এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • হাল ছেড়ো না মাঝি? 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ২৭৪ বার পঠিত
  • কোথা থেকে শুরু করব বুঝতেছি না। জাতীয় না স্থানীয় দুর্দশা দিয়ে! পরিস্থিতি যে কই গিয়ে ঠেকছে তাই তো বুঝে উঠতে পারছি না। প্রতিদিন সকাল হয়, আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি, আজকে একটা কিছু শুনব, একটা কিছু ঘটবে যা নিয়ে নিজেকে বলব হাল ছেড়ো না মাঝি, সময় ঠিক হবে, ঠিক হচ্ছে। মনে হয় আমি সম্ভবত খুব কড়া দৃষ্টিতে, কঠিন সমালোচক দৃষ্টিতে দেখছি সব। একটু তো ছাড় দেওয়াই উচিত, নতুন নতুন আসছে, যাক না কিছু সময়। কিন্তু তকদির সম্ভবত খুব খারাপ যাচ্ছে আমার, আমাদের। সেই সময়টুকুই দিতে পারছি না আমি। এই দুই একদিনেই যা যা হয়ে গেল তাতে একটু হাঁফ ছাড়ার মতোও কিছু পাই নাই। বরং এমন সব অবস্থা করেছে যে ঋণাত্মক চিন্তাভাবনা আরও কঠিন হয়ে জেঁকে বসেছে মাথায়। 

    আমার বড় বোন, মেজো বোনের ছেলে মেয়ে গুলা একটা কলেজে পড়ে আর দুইটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। খুব আগ্রহ নিয়ে ওদের আলোচনা শুনি আমি। ধরতে চেষ্টা করি ওদের আন্দোলনের এই ফসল সম্পর্কে ওদের কী ধারণা। ওরাও ইতিহাস, নিয়ে কোন ব্যক্তি নিয়ে কিছু জানার ইচ্ছা থাকলে আমাকে নক দেয়। আমি ওদের জন্য একটা আলাদা মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে দিছি। আমি দেখতে চাই ওদের চিন্তা ভাবনার দৌড়। উপদেষ্টাদের তালিকা আসল, সব ভুয়া তালিকা। কে কেমন তার সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাস করল। ওরা কাওকেই চিনে না। আমি নাম ধরে ধরে বললাম যে কে কেমন, কাকে আমি পছন্দ করছি না, কেন করছি না। এরপরে আসল উপদেষ্টাদের তালিকা আসল, আবার যাদেরকে আমি চিনি তাদের সম্পর্কে বললাম। নানা গ্রুপে ওরা যুক্ত হয়ে আছে। আমাকে এসে ওই সব গ্রুপের আলোচনার বিষয় বস্তু জানায়। আমি ধরে দেই আলোচনার সূত্র। কেউ বই সম্পর্কে জিজ্ঞাস করেম পড়তে বলে, ওরা আমাকে নাম দিয়ে বলে এইটা কেমন? আমি উত্তর দেই, কেন ভালো বয়া কেন সুবিধার না তা জানাই। বলি বই পড়তে নিষেধ করা আমার ধর্মে নাই। অবশ্যই পড়বি কিন্তু মূলধারায় অনেক অনেক বই আছে, আগে গুলাই পড়। যে গুলা নিষিদ্ধ তার মানে এই না যে সব সত্য ওই বইয়েই আছে। নিষিদ্ধ না কিন্তু ভালো ইতিহাস সমৃদ্ধ বই অনেক আছে। আগে ওগুলা পড়। ওরা পড়ছে, কী পড়ছে জানি না। দেখা যাক কই গিয়ে ঠেকে ওদের এই আগ্রহ। 
    ওদের কথা লিখলাম কারণ ওরা আমাকে সব সময়ই বলে তুমি একটু পজিটিভ হও! সব খালি খারাপ ভাব কেন? আমিও চিন্তা করি হ, দেখি একটু ভালো ভাবে। আর তখন আমার চোখের সামনে আসে আন্সারুল্লাহ বাংলা ভাই গ্রুপের প্রধান রাজীব হায়দারকে কোপানো মামলায় জেলে ছিল সে হুড খোলা গাড়িতে দুই হাত উঁচু করে আর্মির সামনে দিয়ে বের হয়ে আসছে জেল থেকে, সেই ছবি! আমার সমস্ত চিন্তা চেতনা এলোমেলো হয়ে যায়। আমি স্তব্ধ হয়ে থাকি, খুঁজতে থাকি এর মধ্যে কোন জায়গায়, ঠিক কোন বিন্দুতে আমি পজিটিভ হব! 
    নারায়ানগঞ্জে গাজি গ্রুপের গাজি টায়ার ফ্যাক্টরি ছিল। গাজি সাহেব ধরা পড়েছে আর সাথে সাথে মানুষ আবার, এতদিন পরে লুটের নেশায় ছুটে গেছে টায়ার ফ্যাক্টরিতে। টায়ার ফ্যাক্টরিতে কী লুট করবে? কেউ জানে না, যা পাবে তাই নিবে! শত শত মানুষ ঢুকে গেছে ফ্যাক্টরিতে। টায়ার ফ্যাক্টরিতে কেমিক্যাল, রাবার এগুলাই সব। ছয় তলা একটা ফ্যাক্টরি। একদল লুটের নেশায় ঢুকেছে আর আরেক দল দিয়েছে আগুন! কেমিক্যালের আগুন! নিমিষে আগুন ছড়িয়ে গেছে। আগুন যারা দিয়েছে তারা আবার তালাও লাগিয়ে দিয়েছে এমনও শোনা যাচ্ছে। মানে নিষ্ঠুরতার কোন সীমা পরিসীমা নাই! আগুন যখন নিয়ন্ত্রণের বাহিরে তখন বাহিরে মানুষের আহাজারি শুরু। ১৭৪ জন নিখোঁজ! কেউই কারখানার শ্রমিক না। সবাই আসছিল লুট করতে। এমনই এগুণ যে চারদিন হয়ে গেছে এখন পর্যন্ত উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়নি। মানে ভিতরে ঢোকাই যায় নাই। কালকে দেখলাম কয়েক তলা ধ্বসে পড়েছে! ভিতরে যে কয়জনই ছিল তাদের কিছু মাত্র অবশিষ্ট নাই আর। প্রতিহিংসা নিজেরই যে ক্ষতি করে এইটা সম্ভবত জ্বলন্ত প্রমাণ। 
    এই দুঃসময়েই এমন আরেকটা ঘটনা ঘটেছিল। এক হোটেল লুটের জন্য ঢুকেছে মানুষ। আরেক পক্ষ দিয়েছে আগুন। পুড়ে শেষ সবাই। হোটেল পুড়ে শেষ মানুষ পুড়ে শেষ! আমরা জাতি হিসেবে শেষ! একটা জাতির চরিত্র যদি এমন হয় সুযোগ পাওয়া মাত্র শিক্ষা দীক্ষা সব ভুলে, নীতি নৈতিকতা সব ঝেড়ে ফেলে দিয়ে লুটতরাজে মেতে উঠি তাহলে সেই জাতির সামনে ভালো কিছু থাকার কোন সম্ভবনাই নাই। তার সামনে অন্ধকার, নিকষ কালো অন্ধকার। 
    স্থানীয় দুঃসংবাদ গুলো একটু বলে নেই এই সুযোগে। ঢাকায় বিএনপির দাপট চোখের সামনে না দেখা গেলেও সারাদেশ শূন্যতায় নাই, প্রকৃতি শূন্যতা পছন্দ করে না। যে কোন শূন্যতাই কোনদিন থাকতে পারে না। কেউ না কেউ সেই জায়গা নিয়ে নেয়। আমাদের এখানেও তাই হয়েছে। বিএনপি প্রবল প্রতাপে আওয়ামীলীগের শূন্যতা পূরণ করেছে। করতে গিয়ে হুশ হারিয়ে ফেলেছে। প্রেস ক্লাবের আগের কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু তা বিএনপি নেতাদের পছন্দ হয় নাই। তাদেরকে জানিয়ে করা হয় নাই না কী কাহিনী জানি না। তারা অফিসিয়াল প্যাডে বিবৃতি দিয়েছে যে এই কমিটির কোন ভিত্তি নাই। বিএনপি শেরপুর জেলা শাখা এই কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করল! আমাদের জেলার বিএনপি নেতারা ভেবেছে প্রেস ক্লাব তাদেরই কোন অঙ্গ সংগঠন, যার কমিটি তারা ইচ্ছা করলে বিলুপ্ত ঘোষণা করতে  পারে! 
    সারাদেশ থেকে এইটার প্রতিবাদ আসছে। গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন এইটা হচ্ছে তার নমুনা। যেহেতু এইটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাই হয়ত এটার একটা ফয়সালা হবে। কিন্তু সত্য তো আমি আপনে তুই তুমি সবাই জানি যে তারা যেটা করছে ওটাই সত্য। এই কাজ আওয়ামীলীগ করে আসছে, তারাও করবে। তাদের না করতে দিলে চলবে? ভারসাম্য থাকল তাহলে? 
    সূর্যের চেয়ে বালির তাপ বেশির মতো অবস্থা সব জায়গায়। একটা ঘটনা শুনেন। বাটার যে দোকানটা আমাদের শহরে আছে ওইটার বাটার নিজেরই। ওরাই লোক নিয়োগ দিয়ে চালাচ্ছে। আগে এইটা ডিলারশিপ নিয়ে চালাত যিনি তিনি আওয়ামীলীগ করতেন। তার বাবাও করত। এখন বাটার সাথে তাদের সম্পর্ক হচ্ছে ওই ঘরটা তাদের যে ঘর ভাড়া নিয়ে বাটা দোকান চালাচ্ছে। পাঁচ তারিখ লুট হল এই দোকান। আমি শুনেই বলছি এইটা আরেক জনের দোষে অন্যজন ধরা খাইল। যাই হোক, সব একটু স্বাভাবিক হলে দোকান চালু হল। আমি একদিন দেখে আসলাম। পুড়ে দই নাই তাই রক্ষা। কিন্তু একটা জুতাও রেখে যায় নাই কেউ। আবার সব নতুন করে শুরু করেছে। যেদিন গণ্ডগোল শুরু সেদিন সর্বশেষ খদ্দের আমরাই ছিলাম। আমাদেরকে বিদায় করেই তারা দোকান লাগায় দেয়। পরের কাহিনী ইতিহাস। তো আবার দেখলাম। এরপরেই শুনি আরেক গল্প। কী হয়েছে? এক মহিলার সাথে আরেক মহিলার ঝগড়া। একজন না কি আরেজনের বাচ্চাকে ধরে মারছে! হাস্যকর কথা না? এইটা নিয়ে দুইজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া। দোকানের ম্যানেজার যা করার তাই করছে। দুইজনকে আলাদা করে একজনকে বের করে দিছে। কেন বের করে দিল? তার বিচার কেন করল না? এই জন্য এই মহিলা দোকান ভাংচুর চলানো শুরু করে দিল! জুতা ঢিল মারছে, রেক গুলা নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিছে। ম্যানেজার বলছে আচ্ছা, আমরা সিসি ক্যামেরা দেখি। সিসি ক্যামেরা কেন দেখতে হবে? আমি বলছি না ওই মহিলার দোষ? আমার কথা বিশ্বাস হয় না আপনার? তিনি দিলেন তার পতি পরমেশ্বরকে ফোন! আসল জোর হচ্ছে এই মহান স্বামী দেবতা! তিনি সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আসলেন। এসে দোকানের মধ্যে ম্যানেজারকে গোল করে ঘিরে ধরে চড় থাপড় মারতে থাকলেন সবাই মিলে। মেরে টেরে তারা চলে গেলেন। তাদের পরিচয়? বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় বাড়ি। তেমন বড় কোন নেতাও না, দুই একজন বাদে কেউ ঠিকমতো নাম বলতে পারল না। তারা কে কোন এলাকা থেকে এসেছে এইটা তারা সগৌরবে প্রচার করে গেছে দেখে আমরা জানলাম কারা এখন শহরে রাজ করছে! 
    সুমন মুকুন্দ দাস। মেহেরপুর ইসকন মন্দিরের পরিচালক ভারতের এক টিভি চ্যানেলে বলেছেন তাদের মন্দির পুড়ে যাওয়ায় তারা এবার জন্মাষ্টমী পালন করতে পারছেন না। কেন এইটা বলল তা নিয়ে সংখ্যাগুরুটা মন খারাপ করেছে! কেন বলবেন এই কথা? দেশের ভাবমূর্তির কত ক্ষতি হয়ে গেল না? সদ্য একটা সরকার কেবল ক্ষমতার চেয়ারে বসেছেন, এমন কথা কেউ বলে এই সময়? কেউ উনার কথাকে বিকৃত করে প্রচার করছে। তিনি না কি বলছেন সারা দেশের হিন্দুরাই এই কারণে জন্মাষ্টমী পালন করতে পারছে না। না, তিনি এমন কিছুই বলেন নাই। তিনি মেহেরপুর ইসকন মন্দির পুড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন, বলেছেন পুড়ে যাওয়ায় তারা এবার জন্মাষ্টমী পালন করতে পারছেন না। তিনি আরও বলেছেন  "বাংলাদেশে এখন বন্যা চলছে, ফলে বাংলাদেশের সব মন্দিরে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আমরা জন্মাষ্টমী উদযাপনের জন্য যে অর্থ সংগ্রহ করেছি তা বন্যা দুর্গতদের সেবায় খরচ করব। ইসকনের তরফ থেকে লাখেরও বেশী মানুষকে খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে, অন্য সংগঠনগুলোও তাদেরকে সাহায্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।"  এখানে ভুল বলল কে? কিন্তু ওই যে ভাবমূর্তি! মন্দির পুড়ে দেওয়া হয়েছে এইটা উলঙ্গ হয়ে সামনে এসে গেছে। এতেই যত সমস্যা। যারা এই কাজ করেছে তাদেরকে ধরে শাস্তির আওতায় না এনে, বিচার করে ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেয়ে ধমক দিয়ে, গলার জোরে এই সব কিছুকে ধামাচাপা দেওয়াকে বেশি সহজ সুবিধাজনক বলে মনে করেন তারা! 
     দুই একদিন আগে একটা ওয়েবসাইটের লিংক পেয়ে ঢুকলাম। অবিশ্বাস্য! নাম হচ্ছে চিনে রাখুন! এখানে এই আন্দোলনে বিভিন্ন মানুষের ছবি, পরিচয়, নাম ঠিকানা সব দেওয়া আছে। এরা এই আন্দোলনের সময় আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। কেউ পুলিশের সদস্য, তিনি কোথায় গুলি করেছেন তার উল্লেখ করা আছে। এই কত ভয়ংকর একটা ব্যাপার একবার চিন্তা করে দেখেছে কেউ? এগুলার সত্যতা কে নির্ণয় করবে? একজনও যদি এখানে ভুল করে থাকে তাহলে তার জীবন শেষ না? রীতিমত হিট লিস্ট এইটা। লিস্ট এখনও ছোট। কিন্তু এইটা বড় হতে কতক্ষণ? প্রতিটা নামের সাথে বিস্তারিত দেওয়া। ভিডিও লিংক দেওয়া। যাতে গণ্ডগোলের সময় তারা কী করেছে তার প্রমাণ। এই প্রমাণের প্রমাণ কী? কয়েকটা দেখলাম ছবি দেওয়া! এই ছবির সত্য মিথ্যা বের করবে কে? আর সবচেয়ে বড় কথা এইটা কেউ করতে পারে? একটা হিট লিস্ট বানিয়ে ওয়েবসাইটে দেওয়া? কে তাদের এই অধিকার দিয়েছে? কেউ নাই এগুলা দেখার। 
    আইন উপদেষ্টা গতকাল জামাতের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। আওয়ামীলীগ নিজের স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। আওয়ামীলীগ খুব খারাপ এইটাই হচ্ছে বক্তব্য। হুবুহু রাজনৈতিক দলের নেতারা যেমন বক্তব্য দিয়ে থাকেন। সব দোষ আগের সরকারের। সাকিব আল হাসানের নামে মিথ্যা মামলা সম্পর্কে বলতে গিয়েও আওয়ামীলীগ বন্দনা করে পরে বললেন এইটা কাম্য না! নিশ্চয়ই পুলিশ সুষ্ঠ তদন্ত করবে। সংক্ষুব্ধ পরিবার যারা নিকট আত্মীয় হারিয়েছে, যারা সন্তান হারিয়েছে তারা যদি মামলা করে তাহলে এই ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কী করতে পারে? খুব সলিড কথা। কিন্তু এক নজর তাকালেই যখন বুঝা যায় এই সব মামলা একটাও কোন সংক্ষুব্ধ পরিবার করে নাই, বরং বেশির ভাগ বিএনপি জামাতের বিভিন্ন নেতা পাতি নেতার করা, সেই সম্পর্কে কোন একটা শব্দও তিনি বললেন না! 
    সব কিছুর মধ্যে এটর্নি জেনারেল আমাকে একটু স্বস্তি দিয়েছে। তিনি আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করার যে রিট তা খারিজ চেয়ে আবেদন করেছেন। তিনি বলেছেন অতীতে রাজনৈতিক বিষয় আদালতে টেনে আনা হয়েছে, এইটা কাম্য না। আমরা এই জিনিস চাই না। রাজনৈতিক বিষয় রাজনীতিতেই থাকুক, আদালত এইসবে মাথা ঘামাবে না। বিচার বিভাগ যদি আমাদের নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা দেয় তাহলে তো ভালোই। যদিও জানি যারা বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে তারা কোন ক্ষেতের মুলা! আর সব কিছুর মতোই, ঢাকা বাংলাদেশ না। ঢাকার বাহিরে বিচার বিভাগ নিয়ে ফুটবল খেলা শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। তবুও, এটর্নি জেনারেলের এই কথা এখনকার জন্য স্বস্তি এনে দিয়েছে। আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে এই কথা বলেছেন বলে বলছি না, এইটা বিএনপি হলেও বলতাম আমি। 
    একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে গতকাল দেশে। যে দুইজন ছাত্রকে উপদেষ্টা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা বিদেশি দুইজন ব্যক্তির সাথে কথা বলছেন দোভাষীর মধ্যমে! এইটা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। এক পক্ষ যথারীতি যা দেখেন তাই ওয়াহ ওয়াহ! এমন দেখি নাই আগে বলে উঠছেন। তারা বলছেন ইংরেজি জানা না জানা দিয়ে কিছু আসে যায় না। কত কত উন্নত দেশের মন্ত্রীরা দোভাষী দিয়া কথা বলে। তাতে তাদের জাত চলে গেছে? আরেক পক্ষ এইটাকে পুঁজি করে মেধাবী কোটা নিয়ে ট্রল করছে। এত মেধাবী বলে আন্দোলন করল আর শেষে এসে এই দশা? দুইজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র। ইংরেজি তো সমস্যা হওয়ার কথা না, উচিত না। কিন্তু এইটা নিয়ে আসলেই আমার কোন মাথাব্যথা নাই। এইটা বললাম শুধু চিন্তা করে যে আমারা আমাদের পছন্দের লোকের দোষ গুন চোখ বন্ধ করে সমর্থন দেই। এই কাজ আজকে ছাত্রলীগের কেউ করলেই দুইপক্ষ তাদের বক্তব্য পরিবর্তন করে পক্ষ বদল করে ফেলত! আমাদের চিন্তার পরিপক্বতা আসে নাই, এইটাই হচ্ছে কথা। 
    শেষ করি। শুরুতে আন্সারুল্লাহ দলের নেতা মুক্তি পেয়েছে বলছি। এখন আরেক নিষিদ্ধ সংগঠনের কথা বলি যারা বুক ফুলিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সব জায়গায়। সেটা হচ্ছে হিজবুত তাহরীর! এই নিষিদ্ধ সংগঠন হোলি আর্টিজেনের ঘটনায় যে দুইজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিল তাদের স্মরণে যে ভাস্কর্য বানানো হয়েছিল সেই ভাস্কর্য ভেঙ্গে দিয়েছে! দীপ্ত শপথ নামের এই ভাস্কর্য ভেঙ্গে সেখানে খেলাফতের আহবান জানানো পোস্টার লাগিয়ে দিয়েছে। এইটা কবের ঘটনা? গতকালের ঘটনা মানে সরকার গঠন করার প্রায় বিশ দিন পরে যখন দাবি করা হচ্ছে আইন কানুন ফিরে আসছে দেশে। কোথায় এই ভাস্কর্য? ঢাকার গুলশান এভিনিউয়ে ! ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে কেউ ভাস্কর্য ভেঙ্গে চলে গেছে খেলাফতের পোস্টার টাঙ্গিয়ে। কেউ কিছু জানে না। গুলশান থানার পুলিশ এইটা নিয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি! দায়িত্বশীল কেউ কোন বক্তব্য দেয় নাই। হিজবুত তাহরীর নিষিদ্ধ ২০০৯ সাল থেকে। এরা উগ্র ইসলামিক দল। যারা খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য কট্টর অবস্থান নিয়ে চলে। ৫ তারিখ আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরেই এরা প্রকাশ্যে চলে আসে। কোন রাখঢাক না করে ব্যানার নিয়ে, পোস্টার নিয়ে তারা মিছিল করে চলছে। ত্রাণের জন্য ক্যাম্প বসিয়েছে! সব চলছে চোখের সামনে। কেউ একটা শব্দ পর্যন্ত করছে না। 
    আমি যদি চোখে শুধু অন্ধকার দেখি তাহলে খুব দোষ দেওয়া যাবে আমাকে?  
     
    https://www.banglatribune.com/country/dhaka/860000/%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%80-%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A7%A7%E0%A7%AD%E0%A7%AA-%E0%A6%9C%E0%A6%A8-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%96%E0%A7%8B%E0%A6%81%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A7%87
     
    https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/6ebaebf74ce7
     
    https://chinerakhun.com/
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ২৭৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Guru | 103.250.109.197 | ২৯ আগস্ট ২০২৪ ১০:৪৪536933
  • আপনার সঙ্গে অনেক ব্যাপারে আমার বিরোধিতা থাকলেও আপনার সাহসী কলমের প্রশংসা করি | আপনার লেখাগুলোই এই সময়ের জীবন্ত দলিল যা পরে প্রকাশ করবে বাঙালীর একটা বিশেষ সময়ের গাঁথা | সর্বশক্তিমানের রহমতের উপরে ভরসা রাখুন , সময় একসময়ে বদলাবেই |
     
    আমি একটা পসিবিলিটির কথা ভাবতে চাই | দেখুন শেখ হাসিনার ছেলে মেয়ে নাতি নাতনি সবাই তো পশ্চিমে | আচ্ছা ধরুন মোদী আর জয়শঙ্করের মধ্যস্থতায় শেখ হাসিনা রাজি হয়ে গেলেন আম্রিকাকে একটি নৌ ঘাঁটি দিয়ে দিতে আর আবার গদিতেও ফিরে এলেন |  এরকম হতে পারেনা কি ?
  • Guru | 103.250.109.197 | ২৯ আগস্ট ২০২৪ ১০:৫৮536934
  • চিনে রাখুন ওয়েবসাইট সত্যি ভয়ের বিষয় | এর ফলে ভিজিল্যান্টিজম বাড়বে সমাজে | যেটি কোনো সুস্থ সমাজেরই জন্য ভালো লক্ষণ নয় | আসলে যেহেতু বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন বলে কিছুই নাই তাই হয়তো এসব হচ্ছে | unfortunately বাঙালির ইতিহাসে এই ধরণের ভিজিল্যান্টিজম নতুন নয় | শহীদ জননী এবং শাহবাগ আন্দোলনের হোতারাও স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচারের জন্যে তাদের খুঁজে বের করতে এই রকম মুভমেন্ট করেছিলেন | কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে জামাত শিবির এতো অর্গানাইজেড একটি ওয়েবসাইট বানালো কি করে ? কে তাদের এইসব তথ্য দিলো ?
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২৪ ১২:৫১536936
  • আপনে ভাল থাকেন ভাই!
     
    "অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে   এ পৃথিবীতে আজ,
    যারা অন্ধ, সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা;
    যাদের হৃদয়ে কোন প্রেম নেই, প্রীতি নেই, 
    করুণার আলোড়ন নেই
    পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া"। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:90d7:2123:125f:a818 | ৩০ আগস্ট ২০২৪ ২০:৩৫537013
  • পড়ছি
  • aranya | 2601:84:4600:5410:90d7:2123:125f:a818 | ৩০ আগস্ট ২০২৪ ২০:৪০537015
  • অত্যন্ত জরুরী, এই লেখাগুলো
  • aranya | 2601:84:4600:5410:90d7:2123:125f:a818 | ৩০ আগস্ট ২০২৪ ২০:৪৪537017
  • আমার সোনার বাংলা :-(
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন