এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ (১)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ১৩ আগস্ট ২০২৪ | ৪২৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • 1
    ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ (১)

    শাঁকচুন্নীর সঙ্গে দেখা
    প্রদীপ জ্বালানোর আগে সলতে পাকানো!

    ইন্দিরা গান্ধীকে আমার রায়পুরের কলেজ জীবনে খুব গাল পেড়েছি — এমার্জেন্সির জন্যে। গাল দেব না তো কি ?

    গোটা দেশে বিরোধীরা জেলে বন্ধ। সরকারের নীতির বিরুদ্ধে মিছিল করা বন্ধ। খবরের কাগজে সরকারের সমালোচনা বন্ধ। কল- কারখানায় স্ট্রাইক করা বন্ধ। আরে, বন্ধ্‌ ডাকা বন্ধ! কিন্তু ছাঁটাই করা? না, বন্ধ নয়।
    আবার কলেজে কলেজে ইউনিয়নের নির্বাচন বন্ধ। অমিতাভ বচ্চনের মতন কান ঢেকে চুল ছাঁটা বন্ধ।
    ছাত্রদের কথায় কথায় ব্ল্যাক বুকে নাম তোলার হুমকি দেয়া? টিসি ধরিয়ে দেওয়া? বন্ধ নয়, চালু।
    আর সঞ্জয় গান্ধীর নির্দেশে দুটোর বেশি বাচ্চা পয়দা করা বন্ধ। নতুন শব্দ শিখেছি — ভ্যাসেকটমি!
    দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে ‘হম দো, হমারে দো’। আরও আছে - ‘লল্লা কম, গল্লা জ্যাদা’।
    মানে — বাচ্চা কম, আনাজ বেশি। এতেই ‘গরীবি’ দূর হবে। আরে গরীবরা গণ্ডায় গণ্ডায় বাচ্চা পয়দা করে। ওদের একটাই মনোরঞ্জন, জানেনই তো।

    কলেজের কাছে একটি দেয়াল লিখন চোখে পড়ল — ‘দুলহন ডোলি মেঁ, নিরোধ ঝোলি মেঁ’।
    ‘যদি বৌ চড়েছে দোলায়,
    তবে নিরোধ রাখো ঝোলায়’।

    কিছুদিন পরে, মানে ১৯৭৬ সাল থেকে সর্বত্র দেয়াল লিখনঃ
    “বাতেঁ কম, কাম জ্যাদা,
    দূরদৃষ্টি, পাক্কা ইরাদা”।

    ‘কথা বল কম, কাজে দাও মন,
    গড় ভবিষৎ, মনেরই মতন’।

    অবশ্যি কিছু ছেলেমেয়ে এর অপব্যাখ্যা করে গান্ধী পার্কের আলোছায়ায় ডেটিং করার সময় কথা কম বলে দ্রুত ভবিষ্যৎ গড়তে লেগে গেল।

    তারপর শুরু হল নসবন্দী বা পরিবার নিয়ন্ত্রণ অপারেশনের কোটা পূরণ করতে দালালদের শিকার ধরে আনা, অবশ্যই ছেলের দল। ছোটখাটো বে-আইনি কাজ চুরি ছ্যাঁচড়ামি করতে গিয়ে ধরা পড়লে হাজতবাসের ভয় দেখিয়ে তাদের পৌরুষ খতনা করে ছেড়ে দাও। তাতে কিছু বুড়োও ফাঁদে পড়ছে।

    আমি তখন ভিলাই থেকে লোক্যাল ট্রেনে একঘন্টা যাতায়াত করে রায়পুরের কলেজে এম এ পড়ছি। দল বেঁধে স্টেশনে সাইকেল রেখে ট্রেনে যাই হল্লা করতে করতে। কো-এডূকেশন যে!
    আমাদের পকেটে থাকে মান্থলি পাস, তাতে ফটো থাকে না। কলেজের আইডি কার্ডে থাকে। কখনও কখনও রিনিউ এর তারিখ দু’একদিন মিস হয়ে যায়। আতংকে ভুগি। চেকার দেখতে চাইলে?
    -- কিস্যু না, বাথরুমে ঢুকে যা! কিছু হলে আমরা তো আছি।
    এই ‘আমরা’দের কেউ কেউ মান্থলির ডিউ ডেট কলমের খোঁচায় বদলে দেয়। কখনও বাওয়াল হয়। চেকার পিছু হটে।
    কখনও দল বেঁধে ফ্লাইং স্কোয়াড আসে, সঙ্গে রেলের পুলিশ। কেউ কেউ ধরা পড়ে, সবাই চাঁদা করে অপরাধীর ফাইন দিয়ে দিই।
    একদিন বাবা স্টিল প্ল্যাণ্ট থেকে ফিরলেন হন্তদন্ত হয়ে।
    -- তোর কাছে রেলের মান্থলি আছে? নিয়ে আয়।
    কিছুই বুঝলাম না। খুঁটিয়ে দেখলেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লেন। নাঃ সব ঠিক আছে।
    -- ব্যাপারটা কী?
    -- শোন, মান্থলির ব্যাপারে সতর্ক থাকবি। দু’দিন আগে রিনিউ করবি। একবারে তিনমাসের। যেন ভুল না হয়।
    তারপরে ঝেড়ে কাশলেন।
    আজই অফিসে শুনেছেন সহকর্মী মিঃ ভাটনগরের শালার একমাত্র ছেলেকে গোয়ালিয়রে রেলপুলিস ধরেছিল। তার কাছে আপ-টু-ডেট মান্থলি ছিল না। তাকে লক আপে পোরে এবং পরের দিন নসবন্দী করে বাড়ি পাঠায়।

    ইন্দিরার সমর্থক ভদ্রলোকের কলেজে পড়া ছেলে রাষ্ট্রীয় পরিবার পরিকল্পনার শহীদ!
    ছেলের বাবা বাড়িতে রাখা ডাবল ব্যারেল গান নিয়ে বেরোলেন ডাক্তারের খোঁজে।
    সেদিন থেকে ইন্দিরা-ভক্ত আমার বাবাও হয়ে গেলেন এমার্জেন্সির ঘোর বিরোধী।

    কিন্তু বিধির বিধান খণ্ডাবে কে!
    ইন্দিরা প্রথম বছরে এক অর্ডিন্যান্স জারি করে গ্রামীণ মহাজনদের সুদখোরি নিষিদ্ধ করলেন। শাইলকেরা নাকি জেলে ঢুকবে!

    কিন্তু এত সোজা নাকি! গ্রামে গ্রামে চাষ-আবাদ, বিয়েশাদি, পুজো পার্বণে যে ওই ছোট বড় শাইলকের দলই ভরসা। রাজি হলে টিপছাপ নিয়ে হাতে হাতে নগদ নারায়ণ ধরিয়ে দেয়। এ’রম হলে তো গ্রামীণ অর্থব্যবস্থা চরমড়িয়ে উঠবে।
    কিন্তু কৃষি ও গ্রামের উন্নয়নের জন্য ইন্দিরার ভরসা ডঃ স্বামীনাথন, যিনি ভারতে সবুজ বিপ্লবের হোতা।
    তাঁর পরামর্শে ইন্দিরা প্রথমে অর্ডিন্যান্স এবং পরে জারি করলেন রিজিওনাল রুরাল ব্যাংক অ্যাক্ট, ১৯৭৬।
    জন্ম নিল সরকারি ব্যাংকের এক নতুন প্রজাতি — ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাংক বা আর আর বি।
    ব্যাস্‌ আমার মত উনপাঁজুরে লক্ষ্মীছাড়ার দল - যারা অনেক দিন ধরে বাপের হোটেলে অন্নধ্বংস করছে - দেখল আশার আলো।

    এতদিন আমার সাথীরা রাস্তার পাশে কালভারটের গায়ে সিমেন্ট বাঁধানো জায়গাটায় বসে সিগ্রেট ফুঁকতে ফুঁকতে গাইতঃ
    “এম এ কিয়া, কুছ উখাড় তো লিয়া,
    বৈঠে হ্যায় পুলিয়াকে পার।
    কুছ নোকরি নহীঁ, কোই ছোকরি নহীঁ,
    অব ক্যা করুঁ তু বাতা দে ইয়ার”।

    ‘এম এ/ করেছি,/ তাতে কার কি/ ছিঁড়েছি,
    বসে আছি/ শুকনো নালার/ পাশে।
    জোটেনি চাকরি,/ আসেনি ছোকরি/,
    বল দেখি তুই/ বাঁচব কিসের/ আশে’।

    পরীক্ষা ইন্টারভিউয়ের পালা চুকলে চাকরি পেলাম ব্যাংক ম্যানেজারের, পোস্টিং বিলাসপুর জেলা সদর থেকে চল্লিশ কিলোমিটার দূরের এক ব্লক হেডকোয়ার্টারে বলৌদা ব্র্যাঞ্চে। ভিলাইয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল শহরের ঝাঁ চকচকে কোম্পানির কোয়ার্টার, বাগান আর পাকা পিচঢালা রাস্তা এবং সিনেমাহল, দোকানপাট থেকে বহুদূরে এক ধ্যাড়ধ্যাড়ে গোবিন্দপুরে। তবু অনেক উৎসাহ। সিগ্রেট কিনতে বা দোকানে চা খেতে, সিনেমা দেখতে মায়ের থেকে পয়সা চাইতে হবে না। স্বাধীন হব। বাবা-মায়ের নজরদারি থেকে মুক্ত হব। নিজের ডিসিশন, ভালোমন্দ যাই হোক, নিজে নেব। ইয়ে মেরী লাইফ হ্যায় বাবা!

    তো ডিসেম্বর মাসের প্রথম রবিবারে দূগগা বলে রওনা দিলাম। পরের দিন সোমবারে জয়েন করতে হবে। অকুস্থলে পৌঁছে তো যাই।
    চাকুরিজীবনের প্রথম রাত্রি আমার আজীবন মনে থাকবে। কারণ, সেই রাত্তিরে ভূত ও ভগবানে অবিশ্বাসী এই হরিদাস পালের শাকচুন্নি থুড়ি পেত্নীদর্শন হয়েছিল।
    ও কি মায়া, কি স্বপনছায়া, ও কি ছলনা!
    ভিলাই থেকে ভোরবেলার প্যাসেঞ্জার ট্রেন। বাবা তুলে দিতে এসে রুমালে চোখ মুছতে ব্যস্ত। ওনার ধারণা এই ছেলেটা পাক্কা ল্যাবেণ্ডিস! ব্যাংকের চাকরিতে ভালো করে ছড়াবে। আলাভোলা বোকা ছেলেটাকে কোন ধূর্ত বোকা বানাবে। নিজেরা টাকাপয়সা খেয়ে এঁটো হাত এর গামছায় মুছে ভালোমানুষ সাজবে। তারপর আমার সুপুত্তুর যাবে শ্রীঘরে।
    ওকে তুমি দেখো ঠাকুর!
    সাবধানে থাকিস। চিঠি লিখিস। সপ্তাহে একখানা। তোর স্যুটকেসে চারটে ইনল্যান্ড রেখে দিয়েছি।
    ট্রেন সকাল বেলা বিলাসপুরে নামিয়ে দিল। সেখান থেকে জিজ্ঞেস করে জানলাম দুই কিলোমিটার দূরের বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাস ধরতে হবে। সরকারি বাস বলৌদা যায় না। শুধু প্রাইভেট বাস। দিনে দুটো ছাড়ে।
    বাঃ, এখানে সাইকেল রিকশা ছাড়া টাঙাগাড়িও আছে! সেই শোলে সিনেমার বাসন্তীর রথের মত। কত নেবে? বাসস্ট্যান্ড চার আনা। কিন্তু ছ’জন সওয়ারি পাওয়া পর্য্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই বলে গুঁফো টাঙাওয়ালা নির্বিকার মুখে খৈনি ডলতে লাগল।
    অবশেষে টিকিট কেটে বাসে চড়লাম। সারদা ট্রান্সপোর্ট। একী বাস? বেশ কয়েকটা সীটে স্পঞ্জ বেরিয়ে লোহার কংকাল দৃশ্যমান। কিছু মেছুনি মাছের ঝুড়ি ছাদে তুলেছে। বাস ছাড়তে দেরি আছে। কিন্তু তার আগেই টিনের ছাদ ফুটো হয়ে আমার গায়ে মাছের আঁশটে জল পড়ছে যে!
    কন্ডাক্টরকে বলতে সে আমায় একটা সামনের সীটে বসিয়ে দিল। বাস ছাড়ল বটে, তবে শহরের সীমান্তে অরপা নদীর পুলের গোড়ায় প্রতাপ চৌকে বেশ কটা রেস্তোরাঁর সামনে থেমে গেল। নড়ে আর না। কী ব্যাপার! আজ রবিবার, শেষ বাস। কারও কোন তাড়া নেই।
    আধঘন্টা পরে ছাড়ল। ইতিমধ্যে ড্রাইভার, কণ্ডাক্টর এবং হেল্পার চা-নাস্তা করে নিয়েছে।
    বিলাসপুর পেরিয়ে ঢিকির ঢিকির করে কুড়ি কিলোমিটার পরে সীপত জনপদ। সেখান থেকে একজন বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন।
    আজ রোববার, ওখানে বড় করে হাট বসেছে। অতএব, বাস ওখানে আধঘন্টা দাঁড়াবে। এটা কী হচ্ছে? রবিবারের দিন এটাই নিয়ম। আপনি বোধহয় নতুন।
    সবাই যাচ্ছে নাস্তা করতে। একটু আগে বিলাসপুরে করলেন না? আহা, তারপরে একঘন্টা হয়েছে। বাসের ঝাঁকুনিতে সব হজম। আর এখানে যা কান্দাবড়া (পেঁয়াজি) বানায় না! তার সঙ্গে লাল লংকা রসুন পেষা চাটনি। খেয়ে দেখুন, আঙুল চাটবেন।
    ব্যাজার মুখে বাসে গিয়ে বসি।
    রাস্তা নতুন তৈরি হচ্ছে। খোয়া ঢালা, কোথাও দুরমুশ হয়েছে, কোথাও হয়নি। বড্ড ধূলো উড়ছে। বলৌদা পৌঁছে হাতমুখ সাবান দিয়ে ধুতে হবে। আগে তো পৌঁছই।
    এবার বাস চলছে জোর কদমে। ডিসেম্বরের সন্ধ্যে, হিমেল হাওয়ায় শীত শীত করছে। বেশির ভাগ গাঁ অন্ধকারে ঢাকা। কোথাও কোথাও জ্বলে উঠছে টিমটিমে হলদে আলো।
    এ কোথায় যাচ্ছি? পথ কেন ফুরোয় না? বেলা তিনটেয় বাস ছেড়েছিল। চল্লিশ কিলোমিটার পথ যেতে তিন ঘন্টা লাগিয়ে দিল!
    শপথ নিলাম—এই কোম্পানির বাসে আর চড়ছি না।
    সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টা নাগাদ বাস বলৌদায় শনিচরি হাটে এসে থামল। এখানেই ওদের রাত্রিবাস। কাল সকাল সাতটায় বিলাসপুর ফেরার জন্য রওনা দেবে।
    বাস থেকে নেমে হাই তুলে আড়মোড়া ভাঙলাম। গা-হাতপা টাটাচ্ছে। হেল্পারকে বললাম — বাসের ছাদ থেকে আমার মালপত্র নামিয়ে দিতে।
    ও যত্ন করে নামালো - হোলড অল, স্যুটকেস এবং একটা প্লাস্টিকের বালতি; তাতে মগ আর কেরোসিনের জনতা স্টোভ।
    আর নামামাত্র ধপ করে সব আলো নিভে গেল। বিদ্যুৎ চলে গেছে। আমার মনটা দমে গেল। কোন অশুভ সংকেত!
    পাবলিকের কোন বিকার নেই। বলল, মাত্র ক’মাস হল ইন্দিরা সরকার গেছে। এখন জনতা পার্টির সরকার। থোড়া সা ধীরজ রাখিয়ে, সব ঠিক হো জায়েগা!
    সে তো বুঝলাম, আমি যাই কোথায় ? গ্রামীণ ব্যাংক-কেউ নাম শোনে নি। কো-অপারেটিভ ব্যাংক?
    আঁতে ঘা লাগল। না না, দিল্লি সরকারের ব্যাংক, ছ’মাস হল এখানে ব্র্যাঞ্চ খুলেছে। এখানে যাঁরা আছেন সব স্টেট ব্যাংকের অফিসার।
    পাবলিক কেউ কিছু বুঝল না। শেষে একজন বলল — বুঝেছি, বুধবারের হাটের জায়গায় দুর্গামন্দিরের সামনে অল্পদিন হল একটা ব্যাংক এসেছে বটে।
    কতদূর? বেশি না, এই দেড় কিলোমিটার। হেঁটে যাবেন আর এই লোকটা বাঁকে করে আপনার বিছানা, স্যূটকেস বালতি সব নিয়ে যাবে। ওকে দুটো টাকা দিয়ে দেবেন।
    কাঁধের বাঁকের দু’মাথায় দুটো দড়ির ফাঁস ঝুলছে — ফাঁসি দেওয়ার মতই মজবুত। তার একটায় ভারী হোলড অল, অন্যটায় স্যুটকেস বালতি। বেঁধে নিয়ে লোকটি দুলকি চালে রওনা দিল। হাটুরেরা সব দোকান গুটিয়ে তুলছে। ওদের কেরোসিনের টেমি টিমটিম করছে।

    খানিকক্ষণ চলার পর দেখা দিল দুর্গামণ্ডপ, আবছামত। উলটো দিকে একটা সাদা চূনকাম করা ছোট বাড়ি। তিনটে ধাপ পেরিয়ে বারান্দায় উঠলাম। হ্যাঁ, অন্ধকারে টর্চ মেরে পড়া যাচ্ছে— “বিলাসপুর-রায়পুর ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাংক - শাখা বলৌদা”। নীচে ছোট হরফে — ‘ভারতীয় স্টেট ব্যাংক দ্বারা প্রায়োজিত’।

    তাহলে ঠিক জায়গাতেই এসেছি। আমার নিয়োগপত্রে স্টেট ব্যাংকের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল হেড অফিসের ছাপ, হুঁ হুঁ বাবা!
    কিন্তু ভেতরে ঢুকেই মনটা দমে গেল। এটা কি ব্যাংক? কীরকম ব্যাংক? আমার চেনাজানা কোন ব্যাংকের সংগে মেলে না যে!
    কাঁচঘেরা কোন ক্যাশ কাউন্টার নেই, ম্যানেজারের কেবিন নেই। তাহলে কী আছে?

    একটা র‍্যাকে স্টেট ব্যাংকের নাম লেখা গোটা কয়েক ভারী ভারী লেজার। তিনটে টেবিল, ছটা কাঠের চেয়ার। আর পেছনের দিকে একটা স্টিল এজ কোম্পানির ছোট সিন্দুক, ডাক্তারবাবুর ফ্রিজের মত। তার মাথায় একটা ছোট্ট পেতলের দাঁড়িপাল্লা। একেবারে ভবানীপুরের ‘লক্ষ্মীবাবুকা আসলি সোনাচাঁদি কা দুকান’ মার্কা।

    এই শেষ নয়। এক মোটাসোটা ভদ্রলোক গেঞ্জিগায়ে বসে পান চিবুচ্ছেন। তাঁর কোলে একটি ছোটবাচ্চা। আরেক রোগাপ্যাটকা গুঁফো জোয়ান তার সঙ্গে রঙ্গরসিকতা করছে।
    দুটো বাচ্চা মেয়ে একপাশে বসে সেলেটে কাটাকুটি খেলছে।
    আরেকটি টেবিলে এক মাস্টারমশায় একটি প্রাইমারির বাচ্চাকে হ্যাজাকবাতির আলোয় অংক শেখাচ্ছেন।
    আমি মালপত্র নিয়ে ঢুকতেই শান্ত পুকুরের জলে ঢিল পড়ল। সবার চোখে প্রশ্ন।
    আমি ব্যাগ হাতড়ে একটি বন্ধ খাম বাগিয়ে ধরি — ম্যানেজার মিঃ আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে চাই। ওনার নামে হেড অফিস থেকে একটি চিঠি আছে। হেড অফিসের নাম শোনামাত্র গেঞ্জি গায়ে ভদ্রলোক উঠে দাঁড়ালেন।
    খাম খুলে দেখে বললেন — ওহ্‌ আপনি নতুন প্রোবেশনে এসেছেন? তা বেশ, কাল আপনার থাকার ব্যবস্থা করে দেব। আজ রাত্তিরটা আপনি ফিল্ড অফিসার অনিল জৈনের ঘরে শুয়ে পড়ুন। ও রায়পুরের ছেলে, বাড়ি গেছে। কাল সকালে এসে যাবে।
    আপনি রান্না করতে পারেন?
    স্টোভ এনেছি, চেষ্টা করব।
    তাড়াহুড়ো করবেন না। সাড়ে দশটায় ব্যাংক খুলে যায়। ব্যাংকের লাগোয়া ভাতের হোটেল আছে। দুবেলা ওখানেই খেয়ে নেবেন। ডাল ভাত তরকারি। গুরমিটিয়া চালের ভাত, একটু মোটা। ধীরে ধীরে সয়ে যাবে।
    এখন খিদে পেয়েছে নিশ্চয়ই। আমি গোরেলালকে দিয়ে খবর পাঠাচ্ছি। চা-নাস্তা ওখানেই হবে।
    ‘গোরে’ বলে হাঁক পাড়তেই একটি হাফপ্যান্ট পরা বছর কুড়ির ছেলে হাজির হল।
    -- কোথায় ছিলে?
    ও লজ্জা লজ্জা হাসে। কিন্তু বাচ্চা মেয়েদুটো চেঁচিয়ে ওঠে — পাপা, গোরেভাইয়া পিছনে গিয়ে গুড়াকু করছিল।
    বুঝলাম, দাঁতে মিশি ঘষছিল। এই নেশা ছত্তিশগড়ে সর্বব্যাপী ছিল। এখন তার জায়গা নিয়েছে গুটখা। গুড়াকু করলে কুলকুচো করতে হয়। এক লোটা জল লাগে। গুটখার ওসব বালাই নেই। যখন ইচ্ছে তখন প্যাকেটটি ছিঁড়ে মুখে চালান করলেই হল।
    -- অনিলের ঘরের চাবি তোমার কাছে আছে তো? এই তোমাদের নতুন প্রোবেশনার সাহাব, রায় সাহাব। এনার জন্য গিন্নিকে বলে দুধের চা বানিয়ে এনে দাও। তারপরে ঘরে পৌঁছে দাও।
    আপনি আগে চা খেয়ে গা গরম করুন। দেহাত এলাকা, বড্ড ঠাণ্ডা। সত্যি বলছেন কিছু খাবেন না?
    ব্যাংক দেখেই আমার খিদে মরে গেছল। গোরে আমার মালপত্র নিয়ে রওনা দিল। পেছন পেছন টর্চ জ্বালিয়ে আমি।
    একচিলতে ঘর-দোকান ঘরের মত, কাঠের দরজা। কোন জানালার বালাই নেই। দড়ি দিয়ে ঝোলানো কাঠের পাটাতনে গোরেলাল আমার স্যুটকেস রাখে। একটা ছোট তক্তপোষ, ছারপোকা নেই তো?
    গোরে হেসে আশ্বস্ত করে বিছানা বিছিয়ে দেয়। তারপরে একটা আধপোড়া মোমবাতি ও দেশলাই দেয়ালের কুলুঙ্গির গর্তে সাজিয়ে ওটা জ্বেলে দেয়। আমি আপত্তি করি, সংগে টর্চ আছে, ওসব লাগবে না। আর রাতে লাইট আসবে না?
    গোরে হাসে। বলে-শহুরে মানুষ, প্রথমবার গাঁয়ে এয়েচেন। এখানে লাইট গেলে পরের দিন আসে। কোন লাইনম্যান রাত্তিরে চেক করতে বেরোবে!
    -- আচ্ছা, পায়খানা কোথায়?
    -- এসব বাড়িতে পায়খানা নেই। আপনার জন্য পায়খানাওলা ভাড়াবাড়ি খুঁজে দেব কাল। সকাল সাতটায় গামছা, মগ, সাবান নিয়ে রেডি থাকবেন। আমি এসে আপনাকে বামনডবরি (বামুন পুকুর) নিয়ে যাব।
    সেখানে পাশের ঝোপঝাড়ের পেছনে আপনি আমি পায়খানা সেরে নেব। আগে মগে জল ভরে নিয়ে যেতে হবে। ছোঁচাতে কাজে দেবে।
    তারপর দুজনেই পুকুরে ডুব দিয়ে গা মুছে জামাকাপড় পালটে ফিরে আসব। এরপর নাস্তা।
    -- সকাল সাতটায়! মাঝরাত্তিরে পেচ্ছাপ পেলে?
    -- দরজা খুলে বারান্দার থেকে ছরছর করে সামনের ধুলোর উপর ছেড়ে দেবেন। সবাই তাই করে, আপনিও করবেন। এবার শুয়ে পড়ুন, সেই কখন বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছেন।
    কাঠের দরজায় ভেতর থেকে শেকল তুলে দিই, খিল লাগাই।

    তারপর বিছানায় বসে, মায়ের দেয়া গুজিয়া, পাটিসাপটা ধ্বংস করে মোমবাতি নিবিয়ে শুয়ে পড়ি। লেপ গায়ে দিতেই কেন জানি মায়ের মুখ মনে পড়ে গেল।
    অনেক জ্বালিয়েছি তোমাকে। আমার জন্য অনেক কথা শুনেছ। এবার দেখ, প্রথম মাসের মাইনে পেয়ে তোমার জন্যে কিছু স্পেশাল ---।
    গাঢ় ঘুমে তলিয়ে গেছলাম। কিন্তু কিছু একটা ঘটছে, আমার খুব কাছেই। একটা খুট খুট শব্দ। ও কিছু না বলে পাশ ফিরি। কিন্তু শব্দ থামে না যে!
    লেপ সরিয়ে উঠে বসি — এ কোথায় আছি? ধীরে ধীরে ধাতস্থ হই। সব মনে পড়ে। কিন্তু শব্দটা কিসের? আরশোলা? ইঁদুরের কিছু কাটার শব্দ? আরশোলাকে আমার বড় ভয়।
    ওরা কি এমন তালে তালে আওয়াজ করে! ঘুম চটে যায়। বুঝতে পারি ঘরের কাঠের দরজায় কেউ টোকা দিচ্ছে। খুট খুট-খুট, খুট খুট-খুট!
    মর্স কোডের মত? তাহলে এটা কোন মানুষ। কিন্তু কে? ঘরের মালিক কী ফিরে এল? এই মাঝরাত্তিরে।
    মর্সকোডের মালিক যেন অধৈর্য হয়ে উঠেছে। খট খট খটাং খট! খট খট খটাং!
    টর্চটা কোথায় গেল? শেষে পা টিপে টিপে গিয়ে দরজার শেকল খুলি, খিল্ নামিয়ে রাখি।
    দরজা খুলতেই একটা হিমশীতল দমকা হাওয়া ভেতরে ঢুকে এল। আমি কিছু বোঝার আগেই এক জোড়া ঠাণ্ডা হাত আমার গলা জড়িয়ে ধরল। লেবুতেলের উৎকট গন্ধে চেতনা অবশ।
    ভয়ে আমার অন্তরাত্মা কাঁপছে।
    কানের কাছে একটা ফিসফিসানিঃ কিতনী নির্দয়ী হো তুম? কব সে নক কর রহী হুঁ। এই ঠান্ডায় জমে বরফ হয়ে গেলাম গো!
    জিভ শুকিয়ে গেছে। তবু ফ্যাসফেসে গলা দিয়ে বেরিয়ে এ ল —কৌন? কৌন হো তুম?
    এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশ কি? গলা পেঁচিয়ে ধরা হাতের বাঁধন সরসরিয়ে খুলে গেল।
    একটা অস্ফুট আর্তনাদ—হায় দাইয়া!
    শীতল দমকা হাওয়া এক মুহুর্তে ঘরের বাইরে।
    আমি হাতড়ে হাতড়ে লেপের কোণ থেকে টর্চ বের করে আলো জ্বালি। তারপর কুলুঙ্গিতে রাখা আধপোড়া মোমবাতি জ্বালিয়ে ফেলি। জ্বলুক সারারাত। আর ঘুম আসবে না।
    আচ্ছা, আমি কি স্বপ্ন দেখছিলাম? কিন্তু বন্ধ ঘরে দেহাতি নেবুতেলের গন্ধ তখনও সজীব।

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    1
  • ধারাবাহিক | ১৩ আগস্ট ২০২৪ | ৪২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • NRO | 165.124.84.35 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০০:৩৪536318
  • Interesting. তখন তো ওই জায়গাগুলো MP র মধ্যে ছিল এবং মাওবাদীদের নামও ও তল্লাটে কেউ বোধহয় শোনেনি। পরিবর্তনটা এলো কখন? 
  • Ranjan Roy | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০০:৪৭536320
  • নব্বইয়ের দশকে।
     
     আমি রিটায়ারমেন্টের পর সরকারের অ্যাডাল্ট লিটারেসি ক্যাম্পেনের অন্তর্গত ছত্তিশগড় স্টেট রিসোর্স সেন্টারের কনসালট্যান্ট হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার সময় বস্তারের মাওবাদী এলাকায়--বীজাপুর , সুকমা, দন্তেওয়াড়ায়-- কয়েকবার গেছি। 
    আমার অবজার্ভেশন নিয়ে গুরুচণ্ডালিতে দশ বছর আগে তিন কিস্তিতে "ছত্তিশগড়ে মাওবাদ কেন সফল হতে পারে না" নাম দিয়ে তিনটে কিস্তি লিখেছিলাম।
    আপনার আগ্রহ থাকলে অ্যাডমিনেরা কেউ লেখাটিকে তুলে দেবেন।
  • NRO | 165.124.84.35 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০১:১০536321
  • সম্ভব হলে একবার re-upload করুন। 70's MP মানেই চম্বল আর Madho Singh Lakha Singh দের কথা। এখন দেখুন চম্বল প্রায় শান্ত আর ছত্তিশগড় is a no-go zone for most. How things change!
  • kk | 172.58.244.82 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০১:৪৪536326
  • এই শাঁকচুন্নির গল্পটা আমার জানা (সে-ই বাংলালাইভের সৌজন্যে), আর অত্যন্ত প্রিয় একটা গল্প। বাকি পর্বের গল্পগুলোর জন্য অপেক্ষায় রইলাম। অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়ছি রঞ্জনদা। ভালো লাগছে।
  • হীরেন সিংহরায় | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০২:০৬536328
  • কী সাংঘাতিক চিত্র নাট্য ! এর কাছে আমার জলপাইগুডি স্টেট ব্যাংকের প্রথম দিন নস্যি। প্রনাম !
  • lcm | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০২:১৬536329
  • "... ছত্তিশগড় is a no-go zone for most..." 
     
    এনআরও-র কথা বুঝতে পারি না। 
    ২০১৮-১৯  সালে দিব্য ছত্তিশগড় ঘুরে এলাম, ট্রেনে করে জগদলপুর, দান্তেওয়াড়া, কিরান্দুল - দন্ডকারণ্য এলাকা। কোনো অসুবিধে হয় নি, কিসের নো-গো ! 
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০৪:৩৪536336
  •  "ছত্তিশগড়ে মাওবাদ কেন সফল হতে পারে না" নাম দিয়ে তিনটে কিস্তি লিখেছিলাম। -
     
    রঞ্জনদা, অ্যাডমিনরা সঠিক জানবেন। আপনার লেখার গ্রাহক হিসেবে আপনার লেখার তালিকায় এই নামের কোন লেখার সন্ধান পেলামনা‌। 
  • NRO | 165.124.84.35 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০৬:১৩536344
  • আরে LCM বাবু , আপনি যে অক্ষত অবস্থায় ছত্তিশগড় থেকে ফিরে আসতে পেরেছেন তার কারণটা হচ্ছে আপনার কিছু পুরোনো মাওবাদী classmate এখন ওখানে আছে যারা আপনাকে চিনতে পেরে খাতির করে ছেড়ে দিয়েছে। আমার মতো  কোনো  সাম্রাজ্যবাদী গেলে কি আস্ত থাকতো ? 
  • lcm | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ০৯:৪৭536361
  • বোধহয়, এ গুলোই। রঞ্জনদাই বলতে পারবেন।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:2284:b84d:6174:42e2 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ১০:২৬536364
  • অনিলবাবু আর ছুটি থেকে ফিরেছিলেন? নাকি ওই যাত্রাই অগস্ত‍্যযাত্রা হয়েছিল?
     
    পাপী মন।
  • Ranjan | 2001:999:688:2d90:c91b:56c0:24ef:b373 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ১১:৩৩536370
  • @LCM 
        লেখাটি বোধহয় "छत्तीसगढ़ এ মাওবাদ: এক bihangam দৃষ্টি " , তিনটি কিস্তি। 
    2014 নাগাদ লেখা বোধহয়। 
    মোবাইলে কিছু language প্রবলেম হচ্ছে। মাফ করবেন। 
     
    @NRO
    ভাই,  আপনার ধারণাটি ভুল। 
    छत्तीसगढ़ আদৌ no no zone নয়। ওখানে 99% লোক আপনার মতই "সাম্রাজ্যবাদী" বা আমার ও LCM এর মত liberal welfare democracy ভক্ত।
     
    Tourist দের জন্য চমৎকার। একবার ঘুরে আসুন। 
    হোটেল,  पुरातत्व, ওপেন air থিয়েটার সব আছে। 
     
    শুনুন,  छत्तीसगढ़ এর তিন ভাগের এক ভাগ হল बस्तर অঞ্চল।  মাওবাদী আন্দোলন সেখানেই আটকে আছে। 
    বিস্তীর্ণ समतल এলাকায় মাওবাদী দের কোন प्रभाव নেই। 
    কারণ,  মাওবাদীরা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নতুন রাষ্ট্র গড়তে চায়। Chhattisgarh এর কৃষক ওসব চায় না।  বরং বর্তমান ব্যবস্থার মধ্যেই তাদের সমস্যার সমাধান ও উন্নতি খোঁজে। 
    এখন बस्तर অঞ্চল হোল বিশাল।  আমাদের কেরালা এবং ইউরোপের बेल्जियम এর সমতুল্য। 
     
     এখন মাওবাদী দের हेडक्वॉर्टर অবুঝমার অঞ্চলেও  সরকারের সশস্ত্র বাহিনী ঢুকে পড়ে अभियान চালাচ্ছে  ।  यवनिका পতন শুধু সময়ের अपेक्षा. 
     
    নিশ্চিন্তে ঘুরে আসুন।  Raipur airport ভারতের অনেক শহরের চেয়ে উন্নত। 
    Raipur থেকে Bastar এর  রাজধানী जगदलपुर  পর্যন্ত 300 কিমি রাজপথ  চারটে গাড়ি পাশাপাশি যাওয়ার মত । হোটেল দোকান পাট  ইত্যাদি সবই আছে  ।
    Raipur tourism এর সঙ্গে অনলাইন বুকিং করুন। 
    অপরিচিত জায়গা ও জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পরিচয় অনেক ধারণা  बदले দেবে। 
     
     
  • রঞ্জন | 2001:999:688:2d90:c91b:56c0:24ef:b373 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ১৩:২৭536375
  • Kk
    অনেক ধন্যবাদ উৎসাহ দেয়ার জন্য। 
     
    Hiren দা,
    কি या তা!
    এই লেখাটা আপনি বলায় শুরু করেছি। 
    আপনি হলেন ग्लोब trotter। 
     
    একদিকে 52 টি দেশে investment बैंकिंग ও  রাজনীতির গল্প। গ্র্যান্ড narrative। 
     
    অন্য দিকে  মাইক্রো narrative। 
    সেই একটি ঘাসের শিষের  উপরে একটি শিশির বিন্দু।  
    এটা আমাদের যুগলবন্দি ।
    আবার মামুন ভাইয়ের লেখায় বাংলাদেশের মেইন स्ट्रीम ব্যাংকিং এর জলছবি ।
     
    অতএব,  আমি  আপনার  "প্রণাম " ফেরত  দিলাম। 
  • রঞ্জন | 2001:999:688:2d90:c91b:56c0:24ef:b373 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৩১536376
  • LAM
    এটাই। 
    অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। 
    2012,?
    দেখতে দেখতে  12 বছর হয়ে গেল!
     
    বুড়ো হয়ে গেছি  । ওপারে  যাওয়ার waiting লিস্ট  এ नाम উঠে গেছে। 
    RAC এখনও পাইনি। :)))
     
  • NRO | 165.124.84.35 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ১৯:৪২536385
  • For first time, tricolour to be hoisted in 13 villages of Naxalite-hit Bastar region in Chhattisgarh on Independence Day

    Tricolour will be hoisted in Nerlighat (Dantewada district), Panidobir (Kanker), Gundam, Putkel and Chhutvahi (Bijapur), Kasturmeta, Maspur, Irakbhatti and Mohndi (Narayanpur), Tekalgudem, Puvarti, Lakhapal and Pulanpad (Sukma) villages on Thursday where such event was not held ever in the past, Inspector General of Police of Bastar Range Sundarraj P told PTI.

    (Press Trust of India, 14th August, 2024).
     
  • রঞ্জন | 2001:999:688:2d90:c91b:56c0:24ef:b373 | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ২১:১০536388
  • ঠিক।  এটাই দেখাচ্ছে মাওবাদী hinterland এ এখন সরকারি ফৌজ ক্ষমতায়। 
    এই গ্রাম গুলো মূল যাতায়াত ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন। 
    অথচ Bastar,  जगदलपुर,  दांतेवाड़ा   sukma  এবং Bijapur এ  গিয়ে দেখুন। 
     
    আর এগুলোর সঙ্গে छत्तीसगढ़ এর জনজীবন n কোন impact  নেই। 
    কারণ, ওরা  छत्तीसगढ़ এর  বিশাল জনগোষ্ঠীর থেকে ethnically আলাদা,  ভাষা  আলাদা। 
    छत्तीसगढ़ी  মূল hindir  dialect.
     
    কিন্তু Bastar এর  मारिया tribe  এর ভাষা গুলো  -- Gondi , Halwi, Sadri এবং  Kuduk এর  हिन्दी ভাষা r সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই. 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন