এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • যে আঁধার আলোর অধিকঃ পর্ব ২

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৪ আগস্ট ২০২৪ | ৩১৯ বার পঠিত
  • যে আঁধার আলোর অধিক
    প্রথম ভাগ

    বেসিক হিউম্যান ল্যাব

    এক
    ----

    ট্রেন একটা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অনেকক্ষণ থেমে আছে। কিন্তু গঙ্গারামের চোখে যেন আঠা লেগে আছে, খুলতেই চাইছে না। এসি-থ্রির কোমল ঠান্ডায় শেষরাতের জম্পেশ ঘুম আর কি কি সব আহ্লাদী স্বপ্ন!

    ও আরেকবার কম্বলটা ভাল করে টেনে নিল। কিন্তু কামরার মধ্যে আলো বড় বেশি, আর লোকজনের কথাবার্তা যেন বেড়েই চলেছে। এই সাতসকালে কেন যে লোকে এত কথা বলে!

    নাঃ, এত শব্দদূষণের মধ্যে ঘুমোয় কার সাধ্যি! এবার আধশোয়া অবস্থায় একটু মাথা তুলে সামনের বার্থের ইয়ং ছেলেটিকে জিগ্যেস করলো --- ভাইজি, ইয়ে কৌন সা স্টেশন হ্যায়?
    -- দেহরাদুন, আংকল। আপ উতরোগে নেহি ক্যা? গাড়ি তো আগে নেহি যায়েগী। উঠিয়ে, সুটকেস প্যাক কীজিয়ে। করীব বিশ মিনিট হো গয়া।
    অ্যাঁ, ছোকরা বলে কি! দেহরাদুন এসে গেছে। ও তাড়াতাড়ি সুটকেস গুছিয়ে নেয়। কাঁধে তোলে একটি ব্যাগ, আর প্ল্যাটফর্মে নেমে পড়ে।

    সকাল ছ'টা বাজে, আগস্ট মাসের ময়লা আকাশ, টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। এই দেহরাদুন স্টেশন?
    -- আংকল, আপ মেরে সাথ চলিয়ে। আপ ভী মুসৌরি যায়েংগে না?

    অগত্যা গঙ্গারাম ঘুমচোখে একটি অ্যামবাসাডরে গিয়ে বসে। ট্যাক্সিটি রোজকার বিভিন্ন খবরের কাগজ এখান থেকে তুলে মুসৌরিতে ডিলারের কাছে পৌঁছে দেয়। পথে ফুরনে কিছু পকেট মানি কামিয়ে নেয়।

    সামনে ড্রাইভারের পাশে একজন মহিলা টিচার, মুসৌরিতে কোন স্কুলে পড়ান ও সেই সহযাত্রী যুবক। পেছনের সীটে ঠাসাঠাসি করে ও, এবং এক নিউজিল্যান্ডবাসী ডাক্তারদম্পতি। মুসৌরিতে কোন ক্রিশ্চিয়ান চ্যারিটেবল হাসপাতালে দু'বছরের জন্যে করসেবা করতে এসেছেন।

    ওরা মাঝবয়সী, কথায় কথায় জানালেন যে সাতবছরের ছোটবাচ্চাকে দিদিমার কাছে রেখে এসেছেন; কিন্তু মায়ের মন একটু কাঁদো-কাঁদো।

    ট্যাক্সি এবার শহর ছেড়ে পাকদন্ডী পথ ধরে মুসৌরির রাস্তায় উঠতে শুরু করলো।

    এখানে ও এসেছিল প্রায় বত্রিশ বছর আগে, চাকরি জীবনের শুরুতে, স্টেট ব্যাংকের ট্রেনিং সেন্টারে। সেইসময় আটসপ্তাহ ট্রেনিংয়ের ফাঁকে ওরা প্রতি রোববার মুসৌরি যেত ঘুরতে।
    আর কিমাশ্চর্যমতঃপরম্!
    আজ চাকরিজীবনের সায়াহ্নে ও আর এক ট্রেনিং করতে যাচ্ছে মুসৌরির কাছে কেমটি ভিলেজে, অবশ্য এটি ব্যাংকের ট্রেনিং নয়।

    গাড়ির মধ্যে সবাই কথা বলছে। ও জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি আর মেলাতে চেষ্টা করছে ফিকে হয়ে আসা পুরনো ছবিগুলোর সঙ্গে বর্তমানকে।
    নাঃ দেহরাদুন হারিয়ে ফেলেছে তার প্রিস্টাইন বিউটি। উত্তরাঞ্চলের রাজধানীটি এখন অনেক ঘিঞ্জি।

    সেই ঘন্টাঘর চৌক, বাজার আর রাস্তায় পথচলতি হাসিখুশি তরুণীর দল! যাদের জন্যে ছত্তিশগড় থেকে আসা সঙ্গীরা এই রাস্তাটির নাম দিয়েছিল-- বুকের ধুকধুকি বা খালিশ হিন্দিতে " দিল ধড়কন্‌ রোড্‌''।
    কোথায় সেসব?
    আজ এ তো হিন্দিবলয়ের যে কোন শহরের প্যাটার্ণে গড়ে ওঠা আইডেন্টিটিবিহীন এক জনপদ!
    মরুকগে, মুসৌরিতে গেলে নিশ্চয়ই এই একঘেয়েমির বাইরে কিছু পাওয়া যাবে।

    হ্যাঁ, পাকদন্ডী রাস্তাটি আগের মতই, কিন্তু জঙ্গল একটু ফিকে, বেশ কয়েকটি হোটেল আর রেসিডেনশিয়াল স্কুল গড়ে উঠেছে যে!
    বৃষ্টির ছাঁট আসছে, ও কাঁচ তুলে দিয়ে সহযাত্রীদের দিকে ফেরে।

    প্রায় সবাই ঢুলছে, এর মাথা ওর কাঁধে, খালি ড্রাইভার জেগে। একটু পরে পরেই আসছে শার্প টার্ন, ওর হাতে স্টিয়ারিং সমানে ঘুরছে।
    গঙ্গারাম জেগে থাকবে, খালি ড্রাইভারের একা জেগে থাকা ঠিক নয়। যদি কিছু হয়ে যায়?
    কিন্তু মুখভার করা মেঘলা সকালের ঠান্ডি-ঠান্ডি-হাওয়ায় কখন যে চোখ জুড়ে আসে!

    ও এবার পৌঁছে গেছে ছোটবেলায়, স্বপ্নে দেখছে কয়েক দশক আগের একটি বহু পুরনো ঘটনাকে।

    ক্লাস ফোরে পড়ার সময় কালীপূজোর ঠিক আগে কাকামণি দু'ভাইকে নিয়ে ভিলাইয়ে ওদের বাবা-মা'র কাছে যাচ্ছেন। সিটিং রিজার্ভেশন পাওয়া গেছে বম্বে মেলের সেকেন্ড ক্লাসে। লম্বা গদি আঁটা বেঞ্চিতে কাকার পাশে বসে ও দেখছে উল্টো দিকে বসা এক কোঁকড়ানো চুল গাউন পরা মেমসায়েবকে।
    ওর মাথায় খেলছে এক উদ্ভট চিন্তা।

    গাউনের নীচে মেসায়েবের দুটো স্তন, নাকি চারটে? গরুর যদি চারটে হয়, ছাগলের দুটো, তবে বাঙালী মেয়েদের দুটো হলেও মেমসায়েবদের কেন চারটে হতে পারে না!
    কাকে জিগ্যেস করা যায়? ধ্যেৎ, কি সব উল্টোপাল্টা চিন্তা! বাড়িতে জানতে পারলে মেরে পিঠের ছাল তুলে নেবে।
    মাথাটা ঠুকে গেল সামনের সীটে। বাঁকের মুখে গাড়ি হেব্বি ব্রেক মেরেছে।

    -- নামুন সবাই,মুসৌরির লাইব্রেরি চৌক এসে গেছে। গাড়ি আর আগে যাবে না। ভাড়াটা তাড়াতাড়ি দিন।

    সেই নিউজিল্যান্ডবাসী ডাক্তারদম্পতি গঙ্গারামকে বললেন-- দরজাটা খুলুন আর একটু তাড়াতাড়ি করুন, গাড়ির ছাদ থেকে আমাদের কিছু জিনিস নামাতে হবে।

    দুইঃ

    চোখ কচলে গঙ্গারাম দেখতে পেল ছোট একটা স্কোয়ার মতন। গান্ধীজির স্ট্যাচু, মিউনিসিপ্যাল লাইব্রেরি, সারি সারি দোকান। বত্রিশ বছর আগে এ জায়গাটা পুরো ফাঁকা ছিল। সামনে তাকালে সোজা হিমালয় দেখা যেত। টিপ টিপ বৃষ্টি একটু বেড়েছে। অধিকাংশ দোকান খোলেনি।

    একটা চায়ের দোকানে মাত্র ঝাঁটপাট শুরু হয়েছে। আর বন্ধ দোকানগুলোর সামনে গুলতানি করছে বর্ষাতি পরা জনাকয়েক ট্যাক্সিওলা।
    ওরা জানালো কেম্পটি ফলস্‌ এখান থেকে ১৬ কিলোমিটার আর কেমটিগ্রাম সেখান থেকে আরও তিন কিলো মিটার। ভাড়া? এই সাতশো টাকা দেবেন, অন্ততঃ পাঁচশ', তার কমে হবে না। আর নইলে দেহরাদুন থেকে বাস আসছে , এই লাইব্রেরির সামনে দাঁড়াবে।
    আধঘন্টায় পৌঁছে যাবেন। তার পর তিনকিলোমিটার হন্টন।

    ছাঁটে ভিজে যাবেন, স্যার। বারান্দায় উঠে দাঁড়ান, নয়তো ওই চায়ের দোকানে গিয়ে বসুন। অন্ততঃ আধঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
    গঙ্গারাম ব্যাগ থেকে একটি উইন্ডচিটার বের করে গায়ে চাপাল।
    হ্যাঁ, এবার চা খাওয়া যেতে পারে।

    কিন্তু তলপেটে চাপ বাড়ছে যে! এখন সকাল আটটা। চা খেতে খেতে ঝারি করা যাক।

    স্কুটারে করে অল্পবয়সী বাবা নিয়ে আসছে হামপ্টি-ডাম্পটি বাচ্চাকে, দোকানের বারান্দায় উঠে অপেক্ষা করছে , তারপর হলদেরঙা স্কুলের বাস এলে চেপে বসে হাত নাড়ছে বাচ্চাটি।
    আর স্কুটি চেপে বৃষ্টিকে ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখিয়ে হুশ্‌ করে বেড়িয়ে যাচ্ছে তরতাজা পুঁইয়ের লতা। বেলা বাড়ছে, হাওয়ার গতি কমছে।
    এবার সিগ্রেট ফুঁকতে ফুঁকতে আসছে "হম তো মুহব্বত করেগা'' নিমের চারা।

    গঙ্গারাম জানতে পারলো উদ্দিষ্ট বাসটি আসার সময় হয়ে এসেছে, পাকদন্ডী বেয়ে ওপরে উঠতে থাকা বাসটি এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে।
    কিন্তু নির্ধারিত বাসস্টপে নেমে হাঁটতে হবে তিন কিলোমিটার? এই গরম জামাকাপড়-বইপত্তর ইত্যাদি ভরা ধামসা স্যুটকেস আর ব্যাগ টানতে টানতে? আবার তলপেটে চাপ।

    যাকগে, ঠেলে ঠুলে বাসে উঠে সীটের পাশে স্যুটকেস রেখে বসতেই কন্ডাক্টর খেঁকিয়ে উঠলো।
    --- আপনার স্যুটকেস প্যাসেজে রাস্তা আটকে রেখেছে, বলি যাবেন কোথায় কাকাজী?
    --- এই ষোলো কিলো মিটার দূরে, একটি গ্রাম আছে, একটা স্কুল আছে। বাস ওখানে থামবে?
    --- একটা চুঙ্গিকর দেয়ার ব্যারিয়ার আছে, তারপরের স্টপে নামবেন। তারপর জিগ্যেস করলেই লোকে হাঁটা পথ দেখিয়ে দেবে’খন।

    একদম পেছনের সীটের কোণায় দুইযাত্রী ফিসফিস করছিলো। তাদের একজন এগিয়ে এসে কাঁধে টোকা দিয়ে জিগ্যেস করলো -- আপভী " আইস্যাবস্‌'' কী ট্রেনিংমেঁ?
    --- মতলব?
    --- হমলোগ ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর অ্যাপ্লাইড্‌ বিহেভিরিয়াল সায়েন্স কী একহপ্তাওয়ালে ট্রেনিংমেঁ জা রহে হেঁ। ওহি কেমপ্টি গ্রাম, ওহি আলোক গুপ্তাজী কী একস্পেরিমেন্টাল স্কুল মেঁ। শোচা --- আপ ভী শায়দ উসী মেঁ, তো একসাথ হো জায়েঙ্গে।
    ও থতমত হয়ে ব্যাগের থেকে চিঠিটি বের করে দ্যাখে, তারপর সম্মতিসূচক মাথা নাড়ে।

    বাঁকের মুখে নেমে পড়ে দেখা গেল বড় বড় পাথরের গায়ে একটি রেস্টুরেন্ট, তাতে কোল্ডড্রিংকস, স্ন্যাকস্‌। আর চারদিক ভোঁ-ভাঁ। সামনে টিলার ওপর একটু দূরে একটি বাড়ির ইশারা, পাকদন্ডী পথ বেয়ে উঠতে হবে।
    দু-একজনকে জিগ্যেস করে কিছুই বোঝা গেল না।

    নতুন সঙ্গীরা আসছেন রাজস্থান থেকে, একই এন জি ও’তে দুজনে কাজ করেন।
    বয়স্ক গাঁট্টাগোট্টা লোকটি আবদুল্লা আর ইয়ং লম্বা ছেলেটি কৈলাশ। দেখা গেল ওদের রিলায়েন্স মোবাইল নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না।
    গঙ্গারাম দাস দিল্লিতে নিজের মেন্টরকে ফোন করে জানতে পারলো ওপরে একটি স্কুল আছে বটে, কিন্তু ট্রেনিংয়ের জায়গা হল দু-কিলোমিটার দূরের নীচের স্কুল। কন্ট্যাক্ট পার্সন হরজিন্দরের মোবাইল নম্বরে চেষ্টা করেও কোন সাড়া পাওয়া গেল না।

    অল্পবয়সী সঙ্গীটি বল্লো- আপনারা দোকানে বসে চিপস্‌ আর কফি খান, আমি একটু খোঁজখবর করে দেখি।

    ছেলেটি একটু পরে ফিরে এসে বল্লো -- চলুন, এই বৃষ্টিতে আর অপেক্ষা করে লাভ নেই। সবাই বল্লো নীচে যে পাকা রাস্তাটা নেমে গেছে সেটা সোজা কিন্তু অনেক লম্বা, আর কাল নাকি দেড় কিলোমিটার আগে ধ্বস নেমেছে, রাস্তা বন্ধ। ফলে কোন ট্যাক্সি-ম্যাক্সি কিছুই পাওয়া যাবে না।
    তার চেয়ে উপরবাগে চড়াই রাস্তাটা ধরি, ওটা শর্টকাট, তবে একটু এবড়োখেবড়ো। চলুন হাঁটা শুরু করি। কথা বলতে বলতে পৌঁছে যাবো।

    গঙ্গারাম ওদের দুজনের দিকে তাকায়। দুজনের কাঁধে একটি করে এয়ার ব্যাগ আর আবদুল্লার কাঁধে একটি শান্তিনিকেতনী কাপড়ের ঝোলা। এন জি ও কর্মীই বটেন!
    ইদিকে গঙ্গারাম মহা আলসে বলে ছ'জোড় মোজা, গেঞ্জী,রুমাল,জাঙ্গিয়া, শার্টপ্যান্ট গরম কাপড় সব নিয়ে এসেছে।
    আবদুল্লার পরনের খাদির পায়জামা-পাঞ্জাবী বৃষ্টিতে ভিজে গায়ের সঙ্গে লেপ্টে গিয়েছে, ক্লীন শেভ করা মুখে অমায়িক হাসি, কৈলাসের পরণে জিনসের প্যান্ট আর জ্যাকেট।

    এখন চলা শুরু হল। কিন্তু চাকাওলা স্যুটকেস এবড়োখেবড়ো চড়াইয়ের রাস্তায় কাঁহাতক টানা যাবে, তিন কিলোমিটার?

    হে ঈশ্বর! আমার ঈশ্বর! তুমি কেন আমাকে ত্যাগ করিয়াছ? আমার যে নিজের কৃতকর্মের ক্রুশকাষ্ঠ বহন করিবার ক্ষমতা নাই। এই কঠিন রাস্তায় গাড়ি পাঠাও নাই ক্যানে? নাইবা যদি পাঠাইলে আমাকে এমন বাসবদত্তা-আম্রপালী সদৃশ কোমল ছোট করপল্লব দিলে কেন?
    এই বয়সে মোট বহিবার শক্তি হারাইয়াছি, অন্ততঃ একজন বাহক দাও।

    নাঃ, ঈশ্বর পুরোপুরি ত্যাগ করেন নাই। তিনকদম চলিতেই কৈলাশ আসিয়া স্যুটকেস ছিনাইয়া লইল।
    -- আংকল, আপ বুজুর্গ হ্যাঁয়। এ ভারী সামান ম্যায় লে জাউঁগা।
    গঙ্গারাম ন্যাকামি করে দুর্বল বাধা দ্যায়।
    ছেলেটি বলে — দাদা, সংকোচ করবেন না, আমার অভ্যেস আছে। জিমে যাওয়া শরীর, আর অনেক ট্রেকিং করেছি, আসামের পাহাড়ে।

    চলা শুরু হয়। ওপরে খানিক সমতল- এবড়োখেবড়োর পর শুরু হল উঁচুনীচু -এবড়োখেবড়ো। এই ঠান্ডার মধ্যেও গঙ্গারামের সারা শরীর ঘামে ভিজে জবজবে। হাঁপানিতে অভ্যস্ত বুক হাপরের মত ওঠানামা করছে।
    বাড়িঘর শেষ। আরেকটু উঠলেই মস্ত বড় স্কুলঘর, বাগান, খেলার মাঠ দেখা যাচ্ছে।

    আ গয়ী, আ গয়ী মেরি মঞ্জিল।
    না, তত দূর তো নয়। লোকে খামোখা কনফিউজড্‌ হয়। এটুকু পরিশ্রম তো প্রভূর কৃপা!
    সুখে আমায় রাখবে ক্যানো-ও-ও, রাখ তোমার কোলে।

    কিন্তু স্কুলে তো প্রেয়ার হচ্ছে। তাহলে ট্রেনিং ক্যাম্প কোথায় হবে, ওপাশের বড় বিল্ডিংটায় কি?
    একজন আয়া আসছে, বাগানের মধ্যে দিয়ে।

    --- আপনারা ভুল বুঝেছেন। এটা আমাদের মেইন স্কুল। আপনাদের ট্রেনিংস্থল হল দুই কিলোমিটার নীচে আমাদের এক্সপেরিমেন্টাল স্কুল ভবনে।

    উৎসাহের বেলুনে কেউ আলপিন ফুটিয়ে দিয়েছে।

    --- বুঝলাম, নামার রাস্তা কোথায়? আর কতক্ষণ লাগবে?
    --- এখানে অমন কোন রাস্তা নেই। লোকজনের যাতায়াত হয় না। খালি আমরা স্কুল ও হোস্টেলের স্টাফরাই যাতায়াত করি। কাজেই ঐ যে বোল্ডারের আড়ালে একটু পাকদন্ডি পায়েচলা হাঁটার ফাঁকমত দেখা যাচ্ছে, ওটাই।সাধারণতঃ আধঘন্টা লাগে, কিন্তু আজ বৃষ্টিভেজা পেছল পথ, সাবধানে নামবেন। ঘন্টাখানেক লাগবে।

    এবার বোল্ডারের ওপর বসে তিনজনের মিটিং হয়।
    --- দাদা, আপনি হরজিন্দরকে ফোন লাগান। ও লোক পাঠাক।

    ঈশ্বর আছেন, এবার ফোন লাগলো।
    --- আমি তো লোক পাঠিয়েছি, সে বাসরাস্তায় ওই কোল্ডড্রিংকসের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে।
    --- কি যা তা বকছেন! আমরা তো ওখান থেকেই আসছি, এখন একনম্বর স্কুলের শেষে পাহাড়ের ওপরে।
    --- আপনারা তাড়াহুড়ো করেছেন। সাতসকালে অমন না করলেও পারতেন। আরও চল্লিশ জন আসবে। তাই ওখান থেকে গাইড সরাতে পারবো না। আপনারা সোজা পাকদন্ডী ধরে সাবধানে নীচে নামুন। কালকেও ধ্বস নেমেছে। সাবধানের মার নেই।

    চলা শুরু হয়। ভয়ানক পেছল পথ, অনেকটা খাড়া নেমেছে, তায় বৃষ্টি হয়ে কাদা। পা হড়কাচ্ছে। ভয়ে ওর পেছন দিয়ে লালসুতো-নীল্‌সুতো বেরুচ্ছে।
    কৈলাস --- ঘাবড়াবেন না, আমরা আছি। আপনার স্যুটকেস আমি বয়ে নিয়ে যাবো।
    আবদুল্লা --- দাদা, আপনি আমার হাত ধরুন। ঠিক সামলে নেবো। আমাকে দেখে দেখে পা ফেলুন।
    দাসবাবুর মাথা ঝিমঝিম করে।
    এবার কালো পাথরের পাহাড়, পাশ দিয়ে নতুন তৈরি ঝর্ণার মত। এসব তো সিনিমাতেই মানায় ভালো। আর ও জানে যে ও নায়ক হওয়ার জন্যে জন্মায় নি।

    পা হড়কালো। একটু গড়িয়ে গেল খাদের দিকে, কিন্তু ব্রেক লাগলো পাশের গাছের ডাল ধরে, আর আবদুল্লার শক্ত করে ধরা হাতের ছোঁয়ায় অনেক ভরসা।
    হটাৎ বাঁকের মুখে চমক!
    ঝোড়ো হাওয়া আর মেঘলা আকাশের চালচিত্র আলো করে দাঁড়িয়ে দুই যুবতী, নীল আর হলুদ পোশাকে শহুরে ছাপ। তিন সঙ্গীর বুকে বাড়ে চাপ।

    সাধে কি মহাকবি ব্রেখট গাহিয়াছেনঃ
    ‘এই তো দেখুন ফাঁসির আসামী দাঁড়িয়ে,
    লোকটা তো যাবে জীবনের মায়া ছাড়িয়ে,
    সামনে মরণ বাড়িয়ে চরণ থমকে,
    তবুও তাহার বুকের রক্ত গমকে,
    কারণ কি তার?
    মেয়েমানুষ’।

    কাছে গিয়ে গঙ্গারাম অবাক!
    এ কি? এতো দুটো ঝলমলে বাচ্চা মেয়ে! বিশ থেকে পঁচিশের ঘরে।
    এই ঝোড়ো হাওয়া, ঝিরঝিরে বৃষ্টি, কুয়াশা আর পাহাড়ি ঢাল, এখানে এরা কেন? নিশ্চয়ই স্কুলের টিচার, এদেরই জিগ্যেস করা যাক।

    কিন্তু জিগ্যেস করে হাতে রইল পেন্সিল। এরা একই পথের পথিক। রাস্তা খুঁজছে, যাবে সেই ট্রেনিং সেন্টার। গুপ্তাজির অল্টারনেটিভ এডুকেশনের স্কুল এবং হোস্টেল।

    কিন্তু ছ’দিনের আবাসীয় প্রোগ্রাম, আর এত কম লাগেজ!
    না, না, এদের লাগেজ মেন রোড দিয়ে ঘুরপথে অন্যদের সঙ্গে আসছে। এরা দুইবোন অ্যাডভেঞ্চারের লোভে শর্টকাট চড়াই-উৎরাইয়ের পাহাড়ি পথ ধরেছে।
    আরো মজার ব্যাপার -- এরা দিল্লিবাসী বাঙালী, একজনের মাত্র বিয়ে হয়েছে। ওদের দাদু ‘আইস্যাব্‌স’ এর মেম্বার। ওঁর উৎসাহে বাবা এদের আসতে দিয়েছেন।

    এই অবস্থায় গঙ্গারাম নিজস্ব অবতারে দেখা দিলেন। মেয়েদুটির কাকু হয়ে অভয় প্রদান করলেন। আমরা আছি, কোন ভয় নেই।
    আমকে ফলো কর। যে দিকে খাদ সেদিকে না ঘেঁষে যে দিকে গাছপালা বা ঝোপঝাড় সেদিকে চেপে চেপে পা ফেল। ছোট ছোট স্টেপ নাও। ভেজা পথে ছোট ছোট নুড়িতে পা হড়কাতে পারে। সাবধান!

    এই ভাবে প্রতিটি বাঁকে প্রতিটি শার্প কোণ পেরোনোর সময় ওর ধারাবিবরণী চলতে থাকলো। যেন "হাঁসুলী বাঁকের উপকথা''য় পাল্কিকাঁধে বেহারাদের দলের সর্দার বনোয়ারী।
    --- ভাইসব সাবধান! আলপথে নামিলাম।

    শেষে ওর বকবকানিতে বিরক্ত হয়ে মেয়েদুটো বললো --- কাকু, আপনি চিন্তা করবেন না। আমরা দিল্লির মেয়ে, প্রতি বছর পাহাড়ে ট্রেকিং করতে যাই।

    এবার সামনে রাস্তা বাঁক নিয়েছে খুব শার্প অ্যাংগেলে আর অত্যন্ত ন্যারো, পা হড়কালে নিচের খাদে গড়াগড়ি।
    ওর মনে হল - এই কি মহাপ্রস্থানের পথ? বুকটা এবার ধড়াস ধড়াস করছে। হাঁটুতে হাঁটুতে বঙ্গ বাজছে। এই ঠান্ডার মধ্যেও ঘামে গেঞ্জি ভিজে একসা।
    --- দাসজি, একটু পাথরের ওপর বসে জিরিয়ে নিন।
    কৈলাস ওর স্যুটকেস হাতে লটকে নিয়েছে, নইলে ভিজে যাবে, আর কাদা!
    দাস লজ্জা পেল।
    --- কৈলাসভাই, আপ ফিকর ন করোঁ। ইসকো নীচে ফেক দো। বাদ মেঁ নীচে যব পহুঁছেঙ্গে তব কলেক্ট কর লেঙ্গে। সোজা ছুঁড়ে দাও নীচে, আমরা নেমে গিয়ে তুলে নেব'খন।

    ছ'ফিট লম্বা নেপালী যুবক এইসব ন্যাকা কথাকে পাত্তা না দিয়ে হাসে।
    চলা শুরু হয়।
    আরে, উল্টো দিক থেকে উঠে আসছে একজন মানুষ। ওহে, দাঁড়াও! আমরা স্কুল যাবো। হ্যাঁ, হ্যাঁ, লোয়ারভ্যালিতে যেটা।
    আর কতদূর? কাছে? সে তো বুঝলাম, কিন্তু কতক্ষণ? আর কুড়ি মিনিট? বেশ।
    --- কুয়াশা না থাকলে এখান থেকেই দেখতে পেতেন। রাস্তা ঘুরে ঘুরে, তাই কুড়ি মিনিট।

    এবার জেগে উঠলো সাদা রঙের একতলা একটি ছড়ানো ছিটানো বাড়ি। কিছু মুরগী আর ছোট বাচ্চা দৌড়ে বেড়াচ্ছে। যাক্‌, পৌঁছে গেছি। তাহলে এমনতরো ব্যায়ামের পর এবার কুল ডাউনের পালা।

    হরি! হরি! এ হল স্কুলের স্টাফ কোয়ার্টার।
    হস্টেল আরো একধাপ নীচে।
    পাওয়া গেল সাদামাটা ডিজাইনের লম্বাটে এক ডরমিটরি। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।
    অনেক হাঁকাহাঁকি - ডাকাডাকির পর এক্‌জন ঘুমচোখে খাটো হাফপ্যান্ট পরে দরজা খুললেন।

    ও আর বিরক্তি চেপে রাখতে পারে না।
    ঘোড়া বেচে ঘুমুচ্ছিলেন নাকি মশাই, সেই কখন থেকে ---।

    লজ্জা লজ্জা মুখ করে তিনি বল্লেন -- আজ্ঞে, আমিও আপনাদের মত প্রতিভাগী। কুমায়ুন থেকে এসেছি। নীচে দু'কিমি দূরে ধ্বস নেমে রাস্তা আটকে গেছে, তাই ট্যাক্সি ছেড়ে দিয়ে শেষ পথটুকু হেঁটে আসতে হয়েছে। একটু চোখ লেগে গেসলো।

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৪ আগস্ট ২০২৪ | ৩১৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • NRO | 165.124.84.35 | ২৪ আগস্ট ২০২৪ ২৩:৫১536817
  • রঞ্জন বাবু , মন দিয়ে পড়ছি। পাহাড়ি পথে ভ্রমণের বর্ণনাটা আমার কাছে অতটা exciting লাগে নি কিন্তু আপনার comment এ ' আইস্যাবস্‌' জেনে কৌতূহল হচ্ছে। যদি পরের কোনো একটা পর্বে  আইস্যাবস্‌ এবং আপনাদের NGO কর্মদক্ষ সম্বন্ধে বিশদ জানান তবে ভালো হয়। I am a blank slate about them. Auto Motorcycle সারানোর আইডিয়া টা আমার মনে হয় খুব প্রাকটিক্যাল, bright idea. অল্প investment এ doable, demand is good and it can generate self-sustaining cash flow for the members. 
  • Ranjan Roy | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০০:০৮536818
  • NRO
     অনেক ধন্যবাদ। 
    যেহেতু এটা উপন্যাস, এতে কর্মদক্ষ  নিয়ে  লিখতে পারছি না। আপনি আগ্রহী হলে https://www.carmdaksh.org/ তে ক্লিক করে আমাদের মিশন, ভিশন, কাজকর্ম সব নিয়ে তথ্য পেয়ে যাবেন।
      এই লেখাটা অবশ্যই Indian Society for Applied Behavioural Science(ISABS) নিয়ে, বিশেষতঃ  T-group method নিয়ে।
       কিন্তু সেটা আমি ব্যাখ্যা করছি খানিকটা আখ্যান বা নভেলের ভঙ্গিতে। ক্যান্টারবেরি টেলস এর মত এক যাত্রা। নিজের মনের এবং ব্যক্তিত্বের অজানা দিক নিয়ে।
      পাহাড়ি পথে যাত্রাটা কিছু না। আমি অনভ্যস্ত এবং বৃষ্টি পড়ে পেছল বলে ভয় পাচ্ছিলাম। আসল যাত্রা মানস পথে, নানারকম নারী-পুরুষ, তাদের জীবনের ট্রমা পেঁয়াজের খোসার মত খুলে যাওয়া।
    সঙ্গে থাকুন, আপনার ভাল লাগবে। 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০০:৩৩536819
  • আলো অন্ধকারে যাই টা আগে পড়া ছিল না, আজ পড়লাম। অনেক ভাবনার রসদ পেলাম। জানিনা ওই মেথড কতদূর কাজ করে বা আদৌ কতটা সঠিক। কিন্তু চরিত্র গুলো, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক, এসব খুব ভালো লাগল। নতুন ভার্সনটাও পড়ছি।
  • NRO | 165.124.84.35 | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ০১:৫৭536823
  • রঞ্জন বাবু , got your point. আমি তাহলে আপনাকে আর একটি অনুরোধ করব যদি আপনার পক্ষে সম্ভব হয় তাহলে অন্য একটি totally different thread এ NGO experience - pros & cons নিয়ে কিছু লেখেন। আমি নিজে এত দূর থেকে অতি সামান্য কিছু ডলার দেওয়া ছাড়া কোনোদিন কোনো NGO করিনি কিন্তু আমার কিছু বন্ধু বান্ধব নানান ভাবে করেছেন/করছেন। তাঁদের মুখে যা শুনি - mixed reaction.
     
    To name a few countries, Russia, Ukraine, Georgia, Haiti, Pakistan, even in India - those in power are at loggerheads with some NGOs, particularly those who get foreign funding. ওনাদের আপত্তির কারণ ​​​​​​​কিছু NGO নাকি Trojan Horse. Off course, it is perfectly fine even if you don't write anything but, যদি লেখেন, particular এই angle টা ​​​​​​​যদি ​​​​​​​কভার ​​​​​​​করেন ​​​​​​​তো informative হবে।
     
  • শিবাংশু | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ১৩:১৫536835
  • পড়িতেছি, 
    সামান্য হলেও লাইনের লোক তো। 
     
    এবার আখ্যান কিছু বদলাবে কি? 
  • রঞ্জন | 2001:999:70c:2083:ec97:2714:da4a:22fa | ২৫ আগস্ট ২০২৪ ১৫:২৫536836
  • NRO 
    আপনার কথা বুঝেছি।  এনজিও পরিচালন এবং FUND  এর प्रपंच কিভাবে কাউকে धान्दाबाज করে দেয় , এনিয়ে আমার চিন্তা লিখব. 
    আমরা কিভাবে বাঁচার चेष्टा করি,  संक्षेप এ লিখব  आज রাতে. 
     
     
    SHIBANSHU 
    না,  এর পরে আরও একটা  LAB করেছি বটে,  কিন্তু ভ্যালু ADD হয় নি. 
    আমার মজা নানান রকম লোক দেখায়,  তাদের গল্প শোনায়. 
    বরং লেখাটি শেষ হলে আপনি T গ্রুপ मेथड এর  PROS AND CONS নিয়ে লিখুন. 
    আমি এবং অনেকেই উপকৃত হব.
     
    KK বিশেষ করে জানতে চাইছিলেন. 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন