এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  •  যে আঁধার আলোর অধিকঃ পর্ব ৭

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩০০ বার পঠিত
  • ১১

    আজকে ক্লাসরুমে আরো এক আপদ!
    দ্বিতীয় দিন থেকেই চল্লিশের ছোঁয়া লাগা চশমা পড়া একজন এককোণায় একটি থামের আড়ালে প্রায় নিজের অস্তিত্বকে লুকিয়ে সময় কাটিয়ে দিচ্ছিলেন। আমরা কেউ তাঁকে দেখেও দেখিনি।
    কিন্তু সহেজকর্তা থুড়ি ফেসিলিটেটর দুজনের চোখকে ফাঁকি দেয়া গেল না।

    আজকে নিধি ধরলেন শ্রীমান সদাশিবনকে। -- আদ্দেক দিন কেটে গেছে। আপনি বোধহয় মুচকি হাসি ছাড়া কিছুই কন্ট্রিবিউট করেন নি। ব্যাপারটা কি?
    --- কিছু না। (ফের মুচকি হাসি।)
    -- শুনুন, এটা তো একটা গ্রুপ এক্সারসাইজ। লক্ষ্য ব্যক্তিমানুষ। তার অবচেতন মন কে চেনাজানা। কিন্তু সে একা নিজেকে কোন সাহায্য করতে পারে না। সমষ্টির আয়নায় প্রতিফলিত হয় ব্যষ্টির চেতন, তার ব্যক্তিত্বের আসলি ছবি।
    এখানে আপনার পার্টিসিপেশন প্রায় শূণ্য। এমনটা কেন? আপনার এই মুহূর্তে ট্রু ফিলিং কী? সেটা অন্ততঃ আমাদের কাইন্ডলি জানান।

    -- আমার ফিলিং হল উদাসীনতা। আমি আপনাদের জন্যে কিছুই ফিল করছি না।
    --- আর নিজের জন্যে?
    --- কবে এই প্রোগ্রাম শেষ হবে। কবে বাড়ি ফিরব? অনেক কাজ পড়ে আছে।

    ফুলটুসি অদিতি চটে যায়।
    -- এটা আমাদের জন্যে ইনসাল্টিং!
    ওকে থামিয়ে দিয়ে সেরেনা বলে-- তবে এলেন কেন মশাই? ঘরে থেকে দরকারি কাজগুলো সেরে আসলেই পারতেন!
    সদাশিবন আবার হাসেন। বেশ ভূবন ভোলানো হাসি।

    -- আমিও তাই ভাবি, মরতে এখানে কেন এসেছি! এরকম ট্রেনিং অনেকবার করেছি। আগের কোম্পানিতে থাকার সময় কোলকাতায় পোস্টিং ছিল। তখন জোকায় আই আই এম এ এইসব করেছি। আপনাদের মত এনজিও-ওলাদের জন্যে এসব নতুন ব্যাপারস্যাপার।
    কিন্তু আমি কর্পোরেটের পোড় খাওয়া লোক। শুনুন ম্যাডাম, এটাকে বলে ট্রি-গ্রুপ মেথড, ঠিক বলেছি তো?
    সেই হিয়র এন্ড নাউ প্রিন্সিপল?
    অনেক করেছি।
    আমার এসবে কোন লাভ হয় নি। সবার জন্যে হোমিওপ্যাথির সাদাগুলির চিকিচ্ছে নয়।

    -- তাহলে আবার এয়েচেন কেন, বলুন দেখি!
    গঙ্গারামের গলায় ব্যঙ্গের সুর।
    সদাশিবন হেসে ফেলেন।
    -- আরে দাসবাবু! চটে গেলেন কেন? মাইরি বলছি নতুন কোম্পানি আমাকে ঠেলে ঠুলে পাঠিয়েছে। বলছে আমার কোন পরিবত্তন আসবে। দূর!

    সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল যে সদাশিবনকে সদাশিব হয়েই থাকতে দেয়া যাক।

    কিন্তু আজকে গপ্পো তেমন জমছে না। ঘরের মধ্যে কোথায় একটা চাপা অস্থিরতা।
    বাইরে এই মেঘে ঢেকে যাচ্ছে চারদিক- পাহাড়ের রেখাগুলো অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার নীল নীল ধোঁয়া ধোঁয়া চাদর সরিয়ে দিয়ে হেসে উঠছে হিমালয়।

    রামজীবন বিড়বিড় করছেন।
    -- আমি বাবার প্রভাব থেকে বেরোতে পারিনি। বাবা ছিলেন ডাকসাইটে থানেদার। আমি চেয়েছি বাবার মত রাফ-টাফ হতে। সারাজীবন চেয়েছি বাবা আমাকে ছেলে বলে স্বীকার করুক।
    আমিও চেয়েছি এক সন্তান, অবশ্যই এমন ছেলে যে আমার মত তোতোয়া হবে না, বরং জবরদস্ত পুরুষমানুষ হবে। হ্যাঁ, অনেকটা আমার বাবার মত।
    তাই যখন পাঁচবছর বিয়ের পরও আমার প্রথম স্ত্রীর পেটে বাচ্চা এল না, আমি দ্বিতীয় বার দারপরিগ্রহ করলাম।

    -- দূর মশাই! চুপ করুন, আপনার এসব ভন্ডামির গপ্পো আমরা শুনতে আগ্রহী নই।
    সেরেনা বলে-- আমার বিরক্ত লাগছে, কেমন গা গুলোচ্ছে।

    -- আমার প্রথম স্ত্রী'র সম্মতি নিয়েই ওই বিয়ে করেছি।
    -- জানা আছে। ওই যে হরিয়ানার জাঠদের খপ পঞ্চায়েতের অনার কিলিং, তারাও ওই সব বলে। গ্রামীণ সমাজ, পরিবারের সহমতি, সম্মান --এইসব।
    -- আপনারা আমাদের পাহাড়ি গাঁয়ের সেন্টিমেন্ট বুঝবেন না।
    সন্তানের আশায় অপেক্ষা করে কয়েক বছর কেটে গেলে নানান কথা হয়। আমার প্রথম পক্ষ ধীরে ধীরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তুকতাক কবচ-তাবিজ কিছুই কাজে এল না । এলোপ্যাথিক চিকিৎসাও হয়েছে, শেষে দ্বিতীয় বিয়ে করে যখন ঘরে শিশুর কিলকারি শোনা গেল, আমার স্ত্রী সেরে উঠলেন; এখন একদম সহজ স্বাভাবিক। বাচ্চারা বড়মার খুব ন্যাওটা।

    ফুলটুসি বলে-- কালকেই বলেছিলাম, ইনি এইসব গপ্পো বলে আমাদের, বিশেষতঃ মেয়েদের নজরকাড়তে চান, সস্তা সহানুভূতি পেতে চান। আর আজকে মনে হচ্ছে , শুনতে খারাপ লাগবে—উনি একজন মেল শভিনিস্ট পিগ!
    রামজীবন তিওয়ারির চোখ একবার জ্বলে উঠলো, তারপর ও চোখ নামিয়ে নিল।

    ফেসিলিটেটররা চুপ। নিধি যেন কথা ঘুরিয়ে দেবার জন্যে জিগ্যেস করলেন -- দাসজী! খুদ কে বারে মেঁ আপকা ক্যা কহেনা?
    মুচকি হেসে শোলাংকি বল্লেন-- উনি আর কি বলবেন! উনি তো এপাড়ার সর্বজ্ঞ জেঠু।

    দুপুরে লাঞ্চের ফাঁকে আমি পাকড়াও করি সুরেশকে।
    --হ্যাঁ রে, তুই এত ভাল ছবি তুলিস, একটা এস এল আর আর একটা ডিজিটাল, আরও গত কিছু গ্যাজেট নিয়ে এসেছিস। তোর এন জি ও কোন ফিল্ডে কাজ করে? ছত্তিশগড়ে আসবি?
    আর সত্যি তুই বস্তারে গেছিলি? তোর দাদা ওখানের সরকারি কর্মচারী। আমাকে নিয়ে যাবি? ওখানে কী হচ্ছে কিছু জানিস? আলাদা করে বলিস তো!

    --- আমরা কাজ করি ভোপালে, ঝোপড়পট্টি এলাকার কাগজ কুড়োনো বাচ্চাদের নিয়ে। এরা রাস্তাঘাটে গাটারে খেলে বড় হয়, ছোটবেলা থেকেই পান-মশালা-বিড়িতে আসক্ত হয়। আর বীভৎস গরীবি এবং কঠিন পরিস্থিতিতে বড় হতে হতে এরা ছোটখাটো চুরিতে হাত পাকায় এবং তারপর অন্য অপরাধের জগতে এন্ট্রি নেয়।
    এরা বড় হয়ে বিভিন্ন পাওয়ার লবি ও রাজনৈতিক শক্তির ক্যানন ফডার হিসেবে জীবন কাটায়, তারপর একদিন অন্ধকারে হারিয়ে যায়।
    আমরা চেষ্টা করি ওদের পাড়ায় গিয়ে ওদের ঘরের কাছে বিনাপয়সায় প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে ধীরে ধীরে মূলস্রোতের পড়াশোনার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে।
    চেষ্টা করি নেশা ছাড়াতে, হয়ত কোন হাতের কাজ শেখাতে।
    সবচেয়ে আগে আমরা নিজেরা চেষ্টা করি ওই হতভাগ্য বাচ্চাগুলোকে ভালবাসতে।

    দ্বিতীয় সেশনের সময় সুরেশ বসে আমার পাশে। এবার নিধি ধরেছেন সুরেশকে।
    -আমাদের হাতে আছে মাত্র দুটো দিন। এখনও তুমি খালি হিমালয়ের ছবি তুলে বেড়াচ্ছ। তোমার ভেতরের সুরেশকে দেখাতে চাও না?
    -- সাহস নেই। শুধু যে দেখাতে চায় না তাই নয়, জানতেও চায় না। অন্যের আয়নায় নিজের চেহারা দেখার সাহস নেই, নিজের সম্বন্ধে একটা মনগড়া ধারণাকে বেলুনের মতন ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আত্মতৃপ্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
    এটা শোলাংকির চিমটি।
    সবাই চুপ। সুরেশের চশমার ফাঁকে চোখ দুটো কি একটু বেশি জ্বলজ্বল করছে?
    গঙ্গারাম সুরেশকে কনুইয়ের খোঁচা মারে, ফিসফিসায়-- কিছু বল, এ’রম করিস না।
    অস্বস্তিকর নীরবতা। চা দিয়ে গেল।
    নিধি এবার ফুলটুসিকে নিয়ে পড়লেন।
    তুমি স্পিরিটেড মেয়ে, এনজিওতে ভাল কাজ করছ, নতুন বিয়ে হয়েছে। ছোটবেলার সাথীকে জীবনসাথী করেছ, খুব ভাল কথা। কিন্তু দু’দিন ধরে তুমি একটু অন্যমনস্ক। কী নিয়ে সমস্যায় পড়েছ?
    --কিছু না। সব ঠিকই আছে।
    --ঠিক নেই । ভেতরে ভেতরে তিতিবিরক্ত হয়ে আছ, তাই সেদিন ছেলেটির ছবি তোলা নিয়ে একটু ওভাররিয়েক্ট করলে। ভেতরে ভেতরে কিছু একটা তোমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। তাই গ্রুপ থেকে মনে মনে নিজেকে আলাদা করে নিয়েছ। দ্বিতীয় দিনের পর থেকে অন্যদের ব্যাপারে কোন ফিডব্যাক দিচ্ছ না। কী হয়েছে?
    অদিতি এদিক ওদিক তাকায়, চশমা খুলে ফেলে। গঙ্গারামের চোখে চোখ পড়তেই ও উৎসাহ দিতে গিয়ে খেলার মাঠের মত চড়া গলায় বলে—কাম অন!
    অদিতি হেসে ফেলে। তারপর কারও দিকে না তাকিয়ে শুরু করে –
    ঠিক কী বলব বুঝতে পারছি না। আসলে আমার খুব রাগ। আমার স্বামী বরং অনেক অ্যাডজাস্টিং নেচারের। আমাকে ছাপা বইয়ের মত বোঝে। একবছর বিয়ে হয়েছে, কিন্তু শ্বশুরমশায় আমার সঙ্গে একটাও কথা বলেন না। নিজের হিসেবে বিয়ে করায় বাপের বাড়ির সঙ্গে আমার সম্পর্ক বেশ ঠান্ডা গোছের।
    এক বাবা-মাকে ছেড়ে এসেছি, আর এক বাবা-মা পাবো, এই ভরসায়। কিন্তু ফ্রাস্টেটেড লাগে।
    -- শাশুড়ি?
    -- উনি ঠিক আছেন। আমাকে চোখে হারান। কিন্তু শ্বশুরকে এখনও বাবা বলতে পারলাম না, আমারই দোষ।
    গঙ্গারাম ওকে একগ্লাস জল এগিয়ে দেয়। ও চোঁ-চোঁ করে এক নিঃশ্বাসে গ্লাস খালি করে বলে – থ্যাংকস । তারপর রুমাল দিয়ে মুখ মোছে আর ফিক করে হেসে ফেলে।
    অন্যদের চোখে চোখে প্রশ্ন — হাসির কী হোল রে বাবা!
    আসলে উনি না রোজ সন্ধ্যেবেলায় দু’পেগ হুইস্কি খান। তারপর ওঁর কথা শুরু হয়।
    সে কী কথা? কখনও দেশভাগের সময় লাহোর থেকে বাবার হাত ধরে কোনরকমে প্রাণ নিয়ে এপারে ওয়াঘা বর্ডার দিয়ে ভারতে ঢুকে পরার গল্প, কখনও গালিব, ইকবাল বা মীর তকি মীরের শের শায়েরি। ওইসময় উনি আমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে রেখে অনেকক্ষণ ধরে বলে যান, আমি কাঠপুতলি হয়ে বসে থাকি।
    কিন্তু অস্বস্তি হয়, কারণ উনি একটা কথাও আমাকে সম্বোধন করে বলেন না। আমি আসলে ওঁর কোন অদৃশ্য অনুপস্থিত শ্রোতার এফিজি! শেষে শাশুড়ি আমাকে এসে উদ্ধার করেন। দিনের বেলা উনি আমার সঙ্গে একটাও কথা বলেন না। ইন ফ্যাক্ট, বড় বাড়ির যে দিকটায় আমি থাকি, সেদিকে আসেনই না। আমাকে কিছু বলতে হলে ভায়া মিডিয়া, মানে শাশুড়ির মারফতে জানিয়ে দেন।
    কিন্তু আমি যে ওনাকে বাবা বলে ডাকতে চাই , আবদার করতে চাই, মাঝে মধ্যে ঝগড়া করতে চাই ।
    ওর গলা ভিজে ওঠে।
    সেরেনা উঠে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে, রুমাল দিয়ে ওর চোখ মুছিয়ে দেয়। বলে—আমি একটা সলাহ দিই, ভেবে দেখ।
    বল।
    তুই নিজে থেকে ওঁকে ফোন করে বল—তুই ওঁকে খুব মিস করছিস; জেনে নে ওঁর জন্মদিন কবে? বলে দে তুই বাড়ি ফিরে ওঁর জন্মদিন ধূমধাম করে সেলিব্রেট করতে চাস।
    পরের দিন ক্লাসরুমে তুলকালাম। সেরেনার টোটকা কাজ করে নি। অদিতির শ্বশুর ওর কাঁপা কাঁপা গলায় হুড়মুড়িয়ে এক নিঃশ্বাসে বলা দুটো লাইন শুনেই ফোন কেটে দিয়েছেন।
    সবাই বলল যে সেরেনার পাকামি করা ঠিক হয় নি। এতে ভাল করতে গিয়ে মন্দ হতে পারে। ও কি নিজেকে নিধিম্যামের মত ট্রেইন্ড এন্ড সার্টিফায়েড বিহেভি্যারিস্ট ভাবছে নাকি? অদিতিকেই ওর সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। হুড়ুম-দুড়ুম করে এসব হয় না।
    সেরেনা দমে যাওয়া গলায় বলল — আমি তো শুধু সাজেশন দিয়েছিলাম।
    সবাইকে অবাক করে এগিয়ে এল অদিতি নিজে। বলল সেরেনা কোন ভুল করে নি। এই গ্রুপ এক্সারসাইজে ও নিষ্ঠার সঙ্গে কন্ট্রিবিউট করছে, একটা চেষ্টা করেছে। ভালই তো! আমাকে আরও ভাবতে হবে।
    কথা শুরু হয়। কাল শেষ। আজ রাত্তিরে ক্যাম্প ফায়ার। অদ্যই শেষ রজনী।
    গঙ্গারাম নিধিকে ধরে।
    রাস্তার ধ্বস তো মেরাম্মত হয়ে গেছে? না, হয় নি। ফলে ট্যাক্সি দু'কিলোমিটার দূরে খাদের ধারে ধ্বসের ওপার অব্দি আসবে। কিন্তু দু'কিলোমিটার মাল টেনে নিয়ে যাওয়া? মেয়েদের জন্যে? মাল বওয়ার কুলি পাওয়া যায়। নাম লেখান, গাড়ি ও কুলি দুই আসবে।
    আর ক্যাম্প- ফায়ারের জন্যে চারটি আলাদা গ্রুপকেই আধঘন্টা করে সময় দেয়া হবে, গান-নাচ-কবিতা- স্কিট কিছু না কিছু করতেই হবে। আজ রাত্তিরে খাওয়াদাওয়ার পর বারান্দায় রিহার্সাল।
    ফক্কুড়ি-স্বভাবের গঙ্গারাম পরামর্শ দেয় যে অন্যান্য প্রোগ্রামের শেষে ছয় দশক আগের হিট বলিউডি ফিল্মি গান ‘নজর লাগি রাজা তোরে বাংলো পর’' কোরাসে গাওয়া হোক, সেরেনা লীড করবে আর অন্যেরা নাচবে। -- দেখ্‌না, একদম ভব্বর মচ্‌ যায়েগা!
    কি আশ্চর্য, এই ফক্কুড়ি প্রস্তাবটি সবাই স্বীকার করে নেয় এক শর্তে,-- শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢোকা গঙ্গারামকে ঠুমকা লাগিয়ে নাচতে হবে আর আজ রাতের রিহার্সালে তার নমুনা পেশ করতে হবে।

    -- এক বাত শুনিয়ে!
    সবাই চমকে তাকায়। দাঁড়িয়ে উঠেছে সুরেশ, উত্তেজনায় একটু যেন বেঁকে আছে।
    -- আপনারা আমাকে নিয়ে বিব্রত আমি বুঝতে পারছি। আমি কি করব, আমি এখানে সবার সঙ্গে আছি কিন্তু মন পড়ে আছে ভোপালে এককামরার একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে আমার অপেক্ষায় থাকা মায়ের জন্যে। আমি আপনাদের সঙ্গে কি শেয়ার করবো?
    আমার বাবা ছোটবেলায় মাকে ছেড়ে চলে গেছে, কোন দায়িত্ব নেয়নি। পড়াশুনোয় ভালই ছিলাম। কিন্তু মা আমাকে ভাল কলেজে পড়াতে পারেনি। ছবিতোলা নিজে-নিজেই শিখেছি। এখন সামান্য মাসোহারায় এন জি ও তে কাজ করি, মা আর আমি থাকি। আপনাদের কিছু মিথ্যে বলেছিলাম।
    বস্তারে আমার পিসতুতো দাদা থাকেন, একবারই গিয়েছিলাম। অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম, কিছুই হয় নি। তবু যখন কাজের পরে মাঝরাত্তিরে বা ভোরবেলায় বাড়ি ফিরি মা এসে ভাত গরম করে বেড়ে দেয়। হাসিমুখে আমার গল্প শোনে, নিজের গল্প বলে, তখন আমার আর কোন দুঃখ থাকে না।
    তাই আমি দিন গুণছি কখন ভোপাল ফিরব।
    এবার ওর গলা ভেঙে যায়, রুমাল বের করে চোখ মোছে। সেরেনা এগিয়ে আসে,-- কাম অন্‌ সুরেশ! ডোন্ট স্ট্যান্ড অন সেরিমনি, আই লাইক টু গিভ এ হাগ!
    ঘরের আর এক কোণ থেকে শ্লথ পায়ে সুরেশ এগিয়ে আসে, অন্যেরা পথ ছেড়ে দেয়। রোগাপাতলা তেলেগু সুরেশ আর দশাসই সেরেনা আলিঙ্গনাবদ্ধ।
    কিন্তু ভেতো বাঙালী গঙ্গারাম দাস কিছুই দেখতে পায় না। ওর ঝাপসা চোখের পর্দায় ভেসে উঠেছে অন্য একটি পুরনো বাতিল চলচিত্র।

    সিকোয়েন্স - এক,
    বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনের হস্টেল থেকে টেন পাস হওয়া গঙ্গারাম দাসকে টিসি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ভর্তি হতে হবে পাড়ার নাকতলা হাই স্কুলে।
    রোববারের সকাল। মা ডাকছে -- ওঠ, উইঠ্যা পড়। পড়তে বস্‌। সাতদিন পর তর অ্যাডমিশন টেস্ট। পড়বি না? সকাল আটটা বাজে যে!
    গঙ্গারাম পাশ ফিরে লেপ টেনে নেয়। কোন শালা পড়ে! আজ যে রোববার। মেট্রো সিনেমায় সোফিয়া লোরেন আর জর্জ পেপার্ডের বই " অপারেশন ক্রসবো'' দেখতে হবে পঁয়তাল্লিশ পয়সার টিকিটে। সাড়ে দশটায় মেট্রো সিনেমায় গেলেই হবে।

    সিকোয়েন্স - দুই,
    সত্তরের দশকের গোড়ায় গঙ্গারাম দাস বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। ভিলাই থেকে মা-বাবা আসার খবর পেয়ে দেখা করে জানিয়ে দেয় সে বাড়ি ফিরবে না আর। সার জেনে গেছে -এ ই ব্যবস্থায় যে যত পড়ে সে তত মুর্খ হয়!
    ক্রুদ্ধ বাবার মুখ আর কাঁদতে কাঁদতে ফিট হওয়া মায়ের মন্তাজ ওকে তাড়া করে বেড়ায়।

    সিকোয়েন্স - তিন,
    ভিলাইয়ের বড় ডাক্তার জানিয়েছেন যে ওর দুই ফুসফুসেই চাঁদের পাহাড়ের ছবি। যক্ষ্মার অ্যাডভান্সড স্টেজ। ওষুধের সঙ্গে ভগবানের কাছে প্রার্থনা ও দরকার। কাঠের পুতুলের মত ভাবলেশহীন মুখে সারাদিন ওষুধ-পথ্য দিয়ে যান মা। ঘড়ির কাঁটা ধরে।
    মাঝরাতে উঠে বাথরুম যাওয়ার সময় ও শুনতে পায় পাশের অন্ধকার ঘরে চাপা কান্নার শব্দ।

    সিকোয়েন্স - চার,
    মায়ের গনগনে চেহারা।
    -- একটা কথা বলতে চাই। আমাদের ভাড়াটে অল্পবয়সী বউটি আমাদের আশ্রিত। ওর সম্মানের দায়িত্ব আমাদের। ও যখন পাঁচিলের ওপাশে চান করে তুই উঁকিঝুঁকি মারিস কেন? তোর লজ্জা করে না? আমার করে।

    সিকোয়েন্স - পাঁচ,
    গঙ্গারাম ফিরেছে ব্যাংক থেকে ট্রেন ধরে।
    হাতমুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে কম্পু খুলে বসবে- ফেসবুকে ওর গ্রুপে কি হচ্ছে!
    -- কী রে , আজ যেন দেরী হল? ট্রেন লেট ছিল?
    -- না, রোজ তো এই সময়ই ফিরি।
    --রাগ করিস না, আমি আজকাল কানেও কম শুনি, চোখেও ছানি পড়েছে। কী বলতে কী বলে ফেলি, আমার ওপর রাগ করিস না।

    চটকা ভাঙে নিধির কথা য়-- আরে দাসজী! আপ কা ক্যা হুয়া?

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • NRO | 165.124.84.35 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:৩৯537480
  • Strange! বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন hostel? কোন সাল ? অলোক মহারাজ এর সময়? 
  • স্বাতী রায় | 117.194.35.202 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:৪৪537481
  • সদাশিবন অমনই রয়ে গেলেন শেষ অবধি?
  • kk | 172.58.244.82 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:৩৪537482
  • "সাহস নেই। শুধু যে দেখাতে চায় না তাই নয়, জানতেও চায় না। অন্যের আয়নায় নিজের চেহারা দেখার সাহস নেই, নিজের সম্বন্ধে একটা মনগড়া ধারণাকে বেলুনের মতন ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আত্মতৃপ্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়।"
     
    এইটা খুব সত্যি কথা। আমাদের সবার ক্ষেত্রেই। অন্তত ৯০% লোকের ক্ষেত্রে তো বটেই। "অন্যের আয়নায়" কেন, নিজের আয়নাতেও কেউ নিজের সম্পূর্ণ রূপ দেখতে চায়না। পাছে কোনো বন্ধ কলসীর মুখ খুলে গিয়ে বিকট মাকড়শা, অজগর সাপ বেরিয়ে আসে!
  • রঞ্জন | 2401:4900:40ff:8a1b:0:30:e1fd:ea01 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩০537486
  • @NRO 
     
    ১৯৬১ --১৯৬৫ ।
     
    ৬১-৬২  নিরন্তরানন্দ, ন'দা , 
    ১৯৬২-১৯৬৪ শান্তিনাথানন্দ , রামকানাইদা
    ১৯৬৪-৬৫  নির্জরানন্দ, মোহিত মহারাজ
     
    ওই কয় বছর ছোট মহারাজ ছিলেন--- অনিলদা,  আপ্তানন্দ। 
  • রঞ্জন | 2401:4900:40ff:8a1b:0:30:e1fd:ea01 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৯537488
  • স্বাতী
    সদাশিবনের অকপট বক্তব্য:
    1 আমার  কোন আগ্রহ নেই।
    2 কোম্পানি ফীস দিয়ে জোর করে পাঠিয়েছে, তো আমি কী করব?
    টাইম পাস করে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাব,ব্যস।
  • NRO | 165.124.84.35 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:২৭537506
  • রঞ্জন , It's a small world! আমি আপনার অনেক পরে। তবে আমাদের সময় স্বামী নির্জরানন্দ হেড ছিলেন। সেই হিসাবে there is a continuity between your time there and mine.

    আপনি আগের এক episode এ tough RK mission hostel experience এর কথা লিখেছিলেন - আমার তখনি মনে হয়ে ছিল বরানগরের কথা কারণ তখন রহড়া পুরুলিয়ার চেয়ে আমাদের টা tougher ছিল। রুটি চুরি করে চিনি দিয়ে খাওয়ার কথা জীবনে ভুলবো না। আর আলুভাতে , সপ্তাহে এক দিন আলুভাতে দিত - এখনো তার স্বাদ মুখে লেগে আছে। অমন আলুভাতে জীবনে আর খাই নি। ঘরে ছ'টা করে বেড। কতো ঝগড়া মারামারি বন্ধুত্ব! 
  • যদুবাবু | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৩৪537534
  • আমিও বরাকৃমি। তবে আপনাদের দুজনের থেকে অনেক ছোটো। ২০০১-এ স্কুল পাশ করেছি। হোস্টেল ততোদিনে উঠে গেছে। আমাদের সময়ে ক্লাস টেন অব্দি ছিল। আমি পুরো দশ বছর-ই ঐ এক-ই স্কুলে। আমাদের হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন বিধানানন্দ। আমরা পাশ করার অল্পদিন পরেই বেশ অল্প বয়সে (৩৯-৪০?) মারা যান। লোক হয়তো খুব খারাপ ছিলেন না, তবে মাঝেমাঝেই ধরে প্রচণ্ড পেটাতেন। 

    যাই হোক, এটা লেখা-বিষয়ক মন্তব্য না। বরাকৃমি দেখে বলে ফেললাম। রঞ্জনদা, লেখা এগোক। পড়ছি। 
  • NRO | 165.124.84.35 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:১০537535
  • Actually, আমি বরানগরেরই লোক। বাড়িটা এখনো রেখেছি। 
  • kk | 172.58.242.128 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৫৯537536
  • ইশ, বরাকৃমিটা কী রকম টিনিয়া সোলিয়ামের মত শোনাচ্ছে sad
  • রঞ্জন | 125.21.186.238 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৫:১০537537
  • NRO
    আপনি বরানগরের ছেলে? তাহলে ডে-স্কলার না হয়ে হোস্টেলবাসী কেন?
    আমরা অবশ্য ৱাকৃমি না বলে আরকেএমে বলতাম।
     
    আলুভাতে মানে সেদ্ধ আলু সরষের তেল, নুন, লংকা ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে চটকে একটি গোল্লা বানানো। কখনও কখনও তার সঙ্গে একটু মশলামুড়ির মশলা মেখে দেয়া।
    আৱ একটা হল মিষ্টিকুমড়ো ভাতে। সরষে তেল নুন লংকাকুচি মাখা, তবে গোল্লা নয়, থ্যাপথেপে।
    গামলা থেকে এক হাতা তুলে পাতে থপ্ করে ফেলে দেয়া।
    ও দুটোর কোন একটা পেলে এখনও একথালা ভাত উঠে যায়।
    আর চার পাঁচ রকম জলখাবারের মধ্যে একটা ছিল ঘি চিনি মুড়ি, আমরা বলতাম-- ঘিচকে মুড়ি। বেড়ে লাগত।  তবে ওটা ঘি নয়, ডালডা ছিল। আজকে খেলে অম্বল হবে। তখন লোহা হজম করার বয়েস।
    লোফ গিয়ে চার পিস মিল্ক ব্রেড এল,  ডালডা চিনি মাখা।
    আমরা তখন সিনিয়র,  মানে ক্লাস নাইন। ওই ব্রেড রান্নাঘরে নিয়ে চিমটে দিয়ে উনুনের উপর ধরলে চিনি ক্যারামেল হত।
  • NRO | 165.124.84.35 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৫:৪৭537538
  • না না , ওটা সত্যি করে ঘি ছিল। আমার মনে আছে। In fact একাদশীর দিন যাদের পৈতে হয়ে গেছে তারা খাঁটি ঘিয়ে ভাজা লুচি পেত। আর ওই আলুভাতে তে শুকনো লঙ্কা ভাজা থাকতো। গরম ডাল দিয়ে খেতে এতো ভালো লাগতো। আমি অনেক চেষ্টা করেও ওটার মতো করতে পারিনি আজও। মিষ্টিকুমড়ো ভাতের কথা মনে নেই। স্নান করার আগে মাখার সর্ষের তেল টাও আসলে ছিলো। আমি আবার প্রেয়ার ​​​​​​​রুম এ ​​​​​​​স্বেচ্ছা ​​​​​​​সেবক হয়ে ​​​​​​​সন্ধেবেলা ​​​​​​​খণ্ডন ভব প্রার্থনার পর ​​​​​​​এক আধটু ​​​​​​​পেসাদ পেতাম। 
     
    আমি বোধহয় বিগড়ে যাচ্ছিলাম তাই সিধে করার জন্যে হোস্টেল পাঠানো। ভাগ্গিস! 
  • রঞ্জন | 125.21.186.238 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:২৩537539
  • ইয়েস,  শুকনো লংকা ভাজা।
    আর কুমড়ো ভাতেটা বোধ হয় মেদিনীপুরের পাচক পঞ্চাদার অবদান।
    ওরা ডিংলা (কুমড়ো) বলতে পাগল।
     
    আপনি কি এনাদের দেখা পেয়েছিলেন?
    প্রেয়ার হলে পাখোয়াজ বাদক নগেশদা -- সম্পূর্ণ  অন্ধ।
    বেহালাবাদক প্রেমবাবু স্যার।
    ভলিবল কোচ গোষ্ঠদা,, নাটকের পরিচালক।  কাশীপুর গানসেলে কাজ করতেন।
     
    আমি প্লেয়ার হলে খঞ্জনী বাজাতাম।
    তবে  রামকানাই মহারাজ চলে যাবার পর আমাদের কালীকীর্তনের দল ও ব্যাণ্ড পার্টি ভেঙে গেল। পরে যাঁরা এলেন তাঁদের বেসুরো বললে কম বলা হয়।
    মোহিত মহারাজ,  কেশব মহারাজ, অনিলদা সবাই। 
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন