এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • যে আধাঁর আলোর অধিকঃ পর্ব ৪

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ১৮৮ বার পঠিত
  • 7

    এই কি ক্লাসরুম?

    কামরা নম্বর সাতের ভেতর সেঁধিয়ে একবার চোখ বোলানো যাক। মাটিতে গোলাকারে গদি-চাদর-তাকিয়া সহযোগে দশজন ও দুজন ফ্যাসিলিটেটর, একুনে বারো জনের বসার যায়গা। মাঝখানটা খালি। এটির ভেতরে একটি বেডরুম আছে, আপাততঃ তার দরজায় তালা। আর আছে একটি বাথরুম। বসে আছে পাঁচটি পুরুষ ও তিনজন নারী। জানা গেল প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্যে দু'জন কাল সকাল নাগাদ পৌঁছুবেন, দশজনের সার্কল পূর্ণ হবে।

    এবার ঢুকলেন দু'জন মেন্টর/ ফ্যাসিলিটেটর। একজন প্রায় সত্তর, লম্বামত, চোখে চশমা,কুর্তা-পাজামায় বেশ ইনফর্মাল লুক। আর ছোটখাটো মহিলার বয়স যদিও চল্লিশ পেরিয়েছে তবুও সাদামাটা সালোয়ার-কুর্তায় খানিকটা গার্ল-নেকস্ট ডোর ছবি। এঁরা বসলেন একেবারে যেন মেপেজুকে ডায়াগোনালি অপোজিট স্থানে।

    এরমধ্যেও বোধ্হয় কিছু ইয়াংকি তুকতাক্ আছে!

    ছাত্ররা যত ধেড়েই হোক, ক্লাসে স্যারেরা ঢুকলে সন্ত্রস্ত হয়ে গলার বোতাম, শাড়ীর আঁচল গুছিয়ে নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটার পলিটিক্যালি করেক্ট বিহেভিয়ার শিখে বড় হয়েছে। ফলে এখন পিনড্রপ সায়লেন্স।

    কিন্তু গুরুবাবা-গুরুমা'র মুখে কুলুপ কেন? এটা কি ছোঁয়াচে রোগ নাকি? অথবা এরা প্রতিভাগীদের থেকে ফার্স্ট মুভ আশা করছেন!

    সন্নাটা! ঘনঘোর সন্নাটা!! ও ঘড়ি দেখে, দশ মিনিট এইভাবেই কেটে গেছে।

    এবার শুরু হল গুজগুজ-ফুসফুস-ফিসফাস-ফিকফিক।
    এঁরা কি চাইছেন? কোথায় কোন ওরিয়েন্টেশন স্পীচ বা কী-নোট অ্যাড্রেস হবে, তা না যত্ত ইয়াংকি ভ্যন্তারা!!
    তবে কি প্রোগ্রাম ডায়রেক্টর আসবেন, তারপর শুরু হবে? তো সেকথা বল্লেই হয়!

    ফক্কুড়ি বুদ্ধির গঙ্গারামের মনে পড়ে ""বালিকা বধূ'' সিনেমায় বাসরঘরে অনুপকুমারের জিগানো ধাঁধাঃ

    'ওগো ভালোমানুষের ঝি,
    ব্যাপারখানা কী?
    দিতে দিতে দিলেনাকো ছিঃ ছিঃ ছিঃ'।

    এবার একজন সাহস করে জিগ্যেস করে ফেললো-- স্যার, কি করতে হবে?
    বৃথা প্রশ্ন, উত্তর মেলে না।

    শেষে একজন চিট পাস করতে লাগলো--- মনে হচ্ছে এসব ওয়াঁদের ট্রিকস্ অফ দ্য ট্রেড। আসুন আমরাই বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধি। নিজেদের নাম-গোত্র-কুলপরিচয় দিয়ে শুরু করি।

    8

    শক্তপোক্ত চোয়ালের হাড়,একটু যেন ঘোড়ামুখো, সাদা পাজামা-কুর্তা পরা অল্পবয়েসী ছেলেটি একটু তোতলায়।
    -- আ-আমরা তাহলে নি-নিজেদের পরিচয় দিয়ে শুরু করি। আমি শ্রবণকুমার, ইউপি। অমুক এন জি ওতে এইচ আর এ কাজ করি। এবার আমার ডানদিকের জন?
    দীঘল কালো চোখের পাতা, নতুন গালে-ব্লেড ছে্‌লেটি বলে--আমি প্রসূন, রাজস্থান। আমিও ইনফর্মাল এডুকেশন নিয়ে অমুক এন জি ও তে কাজ করি।
    ঘোড়ামুখো এবার আঙুল দেখিয়ে মেয়েটিকে বলে-- আ-আপনার টার্ন।

    চশমা চোখের ললি-পলি সুন্দরী স্পষ্ট উচ্চারণে বলে---- আমি অদিতি সায়গল। দিল্লির একটি এন জি ও তে কাজ করি যারা মেয়েদের যৌনস্বাস্থ্য ও ঘরোয়া অত্যাচার নিয়ে কাজ করে।
    -- বেশ বেশ, এবার আপনি!
    ঘোড়ামুখোর আঙুল সেরেনার দিকে।

    এইভাবে সবার প্রাথমিক পরিচয়ের পালা শেষ হয়। কিন্তু দুই মেন্টর যেন পাথরের মূর্তি-- একেবারে নট্‌ নড়নচড়ন, নট্‌ কিস্যু!

    একি রে বাবা! আবার তো ব্যাক টু স্কোয়ার এ। এবার কী কতা? ফিসফিসিয়ে কথা ছড়ায়-- খালি আমাদের কেন? মেন্টরদেরও পরিচয় জিগ্যেস করা হোক।

    কে জিগায়! মেন্টররা দ্যাবতা। ওঁয়ারা কি পরিচয় দিতে বাধ্য?
    ওর মনে পড়ে ছোটবেলায় দুই তুতো- দাদাদিদির নিজেদের মধ্যে মন্তব্য-- পুরুত মশায়রা আবার সু-সু করেন নাকি? ওনারা তো খালি পূজো করেন!!
    তবু ঘোড়ামুখো ইউপির ছেলেটি সাহস করে জিগায়।
    কোন লাভ হল না।

    একজন বল্লেন-- বিক্রম , আর একজন--নিধি।
    আবার তাঁরা পাথরের স্ট্যাচু।

    ঠিক আছে, ঠিক আছে। তোদের খেলার নিয়ম মেনেই খেলব।
    অথরেটিরিয়ানিজম চুলোয় যাক, আমরা গড়ে নেব নিজেদের নতুন ভুবন, নতুন নিজস্ব খেলার নিয়ম।
    --চলুন, আমরা নিজেদের কাজের কথা , নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করি। কিছু ফললাভ হতে পারে।

    সেরেনা বলতে থাকে।
    --গতকাল আমি দিল্লি স্টেশনে নেমে মোবাইল চার্জ করাচ্ছিলাম। একজন মহিলা প্রায় ইউরিনাল যাওয়ার রাস্তায় বসে কোলের বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোয় মগ্ন। আমি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বল্লাম-- এখানে এভাবে চলাফেরার পথে কেন বসেছ?

    মেয়েটি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো। তারপর যা বল্লো তার নিগলিতার্থ হচ্ছে মুন্নির বাপ সকাল বেলায় কানপুরের গাড়ি থেকে নামার পর ওকে এইখানে বসিয়ে দুধ আর ওষুধ আনতে যাবার নাম করে সেই যে গেছে এখনো ফেরেনি। ও অপেক্ষায় বসে আছে, আর কীই বা করতে পারে!

    না, কোথাও কমপ্লেন করেনি। জানেনা কোথায় করতে পারে। আর মুন্নির বাপ ফিরে এসে যদি রাগ করে?
    এদের জন্যে কারোরই সময় নেই। সেরেনার ও নেই। ওকে যে গাড়ি ধরে দেরাদুন আসতে হবে। কিন্তু কী করে!
    শেষে ও মেয়েটিকে নিয়ে গিয়ে রেলওয়ে পুলিস চৌকিতে শিকায়ত দর্জ করায় আর মেয়েটির হাতে একশ' টাকা দেয়।

    -- এতে কিছুই হবে না। আর একশ টাকার দাম আছে, অন্ততঃ আমার কাছে। কিন্তু এটুকু করে আমার মনে একটা অদ্ভূত আনন্দ হয়েছে এইটুকু আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাইছি।
    কিন্তু নৈঋত কোণে মেঘ। কোণার থেকে চশমা পড়া কালোকোলো বুদ্ধিজীবি দেখতে ছেলেটির আওয়াজ মুদারার কোমল নিষাদ ছাড়িয়ে যায়।

    -- আপনার কি মনে হয় না যে আপনার ওই আলগা তাৎক্ষণিক সুখের জন্যে আপনি আপনার স্পেসের অপব্যবহার করলেন?
    সেরেনা হতভম্ব!
    -- আপনি কী বলতে চাইছেন, একটু খুলে বলবেন?

    -- জনতার ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া সরকার তার কাজ করছে না। আপনি আবার স্পষ্টতঃ ওদের স্পেসে ঢুকে ওদের কাজটা আধা-খ্যাচড়া ভাবে করে ওদের কাজ না করাকে র‍্যাশনালাইজ করলেন।

    বুদ্ধিজীবি নিজের পয়েন্টে অনড়।
    তর্ক জমে উঠলো।
    চশমা চোখে কোঁকড়ানো চুলের শ্যামল ছেলেটি বেশ গুছিয়ে নিজের বক্তব্য রাখছে।

    ওর কথার ধরতাই হল-- গণতন্ত্রে নির্বাচিত সরকারের জনতার ম্যানডেট হিসেবে কাজ করা উচিৎ। ওয়েলফেয়ার স্টেটে যে কাজগুলো করা সরকারের কর্তব্য, সেগুলো তাঁরা না করলে জন-আন্দোলন তাঁদের বাধ্য করতে পারে।
    এজিটেশনাল এন জি ও'রা এই কাজই করে। কিন্তু সো-কলড্‌ ডেভেলপমেন্টাল এন জি ও রা সরকারের কিছু কাজ নিজেরা করে দিয়ে সরকারের অপদার্থতা ঢেকে দিচ্ছে।

    সিনিক বুড়ো ভাম গঙ্গারাম দাস মুচকি হাসলো। ওর মনে হল শ্রীমান বুদ্ধিজীবি এই কথাগুলো আগেও বিভিন্ন ফোরামে বলে হাততালি পেয়েছে।
    কিন্তু ওর ভাল লেগে গেল ছেলেটিকে। কোথায় যেন নিজের প্রথম যৌবনের ছায়া দেখতে পেল।

    -- শোন ভাই, কয়েক দশক আগে আমিও তোমার মত করে ভাবতাম। বিশ্বাস ছিল যে সমাজতন্ত্র হল আসলি সল্যুশন। আর বাকি সব হল রাবার সল্যুশন, শুধু সাইকেলের পাংচার সারানো যায়।
    অতএব, সংস্কারবাদীরা শুধু বিপ্লবের দিন পিছিয়ে দিচ্ছে।

    আর দুনিয়াভরকে সারেঁ প্রবলেম, যেমন জাত-পাত, পরিবেশদূষণ, লিঙ্গবৈষম্য, শহর-গ্রাম-উন্নয়ন ডিকোটমি--- সব আসলে একই মূল সমস্যার উপসর্গ মাত্র। সমাজতন্ত্র এলে সব আপনি আপনি উধাও হয়ে যাবে।

    কিন্তু, আজকাল অন্যরকম ভাবি। মনে হয় বিপ্লব যবে আসবে স্বাগত।
    তবে আমার জীবৎকালে যদি মানুষের দুঃখ, ব্যথাবেদনা কোনভাবে একটু কমানো যায়! সে চিকিৎসার উন্নতির ফল, বা লিব্যারাল সমাজ, বা সক্রিয় জনগণ -- যেভাবেই হোক না। আমি তাতেই খুশি।

    এইসব বলে ও খানিকটা ঘ্যাম নিয়ে সবার দিকে তাকালো।
    বেশ একটু ইম্প্রেশন জমিয়েছে মনে হচ্ছে। কিন্তু দুই মেন্টরের কোন হেলদোল নেই। জেগে আছে না ঘুমুচ্ছে!

    খালি তর্কের নেশায় সেরেনা, বুদ্ধিজীবি, ঘোড়ামুখো বা দাস যদি অন্য কাউকে থামিয়ে বা তার কথার মাঝখানে কিছু বলে বসে তখন আম্পায়ারের নো- বল ডাকার মত হস্তমুদ্রায় ওয়াঁরা বুঝিয়ে দেন-- ওদের বলতে দাও।
    অর্থাৎ ওরা জেগে আছেন!!

    সন্ধ্যে গড়িয়ে গেছে, তর্ক থামছে না। ছেলেমেয়েগুলো তিনটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে। এক, যারা ভাবে রিফর্মিস্ট এন জি ও আসলে পঞ্চমবাহিনী।
    দুই, এই ব্যবস্থার মধ্যে সরকারের সহায়তা নিয়ে নিজেদের -এজেন্ডা- সম্ভব শিবির।
    তিন,- ‘মা গো! কেন যে এতসব কথা’ শিবির।

    এমন সময় বুদ্ধিজীবি বলে বসলো-- আপলোগ জনতাকে পবিত্র ক্রোধ কে আগ পর রেতি ডালকর বুঝানে কা কাম কর রহেঁ হ্যাঁয়।

    হটাৎ সত্তরোর্ধ্ব মেন্টর বিক্রম শোলাংকি যেন ঘুম থেকে জেগে উঠলেন।
    সামনের তাকিয়ায় চাপড় মেরে বলে উঠলেন--- গুস্‌সা, গুস্‌সা, গুস্‌সা! ইধর কা বাত উধর। গুস্‌সা হ্যাঁয় ইহাঁ, অন্দর মেঁ; বাত করেঙ্গে উধর কা, বাহর কা। আসলী বাত নহীঁ করেঙ্গে!

    এই বিস্ফোরণে সবাই হতভম্ব। সবার চোখেমুখে একই প্রশ্ন-- আমরা কি কোথাও পলিটিক্যালি ইনকরেক্ট বিহেভিয়র দেখিয়েছি?
    কিন্তু বিক্রমের থেকে কোন সাড়া নেই, আবার শামুক বা কচ্ছপের খোলে ঢুকে গেছেন।
    শুধু ঘরের বিপরীত কোণ থেকে মহিলা মেন্টর বলে উঠলেন--- বিক্রম, আপনি কি একটু ইমপেশেন্ট হয়ে পড়েছিলেন।
    বিক্রমের হাতের মুদ্রা বলছে-- হয়তো তাই!

    সেরেনা একটি চিট চালান করলো--- এটা হয়তো এদের ট্রিক্স্‌ অফ দ্য ট্রেড। চল, আমরা আবার নিজেদের দুনিয়ায় ফিরে যাই।
    কিন্তু, হল না সুর কেটে গেছে।
    হটাৎ ঘড়িতে আটটা বাজতেই ওঁরা দুজনে উঠে এমন ভাবে রওনা দিলেন যেন ঘরে আর কেউ নেই।

    9

    এই যৌবনজলতরঙ্গ!

    এবার ক্লাসরুম থেকে ঘরে ফেরার পালা। খাতাপত্তর রেখে আবার খেতে আসতে হবে। অর্থাৎ অন্ধকার পেছল ফুলবাগিচার মাঝ দিয়ে পাকদন্ডী বেয়ে প্রায় দোতলা সমান উঁচু ডরমিটরিতে গিয়ে জামাকাপড় বদলে আবার ওই ভাবে নীচে নেমে এসো।
    না বাবা! ও এতো সব ভ্যান্তারার মধ্যে নেই। সোজা খেয়ে দিয়ে একেবারে স্বগ্গের সিঁড়ি বেয়ে নিজের ঘরে উঠে যাবে। সকালের আগে আর নামানামি নেই।

    খাবার হলে সেই লাইন দিয়ে কয়েদীদের মত থালা বাটি তুলে সাদামাটা কম তেলমশলায় রান্না করা ডাল-ভাত-রুটি একটা তরকারী আর স্যালাড নাও, এছাড়া দই আর একটি মিষ্টিও আছে।
    পালিশবিহীন সেগুনকাঠের টেবিলে এবং লম্বা বেঞ্চিতে বসে খাওয়াদাওয়া। অল্প কজনের সঙ্গেই পরিচয়। তাই ও এককোণে মুখচোরার মত বসে সবাইকে লক্ষ্য করতে লাগলো।

    ফেসিলেটটর্‌রা সব আইস্যাবস এর মেম্বার। নিজেদের মধ্যে আগে থেকেই চেনা জানা। কাজেই তারা কয়েদি সেজে খাবারদাবার নিলেও পাশাপাশি দুটো টেবিলে খেতে খেতে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। আর বকবকসম্রাট দাসের আড্ডা দিতে না পেরে পেট ফেটে যাচ্ছে।
    কিন্তু নতুন জেনারেশনের ছেলেমেয়ারা এর মধ্যেই নিজেদের মধ্যে বিন্দাস জমিয়ে নিয়েছে।

    এই যৌবনজলতরঙ্গ রোধিবে কে! হরে মুরারে!
    অজান্তেই একটি দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।

    খাওয়াদাওয়ার পর আবার পেছনের বারান্দায় কলতলায় লম্বা লাইন, বাসন ধোয়ার পালা। ভিম পাউডার, কেক,ছাই সবই আছে। ছাত্র-অধ্যাপক সব সমান।
    ফেরার পথে অন্ধকারে পথ বুঝতে না পেরে দাসবাবু নীচে খাদের দিকে নেমে যাচ্ছিল। একটি হরিয়ানার ছেলে হাত ধরে টেনে তুলে বললো--- নীচে নহীঁ, উপর জানা হ্যায় মহোদয়!

    ডরমিটরিতে খাটের ওপর বিছানায় চিত হয়ে ঠ্যাঙ নাচিয়ে নাচিয়ে গঙ্গারাম পড়ছে সমারসেট মমের ছোট গল্পের একটি খন্ড , যাতে গোটাকয় অ্যাসেন্ডেন ডিটেকটিভ সিরিজের গপ্পো আছে।
    বেশ একটু মন লেগেছে , ভয় পাচ্ছে অন্যেরা লাইট নেভাতে না বলে।
    কিন্তু কোথা থেকে একটা গানের সুর ভেসে আসছে না?

    এই হিমালয়ের কোলে রাত এগারটায় গান? কৌতূহলী কানে ধরা পরে কিছু কথা-- ভাষাটা যে বাঙালী! আওয়াজটা যেন নীচের পাড়া থেকেই আসছে! এবার তাকিয়ে দেখে চল্লিশ জনের হল প্রায় খালি। জনা সাতেক ঘুমিয়ে পড়ছে। বাকিরা সব গেল কোথায়?

    উঠে গিয়ে ব্যালকনি থেকে উঁকি মারতেই নীচের দৃশ্য দেখে ক্লান্ত মন একদম হলিউড-জলিগুড।
    নীচে মেয়েদের যমুনাবিহারের বারান্দায় ছেলেমেয়ে মিলে যেন চাঁদের হাট বসেছে। জনা দশেক মেয়ে আর প্রায় গোটা আঠেরো ছেলে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। সেই বাঙালী দুই বোন মাত্র গানটি শেষ করলো। সবাই হাততালি দিচ্ছে। এবারে একটি নেপালী মেয়ে গাইছে ওদের ফোক সঙ। সবাই তাল দিচ্ছে। ক'জন নাচতে শুরু করলো। কয়েকজন ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেল ওকে।

    --- আরে দাদা! নীচে আইয়ে। বাবুমশায়, দের ন করে। আ জাইয়ে।
    দাস হাসিমুখে মানা করে।
    এবার রাত বাড়ছে। কিন্তু দুটি ছেলে ওপরে এসে হাত ধরে ওকে নীচে নিয়ে যায়।
    আসর ভাঙার সময়।
    -- বাবুমশায়, আপনাদের ভাষায় দুই বোন কি চমৎকার গাইল। তাতে পানকৌড়ি না কি যেন একটা পাখি নিয়ে কিছু কথা আছে। আচ্ছা, পানকৌড়ি মানে কি?
    জানা গেল বিকেলের ওর গ্রুপের সেই বুদ্ধিজীবি ছেলেটি নাকি পেশাদারি দক্ষতায় ছবি তোলে। ভাল ডিজিটাল , এস এল আর সবই নিয়ে এখানে এসেছে।

    কথা হতে থাকে। কাল ভোর পৌনে ছটায় উঠে সবাই যাবে ঐ পাহাড়ের চুড়োয় উঠতে। ঠিক হয় মেয়েদের মোবাইলে কল করা হবে। মাত্র চারজন মেয়ে রাজি হল এই অভিযানে, ছেলেরা দশজন। ক্যামেরা নিয়ে ছেলেটিও যাবে, ওর নাম কে সুরেশ।

    গঙ্গারাম রাজি হয় না। বলে-- আমার ঘুম ভাঙে ভোর পাঁচটায়। আমি ছেলের দলকে ডেকে দেব। আর তোমরা যখন পাহাড়ে চড়তে শুরু করবে তখন হাত নেড়ে টা-টা করব।
    শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢোকা! হিন্দিতে একটা কথা আছে না-- লৌন্ডোঁসে ইয়ারি, গধে কী সওয়ারি!
    ছেলেছোকরার দোস্তি,
    যেন গাধায় চড়ে মস্তি!

    এবার শুতে যাওয়া যাক, সকালে উঠে দেখতে হবে হিমালয়ের রূপ!
    সবার শেষে ব্যালকনির লাইট নেভাতে যাবে এমন সময় চোখে পড়ল নীচের বারান্দা খালি হলেও জনমানব শূন্য নয়। ছোট পাঁচিলের ওপর বসে সেই সুরেশ অন্য একটি গ্রুপের প্রাণচঞ্চলা এক সুন্দরীকে কিছু মন দিয়ে বোঝাচ্ছে। আর সেই হৈ-চৈ করা প্রগলভা তরুণী? সে দুনিয়া ভুলে গিয়ে একদৃষ্টিতে তকিয়ে আছে ওর মুখের দিকে। শুনছে ওর নীচুগলায় বলা কথা। সত্যি শুনছে? কান দিয়ে না চোখ দিয়ে?

    গঙ্গারাম বিছানার উষ্ণতায় ফিরে যায়। বারান্দার আলো নেভায় না।
    জ্বলুক, সারারাত জ্বলতে থাকুক।

    10

    নীল আকাশ-বজ্রবিদ্যুৎ-বৃষ্টিপাত

    পরের দিনটি শুরু হল ভালো ভাবে।
    শীতের সকালে সবাই হাঁকডাকে জেগে উঠে তৈরি হয়ে প্রভাতফেরির মত করে গান গেয়ে পাহাড়-বিজয়ে বেরিয়ে পড়লো।
    চশমাচোখে রোগাপতলা পাঞ্জাবী মেয়েটি গঙ্গারামকে হাত নেড়ে বল্লো- সব কটা পাপী পুরুষ আমাকে ফেলে চলে যাবে ভেবে রাত্তিরে জিনসের প্যান্ট পড়েই শুয়েছিলাম। তাও দেখুন না, বাঁদরগুলো জিগ্যেস করছে দাঁত মেজেছিলাম কি না! আরে, সাতসক্কালে পাহাড়ে চড়তে হলে দাঁত মাজতেই হবে, এটা কোন শাস্তরে লিকেচে?

    দু’ঘন্টা পড়ে ডাইনিং হলে ঢুকতে থাকা মেঘ ও কুয়াশার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পুরি ও ঘুগনির জলখাবার খেতে খেতে ও জিগ্যেস করলো-- ওই মেয়েটি বেশ! দিল্লির কোন এন জি ও থেকে এসেছে?
    --- আংকল, ও মেয়ে নয় মহিলা। তিনটি বাচ্চার মা। বিশ্বাস হচ্ছে না।
    ধেত্তেরি! এসব নিয়ে আমি মাথা ঘামাতে যাবো কেন?
    ক্লাস রুমে ঢুকে পড়ি।

    কি বিপদ! এ যে দেখি বাংলাবাজারে হাতে হ্যারিকেন!

    শরীর খারাপ লাগায় ফুলটুসি মেয়েটি চা খেতে না গিয়ে ক্লাস রুমের গদি পাতা বিছানাতে চাদর জড়িয়ে শুয়ে ছিল। ঘোড়ামুখো শ্রবণকুমার মোবাইলের ক্যামেরায় তার ফোটো তুলিয়াছেন।
    টের পেয়ে ফুলটুসি অদিতি রেগে কাঁই।
    -- আমার অনুমতি ছাড়া আমার ঘুমন্ত অবস্থার ছবি তুলেছেন কেন? শিগ্গির ডিলিট করুন।
    -- আ-আপনি সে-সেলিব্রিটি। আপনার ছবি তুললে দো-দোষ নেই।
    --- ওসব ন্যাকামি ছাড়ুন। আমি সিরিয়াস।আমি প্রফেশনাল কলিগ। এখানে এই ধরণের ব্যবহারের ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্টের রুলিং আছে। দরকার হলে আমি কোর্টে যাব।
    -- আ-আপনি বাড়াবাড়ি করছেন। এতে কি হয়েছে?
    -- দেখুন, আমি একটি এন জি ও তে জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কাজ করি, আইন জানি। দাসবাবু আইন পড়েছেন, কেসটা বলুন তো!

    ---- সেলিব্রেটেড বিশাখা কেস।
    গঙ্গারাম ইম্প্রেস করার সুযোগ ছাড়ে না।
    ইতিমধ্যে সিঁড়ি দিয়ে একটি অন্যব্যাচের মেয়ে নামছে, মাথায় চুল যেন শালের বনে বর্ষার জলভরা মেঘ ঘনিয়েছে।
    একজন কেউ ফোড়ন কাটল-- মৌমাছির ছাতা।

    এবার দুই সহেজকর্তা বা ফেসিলিটেটর আসরে নেমেছেন।
    কাল অব্দি চুপচাপ ধ্যানমগ্ন থাকা মহিলাটি জানতে চাইলেন--- কী হয়েছে?
    জবাবে অনেক হাঁউমাঁউখাঁউ মিলিয়ে শুনলেন সিন্ডারেলার ঘুমন্ত ফটোতোলা এবং মেয়েদের মৌমাছির চাক বলা।
    উনি ছেলেটির দিকে তাকিয়ে দেখলেন।
    --- মেয়েদের মৌমাছির চাক বলা? বেশ, কিন্তু অন্য ব্যবহারে মনে হয় চাকভাঙা মধু খাবার ইচ্ছেও কিছু কম নয়। ঠিক আছে এ নিয়ে আমরা টি-ব্রেক এর পরে কথা বলবো।
    আবার সেই কৃত্রিম নীরব স্তব্ধতা, যেন সবাই ধ্যানে বসেছে।

    ফক্কুড়ি স্বভাবের গঙ্গারামের ফিক ফিক হাসি পাচ্ছে। কিন্তু ও যে জেনেশুনে শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকেছে।
    ও শুরু করে ওর ছোটবেলার পুরনো খেলা। অডিও অফ্‌ করে দিয়ে সামনের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে রিওয়াইন্ড করে দেখতে থাকে পার হয়ে আসা দীর্ঘজীবনের সাদা কালো পুরনো ফিলিম।

    ভিলাইয়ের কাছে সরকারী কলেজে বড় ভীড়। সবে এম এ ইকনমিক্সে ভর্তির জন্যে ইন্টারভিউ শুরু হয়েছে।। দেশে জরুরী অবস্থা চলছে। কলেজে কলেজে ব্ল্যাক লিস্ট তৈরি।
    হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্টরা ডিসিপ্লিনের নামে দুষ্টু ছেলেদের ওপর জমে থাকা পুরনো খার সুদে-আসলে আদায় করে নিচ্ছেন।
    তাই প্রফেসর বিশ্বকর্মা লাইনের প্রথম ছেলেটিকে বল্লেন-- কি, একটু আগে বল্লাম না চুল ছোট করে কেটে এস। কথা কানে যায় নি?
    -- কেটে তো এসেছি স্যার।
    -- এর নাম কাটা? যাও আরো ছোট করে এস। কায়দা করে কান ঢেকে মেয়েদের মত চুল রাখা চলবে না। কথা না শুনলে অন্য কলেজে গিয়ে ভর্তির চেষ্টা কর।
    -এবার ন্যাড়ামাথা করে আসবো?
    -- বাজে বকবক করবে না, বুঝলে? এটা গভমেন্ট কলেজ, ফালতু হিরোগিরি চলবে না।

    দাসবাবু দাদ না চুলকে থাকতে পারে না।
    -- স্যার, আপনি এন সি সি'র কম্যান্ডার। কিন্তু ভর্তি তো ইকনমিক্সের জন্যে করা হচ্ছে। কেন বেচারাকে হ্যারাস করছেন? তার চেয়ে ওই হেয়ার স্টাইল যাঁর সেই অমিতাভজিকে বলুন না দেশের স্বার্থে ইন্দিরাজীর হাত শক্ত করতে উনি যেন ছোট করে চুল কাটান। দেখবেন, পরের দিনই গোটা ভারতের যুবশক্তি চুল ছোট করেছে।
    -- কি হে! তোমারও খুজলি হচ্ছে না কি?

    চটকা ভেঙে যায়।
    ওর অন্যমনস্কতার সময় কিছু একটা ঘটে গেছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে সেরেনা। ভারি কাঁধ উঠছে আর নামছে।
    ---- এক ঝুঠী জিন্দগী জী রহী থীঁ ম্যাঁয়!

    এইসব সাইকো অ্যানালিসিসের সময় কার কথায় কোন ট্রিগার কাজ করেছে কে জানে!

    ----বাবা গেলেন অকালে! তিনবোনের মধ্যে আমিই ছোট। বড় দুজন পড়া ছেড়ে টিউশনি করে সংসারের ঘানি টানতে লাগলো। আমাকে ছাড়তে হল গান শেখা। বাবা ভাবতেন সুযোগ পেলে আমি গানকেই পেশা করতে পারি। বলতেন-- নোনি, তোর ভগবৎদত্ত গলা।

    ছাই গলা!
    সার্ভাইভাল স্ট্র্যাটেজি-- ঠিক হল আমাকে ভাল পড়াশুনো করে বড় চাকরি বাগিয়ে পরিবারকে জলে ডোবা অবস্থা থেকে টেনে তুলতে হবে।
    আজ আমি হরিয়ানায় অ্যাভিভা বীমা কোম্পানীর এইচ আর চিফ! বাবা ওপর থেকে দেখছেন।

    দুইদিদির বিয়ের ব্যবস্থা-খরচাপাতি সব আমার ডিসিশন। অফিসে -বাড়িতে সর্বত্র একটা ডিসিশন দেয়া আমার কখন অভ্যেস হয়ে গেছে বুঝতে পারিনি। সেই সুবাদে এখানেও অমন করছিলাম।
    ভুল করেছি; দিদিরাও আমার চেষ্টা ভালভাবে নেয় নি। বলে আমি নাকি শো-অফ করতে এসব করি!
    আমি একা, বড় একা! ভয় করে।

    সেরেনা কাঁদতে থাকে। গঙ্গারাম এমন স্বর্গীয় দৃশ্য ড্যাবডেবিয়ে দেখতে থাকে। সবাই তথৈবচ।

    এমন সময় নড়ে উঠলেন লম্বা চেহারার প্রৌঢ় ফেসিলিটেটর-- বিক্রম সোলাংকি।
    কুর্তার পকেট থেকে রুমাল বের করে সেরেনাকে চোখ মুছতে বাড়িয়ে দিলেন।

    আর নীচুগলায় মন্ত্র পড়ার মত একঘেয়ে সুরে বলে চললেন-- এখন কেমন লাগছে! আমার তো কালকের সেরেনার তুলনায় আজকের সেরেনা অনেক ভাল লাগছে। অনেক আকর্ষণীয়। অনেক ডাউন-টু-আর্থ! অনেক সংবেদনশীল।
    খসিয়ে ফেলেছে তার সবজান্তা নকল মুখোশ। কাঁদতে লজ্জা নেই। কান্নার মধ্যে দিয়ে মানুষ ধরার ধুলিতে নামে, পবিত্র হয়।
    এই সেরেনা অনেক সুন্দর, ইচ্ছে করছে একে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গনে বাঁধি।

    দাসবাবুর বিশহাজার ভোল্টের শক লাগে। এসব কি বলছেন উনি? লজ্জাশরম বলে কিছু নেই? সবাই চুপ করে আছে কেন? মেয়েটা এক চড় লাগাচ্ছে না কেন?
    আমার কি মুখ খোলা উচিৎ? এথিকস্‌ কমিটির কাছে অভিযোগ করব?

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ১৮৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • NRO | 165.124.84.35 | ২৯ আগস্ট ২০২৪ ০৩:১৭536929
  • প্রথমে পর্ব 8 আর তার পর ৩ পড়লাম - and I started seriously liking your writing. ১ আর 2 were OK but nothing extraordinary but 3 is wonderful. আমিও রামকৃষ্ণ মিশন হোস্টেলে রুটি চুরি করে খেয়েছি। আপনার ফ্যামিলির কথা যা লিখেছেন তা কি সত্যি? হলে ওগুলো নিয়ে সুন্দর লেখা যায় । বন্ধুর স্ত্রীর ঘটনা আমার অভিজ্ঞতার খুব কাছাকাছি। যদিও আমার নিজের ফ্যামিলি experience খুবই সুখের তবু  সব মিলিয়ে I can relate with yours and understand it. পর্ব ৪ পড়ে মনে পড়ে গেল কলেজে য়ুনিভার্সিটিতে পার্টি করার কথা যখন স্রেফ মেয়েদের সঙ্গে মেশার জন্যই যেতাম মিটিংয়ে -যদিও আবাসিক নয়। কম বয়সে হয়তো এ ধরণের ক্যাম্প attend করা যায় কিন্তু বয়স হলে - I think it becomes very hard. I could never do that. আমি শুধু একটা কথাই ভাবি - মানুষ এতো কষ্ট করে পরের সেবা করে কেন? এখানে বলে 'no good deed ever go unpunished' আর বোধহয় বিদ্যাসাগর মশাই বলেছিলেন 'পরের উপকার করিও না '.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন