এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • প্রেম দেহ মন - পর্ব ৯ 

    Sukdeb Chatterjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৪৫ বার পঠিত
  • প্রেম দেহ মন - পর্ব ৯

    বিদিশা

    পিসির  বাড়িতে আশ্রয় পাওয়ার পর শরীরের ভার ক্রমশ বাড়তে থাকলেও  মনের ভার অনেকটাই  কমে গিয়েছিল।  পিসির স্নেহের পরশে যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ, সঙ্কোচ, হতাশা আর অনিশ্চয়তার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে আবার নতুন করে  স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি আগামী দিনের জন্য । মাস তিনেক কাটার পর স্কুলে জয়িতাদি একদিন ডেকে বললেন—তুমি একটা লিভ  অ্যাপ্লিকেসন লিখে আমাকে দাও, কাল থেকে তোমায় আর স্কুলে আসতে হবে না। সব কিছু ভালভাবে হয়ে যাক, বাচ্চাটা একটু বড়  হোক, তারপর আমি যখন বলব তখন জয়েন করার কথা ভাববে। মাইনে যেমন পাচ্ছ তেমনি পেতে থাকবে।

    আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এল। বললাম - দিদি, কাজ না করলেও মাইনে দেবেন? 
    আমাকে আদর করে বললেন — স্কুলটা আমার তাই সিদ্ধান্তটাও আমিই নেব। তুমি আমার সন্তানের মত, সন্তানের জন্য মা এটুকু করবে না। ঠিক আছে তোমার যদি সঙ্কোচ হয় তাহলে পরীক্ষার খাতাগুলো মাঝে মাঝে  পাঠিয়ে দেব, ঘরে বসে দেখে দিও।
    কাঁদতে কাঁদতে জয়িতাদিকে জড়িয়ে ধরে বললাম — দিদি, তোমাদের ভালবাসাই  জীবনের এত বড়   ঝড় ঝাপ্টায় আমাকে লড়াই করার সাহস যোগায়।   
    এরপর বাড়ির মধ্যেই টুকটাক কাজকর্ম আর এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে সময় কাটত। কাজকর্ম একটু বেশি করলেই পিসির বকা খেতে হত। এদিকে পেটেরটি থেকে থেকেই হাত পা ছুঁড়ে জানান দিচ্ছে যে সে বাইরে আসার জন্য উদগ্রীব। শরীরের ব্যথাও যে এত আনন্দের কারণ হতে পারে তা জানা ছিল না। নিজের পেটে হাত দিয়ে সন্তানের হাত পা মাথা আলাদা আলাদাভাবে অনুভব করার চেষ্টা করতাম। সে এক অদ্ভুত অনুভূতি। ডঃ ঘোষের কাছে নিয়মিত দেখাতে যাই। অধিকাংশ সময়েই সঙ্গে পিসি থাকে, কখনো কখনো মায়া বা অর্চনাও সঙ্গে গেছে। ডাক্তারবাবু বলেছেন সব কিছু নর্মাল আছে। নানা রকমের অনেক  পরীক্ষা করিয়েছেন আরো করাতে হবে। খরচ সব পিসি করত, দিতে গেলে কিছুতেই নিত না। একদিন একটু জোরাজুরি করতে খুব ব্যাথা পেয়ে বলল- তুই এখনো আমাকে আপনজন  বলে ভাবতে পারিস না তাই বারে বারে টাকা দেওয়ার কথা বলছিস। আমি যা করছি তা সব  মায়েরাই করে। ভবিষ্যতে আর কোনদিন  এ নিয়ে কোন কথা বলবি না।
    আর কথা বাড়াইনি। আমার মাকে তো এরকমভাবে ভাবতে বা করতে দেখি নি!  পৃথিবীতে সব নিয়মেরই তো কিছু  ব্যতিক্রম থাকে আমার মা বোধহয় ব্যতিক্রমের দলে।
    পিসি কিছু  না বললেও  আমি জানতে পেরেছিলাম যে তন্ময় পিসির কাছে  আমার খবরাখবর নেয়। একদিন তো বাড়ির বাইরে রাস্তার ওপারে একটা গাছের আড়াল থেকে বাড়ির দিকে চেয়ে  অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি।  কৃতকর্মের জন্য  বোধহয়  অনুতপ্ত। আপন মনেই বললাম,  ‘পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুযোগ তো তোমায় দিয়েছিলাম  তন্ময়, তখন তো আমাকে অকুল পাথারে ভাসিয়ে একেবারে গুটিয়ে গেলে।  তোমার একটা ছোট্ট সম্মতি সব কিছু বদলে দিতে পারত।  খোলস ছেড়ে বেরিয়েছ ঠিকই, কিন্তু বড্ড দেরীতে। পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরে  পড়াশোনায় আগ্রহ দেখালে  রেজাল্টে তার কোন প্রতিফলন হয় না তন্ময়।’ মাঝে খবর  পেলাম যে তন্ময় চাকরি পেয়েছে আর  কলকাতাতেই আছে। এই কটা মাসের জন্য একটু সাহস দেখাতে পারল না, পারলে সব কিছু এমন এলোমেলো হয়ে যেত না। মাইনে পেয়ে আমার জন্য অনেক কিছু কিনে লুকিয়ে তাল বুঝে পিসির হাতে দিয়ে গেছে। পিসি কিন্তু কিন্তু করে দিতে এলে আমি বিমুখ করিনি, নিয়ে রেখে দিয়েছি। রাখাই আছে ব্যবহার করিনি।
    ও হ্যাঁ, একটা ঘটনা  বলা হয়নি।  এ বাড়িতে আসার কিছুদিন পরে একদিন বিকেলে পিসি একজন সৌম্যদর্শন প্রৌঢ় ভদ্রলোককে আমার কাছে নিয়ে এলেন। জানালেন ঊনি তন্ময়ের মামা। কোনদিন না দেখলেও ওনার কথা ওদের কাছে অনেক শুনেছি। ভাল মন্দ যেমনই মানুষ হন না কেন, ওদের বাড়ির কাউকেই তখন আমি সহ্য করতে  পারছি না। তবু ওনার সাথে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক ব্যবহার করলাম। সেই একই অনুরোধ, “আমার সাথে বাড়ি ফিরে চল। সব ঠিক হয়ে যাবে।  কথা দিচ্ছি আমার ভগ্নীপতিকে আমি রাজি করাব।”
    বললাম—আমি জানি না আপনি বাড়ি বলতে কোন জায়গার কথা বোঝাতে চাইছেন। যেখানে দাঁড়িয়ে আপনি কথা বলছেন সেটাই আমার বাড়ি। যে মানুষটা আপনাকে সঙ্গে করে আমার কাছে নিয়ে এলেন মাতৃতুল্যা ওই মহীয়সীর স্নেহচ্ছায়ায় আমি পরম সুখে আছি।  এই সুখ  আমি কোথাও পাইনি, আমার নিজের মায়ের কাছেও নয়। এটা ছাড়া আমার বাবা মার একটা বাড়ি আছে, যেখানে জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছি। আর তো আমার কোন বাড়ি আছে বলে মনে পড়ছে  না।
    --তোমার শ্বশুর বাড়ির কথা বলছি মা। তনু আর ওর মায়ের কাছে তোমার অনেক কথা শুনেছি, ছবিও দেখিয়েছে। তোমাকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্যে ওরা উদগ্রীব হয়ে ছিল। হঠাৎ  করে কি যে হয়ে গেল! তোমাদের এই বিচ্ছেদ আমি মেনে নিতে পারিনি তাই জামালপুর থেকে তোমার কাছে ছুটে এসেছি।
    --ওদের কাছে শুনেছিলাম আপনি খুব রসিক লোক, আজকে বুঝলাম সঠিক বলেছিল। যার বিয়েই হয়নি তার আবার কিসের শ্বশুর বাড়ি? হবু শ্বশুর যে মেয়েকে কুকুরের মত বাড়ি থেকে তাড়ায় সেই মেয়ের আবার শ্বশুর বাড়ি পেলেন কোথায়? মামা আপনি বোধহয় আসল ঘটনা জানেন না। জানার কথাও নয়, কারণ আপনি যা কিছু শুনেছেন সব ওই বাড়ির লোকেদের মুখে।  
    ভাল না লাগলেও মামাকে পুরো ব্যাপারটা বিশদে জানিয়ে বললাম—আপনার মেয়েও তো বড় হয়েছে। ঈশ্বর না করুন ওর সাথে ঠিক এইরকম ঘটনা ঘটলে আপনি কি করতেন? আপনার মেয়েকে যদি ছেলের বাবা অপমান করে দূর দূর  করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিত, আপনি কি করতেন? বিশেষ করে আপনার নিরপরাধ  মেয়ে যদি জবরদস্তির শিকার হয়ে এই সমস্যায় পড়ে থাকে!  আমাকে যা অনুরোধ করছেন তাকেও তাই করতে পারতেন? কখনই পারতেন না। আর আপনি বলছেন যে আপনার ভগ্নীপতিকে আপনি বুঝিয়ে রাজী করাবেন, তাই যদি হবে তাহলে আজকেই তো সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারতেন আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করার জন্য। মামা ব্যাপারটা অত সহজ নয়।
    আমার কথা শুনে ভদ্রলোক কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন।
    যাওয়ার আগে বললেন—মা, আমি মেয়ের বাবা। তোমার কষ্ট মরমে মরমে বুঝি। যদি ভবিষ্যতে কোনদিন তোমার মন আর পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় তখন না হয় এই বুড়োটার কথা একটু ভেবে দেখ।
    কোন উত্তর দিইনি।  
    সময় এগিয়ে আসার সাথে সাথে শরীরটা বেশ  ভারী হয়ে যাওয়ায় চলতে ফিরতে একটু অসুবিধে হত। ডেলিভারির দিন চারেক আগে থেকে মায়া আমার কাছে এসে ছিল। ওর মত চালাক চতুর মেয়ে   পাশে থাকায় অনেকটা নিশ্চিন্ত হলাম। দুই বোনেতে জমে থাকা অনেক গল্প হত। মা বাবা তন্ময়, সকলেই সেই গল্পের মধ্যে ছিল। কথায় বুঝলাম তন্ময়ের সাথে ওর  যোগাযোগ আছে, তবে ও নিয়ে কোন প্রশ্ন করিনি।
    ডেলিভারির আগের দিন বিকেলে নার্সিং হোমে ভর্তি হলাম। পিসি আর মায়া সঙ্গে ছিল। খবর পেয়ে একে একে অনেকে দেখতে এল। বাবা মা দুজনেই এসেছিল, অনেকক্ষণ ছিল। মা পাশে বসে আমার গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। মায়ের  স্নেহের স্পর্শে শরীরটা জুড়িয়ে গেল। অমিতকে নিয়ে অর্চনাও এসেছিল। কানে কানে জানিয়ে গেল ওদের বিয়ের খবর। আমি যাতে যেতে পারি  তাই মাস ছয়েক বাদে বিয়ের দিন ঠিক করেছে। দুজনকে অভিনন্দন জানালাম। যাওয়ার আগে স্বভাবসুলভ ভঙ্গীতে বলে গেল—একদম ঘাবড়াবি না, বীরের মত ওটি তে যাবি আর ছেলে কোলে বেরিয়ে আসবি।
    হেসে জিজ্ঞেস করলাম—বুঝলি কি করে যে ছেলেই হবে, মেয়েও তো হতে পারে।
    --অনুমান, বন্ধু অনুমান। আমার মন বলছে ছেলেই হবে। কালকে মিলিয়ে নিবি। আর পিসি তোমার নাতি নাতনি যাই হোক আমাদের সবাইকে পেটপুরে  খাওয়াতে হবে, ফাঁকি দেওয়ার যেন চেষ্টা কোরো না।
    --আনন্দের খবরটা আগে পাই তারপর যা চাইবি তাই হবে। তোকে ফাঁকি দেওয়ার সাধ্যি আমার নেই মা।  স্মিত হেসে পিসি বলে।
    যার  মেয়ের সন্তান হবে তাকে কেউ কিছু বলছে না। তারই সামনে আবদার করা হচ্ছে সম্পূর্ণরূপে বাইরের এক মহিলাকে, যিনি নিজগুণে মেয়েটির মা হয়ে উঠেছেন। আমার মা একটা কোনে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে সব শুনছিল।  যেমনই হোক মা তো তাই মায়া হল। আমার মা আর তন্ময় দুজনেই মানসিকভাবে কমবেশি বিপর্যস্ত। তবে মার জন্যে কিছুটা খারাপ লাগলেও তন্ময়ের জন্য আমার তিলার্ধ সহানুভূতি ছিল না কারণ ও তখন আমার কাছে একজন অপরাধী ছাড়া  আর কিছু নয়।
    ভোরের দিকে পেন শুরু হওয়ায় আমাকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হল। খবর পেয়ে ডাঃ ঘোষ চলে এলেন। এটা ওনার বাড়ি কাম নার্সিং হোম। চার তলায় সপরিবারে থাকেন। জয়ন্ত ঘোষ কেবল ভাল ডাক্তারই নয় মানুষও খুব ভাল। পিসির সাথে পরিচয়ের সুবাদে আমাকে খুব স্নেহ করতেন। দুপুর অব্দি অপেক্ষা করার পর ঊনি সিজার করার  সিদ্ধান্ত নিলেন। তখন সিজারের সময়  কোমরে ইনজেকশন দিয়ে নিম্নাঙ্গ অসাড় করে ডেলিভারির প্রথা তেমনভাবে চালু হয়নি। পুরো অজ্ঞানই করা হত। ওটি তে আমাকে কিছুটা উদ্বিগ্ন দেখে মাথায় হাত বুলিয়ে আশ্বাস দিয়ে বললেন—চিন্তা কোরো না মা, ভয়ের কিছু নেই।
    কিছু পরে আধা অজ্ঞান অবস্থায় দেখলাম আমার সন্তানকে, কানে এল “ছেলে হয়েছে।”  আনন্দের জোয়ারে প্লাবিত হয়ে ওই অবস্থাতেই হাত বাড়িয়েছিলাম একটু ছুঁয়ে দেখবার জন্যে। আমাকে বেডে নিয়ে যাওয়ার পথে পিসি, অর্চনা, বাবা, মা, মায়া সব হাসিমুখে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। চিনতে পারলেও মুখগুলো তখন আবছা আবছা  লাগছিল। একটু তফাতে অমিত আর ওর পাশে তন্ময়। ওই অবস্থাতেও মনে প্রশ্ন জেগেছিল  যে ও কাকে দেখতে এসেছে, যে প্রেমিকার সাথে প্রতারণা করেছে তাকে  না যে সন্তানের মৃত্যু চেয়েছিল তাকে। তবু কেন জানি না ওকে ওখানে দেখে ভাল লেগেছিল।       
    বিকেলে ভিজিটিং আওয়ার শুরু হবে। ক্লান্ত শরীর, তৃপ্ত হৃদয় আর উৎফুল্ল মনে  আধশোয়া হয়ে  অপেক্ষা করছি আপনারজনদের জন্য। আর আমার  পাশেই আমার ছানা   বেবি  কটে শুয়ে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে নতুন পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছে। একটু আগেই মেজাজ বিগড়ে ছিল, কোলে এসে খাওয়া দাওয়ার পর মাথা ঠান্ডা হওয়ায়  ফুর্তিতে শুয়ে আছে। প্রথমে ফুলের স্তবক আর একগাদা মিস্টি নিয়ে ঘরে ঢুকলেন জয়িতাদি। আমাকে অনেক আদর করলেন। আনন্দে চোখে জল এসে গেল। এরপর দর্শনার্থী আর অভ্যাগতয় ঘর ভরে গেল। গোকুলদা আর ওর বৌ  ফুল মিস্টি নিয়ে দেখা করতে এসেছে। এমনকি ‘আমার বাড়ি’র বাচ্চা  কটাও গোকুলদার সাথে আমাকে দেখতে এসেছে।  কি যে আনন্দ হল বলে বোঝাতে পারব না।  কত ভাগ্য করলে এত মানুষের ভালবাসা পাওয়া যায়। যতই অপছন্দ করি বিকেলেও চারিদিকে চোখ ঘুরিয়ে খুঁজেছিলাম, না তন্ময়কে দেখতে পাইনি। অর্চনা সেদিনই   পিসির সাথে খাওয়া দাওয়ার ডেট ফাইনাল করে ফেলল। মেনু পরে আমি বাড়ি ফিরলে একসাথে বসে ঠিক করবে। কয়েকদিন  পর অয়নকে নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। ছেলের নামটা আমিই দিয়েছি, অনেক আগে থেকে ভেবে ঠিক করে রেখেছিলাম। মেয়ে হলে তার জন্যেও নাম ঠিক করা ছিল। বাড়ি ফিরে দেখি পিসি আমার জন্য দুবেলার দুজন আয়া ঠিক করে রেখেছে। আমি পিসিকে বললাম—আচ্ছা পিসি তুমি কি করেছ বলত! আমি কি রুগী?  আমি একাই সব সামলে  নিতে পারব, আর তেমন দরকার হলে তুমি আছ, গোকুলদা আছে, সন্ধ্যা আছে। 
    পিসি কিছুই শুনল না। বলল- সিজার হয়েছে, কোন ভারী কাজ এখন করা যাবে না। অন্তত মাস খানেক তো থাক তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে।
    আমার সব আপত্তি নস্যাৎ করে তিন মাস পর্যন্ত পিসি আমায় আয়া পরিবৃত করে রেখেছিল। তারপর খানিকটা  পিসির অবাধ্য হয়েই আয়া মুক্ত হই। ছেলেটা ততদিনে একটু শক্তপোক্ত হয়েছে। খিদে না পেলে কান্নাকাটি তেমন একটা করে না, শুয়ে শুয়ে হাত পা ছুঁড়ে খেলা করে। খুব ফর্সা হয়েছে আর মুখখানাও ভারি মিস্টি। জানি সব বাচ্চাই তার মায়ের কাছে সুন্দর, তবু ও মনে হয় একটু বেশিই সুন্দর। থেকে থেকেই কোলে তুলে নিয়ে আদর করি, ওর শরীরের ঘ্রাণ নিই। শরীর মন জুড়িয়ে যায়। আমার কাছে মায়া তো আসেই, মাও এখন প্রায়ই আসে।  বাবা ছুটিছাটার দিনে আসে। জয়িতাদি, অরুণ কাকু, অমিত, সকলেই ঘুরে ফিরে আসে। অর্চনার কথা আর আলাদা করে বলব কি, নিজে তো আসেই কয়েকবার সাথে   কাকিমাকেও নিয়ে এসেছে। তাই দেখে একদিন পিসি ইয়ার্কি মেরে বলল, “স্বপ্না, বৌদির বাড়িতে আগে তো এত ঘন ঘন আসতে দেখিনি। এখন মেয়ে আর নাতির টানে কেমন ছুটে ছুটে আসছিস।” ননদ আর ভাজের সম্পর্ক খুব মধুর। দুজন সুন্দর মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক কখনও অসুন্দর হতে পারে না। কাকিমা এলে দুজনে অনেক গল্পগাছা হয়। অর্চনা একদিন ওর ভাবি বৌদিকেও সঙ্গে করে এনেছিল। মেয়েটা খুব ভাল। আমাদের থেকে একটু ছোটই হবে। আর কয়েক মাস  বাদেই অর্চনার বিয়ে। বিয়ের নেমন্তন্ন, কেনাকাটা, সব হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করতে বলল—ওসব মা জানে। আমাকে যা করতে বলে করি, আনতে বলে আনি আর যেখানে যেতে বলে যাই, ব্যাস। আর দাদাও ক’দিন বাদেই  ছুটি নিয়ে আসছে, বাকি কাজগুলো ও এসে করবে। বিয়েও করব আবার বিয়ের কাজও করব দুটো একসাথে হয় নাকি!
    আমার ছেলে হওয়া উপলক্ষে অর্চনার খাওয়াটা কিন্তু বাকি থেকে গেছে। পিসি খাওয়াতে চেয়েছিল, অর্চনাই বলেছে “ওটা ডিউ থাক পরে একসময় সুযোগ সুবিধে মত হবে।”
    একদিন দ্বিধা দ্বন্দ কাটিয়ে তন্ময়ের মাও এসেছিলেন আমার সাথে দেখা করতে। আমার সাথে বলাটা বোধহয় সঠিক হল না, উনি আসলে এসেছিলেন রক্তের টানে। আমার কাছে একাই এসেছিলেন, জানি না  কোন হিতাকাঙ্ক্ষী ওনাকে পৌঁছে দিয়ে বাইরে কোথাও অপেক্ষা করছিল কি না। অনেক কিন্তু কিন্তু করে আমার ঘরে ঢুকে জিজ্ঞেস করলেন—কেমন আছ মা?
    আমি একটু রুঢ় ভাবে বলে ফেললাম—আমার কুশল জানতে তো আসেননি, সেটা হলে অনেক আগেই আসতেন। আর এখন যার কারণে এসেছেন একসময় আপনার বাড়ির সবাই তার মৃত্যু কামনা করেছিলেন। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তবু সে এসেছে আর আজ একসময়ের সেই অবাঞ্ছিতই আপনাকে এখানে টেনে এনেছে।
    ভদ্রমহিলা চুপ করে আমার ভৎসনা হজম করলেন। তারপর নিজেরই খারাপ লাগল। এই মানুষটা একসময়  আমাকে স্নেহ করতেন। স্বামীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস করে রুখে দাঁড়াতে না পারাটাই এঁর একমাত্র অপরাধ। অয়নকে ওনার কোলে দিলাম, নাতিকে বুকে জড়িয়ে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকলেন। সেই সময় পিসি মহিলার জন্য মিষ্টি নিয়ে ঘরে ঢুকেছে। পিসি ওনাকে অনেক সান্ত্বনা দিল। যাওয়ার আগে তন্ময়ের মা আমার দু হাত ধরে বললেন—মা একটা অনুরোধ করছি, মাঝে মাঝে বাচ্চাটাকে একটু দেখতে দিও।
    আমি সম্মতি জানিয়ে বলেছিলাম, “আসবেন তবে কেবল আপনিই,  সাথে অন্য কেউ নয় কিন্তু।”
    ফিরে যাওয়ার আগে বাচ্চাকে আবার কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বললেন- এর জন্য কিছু খেলনা এনেছি, রাখবে?
    আপত্তি করিনি।
    এরপর তন্ময়ের মা মাঝে মাঝেই আসতেন। পরের দিকে আগের থেকে অনেক স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিলেন। একবার পুরোনো প্রসঙ্গে কথা শুরু করতে আমি সঙ্গে সঙ্গে বাধা দিয়ে বলেছিলাম, “ও নিয়ে কোন কথা আমি শুনতে চাই না, ওটা আমার জীবনের একটা ক্লোসড্ চ্যাপ্টার।”
    অর্চনার বিয়েতে সবাই গিয়েছিলাম, বাচ্চাকে  অধিকাংশ  সময় পিসিই সামলেছে ফলে বেস্ট ফ্রেন্ড এর বিয়েতে আমি খুব মজা করতে পেরেছি। বেচারি পিসিই বরং আমার বাচ্চার জন্যে নিজের ভাইঝির বিয়েটা তেমনভাবে উপভোগ করতে পারে নি। বৌভাতে এত ছোট বাচ্চা নিয়ে অত দূরে যাওয়া সমস্যার তাই আমি যাইনি। পিসিকে জোরজার করে পাঠেয়েছিলাম। আত্মীয় স্বজনেরা অনেকেই গিয়েছিল শুধু তন্ময়েরা কেউ যায়নি।   মায়ার মুখে শুনেছি ওখানেও খুব হৈচৈ আনন্দ মজা হয়েছে। আনন্দময়ী অর্চনার বিয়েতে আনন্দ হবে না তা কি হয়! আমার জীবনের এই অধ্যায়টা উহ্য রয়ে গেল।   
    পাঁচজনের আদরে আর অধিক যত্নে অয়ন বড় হতে লাগল। চারিদিকে হামা দিয়ে বেড়ায়। যে  আসে সেই একবার কোলে তুলে নিয়ে চটকাতে চায়। পিসির এটা খুব একটা পছন্দ নয়।  লোকজন এলে অয়নকে আগলে রাখে, চট করে কারো কোলে দেয় না।  নিরুপায় হয়ে মাঝে মাঝে দিলেও  হাত পা ধুয়ে তারপর বাচ্চার কাছে আসতে বলে। কোন বাচ্চাকে কেউ দেখতে এলে একটা আলোচনা খুব কমন, তা হল বাচ্চাকে কার মত দেখতে হয়েছে। অয়নের বাবাকে যারা দেখেছে তাদের অধিকাংশের মত বাচ্চা বাবার মত দেখতে হয়েছে। অর্চনাও একদিন বলল, “হ্যাঁরে, চোখ নাক মুখ সব  কেটে বসান তনু।” আমার মা আর বোনেরও তাই  মত, কেবল বাবা বলে “আমার নাতি একেবারে ওর মায়ের মত দেখতে হয়েছে।” বাবা  আমাকে বড্ড ভালবাসে তো। ছেলে একটু বড় হতে  আমারও মনে হত ওকে দেখতে  তন্ময়ের মতই হয়েছে। মুখে মিল থাকলেও আচরণে সম্পূর্ণ বিপরীত। বাবার মত শান্ত নয়,  চরম দুরন্ত। ওইটুকু ছানা টলমল পায়ে চারিদিকে চরকি কেটে  বেড়াচ্ছে। সব সময় ওর পিছনে কাউকে না কাউকে দৌড়তে হচ্ছে। শান্ত বিনয়ী মানুষের যে অশান্ত কদর্য রূপ প্রত্যক্ষ করেছি তাতে মনে প্রাণে কামনা করতাম ছেলে  যেন বাবার ধারা কখনো না পায়। দুরন্ত, অশান্ত, যাই হোক বড় হয়ে যেন ভাল মানুষ হয়। অবশ্য সব মায়েরই সন্তানের জন্য এই কামনাই থাকে, তন্ময়ের মায়েরও হয়ত ছিল।   
    অয়ন বছর খানেকের হওয়ার পর আমি স্কুলে জয়েন করলাম। ঘরে বসে বসে দিনের পর দিন মাইনে নিচ্ছি, আমার খুব সঙ্কোচ হত। আগেই জয়েন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু জয়িতাদি রাজি হননি। এবার খানিকটা জোর করেই জয়েন করলাম। অবশ্য নামেই জয়েন, ঘন্টা খানেক থাকার পরই জয়িতাদি ছেলের কথা বলে জোর করে বাড়ি পাঠিয়ে দিতেন। এদিকে স্কুলে জয়েন করার আগে ছেলেকে দেখভালের জন্য আয়া রাখার কথা বলতেই পিসি রে রে করে উঠল। বলে, “আগে আয়া রেখেছিলাম তোকে  দেখাশোনার জন্যে। কিন্তু দাদুভাইকে আমি বাইরের লোকের হাতে ছাড়ছি না। আমি আছি সন্ধ্যা আছে দুজনে মিলে তোর স্কুলের সময়টুকু অনায়াসে  সামলে দেব।” সঙ্কোচের কারণে স্কুলে জয়েন করে পড়লাম আর এক সঙ্কোচে।  বেচারি পিসির বয়স হয়েছে, এই দুরন্ত বাচ্চাকে সামলাতে কতই না কষ্ট হবে! পিসির কথার ওপর কথা চলবে না, আয়া রাখার পরিকল্পনা বাতিল হয়ে গেল। স্কুলে জয়েন করার সময় একটু চিন্তা ছিল যে আমাকে ছেড়ে থাকলে ছেলে বায়না করতে পারে, কিন্তু প্রথম দু এক দিন একটু কুঁই কুঁই করলেও পরে একদম ঠিকঠাক থাকত। দিন  গড়াতে গড়াতে ছেলের স্কুলে যাওয়ার সময় এসে গেল। কোন স্কুলে ভর্তি করা যায় এইসব নিয়ে যখন আলোচনা চলছে তখন পিসি একদিন আমায় বলল—তোকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার আছে। যদিও ঘটনাটা বেশ কিছুদিন আগের। তখন তোর মন মাথা আর শরীর কোনটাই  ভাল  ছিল না তাই ঠিক করেছিলাম উপযুক্ত সময়েই ব্যাপারটা তোকে জানাব।    অয়ন জন্মাবার বেশ কয়েক মাস আগে তন্ময় একদিন এ বাড়িতে  এসেছিল।  তুই তখন স্কুলে, হয়ত আমার সাথে একা কথা বলার জন্যেই ওই সময় এসেছিল। ও অনুরোধ করল  স্কুলের খাতায় ছেলের বাবার জায়গায়  ওর নামটা লিখতে। বাবার নাম না থাকার বাস্তব সমস্যাগুলোর কথা বলেছিল। শুধু এইটুকুই, আর কোন অনুরোধ ও করেনি।  আমারও মনে হয় এই সমস্যাগুলোর মুখোমুখি অয়নকেও প্রতিনিয়তই হতে হবে। আমি একেবারেই চাই না আমার দাদুভাই এই মানসিক কষ্টের মাঝে বড় হোক। ও যাতে পরে এটা অস্বীকার করতে না পারে তাই আমি ওকে দিয়ে স্ট্যাম্প পেপারে  লিখিয়ে নিয়ে আমার কাছে রেখে দিয়েছি।  আমার অনুরোধ এ ব্যাপারে তুই না করিস না। আর এর মধ্যে তো কোন মিথ্যে নেই। লক্ষ্মী মা, আমার নাতিটার কথা ভেবে রাজি হয়ে যা।
    পিসির কথা ফেলতে পারিনি, রাজি হয়েছিলাম। যত বড় হবে বাবার ব্যাপারে ছেলের জানার আগ্রহ বাড়বে আর  তার থেকে শতগুণে  বাড়বে অন্যদের  ওর বাবার ব্যাপারে কৌতুহল। অস্বস্তিকর প্রশ্নে জর্জরিত হবে আমার ছেলেটা।  আমিও চাইনি অয়ন  কোন কঠিন  পরিস্থিতির  মধ্যে দিয়ে বড় হোক।  একটা ব্যাপারে প্রথমে সন্দেহ হয়েছিল, পরে নিত্য নতুন  খেলনাপাতি, জিনিসপত্র, আর গোকুলদার মুখ ফস্কে বলে ফেলা দু একটা কথায়  নিশ্চিত হয়েছি যে তন্ময় আমার অনুপস্থিতিতে মাঝে মাঝে ছেলেকে দেখতে আসত। আমার ধারণা ছেলে হওয়ার আগেও আমার  অজান্তে  এ বাড়িতে  এসেছে। অবশ্য  তখন আমি অধিকাংশ সময় বাড়িতেই থাকতাম, তাই লুকিয়ে চুরিয়ে এক আধ বারের বেশি এসেছে মনে হয় না।   পিসির সম্মতি  ছাড়া তন্ময়ের এ বাড়িতে ঢোকা  সম্ভব নয়। পিসিকে তন্ময় বেশ ভালই ম্যানেজ করেছিল। প্রথমদিকে পিসির ওপর একটু অভিমান হলেও পরে ব্যাপারটা হাল্কা ভাবেই নিয়েছি। এ নিয়ে পিসিকে কোনদিন কোন প্রশ্ন করিনি। উনি আমাকে বিপদের সময় আশ্রয় দিয়েছেন, মাতৃস্নেহ দিয়েছেন, প্রশ্ন  করার কোন অধিকার আমার নেই।  আর পিতৃত্বের অনুরোধের ব্যাপারে  ভেবে দেখেছি আমার সাথে যাই করে থাকুক না কেন তন্ময় যে অয়নের বাবা তাতে তো কোন মিথ্যে নেই। বাবা আর ছেলের  মাঝে বেড়া তুলে দেওয়াটা অমানবিক কাজ আর সব কিছু বুঝতে শেখার পরে আমার ছেলে এই আরোপিত বিচ্ছেদকে ভাল মনে নাও নিতে পারে।
    তন্ময়কে যতই দূরে সরিয়ে দিতে চাইতাম, সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলা জিনিসের মত জীবন তরঙ্গের দোলায় আবার সে পাড়ে  ফিরে আসছিল।

    চলবে
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৪৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Mira Bijuli | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৫537740
  • এই কাহিনীর শেষ পরিণতি জানি না। বিদিশার মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সবার থাকে না। কুর্নিশ
  • Mira Bijuli | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৫২537741
  • তবু লেখক মহাশয়ের কাছে বিশেষ আর্জি, বিদিশা তন্ময়কে ক্ষমা করে যেন সুষম সম্পর্কে ফিরে যেতে পারে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন