ইন্দ্র রায় রোড ধরে হেঁটে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রোডে ওঠার মুখটায় ডানদিকের কোণায় ‘দাঁ পেপার হাউস’, রাস্তা থেকে বেশ অনেকটা উঁচু বেশ কয়েক ধাপ সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। দোকানের ভেতরে নতুন খাতার গন্ধ, নতুন উডপেন্সিল আর রবারের গন্ধ, হলদে গোলাপী চার্টপেপারের গন্ধ, নতুন বইখাতায় মলাট দেবার ব্রাউন পেপারের গন্ধ ম’ ম’ করে। আর আছে রং পেন্সিল, রং কলম আর রঙ বাক্স। মোম দেওয়া রঙ পেন্সিলের ছোট বাক্স ড্রয়িং ক্লাসের দিন ইস্কুলে নিয়ে যেতে হয়। আমারটা বারো রঙের ছোট্ট বাক্স, সুলগ্না খুব সুন্দর আঁকতে পারে, ওর বাক্সে আঠেরটা রঙ। ত্রিসীমার একটা ইয়াব্বড় বাক্স আছে তাতে ছত্রিশটা রঙ, একদিন ইস্কুলে দেখাতে এনেছিল। ... ...
এইভাবেই আলাপ হয়ে যায় রোমানিয়ান মেয়ে দুটির সাথে। বন্ধুর অ্যাপার্টমেন্টের একদম লাগোয়া একটা গলি আর সেই গলিতে ছিল দুটি লাল-জানালা। অনেকেই হয়ত এটা জানেন যে আমষ্টারডামে বিশেষ ভাবে চিহ্নত রেড-লাইট ডিষ্ট্রিক্ট ছাড়াও, গোটা শহর জুড়ে বেশ কিছু জায়গায় আরো ছড়িয়ে আছে এমন লাল-জানালা। আসল রেড-লাইট ডিষ্ট্রিক্টের মোট জানালার তুলনায় এরা গুণতিতে তত না হলেও – মাঝে মাঝেই চোখে পড়ে যেত এদের উপস্থিতি। ঠিক তেমন ভাবেই বন্ধুর অ্যাপার্টমেন্টের পাশের গলির সেই লাল-জানালা দুটো চোখ পরে যায় একদিন। ... ...
... ... ...
একমাস আগের কথা।তারিখটা স্পষ্ট মনে আছে - মার্চের ২৬। সেদিন ঠিক বেলা একটার সময় আমার কাছে একটা ফোন এসেছিল।- ওয়াচ অ্যান্ড সিকিউরিটিজ? বিলাসপুর, লিংক রোড?-জী হ্যাঁ, বোল রহা হুঁ। - মিঃ কোসলে? ডায়রেক্টর?- না, আমি ওঁর অ্যাসিসট্যান্ট বিশ্বাস বলছি।উনি একটা কাজে একটু বাইরে গেহেন। কাল রাত্তিরে ফিরবেন।-- সৌরভ? সৌরভ বিশ্বাস? বাবুমোশায়? জাস্ট দ্য ম্যান আই ওয়ান্ট!--জী হ্যাঁ, আপ কৌন?-- কাজের কথাটা আগে শুনে নিন। আগামীকাল আপনাকে ইন্দোর এক্সপ্রেসে বুড়ার যেতে হবে। বুড়ার হোল জবলপুর লাইনে শাহডোলের আগের স্টেশন। পরশুদিন বিকেলে একই ট্রেনে করে ফেরতের ব্যবস্থা। টিকিট, অন্য খরচা এবং কিছু অ্যাডভান্স একটু পরে আজ রাত্তির আটটার মধ্যে আপনাদের ... ...
আমি আমার ছেলের শরীরে সুখী। খুশি কিনা আজও ভাবিনা। ছেলে হয়ে জন্মানোর সুবিধা ভোগ করতে করতে অভ্যেস হয়ে গেছে। মনে মনে কখনও কখনও নিজেকে নারী ভাবলেও ছেলের শরীরটার পরিবর্তন আমি চাইনি কখনও । মেয়েদের "মত" হওয়া আর মেয়ে হওয়া এক না। আমার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের খামতি, অনেক ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলেও আমি তা নিয়ে ভাল আছি। আমি আমার জন্মগত লিঙ্গচিহ্ন পরিবর্তনের কথা আজও ভাবিনা। অথচ হ্যাঁ একথাও সত্যি আমিও মনে মনে নিজেকে মেয়ে ভাবতেই ভালবাসি, তথাকথিত হেটারোনর্ম্যটিভ মানুষদের মতই বিছানা ও জীবনে আমার পুরুষ সঙ্গীর জন্য তার তথাকথিত স্ত্রী হয়ে থাকতে চাই। তারপরেও আমি চাইনা আমার স্তন নারীর মত হোক, বা আমার প্রশস্ত যোনি পথ থাকুক। শাড়ী আমার প্রিয় পোষাক আবার তার জন্য দাড়িও থাকবেনা এ ভাবনা আমার নেই। চিরকাল মনে ভেবে এসেছি পোষাক আমার পরিচয় না। যে গয়না আজ পড়লে লোকে হাসে, তাইই তো দেখি মন্দিরের দেবতার গায়ে। তবে কেন এ সামাজিক দ্বিচারিতা আজও বুঝিনা ... ...
আমার ছোট বেলা থেকে বড় হওয়ার মধ্যেও বেশ কিছুটা মেয়েলিপনা ছিল। একটা বয়স পর্যন্ত সেগুলো নিয়ে বাড়ীর লোকে প্যাম্পার করলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে নিজের সাজগোজের ইচ্ছেটা মনের মাঝেই লুকিয়ে ছিল। রণ র সঙ্গে সম্পর্কের কারণে সেটা আরও চাপা পড়ে গেছিল। আসলে বিছানায় নারীত্বকে নিয়ে আদিখ্যেতা করলেও বাইরে যে সেটা করা যায় না। তারপরেও মেয়েলি পুরুষের সঙ্গে চলাফেরায় যদি নিজের সম্পর্কে লোকে কিছু বলে! যদি গোপন কথা গোপন না থাকে। নিজেকে তো মেয়ে মনে করে মেয়েলি হতে চাইতাম না। সেবার চন্দননগর থেকে বাড়ী ফেরার সময় ছলবলে কয়েকটা বাচ্চার সাথে আলাপ হল। এতদিন দূর থেকে দেখলেও সামনাসামনি আড্ডা দিতে দিতে একসঙ্গে ফিরলাম সেদিন। একসাথে ফিরতে গিয়ে আরও একটু জ্ঞান অর্জন হল। বুঝলাম আসলে কতি মানে মেয়েলি পুরুষ। এটা উল্টি ভাষা সে ভাষায় আরও কিছু বিশেষ শব্দ যোগ হল আমার ঝুলিতে, সবগুলো শব্দই যৌনতায় মাখামাখি। কিন্তু সাহিত্যের ছাত্তর হয়েও এমন ভাষার কথা কোনদিনও শুনিনি। ভাবলাম হবে হয়তো কোনও আঞ্চলিক ভাষা। ওরা আমাকেও "কতি" বলতেই রিয়্যাক্ট করে উঠলাম, "আমি কতি নয়"। তখনও জানতাম না এই মানুষ গুলোই একদিন আমার ভবিষ্যতের হাসিকান্নার সাথী হতে চলেছে। ... ...
দুর্গোপূজো শেষ, বিজয়াদশমীর বিসর্জন সবে শুরু। বিকেল পাঁচটা নাগাদ অন্ধকার ঘনিয়ে আসার সময় দূর থেকে কোথাও অবাঙালী পাড়ায় রাবণ জ্বলছে, বাজি পুড়ছে। তার দূরাগত গুরুগুরু ধ্বনি মিলিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ঘড়ি ধরে দরজায় কড়া নড়ে উঠত। বাচ্চারা টের পেতাম ঢাকুরিয়া থেকে দুই জোড়া পিসিমা-পিসেমশায়রা এসেছেন! যাঁদের পদবি ছিল মজুমদার, বাঙাল উচ্চারণে মন্দার!দরজা খুলতেই ধোপদুরস্ত ধুতিপাঞ্জাবি পরা বিপুলবপু... ... ...
এতো শুধু বেড়াতে যাওয়া নয়, মনের মধ্যে কুড়কুড়িও। অনেকটা সময় বিপ্রদাসকে নিজের মত করে পাওয়া, অনেকরকম ভাবনা, উত্তেজনাও। আমার কাছে ডায়মন্ড হারবার বা বকখালি মানেই তখন বইয়ে পড়া জগত, "সপ্তপদী" সিনেমার এই পথ যদি না শেষ হয়। রাস্তায় যেতে যেতে অনর্গল বকবক। কথায় কথায় বেড়িয়ে গেল আমি সাঁতার জানিনা। শুরু হল স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিপ্রদাসের ভয় দেখানো। বকখালি যেতে হলে পার হতে হয় হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী, আর সেটা নাকি পার হতে হয় ডিঙি নৌকাতে। এ নদীতে কামঠের প্রকোপ অনেক বেশি। যদিও কার্যক্ষেত্রে দেখলাম নদীটা অত চওড়া না তবে গভীরতা বেশি। আর ডিঙি নৌকা না সাধারণ দাঁড় টানা নৌকায় পারাপার। যদিও ভেসেলে করে বাস বা গাড়ী সমেত পার হওয়া যায়। তবে তার নির্ধারিত সময় আমরা অনেক আগেই পেরিয়ে গেছি। এরপর আঁধার নামতেই শুরু হল লোডশেডিং, গ্রাম্য রাস্তায় সাপখোপ আর তেনাদের গল্প। এ যেন নতুন করে ইন্দ্রনাথের সাথে শ্রীকান্তর অ্যডভেঞ্চারে যাওয়া ... ...
এখন পর্য্যন্ত যা নমুনা দেখা গেছে তাতে মনে হচ্ছে ছোটে পালোয়ানের বংশটি বেশ খানদানি। ওর প্রপিতামহের নাম পর্য্যন্ত মনে আছে! আর সমস্ত খানদানি বংশের ছেলেদের মত ও নিজের পরিবারের গৌরবগাথা শোনাতে ভালবাসে। কখনও কখনও কুস্তির আখড়ায় সাথিদের কিসসা শোনাতে থাকেঃ ... ...
একদিন গঙ্গার ঘাটে বসে বসে অনেক ভাবলাম, মনে হল, আচ্ছা ছোটবেলা থেকে শেখা মুল্যবোধ আর সংস্কারের বিসর্জনও তো আত্মহত্যারই নামান্তর। তাহলে আর সতীত্বের সংস্কারে নিজেকে বেঁধে, বেঁচে থেকে কি লাভ! তাই একগামিতা-সতীত্ব-সংস্কার বিসর্জন দিয়ে শুরু করলাম সেক্স ওয়ার্ক। ম্যাসাজ পার্লার, টয়লেট, হাইওয়ে যা এতদিন দূরে ছিল সেই সব জায়গায় যাওয়াও শুরু হল আমার। ভাষা ভাষা ধারণা ছিল "বহুজনের সাথে সেক্স করলে এডস হয় আর এডস হলে মানুষ মরে যায়।' আর তাই এই সহজ ও পেইনলেস আত্মহত্যার এই রাস্তাই বেছে নিয়েছিলাম সেদিন।তখনও এত ম্যাসাজপার্লারের ছড়াছড়ি কোলকাতা শহরে হয়নি। দক্ষিণ কোলকাতার সদ্যগজানো সেসব পার্লারে পয়সা ওয়ালা অভিজাত লোকেদের আসর।যদিও আজন্মলালিত সংস্কার বিসর্জন দেব বললেই দেওয়া যায় না। আর তাই একদুদিন যেতে না যেতেই ম্যাসাজ পার্লারের ম্যাসিওর কাম পুরুষ যৌনকর্মী হওয়া মোটেই শান্তি দিচ্ছিল না আমাকে। ... ...
কৈশোরে গড়ের মাঠে (তখন মনুমেন্ট ময়দান নয়, গড়ের মাঠই বলা হত) ফুটবল ম্যাচ দেখতে গিয়ে মাউন্টেড পুলিশের তাড়া খেয়ে (ঘোড়সওয়ার পুলিশ) গ্যালারিতে বসার পর টের পেলাম — এটা ঘটিদের, থুড়ি মোহনবাগান সাপোর্টারদের এলাকা। মুখে কুলুপ এঁটে ওদের কথোপকথন শুনতে গিয়ে জানলাম — খেলার মাঠে বাঙালদের কোড নেম ‘জার্মান’! কেন? কে জানে! ... ...
এইসময় আমি আস্তে আস্তে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিলাম নাচ কে। দিদি মানে আমার নাচের গুরু শিখিয়েছিলেন পি.সি. সরকারের বলা সাফল্যের তিনটি মন্ত্র প্র্যকটিস, প্র্যাকটিস,আর প্র্যাকটিস। তাই দিদির ক্লাসের আর এক ছাত্র এগিয়ে এল তালিম দিতে। সপ্তাহে আরও একটা দিন করে বাড়ল প্রথাগত অভ্যেস। শুরু হল তার বাড়ীতে আলাদা করে যাওয়া। কোনও একদিন দিদির নাচের অনুষ্ঠানের শেষে বেশ রাত হওয়ায় তার বাড়িতে থেকে গিয়েছিলাম। আর রাতের বেলা আমার শরীরে উঠে এসেছিল সে। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলাম তাকে। হিসহিসিয়ে উঠেছিল, "তোমার রণ তো তোমায় এর আগেই এতদিন ধরে ভোগ করেছে। আর আমার বেলায় এত সতীপনা!" ঘেন্নায় কুঁকড়ে উঠেছিলাম। এখানেই শেষ হয়নি টলিউডি সংলাপ! হিসহিসিয়ে বলে উঠেছিল, "কি মনে করিস আমরা কেউ কিছু বুঝিনা, দিদির ওখানে আমরা সবাই তোকে নিয়ে আলোচনা করি, বেশী নাটক করিস না। এরপর তুই ওখানে কি করে মুখ দেখাস দেখবো।" লজ্জায় কুঁকড়ে গেছিলাম সেরাতে, ভোর হতেই বেড়িয়ে এসেছিলাম। সেদিন কেন জানিনা মনে হয়েছিল "নাচ শেখা" আমার জন্য না। ওদিকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে নিজের কেরিয়ার নিয়ে ভাবাটাই ভাল বলে মেনে নিয়েছিলাম। সেদিনের পর থেকে নিজের নাচ নিয়ে স্বপ্ন আর দেখিনি। আজকাল টিভির চ্যানেলে চানেলে নাচের রিয়েলিটি শো, কত সুন্দর সুন্দর কোরিওগ্রাফি। আমার বাবা মা ভাই সবাই দেখে। শুধু আমিই দেখিনা... ... ...
আসলে তাদের দুঃখ কষ্ট আমরা কোনদিনই সেভাবে বুঝতে পারব না হয়ত। কারণ, স্বাধীনতার নামে পাওয়া এইরকম মুক্তি ভারতের কোন মানুষই চায়নি বোধহয়। কিন্তু বাঁচার তাগিদে ভিটেমাটি ছেড়ে আসতে হয়েছিল এপারে। তথাকথিত মুক্তিতে মেতেছিল এক শ্রেনির মানুষ আর এক শ্রেনি নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে এক রাতেই বিদেশি, উদবাস্ত তকমা নিয়ে ফিরেছিল এদেশে। "কাঁটাতার" তাদের সেই সময়কার সেই বেদনা অভিমান প্রকাশ করার একটা চেষ্টা মাত্র। ... ...
রণকে ভালবেসে ওর কাছে বারবার দৌড়ে গেলেও ওর বিয়ের পর থেকে পারতপক্ষে শারীরিক সম্পর্কটা আমি এড়িয়ে চলতাম৷ খালি মনে হত আমি রণ-র কেউ না। আমি কি রণ-র রক্ষিতা না ভালবাসা ! রণ বোঝাতে চাইত সমাজ না মানলেও আমিই আসলে রণ-র সব। বিশ্বাস করতে পারতাম না কিছুতেই। বিয়ের আগে কোনও একদিন মজা করে রণ সিঁদুর পড়িয়ে দেখতে চেয়েছিল আমায় কেমন লাগে। এ মজায় সেদিন সাধ দিইনি। ঠাসিয়ে একটা চড় মেরে বলেছিলাম," আমি তো তথাকথিত বৌ হতে পারব না তবে কেন এ প্রহসন ! " অথচ মনে মনে কতবার নিজেকে সিঁদুর পড়ে দেখতে চেয়েছি সে তো কেবল আমিই জানি। আজন্ম লালিত সংস্কারের সিঁদুর আসলে যে মর্যাদার পরিচয় বহন করে সে মর্যাদা পেতে চেয়েছিলাম মনে মনেই... ... ...
১১ই মার্চ ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন’ কোভিড-১৯কে অতিমারী হিসেবে ঘোষণা করলো, আর ঠিক দু’ দিন পর, ১৩ই মার্চ আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রক বললেন, কোভিড-১৯ ‘জরুরি স্বাস্থ্যাবস্থা’ নয়। অবশেষে, ১৯শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিলেন দেশের উদ্দেশ্যে। তাঁর সরকার এই সঙ্কটমুহূর্তে কী করতে চলেছে – সে নিয়ে কিছুই খোলসা করলেন না, কিন্তু মানুষদের বললেন বারান্দায় বেরিয়ে ঘণ্টা বাজিয়ে, থালা, বাসন পিটিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের স্যালুট জানাতে। ... ...
ছাতের কামরার সামনে টিনের শেড, টিনের নীচে রংগনাথ, ওর নীচে খাটিয়া। বেলা দশটা, এখন শুনুন আবহাওয়ার খবর।কাল রাত্তিরে আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল, এখন কেটে গেছে। ঠান্ডা হাওয়া বইছে। বিগত দিনে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছিল, এখন সেসব পরিষ্কার হয়ে যেতেই পৌষের শীতের কামড় টের পাওয়া যাচ্ছে। বাজারের নব্বই প্রতিশত মিষ্টি যেমন দেখতেই ভাল, খেতে নয়, তেমনই রোদ্দূরও পিঠে লাগানোর ছেয়ে দেখেই বেশি আরাম।রোদ চারদিকে ছড়িয়ে গেছে। কিন্তু দেখলে মনে হচ্ছে শুধু নীমগাছের মাথাতেই আটকে রয়েছে। ... ...
নিজেকে নিয়ে তখন হাজার রকম প্রশ্ন আমার। মনে মনে সেদিনও জানতাম ছেলে হয়েও আর একটা ছেলেকে ভালবাসা অন্যায় নয়।তবুও বুঝতে পারিনা, কি করব। কি করা উচিত? এসব ভাবতে ভাবতে একদিন মনে হল "কাউন্সেল ক্লাব" এ ফোন করলে হয়। এই সংস্হা তখন কোলকাতায় সমকামী মানুষদের নিয়ে কাজ করছে জানতাম । কাউন্সেল ক্লাবের কথা শুনেছিলাম ‘তারাবাংলায়’ রঞ্জনের সমকামিতার ওপর সাক্ষাতকার শুনতে শুনতে। তারও পরে আমার কলেজ যাতায়াতসুত্রে হয়ে ওঠা বিভিন্ন বন্ধু দের সুত্রে তখন হাতে এসেছে " বোম্বে দোস্ত", "নয়া প্রবর্ত্তক" পত্রিকা। সমকামিতা নিয়ে কিছু তথ্য পেলেও আমার প্রশ্নের উত্তর সেখানে মেলেনি। একদিন ফোন করলাম কাউন্সেল ক্লাবের হেল্পলাইনে... ... ...
দাদু আমাকে বিদ্যাদিগগজ মহাধনুর্ধর করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে নিজে মুখে মুখে শেখাতে লাগলেনঃ “তিরিশ দিনেতে হয় মাস সেপ্টেম্বর, / সেইরূপ এপ্রিল, জুন আর নভেম্বর। / আটাশ দিনেতে সবে ফেব্রুয়ারি ধরে, / বাড়ে তার একদিন চারিবর্ষ পরে। ... ...
আজও মনে করি যে কোনও সম্পর্কের ভিত হল বিশ্বাস, আর সেই বিশ্বাসটাই যদি কখনও টলে যায় তার ওপর দাঁড়িয়ে প্রেমের ইমারত টেঁকে না, যত ভালবাসার চুন সুড়কিই সেখানে দেওয়া হোক না কেন...! মজার বিষয় আজও আমার বিশ্বাসের ভিত কেউ আর তৈরী করতে পারল না। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যখনই কাউকে ভালবেসেছি সেইই ঘটিয়েছে আমার জীবনে। একবার না বহু বহুবার... ... ...
আমার দেশ, আমার আমির-গরীব দেশ, ফিউডালিজম আর ধর্মীয় মৌলবাদের মাঝে, শ্রেণীভেদ আর পুঁজিবাদের মাঝে কোনো একখানে ঝুলতে থাকা, অতি দক্ষিণপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদ-শাসিত ভারতবর্ষ -- তার কি খবর? ... ...