো আর না, তাই প্রিন্ট কপি থাকবে না বিষয়টা এমন না। এখন পর্যন্ত বাতিঘর ঠিক আছে। তারা জাফর ইকবালের বই বিক্রি করবে না বয়া এই ধরনের কিছুই বলে নাই এখন পর্যন্ত। অনেকেই যেটা করেছে বই বিক্রি করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাতিঘর বাতিঘর হয়েই রইল দেশে। বাতিঘরকে আগেও খুব পছন্দ করতাম এখন আরও বেশি করে পছন্দ আমার। কপোট্রনিক সুখ দুঃখ এখনও বাতিঘরের ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বল করছে! 
     
     
  • aranya | 2601:84:4600:5410:ee:bef6:d7b4:ec31 | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ০১:৩৭536852
  • বাতিঘর- এর কথা জেনে ভাল লাগল। প্রবল চাপ সত্বেও কিছু মানুষ এখনও মাথা নোয়াচ্ছে না 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট প্রতিক্রিয়া দিন